Category Archives: Salat

Salat of previous Nabies

বলা হয়ে থাকে “সালাত” হচ্ছে ‘নামাজ’, বলা হয় “নামাজ”ই মিরাজের বড় প্রাপ্তি!
তাই যদি হয় পূর্বের নবীগনের ‘সালাত’ কি??!

ইব্রাহিমের সালাত।
২:১২৫ যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের ( ﻣُﺼَﻠًّﻰ ) জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।

মূসা ও হারুনের সালাত।
১০:৮৭ আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং সালাত কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর।

ঈসার সালাত।
১৯:৩১ আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।

শুয়েবের সালাত।
১১:৮৭ তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার সালাত কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।

জাকারিয়ার সালাত।
৩:৩৯ যখন তিনি কামরার ভেতরে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়া সম্পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।

মারিয়ামের সালাত।
৩:৪৩ ‘হে মার্‌ইয়াম! আপনার রবের অনুগত হন এবং সিজদা করুন আর রুকু‘ কারীদের সাথে রুকূ‘ করুন।’

বণী ইস্রাইলের সালাত।
২:৪৩ আর সালাত কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।

লুকমানের সালাত।
৩১:১৭ হে বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।

……

Meaning of Salat fb bn

সালাত শব্দের 100% সঠিক বিশ্লেষণ (তথ্যসূত্র , Lughat- ul- Quran, Dictionary of Quran. Volume 1,2,3,4): “সালাত” শব্দটির আদি মূল (Prime Root) হচ্ছে “সল” (সোয়াদ-লাম), আর ত্রিআক্ষরিক মূল (Triliteral Root) হচ্ছে “সল্লি” (সোয়াদ-লাম-লাম)/(صَلِّ) যার অর্থ “অনুসরণ করা/Follow, সংলগ্ন থাকা/Adhere, সংযুক্ত করা/Link/
Connect/Attach, সম্পর্কিত কারা/Relate, নিজের মতে মত করানো/Persuade, দেখভাল করা/আলোচনা করা/Deal, সাক্ষাৎ করা/Meet, নিকটে এগিয়ে যাওয়া/Approach, সহায়তা করা/Support. যত বড় Word Engineering করেন না কেন, যত নতুন নতুন শব্দের প্রয়োজন হোক না কেন, মূলের (Root) এই অর্থের সাথেই আপনাকে সংলগ্ন থাকতে হবে।

উদাহরণসহ একটু বুঝিয়ে বলি। যেমন, “রিবা” শব্দের আদিমূল (Proto Root) (র-বা) এর অর্থ “শ্বাসরোধ/শ্বাসকষ্ট/Strangulation/Asthma”, “অতিমূল্যায়ন/Overcharging”. এখন, Medical Science এর অগ্রগতির ফলে Bronchial Asthma কে একটু আলাদাভাবে চিহ্নিত করার দরকার হলো। তো সেটিকে বলা হলো, “আর-রাবু”। মূল (Root) “রিবা” অর্থ “শ্বাসরোধ বা শ্বাসকষ্ট” থাকার কারণে এই নতুন শব্দ উৎপন্ন করা হয়েছে “মূল (Root)” এর সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে। আরবি ভাষায়, মূল অর্থ থেকে সরে গিয়ে ইচ্ছামত “নতুন শব্দ” গঠন করা যায় না। কারণ আরবী Semitic Language, আর এই Language এর Natural Feature হচ্ছে, এর সমস্ত শব্দ, তার মূল (Root) থেকেই উৎসারিত।

এবার আসল কথায় আসি। “মুসল্লী” হচ্ছে সালাত সম্পাদনকারী/Salaat Performer. এখানে, Create থেকে যেমন Creator শব্দটি উৎপন্ন হয়,, ঠিক তেমনি সলা থেকে মুসল্লী (Follow-Follower). “মুসল্লী” হচ্ছে রেসের সেই ঘোড়া, যে ঘোড়া, সাবিক/মুযাল্লী/Champion ঘোড়ার পদচিহ্ন (Footsteps/signs) কে অনুসরণ করে (Follow). তো মানুষ রূপ মুসল্লীর Lead এ আছেন আল্লাহ। অতএব, আল্লাহর Footsteps/Signs/আয়াত, যা প্রকৃতিতে (ফি’লী হাদীস হিসেবে), আর কোরআনে (ক্বওলী ও তাক্বরীরি হাদীস হিসেবে) বিদ্যমান, তাকে অনুসরণ করতে হবে।

74/42-43 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন রিযিকদাতা, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) অভাবীকে আহার দান করেন।

70/34-35 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন সমস্ত সম্পদের মালিক, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) মালিক হওয়া সত্ত্বেও সে সম্পদে অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, অর্থাৎ অন্যের অধিকার আছে বলে মনে করে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে।

প্রত্যেকটি আয়াতের আগে-পিছে পড়লে বিষয়টি Clear হবে। “মুসল্লী” শব্দটাকে ভালোভাবে না বোঝা পর্যন্ত “সালাত” জিনিসটাকে বুঝা যাবে না, কারণ মুসল্লী হচ্ছে আসল “সালাত সম্পাদনকারী” (Actual Salaat Performer)।
আরব বিশ্বে ব্যবহারিক জীবনে এখনো পর্যন্ত “সালাত” শব্দের আদিমূল (Prime Root) “সল” (পেশ/যের/যবর বিহীন সোয়াদ-লাম) দ্বারা তৈরি প্রথম শব্দ “সল” (সোয়াদ-যবর-লাম), যার অর্থ দরোজার কব্জা (Door Hinge), যেটা দরোজার Movement কে “অনুসরণ করে”, দরোজার সাথে দরোজার ফ্রেম এর “সংযোগ/সংযুক্তি/সাক্ষাৎ (Link/Attachment/Meet) ঘটায়”, “সম্পর্ক তৈরি করে” (make Relationship), দরোজা ও দরোজার ফ্রেমকে সহায়তা করে (Support), দরোজা ও দরোজার ফ্রেম এর সাথে সংলগ্ন থাকে (Adhere).

সুতরাং কোরআনের কোন আয়াত, তার পূর্বের ও পরের আয়াতগুলো দ্বারা সৃষ্ট যে “প্রেক্ষাপটে রচিত” (অর্থাৎ মুতাশাবিহাত 3:7), সেই প্রেক্ষাপটে বলে দেওয়া আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অনুসরণের “কর্তব্য” (Duty) এর সাথে “সংলগ্নতা/সংযুক্তি/সম্পর্ক/যোগাযোগ” তৈরি করাই সালাত। বলে রাখা ভালো, সলাতের পরোক্ষ অর্থ “কর্তব্য” (পেক্ষাপট অনুযায়ী), যা কোরআনের প্রত্যেকটা আয়াত এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সালাত মানে কুরআনের নিরবিচ্ছিন্ন অনুসরণ Close Following Quran .

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহর হুকুম আহকাম বা নির্দেশনাবলীকে (Orders) এক শব্দে ‘সালাত’ বলা হয়। অন্যান্য সকল নবী রাসুলদের সময়ও সালাত প্রচলিত ছিল।

সুরা হুদে দেখুন সালাতের সংজ্ঞা:(১১:৮৪-৯৫) আর আমি মাদইয়ান বাসীদের কাছে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়,তোামরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম দিও না, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কল্যাণের মধ্যে দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের উপর আশংকা করছি এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তি। হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে মাপো ও ওজন করে দিও, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তবে আল্লাহ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই। তারা বলল, হে শু’আইব! তোমার সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) কি তোমাকে নির্দেশ দেয়, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু ও ভালো। তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি তাঁর কাছ থেকে আমাকে উৎকৃষ্ট রিযিক দান করে থাকেন (তবে কি করে আমি আমার কর্তব্য হতে বিরত থাকব?) আর আমি তোমাদেরকে যা নিষেধ করি আমি নিজে তার বিপরীত করতে ইচ্ছে করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করতে চাই আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে, আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং তারই অভিমুখী। আর হে আমার সম্প্রদায়,আমার সাথে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যার ফলে তোমাদের উপর তার অনুরূপ বিপদ আপতিত হবে যা আপতিত হয়েছিল নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হুদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালেহের সম্প্রদায়ের উপর, আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে দূরে নয়। তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তার দিকে ফিরে আস, আমার রব তো পরম দয়ালু, অতি স্নেহময়। তারা বলল, হে শুআইব তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম, আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমাদের কাছে কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহর চেয়ে বেশী শক্তিশালী? আর তোমরা তাকে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে রেখেছ। তোমরা যা কর আমার রব নিশ্চয় তা পরিবেষ্টন করে আছেন। আর হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি। আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমি শুআইব ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা সীমালংঘন করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল, যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদইয়ানবাসীর পরিণাম, যেভাবে ধ্বংস হয়েছিল সামূদ সম্প্রদায়।(১১:৮৪-৯৫) তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও এবং সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) বাস্তবায়ন কর। নিশ্চয় সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব¡-কর্তব্য সমূহ) অশ্লীল, অনৈতিক ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর যিকির (নির্দেশনাই) তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। (২৯:৪৫) আর তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার নিকট যে ওহী করা হয়, তুমি তা পাঠ করে শুনাও। তার বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই এবং তিনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল তুমি পাবে না।(১৮:২৭) এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট পাঠ করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি।(১৩:৩০) আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন পাঠ করে শোনাইতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলও, আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।(২৭:৯২)আল কুরআনে বর্নিত প্রতিটা আদেশ নির্দেশনাই হচ্ছে সালাত ৷বিশ্বাসীগণ সর্বদাই সালাতে (আল্লাহর আদেশ নির্দেশ পালনে) দন্ডাায়মান থাকে (৭০:২৪)

সুরা হুদে দেখা যায়: এখানে আল্লাহর নবী শুয়াইব মাদায়েনের অধিবাসীদেরকে আল্লাহর সামাজিক হুকুম-নিয়ম-বিধান জানিয়ে দিচ্ছিলেন। জবাবে, তারা বলেছিল-হে শুয়াইব! তোমার ‘সালাত’ কি তোমাকে এই নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পূর্বপুরুষ যার ইবাদত করতো- আমরা তা ছেড়ে দেই? অথবা, আমাদের ধন-সম্পদ দিয়ে যা ইচ্ছা তাই না-করি? নিশ্চয়ই তুমি ধৈর্যশীল সৎ মানুষ। (১১:৮৭)

এই কয়েকটি আয়াতে দেখা যাচ্ছে- নবী ও রসুল শোয়াইব তাঁর জাতির লোকদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে হুকুম-নিয়ম-রীতি জানাচ্ছেন। আর সেসব নিয়ম-কানুন-হুকুম-গুলোকে তাঁর জাতির লোকজন একশব্দে ‘সালাত’ বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আর সেই ‘সালাত’ শব্দটি আল্লাহপাক কুর’আনে উল্লেখ করে জানিয়ে দিলেন। অর্থাৎ, আল্লাহ তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন ‘সালাত’ কি?

সালাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ-নিষেধ। আকিমুস সালাহ” অর্থ আল্লাহর সেই বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধকে ব্যক্তি থেকে বৈশ্বিক সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা।”যাকাহ” অর্থ পরিশুদ্ধতা অর্জন। আকিমুস সালাহ ওয়া আতুজ যাকাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা অর্জন করা। মুসল্লী” অর্থ যিনি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠাকারী। জান্নাতীগণ অপরাধীগণকে জিজ্ঞাসা করবেন- কিসে তোমাদের ‘সাকার’ এ নিক্ষেপ করলো? তারা বলবে- আমরা মুসল্লী বা আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধের অনুগামী ছিলাম না! আমরা অভাবীদের দান করতাম না! যারা অহেতুক আলোচনা করতো তাদের আলোচনায় যোগ দিতাম! আমরা কর্মফল দিবসে অস্বীকার করেছি, আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত, ফলে সুপারিশকারীদের কোন সুপারিশ কাজে আসবে না।(৭৪:৪০-৪৮) কাজেই,সবাই সাবধান হই! বেঁচে থাকতেই মৃত্যু অবধি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে পরিশুদ্ধতা অর্জন-ই জাহান্নাম থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্যগুলো জানার জন্য দেখে নিতে পারেন। (৭৪:৪২-৪৬)(১০৭:১-৭)(৭০:১৭-৩৫)(২৩:১-১১)(২৫:৬৩-৭৩)

Sourse fb https://bit.ly/3Ht99fW

কথিত তাশাহুদ।

♦তাশাহুদের বৈঠকে আমরা কি পাঠ করছি আবেগ নয় আল্লাহর দেয়া বিবেক দিয়ে একটু চিন্তা করার অনুরোধ রইলো।

★ কথিত তাশাহুদ।

اَلتَّحِيَّاتُ للهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ।

উচ্চারণ:- আত-তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি অস্বস্বালা-ওয়া-তু অত্বত্বাইয়্যিবা-তু, আসসালা-মু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু অরাহ্‌মাতুল্লা-হি অবারাকা-তুহ্‌, আসসালা-মু আলাইনা অ আলা ইবা-দিল্লা-হিস্ব স্বা-লিহীন, আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ্‌।

অর্থ: “আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত (দোয়া ও অভিবাদন), সালাওয়াত (সালাতসমূহ/অনুগ্রহ প্রার্থনা), তাইয়িবাত (পবিত্রতা)। হে নবী, আপনার উপর সালাম (শান্তি) এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত (দয়া) ও বরকত (সমৃদ্ধি) হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর সালাম (শান্তি) হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রসূল”।

★তাহিয়্যাত শব্দের মূল শব্দ হচ্ছে حي যার অর্থ জীবিত। অর্থাৎ জীবিত মানুষের জন্য দোয়া ও অভিবাদন কে তাহিয়্যাত বলে । আমরা যে জীবিত মানুষকে সালাম জানাই তা মূলত সালামের মাধ্যমে একে অপরকে অভিবাদন জানাই দোয়া হিসাবে। পবিত্র কুরআনে তাহিয়্যাত শব্দটি মোট ছয়টি আয়াতে এসেছে এবং এই ছয়টি আয়াতেই জীবিত মানুষকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে আল্লাহ্ কে নয়। দেখুন নিচের আয়াত গুলিতে কি বলা হয়েছে —

وَاِذَا حُيِّيْتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوْا بِاَحْسَنَ مِنْهَاۤ اَوْ رُدُّوْهَا ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ حَسِيْبًا
আর যখন তোমাদেরকে কোন অভিবাদন জানানো হয় তখন (তার জবাবে) তোমরা তার চেয়ে আরো ভাল অভিবাদন জানাবে কিংবা (অন্ততপক্ষে) একই অভিবাদন ফিরিয়ে দেবে। আল্লাহ তো সবকিছুরই হিসাব গ্রহণকারী। (আন নিসা ৪:৮৬)
فَاِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰۤي اَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُبٰرَكَةً طَيِّبَةً ؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَكُمُ الْاٰيٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ
তবে যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন (ঘরে অবস্থানকারী) তোমাদের লোকদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতময় পবিত্র অভিবাদনস্বরূপ সালাম দেবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর বিধানসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা বুঝতে পার। (আন-নূর ২৪:৬১)
اُولٰٓئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوْا وَيُلَقَّوْنَ فِيْهَا تَحِيَّةً وَّسَلٰمًا ۙ
এমন লোকদেরকে তাদের ধৈর্যের প্রতিদানে (জান্নাতে) কক্ষ দেওয়া হবে এবং সেখানে তাদেরকে অভিবাদন ও সালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হবে। (আল-ফুরকান ২৫:৭৫)
دَعْوٰىهُمْ فِيْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيْهَا سَلٰمٌ ۚ وَاٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
সেখানে তাদের দোয়া হবে, “হে আল্লাহ! তুমি মহিয়ান”; সেখানে তাদের (পারস্পরিক) অভিবাদন হবে, “সালাম (শান্তি)” এবং তাদের দোয়া শেষ হবে এই বলে যে, সকল প্রশংসা আল্লার, যিনি নিখিল জগতের প্রভু।(ইউনুস ১০:১০)
وَاُدْخِلَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا بِاِذْنِ رَبِّهِمْ ؕ تَحِيَّتُهُمْ فِيْهَا سَلٰمٌ
আর যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে স্থায়ী হবে। তথায় তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।(ইবরাহীম ১৪:২৩)
تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهٗ سَلٰمٌ ۖۚ وَاَعَدَّ لَهُمْ اَجْرًا كَرِيْمًا
যেদিন তারা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে সেদিন তাদের অভিবাদন হবে: ‘সালাম’। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন সম্মানজনক প্রতিদান।(আল-আহযাব ৩৩:৪৪)

♦ উপরের আয়াত গুলির আলোকে এটা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে তাহিয়্যাত (৪:৮৬) বলতে আল্লাহ্ জীবিত মানুষকে সালাম জানানোকে বুঝিয়েছেন অর্থাৎ পরস্পরকে দোয়ার মাধ্যমে অভিবাদন জানানো কে বুঝিয়েছেন। تَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَٰمٌۚ “তাহিয়্যাতুহুম ফীহা ছালামুন” (১০:১০, ১৪:২৩)। মানুষের জন্যই তাহিয়্যাত,আল্লাহর জন্য হামদ। تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ ٱللَّهِ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাহিয়্যাত (সালাম ও অভিবাদন) (২৪:৬১), কিন্তু আল্লাহকে তাহিয়্যাত নয়। লক্ষ্য করুন সূরা আস- সাফফাতের ১৮১ নাম্বার আয়াতে রাসূলদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ মানুষের ক্ষেত্রে সালাম শব্দ ব্যহার করা হয়েছে। এর পরের আয়াতে আল্লাহ্ জন্য হামদ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلْمُرْسَلِينَ
আর রাসূলদের প্রতি সালাম।
وَٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আর সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য।(আস- সাফফাত ৩৭:১৮১-৮২)

★ কেউ কেউ আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত বলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেন যে, আল কুরআনে আল্লাহকে কর্জে হাসানাহ বা উত্তম ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ আল্লাহকে ঋণ দেয়া যায় না। তেমনি আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত বলতে দোষ কোথায়? কুরআনের আয়াতসমূহ থেকে স্পষ্ট যে, কর্জে হাসানাহর ক্ষেত্রে আসলে আল্লাহ ঋণ গ্রহণ করেন একটি রূপক অর্থে এবং তা হলো রসূলের মাধ্যমেই তা সংগৃহীত ও বণ্টিত হয়, মানুষের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত অর্থনৈতিক বণ্টন ব্যবস্থার বাস্তবায়নের জন্য। কুরআনের কোথাও রূপক অর্থেও আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত শব্দটি ব্যবহার হয়নি। সুতরাং তাহিয়্যাতের প্রসঙ্গে কুরআন থেকে যে সূত্র পাওয়া যায় সেটাই এক্ষেত্রে চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হবে, আর তা হলো তাহিয়্যাত হচ্ছে সালামের মাধ্যমে অভিবাদন, যা মানুষের জন্য প্রযোজ্য আল্লাহর জন্য নয়, আল্লাহর জন্য হচ্ছে হামদ যা আল্লাহ্ কুরআনের শুরুতেই বলে দিয়েছেন।
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۙ
‘আলহামদুলিল্লা-হি রাব্বিল ‘আ-লামীন।

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব।(হামদ ১:২)

♦ এবার আসুন প্রচলিত হাদিসের মাধ্যমে আমরা তাশাহুদ নামে কি পাঠ করছি সেটা দেখি।
اَلتَّحِيَّاتُ ِللهِ

আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি

অর্থ: আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত (অর্থাৎ আল্লাহর জন্য সালাম (দোয়া) ও অভিবাদন)

♦ চিন্তা করুন যে আল্লাহ্ তাহিয়্যাত শব্দ দিয়ে মানুষের জন্য দোয়া ও অভিবাদন নির্ধারন করেছেন (৪:৮৬) সেই তাহিয়্যাত কি আল্লাহ্ তাঁর জন্য নির্ধারন করতে পারেন? আল্লাহ্ কি মানুষের দোয়ার মুখাপেক্ষী? মা’আ-যাল্লাহ্। এর মাধ্যমে মানুষের জন্য তাহিয়্যাতে আল্লাহ্কে শরিক করা হয়েছে যা সুস্পষ্ট শিরক।

♦ প্রচলিত এই তাশাহুদের আরেকটি আপত্তির দিক হলো, এতে রসূলকে সম্বোধন করে বলা হয়, “ইয়া আইয়ুহান্নাবিয়্যু” (হে নবী)। অথচ আমরা এখন তা বলতে পারি না, কারণ রসূল আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই, জীবিত নেই। মৃত ব্যক্তিকে সম্বোধন করে কোনো কথা বলা যেতে পারে না।আল্লাহর রাসূল কি এমন তাশাহুদ শিক্ষা দিতে পারে যে তাশাহুদের শব্দ সাহাবিরা নিজেই পরিবর্তন করতে পারে? অথবা জীবিত থাকা অবস্হায় পড়লে শুদ্ধ হবে আর মৃত অবস্হায় পড়লে অসুদ্ধ হবে? এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য রাসূল কেন বলে গেলেন না যে আমি জীবিত অবস্হায় তোমরা এই শব্দ এই ভাবে পড়বে আর আমার মৃত্যুর পর এই শব্দ এই ভাবে পড়বে অথবা মৃত্যুর পরও এই ভাবে পড়লে সমস্যা নাই ? এই না বলে যাওয়াটা কি ত্রুটি নয়? এই না বলে যাওয়ার করনেইতো রাসূলের মৃত্যুর পর তাশাহুদ নিয়ে সাহাবীদের মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে, তা নয় কি? আল্লাহ্ কি রাসূলের কথিত হাদিসের মাধ্যমে এমন বিধান দিতে পারে, পরে রাসূলের মৃত্যুর পর সাহাবীরা দুই দলে বিভক্ত হবে? একদল শব্দ পরিবর্তন করে পড়বে এটা কি বিশ্বাস যোগ্য? দেখুন তথাকথিত মুহাদ্দিসরা তাদের বইতে কি লিখে রেখেছেন?

