রাসূল (সা:) নাকি নিরক্ষর ছিলেন?

যারা মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বলেন যে – রাসূল (সা:) নাকি নিরক্ষর ছিলেন অর্থাৎ লিখতে ও পড়তে পারতেন না। আর এই অপবাদ দেয়ার জন্যে তারা মূলত বুখারীর ৪৯৫৩ নং হাদীসের রেফারেন্স এবং সূরা আরাফ এর ১৫৭ নং আয়াতে উল্লেখিত “উম্মী” (أُمِّيِّيْنَ) শব্দের (ভুল) অর্থ “নিরক্ষর” করে থাকেন। আসুন দেখি কিতাবুল কুরআনে উম্মী (أُمِّيِّيْنَ) শব্দ বলতে কি বুঝায়….

🔺সূরা আরাফে (৭:১৫৭) আল্লাহ বলেন- “যারা সেই উম্মী রাসূলের অনুসরণ করে চলে…”। অথচ —-
১. সূরা আল জুমুয়াতে (৬২:২) আল্লাহ বলেন – “তিনিই (আল্লাহই) “উম্মীদের” মাঝে একজন রাসূল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে….” অর্থাৎ সমগ্র আরব-বাসীদের “উম্মী” বলা হয়েছে। #প্রশ্ন হলোঃ- সমগ্র আরববাসী কি “নিরক্ষর” ছিলো?🤔
২. সূরা বাকারায় (২:৭৮ & ৭৯) আল্লাহ বলেন – “তোমাদের কিছু লোক উম্মী…. অতএব তাদের (উম্মীদের) জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ …”। #প্রশ্ন হলোঃ- নিরক্ষর লোক আবার কিভাবে নিজ হাতে গ্রন্থ লিখে?🤔

🚩তাহলে “উম্মী” বলতে আল্লাহ কি বুঝিয়েছেন?
১. সূরা বাকারায় (২:৭৮) আল্লাহ বলেন – “তোমাদের কিছু লোক উম্মী! তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া আল্লাহর গ্রন্থের কিছুই জানে না। তাদের কাছে কল্পনা ছাড়া কিছুই নেই।”
২. সূরা আনকাবুতে (২৯:৪৮) আল্লাহ বলেন – আপনি তো এর (কিতাবুল কুরআনের) পূর্বে কোন কিতাব (জবুর, তাওরাত, ইঞ্জিল) পাঠ করেননি এবং (কিতাবুল কুরআনের পূর্বে) নিজ হাতে কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।

— এই দুটি আয়াত থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় যে আল্লাহর কিতাবের উপর যাদের কোন জ্ঞান নাই তাদেরকেই মূলত “উম্মী” বলা হয়েছে।

[সূরা আলাকে (৯৬:১) আল্লাহ বলেন – “পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।” – সুতরাং, রাসূল (সা:) যদি পড়তে না পারতেন তাহলে আল্লাহ কি রাসূল (সা:)কে পড়তে বলতেন?🤔 সূরা আলাকে (৯৬:৪) আল্লাহ আরো বলেন – “যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন” অর্থাৎ রাসূল (সা:) লিখতেও পারতেন। সূরা আনকাবুতে (২৯:৪৮) আল্লাহ বলেন – “আপনি তো এর পূর্বে (কিতাবুল কুরআনের পূর্বে) কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং নিজ হাতে কোন কিতাব লিখেননি” – অর্থাৎ রাসূল (সা:) একমাত্র আল্লাহর নাযিলকৃত কুরআন পাঠ করেন এবং তা নিজ হাতে কিতাবে (book) লিপিবদ্ধ করেন! — সূরা বাকারার ১৫১ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন – রাসূল (সা:) কিতাব (Book) শিক্ষা দেন অর্থাৎ (লিখিত) বই থেকে কুরআন শিক্ষা দেন!]

সুতরাং, পৃথিবীর শ্রেষ্ট শিক্ষক (২:১৫১) রাসূল (সা:) কে যারা “নিরক্ষর” বলে অপবাদ দেয়, মুলতঃ তারাই উম্মী অর্থাৎ আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান রাখেন না।

বিঃদ্রঃ কুরআন শব্দের অর্থ হচ্ছে Reading/পঠন/অধ্যায়ন ইত্যাদি (সূরা আল ক্বেয়ামাহ ৭৫:১৮)!

