By syed wali fbfd
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ যে সকল প্রার্থনা মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন
ক. বিপদ-আপদ থেকে পরিত্রাণ (বর্তমান প্রেক্ষিত)
২. ১৫৫-১৫৬: আমি তোমাদেরকে কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করিব। তুমি শুভসংবাদ দাও ধৈর্যশীলগণকে- যাহারা তাহারে উপর বিপদ আপতিত হইলে বলে (দ্রষ্টব্য: আরাবী শব্দ কালু: বলা) :
‘আমরা তো আল্লাহ্রই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁহার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’
২১. ৮৩-৮৪: এবং স্মরণ কর আইউবের কথা যখন সে তাহার প্রতিপালককে আহ্বান করিয়া বলিয়াছিল (দ্রষ্টব্য: আরাবী শব্দ নুদাআ: ক্রন্দন করে প্রার্থনা):
‘আমি দুঃখ-কষ্টে পড়িয়াছি, আর আপনি তো সর্বশেষ্ঠ দয়ালু!’
তখন আমি তাহার ডাকে সাড়া দিলাম, তাহার দুঃখ-কষ্ট দূরীভূত করিয়া দিলাম, তাহাকে তাহার পরিবার-পরিজন ফিরাইয়া দিলাম এবং তাহাদের সঙ্গে তাহাদের মত আরো দিলাম আমার বিশেষ রহমতরূপে এবং ‘ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।
২১. ৮৭-৮৮: এবং স্মরণ কর যুন-্ নূন (ইঊসুস আঃ) -এর কথা, যখন সে ক্রোধভারে বাহির হইয়া গিয়াছিল এবং মনে করিয়াছিল আমি তাহার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করিব না। অতঃপর সে অন্ধকার (মাছের পেট) হইতে আহ্বান করিয়াছিল (দ্রষ্টব্য: আরাবী শব্দ নুদাআ: ক্রন্দন করে প্রার্থনা):
‘আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; আপনি পবিত্র, মহান! আমি তো সীমালংঘনকারী।’
তখন আমি তাহার ডাকে সাড়া দিয়াছিলাম এবং তাহাকে উদ্ধার করিয়াছিলাম দুশ্চিন্তা হইতে এবং এইভাবেই আমি মু’মিনদেরকে উদ্ধার করিয়া থাকি।
৬৮: ২৬-৩২: অতঃপর উহারা যখন বাগানের অবস্থা প্রত্যক্ষ করিল (কয়েক ব্যক্তি তাদের সম্পদে দরিদ্র মানুষের যে হক তা থেকে দরিদ্রদেরকে বঞ্চণা করার কৌশল অবলম্বনের কারণে তার সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর) তখন বলিল, ‘আমরা তো দিশা হারাইয়া ফেলিয়াছি। বরং আমরা তো বঞ্চিত।’
উহাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলিল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলি নাই? এখনও তোমরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করিতেছ না কেন?’
তখন উহারা বলিল:
‘আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করিতেছি, আমরা তো সীমালংঘনকারী ছিলাম।’——–। — ‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। সম্ভবত আমাদের প্রতিপালক ইহা হইতে আমাদেরকে উৎকৃষ্টতর বিনিময় দিবেন, আমরা আমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হইলাম।’
খ. বিস্তারিত (পবিত্র কুরআনে সুরার ক্রমানুসারে)
১. ১-৭: সকল প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্রই, যিনি দয়াময়, পরম দয়ালু, কর্মফল দিবসের মালিক। আমরা শুধু আপনারই ‘ইবাদত করি, শুধু আপনারই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমাদিগকে সরল পথ প্রদর্শন করুন, তাহাদের পথ, যাহাদিগকে আপনি অনুগ্রহ দান করিয়াছেন, তাহাদের পথ নহে যাহারা ক্রোধ-নিপতিত ও পথভ্রষ্ট।
২. ৫৮. স্মরণ কর, যখন আমি বলিলাম, ‘এই জনপদে প্রবেশ কর, যেথা ইচ্ছা স্বচ্ছন্দে আহার কর, নতশিরে প্রবেশ কর দ্বারা দিয়া এবং বল:
‘ক্ষমা চাই’।
আমি তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করিব এবং সৎকর্মপরায়ণ লোকদের প্রতি আমার দান বৃদ্ধি করিব।’
২. ১২৬- ১২৯: স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলিয়াছিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! ইহাকে (এই শহরকে) নিরাপদ শহর করুন, আর ইহার অধিবাসীদের মধ্যে যাহারা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে তাহাদেরকে ফলমূল হইতে জীবিকা প্রদান করুন।’
তিনি বলিলেন, ‘যে কেহ কুফরী করিবে তাহাকেও কিছুকালের জন্য জীবন উপভোগ করিতে দিব, অতঃপর তাহাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করিতে বাধ্য করিব এবং কত নিকৃষ্ট তাহাদের প্রত্যাবর্তনস্থল!’