তাশাহহুদ সম্পর্কিত সকল ছহীহ মরফূ হাদীছে রাসূল (ছাঃ)-কে সম্বোধন সূচক ‘আইয়ুহান্নাবী’ শব্দ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) প্রমুখ কতিপয় ছাহাবী ‘আইয়ুহান্নাবী’-এর পরিবর্তে ‘আলান্নাবী’ বলতে থাকেন। ইবনু মাসউদ বলেনঃ আমরা উক্ত শব্দে অর্থাৎ أَيُّهَا النَّبِيُّ হে নাবী! সম্বোধন সূচক শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে তাশাহহুদ পাঠ করতাম যখন তিনি আমাদের মাঝে বিদ্যমান ছিলেন, কিন্তু যখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন তখন আমরা أَيُّهَا النَّبِيُّ এর পরিবর্তে على النبى এর অর্থাৎ নাবীর উপর বলতাম। অথচ সকল ছাহাবী, তাবেঈন, মুহাদ্দেছীন, ফুক্বাহা পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ পড়েছেন। এই মতভেদের কারণ হ’ল এই যে, রাসূলের জীবদ্দশায় তাঁকে সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলা গেলেও তাঁর মৃত্যুর পরে তো আর তাঁকে ঐভাবে সম্বোধন করা যায় না। কেননা সরাসরি এরূপ গায়েবী সম্বোধন কেবল আল্লাহকেই করা যায়। মৃত্যুর পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে এভাবে সম্বোধন করলে তাঁকে আল্লাহ সাব্যস্ত করা হয়ে যায়। সেকারণ কিছু সংখ্যক ছাহাবী ‘আলান্নাবী’ অর্থাৎ ‘নবীর উপরে’ বলতে থাকেন।

পক্ষান্তরে অন্য সকল ছাহাবী পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতে থাকেন। ত্বীবী (মৃ: ৭৪৩ হিঃ) বলেন, এটা এজন্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁদেরকে উক্ত শব্দেই ‘তাশাহহুদ’ শিক্ষা দিয়েছিলেন। তার কোন অংশ তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবর্তন করতে বলে যাননি। অতএব ছাহাবায়ে কেরাম উক্ত শব্দ পরিবর্তনে রাজী হননি। ছাহেবে মির‘আত বলেন, জীবিত-মৃত কিংবা উপস্থিতি-অনুপস্থিতির বিষয়টি ধর্তব্য নয়। কেননা স্বীয় জীবদ্দশায়ও তিনি বহু সময় ছাহাবীদের থেকে দূরে সফরে বা জিহাদের ময়দানে থাকতেন। তবুও তারা তাশাহহুদে নবীকে উক্ত সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতেন। তারা তাঁর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে উক্ত সম্বোধনে কোন হেরফের করতেন না। তাছাড়া বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য ‘খাছ’ বিষয়াবলীর (من خصائصه) অন্তর্ভুক্ত। এটা স্রেফ তাশাহহুদের মধ্যেই পড়া যাবে, অন্য সময় নয়।

উল্লেখ্য যে, এই সম্বোধনের মধ্যে কবর পূজারীদের জন্য কোন সুযোগ নেই। তারা এই হাদীছের দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-কে সর্বত্র হাযির-নাযির প্রমাণ করতে চায় ও মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য তাঁকে ‘অসীলা’ হিসাবে গ্রহণ করতে চায়। এটা পরিষ্কারভাবে ‘শিরকে আকবর’ বা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (তথ্য সূত্র ছালাতুর রাসূল সাঃ, আসাদুল্লাহ্ গালিব, রাসূল সাঃ এর সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি, নাছির উদ্দিন আলবানী)

♦কথিত দুরূদে ইবরাহীম।

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ।

উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউঅআলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউঅ আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ:- হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।

হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।

♦ প্রথম কথা হচ্ছে কথিত তাশাহুদ ও দুরূদ কুরআনে নেই আছে হাদিসে। প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কুরআন পাঠ করে সালাত আদায় করতে বলেছেন ফলে রাসূল কি করে কুরআনের বিরুদ্ধে গিয়ে সালাতে এই তাশাহুদ ও দুরূদ পড়তে বলবে? দেখুন নিচের আয়াত গুলিতে কি বলা হচ্ছে —-

إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتْ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ كِتَٰبًا مَّوْقُوتًا
নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে কিতাব (পাঠ)*।(আন-নিসা ৪:১০৩)

  • রাসূলের সময় কুরআন ছাড়া আর কোন বই ছিলনা। ফলে এই আয়াত প্রমান করে যে রাসূল সালাতে সব কিছু কুরআন থেকে পাঠ করতেন।

أَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ لِدُلُوكِ ٱلشَّمْسِ إِلَىٰ غَسَقِ ٱلَّيْلِ وَقُرْءَانَ ٱلْفَجْرِۖ إِنَّ قُرْءَانَ ٱلْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا
সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করবে এবং ফজরে (অধিক) কুরআন পাঠ করবে। ফজরের কুরআন পাঠ অনুধাবনে সহায়ক।
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِۦ
আর রাত্রির কিছু অংশে তা (কুরআন) দিয়ে তাহাজ্জুদ (সালাত) পড়।(ইসরা ১৭:৭৮-৭৯)

اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡكَ مِنَ الۡكِتٰبِ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنۡهٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَالۡمُنۡكَرِ ؕ وَلَذِكۡرُ اللّٰهِ اَكۡبَرُ ؕ وَاللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ
তোমার কাছে যে কিতাব (কোরআন) নাযিল করা হয়েছে তা থেকে পাঠ করে সালাত কায়েম কর। নিশ্চয়ই নামায অশ্লীলতা ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণই সবচেয়ে বড়। আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।(আল-আনকাবূত ২৯:৪৫)
اِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتٰبَ اللّٰهِ وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ ۙ
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না।(ফাতির ৩৫:২৯)

★ সালাতে কথিত দুরূদে ইবরাহীমে নবী নাকি এই ভাবে দোয়া করতেন “হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর” এই ভাবে নিজের নাম নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা কি বিনয়ের মধ্যে পরে? অথচ আল্লাহ্ বিনয়ের সাথে সালাতে দাঁড়াতে বলেছেন (২:২৩৮) ফলে আল্লাহ্ কি বিনয় বহির্ভূত এই ভাবে নবীকে নিজের নাম নিয়ে দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? কুরআনে কি এর কোন দৃষ্টান্ত আছে? নবী বাদ দিন কোন সাধারন মানুষ কি নিজের নাম নিয়ে আল্লাহর কাছে এই ভাবে দোয়া করে? কুরআনের অসংখ্য আয়াতে নবীরা নিজের জন্য দোয়া করতেন ‘আমাকে’ শব্দ দিয়ে যা আকুতি ও বিনয়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এমন কি স্বয়ং আল্লাহ্ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে এই ভাবে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন।

وَقُل رَّبِّ أَدْخِلْنِى مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِى مُخْرَجَ صِدْقٍ وَٱجْعَل لِّى مِن لَّدُنكَ سُلْطَٰنًا نَّصِيرًا
বল(মুহাম্মদ), হে আমার রব! আমাকে দাখিল কর সত্যরূপে এবং আমাকে বের কর সত্যরূপে এবং দান কর আমাকে নিজের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সাহায্য।(আল-ইসরা ১৭:৮০)
فَتَقَبَّلَہَا رَبُّہَا بِقَبُوۡلٍ حَسَنٍ وَّ اَنۡۢبَتَہَا نَبَاتًا حَسَنًا ۙ وَّ کَفَّلَہَا زَکَرِیَّا ۚؕ کُلَّمَا دَخَلَ عَلَیۡہَا زَکَرِیَّا الۡمِحۡرَابَ ۙ وَجَدَ عِنۡدَہَا رِزۡقًا ۚ قَالَ یٰمَرۡیَمُ اَنّٰی لَکِ ہٰذَا ؕ قَالَتۡ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَرۡزُقُ مَنۡ یَّشَآءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۳۷﴾
অতঃপর তার রব তাকে(মারিয়াম কে) উত্তমভাবে কবুল করলেন এবং তাকে উত্তমভাবে গড়ে তুললেন। আর তাকে যাকারিয়্যার দায়িত্বে দিলেন। যখনই যাকারিয়্যা তার কাছে তার কক্ষে প্রবেশ করত, তখনই তার নিকট খাদ্যসামগ্রী পেত। সে বলত, ‘হে মারইয়াম, কোথা থেকে তোমার জন্য এটি’? সে বলত, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে চান বিনা হিসাবে রিয্ক দান করেন’।
ہُنَالِکَ دَعَا زَکَرِیَّا رَبَّہٗ ۚ قَالَ رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۸﴾
সেখানে যাকারিয়্যা তার রবের কাছে প্রার্থনা করেছিল, সে বলল, ‘হে আমর রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’।(আলে-ইমরান ৩:৩৭-৩৮)
وَزَكَرِيَّآ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥ رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ
আর স্মরণ কর যাকারিয়্যার কথা, যখন সে তার রবকে আহবান করে বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, তুমি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী’।
فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ وَوَهَبْنَا لَهُۥ يَحْيَىٰ وَأَصْلَحْنَا لَهُۥ زَوْجَهُۥٓۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ يُسَٰرِعُونَ فِى ٱلْخَيْرَٰتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًاۖ وَكَانُوا۟ لَنَا خَٰشِعِينَ
অতঃপর আমি তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া। আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী করেছিলাম। তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতি সহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার নিকট বিনয়ী।(আল-আম্বিয়া ২১:৮৯-৯০)

***আল্লাহ্ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে সালামুন আলা ইবরাহীমের আদর্শ অনুসরণ করতে বলেছেন। দেখুন সালামুন আলা ইবরাহীম কি ভাবে আল্লাহর নিকট দোয়া করেছিলেন —

رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।(আল-বাকারাহ ২:১২৮)

★ এবার দেখুন কথিত মানব রচিত হাদিসে কি বলা হচ্ছে? এই দুরূদ যে মানুষের তৈরি রাসূলের নয় তা সুস্পষ্ট।

তাশাহহুদের পর নবী মুবাশ্‌শির (সাঃ) নিজের উপর দরুদ পাঠ করতেন। (আহমাদ, মুসনাদ ৫/৩৭৪, হাকেম, মুস্তাদরাক)(তথ্য সূত্র স্বলাতে মুবাশশির, আব্দুল হামিদ ফাইযী)

★ এরপর কথিত দুরূদে বলা হচ্ছে “তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ করেছ”। সালামুন আলা ইবরাহীম এর পিতা ছিল মুশরিক। প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কি তার উপরও বরকত নাজিল করেছিলেন? আবার বলা হচ্ছে “হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ কর”। ইতিহাস বলে আবু লাহাব ও আবু তালিব ছিল রাসূলের আপন চাচা এবং তারা উভয় মুশরিক অবস্থায় মারা যায়। তার মানে তথিত দুরূদের মাধ্যমে আমরা আবু লাহাব ও আবু তালিব উভয় এর উপরও আল্লাহর বরকত বর্ষণের দোয়া করছি, তা নয়কি? অথচ কুরআনের ১১১ নাম্বার সূরার নাম করনই করা হয়েছে ‘লাহাব’। এই সূরা একনম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, تَبَّتْ يَدَآ أَبِى لَهَبٍ وَتَبَّ( আবূ লাহাবের হাত দু‘টো ধ্বংস হোক, ধ্বংস হোক সে নিজে)। ফলে এটি যে সুস্পষ্ট কুরআন বিরোধী কুফরী দুরূদ তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

★ সালামুন আলা ইবরাহীম তাঁর বংশধরের মধ্য থেকে মক্কাতে একজন রাসূল পাঠানোর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিল।আল্লাহ্ তার প্রার্থনা কবুল করেছিল। ফলে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সালামুন আলাল মুরছালিন) ছিল সালামুন আলা ইবরাহীম এর বংশধর। ফলে আল্লাহর পক্ষে কথিত দুরূদের মাধ্যমে কি ভাবে বলা সম্ভব যে মুহাম্মদের বংশের উপর বরকত বর্ষনের দোয়া কর? অথচ তিনি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে পাঠিয়েছেন সালামুন আলা ইবরাহীম এর বংশধরের মধ্য থেকে। ফলে রাসূলের বংশধরের প্রসঙ্গ আসা কি অবান্তর নয়?এটা কি কুরআন বিরোধী নয়? সুতরাং এই দুরূদ যে অবান্তর লাহওয়াল হাদিস দিয়ে বানানো হয়েছে তা দিবালোকের মতো পরিস্কার।

وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَٰهِۦمُ ٱلْقَوَاعِدَ مِنَ ٱلْبَيْتِ وَإِسْمَٰعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল কাবার ভিত্গুলো উঠাচ্ছিল (এবং বলছিল,) ‘হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’।
رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।
رَبَّنَا وَٱبْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’।
كَمَآ أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًا مِّنكُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا۟ تَعْلَمُونَ
যেভাবে আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।(আল-বাকারাহ ২:১২৭-১২৯,১৫১)

★ ইবাদত অর্থাৎ আদেশ নিষেধ পালন করতে হবে একমাত্র আল্লাহর। সালাত হচ্ছে একটি ইবাদত যা আল্লাহ্ শুধু তাঁর স্মরণার্থে কায়েম করতে বলেছেন। ফলে কুরআন বহির্ভুত কোন নির্দেশের আলোকে সালাতে কোন মানুষের নাম নিয়ে তাকে স্মরন করার অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে স্মরণ করার পাশাপাশি ঐ মানুষকে স্মরন করা যা সুস্পষ্ট শিরক। অপর দিকে কথিত দুরূদে আল্লাহ্ কি তথাকথিত হাদিসের মাধ্যমে শুধুমাত্র মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) এর জন্য মুমিনদের প্রতি দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? এতে কি রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য সূচিত হয় না? অথচ আল্লাহ্ মুমিনদেরকে রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য করতে নিষেধ করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে যে আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে মুমিনদেরকে রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছেন, সে আল্লাহ্ কি শুধু মাত্র একজন রাসূলের জন্য মুমিনদেরকে প্রার্থক্য সৃষ্টিকারী দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? তথাকথিত মুহাদ্দিস সাহেবরা প্রচলিত হাদিসকে বলছেন ওহী, প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কি পরস্পর বিরোধী ওহী নাযিল করতে পারেন (৪:৮২)?

مَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنۡ یُّؤۡتِیَهُ اللّٰهُ الۡكِتٰبَ وَالۡحُكۡمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُوۡلَ لِلنَّاسِ كُوۡنُوۡا عِبَادًا لِّیۡ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلٰكِنۡ كُوۡنُوۡا رَبّٰنِیّٖنَ بِمَا كُنۡتُمۡ تُعَلِّمُوۡنَ الۡكِتٰبَ وَبِمَا كُنۡتُمۡ تَدۡرُسُوۡنَ ۙ
কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার উপাসক হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’।(আলি ‘ইমরান ৩:৭৯)*

*যদি তাই হয় তবে কিতাব বহির্ভুত নির্দেশ হিসাবে নবী কি করে বলতে পারে যে সালাতে আমার জন্য দুরূদ পাঠ করো? এটা কি নবীর নির্দেশ নয়? এই নির্দেশতো নবীর নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রয়োজনের তাগিতে সাময়িক কোন নির্দেশ নয়, এই নির্দেশতো মুসলিমরা ইবাদত হিসাবে স্হায়ী নির্দেশ হিসাবে পালন করে। ইবাদত হিসাবে স্হায়ী ভাবে কোন মানুষের নির্দেশ পালন করাকি তার ইবাদত করা নয়? অথচ আল্লাহ্ বলেছেন ‘তোমরা রববানী হও’ অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশ পালনকারী হও। কারন নির্দেশ দাতা একমাত্র আল্লাহ্ (১২:৪০) আল্লাহর বিধিবদ্ধ নির্দেশ (৪২:১৩) আছে কুরআনে আর কোথাও নেই। ফলে কুরআন বহির্ভুত এই সমস্ত বিধান কে বিধিবদ্ধ বিধান হিসাবে পালন করা সম্পূর্ণ কুফরী।কারন বিধিবদ্ধ কিতাব হচ্ছে কুরআন। এর সাথে অন্য কিতাবের বিধানকে বিধিবদ্ধ কিতাবের বিধান হিসাবে মানার অর্থ হচ্ছে কুরআনের সাথে শরিক করা।

إذا صلى أحدكم فليبدأ بتحميد ربه جل وعز والثناء عليه ثم يصلي وفي رواية: ليصل) على النبي صلى الله عليه وسلم ثم يدعو بما شاء
তোমাদের কেউ ছালাত আদায় করলে প্ৰথমে যেন আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান বর্ণনা করে। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ছালাত পাঠ করে। অতঃপর যা ইচ্ছা দু’আ করবে।(আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনু খুযাইমাহ। তথ্য সূত্র ‘সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি’ নাছির উদ্দিন আলবানী)

اِنَّنِیۡۤ اَنَا اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعۡبُدۡنِیۡ ۙ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكۡرِیۡ
আমি আল্লাহ! আমি ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই; অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।(ত্ব-হা ২০:১৪)
قُلۡ اِنَّ صَلَاتِیۡ وَنُسُكِیۡ وَمَحۡیَایَ وَمَمَاتِیۡ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۙ
বল, ‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’।(আল-আন‘আম ৬:১৬২)

***আল্লাহ্ রাসূলগণের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহ্ মানুষকে নবীনদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছেন,যার কারনে মুমিনরা নবীনদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতোনা।

تِلْكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۘ مِّنْهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجَٰتٍۚ وَءَاتَيْنَا عِيسَى ٱبْنَ مَرْيَمَ ٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَيَّدْنَٰهُ بِرُوحِ ٱلْقُدُسِۗ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلَ ٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِم مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَٰتُ وَلَٰكِنِ ٱخْتَلَفُوا۟ فَمِنْهُم مَّنْ ءَامَنَ وَمِنْهُم مَّن كَفَرَۚ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلُوا۟ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
ঐ রাসূলগণ, আমি তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, তাদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কারো কারো মর্যাদা উঁচু করেছেন। আর আমি ঈসা ইবনে মারয়ামকে দিয়েছি সুস্পষ্ট প্রমাণাদি এবং আমি তাকে শক্তিশালী করেছি রূহুল কুদুস এর মাধ্যমে। আর যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তাদের পরবর্তীরা লড়াই করত না, তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণসমূহ আসার পর। কিন্তু তারা মতবিরোধ করেছে। ফলে তাদের মধ্যে কেউ ঈমান এনেছে, আর তাদের কেউ কুফরী করেছে। আর আল্লাহ যদি চাইতেন, তাহলে তারা লড়াই করত না। কিন্তু আল্লাহ যা চান, তা করেন।(আল-বাকারাহ ২:২৫৩)
وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَلَمْ يُفَرِّقُوْا بَيْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ اُولٰٓئِكَ سَوْفَ يُؤْتِيْهِمْ اُجُوْرَهُمْ ؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করেনি, তাদেরকে অচিরেই তিনি তাদের প্রতিদান দিবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আন নিসা ৪:১৫২)
قُلْ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلَيْنَا وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلٰۤي اِبْرٰهِيْمَ وَاِسْمٰعِيْلَ وَاِسْحٰقَ وَيَعْقُوْبَ وَالْاَسْبَاطِ وَمَاۤ اُوْتِيَ مُوْسٰي وَعِيْسٰي وَالنَّبِيُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۪ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ وَنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ

বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর, আর যা নাযিল হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর। আর যা দেয়া হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে তাদের রবের পক্ষ থেকে, আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আমরা তারই প্রতি আত্মসমর্পণকারী’। (আলে-ইমরান ৩:৮৪)
اِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيُرِيْدُوْنَ اَنْ يُّفَرِّقُوْا بَيْنَ اللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّنَكْفُرُ بِبَعْضٍ ۙ وَّيُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّتَّخِذُوْا بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا ۙ
নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায় ।
اُولٰٓئِكَ هُمُ الْكٰفِرُوْنَ حَقًّا ۚ وَاَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِيْنَ عَذَابًا مُّهِيْنًا
তারাই প্রকৃত কাফির এবং আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি অপমানকর আযাব।(আন নিসা ৪:১৫০-১৫১)

♦ আল্লাহর পক্ষে পরস্পর বিরোধী ওহী নাযিল করা সম্ভব নয়, তার প্রমান নিচের আয়াতটি। কারন কুরআনে পরস্পর বিরোধী কোন ওহী নেই। ফলে আল্লাহর পক্ষে কুরআন বিরোধী ওহী হাদিসের মাধ্যমে নাযিল করার প্রশ্নই আসেনা। ফলে কথিত দুরূদে ইবরাহীম যে মানব সৃষ্ট তা সুস্পষ্ট।

أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلْقُرْءَانَۚ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِندِ غَيْرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُوا۟ فِيهِ ٱخْتِلَٰفًا كَثِيرًا
তারা কি কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না? আর যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হত, তবে অবশ্যই তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত।(আন-নিসা ৪:৮২)

Source fb: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid02wTFMix55pNu3E1wz9NY4jgB33v7UrNwzZAauJBr7b1a8XX6hUfWuadirjaSDXAnvl&id=100003737428249

Meaning of sazdah

সিজদা অর্থ #নির্দেশনা মান্য করে কর্ম পালন ;

(ফেরেস্তারা নাম সমূহ বলতে না-পারায়)

ফেরেস্তাদের

(আদম নাম সমূহ বলে দেওয়ার জন্য)

আদমকেজ্ঞানিকে সিজদা/#সম্মানমান্য করতে বলেছেন #আল্লাহ্ ২ঃ৩১++++++

~~ মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে কুর্নিশ করার কথা কোন্ আয়াতে আছে ~
ওরা কোন্ দিকে কাহাকে মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে কুর্নিশ করে ?৫০ঃ১৬, ৫১ঃ৫৬


>
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্‌কে সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে ? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হইয়াছে শাস্তি। আল্লাহ্ যাহাকে হেয় করেন তাহার সম্মানদাতা কেহই নাই; আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহা করেন।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ يَسْجُدُ لَهٗ مَنْ فِى السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِى الْاَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُوْمُ وَ الْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَآبُّ وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ‌ ؕ وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ‌ؕ وَمَنْ يُّهِنِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ مُّكْرِمٍ‌ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَفْعَلُ مَا يَشَآءُ ۩ ؕসূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ১৮

2-Meaning of Sizdah-bn short video:
https://fb.watch/iIH6LgqRWt/

About Namaz and Salat

প্রচলিত নামাজের ষ্ট্রাকচার নিয়ে কিছু প্রশ্ন সত্যিই চিন্তা জাগানিয়া:

(I) প্রচলিত ওজু কি আল্লাহর বিধান না মানুষ্য তৈরী? আল্লাহ বলেছেন মোমিন/বিশ্বাসীরাই পবিত্র, ৫:৬, ৪:৪৩ তো সার্বক্ষনিক পরিচ্ছন্নতার আয়াত।
(II) কিবলা কি আল্লাহর দেয়া? পূর্ব পশ্চীমমূখি হওয়াতে তো কোন পূন্য নেই ২:১৭৭ পূর্ব পশ্চিম ও সব দিকইতো আল্লাহর ২:১১৫। আল্লাহর অবস্থান তো সকল পৃথিবী ও আকাশ মন্ডলী পরিবেষ্টন করে আছে ২:২৫৫।
(III) ইমামের পিছনে এক্তাদা কি আল্লাহ নির্দেশিত? আল্লাহ আমাদের হৃদয়ের কথা শুনেন ও জানেন, ইমাম আমার হয়ে আল্লাহর সাথে ভায়া মিডিয়া হয়ে আমার মনের কথা বলবেন? আল্লাহর কাছে চাওয়া পাওয়া সবই তো সঙ্গোপনে ৭:৫৫।
(IV) তাকবিরে তাহরিমা তো কোরআনের কোন শব্দ না। আল্লাহুআকবার superlative degree অথচ আল্লাহর তুলনা শুধূই তিনি নিজে। আল্লাহুআকবার কথাটা কি কোরআনে কোথাও আছে? এর অর্থ আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বা আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সর্বশ্রেষ্ঠ মানে কাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ? অন্য গডদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ? সবচেয়ে বড় মানে অন্য সকল গডদের চেয়ে বড়? শব্দে তুলনা রয়েছে অথচ আল্লাহর কোন তুলনা চলে না। আল্লাহর তুলনা তিনি নিজেই। সূরা ইখলাস আয়াত
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾
৪. তাঁর তুলনা শুধু তিনিই)।
(V) আল্লাহর দেয়া দিক নিদের্শনা আল্লাহকে শোনানো কি ঠিক? নামাজে আল্লাহকে বলি ‘তোমাকে দিয়েছি কাউসার….’ আল্লাহকে শব্দ করে বা ফিস ফিস করে শুনাই ‘তুমি কি দেখ নাই আমি হস্তিবাহিনীকে কি করেছি?…’।
(VI) তাশাহুদ – হে নবী সম্মোধন করে প্রতি বৈঠকে সালাম দেই, নবীকি জীবিত? আর সাক্ষ্যও দেই, আল্লাহ কি আমার সাক্ষ্য চেয়েছেন? আমি সাক্ষ্য দেয়ার কে? সাক্ষী তো দিতে হয় অবলোকনের পরে। আমি কি অবলোকন করেছি?
(VII) সালাম ফেরানোতে আমরা ফেরেশতাদের সালাম দিয়ে নামাজ শেষ করি অথচ তারা আজ্ঞাবহ মাত্র তারা জান্নাতিদের সালাম দিবে সালামুন আলাইকুম বলে।(সুরা রাদ ১৩-২৪)
(VIII) একজন চিন্তকের মনোভাব উল্লেখ করছি: মাত্র ৭ টা পয়েন্ট? রুকু – সিজদা? রুকুর পরে সিজদা? না সিজদার পর রুকু? রুকু ১টা, সিজদা ২ টা কেন? এরকম তো হাজার হাজার প্রশ্ন আমার মনে? নামাজই যদি বেহেশ্তের চাবি হয় তাহলে তার ডিটেইল বর্ণনা নেই কেন? আমার নামাজ কেন হুজুরের পিছনে? হুজুর কী আমার জন্য জবাবদিহি করবেন? না করলে আমি তার পিছনে কেন?
…. উফ…. এরকম লিখতে গেলে রাত ভোর হয়ে যাবে… তবু জিজ্ঞাসা শেষ হবে না।
… আমি দিশেহারা …
… এজন্য আমি একমাত্র আল্লাহরই সাহায্য চাই ..

Allah Subhanahu Wa Ta’ala said:

وَلَا تَقۡفُ مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٌ ۚ إِنَّ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡبَصَرَ وَٱلۡفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡئُولًا

“আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই। কান, চোখ আর অন্তর- এগুলোর সকল বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
(QS. Al-Isra’ 17: Verse 36)

✔️Salat ok Murad

আল কুরআনে সালাত অর্থ কি?
সালাত বলতে কি বুঝায়?
মুরাদ বিন আমজাদ
০+০+০+০+০
অনেকদিন যাবত অনলাইনে অফলাইনে আমাকে সালাত সম্পর্কে কুরআন কি বলে সে সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন করা হচ্ছিল। আমি তাদের কোন জবাব দেইনি। আজকে যে আলোচনা করছি সেটা আমার কোরআন থেকে গবেষণা মাত্র। আমার গবেষণা চূড়ান্ত নয়। আমার ভুল হলে কোরআন থেকে দেখিয়ে দিলে সংশোধন করব ইনশাল্লাহ![উল্লেখ্য যে, এই লেখা দ্বারা আমি কোন আনুষ্ঠানিক সালাতকে অস্বীকার করছি না না বুঝে বাজে মন্তব্য করা থেকে দূরে থাকলে ভালো হয়।]

সর্বপ্রথম একথা বুঝে নিন যে সালাত অর্থ কি এটা ডিকশনারি থেকে জানা যাবে না। আল কুরআন থেকে জানতে হবে যেমন,build a house “একটি ঘর তৈরি কর” এখন এই ঘর তৈরি করার বিষয় আপনাকে ডিকশনারিতে পাবেন না বা থাকবে না الصلاة একটি ইসিম বা নাম। এটা প্রত্যেক ভাষায় সালাত নামেই বলতে হবে।
সালাত বুঝার জন্য কোন ডিকশনারির দরকার নাই। প্রত্যেক জবানে সালাত কে সলাতই বলতে হবে। সালাত দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন আল্লাহ তা কোরআন থেকে জানতে হবে। আসুন আমরা জেনে নিই আল্লাহ পাক সালাত দ্বারা কি বুঝিয়েছেন।
62:9

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا إِذَا نُودِىَ لِلصَّلٰوةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلٰى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

হে মুমিনগণ, যখন জুমু‘আর দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরের/ স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।
উক্ত আয়াতে সালাতের জন্য আহ্বান করে বলা হয়েছে জিকিরের দিকে ধাবিত হও। বুঝা গেল সালাত মূলত জিকির। বিষয়টি আরো ক্লিয়ার হয়ে যায় দৃড় বিশ্বাস জন্মায় আয়াত নিম্নোক্ত আয়াতটি।
20:14
إِنَّنِىٓ أَنَا اللَّهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَاعْبُدْنِى وَأَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكْرِىٓ
‘নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; সুতরাং আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর’।
বুঝা যাচ্ছে জিকিরুল্লাহই/ আল্লাহর স্মরণই সালাত। যদি উপর্যুক্ত আয়াত আপনার বিবেক না মানে তাহলে পরবর্তী আয়ত স্পষ্ট হয়ে গেল যে,জিকুরিল্লাহই সালাত।

এখন দেখার দরকার যে জিকিরুল্লাহ কি? আসুন দেখি জিকির দ্বারা কি বুঝায় বা তার উদ্দেশ্য কি?
জিকির দ্বারা উদ্দেশ্য আল কুরআন ।
65:10
قَدْ أَنزَلَ اللَّهُ إِلَيْكُمْ ذِكْرًا
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন একটি উপদেশ তথা কুরআন।

আরো দেখুন,
41:41

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالذِّكْرِ لَمَّا جَآءَهُمْ ۖ وَإِنَّهُۥ لَكِتٰبٌ عَزِيزٌ

নিশ্চয় যারা بِالذِّكْرِ উপদেশ [কুরআন] আসার পরও তা অস্বীকার করে [ তাদেরকে অবশ্যই এর পরিণাম ভোগ করতে হবে]। আর এটি নিশ্চয় এক সম্মানিত গ্রন্থ।
অনুরূপ আরো দেখুন:
21:50

وَهٰذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنٰهُ ۚ أَفَأَنتُمْ لَهُۥ مُنكِرُونَ

আর এটা বরকতময় ذِكْرٌ উপদেশ, কুরআন যা আমি নাযিল করেছি। তবুও কি তোমরা তা অস্বীকার করবে?

37:3
فَالتّٰلِيٰتِ ذِكْرًا

আর ذِكْرًا উপদেশ গ্রন্থ (আসমানী কিতাব) তিলাওয়াতকারীদের;

কুরআনকে জিকির বলা হয়েছে এটা যদি না মানেন তো কোরআনের মধ্যে জিকির আছে এটা অস্বীকার করবেন কি করে দেখুন:
38:1

صٓ ۚ وَالْقُرْءَانِ ذِى الذِّكْرِ

সোয়াদ; কসম উপদেশপূর্ণ কুরআনের।
একথা ঠিক যে জিকির শব্দের অর্থ শুধু কুরআন তা নয় জিকির শব্দের অর্থ উপদেশ আবার নসিহাত অথবা স্মরণ হতে পারে। তবে সালাত যে জিকিরের কথা বলে সেটা হল কোরআন। কারণ কোরআনের একটি গুণবাচক নাম জিকির।
এ বিষয়ে আরো আয়াত দেখে নিতে পারেন সেখানে জিকের মানে কোরআনে কি বলা হয়েছে দেখুন:
36:69

وَمَا عَلَّمْنٰهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنۢبَغِى لَهُۥٓ ۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْءَانٌ مُّبِينٌ

আমি রাসূলকে কাব্য শিখাইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো কেবল এক উপদেশ ও স্পষ্ট কুরআন মাত্র।
36:11
إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِىَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَيْبِ ۖ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ

তুমি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবে যে الذِّكْرَ উপদেশ(কুরআন) মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।
3:58
ذٰلِكَ نَتْلُوهُ عَلَيْكَ مِنَ الْءَايٰتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيم
উপদেশ(কুরআন) মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।

ذٰلِكَ نَتْلُوهُ عَلَيْكَ مِنَ الْءَايٰتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيمِ

এটি আমি তোমার উপর তিলাওয়াত করছি, আয়াতসমূহ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ(কুরআন) থেকে।
54:25
أَءُلْقِىَ الذِّكْرُ عَلَيْهِ مِنۢ بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌ
‘আমাদের মধ্য থেকে কি তার ওপরই উপদেশবাণী পাঠানো হয়েছে ? বরং সে চরম মিথ্যাবাদী অহঙ্কারী’।
68:51
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصٰرِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُۥ لَمَجْنُونٌ

আর কাফিররা যখন উপদেশবাণী শুনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, ‘এ তো এক পাগল’।
68:52
وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعٰلَمِينَ
আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী(কুরআন)।
43:5
أَفَنَضْرِبُ عَنكُمُ الذِّكْرَ صَفْحًا أَن كُنتُمْ قَوْمًا مُّسْرِفِينَ
তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি, এ কারণে কি আমি তোমাদের কাছ থেকে এ উপদেশবাণী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেব?

জিকিরের একটি অর্থ হলো স্মরণিকা অর্থাৎ কোরআন স্মরণ করে কোরআনের জিকিরের মাধ্যমে সালাত প্রতিষ্ঠা করা তার মানে কোরআন বুঝে বুঝে তদঅনুযায়ী আমল করাই সালাত।
চলবে ইনশাল্লাহ……….!

Salat,ruku,sazdah etc bn.fb

সালামুন আলাইকুম,
মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে মহান আল্লাহ ১১৪ টি সূরা নাযিল করেছেন, যার আয়াত সংখ্যা ৬২৩৬ টি মতান্তরে আরও বেশি। তারমধ্যে ٱلصَّلَوٰةَ সালাত শব্দটি ৮৩ বার পাওয়া যায় মুল শব্দ  صَلُّو সোয়াদ লাম ওয়াও।ٱلصَّلَوٰةَবা صَلُّو মোট ৯৯ বার পাওয়া যায়।
১৩ বার পাওয়া যায় رْكَعُو রুকু,
সিজদা ٱلسُّجُودِ ৬৪ বার পাওয়া যায়, সিজদার বহুবচনمَسَٰجِدَ মসজিদ এটা পাওয়া যায় ২৮ বার, মোট ৯২ বার পাওয়া যায়। যদি সালাত রুকু সিজদা একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হত তাহলে।
সালামুন আলা মুসা مُّوسَىٰ নবীর নাম পাওয়া যায় ১৩৬ বার।
সালামুন আলা মুসাকে নিয়ে অনেক লম্বা চওড়া ইতিহাস কুরআনের দেখা যায়, যদি প্রচলিত নিয়মে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাধ্যতামূলক হত তাহলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন অবশ্যই মানবজাতিকে বলতেন হে মানুষ আমার শেষ পয়গম্বর সালামুন আলা মোহাম্মদ এর সাথে আমি দিদার করেছি সাক্ষাৎ করেছি এবং তোমাদের জন্য উপহার স্বরূপ দৈনিক 50 ওয়াক্ত নামাজ দিয়েছিলাম , কিন্তু সালামুন আলা মুসার অনুরোধে আমি পঞ্চাশ ওয়াক্তের জায়গায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ করে দিয়েছি অতএব তোমরা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে।
নামাজের নিয়ম।
তোমরা সূরা মায়েদার ৬ নং আয়াত অনুযায়ী ওযু বা গোসল করবে,
অতঃপর নামাজে দাঁড়িয়ে বলবে আল্লাহু আকবার ,আল্লাহু আকবার, আশহাদু আল্লাহ ইলাহা ইল্লাল্লাহ ২ বার, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ,২ বার, হাইয়া আলাসসালাহ ২ বার
হাইয়া আলাল ফালাহ ২ বার,
কদকমাতিচ্ছ সালাহ ২ বার,
অতঃপর কান পর্যন্ত হাত উঠাবে এবং বলবে আল্লাহু আকবার,
অতঃপর সুরা ফাতেহা পাঠ করবে এবং সাথে যে কোন একটি ছোট সূরা অথবা যেকোনো একটি সূরার আয়াত এর অংশ বিশেষ পাঠ করবে, তারপর আল্লাহু আকবার বলে কুজা হয়ে দুই হাঁটুর পরে দুই হাত রাখবে তারপর বলবে সুবাহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আজিম,
আবার সোজা হয়ে দাঁড়াবে এবং বলবে আল্লাহু আকবার তারপর আবার আল্লাহু আকবার বলে মাটিতে কপাল  ঠেকাবে তারপর বলবে সুবাহানাল্লাহ রাব্বিয়াল আলা, এইভাবে দুই রাকাত তিন রাকাত চার রাকাত পাঁচ রাকাত সাত রাকাত দশ রাকাত ১১ রাকাত দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে যদি তাই না করো তোমরা কখনো জান্নাতে যেতে পারবে না।
————————-
এই কথাগুলো বলার জন্য বড়জোর একটি আয়াতই যথেষ্ট ছিল অথবা সালাত নামের একটি সূরা নাযিল করেই সেই সূরার মধ্যে নিয়ম গুলো বলতে পারতেন, কিন্তু মহান আল্লাহ এত বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তিনি এর নিয়ম কানুন কোন কিছুই বলেননি।
অথচ মহান আল্লাহ মানুষকে উদ্দেশ্য করে এভাবে বলেছেন ,
Al-Baqarah 2:21)
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱعْبُدُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ وَٱلَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রভুর দাসত্ব করো, যিনি তোমাদেরকে এবং তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা (অকল্যাণ থেকে) বেঁচে থাকতে পার।

Al-Baqarah 2:168)
يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ كُلُوا۟ مِمَّا فِى ٱلْأَرْضِ حَلَٰلًا طَيِّبًا وَلَا تَتَّبِعُوا۟ خُطُوَٰتِ ٱلشَّيْطَٰنِۚ إِنَّهُۥ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে মানুষ! পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র জিনিসসমূহ খাও; আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে কিন্তু তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।