.

Sourse: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=148954443497693&id=100051494142761

Hadith attack on Muhammad character

আমার মাথায় ধরে না এরা সম্মানিত রসূল চরিত্রের সাথে এতাটা অপমানকর ও লেম কথা গুলো কিভাবে বলতে পারে।এসব আগুনখোর চির অসভ্যই থেকে যাবে।রাসূল কি নিজের সহবাসের কথা সাহাবীদেরকে গিয়ে
বলত? না সাহাবী রসূলের ঘরে উকি দিয়ে জেনেছে?না তার স্ত্রীরা অন্য মেয়েদের এসব বলে বেড়াত?মাঝে মাঝে রক্ত গরম হয়ে যায় এসব দেখলে🤬🤬🤬
এরা রাসূলের আদের্শের অনুসারী নয় এরা# বেডরুমের #অনুসারী। বাংলা চটি বিক্রি কর আগুন খোরেরা,, আরও ভালো পয়সা পাবি।

রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আলিঙ্গন, চুম্বন ইত্যাদি করতেন। (যাদুল মা’আদ ৪/২৫৩)

  • ই,ফাঃ সহিহ বুখারি, ১/ ১৫৩ পৃষ্ঠা, হাদিস নং ২৬৬: আনাস ইবনে মালিক (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসুল (সা) তাঁর স্ত্রীগণের কাছে দিনের বা রাতের কোন এক সময়ে পর্যায়কর্মে মিলিত হতেন । তাঁরা ছিলেন ১১ জন । বর্ণনাকারী বলেন, আমি আনাস (রা) কে জিজ্ঞাসা করলাম তিনি কি এত শক্তি রাখতেন ? তিনি বললেন আমরা পরস্পর বলাবলি করতাম যে তাঁকে ৩০ জনের শক্তি দেয়া হয়েছে । সাইড (রহ), কাতাদা (রহ) থেকে বর্ণনা করেন , আনাসের (রা) কাছে হাদিস বর্ণনার প্রসঙ্গে ১১ জনের স্থলে ৯ জন স্ত্রীর কথা বলেছেন ।
  • ই,ফাঃ সহিহ বুখারি ১/ ১৫৪ পৃষ্ঠাঃ হাদিস নং ২৬৮: আয়েশা (রা) বলেন রাসুল (সা) কে সুগন্ধি লাগিয়েছি তারপর তিনি পর্যায়কর্মে তাঁর স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়েছেন এবং তাঁর ইহরাম অবস্থায় প্রভাত হয়েছে ।

আয়েশা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : রাসূল সা. ইতেকাফকালীন আমার দিকে মস্তক এগিয়ে দিতেন, আমি তার কেশবিন্যাস করে দিতাম, মানবিক প্রয়োজন ব্যতীত তিনি গৃহে প্রবেশ করতেন না। (মুসলিম, হাদিস ২৯৭)

এক রেওয়ায়েতে এসেছে, আয়েশা রা. বলেন : রাসূল চুম্বনের জন্য আমার নিকট ঝুঁকে এলেন, আমি বললাম : আমি তো রোজাদার, তিনি বললেন, আমিও রোজাদার। আয়েশা বলেন : অত:পর তিনি ঝুঁকে এসে আমাকে চুম্বন করলেন। (আহমদ, হাদিস ২৫০২২)

আয়েশা রা. বর্ণিত হাদিসে এসেছে, শেষ দশ দিনে রসূল স্ত্রী সহবাস বর্জন করতেন, রাত্রি জাগরণ করতেন, এবং জাগিয়ে দিতেন পরিবারকে। (বুখারি, হাদিস ২০২৪)

আয়েশা রা. বলেন : স্বপ্নদোষে নয়, (সহবাসের কারণে) রমজানে অপবিত্র অবস্থায় রাসূলের ফজর হয়ে যেত। অত:পর তিনি গোসল করে রোজা পালন করতেন। (মুসিলম, হাদিস ১১০৯)

মহানবী (সা.) তাঁর স্ত্রী মাইমুনা (রা.) ও আয়েশা (রা.) এর সঙ্গে একত্রে গোসল করেছেন। এটি সহিহ বুখারি ও মুসলিম দ্বারা প্রমাণিত। এ বিষয়ে কেউ কেউ মুসা (আ.) এর বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার ঘটনাও প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। (আরো দেখুন, বুখারি : ৩৪০৪)