স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের প্রাচীর তুলিতেছিল তখন তাহারা বলিয়াছিল:
‘হে আমারে প্রতিপালক! আমাদের এই কাজ গ্রহণ করুন, নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাতা। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের উভয়কে আপনার একান্ত অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধর হইতে আপনার এক অনুগত উম্মত করিবেন। আমাদেরকে ‘ইবাদতের নিয়ম-পদ্ধতি দেখাইয়া দিন এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হোউন। আপনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হে আমাদের প্রতিপালক! তাহাদের মধ্য হইতে তাহাদের নিকট একজন রাসূল প্রেরণ করিবেন – যে আপনার আয়াতসমূহ তাহাদের নিকট তিলাওয়াত করিবে; তাহাদেরকে কিতাব ও হিক্মত শিক্ষা দিবে এবং তাহাদেরকে পবিত্র করিবে। আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
২. ১৩৫-১৩৬ :—— ; বল, ‘ আমরা বরং একনিষ্ঠ হইয়া ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ করিব এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না।’
তোমরা বল:
‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া’কূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ‘ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে; আমরা তাহাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না এবং আমরা তঁহারই নিকট আত্মসমর্পণকারী।’
২. ১৩৮: ‘আমরা গ্রহণ করিলাম আল্লাহ্র রং, রঙে আল্লাহ্ অপেক্ষা কে অধিকতর সুন্দর? এবং আমরা তাঁহারই ‘ইবাদতকারী।’
২. ১৫৬: যাহারা তাহার উপর বিপদ আপতিত হইলে বলে:
‘আমরা তো আল্লাহ্রই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁহার দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’
২. ২০০-২০২: অতঃপর যখন তোমরা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি সমাপ্ত করিবে তখন আল্লাহ্কে এমনভাবে স্মরণ করিবে যেমন তোমরা তোমাদের পিতৃপুরুষগণকে স্মরণ করিতে, অথবা তদপেক্ষা অভিনিবেশ সহকারে। মানুষের মধ্যে যাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালেই দিন’
বস্তুত পরকালে তাহাদের জন্য কোন অংশ নাই। আর তাহাদের মধ্যে যাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দিন এবং আখিরাতে কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা করুন-’
তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহার প্রাপ্য অংশ তাহাদেরই। বস্তুত আল্লাহ্ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর।
২. ২৫০: তাহারা যখন যুদ্ধার্থে জালূত ও তাহার সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হইল তখন তাহারা বলিল:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ধৈর্য্য দান কর, আমাদের পা অবিচলিত রাখ এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য দান কর।’
২. ২৮৫-২৮৬: রাসূল, তাহার প্রতি তাহার প্রতিপালকের পক্ষ হইতে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে ঈমান আনিয়াছে এবং মু‘মিনগণও। তাহাদের সকলে আল্লাহে, তাঁহার ফেরেশতাগণে, তাঁহার কিতাব সমূহে এবং তাঁহার রাসূলগণে ঈমান আনিয়াছে। তাহারা বলে:
‘আমরা তাঁহার রাসূলগণের মধ্যে কোন তারতম্য করি না —— আমরা শুনিয়াছি এবং পালন করিয়াছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার ক্ষমা চাই আর প্রত্যাবর্তন আপনারই নিকট। আল্লাহ্ কাহারও উপর এমন কোন কষ্টদায়ক দায়িত্ব অপর্ণ করেন না যাহা তাহার সাধ্যতীত। সে ভাল যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই এবং সে মন্দ যাহা উপার্জন করে তাহার প্রতিফল তাহারই।
হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করিবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক আমাদের পূর্ববতিগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করিয়া ছিলেন আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করিবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করিবেন না যাহা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদের ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।’
৩. ৮-৯: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! সরল পথ প্রদর্শনের পর আপনি আমাদের অন্তরকে সত্য লংঘনপ্রবণ করিবেন না এবং আপনার নিকট হইতে আমাদেরকে করুণা দান করুন, নিশ্চয়ই আপনি মহাদাতা। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি মানব জাতিকে একদিন একত্রে সমবেত করিবেন, ইহাতে কোন সন্দেহ নাই; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।’
৩. ১৬: যাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান আনিয়াছি; সুতরাং তুমি আমাদের পাপ ক্ষমা কর এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব হইতে রক্ষা করুন’;
তাহারা ধৈর্যশীল, সত্যবাদী, অনুগত, ব্যয়কারী এবং শেষ রাত্রে ক্ষমাপ্রার্থী।
৩. ২৬- ২৭: বল:
‘হে সার্বভৌম শক্তির মালিক আল্লাহ! আপনি যাহাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান করেন এবং যাহার নিকট হইতে ইচ্ছা ক্ষমতা কাড়িয়া নেন; যাহাকে ইচ্ছা আপনি ইজ্জত দান কর, আর যাহাকে ইচ্ছা আপনি হীন করেন। কল্যাণ আপনার হাতেই। নিশ্চয়ই আপনি সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। আপনি রাত্রিকে দিবসে পরিণত এবং দিবসকে রাত্রিতে পরিণত করেন : আপনিই মৃত হইতে জীবন্তের আবির্ভাব ঘটান, আবার জীবন্ত হইতে মৃতের আবির্ভাব ঘটান। আপনি যাহাকে ইচ্ছা অপরিমিত জীবনোপকরণ দান করেন।’
৩. ৩৫: স্মরণ কর, যখন ইমরানের স্ত্রী বলিয়াছিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমার গর্ভে যাহা আছে তাহা একান্ত আপনার জন্য আমি উৎসর্গ করিলাম। সুতরাং আপনি আমার নিকট হইতে উহা কবূল করুন, নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’
৩. ৩৬: অতঃপর যখন সে উহাকে প্রসব করিল তখন সে বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমি কন্যা প্রসব করিয়াছি।’ —- ‘আর ছেলে তো এই মেয়ের মত নয়, আমি উহার নাম ‘র্মাইয়াম’ রাখিয়াছি এবং অভিশপ্ত শয়তান হইতে তাহার ও তাহার বংশধরদের জন্য আপনার শরণ লইতেছি।’
৩. ৩৮: সেখানেই যাকারিয়া তাহার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা করিয়া বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে আপনি আপনার নিকট হইতে সৎ বংশধর দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী।’
৩. ৫৩: ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহাতে আমরা ঈমান আনিয়াছি এবং আমরা এই রাসূলের অনুসরণ করিয়াছি। সুতরাং আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাাভুক্ত করুন।’ (ঈসা আঃ-এর অনুসারী হাওয়ারীগন এই প্রার্থনা করে)
৩. ১৪৬- ১৪৭: এবং কত নবী যুদ্ধ করিয়াছে, তাহাদের সঙ্গে বহু আল্লাহ্ওয়ালা ছিল। আল্লাহ্র পথে তাহাদের যে বিপর্যয় ঘটিয়াছিল তাহাতে তাহারা হীনবল হয় নাই, দুর্বল হয় নাই এবং নত হয় নাই। আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের ভালবাসেন।
এই কথা ব্যতীত তাহাদের আর কোন কথা ছিল না:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পাপ এবং আমাদের কাজে সীমালংঘন আপনি ক্ষমা করুন, আমাদের পা সুদূঢ় রাখুন এবং কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।’