এভাবে মহান আল্লাহ অসংখ্যবার ডাক দিযে মানুষকে বলেছেন হে মানুষ এটা করো ওটা করো এটা করো না ওটা করো না,
অথচ প্রচলিত নিয়মে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যদি এত বড় গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হত তাহলে অবশ্যই অবশ্যই মহান আল্লাহ একটি সূরার মাধ্যমে অথবা কয়েকটি আয়াতের মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে নিয়ম-কানুন গুলো বলে দিতেন।
————————-
আসল ব্যাপার হলো  সালাত সিজদা রুকু এগুলো বাধ্যতামূলক পালন করতেই হবে।
আর সেটা হল সালাত অর্থ মহান আল্লাহর কুরআনে বর্ণিত সকল আদেশ নির্দ্বিধায় রুকু অর্থ বিনয়ের সাথে সিজদা মান্য করতে হবে মেনে নিয়ে পালন করতে হবে এবং নিজের পরিবার এবং মানুষের কাছে প্রচারের মাধ্যমে কায়েম করতে হবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, এটাই হলো প্রকৃত সালাত।
———————
প্রকৃত ঘটনা হলো এই ইসলামের শত্রুরা মুসলিমদের শত্রুরা মহান আল্লাহকে বিতর্ক করার জন্য মহাগ্রন্থ আল কুরআনকে বিতর্কিত করার জন্য সালামুন আলা মুহাম্মদের রেফারেন্স দিয়ে নিজেদের মনের মত অসংখ্য অসংখ্য কথা লিখে ইসলামের নামে মুসলিমদের বিধান হিসাবে রচনা করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে,
যেহেতু সালামুন আলা মোহাম্মাদের রেফারেন্স দিয়েছে সেহেতু অন্ধবিশ্বাসীরা সেটাকেই আল্লাহর বিধান হিসেবে একনিষ্ঠভাবে মেনে নিয়েছে,
আর এখন তাদেরকে যতই কুরআনের কথা শুনানো হোক না কেন বলা হোক না কেন তারা সেটা কখনো বিশ্বাস করবে না কখনো মানবেনা এমনকি যারা কোরআনের কথা বলবে তাদেরকে অমুসলিম ইহুদী খ্রিস্টানদের দালাল হিসেবে আখ্যায়িত করবে।
Fb source comments:
https://www.facebook.com/100009539034214/posts/pfbid037ZRjTZpAyGRiF4kiZ4ALm73JyBd6m2oAhhRdFMK9QZPiZaL7ycxVUGMu2wvoTJol/

সালাত নিয়ে বিভ্রান্তি।

সালাত নিয়ে বিভ্রান্তি। By Hamid ullah fbfd
“”””””””””””””””””””””””””
কুরআন মানি, হাদিস মানি না, এই শ্লোগানে কিছু লোক মাঠে নেমেছে। তারা আসলে কারা, আমি এই বিষয়ে যাচ্ছি না। তারা যেহেতো নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করছে সেহেতো তাদেরকে মুসলিম মেনে নেয়াই যুক্তিযোক্ত।

আসলে তারা কারা তা জানার জন্য এই লিংকে আসতে পারেন↓
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=231694602341388&id=100065025482830

সালাত, সিয়াম ইত্যাদি, ইসলামের এমন কোন বিষয় নেই, যেখানে তাদের কোন আপত্তি নেই। বরং সর্ব বিষয়ে রয়েছে তাদের বড়োধরণের আপত্তি। যেহেতো সব বিষয়ে এক সাথে আলোচনা সম্ভব নয় সেহেতো আজ সালাত বিষয়ে তাদের আপত্তিনিয়ে কথা বলবো।

“সালাত” বিষয়ে তাদের আপত্তি হলো, (“পৃথিবী জুড়ে মুসলিম কমিউনিটি “সালাত” বলতে যা বুঝে, আসলে তা কুরআনে বর্নিত সালাত নয়। বরং এটা হলো শয়তান বুখারী কর্তৃক শিখানো “সালাত।”) (নাউজুঃ)

তাদের আরো দাবি, (“কুরআনে বর্ণিত সালত মানে হলো, আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলা।”) তদের কেউ আবার বলে, (সালাত মানে সৎকর্ম করা।)

তাদেরকে যখন বলা হয়, আয়াত দ্বারা আপনাদের দাবি প্রমান করুন, তখন তারা ক্ষেপেগিয়ে চটে বসে ও মন্দ ব্যবহারকরে চলে যায়।

তাদের এসব দাবি একেবারে হাস্যকর এবং উদ্দিশ্যপ্রনোদিত। এসব দাবির পক্ষে তাদের হাতে কোন আয়াত নেই। নেই কোন সাক্ষ্য প্রমান।

এসব দাবিকে খন্ডন করারও কোন প্রয়োজন নেই। এসব দাবি যাষ্ট “দিন”কে রাত বলার দাবি যেমন। কেউ যদি “দিন”কে রাত দাবিকরে তখন তা খন্ডন করার কোন প্রয়োজন হয় না। তার পরেও যেহেতো বহু আনপড় মুসলিমরা ফেসবুকে বিচরণকরে, এনিয়ে হয়তো তারা বিভ্রান্ত হতেপারে বিধায় তাদের উদ্দিশ্যে কিছু লিখা প্রয়োজন মনে হচ্ছে।

এবার আসুন, তাদের উদ্দিশ্যপ্রণোদিত দাবিকে পর্যালোচনাকরে দেখা হউক।

পর্যালোচনাঃ

প্রথম কথা হলো, এরা এতো বড়ো মূর্খ, “ঈমান” কি, “ইসলাম” কি, তাও তাদের জানা নেয়। তাদের জানা থাকা উচিৎ কুরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার নাম “সালাত” নয় বরং কুরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার নাম হলো “ঈমান” বা “ইসলাম”। তারা যে প্রতারক তা বুঝার জন্য জ্ঞানীদের জন্য এতটুই যথেষ্ট। তার পরেও কিছু আলোচনা করা যাক।

“সালত” বিষয়ে মহান আল্লাহর ইরশাদ-

قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ اَصَلٰوتُکَ تَاۡمُرُکَ اَنۡ نَّتۡرُکَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَاۤ اَوۡ اَنۡ نَّفۡعَلَ فِیۡۤ اَمۡوَالِنَا مَا نَشٰٓؤُاؕ اِنَّکَ لَاَنۡتَ الۡحَلِیۡمُ الرَّشِیۡدُ ﴿۸۷﴾
তারা বলল, ‘হে শু‘আইব, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে যে, আমাদের পিতৃপুরুষগণ যাদের ইবাদাত করত, আমরা তাদের ত্যাগ করি? অথবা আমাদের সম্পদে আমরা ইচ্ছামত যা করি তাও (ত্যাগ করি?) তুমি তো বেশ সহনশীল সুবোধ’! (সুরা হুদ-11:87)

আয়াতের সারাংশ- শু‘আইব’ আঃ যখন কাফিরদের কুফরী নিয়ে কথা বল্লেন তখন কাফিরেরা আশ্চর্য হয়ে বলে উঠল, ‘হে শু‘আইব, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে যে, – – –

আয়াতটি প্রমান করে, “সালাত” একটি মহা ইবাদত। এমন ইবাদত যা সর্ব কালে সকল নবীর উপর ফরজ ছিল।

আয়াতটি আরো প্রমান করে, সালাত পালন কারিদেরকে সর্বকালে সকলেই সম্মান করত। ফলে সালাত পালন কারি হতে অনাকাংকিত কিছু দেখলে সভাবের ন্যয় আশ্চর্য্য হয়ে বলে উঠত, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে? যেমন, বাংলা দেশের পরিবেশেও আশ্চর্য্য হয়ে বলা হয়, নামাজী মানুষ হয়ে এই কাজ! তুর নামাজ কি তুকে একটু খানিও পরিবর্তন করতে পারলো না।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ لَا تَجۡہَرۡ بِصَلَاتِکَ وَ لَا تُخَافِتۡ بِہَا وَ ابۡتَغِ بَیۡنَ ذٰلِکَ سَبِیۡلًا ﴿۱۱۰﴾
তুমি তোমার সালাতে স্বর উঁচু করো না এবং তাতে মৃদুও করো না; বরং এর মাঝামাঝি পথ অবলম্বন কর। (সুরা বনি ইসলাঈল-17:110)

তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। মহান আল্লাহ আয়াতটিতে পরিস্কার ভাষায় আদেশ দিচ্ছেন যে, “সালাতে” স্বর উঁচুও করো না, একেবারে নিচুও করে না।

জানার বিষয় হলো, “সালাত” মানে যদি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়, তাহলে স্বর উঁচু-নিচু করার কথা কেন আসবে?
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ নির্দেশ দেন- প্রতি সালাতে তোমরা সুন্দর সাজ সজ্জা গ্রহণ কর। তথা সুন্দর পোষাক নিয়ে সালাত পালন কর। যেমন মহান আল্লাহর ইরশাদ-

یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿٪۳۱﴾
হে বনী আদম, তোমরা প্রতি সালাতে তোমাদের সুন্দর সাজ সজ্জা গ্রহণ কর এবং খাও, পান কর ও অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সুরা আরাফ-7:31)

সালাত মানে যদি আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়, তবে প্রশ্ন হলো, আদেশ-নিষেধ মানার জন্য কি উত্তম পোষাক পরিধান করতে হয়? সাভাবিক পোষাক নিয়ে কি আদেশ-নিষেধ মানা যাবে না?
——————–
আয়াতটি বলছে, যারা রাত্রে সালাত পালন করে তারা সফল।

প্রশ্ন হলো, সালাত মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্য করা হয় তবে রাতের আঁধারেই কি আদেশ নিষেধ মানতে হবে? শয়তান কোথাকার!

اَمَّنۡ ہُوَ قَانِتٌ اٰنَآءَ الَّیۡلِ سَاجِدًا وَّ قَآئِمًا یَّحۡذَرُ الۡاٰخِرَۃَ وَ یَرۡجُوۡا رَحۡمَۃَ رَبِّہٖ ؕ قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ٪﴿۹﴾
যে ব্যক্তি রাতের প্রহরে সিদজাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে, আখিরাতকে ভয় করে এবং তার রব-এর রহমত প্রত্যাশা করে (সে কি তার সমান যে এরূপ করে না) বল, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান?’ বিবেকবান লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা জুমার-39:9)
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ اِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَیۡتَ مَثَابَۃً لِّلنَّاسِ وَ اَمۡنًا ؕ وَ اتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰہٖمَ مُصَلًّی ؕ وَ عَہِدۡنَاۤ اِلٰۤی اِبۡرٰہٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ اَنۡ طَہِّرَا بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَ الۡعٰکِفِیۡنَ وَ الرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ ﴿۱۲۵﴾
আর স্মরণ কর, যখন আমি কাবাকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানালাম এবং (আদেশ দিলাম যে,) ‘তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর’। আর আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, ‘তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ‘ইতিকাফকারী ও রুকূকারী-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর’। (সুরা বাকরা-2:125)

সারাংশ, মহান আল্লাহ কাবা শরীফকে মুসলিমদের মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানিয়েছেন। মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে ঘোষণা করছেন। এবং মুসলিমদেরকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন যে, কাবা শরীফকে তাওয়াফকারী, ‘ইতিকাফকারী ও রুকূকারী-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করে রাখবে।

প্রশ্ন হলো, “সালাত” মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয়, তবে মাকানে ইবরাহীমকে সালাতের জন্য নির্ধারণকরার মানে কি? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি মাকামে ইবরাহীমে যেতে হবে? এর বাইরে কি আদেশ নিষেধ মানতে হবে না।

সালাত পালনের জন্য কাবা শরীফকে পবিত্র রাখতে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, সালাতের মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে কাবা শরীফকে পবিত্র রাখার আদেশ কেন দেয়া হলো? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি পবিত্র হতে হয়? কাবা শরীফকে পবিত্র রাখলে আদেশ নিষেধ মানা যাবে না হয় মানা যাবে না, এজন্য কি কাবা শরীফকে পবিত্র রাখার আদেশ দেয়া হয়েছে কি?

কুরআন বিকৃতিকরে এমন জঘন্য বিকৃতিও কি করে? মনে হয় শয়তানও কুরআনের সাথে এমন জঘন্য বিয়াদবি করে নায়।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ مِنَ الَّیۡلِ فَاسۡجُدۡ لَہٗ وَ سَبِّحۡہُ لَیۡلًا طَوِیۡلًا ﴿۲۶﴾
আর রাতের একাংশে তার উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হও এবং দীর্ঘ রাত ধরে তাঁর তাসবীহ পাঠ কর। (সুরা ইনসান-76:26)

তথা রাতের একাংশে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হও এবং দীর্ঘ রাত ধরে আল্লাহর তাসবীহ পাঠ কর।

সিজদা সালাতের মূল অংশের মধ্যে একটি। সালাত মানে যদি আল্লাহর আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে রাতের এই অন্ধকারে কোন আদেশ নিষেধ মান্যজরার কথা বলা হলো? যে আদেশে নিষেধে তাসবি পাট করতে হয়? আদেশ নিষেধ কি তাসবিহ করে করে মান্যকরা হয়? জবাব দাও শয়তানের দল।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ الَّذِیۡنَ یَبِیۡتُوۡنَ لِرَبِّہِمۡ سُجَّدًا وَّ قِیَامًا ﴿۶۴﴾
আর যারা তাদের রবের জন্য সিজদারত ও দন্ডায়মান হয়ে রাত্রি যাপন করে। (সুরা ফুরকান-25:64)

আয়াতটি পরিস্কার ভাষায় ঘোষাণা করছে, “সালাত” মানে আল্লাহর আদেশ নিষেধ মান্যকরা নয়। বরং “সালাত” মানে হলো, রবের জন্য সিজদারত হওয়া, রবের জন্য দন্ডায়মান হওয়া।

আয়াতটি পাওয়ার পর “সালাত” নিয়ে মুসলিমদের কোন কনফিউজ থাকার কথা নয়। তারপরেও কিন্তু তারা মানবে না। কারণ, আসলে তারা মুসলিম নয় বরং অমুসলিম। আসলে তারা কুরআন মানে না বরং কুরআন মানার ভানকরে মাত্র।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

(اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ یُخٰدِعُوْنَ اللہَ وَھُوَ خَادِعُھُمْﺆ وَاِذَا قَامُوْٓا اِلَی الصَّلٰوةِ قَامُوْا کُسَالٰیﺫ یُرَا۬ءُوْنَ النَّاسَ وَلَا یَذْکُرُوْنَ اللہَ اِلَّا قَلِیْلًاﯝﺬ مُّذَبْذَبِیْنَ بَیْنَ ذٰلِکَﺣ لَآ اِلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ وَلَآ اِلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِﺚ وَمَنْ یُّضْلِلِ اللہُ فَلَنْ تَجِدَ لَھ۫ سَبِیْلًاﯞ)
“নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুত তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন, আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায়- কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে; দোটানায় দোদুল্যমান- না এদের দিকে, না ওদের দিকে! এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি তার জন্য কখনও কোন পথ পাবে না।”(সূরা নিসা ৪:১৪২-৪৩)

সারাংশ, মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে। আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি সম্ভব নয়। বরং তারাই নিজেরাই ধোঁকায় আছে। তারা শৈথিল্যের সাথে সালাতে দাঁড়ায়। তাও প্রকৃতভাবে নয় বরং লোক দেখানোর জন্য সালাত পালনকরার ভানকরে। তারা সালাতে মনোযোগিও নয়।

প্রশ্ন হলো, সালাত মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে সালাতে শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ানোর মানে কি? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি দাঁড়াতে হবে? দাঁড়াতে হলেও কি নির্দিষ্ট আকারে দাঁড়াতে হবে? না হয় আদেশ নিষেধ মান্যকরা হবে না, এমন কি?

হাসি আসে এমন অদ্ভোধ প্রতারকের দাবি দেখলে।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡرَبُوا الصَّلٰوۃَ وَ اَنۡتُمۡ سُکٰرٰی حَتّٰی تَعۡلَمُوۡا مَا تَقُوۡلُوۡنَ وَ لَا جُنُبًا اِلَّا عَابِرِیۡ سَبِیۡلٍ حَتّٰی تَغۡتَسِلُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا ﴿۴۳﴾
হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা বুঝতে পার যা তোমরা বল এবং অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে যদি তোমরা পথ অতিক্রমকারী হও। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর, তবে যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর* । সুতরাং তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।

তাদের শয়তানী মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। আয়াতটিতে সালাতের জন্য পবিত্রতাকে অসাভাবিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এবং বলা হয়েছে-
(১) নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না,

(২) অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্রতা অর্জন করবে না।

(৩) এমন কি যদি তোমরা অসুস্থ হওয়ার কারণে গোসলকরে পবিত্র হতে না পারো, অথবা সফরে থাকার কারণে গোসলের জন্য পানি না পাও, অথবা প্রস্রাব-পায়খানা পর অজুকরে পবিত্র হওয়ার জন্য পানি না পাও, অথবা স্ত্রী সম্ভোগ করার পর গোসলকরে পবিত্র হওয়ার জন্য পানি না পাও তার পরেও অবিত্র অবস্থায় “সালাত” পালন করতে পারবে না। বরং পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম করে পবিত্রতা অর্জনকরে হলেও “সালাত” পালন করবে তার পরেও অপবিত্র অবস্থায় সালাত পালন করা যাবে না।

এতো পরিস্কারকরে বলার পরেও কোন মুখে, কোন যুক্তিয়ে বলা হয়, “সালাত” মানে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করা? আদেশ-নিষেধ মান্য করার জন্য পবিত্র হতে হবে এমন কথা কি কোন মূর্খও বলবে? এতে পরিপূর্ণ পরিস্কার হয়ে যায় যে, “সালাত” একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদাত। ইবাদতের জন্য পবিত্রতা জরুরী। যারা “সালাত” মানে ভিন্ন কিছু বলে তারা শয়তান। তারা কুরআনকে অমান্যকারী।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

فَاِذَا قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰہَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا ﴿۱۰۳﴾
অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। (সুরা নিসা-4:103)

তাদের শয়তানী মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। আয়াতটিতে পরিস্কার ভাষায় বলা হচ্ছে, “সালাত” পালন করার পর তোমরা এই, এই কাজ গুলো করবে। অতপর যখন “সালাতে”র সময় হবে তখন পূর্বের ন্যয় তোমরা পূণরাই “সালাত” পালন করবে। কারণ, “সালাত” মুমিনদের উপর সব সময় ফরজ নয় বরং নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।

এতে পরিস্কার হয়ে যায়, “সালাত” নির্দিষ্ট ইবাদতের নাম। যা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট নিয়মানোসারে পালন করতে হয়। আদেশ-নিষেধ মান্য করার নাম যদি “সালাত” হতো তবে নির্দিস্ট সময়ে নির্দিষ্টভাবে, নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী করার কথা কখনো বলা হতো না। কারণ, মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানার জন্য জন্য সময়, টাইম-তারিখ নির্ধারিত হতে পারে না। নির্ধারিত সময়ে মানবো, সময়ের বাহিরে মানবো না এমন হতে পারে না।

এদের মূল উদ্দেশ্য হলো, হাদিসকে অকার্যকর করা। এরপর সালাতকে উচ্ছেদ করা (যেহেতু সালাতের অন্তত 90 পার্সেন্ট হাদিস) অতপর পৃথিবীর মসজিদ সমূহকে ধ্বংস করা (যেহেতু মসজিদগুলো দাঁড়িয়ে আছে সালাতকে কেন্দ্র করেই) অতপর পৃথিবীতে ইসলামিয়াতের পরিবর্তে জাহিলিয়াত কায়েম করা। এটাই এদের সরল অংক।
এ হলো হাদিস অস্বীকার করার মূল রহস্য।
https://www.facebook.com/100065025482830/posts/293856692791845/

Salat bn

“সালাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ;
“আকিমুস সালাহ” অর্থ আল্লাহর সেই বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধকে ব্যক্তি থেকে বৈশ্বিক সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা;
“যাকাহ” অর্থ পরিশুদ্ধতা অর্জন;
“আকিমুস সালাহ ওয়া আতুজ যাকাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা অর্জন করা;
“মুসল্লী” অর্থ যিনি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠা করেন!