Source :-

https://m.facebook.com/groups/1637342032970504?view=permalink&id=3132313923473300

Pt-1,2.Salat discussion fbfd

কুরআন ভিত্তিক সালাতঃ ১ম আলোচনা।
সালাত শব্দটি সল্লা থেকে উদ্ভুত যার অর্থ হলো সম্পর্ক, বন্ধন, সংযোগ – অর্থাৎ যা একটিকে অন্য কিছুর সাথে সংযোগ করে এবং নি:সন্দেহে সালাত বান্দা ও স্রষ্টার মধ্যে বন্ধনের একটি পদ্ধতি।

সালাত শব্দের বিশ্লেষণ
বাংলায় যেমন শব্দ মূল রয়েছে তেমনি আরবীর প্রায় সব শব্দের তিনটি অক্ষরের মূল রয়েছে যা থেকে বিভিন্ন শব্দের জন্ম। সালাত শব্দের মূল সোয়াদ, লাম এবং ওয়াও অক্ষর তিনটি দিয়ে। এই তিন অক্ষরের মাধ্যমে কুরআনে ৯৯ বার সালাত ও তার সমার্থক শব্দগুলো এসেছে। সাল্লা (১২ বার), সালাত (৮৩ বার), মুসাল্লান (১ বার) এবং মুসাল্লিন (৩ বার)।

সালাত শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হলেও, আরবী ভাষায় এটি সাধারন অর্থেও ব্যবহৃত হয়। প্রাথমিকভাবে এর অর্থ হলো সংযোগ বা যোগাযোগ (Communication)। যেমন: ইতি-আস-সালাত শব্দের অর্থ – যোগাযোগ / সংযোগ / সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়।

কোরানের পরিভাষায় মানুষের প্রসঙ্গে সালাত হলো স্রষ্টার সাথে যোগাযোগ। এর কাছাকাছি ইংরেজী অনুবাদ হতে পারে: Communication / Communion. ক্যামব্রিজ ডিকশনারী অনুসারে কমিউনিয়ন অর্থ: a close relationship with someone in which feelings and thoughts are exchanged. অন্যদিকে Communication অর্থ হলো the process by which messages or information is sent from one place or person to another, or the message itself.

সালাতের শব্দের আরও কুরআন ভিত্তিক বিশ্লেষন করলে অর্থ দাড়ায়।
দোয়া করা, কারো দিকে মুখ করা, অগ্রসর হওয়া, ক্ষমা প্রার্থনা করা,দয়া করা, দরুদ পাঠ করা, রহমত, তাসবীহ করা,পৌছে যাওয়া ইত্যাদি।
বলে রাখা ভালো উল্লেখিত কোরআনের আয়াত গুলি বিশ্লেষণে আমরা বলতে পারি যে, ইউসাল্লি মূসাল্লি,তাসাল্লি,ইউসাল্লু, ইত্যাদি শব্দের পরে আলা’ শব্দটি এলে তা দু’য়াকরা, কল্যাণ কামনা করা, অনুগ্রহ প্রার্থনা করা অর্থে ব্যবহৃত হয়।কারন সালাত শুধু আল্লাহর জন্য।6:162
সালাতের অর্থ ব্যাপক।তাই আল্লাহ মুমিন দের বৈশিষ্ট্য দিতে গিয়ে বলেন–
আল-মা’আরিজ 70:23
যারা তাদের সালাতে সার্বক্ষণিক নিষ্ঠাবান।

তাই কুরআন অনুযায়ী শুধু প্র্যাকটিক্যেল সালাত 4:102/5:6/3:39এর বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলব অর্থাৎ যা রবের সংযোগে দাড়ান।২ঃ২৩৮
তাই আল্লাহ বলেন।

আশ-শু‘আরা 26:218
যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও (সালাতের জন্য)।
আশ-শু‘আরা 26:219
এবং দেখেন সাজদাহকারীদের সাথে তোমার গতিবিধি।
শারিরীক এবং মন ও মননে রবের প্রতি নতজাুনু(সাজদা,রুকু) ও আত্নসমর্পন স্বীকার করাই সালাতের মৌলিক বিষয়।
সালাতের উদ্দেশ্যঃ–
1.শক্তিশালী বিশ্বাস অর্জন।

{আল-হিজ্‌র 15:98
সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসা দ্বারা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
আল-হিজ্‌র 15:99
আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ইবাদাত কর।}