৩. ১৯১-১৯৪: যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করে এবং আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্তা করে ও বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি করেন নাই, আপনি পবিত্র, আপনি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! কাহাকেও আপনি দোজখে নিক্ষেপ করিলে তাহাকে তো আপনি নিশ্চয়ই লাঞ্ছিত করিলেন এবং জালিমদের কোন সাহায্যকারী নাই; হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা এক আহ্বায়ককে ঈমানের দিকে আহ্বান করিতে শুনিয়াছি, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আন।’ সুতরাং আমরা ঈমান আনিয়াছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের পাপ ক্ষমা করুন, আমাদের মন্দ কাজগুলি দূরীভূত করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্ম পরায়ণদের সহগামী করিয়া মৃত্যু দিন। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে আমাদেরকে যাহা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন তাহা আমাদেরকে দিন এবং কিয়ামতের দিন আমাদেরকে হেয় করিবেন না। নিশ্চয়ই আপনি প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।’
৪. ৭৫: তোমাদের কী হইল যে, তোমরা যুদ্ধ করিবে না আল্লাহ্র পথে এবং অসহায় নরনারী এবং শিশুগণের জন্য, যাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! এই জনপদ- যাহার অধিবাসী জালিম, উহা হইতে আমাদেরকে অন্যত্র লইয়া যাও; তোমার নিকট হইতে কাহাকেও আমাদের অভিভাবক কর এবং তোমার নিকট হইতে কাহাকেও আমাদের সহায় কর।’
৫. ৮৩-৮৫: রাসূলের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহা যখন তাহারা শ্রবণ করে তখন তাহারা যে সত্য উপলব্ধি করে তাহার জন্য তুমি তাহাদের চক্ষু অশ্রু-বিগলিত দেখিবে। তাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান আনিয়াছি; সুতরাং তুমি আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাভুক্ত কর। আল্লাহে ও আমাদের নিকট আগত সত্যে আমাদের ঈমান না আনার কী কারণ থাকিতে পারে যখন আমরা প্রত্যাশা করি, আল্লাহ্ আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভূক্ত করুন?’
এবং তাহাদের এই কথার জন্য আল্লাহ্ তাহাদের পুরস্কার নির্দিষ্ট করিয়াছেন জান্নাত- যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে। ইহা সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কার।
৭. ২৩: তাহারা (নিষিদ্ধ ফল ভক্ষন করার পর আদম এবং তার সঙ্গীনি) বলিল:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা নিজেদের প্রতি অন্যায় করিয়াছি, যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং দয়া না করেন তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’
৭. ৪৭: যখন তাহাদের দৃষ্টি দোজখবাসীদের প্রতি ফিরাইয়া দেওয়া হইবে তখন তাহারা (আরাফবাসী) বলিবে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে জালিমদের সঙ্গী করিবেন না।’
৭. ৫৫-৫৬: তোমরা বিনীতভাবে ও গোপনে তোমাদের প্রতিপালককে ডাক; তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পসন্দ করেন না। দুনিয়ায় শান্তি স্থাপনের পর তোমরা উহাতে বিপর্যয় ঘটাইও না, তাঁহাকে ভয় ও আশার সঙ্গে ডাকিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ্র অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়ণদের নিকটবর্তী।
৭. ৮৯: —–। —। ‘সব কিছুই আমাদের প্রতিপালকের জ্ঞানায়ত্ত, আমরা আল্লাহ্র প্রতি নির্ভর করি। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ও আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ন্যায্যভাবে মীমাংসা করিয়া দিন এবং আপনিই শ্রেষ্ঠ মীমাংসাকারী।’ (রাসুল শু‘আয়ব আঃ-এর প্রার্থনা)