1.প্রত্যেকের জন্যই একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে, সেদিকেই সে মুখ করে। অতএব তোমরা সৎকাজে প্রতিযোগিতা কর। তোমরা যেখানেই থাক না কেন আল্লাহ্‌ তোমাদের সবাইকে নিয়ে আসবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।(2:148)
2.হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা সৎকাজ ও আত্মসংযমে পরস্পর সহযোগিতা কর এবং পাপ ও সীমালংঘনের কাজে একে অন্যের সাহায্য করো না। আর আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তিদানে অতি কঠোর।(5:2)
3.অতএব সৎকর্মে তোমরা প্রতিযোগিতা কর, আল্লাহর দিকেই সকলের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছিলে, সে সম্বন্ধে তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন।(5:48)
4.আর তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং নিজেরা নিজেদের সর্বনাশ করো না। আর তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন। (2:195)
5.তারা আল্লাহ এবং শেষ দিনে বিশ্বাস করে, সৎকাজের নির্দেশ দেয়, অসৎকাজে নিষেধ করে এবং তারা কল্যাণকর কাজে প্রতিযোগিতা করে। আর তারাই পূণ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত।(3:114)
5.পূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোই সৎকর্ম নয়, কিন্তু সৎকর্ম হলো যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতসমূহ ও নবীগণের প্রতি বিশ্বাস করলে আর সম্পদ দান করবে তাঁর ভালবাসায় আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত প্রদান করবে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করবে, অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করবে। এরাই তারা, যারা সত্যপরায়ণ এবং ধর্মভীরু।(2:177)

6.আর তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর ও তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করো না। এবং পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্থ, নিকট প্রতিবেশী, দুর-প্রতিবেশী, সঙ্গী-সাথী, মুসাফির ও তোমাদের অধিকারভুক্ত দাস-দাসীদের প্রতি সদ্ব্যবহার করো নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক, অহংকারীকে।(4:36)
7.এবং আমি তাদেরকে দু’টি পথ দেখিয়েছি।কিন্তু সে তো বন্ধুর গিরিপথে প্রবেশ করেনি। আর তুমি কি জান,বন্ধুর গিরিপথটি কি? তা হচ্ছে, দাস মুক্তকরণ। অথবা খাদ্য দান করা দুর্ভিক্ষের দিনে। ইয়াতীম আত্মীয়-স্বজনকে। অথবা দারিদ্র-নিষ্পেষিত নিঃস্বকে, অতঃপর সে তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় যারা ঈমান এনেছে এবং পরস্পরকে উপদেশ দিয়েছে ধৈর্য ধারণের, ও দয়া দাক্ষিণ্যের। তারাই সৌভাগ্যবান। (90:10-18)

8.না, কখনই নয়। বরং তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না, এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না। আর তোমরা উত্তরাধিকারের সম্পদ সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেল, আর তোমরা ধন-সম্পদ খুবই ভালবাস, এটা মোটেই ঠিক নয়, যখন পৃথিবীকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দেয়া হবে।(89:17-21)
9.তুমি কি তাকে দেখেছ, যে কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করে? সে তো সেই ব্যক্তি, যে ইয়াতীমকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়।এবং সে অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না। যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে, এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোটখাট সাহায্য দানে বিরত থাকে।(107:1,2,3,6,7)
10.অপরাধীদের সম্পর্কে, কিসে তোমাদেরকে এ সাকার নিক্ষেপ করেছে? তারা বলবে, ‘আমরা gyQjøx‡bi(mvnq¨Kvix‡`i) অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না’।আর আমরা অভাবগ্রস্থকে খাদ্য দান করতাম না,এবং আমরা অনর্থক আলাপকারীদের সাথে বেহুদা আলাপে মগ্ন থাকতাম।‘আর আমরা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করতাম’। আমাদের নিকট মৃত্যুর আগমন পর্যন্ত। (74:41-47)

11.তারা কর্তব্য পালন করে এবং সেদিনের ভয় করে, যেদিন বিপত্তি হবে ব্যাপক। তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। তারা বলে,‘আমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তোমাদেরকে খাদ্য দান করি। আমরা তোমাদের থেকে কোন প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও নয়। নিশ্চয় আমরা আমাদের রবের পক্ষ থেকে এক ভয়ংকর ভীতিপ্রদ দিবসের ভয় করি। পরিণামে আল্লাহ তাদেরকে রক্ষা করবেন সে দিনের অনিষ্ট হতে এবং তাদেরকে প্ৰদান করবেন হাস্যোজ্জ্বলতা ও উৎফুল্লতা।(76:7-11)
12.আর তা থেকে দূরে রাখা হবে পরম মুত্তাকীকে, যে তার সম্পদ দান করে আত্ম-শুদ্ধির উদ্দেশ্যে, এবং তার প্রতি কারো কোন অনুগ্রহের প্রতিদানে নয়। কেবল তার মহান রবের সন্তুষ্টির প্রত্যাশায়। সেতো অচিরেই সন্তোষ লাভ করবে।(92:17-21)
13.অতএব আত্মীয়-স্বজনকে তাদের হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। এটি উত্তম তাদের জন্য, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় এবং তারাই সফলকাম। (30:38)
14.আর আত্মীয়-স্বজনকে তাদের প্রাপ্য অধিকার দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরদেরকেও, আর অপব্যয়ে অপচয় করো না।(17:26)
15.হে নবী, যখন মুমিন নারীরা তোমার কাছে এসে এই মর্মে বাইআত করে যে, তারা আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, নিজেদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, তারা জেনে শুনে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকাজে তারা তোমার অবাধ্য হবে না। তখন তুমি তাদের বাইআত গ্রহণ কর এবং তাদের জন্য আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (60:12)
16.বল, নিশ্চয় আমার রব নিষিদ্ধ করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা। আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালংঘন এবং কোন কিছুকে আল্লাহ্‌র শরীক করা- যার কোন সনদ তিনি নাযিল করেননি। আর আল্লাহ্‌ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না।(7:33)

17.বল, আস তোমাদের রব তোমাদের উপর যা নিষিদ্ধ করেছেন তোমাদেরকে তা পড়ে শোনাই, তা হচ্ছে- তোমরা তাঁর সাথে কোন শরীক করবে না, পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে, দারিদ্র্যের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না, আমিই তোমাদেরকে ও তাদেরকে রিযক দিয়ে থাকি। প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক, অশ্লীল কাজের ধারে কাছেও যাবে না। আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তোমরা তাকে হত্যা করবে না। তিনি তোমাদেরকে এ নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা অনুধাবন করতে পার। আর ইয়াতীম বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত উত্তম ব্যবস্থা ছাড়া তোমরা তার সম্পত্তির ধারে-কাছেও যাবে না এবং পরিমাপ ও ওজন ন্যায্যভাবে পুরোপুরি দেবে। আমি কাউকেও তার সাধ্যের চেয়ে বেশী ভার অর্পণ করি না। আর যখন তোমরা কথা বলবে তখন ন্যায্য বলবে, স্বজনের সম্পর্কে হলেও এবং আল্লাহকে দেয়া অঙ্গীকার পূর্ণ করবে। আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে এভাবে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর। নিশ্চয়ই এটি আমার সরল পথ। সুতরাং এরই অনুসরণ কর এবং ভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, করলে তা তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন তোমরা সাবধান হও।(6:151-153)

18.নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়পরায়ণতা, সদাচরণ ও আত্মীয়-স্বজনকে দানের নির্দেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসৎকার্য ও সীমালংঘন করা হতে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন; যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। আর তোমরা যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর, তখন আল্লাহর অঙ্গীকার পূরণ করো এবং আল্লাহকে তোমাদের যামিন করে শপথ দৃঢ় করবার পর তোমরা তা ভঙ্গ করো না;তোমরা যা কর, অবশ্যই আল্লাহ তা জানেন।(16:90,91)
19.আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। আর তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও এবং বল, ‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন’। (17:23,24)
20.আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে এবং প্রসব করে কষ্টের সাথে, তাকে গৰ্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়াতে লাগে ত্রিশ মাস, অবশেষে যখন সে পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন, যাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন, তার জন্য এবং যাতে আমি এমন সৎকাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন, আর আমার জন্য আমার সন্তান-সন্ততিদেরকে সংশোধন করে দিন, নিশ্চয় আমি আপনারই অভিমুখী হলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।(46:15)

21.আর আমি তো মানুষকে তাঁর পিতা-মাতার প্রতি সদাচরণের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টের পর কষ্ট বরণ করে গর্ভে ধারণ করে, আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দু’বছরে। কাজেই আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। আর প্রত্যাবর্তনতো আমারই কাছে। আর তোমার পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে শির্ক করার জন্য পীড়াপীড়ি করে, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদের কথা মেনো না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে বসবাস করবে সদ্ভাবে আর যে আমার অভিমুখী হয়েছে তার পথ অনুসরণ কর। তারপর তোমাদের ফিরে আসা আমারই কাছে, তখন তোমরা যা করতে সে বিষয়ে আমি তোমাদেরকে অবিহিত করব।(31:14,15)
22.আর আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তবে তারা যদি তোমার উপর বল প্রয়োগ করে আমার সাথে এমন কিছু শরীক করতে যার সম্পর্কে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তাহলে তুমি তাদেরকে মেনো না, আমারই কাছে তোমাদের ফিরে আসা। অতঃপর তোমরা কি করছিলে তা আমি তোমাদেরকে জানিয়ে দেব।(29:8)

  1. আর তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে দারিদ্ৰ-ভয়ে হত্যা করো না। তাদেরকেও আমিই রিযক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ। আর যিনার ধারে-কাছেও যেও না, নিশ্চয় তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। আর আল্লাহ যার হত্যা নিষিদ্ধ করেছেন যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না! কেউ অন্যায়ভাবে নিহত হলে তার উত্তরাধিকারীকে তো আমরা তার প্ৰতিকারের অধিকার দিয়েছি; কিন্তু হত্যা ব্যাপারে সে যেন বাড়াবাড়ি না করে, সে তো সাহায্যপ্ৰাপ্ত হয়েছেই। আর ইয়াতীম বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুপায়ে ছাড়া তার সম্পত্তির ধারে-কাছেও যেও না এবং প্রতিশ্রুতি পালন করো; নিশ্চয় প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।(17:31-34)
    24.তোমরা প্রকাশ্য এবং গোপন পাপ বর্জন কর। যারা পাপ করে, তাদের পাপের সমুচিত শাস্তি তাদেরকে দেওয়া হবে।(6:120)
    25.তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে কোন কল্যাণ নেই, তবে কল্যাণ আছে যে নির্দেশ দেয় দান খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের।আর আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের আশায় কেউ তা করলে তাকে অবশ্যই আমরা মহা পুরস্কার দেব।(4:114)
    26.আর তিনি আকাশকে সমুন্নত করেছেন এবং দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করেছেন। যাতে তোমরা সীমালঙ্ঘন না কর দাঁড়িপাল্লায়।আর তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে ওযন প্রতিষ্ঠা কর এবং ওযনকৃত বস্তু কম দিও না।(55:7-9)
    27.ধ্বংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, যারা লোকের নিকট হতে মেপে নেওয়ার সময় পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করে। আর যখন তাদেরকে মেপে দেয় অথবা ওজন করে দেয়, তখন কম দেয়। তারা কি চিন্তা করেনা যে, তারা পুনরুত্থিত হবে।(83:1-4)
    28.আর মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দাও এবং ওজন কর সঠিক দাঁড়িপাল্লায়, এটাই উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্ট।(17:35)
    29.হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেবে,আর যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে না। আর ওজন করবে সঠিক দাড়িপাল্লায়। আর লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। আর তাঁর তাকওয়া অবলম্বন কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের আগে যারা গত হয়েছে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন।(26:181-184)
    30.আর মাদইয়ানবাসীদের কাছে আমি তাদের ভাই শু‘আয়বকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের কোন সত্য ইলাহ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম দিও না, আমি তোমাদেরকে ভাল অবস্থাতেই দেখছি। কিন্তু আমি তোমাদের জন্য শাস্তির আশঙ্কা করছি সে দিনের যেদিন তোমাদেরকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ধরবে।হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।(11:84,85)
    31.আর মাদয়ানবাসীদের নিকট তাদের ভাই শু’আইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহ্‌র ইবাদত কর, তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই; তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ এসেছে। কাজেই তোমরা মাপ ও ওজন ঠিকভাবে দেবে, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দেবে না এবং দুনিয়ার শান্তি স্থাপনের পর বিপর্যয় ঘটাবে না; তোমরা মুমিন হলে তোমাদের জন্য এটাই কল্যানকর।(7:85)
    32.আর তোমরা নিজেদের মধ্যে একে অন্যের অর্থ সম্পদ অন্যায়ভাবে খেয়ো না, এবং মানুষের ধন-সম্পত্তির কিছু অংশ জেনে বুঝে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিচারকগণকে ঘুষ দিও না।(2:188)
    33.আর ইয়াতীমদেরকে তাদের ধন সম্পত্তি বুঝিয়ে দাও এবং ভালোর সাথে মন্দ বদল করো না,আর তোমাদের সম্পদের সাথে তাদের সম্পদ মিশিয়ে গ্রাস করো না; নিশ্চয় এটা মহাপাপ। নিশ্চয় যারা ইয়াতীমদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে তারা তো তাদের পেটে আগুনই খাচ্ছে, আর অচিরেই তারা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।(4:2,10)
    34.পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষের অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারীরও অংশ আছে, সেটা অল্পই হোক বা বেশীই হোক, এক নির্ধারিত অংশ।(4:7)
    35.পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির প্রত্যেকটির জন্য আমি উত্তরাধিকারী করেছি এবং যাদের সাথে তোমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ তাদেরকে তাদের অংশ দেবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বকিছুর সম্যক দ্রষ্টা।(4:33)
    হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। আর যে কেউ সীমালংঘন করে অন্যায়ভাবে তা করবে, তাকে অবশ্যই আমি অগ্নিদগ্ধ করব এবং তা আল্লাহর পক্ষে সহজসাধ্য।। (4:29,30)
    36.নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।(4:58)
    37.অবশ্যই আমি সত্য সহকারে তোমার প্রতি কিতাব নাযিল করেছি, যেন তুমি যা আল্লাহ তোমাকে জানিয়েছেন, সে অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা কর এবং খিয়ানতকারীদের পক্ষে তর্ক করো না।(4:105)
    38.হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা ন্যায়বিচারে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকবে আল্লাহর সাক্ষীস্বরূপ; যদিও তা তোমাদের নিজেদের বা পিতা-মাতা এবং আত্মীয়-স্বজনের বিরুদ্ধে হয়; সে বিত্তবান হোক বা বিত্তহীন হোক আল্লাহ্‌ উভয়েরই ঘনিষ্টতর। কাজেই তোমরা ন্যায়বিচার করতে প্রবৃত্তির অনুগামী হয়ে না। যদি তোমরা পেঁচালো কথা বল বা পাশ কাটিয়ে যাও তবে তোমরা যা কর আল্লাহ তো তার সম্যক খবর রাখেন।(4:135)
    39.হে মুমিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহর ভয় কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।(3:130)
    40.যারা সুদ খায় তারা তার ন্যায় দাঁড়াবে যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এ জন্য যে তারা বলে, ‘ক্রয়-বিক্রয় তো সুদেরই মত। অথচ আল্লাহ্‌ ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন। অতএব যার নিকট তার রব-এর পক্ষ হতে উপদেশ আসার পর সে বিরত হল, তাহলে অতীতে যা হয়েছে তা তারই; এবং তার ব্যাপার আল্লাহর ইখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় আরম্ভ করবে তারাই আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে।আল্লাহ সূদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বৃদ্ধি দেন। আল্লাহ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না।হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সূদের যা বকেয়া আছে তা বর্জন কর; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। অতঃপর যদি তোমরা না কর তবে আল্লাহ ও তার রাসুলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা নাও। আর যদি তোমরা তাওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। তোমরা যুলুম করবে না এবং তোমাদের উপরও যুলুম করা হবে না। (2:275,276,278,279)
    41.মানুষের ধন সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এ আশায় সুদে যা কিছু তোমরা দিয়ে থাক, আল্লাহর দৃষ্টিতে তা বৃদ্ধি পায়না। বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তোমরা যা দান কর তার পরিবর্তে তোমরা বহুগুণ প্রাপ্ত হবে। (30:39)
    42.যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করে, যারা ক্রোধ সংবরণকারী এবং মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল; আর আল্লাহ সৎকর্মশীলদেরকে ভালবাসেন(3:134)
    43.আর অন্যায়ভাবে কোন বস্তু গোপন করবে এটা নবীর পক্ষে অসম্ভব। এবং কেউ অন্যায়ভাবে কিছু গোপন করলে, যা সে অন্যায়ভাবে গোপন করবে কেয়ামতের দিন সে তা সাথে নিয়ে আসবে। তারপর প্রত্যেককে, যা সে অর্জন করেছে তা পূর্ণ মাত্রায় দেয়া হবে। তাদের প্রতি কোন যুলুম করা হবে না।(3:161)
    44.ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই পদভারে ভূ-পৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত-প্রমাণ হতে পারবে না।(17:34)
    45.হে বৎস! সালাত কায়েম করো, সৎ কাজের নির্দেশ দাও এবং অসৎ কাজে নিষেধ কর, আর তোমার উপর যা আপতিত হয় তাতে ধৈৰ্য ধারণ করা। নিশ্চয় এটা অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ। ‘আর তুমি মানুষের দিক থেকে তোমার মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। আর যমীনে দম্ভভরে চলাফেরা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ কোন দাম্ভিক, অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না’। আর তুমি তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং তোমার কণ্ঠস্বর নীচু করো, নিশ্চয় স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সর্বাপেক্ষা অপ্রীতিকর।’ ।(31:17-19)

46.আর রাহমান-এর বান্দা তারাই,
1.যারা যমীনে অত্যন্ত বিনম্রভাবে চলাফেরা করে এবং যখন জাহেল ব্যক্তিরা তাদেরকে সম্বোধন করে, তখন তারা বলে, সালাম।
2.আর যারা রাত অতিবাহিত করে তাদের রব-এর উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে থেকে এবং তারা বলে, হে আমাদের রব! আপনি আমাদের থেকে জাহান্নামের শাস্তি হটিয়ে নিন, জাহান্নামের শাস্তি তো নিশ্চিতভাবে ধ্বংসাত্মক। নিশ্চয় সেটা বসবাস ও অবস্থানস্থল হিসেবে খুব নিকৃষ্ট।
3.এবং যারা ব্যয় করলে অপচয় করে না, কার্পণ্যও করে না,বরং তারা এ দুয়ের মধ্যবর্তী পন্থা অবলম্বন করে।
4.এবং তারা আল্লাহর সাথে কোন ইলাহকে ডাকে না।
5.আর আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না।
6.আর তারা ব্যভিচার করে না, যে এগুলো করে, সে শাস্তি ভোগ করবে।
7.আর যারা মিথ্যার সাক্ষ্য দেয় না ।
8.এবং অসার কার্যকলাপের সম্মুখীন হলে আপন মর্যাদা রক্ষার্থে তা পরিহার করে চলে।
9.এবং যারা তাদের রবের আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে অন্ধ এবং বধির সদৃশ আচরণ করে না। (25:63-73)

  1. আল-কোরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎমুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য
    (তারা বলবে,হে জাহান্নামের অধিবাসীরা,) তোমাদের আজ কিসে এ ভয়াবহ আযাবে উপনীত করেছে?
    1.তারা বলবে, আমরা মুসল্লীনদের (সাহায্যকারীদের , সৎ কর্মশীলদের, দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীদের, দায়িত্বশীলদের, রবের বিধান পালনকারীদের, রবের বিধান বাস্তবায়নকারীদের) অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না।
    2.অভাবগ্রস্থকে আহার্য দিতাম না।
    3.অহেতুক কাজে মগ্ন থাকতাম।
    4.কর্মফল দিবস অস্বীকার করতাম।
    5.এমনকি আমাদের নিকট নিশ্চিত বিশ্বাস (অর্থাৎ মৃত্যু) না আসা পর্যন্ত। (74:42—46)

48.তুমি কি দেখেছ তাকে, যে কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করে থাকে?
1.সে তো ঐ ব্যক্তি, যে ইয়াতীমকে (পিতৃহীনকে) রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়।
2.এবং সে মিসকীনকে(অভাবগ্রস্তকে) খাদ্যদানে উৎসাহ প্রদান করে না।
3.অতএব দুর্ভোগ সে সব মুসল্লীনদের (সাহায্যকারীদের , সৎকর্মশীলদের, দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীদের, দায়িত্বশীলদের, রবের বিধান পালনকারীদের, রবের বিধান বাস্তবায়নকারীদের) ।
4.যারা নিজেদের সালাতের (দায়িত্ব-কর্তব্য, রবের বিধান পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে)ব্যাপারে উদাসীন।

  1. যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।
    6.এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোটখাট সাহায্য দানে বিরত থাকে। (107:1-7)

49.জাহান্নাম সেই ব্যক্তিকে ডাকবে, যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠ প্রদর্শন করেছিল ও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ,আর সম্পদ জমা করেছিল, অতঃপর তা সংরক্ষণ করে রেখেছিল। নিশ্চয় মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে অতিশয় অস্থিরচিত্তরূপে।যখন তাকে বিপদ স্পর্শ করে, তখন সে হয় হা-হুতাশকারী।আর যখন তাকে কল্যাণ স্পর্শ করে, তখন সে হয় অতি কৃপণ।
1.তবে মুসল্লীনরা (সাহায্যকারীরা, সৎকর্মশীলরা, দায়িত্ব-কর্তব্য পালনকারীরা ,দায়িত্বশীলরা, রবের বিধান পালনকারীরা, রবের বিধান বাস্তবায়নকারীরা) ব্যতীত।