2.শয়তান ও মন্দ থেকে বেচে থাকা।

{আল-আনকাবূত 29:45
তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব আবৃত্তি কর এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয়ই সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা জানেন।}

3.লাভজনক বিনিয়োগ।

{ফাতির 35:29
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে তাদের এমন ব্যবসায়ের যার ক্ষয় নেই
ফাতির 35:30
এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
}

4.রবের স্মরনের মাধ্যমে,সংযোগ স্থাপন।29:45

{তাহা 20:14
আমি আল্লাহ! আমি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।

ফাতির 35:30
এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।}

…..

Pt. -2.

কুরআন ভিত্তিক সালাতঃ ২য় আলোচনা
সালাতের পূর্ব প্রস্তুতি এবং যে যে কারনে সালাতে যাওয়া নিষিদ্ধ।
সালতের পূর্বে গাসিল(ওযু) করতে হবে।

আল-মা’ইদাহ ৫:৬

হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলিকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলিকে টাখনু পর্যন্ত । যদি তোমরা অপরিষ্কার হও তাহলে পরিষ্কার হয়ে নাও। কিন্তু যদি রোগগ্রস্ত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেহ পায়খানা হতে ফিরে আস কিংবা তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ কর (স্ত্রী-সহবাস কর), অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, তখন তোমরা তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আনয়ন করতে চাননা, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে ও তোমাদের উপর স্বীয় নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

১.আপনি যদি সাইকোলজিকাল ভাবে সামর্থবান না হন যখন নিজের বলা বাক্য যদি নিজে বুঝতে সামর্থ নন সে ক্ষেত্রে সালাতে যাওয়া যাবে না।
২. অপরিষ্কার অবস্থায়।

এবং অপরিষ্কার একেবারে অতিক্রম কারী হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে গোসল না করে সালাতে যাওয়া যাবে না।
আর অতিক্রমকারী না হলে গাসিল (ওযু)রয়েছে।

আন নিসা ৪:৪৩
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেওনা, যখন নিজের উচ্চারিত বাক্যের অর্থ নিজেই বুঝতে সক্ষম নও –
এবং না অপরিষ্কার অবস্থায় কিন্তু অতিক্রমকারী হলে অন্যকথা যতক্ষণ না তোমরা গোসল করো। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। এবং যদি তোমরা পীড়িত হও, কিংবা প্রবাসে অবস্থান কর অথবা তোমাদের মধ্যে কেহ পায়খানা হতে প্রত্যাগত হয় কিংবা রমণী স্পর্শ করে এবং পানি না পাওয়া যায় তাহলে বিশুদ্ধ মাটির অম্বেষণ কর, তদ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ মুছে ফেল; নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।

সালাতের মসল্লা(স্থান) পরিষ্কার রাখতে হবে।

আল-বাকারাহ ২:১২৫
এবং যখন আমি কা‘বা গৃহকে মানব জাতির জন্য সুরক্ষিত স্থান ও পুণ্যধাম করেছিলাম, এবং মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম; এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলের নিকট অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী ও ই’তিকাফকারী এবং রুকু ও সাজদাহকারীদের জন্য পরিষ্কার রেখ।

শালীন সুন্দর পোশাক পরতে হবে।

আল-আ‘রাফ ৭:৩১
হে আদম সন্তান! প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণ কর, আর খাও এবং পান কর। তবে অপব্যয় ও অমিতাচার করবেনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেননা।

পোশাক সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে।

আল-মুদ্দাসসির ৭৮ঃ৪
তোমার পরিচ্ছদ পরিস্কার রাখ।
আল-মুদ্দাসসির ৭৪:৫
অপবিত্রতা হতে দূরে থাকো।

সালাতে মুমিনদের আহবান করতে হবে।

আল-জুমু‘আহ ৬২:৯
হে মু’মিনগণ! জুমু’আর দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলদ্ধি কর।

আল-মা’ইদাহ ৫:৫৮
আর যখন তোমরা সালাতের (আযান দ্বারা) আহবান কর তখন তারা ওর সাথে উপহাস করে; এর কারণ এই যে, তারা এরূপ লোক যারা মোটেই জ্ঞান রাখেনা।

তার উপায়ও আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন।

“আকিমু সালাত”
“আকিমু সালাত”