৭. ১৪৯: তাহারা (মূসা আঃ-এর সম্প্রদায়) যখন অনুতপ্ত হইল ও দেখিল যে, তাহারা বিপথগামী হইয়া গিয়াছে, তখন তাহারা বলিল (গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ পর নিজেদের ভুল বোঝার পর মূসা আঃ-এর সম্প্রদায়ের একাংশের প্রার্থণা) :
‘আমাদের প্রতিপালক যদি আমাদের প্রতি দয়া না করেন ও আমাদেরকে ক্ষমা না করেন তবে আমরা তো ক্ষতিগ্রস্ত হইবই।’
৭. ১৫১: মূসা বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ও আমার ভ্রাতাকে ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আপনার রহমতের মধ্যে দাখিল করুন। আপনিই শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
৭. ১৫৫-১৫৬: মূসা স্বীয় সম্প্রদায় হইতে সত্তরজন লোককে আমার নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার জন্য মনোনীত করিল। তাহারা যখন ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হইল, তখন মুসা বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি ইচ্ছা করিলে পূর্বেই তো ইহাদেরকে এবং আমাকেও ধ্বংস করিতে পারিতেন! আমাদের মধ্যে যাহারা নির্বোধ, তাহারা যাহা করিয়াছে সেইজন্য কি আপনি আমাদেরকে ধ্বংস করিবেন? ইহা তো শুধু আপনার পরীক্ষা, যদ্ধারা আপনি যাহাকে ইচ্ছা বিপথগামী করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন। আপনিই তো আমাদের অভিভাবক; সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের প্রতি দয়া করুন এবং ক্ষমাশীলদের মধ্যেই আপনিই তো শ্রেষ্ঠ। আমাদের জন্য নির্ধারিত করুন দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ, আমরা আপনারই নিকট প্রত্যাবর্তন করিয়াছি।’
আল্লাহ বলিলেন, ‘আমার শাস্তি যাহাকে ইচ্ছা দিয়া থাকি আর আমার দয়া- তাহা তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত। সুতরাং আমি উহা তাহাদের জন্য নির্ধারিত করিব যাহারা তাক্ওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় ও আমার আয়াতে বিশ্বাস করে।
৯. ১২৯: অতঃপর উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া নেয় তবে তুমি বলিও:
‘আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। আমি তাহারই উপর নির্ভর করি এবং তিনি মহার্আশের অধিপতি।’
১০. ৮৪-৮৫: মূসা বলিয়াছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহ্তে ঈমান আনিয়া থাক, যদি তোমরা আত্মসমর্পণকারী হও তবে তোমরা তাঁহারই উপর নির্ভর কর।’ অতঃপর তাহারা বলিল:
‘আমরা আল্লার্হ উপর নির্ভর করিলাম। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে জালিম সম্প্রদায়ের উৎপীড়নের পাত্র করিবেন না; এবং আমাদেরকে আপনার অনুগ্রহে কাফির সম্প্রদায় হইতে রক্ষা করুন।’
১০. ৮৮-৮৯: মূসা বলিল:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো ফির‘আওন ও তাহার পারিষদবর্গকে পার্থিব জীবনে শোভা ও সম্পদ দান করিয়াছেন যদ্দ¦ারা, হে আমাদের প্রতিপালক! উহারা মানুষকে আপনার পথ হইতে ভ্রষ্ট করে। হে আমাদের প্রতিপালক! উহাদের সম্পদ বিনষ্ট করুন, উহাদের হৃদয় কঠিন করিয়া দিন, উহারা তো মর্মন্তুদ শাস্তি প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত ঈমান আনিবে না।’
তিনি বলিলেন, ‘তোমাদের দুইজনের দু‘আ কবুল হইল, সুতরাং তোমরা দৃঢ় থাক এবং তোমরা কখনও অজ্ঞদের পথ অনুসরণ করিও না।
১১. ৪৭: সে (নূহ আঃ) বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নাই, সে বিষয়ে যাহাতে আপনাকে অনুরোধ না করি, এইজন্য আমি আপনার শরণ লইতেছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন এবং আমাকে দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হইব।’
১২. ১০১: (ইউসুফ আঃ-এর প্রার্থনা): ‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে রাজ্য দান করিয়াছেন এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়াছেন। হে আকাশম-লী ও পৃথিবীর স্রষ্টা ! আপনিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক। আপনি আমাকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দিন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন।’