  1. যারা তাদের সালাতে (দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) সর্বদা দন্ডায়মান থাকে ।
  2. আর যাদের সম্পদে নির্ধারিত হক রয়েছে। প্রার্থী এবং বঞ্চিতদের
  3. আর যারা কর্মফল দিবসকে সত্য বলে জানে।
  4. আর যারা তাদের রবের শাস্তি সম্পর্কে ভীত সন্ত্রস্ত ।
    6.নিশ্চয়ই তাদের রবের শাস্তি হতে নিঃশঙ্ক থাকা যায়না ।
  5. আর যারা নিজেদের লজ্জাস্থানকে সংযত রাখে। তাদের স্ত্রী অথবা(مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُمۡ) শপথ বা অঙ্গীকারভুক্তদের ক্ষেত্র ব্যতীত,এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্যকে কামনা করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী।
  6. আর যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।
  7. আর যারা তাদের সত্য সাক্ষ্য দানে অটল।
  8. আর যারা নিজদের সালাতের(দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) যত্নবান।
    তারাই সম্মানিত হবে জান্নাতে।(70:17-35)

50.অবশ্যই বিশ্বাসীগণ সফলকাম হয়েছে।
1.যারা নিজদের সালাতের(দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) বিনয়ী – নম্রতা – ভদ্রতা অবলম্বন করে।

  1. আর যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।
  2. আর যারা যাকাত( পরিশুদ্ধতা ) অর্জনে সক্রিয় তাকে থাকে ।
  3. আর যারা তাদের নিজদের লজ্জাস্থানের হিফাযতকারী। তাদের স্ত্রী অথবা (مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُمۡ) শপথ বা
    অঙ্গীকারভুক্তদের ক্ষেত্র ব্যতীত,এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এদের ছাড়া অন্যকে কামনা
    করলে, তারা হবে সীমালংঘনকারী।
  4. আর যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে।
  5. আর যারা নিজদের সালাতের(দায়িত্ব-কর্তব্য পালনে, রবের বিধান পালনে, রবের বিধান বাস্তবায়নে) যত্নবান।
    তারাই হবে অধিকারী,উত্তরাধিকারী হবে ফিরদাউসের; যাতে তারা চিরস্থায়ী হবে। (23:1-11)

আল-কোরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয়অর্থাৎমুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্য

51.দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে। যে সম্পদ জমা করে এবং বার বার গণনা করে। সে মনে করে তার সম্পদ তাকে চিরজীবি করবে। কখনো নয়, অবশ্যই সে নিক্ষিপ্ত হবে হুতামা’য়। আর কিসে তোমাকে জানাবে হুতামা কি? তা আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন, যা হৃদয়কে গ্রাস করবে। (104:1-7)

Salat vs Namaz bn fb

নামাজ পড় না সালাৎ প্রতিষ্ঠিত কর ?
“নামাজ” শব্দটি ফারসি ভাষার শব্দ—- অর্থ প্রার্থনা এবং সালাৎ শব্দটি আরবি ভাষার —অর্থ ‘সৎকর্ম’ । একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার জন্য সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত করাই প্রকৃত নির্দেশ। প্রার্থনা পড়া (নামাজ পড়া) একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ নয়।
হে মানবজাতি ! প্রার্থনা পড়ার পরিবর্তে ‘সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত’ করাই উত্তম। সালাতে ব্যবহৃত সকল শব্দের ও বাক্যের সঠিক অর্থ ও পরিপূর্ণ মনের ভাব বোঝার মাধ্যমে সালাত (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছে অবুঝের মত প্রার্থনা পড়া গৃহিত হবে না।
হে মানবজাতি ! নামাজ (প্রার্থনা) পড় শব্দটি স্বর শব্দ থেকে নিশ্চিন্ন করে ‘সালাত (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত’ শব্দ দুটি ব্যবহার করা উত্তম। সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত করো, প্রার্থনা পড় না।
১৮। সলাৎ (সৎকর্ম) —- হে মানবজাতি ! কেবলমাত্র একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার জন্য সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত কর সকালে (ফজর), দুপুরে (জোহর), বিকালে (আসর), সন্ধায় (মাগরিব), রাত্রে (এশা) এবং মধ্যরাতের পর (তাহাজ্জদ) এবং অতিরিক্তসমূহ (নাফিলিয়াত) সলাৎ প্রতিষ্ঠিত কর।অতিরিক্ত (নফল) এর নামে অর্থহীন শব্দ ব্যবহার করে এবং কোন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত কর না।
স্মরণ রেখ ! সঠিক সূর্যোদয়ে, দুপুরে, সূর্যাস্তকালে ও মধ্যরাতে সলাৎ প্রতিষ্ঠিত কর না। সলাতে ব্যবহৃত সকল শব্দ ও বাক্যসমূহের অর্থ সঠিকভাবে মন, হৃদয় ও অন্তরাত্মায় বোধগম্য না হলে সলাৎ প্রতিষ্ঠিত হবে না।
সত্যভাবে ! ‘নামাজ’ শব্দটি ফার্সী ভাষার এবং অর্থ হল — ‘প্রার্থনা’। সলাৎ (সৎকর্ম) আর নামাজ (প্রার্থনা) এক নয়।
সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত করা এবং (নামাজ) প্রার্থনা পড়া এক নয় ; এত পার্থক্য যেমন — ‘আমি একটা বাড়ী নির্মান করি” শব্দগুলি লক্ষ লক্ষ বার পড়লে বা বললে বাড়ীটি অবশ্যই বাস্তবে নির্মান হবে না ; অতএব, এখন তুমি কি করবে ? প্রার্থনা (নামাজ ) পড়বে, না সলাতে ব্যবহৃত সকল শব্দ ও বাক্যসমূহের অর্থ সঠিকভাবে মন, হৃদয় ও অন্তরাত্মায় বোধগম্য হবার পর একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার সামনে দাড়াবে ? বিজ্ঞ আর মূর্খের মধ্যে এতটুকুই পার্থক্য।
তোমরা সালাতসমূহ ও মধ্যবর্তী সালাতকে সংরক্ষণ কর এবং বিনীত ভাবে একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য দন্ডায়মান হও। ২৩৯। অনন্তর যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে আরোহী বা পদাতিক অবস্থাতেই প্রতিষ্ঠিত কর ; পরে যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন তিনি তোমাদের যেরূপ শিক্ষা দিয়াছেন —– যাহা তোমরা জানিতে না —— তদ্রূপ একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ কর (বাকার – ২৩৮,২৩৯)।
“৪৩।ও মরিয়ম ! তোমার প্রতিপালকের আরাধনা কর এবং সেজদা কর ও রুকু-কারীগণের সহিত রুকুকর (এমরান-৪৩)।”

Salat bn

By S m nazrul Islam bd

♥মুমিন বা বিশ্বাসী কেন বিপদগামী হয়?৮(২)
সালাতের প্রকৃত ব্যাখ্যা কি হবে?২৯(৪৫)
সালাতে কেন ফল দিচ্ছে না?১৭(৩৬(।
♥সালাত পড়ায় কোনো সোয়াব নেই৬১(২-৩)।
♥সালাত আদায় কারী কেন খারাপ কাজ করে২৯(৪৫)৬১(২-৩)।
♥ সালাত কে কেন ইসলামের ভিত্তি বলা হয়েছে? আসসালাতু ইমাদ উদ্দিন।২(১৮৫)
♥সালাত কে কেন মিফতাহূল জান্নাত বলা হয়েছে৭০(৩৪-৩৫)?,
♥♥♥♥♥♥♥♥
আমরা যদি প্রকৃত মুমিন হতাম। তাহলে মুসলিম জাতির এ দুরবস্থা হত না, অনেকেই একথা বলে থাকেন। কিভাবে মুমিন হব,? মুমিন হওয়ার পর সে মুমিন আবার খারাপ হল কেন?
সেইটা বুঝান,
কিভাবে মুমিন হওয়ার পর সে য়ার মুমিন থেকে সরে যাবে না সেটা কি?
সেটা হল সালাত নামের কোরআন বলার অনুষ্ঠান রসুলের পর থেকে চালু হয়ে আছে, সেটা যাতে সবাই অর্থ সহ ব্যাখ্যা সহ বিস্তারিত বুঝে বলে,, বিশ্বাস করে২(১২১) এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে, তবেই সবাই মুমিন থাকবে।
ঈমান আনার পর বিশ্বাস হারাবে না ৮(২)।
সালাতে যা বলবে তাই মান্য করবে৬১(২-৩)।
বিভিন্ন দেশে, মুসলিম দেশে সালাত নামের আল-কোরআন বলার ৪(৪৩) অনুষ্ঠান চালু আছে। কিন্তু সালাতে কি বলে সেদিকে খেয়াল নেই,৪(৪৩) বোঝেনা, বিশ্বাস করে না২(১২১) যা বলে ওটা যে মেনে চলতে হবে এই ধরনের ধারণা অনুপস্থিত, মনে করে এটা বলছি সোআব হবে, পরকালে পুরস্কার হবে এই ধারণা পাল্টাতে হবে।
পরকালে কাজের পুরস্কার হবে ৯৮(৭)১০৩(১-৩)।
এই সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে তবেই সফলতা অনিবার্য। নচেৎ ময়দান গরম করে কোন লাভ নেই, ময়দান গরম করছে সবাই কোন লাভ হচ্ছে না হবেও না,।
হিজবুত তৌহিদ সহ যারা
সালাতের যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে তা সঠিক নয়, সালাতের একমাত্র উদ্দেশ্য হল অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকা অর্থাৎ কুরআন বিরোধী কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার প্রশিক্ষণ ২৯(৪৫)
আর এইটা সম্ভব হবে যদি আমরা সালাতে যা বলি বুঝিয়ে বলি, বিশ্বাস করি এবং সেই অনুযায়ী কাজ করি। আর এটাকে সালাত কায়েম বলে, প্রতিষ্ঠিত বলে ,
তখনই আল-কোরআন প্রতিষ্ঠিত হবে।
সালাত হলো al-quran১৭(৭৮)২৯(৪৫)
৪(৪৩)।
♥♥♥♥♥♥♥♥

What is Salat means in Quran

কোরআনে সালাত না পেয়ে সুন্নি শিয়া যার যার রচিত হাদিস ঘেঁটে ঘুটে পেরেসান। আল্লাহ তার রাসুল কে সালাত কায়েমের যে এসাইনমেন্ট দিয়েছিলেন উহা রাসুল তার ওফাতের ২ শত বছর পর পয়দা হওয়া বুখারির উপর বল পাশ করে ইহকাল ত্যাগ করেছিলেন (নাউযুবিল্লাহ)

আল্লাহর সুন্নাহ জিবনে, সমাজে রাস্ট্রে প্রতিষ্টা করাই সালাত কায়েম।

সালাত কায়েমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ আল্লাহর একত্ববাদ মেনে নিয়ে তার পুজা (Worship) করা। আর সেইটা কিভাবে করতে হবে তার জন্য পারশিয়ান্দের দারস্থ না হয়ে কোরআনের আয়াত গুলি দেখি ও বুঝি।

(২:৪৩) […] আর যাহারা মস্তক অবনত করে তাহাদের সহিত মস্তক অবনত কর।
(২:১৪৯) […] এবং সেই পবিত্র মসজিদের (কাবার) দিকে তোমাদের মুখ ফিরাও […]।
(৫:৬) হে বিশ্বাসীগণ, যখন তোমরা সালাতের (নামাজের) জন্য উত্থিত হও, তামাদের মুখমন্ডল ও কনুই পর্য্যন্ত তোমাদের হস্তদ্বয় ধৌত কর, এবং হালকাভাবে মস্তক ঘর্ষণ কর, এবং গোড়ালি পর্যন্ত পাদদেশ ধৌত কর, এবং অপরিচ্ছন্ন থাকিলে নিজেদের পরিচ্ছন্ন কর […]।
(১১:১১৪) দিবসের দুই প্রান্তে এবং রাত্রির কিছু অংশে সালাত প্রতিষ্ঠিত কর […]।
(১৭:৭৮) সর্যাস্তের সময় রাত্রির অন্ধকার না হওয়া পর্যন্ত সালাত প্রতিষ্ঠিত কর এবং প্রত্যূষে কোরান-পাঠ কর। স্মরণ রাখিও! প্রত্যূষে কোরান-পাঠ সর্বদাই লক্ষ করা হয়।

(২৪:৪৮) হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের ক্রীতদাসের এবং যাহারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয় নাই, তাহাদের তিনবার ছাড়িয়া দাও। প্রত্যূষের সালাতের পূর্বে (সালাত-উল-ফজর) এবং মধ্যাহ্নের উত্তাপে যখন তোমরা আচ্ছাদন একপাশে রাখিয়া দাও, এবং রাত্রির সালাতের (সালাত-উল-এশা) পর।

(এই আয়াতে দুপুরের যহরের নামাজের যায়গায় বিস্রামের কথা বলা হয়েছে)

(৬২:৯) হে বিশ্বাসীগণ, যখন শুক্রবার (জামায়াতের দিন) সালাতের জন্য আহবান ধ্বনিত হয়, সমস্ত কর্ম ত্যাগ করিয়া আল্লাহর স্মরণের জন্য একান্তভাবে ধাবিত হও।

(৪:৪৩) হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যাহা বল, যে পর্যন্ত না তাহা বুঝিতে পার এইরূপ জড়গ্রস্ত মনে সালাতে যাইও না, অথবা পথযাত্রা বাদে তোমরা যখন কলুষিত হও, গোসল না করা পর্যন্ত (সালাতে যাইও না)।

(১৭:১০৭,১০৮) […] তাহারা মুখমণ্ডলের উপর ভূলুষ্ঠিত হইয়া প্রশংসার সহিত বলে: আমাদের প্রতিপালকের গৌরব হউক! আমাদের প্রতিপালকের অঙ্গীকার অবশ্যই পূর্ণ হইবে।

(২৫:৬৪,৬৫) আর যাহারা তাহাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ভূলুণ্ঠিত বা দণ্ডিত অবস্থায় রাত্রি অতিবাহিত করে, এবং যাহারা বলে: হে আমাদের প্রতিপালক! নরকের পরিণতি হইতে আমাদেরকে রক্ষা করুন; সেই পরিণতি যন্ত্রণাকর।

(১৭:১১০,১১১) তোমরা সালাত উচ্চস্বরে অথবা নিম্নস্বরে করিও না, বরং মধ্যপথ অবলম্বন কর। এবং বল: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি কাহাকেও পুত্র হিসাবে লন নাই এবং যাহার সার্বভৌমত্বে কোন অংশীদার নাই, এবং নির্ভর হিসাবে তাহার কোন রক্ষণকারী সুহৃদও নাই। এবং তাঁহাকে সমস্ত মহিমার উচ্চে মহিমান্বিত কর।

Salat of various Prophets.

(by secterian)

সালাতের ইতিহাসঃ
সালাতের ইতিহাস অনেক পুরনো। কোরআন থেকে যেটা জানা যায় ইব্রাহিম নবীর সময় থেকে শুরু করে পরবর্তি সকল নবী রসূলের আমলে সালাত প্রচলিত ছিল।

ইব্রাহিমের সালাত।
২:১২৫ যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের ( ﻣُﺼَﻠًّﻰ ) জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।

মূসা ও হারুনের সালাত।
১০:৮৭ আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং সালাত কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর।

ঈসার সালাত।
১৯:৩১ আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।

শুয়েবের সালাত।
১১:৮৭ তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার সালাত কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।

জাকারিয়ার সালাত।
৩:৩৯ যখন তিনি কামরার ভেতরে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়া সম্পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।

বণী ইস্রাইলের সালাত।
২:৪৩ আর সালাত কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং সালাতে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।

লুকমানের সালাত।
৩১:১৭ হে বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।
রসূলের সমসাময়িক কাফেরদের সালাত।
৮:৩৫ আর কা’বার নিকট তাদের সালাত শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কোন কিছুই ছিল না। অতএব, এবার নিজেদের কৃত কুফরীর আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।

সুতরাং আমরা নিজে নিজে কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করি তা ভালো, কিন্তু এমন কিছু নতুন আবিষ্কার না করি, যেটা পূর্বেকার সালাতে ছিলোনা। কারণ আল্লাহ বলছেনঃ

(৫ঃ৩) আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং
তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম।

Salat as Quran.Bn

সালাত বিষয়ক আলোচনা (পর্ব ১)

Link bottom.