ইবরাহীম ১৪:৩১
আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মু’মিন তাদেরকে বল সালাত কায়েম কর এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে, সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব থাকবেনা।

নিজের ঘর বা কুরআনভিত্তিক মাসজিদকে সালাতের মুসল্লা(স্থান) বানাতে পারেন এই দুটি উদাহরনই পাওয়া যায় কুরআনে।

ইউনুস ১০:৮৭
আর আমি মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি অহী পাঠালামঃ তোমরা উভয়ে তোমাদের এই লোকদের জন্য মিসরে বাসস্থান বহাল রাখ, আর (সালাতের সময়) তোমরা সবাই নিজেদের সেই গৃহগুলিকে সালাত আদায় করার স্থান রূপে গণ্য কর এবং সালাত কায়েম কর, আর মু’মিনদেরকে শুভ সংবাদ জানিয়ে দাও।

আত-তাওবাহ ৯:১০৭
আর কেহ কেহ এমন আছে যারা এ উদ্দেশে মাসজিদ নির্মাণ করেছে যেন তারা (ইসলামের) ক্ষতি সাধন করে এবং কুফরী কথাবার্তা বলে, আর মু’মিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, আর ঐ ব্যক্তির অবস্থানের ব্যবস্থা করে যে এর পূর্ব হতেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধী, আর তারা শপথ করে বলবে, মঙ্গল ভিন্ন আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই; আর আল্লাহ সাক্ষী আছেন যে, তারা সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী।

আত-তাওবাহ ৯:১০৮
(হে মুহাম্মাদ!) তুমি কখনও ওতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবেনা; অবশ্য যে মাসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে তা এর উপযোগী যে, তুমি তাতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবে; ওতে এমন সব লোক রয়েছে যারা উত্তম রূপে পবিত্র হওয়াকে পছন্দ করে, আর আল্লাহ উত্তম রূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদেরকে পছন্দ করে।

ভদ্রলোক-হোমেন বৰগোহাঞি

✅ ভদ্রলোক

এদিন এজন বন্ধুৱে কথাই কথাই মোক ক’লে– ‘মই ভদ্রলোকৰ দৰে জীয়াই থাকিব খোজোঁ আৰু ভদ্রলোকৰ দৰে মৰিব খোজোঁ৷ সেইটোৱেই মোৰ জীৱনৰ উচ্চতম আকাংক্ষা৷’

বন্ধুজনৰ মুখত কথাটো শুনি মোৰ মনত ধাৰণা হ’ল যে আমি দৈনন্দিন জীৱনৰ ভাষাত ভদ্রলোক শব্দটোক যি অর্থত ব্যৱহাৰ কৰোঁ তাতকৈ বেলেগ এটা অর্থতো শব্দটো ব্যৱহাৰ কৰা হয় বা ব্যৱহাৰ কৰিব পাৰি৷ যেতিয়া এজন মানুহে দাবী কৰে যে ভদ্রলোক হোৱাটোৱেই তেওঁৰ জীৱনৰ উচ্চতম আকাংক্ষা, তেতিয়া এই শব্দটোৰ প্রকৃত অর্থৰ সন্ধান নকৰাকৈ থকাটো অসম্ভৱ হৈ পৰে৷

ঋগবেদৰ এটা বিখ্যাত শ্লোক হ’ল–

ও ভদ্রং কর্ণেভিঃ শৃণুয়াম দেৱা

ভদ্রং পশ্যেমাক্ষভির্য্যজত্র৷

স্থিৰৰঙ্গৈস্তুষ্টুবাংস

দেৱহিৎ তং যদায়ু ৷৷ ঋগবেদ ১ ৷ ৮৯

মোৰ কলমৰ পৰা বৈদিক সংস্কৃতৰ উদ্ধৃতি বাহিৰ হোৱা দেখি কোনেও যেন এনে এটা ভুল ধাৰণা নকৰে যে মই এজন সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত৷ দৰাচলতে মোৰ সংস্কৃতৰ জ্ঞান শূন্য৷ সংস্কৃত জনা মানুহে ওপৰত উদ্ধৃত কৰা শ্লোকটোৰ অসমীয়া অনুবাদ কৰিছে এনেদৰে–