১৪. ৩৫-৪১: স্মরণ কর, ইব্রাহীম বলিয়াছিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! এই নগরীকে নিরাপদ করিবেন এবং আমাকে ও আমার পুত্রগণকে প্রতিমা পূজা হইতে দূরে রাখিবেন। হে আমার প্রতিপালক! এই সকল প্রতিমা তো বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করিয়াছে। সুতরাং যে আমার অনুসরণ করিবে সে-ই আমার দলভূক্ত, কিন্তু কেহ আমার অবাধ্য হইলে আপনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। হে আমাদের প্রতিপালক! আমি আমার বংশধরদের কতককে বসবাস করাইলাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র গৃহের নিকট, হে আমাদের প্রতিপালক! এইজন্য যে, উহারা যেন সালাত কায়েম করে। অতএব আপনি কিছু লোকের অন্তর উহাদের প্রতি অনুরাগী করিয়া দিবেন এবং ফলাদি দ্বারা উহাদের রিযিকের ব্যবস্থা করিবেন, যাহাতে উহারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো জানেন যাহা আমরা গোপন করি ও যাহা আমরা প্রকাশ করি; আকাশম-লী ও পৃথিবীর কিছুই আল্লাহ্র নিকট গোপন থাকে না। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই, যিনি আমাকে আমার বার্ধক্যে ইস্মাঈল ও ইস্হাককে দান করিয়াছেন। আমার প্রতিপালক অবশ্যই প্রার্থনা শুনিয়া থাকেন।’
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সালাত কায়েমকারী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হইতেও। হে আমাদের প্রতিপালক! আমার প্রার্থনা কবুল করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! যেই দিন হিসাব অনুষ্ঠিত হইবে সেই দিন আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং মু’মিনগণকে ক্ষমা করিবেন।’
১৭. ২৩-২৪: তোমরা প্রতিপালক আদেশ দিয়াছেন তিনি ব্যতীত অন্য কাহারও ‘ইবাদত না করিতে ও পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করিতে। তাহাদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হইলে তাহাদেরকে ‘উফ্ বলিও না এবং তাহাদেরকে ধমক দিও না; তাহাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলিও। মমতাবশে তাহাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করিও এবং বলিও:
‘হে আমার প্রতিপালক! তাহাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাহারা আমাকে প্রতিপালন করিয়াছিলেন।’
১৭. ৮০: বল ’হে আমার প্রতিপালক! আমাকে প্রবেশ করাও কল্যাণের সঙ্গে এবং আমাকে নিষ্ক্রান্ত করাও কল্যাণের সঙ্গে এবং আপনার নিকট হইতে আমাকে দান করুন সাহায্যকারী শক্তি।’
১৮. ১০: যখন যুবকরা গুহায় আশ্রয় লইল তখন তাহারা বলিয়াছিল:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি নিজ হইতে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা করুন।’
১৮. ১৩-১৫: আমি তোমার নিকট উহাদের (কাহাফবাসীদের) বৃত্তান্ত সঠিকভাবে বর্ণনা করিতেছি: উহারা ছিল কয়েকজন যুবক, উহারা উহাদের প্রতিপালকের প্রতি ঈমান আনিয়াছিল এবং আমি উহাদের সৎপথে চলার শক্তি বৃদ্ধি করিয়াছিলাম,
এবং আমি উহাদের চিত্ত দৃঢ় করিয়া দিলাম; উহারা যখন উঠিয়া দাঁড়াইল তখন বলিল:
‘আমাদের প্রতিপালক আকাশম-লী ও পৃথিবীর প্রতিপালক। আমরা কখনই তাঁহার পরিবর্তে অন্য কোন ইলাহ্কে আহ্বান করিব না; যদি করিয়া বসি, তবে উহা অতিশয় গর্হিত হইবে। আমাদেরই এই স্বজাতিগণ, তাঁহার পরিবর্তে অনেক ইলাহ্ গ্রহণ করিয়াছে। ইহারা এই সমস্ত ইলাহ্ সন্বদ্ধে স্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করে না কেন? যে আল্লাহ্ সন্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে?