  • শওকত জাওহার
    হাদীসপন্থীরা সাধারণত বলে থাকে যে, আল কুরআনে সালাত সম্পর্কে বিস্তারিত নেই। তাদের কথাটি আল কুরআনবিরুদ্ধ এবং তা যে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় তা বিবেকবুদ্ধি কাজে লাগালে যে কেউ অত্যন্ত সহজেই বুঝতে পারবে। আল কুরআন অনুযায়ী আল কুরআন স্বয়ংসম্পূর্ণ ও যথেষ্ট। সুতরাং সালাত বিষয়েও আল কুরআনে যা-ই তথ্য আছে তা-ই হচ্ছে সম্পূর্ণ ও যথেষ্ট। সালাত বিষয়ে যে তথ্যটি কুরআনভিত্তিক নয়, সেটিকে এর একটি তথ্য সাব্যস্ত করে পরে তা কুরআনে নেই, সুতরাং কুরআনে সালাতের তথ্য অসম্পূর্ণ- এ কথা বলা যেতে পারে না। বরং যে তথ্য কুরআনভিত্তিক নয়, তা গ্রহণযোগ্য তথ্যই নয়।
    সালাত বিষয়ে আল কুরআনে থাকা তথ্যসমূহ উপলব্ধির ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, আমরা যারা শুধুমাত্র আল কুরআনকে দ্বীনের দলীল হিসেবে সাব্যস্ত করে মু’মিন মুসলিম হতে পেরেছি, আমাদের মধ্যেও উপলব্ধির বিভিন্নতা রয়েছে। অথচ একই পয়েন্টে দুটি ভিন্নধর্মী উপলব্ধি সঠিক হতে পারে না। সুতরাং আমাদের উচিত হচ্ছে সালাত বিষয়ক আমাদের আপাত উপলব্ধি শেয়ার করা যাতে আমরা আলোচনাক্রমে আল কুরআনের আয়াতসমূহের বক্তব্যকে যথাযথভাবে উপলব্ধি করার ক্ষেত্রে তা সহায়ক হতে পারে। বিভিন্ন উপলব্ধিকে কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পরিশীলিত করে নিয়ে ক্রমে ক্রমে সকল আয়াতের সমন্বিত অধ্যয়নভিত্তিক যথার্থ উপলব্ধিতে উপনীত হতে সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ।
    আমাদেরকে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং তিনি যা বলেছেন তা যথাযথভাবে জানার ও মানার জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে। এজন্য আমরা আমাদের কোন উপলব্ধি উপস্থাপনা যদি পরবর্তীতে কোন আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যশীল নয় হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে আমরা নিজেদের উপস্থাপন করা ঐ আপাত উপলব্ধিকে সংশোধন করে নিতে হবে। এ পোস্টের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল কুরআনের আয়াতসমূহের সমন্বিত অধ্যয়নের মাধ্যমে সালাতের বিষয়ে একটি যথাযথ উপলব্ধিতে উপনীত হওয়ার প্রয়াসে এ বিষয়ে আমার উপলব্ধি শেয়ার করা।
    ইতোপূর্বে সালাত শব্দ ধারণকারী আয়াতসমূহের অনুবাদ নিয়ে একটি পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টটির লিংক : https://www.facebook.com/groups/quranstudyforum/permalink/1053883698347237/
    আল কুরআনে সালাত শব্দের অর্থ ও সংজ্ঞা :
    আল কুরআনে দেখা যায়, সালাত করা, সালাত কায়েম করা, সালাত কায়েমের জন্য পরিচ্ছন্ন হওয়া, সালাত হেফাযত করা, সালাতের উপর দায়েম (প্রতিষ্ঠিত) থাকা, সালাতের আমর ও নাহি (আদেশ ও নিষেধ), কিয়ামের (দাঁড়ানোর) মাধ্যমে সালাত শুরু ও সিজদার (প্রণিপাতের) মাধ্যমে শেষ করা, ইয়াওমুল জুমআতে (জমায়েতের দিনে) সালাতের জন্য নিদা/ আহবান করা, সালাতে খাশিয়ূন (বিনীত) হওয়া, সালাতের ব্যাপারে ছাহূন (উদাসীন) না হওয়া, সালাতে যা বলা হয় তা বুঝার মত মানসিক স্তরে না থাকা অবস্থায় সালাতের কাছে না যাওয়া, সালাতে মধ্যম স্বর অবলম্বন করা, ভয়ের অবস্থায় সফরে সালাতে কসর (সংক্ষিপ্ত/ অদীর্ঘায়িত) করা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়সহ রসূলের ব্যাপারে আল্লাহর ও ফেরেশতাদের সালাত, মু’মিনদের ব্যাপারে আল্লাহর ও ফেরেশতাদের সালাত, রসূলের ব্যাপারে মু’মিনদের সালাত, মু’মিনদের ব্যাপারে রসূলের সালাত, মু’মিনের মৃত্যুর পর তার ব্যাপারে অন্য মু’মিনদের সালাত ইত্যাদি প্রসঙ্গ উল্লেখিত হয়েছে। এর মধ্যে ৭৫:৩১-৩২ আয়াতে সালাত শব্দের কুরআনিক প্রায়োগিক অর্থ নির্ণয়ের সূত্র পাওয়া যায়।
    আর (যখন) এক পায়ের গোছা আরেক পায়ের গোছার সাথে জড়িয়ে যাবে।তোমার রবের দিকেই সেদিন চালিয়ে নেয়া হবে। অথচ সে সত্যতা প্রতিপাদন করেনি এবং সালাত করেনি। কিন্তু সে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে এবং বিপরীতক্রমে বা বিমুখ হয়ে ফিরে গেছে। (৭৫:২৯-৩২)
    ৭৫:৩১-৩২ আয়াতে সদ্দাক্বা ও সল্লা শব্দদ্বয়ের বিপরীত শব্দ হিসাবে যথাক্রমে কাযযাবা ও তাওয়াল্লা শব্দদ্বয় ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ সদ্দাক্বা শব্দের বিপরীত শব্দ হচ্ছে কাযযাবা এবং সল্লা শব্দের বিপরীত শব্দ হচ্ছে তাওয়াল্লা। সদ্দাকা অর্থ সত্যতা প্রতিপাদন করা,কাযযাবা অর্থ মিথ্যা সাব্যস্ত করা। তাওয়াল্লা অর্থ বিপরীতক্রমে বা বিমুখ হয়ে ফিরে যাওয়া,সুতরাং সল্লা হচ্ছে অভিমুখী হয়ে এগিয়ে আসা।অন্য কথায় বলা যায়,তাওয়াল্লা হচ্ছে প্রতিকূলতা এবং সল্লা হচ্ছে অনুকূলতা বা আনুকূল্য করা।
    প্রশ্ন হচ্ছে আয়াত দুটিতে সদ্দাকা, কাযযাবা, সল্লা ও তাওয়াল্লা বলতে কার বা কিসের প্রতি সত্যতা প্রতিপাদন করা বা মিথ্যা সাব্যস্ত করা,আনুকূল্য করা বা প্রতিকূলে যাওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে? বর্ণনাভঙ্গি থেকে স্পষ্ট যে, এখানে গ্রহণীয় জীবনব্যবস্থার প্রতি সত্যতা প্রতিপাদন করা বা মিথ্যা সাব্যস্ত করা, আনুকূল্য করা বা প্রতিকূলে যাওয়ার কথা বুঝানো হয়েছে, কারণ কোন ব্যক্তিসত্তার প্রতি সালাতের ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তিসত্তার কথা উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
    তবে কুরআনে যেভাবে সালাতের শর্ত,সময়,পদ্ধতি ইত্যাদি উল্লেখ করা হয়েছে তাতে এ কথা পরিস্কার যে, ইহা একটি নিয়মিত আনুষ্ঠানিক ও প্রতীকী কর্মসূচী রূপে সম্পাদিতব্য। সালাতের দুটি স্তর রয়েছে, যথাঃ আনুষ্ঠানিক সালাত ও বাস্তবে সালাতের শিক্ষা বাস্তবায়ন। সুতরাং সালাত হচ্ছে গ্রহণীয় জীবনব্যবস্থার প্রতি আনুষ্ঠানিক ও বাস্তব আনুকূল্যমূলক কর্মসূচী সম্পাদন করা।
    উপর্যুক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায়, সালাত হচ্ছে কারো দিকে বা কোন ব্যবস্থার দিকে ইতিবাচকভাবে অগ্রসর হওয়া। আর তাওয়াল্লা হচ্ছে কারো থেকে বা কোন ব্যবস্থার থেকে নেতিবাচকভাবে মুখ ফিরানো বা মুখ ফিরিয়ে নেয়া। এভাবে একটি কর্মসূচি হিসাবে সালাত হচ্ছে অনুকূলতামূলক কর্মসূচী, কারো বা কোন ব্যবস্থার অনুকূলে সাড়া দেয়ার ও কর্মকান্ড সম্পাদনের (রোল প্লে/ ভূমিকা পালন করার) প্রতীকী উপস্থাপন ধরনের কর্মসূচী এবং বাস্তবেও তার দাবি পূরণ করা। যখন আলা শব্দ যোগে সালাত করার কথা বলা হয় তখন এর অর্থ হচ্ছে কারো প্রতি আনুকূল্য প্রদর্শন করা, কারো অনুকূলে অবস্থান নেয়া, কারো প্রতি সংযোগ রক্ষামূলক কর্ম সম্পাদন করা।
    ২০:১৪ আয়াত অনুযায়ী আল্লাহর যিকিরের বা স্মরণের জন্য সালাত কায়েম করতে হবে এবং ৬২:১০ আয়াত অনুযায়ী সালাত কাযা বা যথানিয়মে সম্পাদনের পরে জমিনে ছড়িয়ে পড়তে হবে,আল্লাহর ফযল বা অনুগ্রহ তালাশ করতে হবে এবং তাতে বেশি বেশি করে আল্লাহর যিকির বা স্মরণ করতে হবে। সুতরাং সালাত হচ্ছে ইসলামী জীবনব্যবস্থা অনুসরণের রোল প্লে ধরনের কর্মসূচী, তথা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে ইসলামী জীবনব্যবস্থার প্রতি আনুকূল্যমূলক আনুষ্ঠানিক বা প্রতীকীকর্মসূচী। এটি দুইভাবে হতে পারে (১) একাকী একটি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেকে সঠিক জীবন ব্যবস্থার ভিত্তিতে পরিচালনার রোল প্লে করা। (২) অনেকে একত্রে একটি আনুষ্ঠানিক পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেদেরকে সঠিক জীবন ব্যবস্থার ভিত্তিতে পরিচালনার রোল প্লে করা। এ কারণেই সালাত মানুষকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে নিষেধ করে (২৯:৪৫),এবং এ কারণেই রসূলুল্লাহশোয়ায়েবের সালাত তাকে আদেশ দেয় আল্লাহ ছাড়া অন্যদের ইবাদাত না করতে এবং স্বীয় সম্পদের ব্যাপারে স্বেচ্ছাচারিতা না করতে (১১:৮৭)। যারা সালাতের মধ্যে খাশিয়ূন থাকে (২৩:২) এ হচ্ছে তাদের সাথে সম্পর্কিত বিষয়। পক্ষান্তরে যারা সঠিকভাবে সালাত সম্পাদন করে না সেরূপ সালাতকারীদের সম্পর্কে ১০৭:৪-৭ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। আর যারা সালাতের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য অর্জন করতে সক্ষম হয় তাদের সম্পর্কে ৭০:১৯-৩৫ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
    অনেকে সালাত ও আমলে সালেহ এক ও অভিন্ন মনে করে থাকেন যার কোন ভিত্তি আল কুরআনে নেই। ২২:৭৭-৭৮ আয়াতে ‘খায়ের’ বা ‘কল্যাণকর কাজ’ ও ‘সালাত কায়েম’ পৃথকভাবে উল্লেখিত হয়েছে। ২:১৭৭ আয়াত থেকেও বিষয়টি বুঝা যায়। যারা ভাবেন যে, সালাত বলতে ‘সঠিক জীবনব্যবস্থাকে নিবিড়ভাবে অনুসরণ’ বুঝায়,তাদের চিন্তাও সালাত সম্পর্কিত আয়াতসমূহের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
    সালাত একটি আনুষ্ঠানিক কর্মসূচী হওয়ার প্রমাণঃ
    কেউ কেউ বলেন যে, সালাত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি অঙ্গিকার। আবার কেউ কেউ বলেন যে,সালাত হচ্ছে ভাল কাজ করা।
    (ক) আল্লাহর প্রতি অঙ্গিকার বা ভাল কাজ বা সঠিক জীবন ব্যবস্থাকে নিবিড়ভাবে অনুসরণের জন্য কি নির্ধারিত সময়সীমার প্রয়োজন হয়? (৪:১০৩)
    (খ) এজন্য কি ইয়াওমুল জুমআতে আহবান করার প্রয়োজন হয়? (৬২:৯)
    (গ) এর পূর্বশর্ত হিসাবে ওজু, গোসল বা তায়াম্মুমের প্রাসঙ্গিকতা আছে কি? (৫:৬) ওজু শুধুমাত্র সাধারণ পরিচ্ছন্নতা নয়। কারণ, ওজুকে সালাতের পূর্বশর্ত করা হয়েছে এবং ওজুর জন্য কয়েকটি অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। (৫:৬)
    (ঘ) ইহা কিয়ামের মাধ্যমে শুরু ও সিজদার মাধ্যমে শেষ করার কোন অর্থ থাকতে পারে কি? (৪:১০২)
    (ঙ) ইহার সাথে কথা বলা বা মধ্যম মাত্রার স্বর অবলম্বনের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে কি? (৪:৪৩, ১৭:১১০)
    (চ) ইহাকে কসর বা সংক্ষিপ্ত করার অর্থ কী? (৪:১০১)
    (ছ) ৪:১০২ ‘যারা এখনো সালাত করেনি’ কথাটির অর্থ কি হবে?
    (জ) জুমআর সালাতের জন্য কেনাবেচা বন্ধ করে আসতে হবে।সালাত শেষ হলে জমিনে ছড়িয়ে পড়তে হবে।সালাত আল্লাহর স্মরণের জন্য এবং সালাতের পর বেশি করে আল্লাহর স্মরণ করতে হবে। আনুষ্ঠানিক সালাত আমাদেরকে গুরুত্বক্রম অনুসারে আগে পরে কাজ করার এবং যখন যে কাজ করা উচিত তখন তা করার শিক্ষা দেয় (৬২:৯)
    (ঝ) নির্ধারিত সময়ে আনুষ্ঠানিক সালাত হচ্ছে একটি শৃংখলা/ ডিসিপ্লিন যা অন্য সব কাজে শৃংখলা রক্ষা করার যোগ্যতা তৈরি করে। এছাড়া এর মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদাত আনুষ্ঠানিক উপাসনা এবং ব্যাপক কর্মকান্ডে একমাত্র আল্লাহর আদেশ ও অনুমোদনকে মূল নিয়ামক হিসাবে গ্রহণ এ দুটি স্তরে বিভক্ত হয়। মানুষের জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মাথানত করার ব্যবস্থা না থাকলে সে সম্পূর্ণ অহংকারমুক্ত হয়ে সত্যিকারার্থে একমাত্র আল্লাহর দাসত্ব করার যোগ্য হয় না। কারণ, মানুষ অন্যান্য সৃষ্টির মত স্বয়ংক্রিয়ভাবে আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণকারী নয়, বরং তার মধ্যে ইচ্ছার স্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত এরূপ মানসিকতা রয়েছে যা তাকে সচেতনভাবে বা অসচেতনভাবে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসনা বা দাসত্ব করতে অথবাঅন্য মানুষের উপর নিজেই প্রভুত্ব করতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে। আনুষ্ঠানিক সালাত একমাত্র আল্লাহর উপাসনা ও দাসত্ব করার মানসিক প্রস্তুতি তৈরি করে এবং এরূপ মানসিক প্রস্তুতির পরীক্ষাস্বরূপ হয়।
    (ঞ) এটি কল্যাণমূলক কাজ থেকে ভিন্ন (২২:৭৭-৭৮, ২:১৭৭)। এটি শূরা (পরামর্শ) থেকেও ভিন্ন (৪২:৩৮)। এটি দোয়া (প্রার্থনা) থেকেও ভিন্ন (৭:৫৫, ১৭:১১০)। সালাত ও যিকির দুটি ভিন্ন বিষয় (৫:৯১)।
    বিশেষ করে ৪:৪৩, ৫:৬ এবং ৪:১০১-১০২, ৫:৫৮, ৬২:৯-১১ আয়াতসমূহ অনুযায়ী সালাত একটি আনুষ্ঠানিক কাজ হওয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়।
    আনুষ্ঠানিক বিষয়ের গুরুত্ব, নিছক আনুষ্ঠানিকতা মূল্যহীনতা এবং আনুষ্ঠানিক কাজ প্রতিষ্ঠার অর্থ :
    মানুষের জীবনে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক উভয় বিষয়ের গুরুত্ব রয়েছে। আনুষ্ঠানিক বিষয় শৃংখলা, প্রশিক্ষণ, কর্মতৎপরতার ক্ষেত্রে সম্পূরক মনস্তাত্ত্বিক উদ্দীপনা সৃষ্টি ইত্যাদির জন্য উপযোগী হয়ে থাকে। কিন্তু নিছক আনুষ্ঠানিকতা একটি মূল্যহীন বিষয়। অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক বিষয় যদি অনুষ্ঠানসর্বস্বতা হয়ে পড়ে তবে তার কোন গুরুত্ব নেই। আর আনুষ্ঠানিক কাজ প্রতিষ্ঠার অর্থ কোন আনুষ্ঠানিক কাজ যথাযথভাবে করে তা থেকে শিক্ষা নিয়ে সে শিক্ষাকে বাস্তবায়ন করা। সালাত প্রতিষ্ঠা করার অর্থও অনুরূপ। অর্থাৎ যথাযথভাবে সালাত সম্পাদন করে সালাতের শিক্ষা অনুযায়ী জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর স্মরণ অব্যাহত রেখে তদনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করলেই সালাত কায়েম করা হয়। সালাতের অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে সালাত কায়েম করা যায় না, আবার সালাতের অনুষ্ঠান করলে কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান পালনের অনুশীলন না করলে সে মুসল্লিদের জন্য দুর্ভোগ (সূরা মাউন)।
  • .

Sourse: https://m.facebook.com/groups/747667572302186?view=permalink&id=1055214684880805
.
The above link:-
The salat word found 90 times in Quran: https://m.facebook.com/groups/747667572302186?view=permalink&id=1053883698347237

Pt-1,2.Salat discussion fbfd

কুরআন ভিত্তিক সালাতঃ ১ম আলোচনা।
সালাত শব্দটি সল্লা থেকে উদ্ভুত যার অর্থ হলো সম্পর্ক, বন্ধন, সংযোগ – অর্থাৎ যা একটিকে অন্য কিছুর সাথে সংযোগ করে এবং নি:সন্দেহে সালাত বান্দা ও স্রষ্টার মধ্যে বন্ধনের একটি পদ্ধতি।

সালাত শব্দের বিশ্লেষণ
বাংলায় যেমন শব্দ মূল রয়েছে তেমনি আরবীর প্রায় সব শব্দের তিনটি অক্ষরের মূল রয়েছে যা থেকে বিভিন্ন শব্দের জন্ম। সালাত শব্দের মূল সোয়াদ, লাম এবং ওয়াও অক্ষর তিনটি দিয়ে। এই তিন অক্ষরের মাধ্যমে কুরআনে ৯৯ বার সালাত ও তার সমার্থক শব্দগুলো এসেছে। সাল্লা (১২ বার), সালাত (৮৩ বার), মুসাল্লান (১ বার) এবং মুসাল্লিন (৩ বার)।

সালাত শব্দটি কুরআনে ব্যবহৃত হলেও, আরবী ভাষায় এটি সাধারন অর্থেও ব্যবহৃত হয়। প্রাথমিকভাবে এর অর্থ হলো সংযোগ বা যোগাযোগ (Communication)। যেমন: ইতি-আস-সালাত শব্দের অর্থ – যোগাযোগ / সংযোগ / সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়।

কোরানের পরিভাষায় মানুষের প্রসঙ্গে সালাত হলো স্রষ্টার সাথে যোগাযোগ। এর কাছাকাছি ইংরেজী অনুবাদ হতে পারে: Communication / Communion. ক্যামব্রিজ ডিকশনারী অনুসারে কমিউনিয়ন অর্থ: a close relationship with someone in which feelings and thoughts are exchanged. অন্যদিকে Communication অর্থ হলো the process by which messages or information is sent from one place or person to another, or the message itself.

সালাতের শব্দের আরও কুরআন ভিত্তিক বিশ্লেষন করলে অর্থ দাড়ায়।
দোয়া করা, কারো দিকে মুখ করা, অগ্রসর হওয়া, ক্ষমা প্রার্থনা করা,দয়া করা, দরুদ পাঠ করা, রহমত, তাসবীহ করা,পৌছে যাওয়া ইত্যাদি।
বলে রাখা ভালো উল্লেখিত কোরআনের আয়াত গুলি বিশ্লেষণে আমরা বলতে পারি যে, ইউসাল্লি মূসাল্লি,তাসাল্লি,ইউসাল্লু, ইত্যাদি শব্দের পরে আলা’ শব্দটি এলে তা দু’য়াকরা, কল্যাণ কামনা করা, অনুগ্রহ প্রার্থনা করা অর্থে ব্যবহৃত হয়।কারন সালাত শুধু আল্লাহর জন্য।6:162
সালাতের অর্থ ব্যাপক।তাই আল্লাহ মুমিন দের বৈশিষ্ট্য দিতে গিয়ে বলেন–
আল-মা’আরিজ 70:23
যারা তাদের সালাতে সার্বক্ষণিক নিষ্ঠাবান।

তাই কুরআন অনুযায়ী শুধু প্র্যাকটিক্যেল সালাত 4:102/5:6/3:39এর বাস্তবায়ন নিয়ে কথা বলব অর্থাৎ যা রবের সংযোগে দাড়ান।২ঃ২৩৮
তাই আল্লাহ বলেন।

আশ-শু‘আরা 26:218
যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি দন্ডায়মান হও (সালাতের জন্য)।
আশ-শু‘আরা 26:219
এবং দেখেন সাজদাহকারীদের সাথে তোমার গতিবিধি।
শারিরীক এবং মন ও মননে রবের প্রতি নতজাুনু(সাজদা,রুকু) ও আত্নসমর্পন স্বীকার করাই সালাতের মৌলিক বিষয়।
সালাতের উদ্দেশ্যঃ–
1.শক্তিশালী বিশ্বাস অর্জন।

{আল-হিজ্‌র 15:98
সুতরাং তুমি তোমার রবের প্রশংসা দ্বারা তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং সাজদাহকারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
আল-হিজ্‌র 15:99
আর তোমার মৃত্যু উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তুমি তোমার রবের ইবাদাত কর।}

2.শয়তান ও মন্দ থেকে বেচে থাকা।

{আল-আনকাবূত 29:45
তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব আবৃত্তি কর এবং সালাত প্রতিষ্ঠিত কর। নিশ্চয়ই সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। আল্লাহর স্মরণই সর্বশ্রেষ্ঠ। তোমরা যা কর, আল্লাহ তা জানেন।}

3.লাভজনক বিনিয়োগ।

{ফাতির 35:29
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, আমি তাদেরকে যে রিয্ক দিয়েছি তা গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারাই আশা করতে পারে তাদের এমন ব্যবসায়ের যার ক্ষয় নেই
ফাতির 35:30
এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।
}

4.রবের স্মরনের মাধ্যমে,সংযোগ স্থাপন।29:45

{তাহা 20:14
আমি আল্লাহ! আমি ছাড়া কোন মা‘বূদ নেই; অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।

ফাতির 35:30
এ জন্য যে, আল্লাহ তাদের কর্মের পূর্ণ প্রতিফল দিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে আরো বেশি দিবেন। তিনিতো ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।}

…..

Pt. -2.