হে দেৱগণ, আমি যেন কাণেৰে সদায় কল্যাণবচনকেই শুনিবলৈ পাওঁ হে যজনীয় দেৱগণ, আমি যেন চকুৰে কেৱল শোভন বস্তুকেই দেখিবলৈ পাওঁ দৃঢ়হস্তপদাদি অৱয়ৱ আৰু শৰীৰৰ লগত যুক্ত হৈ আৰু তোমালোকৰ স্তৱ কৰি আমি যেন দেৱকর্মত নিয়োজিত আয়ুস্কাল লাভ কৰোঁ৷

বৈদিক শ্লোকটোৰ অসমীয়া অনুবাদৰ পৰা দেখা গ’ল যে আমি আজিকালি কথাই কথাই যিটো অর্থত ‘ভদ্র’ শব্দটো ব্যৱহাৰ কৰোঁ তাৰ লগত মূল সংস্কৃত শব্দটোৰ খুব বেছি মিল নাই৷ আমি ব্যৱহাৰ কৰা ‘ভদ্রলোক’ শব্দটো ইংৰাজী gentlemen শব্দটোৰ আক্ষৰিক অনুবাদ, আৰু ইংৰাজী ভাষাত যি বিশেষ অর্থত gentlemen শব্দটো ব্যৱহাৰ কৰা হয় ঠিক সেই অর্থতেই আমি ব্যৱহাৰ কৰোঁ ভদ্রলোক শব্দটো৷

কিন্তু ইংৰাজী ভাষাৰ পৰা আমি ভদ্রলোক শব্দটোৰ যি ধাৰণা গ্রহণ কৰিছোঁ সিও কম মহত্ত্বপূর্ণ নহয়৷ আৰম্ভণিতে উল্লেখ কৰা মোৰ বন্ধুজনে যেতিয়া কৈছিল যে তেওঁ ভদ্রলোকৰ দৰে জীয়াই থাকিব খোজে আৰু ভদ্রলোকৰ দৰে মৰিব খোজে তেতিয়া তেওঁ এই মহৎ অর্থতেই ভদ্রলোক শব্দটো ব্যৱহাৰ কৰিছিল৷ তেওঁ বুজাব খুজিছিল যে তেওঁ এখন বিশেষ অলিখিত আচৰণবিধি অনুসৰণ কৰি জীৱনটো যাপন কৰিব খোজে৷ তেওঁৰ মুখৰ পৰা কেতিয়াও অসত্য আৰু অশালীন কথা ওলাব নোৱাৰে৷ আনকি চৰম প্রৰোচনায়ো তেওঁক অশালীন ভাষা ব্যৱহাৰ কৰিবলৈ বাধ্য কৰিব নোৱাৰে৷ তেওঁ উচ্চ–নীচ নির্বিশেষে সকলো মানুহৰ প্রতি যথাযোগ্য সন্মান প্রদর্শন কৰে আৰু নিজকো সকলো সময়তে আনৰ সন্মানৰ যোগ্য কৰি ৰাখে৷ মহিলাৰ মর্যাদা ৰক্ষা কৰিবলৈ তেওঁ সকলো সময়তে তৎপৰ আৰু সচেতন হৈ থাকে ৷ মানুহৰ থাকিবলগীয়া গুণবোৰৰ ভিতৰত তেওঁ শিষ্টাচাৰক অতি উচ্চ স্থান দিয়ে৷ তেওঁ কেতিয়াও কোনো ধৰণৰ নীচতাক প্রশ্রয় নিদিয়ে আৰু আনক প্রতাৰণা কৰাৰ কথা কল্পনাও কৰিব নোৱাৰে৷ বিপদত পৰা মানুহক যথাসাধ্য সহায় কৰাটোক তেওঁ এটা অৱশ্য–পালনীয় নৈতিক কর্তব্য বুলি বিবেচনা কৰে৷

ভদ্রলোকৰ থাকিবলগীয়া গুণবোৰৰ তালিকাখন আৰু কিছু দীঘলীয়া কৰিব পাৰি৷ কিন্তু সেইটো নকৰিও আমি ওপৰৰ কথাখিনিৰ পৰাই ভদ্রলোক কাক কয় সেই সম্পর্কে এটা মোটামুটি ধাৰণা কৰি ল’ব পাৰোঁ৷