২০. ১১৪: আল্লাহ অতি মহান, প্রকৃত অধিপতি। তোমার প্রতি আল্লাহর ওহী সম্পূর্ণ হইবার পূর্বে কুরআন পাঠে তুমি ত্বরা করিও না এবং বল:
’হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ কর।’ (রাব্বি জিদনি ইলমা)
২১. ৮৩-৮৪: এবং স্মরণ কর আইউবের কথা যখন সে তাহার প্রতিপালককে ক্রন্দন করিয়া বলিয়াছিল:
‘আমি দুঃখ-কষ্টে পড়িয়াছি, আর আপনি তো সর্বশেষ্ঠ দয়ালু!’
তখন আমি তাহার ডাকে সাড়া দিলাম, তাহার দুঃখ-কষ্ট দূরীভূত করিয়া দিলাম, তাহাকে তাহার পরিবার-পরিজন ফিরাইয়া দিলাম এবং তাহাদের সঙ্গে তাহাদের মত আরো দিলাম আমার বিশেষ রহমতরূপে এবং ‘ইবাদতকারীদের জন্য উপদেশস্বরূপ।
২১. ৮৭-৮৮: এবং স্মরণ কর যুন-্ নূন (ইঊসুস আঃ) -এর কথা, যখন সে ক্রোধভারে বাহির হইয়া গিয়াছিল এবং মনে করিয়াছিল আমি তাহার জন্য শাস্তি নির্ধারণ করিব না। অতঃপর সে অন্ধকার (মাছের পেট) হইতে ক্রন্দন করিয়া আহবান করিয়াছিল:
‘আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; আপনি পবিত্র, মহান! আমি তো সীমালংঘনকারী।’
তখন আমি তাহার ডাকে সাড়া দিয়াছিলাম এবং তাহাকে উদ্ধার করিয়াছিলাম দুশ্চিন্তা হইতে এবং এইভাবেই আমি মু’মিনদেরকে উদ্ধার করিয়া থাকি।
২১. ৮৯-৯০: এবং স্মরণ কর যাকারিয়ার কথা, যখন সে তাহার প্রতিপালককে আহ্বান করিয়া বলিয়াছিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে একা রাখিবেন না, আপনি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী।’
অতঃপর আমি তাহার আহ্বানে সাড়া দিয়াছিলাম এবং তাহাকে দান করিয়াছিলাম ইয়াহ্ইয়া এবং তাহার জন্য তাহার স্ত্রীকে যোগ্যতাসম্পন্ন করিয়াছিলাম। তাহারা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করিত, তাহারা আমাকে ডাকিত আশা ও ভীতির সঙ্গে এবং তাহারা ছিল আমার নিকট বিনীত।
২৩. ২৮-২৯: যখন তুমি (নূহ আঃ) ও তোমার সঙ্গীরা নৌযানে আসন গ্রহণ করিবে তখন বলিও:
‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্রই, যিনি আমাদেরকে উদ্ধার করিয়াছেন জালিম সম্প্রদায় হইতে।’
আরও বলিও:
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এমনভাবে অবতরণ করান যাহা হইবে কল্যাণকর’; আর আমিই শ্রেষ্ঠ অবতরণকারী।’
২৩. ৯৩-৯৪: বল:
‘হে আমার প্রতিপালক! যে বিষয়ে তাহাদেরকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হইতেছে, আপনি যদি তাহা আমাকে দেখাইতে চান, তবে, হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে জালিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করিবেন না।’
২৩. ৯৭-৯৮: বল:
‘হে আমার প্রতিপালক ! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হইতে, হে আমার প্রতিপালক! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট উহাদের উপস্থিতি হইতে।’
২৩. ১০৯: আমার বান্দাগণের মধ্যে একদল ছিল যাহারা বলিত:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা ঈমান আনিয়াছি, আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