কুরআন ভিত্তিক সালাতঃ ২য় আলোচনা
সালাতের পূর্ব প্রস্তুতি এবং যে যে কারনে সালাতে যাওয়া নিষিদ্ধ।
সালতের পূর্বে গাসিল(ওযু) করতে হবে।

আল-মা’ইদাহ ৫:৬

হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের উদ্দেশে দন্ডায়মান হও তখন (সালাতের পূর্বে) তোমাদের মুখমন্ডল ধৌত কর এবং হাতগুলিকে কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নাও, আর মাথা মাসাহ কর এবং পা’গুলিকে টাখনু পর্যন্ত । যদি তোমরা অপরিষ্কার হও তাহলে পরিষ্কার হয়ে নাও। কিন্তু যদি রোগগ্রস্ত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেহ পায়খানা হতে ফিরে আস কিংবা তোমরা স্ত্রীদেরকে স্পর্শ কর (স্ত্রী-সহবাস কর), অতঃপর পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও, তখন তোমরা তা দ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসাহ কর, আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা আনয়ন করতে চাননা, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে ও তোমাদের উপর স্বীয় নি‘আমাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।

১.আপনি যদি সাইকোলজিকাল ভাবে সামর্থবান না হন যখন নিজের বলা বাক্য যদি নিজে বুঝতে সামর্থ নন সে ক্ষেত্রে সালাতে যাওয়া যাবে না।
২. অপরিষ্কার অবস্থায়।

এবং অপরিষ্কার একেবারে অতিক্রম কারী হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে গোসল না করে সালাতে যাওয়া যাবে না।
আর অতিক্রমকারী না হলে গাসিল (ওযু)রয়েছে।

আন নিসা ৪:৪৩
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেওনা, যখন নিজের উচ্চারিত বাক্যের অর্থ নিজেই বুঝতে সক্ষম নও –
এবং না অপরিষ্কার অবস্থায় কিন্তু অতিক্রমকারী হলে অন্যকথা যতক্ষণ না তোমরা গোসল করো। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। এবং যদি তোমরা পীড়িত হও, কিংবা প্রবাসে অবস্থান কর অথবা তোমাদের মধ্যে কেহ পায়খানা হতে প্রত্যাগত হয় কিংবা রমণী স্পর্শ করে এবং পানি না পাওয়া যায় তাহলে বিশুদ্ধ মাটির অম্বেষণ কর, তদ্বারা তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ মুছে ফেল; নিশ্চয়ই আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।

সালাতের মসল্লা(স্থান) পরিষ্কার রাখতে হবে।

আল-বাকারাহ ২:১২৫
এবং যখন আমি কা‘বা গৃহকে মানব জাতির জন্য সুরক্ষিত স্থান ও পুণ্যধাম করেছিলাম, এবং মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের জায়গা নির্ধারণ করেছিলাম; এবং আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলের নিকট অঙ্গীকার নিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী ও ই’তিকাফকারী এবং রুকু ও সাজদাহকারীদের জন্য পরিষ্কার রেখ।

শালীন সুন্দর পোশাক পরতে হবে।

আল-আ‘রাফ ৭:৩১
হে আদম সন্তান! প্রত্যেক সালাতের সময় সুন্দর পোশাক পরিচ্ছদ গ্রহণ কর, আর খাও এবং পান কর। তবে অপব্যয় ও অমিতাচার করবেনা, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপব্যয়কারীদের ভালবাসেননা।

পোশাক সর্বদা পরিষ্কার রাখতে হবে।

আল-মুদ্দাসসির ৭৮ঃ৪
তোমার পরিচ্ছদ পরিস্কার রাখ।
আল-মুদ্দাসসির ৭৪:৫
অপবিত্রতা হতে দূরে থাকো।

সালাতে মুমিনদের আহবান করতে হবে।

আল-জুমু‘আহ ৬২:৯
হে মু’মিনগণ! জুমু’আর দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর; এটাই তোমাদের জন্য শ্রেয়, যদি তোমরা উপলদ্ধি কর।

আল-মা’ইদাহ ৫:৫৮
আর যখন তোমরা সালাতের (আযান দ্বারা) আহবান কর তখন তারা ওর সাথে উপহাস করে; এর কারণ এই যে, তারা এরূপ লোক যারা মোটেই জ্ঞান রাখেনা।

তার উপায়ও আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন।

“আকিমু সালাত”
“আকিমু সালাত”

ইবরাহীম ১৪:৩১
আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মু’মিন তাদেরকে বল সালাত কায়েম কর এবং আমি তাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করতে, সেই দিন আসার পূর্বে যেদিন ক্রয়-বিক্রয় ও বন্ধুত্ব থাকবেনা।

নিজের ঘর বা কুরআনভিত্তিক মাসজিদকে সালাতের মুসল্লা(স্থান) বানাতে পারেন এই দুটি উদাহরনই পাওয়া যায় কুরআনে।

ইউনুস ১০:৮৭
আর আমি মূসা ও তার ভাইয়ের প্রতি অহী পাঠালামঃ তোমরা উভয়ে তোমাদের এই লোকদের জন্য মিসরে বাসস্থান বহাল রাখ, আর (সালাতের সময়) তোমরা সবাই নিজেদের সেই গৃহগুলিকে সালাত আদায় করার স্থান রূপে গণ্য কর এবং সালাত কায়েম কর, আর মু’মিনদেরকে শুভ সংবাদ জানিয়ে দাও।

আত-তাওবাহ ৯:১০৭
আর কেহ কেহ এমন আছে যারা এ উদ্দেশে মাসজিদ নির্মাণ করেছে যেন তারা (ইসলামের) ক্ষতি সাধন করে এবং কুফরী কথাবার্তা বলে, আর মু’মিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, আর ঐ ব্যক্তির অবস্থানের ব্যবস্থা করে যে এর পূর্ব হতেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধী, আর তারা শপথ করে বলবে, মঙ্গল ভিন্ন আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই; আর আল্লাহ সাক্ষী আছেন যে, তারা সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী।

আত-তাওবাহ ৯:১০৮
(হে মুহাম্মাদ!) তুমি কখনও ওতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবেনা; অবশ্য যে মাসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে তা এর উপযোগী যে, তুমি তাতে (সালাতের জন্য) দাঁড়াবে; ওতে এমন সব লোক রয়েছে যারা উত্তম রূপে পবিত্র হওয়াকে পছন্দ করে, আর আল্লাহ উত্তম রূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদেরকে পছন্দ করে।

Understanding Salat bn

By S M NAZRUL ISLAM FBFD

.

সালাত বুঝে না পড়লে কোন দিন ২৯(৪৫) বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

♥ [45] اتلُ ما أوحِىَ إِلَيكَ مِنَ الكِتٰبِ وَأَقِمِ الصَّلوٰةَ ۖ إِنَّ الصَّلوٰةَ تَنهىٰ عَنِ الفَحشاءِ وَالمُنكَرِ ۗ وَلَذِكرُ اللَّهِ أَكبَرُ ۗ وَاللَّهُ يَعلَمُ ما تَصنَعونَ
[45] আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন। নিশ্চয় নামায অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।
[45] Recite (O Muhammad SAW) what has been revealed to you of the Book (the Qur’ân), and perform As-Salât (Iqamât¬as¬Salât). Verily, As-Salât (the prayer) prevents from Al-Fahshâ’ (i.e. great sins of every kind, unlawful sexual intercourse) and Al-Munkar (i.e. disbelief, polytheism, and every kind of evil wicked deed) and the remembering (praising) of (you by) Allâh (in front of the angels) is greater indeed [than your remembering (praising) of Allâh in prayers. And Allâh knows what you do.♪♥
সালাত আদায় কারী নাবুঝে,
পড়লে , আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে
♥ [36] وَلا تَقفُ ما لَيسَ لَكَ بِهِ عِلمٌ ۚ إِنَّ السَّمعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤادَ كُلُّ أُولٰئِكَ كانَ عَنهُ مَسـٔولًا
[36] যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে।
১৭(৩৬)
[36] And follow not (O man i.e., say not, or do not or witness not) that of which you have no knowledge. Verily! The hearing, and the sight, and the heart, of each of those one will be questioned (by Allâh). -♥
যেমন একজন নামাজ পড়া লোক নিচের আয়াতটা বলে মাথা নত করল, ( রুকু) , সে নাবুঝলে সে তো ওজনে কম দিবে –
♥ [35] وَأَوفُوا الكَيلَ إِذا كِلتُم وَزِنوا بِالقِسطاسِ المُستَقيمِ ۚ ذٰلِكَ خَيرٌ وَأَحسَنُ تَأويلًا
[35] মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায় ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম শুভ।
[35] And give full measure when you measure, and weigh with a balance that is straight. That is good (advantageous) and better in the end.১৭(৩৫)♥
নামাজে যা বল্ল তা করলো না, তা প্রতি দেখেন আল্লাহ অসন্তুষ্ট হল ৬১(২/৩),
♥ [2] يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا لِمَ تَقولونَ ما لا تَفعَلونَ
[2] মুমিনগণ! তোমরা যা কর না, তা কেন বল?
[2] O you who believe! Why do you say that which you do not do?
[3] كَبُرَ مَقتًا عِندَ اللَّهِ أَن تَقولوا ما لا تَفعَلونَ
[3] তোমরা যা কর না, তা বলা আল্লাহর কাছে খুবই অসন্তোষজনক।
[3] Most hateful it is with Allâh that you say that which you do not do♥

এই বার ভাবুন নামাজী ব্যাক্তি উক্ত বানীগুলো না মানার কারণে, ৫(৪৪/৪৫/৪৭ অনুসারে) সে কাফির/ ফাসিক / জালিম হল।
এবং জাহান্নামি হতে পারে।♥
৫(৪৪) টা দিলাম —
♥ [44] إِنّا أَنزَلنَا التَّورىٰةَ فيها هُدًى وَنورٌ ۚ يَحكُمُ بِهَا النَّبِيّونَ الَّذينَ أَسلَموا لِلَّذينَ هادوا وَالرَّبّٰنِيّونَ وَالأَحبارُ بِمَا استُحفِظوا مِن كِتٰبِ اللَّهِ وَكانوا عَلَيهِ شُهَداءَ ۚ فَلا تَخشَوُا النّاسَ وَاخشَونِ وَلا تَشتَروا بِـٔايٰتى ثَمَنًا قَليلًا ۚ وَمَن لَم يَحكُم بِما أَنزَلَ اللَّهُ فَأُولٰئِكَ هُمُ الكٰفِرونَ
[44] আমি তওরাত অবর্তীর্ন করেছি। এতে হেদায়াত ও আলো রয়েছে। আল্লাহর আজ্ঞাবহ পয়গম্বর, দরবেশ ও আলেমরা এর মাধ্যমে ইহুদীদেরকে ফয়সালা দিতেন। কেননা, তাদেরকে এ খোদায়ী গ্রন্থের দেখাশোনা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং তাঁরা এর রক্ষণাবেক্ষণে নিযুক্ত ছিলেন। অতএব, তোমরা মানুষকে ভয় করো না এবং আমাকে ভয় কর এবং আমার আয়াত সমূহের বিনিময়ে স্বল্পমূল্যে গ্রহণ করো না, যেসব লোক ♥আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফায়সালা করে না, তারাই কাফের♥।
এইবার দেখুন তার পরিনতি —

♥ [6] إِنَّ الَّذينَ كَفَروا مِن أَهلِ الكِتٰبِ وَالمُشرِكينَ فى نارِ جَهَنَّمَ خٰلِدينَ فيها ۚ أُولٰئِكَ هُم شَرُّ البَرِيَّةِ
[6] আহলে-কিতাব ও মুশরেকদের মধ্যে যারা কাফের, তারা জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে থাকবে। তারাই সৃষ্টির অধম।
[6] Verily, those who disbelieve (in the religion of Islâm, the Qur’ân and Prophet Muhammad (SAW)) from among the people of the Scripture (Jews and Christians) and Al-Mushrikûn will abide in the Fire of Hell. They are the worst of creatures.♥
কিভাবে এখন নামাজ আদায় কারীরা
এখন কাফের ও জাহান্নামি হচ্ছে ।

♥ ভয় নেই যারা বুঝে পড়েন না তাদের জন্য সুসংবাদ আছে –
আজ থেকেই মানে বুঝার, বিশ্বাষ করা,ও সেই অনুযায়ী কাজ করার কাজে নিয়োজিত হন,

আল্লাহ ক্ষমাশীল –
♥_ [17] إِنَّمَا التَّوبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذينَ يَعمَلونَ السّوءَ بِجَهٰلَةٍ ثُمَّ يَتوبونَ مِن قَريبٍ فَأُولٰئِكَ يَتوبُ اللَّهُ عَلَيهِم ۗ وَكانَ اللَّهُ عَليمًا حَكيمًا
[17] অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।
[17] Allâh accepts only the repentance of those who do evil in ignorance and foolishness and repent soon afterwards; it is they whom Allâh will forgive and Allâh is Ever All¬Knower, All¬Wise.
[18] وَلَيسَتِ التَّوبَةُ لِلَّذينَ يَعمَلونَ السَّيِّـٔاتِ حَتّىٰ إِذا حَضَرَ أَحَدَهُمُ المَوتُ قالَ إِنّى تُبتُ الـٰٔنَ وَلَا الَّذينَ يَموتونَ وَهُم كُفّارٌ ۚ أُولٰئِكَ أَعتَدنا لَهُم عَذابًا أَليمًا
[18] আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে, এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
[18] And of no effect is the repentance of those who continue to do evil deeds until death faces one of them and he says: “Now I repent;” nor of those who die while they are disbelievers. For them We have prepared a painful torme♥
তবেই আমাদের জন্য জান্নাত অপেক্ষা করছে –
♥৭০(৩৪-৩৫)-
[34] وَالَّذينَ هُم عَلىٰ صَلاتِهِم يُحافِظونَ
[34] এবং যারা তাদের নামাযে যত্নবান,
[34] And those who guard their Salât (prayers) well ,
[35] أُولٰئِكَ فى جَنّٰتٍ مُكرَمونَ
[35] তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।
[35] Such shall dwell in the Gardens (i.e. Paradise) honoure♥
আরো দেখুন ৭৫(৩১)৯৫(১০-১৯)।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সালাতে যা বলি বুঝে বলে , বিশ্বাষ করে, সেই অনুসারে জীবনযাপন করার তৌফিক দান করুন।
♥♥♥πππππππππππππ ♥♥♥♥

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করার কথা কোরআনে উল্লেখ নেই।

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করার কথা কোরআনে উল্লেখ নেই


দিনে বা রাতের যে কোনো সময় সালাত আদায় করা যাবে। এজন্য আল্লাহ বলেন, সালাতী কার্যক্রমটা সার্বক্ষণিক (মাআরিজ, ২৩ আয়াত)। দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টার ভিতরে প্রথম ১২ ঘণ্টা সময়সীমার মধ্যে সালাত কায়েম করাকে ফরজ করা হয়েছে, বাকী ১২ ঘণ্টা সময়সীমার মধ্যে সালাত আদায় করাকে তাজ্জত করা হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সালাত আদায় করা মমিনদের উপর লিখিত করা হয়েছে (নিছা, ১০৩ আয়াত)। এই আয়াতে মাউকুতা শব্দ এসেছে। মাউকুতা শব্দের অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা। (আরবি অভিধান পৃ. ২৩১৮)। এখানে নির্ধারিত সময়সীমা বলতে ১ম ১২ ঘণ্টাকে বুঝানো হয়েছে।
তবে এখন আমাদের জানতে হবে, ১ম বার ঘণ্টার শুরুটা কখন থেকে হবে। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, সূর্য হেলে পড়ার পর হতে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম কর (বনি ইসরাইল, ৭৮ আয়াত)। অর্থাৎ দুপুর ১২ টার পর হতে রাত ১২টা পর্যন্ত সময়সীমাটা সালাত কায়েমের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তোমরা সালাত কায়েম কর দিনের শেষাংশে এবং রাত্রের প্রথমাংশে। (হুদ ১১৪ আয়াত)। এই আয়াতে তারাফাই শব্দ এসেছে। তারাফাই শব্দের অর্থ হচ্ছে শেষ সীমা (আরবি অভিধান পৃ. ১৬৬৯)। এই আয়াতে জুলুফাই শব্দ এসেছে, জুলুফাই শব্দ প্রথম অংশ (আরবি অভিধান পৃ. ১৪০৭)। এই সময়সীমার মধ্যে সালাত আদায় করাকে মধ্যবর্তী সালাত বলে। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তোমরা মধ্যবর্তী সালাতকে রক্ষা কর (বাকারা, ২৩৮ আয়াত)। এই দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা সময়সীমার মধ্যে একবার সালাতকে রক্ষা করা তেমন একটা কঠিন কাজ নয়, এইজন্য আল্লাহ বলেন, দ্বীনের বিষয়ে আল্লাহ কাহারো উপর কঠোরতা আরোপ করেনা, বা সাধ্যের অতিরিক্ত কারো উপরে চাপিয়ে দেয় না। (হজ্জ, ৭৮ আয়াত)। এখানে উল্লেখ্য যে, অনেকে বলেন ফজরের সালাতটা ফরজ কাজ। কিন্তু না, কারণ সূর্য হেলে পড়ার পর হতে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম কর। কিন্তু ফজরের সালাতটা এই সময়সীমার ভিতরে পড়েনা, বিধায় ফজরের সালাত ফরয হলে বনি ইসরাইলের ৭৮ আয়াতের পরিপন্থী হয়। কিন্তু যদি কোনো বুঝ কোনো আয়াতের পরিপন্থি হয় তাহলে সেই বুঝ পরিহার করা উচিত। তাই ফজরের সালাতটা কোনো অবস্থায়ই ফরয নয় এটা সালাতে তাজ্জত (বনি ইসরাইল, ৭৮ আয়াত)। কারণ ফজরের সময়টা যদি দিনের অংশের সাথে গণ্য করা হয় তাহলে এটা হয় দিনের প্রথমাংশ, দিনের প্রথমাংশের সালাত তাজ্জতের পর্যায়ভুক্ত (বনি ইসরাইল, ৭৮ আয়াত)। আবার যদি ফজরটা রাতের অংশের সাথে ধরি তাহলে ফজরটা রাতের শেষাংশে পড়ে, আর রাতের শেষাংশের সালাতটা হচ্ছে তাজ্জতের সালাত (বনি ইসরাইল, ৭৮ আয়াত)। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ ফজরের সালাতকে তাজ্জতের সালাত হিসেবে আদায় করে আসছে, তাই আরবি ভাষার সময়ের তালিকায় ফজরের সালাতের সময় নামে একটি সময়ের উল্লেখ পাওয়া যায়, এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তোমরা ফজরের সালাতের পূর্বে কাহারো ঘরে প্রবেশ করার পূর্বে অনুমতি প্রার্থনা করবে (নূর, ৫৮ আয়াত)। এই আয়াত দিয়ে অনেকেই ফজরের সালাতকে ফরজ প্রমাণ করে, কিন্তু না, এই আয়াতে ফজরের সালাত কায়েম কর নির্দেশ আসে নি। বিধায় ফজরের সালাতটা ফরজ নয় বরং এটা তাজ্জতের সালাত। তাছাড়া পবিত্র কোরআনে কোথাও ফজরের সালাত কায়েম কর মর্মে কোনো আয়াত আসে নি কিংবা সকাল সন্ধ্যায় সালাত কায়েম কর এই মর্মেও কোনো আয়াত আসে নি।
কাজেই সালাতের সময়সীমা বলতে দিনের শেষাংশ এবং রাতের ১ম অংশ, অর্থাৎ দুপুর ১২টার পর হতে রাত্র ১২ টা পর্যন্ত এই সময়সীমার মধ্যে কয়বার সালাত কায়েম করতে হবে মর্মে কোনো সংখ্যা উল্লেখ নেই বিধায়, এই সময়সীমার মধ্যে কমপক্ষে একবার সালাত কায়েম করা ফরয এটাই প্রমাণ হয়। অর্থাৎ রাত্র ১২টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাজ্জত সালাতের সময়। কাজেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত কায়েম করা মর্মে পবিত্র কোরআনে কোনো আয়াত আসে নি। তারপরও যদি কেউ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে তাতে কোনো দোষ নেই। তবে দ্বীনের বিষয়ে আল্লাহ কাহারো উপর সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয় না। (মমিন ৬২, আয়াত, এবং আরাফ ৪২ আয়াত)। আর দ্বীনকে সহজ করার জন্য আল্লাহ দ্বীনে পাঁচবার আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করতে বলেছেন। (সূরা ত্বাহা : ১৩০) এখানে উল্লেখ্য যে, এই আয়াত দিয়ে অনেকেই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত প্রমাণ করে থাকেন। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, সূরা ত্বহার ১৩০ নং আয়াতে সালাত শব্দ আসেনি। এই আয়াতে এসেছে সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি। আর এটা করতে তাহির হওয়া ফরয নয়। আর এর জন্য সেজদাও জরুরি নয়। অথচ সালাতের পূর্বে তাহির হওয়া ফরজ। (সূরা মায়েদা : ৬) এবং সালাতে সেজদা ফরজ। (সূরা নেসা : ১০২)
আল্লাহ বলেন, তোমরা মানুষকে প্রভুর পথে আহ্বান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা। এবং তাদের সহিত তর্ক কর উত্তম পন্থায়। (নহল, ১২৫ আয়াত)। আর হিকমতের এই শিক্ষাই হচ্ছে রসূলের কাছে (বাকারা ১৫১ আয়াত)। কাজেই রসূল চেহারায় সেজদা কায়েম করাই হচ্ছে সালাত কায়েম করা।

http://www.mdhashibulhaque.com/Quraner%20Bishoy-Vittik%20Alochana%20Part-1b.html