কেইবছৰমানৰ আগতে মই কোনোবা এখন কিতাপত ভদ্রলোকৰ এটা নতুন সংজ্ঞা পঢ়িবলৈ পালোঁ৷ সংজ্ঞাটো দিছে কার্ডিনেল জন হেনৰী নিউমেনে (১৮০১–১৮৯০) ৷ ইংলেণ্ডৰ ধর্মীয় ইতিহাসত কার্ডিনেল নিউমেন এজন অতি বিখ্যাত আৰু প্রভাৱশালী মানুহ৷ জন্মসূত্রে তেওঁ এংগলিকান চার্চৰ অনুগামী আছিল যদিও জীৱনৰ মাজ বয়সত তেওঁ ৰোমান কেথলিক ধর্ম গ্রহণ কৰে৷ ১৮৭৯ চনত তেওঁ কার্ডিনেল নিযুক্ত হয় ৷ ২০১৯ চনত তেওঁক ‘ছেইণ্ট’ বুলি ঘোষণা কৰা হয়৷

ধর্মগুৰু হোৱাৰ উপৰিও কার্ডিনেল নিউমেন আছিল এজন কবি আৰু উচ্চস্তৰৰ চিন্তাশীল লেখক৷ তেওঁৰ The Idea of a Uviversity নামৰ কিতাপখনে আধুনিক চিন্তাৰ ওপৰত গভীৰ প্রভাৱ পেলাইছে৷ ঠিক সেইদৰে তেওঁ ৰচনা কৰা Lead Kindly Light নামৰ প্রার্থনা–গীতটোও সমগ্র জগতৰ আটাইতকৈ জনপ্রিয় প্রার্থনা–গীতবোৰৰ ভিতৰত এটা অন্যতম গীত বুলি বিবেচিত হৈছে ৷ বহুত মানুহেই বোধহয় এই কথা জানে যে এই প্রার্থনা–গীতটো আছিল মহাত্মা গান্ধীৰ বিশেষভাৱে প্রিয় গীত৷

কার্ডিনেল নিউমেনে ভদ্রলোকৰ সংজ্ঞা দিছিল এইবুলি–It is almost a definition of a gentlemen to say that he is one who never inflicts pain.

ভদ্রলোক হ’ল এনে এজন মানুহ, যিজনে কেতিয়াও আন মানুহক কোনো আঘাত বা যন্ত্রণা দিব নোৱাৰে৷ ভদ্রলোক কাক কয় সেই কথা বুজাবলৈ কেৱল এটা কথা ক’লেই যথেষ্ট হ’ব যে তেওঁ কেতিয়াও আনক কোনো ধৰণৰ কষ্ট দিব নোৱাৰে৷ এই কথা কোৱাৰ পিছত তেওঁৰ বিষয়ে আন কোনো কথা কোৱাৰ দৰকাৰ নাই৷

ভদ্রলোকৰ বিষয়ে কার্ডিনেল নিউমেনৰ মাত্র এটা বাক্যৰ এই সংজ্ঞাটো পঢ়াৰ পিছত মই বহুত সময় স্তব্ধ হৈ ৰ’লোঁ৷ মই ধ্যানস্থ হৈ বাক্যটোৰ মর্মার্থ বুজিবলৈ চেষ্টা কৰিলোঁ৷ মই অৱশেষত উপলব্ধি কৰিলোঁ যে কার্ডিনেল নিউমেনে কোৱা অর্থত মানুহে যদি আন একো নকৰিও কেৱল ভদ্রলোক হ’বলৈ সাধনা কৰে, তেন্তে সি হ’ব মানুহ হোৱাৰ সাধনা৷ আনক আঘাত নিদিয়াকৈ থাকিবলৈ যি ধৰণৰ আত্ম–সংযমৰ প্রয়োজন হ’ব তেনে আত্ম–সংযমৰ অধিকাৰী হ’বলৈ মানুহজন হ’ব লাগিব একে সময়তে চৰিত্রৱান আৰু হৃদয়ৱান৷ এজন মানুহ যদি প্রকৃত অর্থত চৰিত্রৱান আৰু হৃদয়ৱান হয়, তেন্তে তেওঁৰ আৰু কিবা হ’বলৈ বাকী থাকিল কি?

মহাত্মা গান্ধীয়ে যিখন অহিংস সমাজৰ কল্পনা কৰিছিল সেইখন সমাজ আছিল কার্ডিনেল নিউমেনে কল্পনা কৰা ভদ্রলোকৰ সমাজ৷

✅ হোমেন বৰগোহাঞি