(রাব্বানা আমান্না, ফাগফিরলানা ওয়ারাহামনা ওয়া আনতা খায়রুন রাহিমিন)
২৩. ১১৮: বল:
‘হে আমার প্রতিপালক! ক্ষমা করুন ও দয়া করুন, আপনিই তো সবশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’
২৫. ৬৪- ৬৬: এবং তাহারা রাত্রি অতিবাহিত করে তাহাদের প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সিজ্দাবনত হইয়া ও দ-ায়মান থাকিয়া; এবং তাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের হইতে জাহান্নামের শাস্তি বিদূরিত করুন, উহার শাস্তি তো নিশ্চিত বিনাশ; নিশ্চয়ই উহা অস্থায়ী ও স্থায়ী আবাস হিসাবে নিকৃষ্ট।’
২৫. ৭৪-৭৫: এবং যাহারা প্রার্থনা করে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের জন্য এমন স্ত্রী ও সন্তানসন্ততি দান করুন যাহারা হইবে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর এবং আমাদেরকে করুন মুত্তাকীদের জন্য অনুসরণযোগ্য।”
তাহাদেরকে প্রতিদান দেওয়া হইবে জান্নাতের সুউচ্চ কক্ষ যেহেতু তাহারা ছিল ধৈর্যশীল, তাহাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হইবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে।
২৬. ৮৩-৮৭: (ইবরাহীম আঃ এর প্রার্থণা):
‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে জ্ঞান দান করুন এবং সৎকমপরায়ণদের শামিল করুন। আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে যশস্বী করুন, এবং আমাকে সুখময় জান্নাতের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন, আর আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, —- এবং আমাকে লাঞ্ছিত করিবেন না পুনরুত্থান দিবসে”
২৬. ১৬৯-১৭০: (লুত আঃ-এর প্রার্থণা): ‘হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এবং আমার পরিবার-পরিজনকে, উহারা যাহা করে, তাহা হইতে রক্ষা করুন।’
অতঃপর আমি তাহাকে এবং তাহার পরিবার-পরিজন সকলকে রক্ষা করিলাম।
২৭. ১৯: সুলায়মান উহার উক্তিতে মৃদু হাস্য করিল এবং বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাহাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারি, আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করিয়াছেন তাহার জন্য এবং যাহাতে আমি সৎকার্য করিতে পারি যাহা আপনি পসন্দ করেন এবং আপনার অনুগ্রহে আমাকে আপনার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের শামিল করুন।’
২৭. ৯১-৯২: ‘আমি তো আদিষ্ট হইয়াছি এই নগরীর প্রভুর ‘ইবাদত করিতে, যিনি ইহাকে করিয়াছেন সম্মানিত। সমস্ত কিছু তাঁহারই। আমি আরও আদিষ্ট হইয়াছি, যেন আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হই। আমি আরও আদিষ্ট হইয়াছি, কুরআন তিলাওয়াত করিতে’, অতএব যে ব্যক্তি সৎপথ অনুসরণ করে, সে সৎপথ অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। ———।’
২৮. ১৬: সে (মুসা আঃ) বলিল: ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আমার নিজের প্রতি জুলুম করিয়াছি; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।’
অতঃপর তিনি তাহাকে ক্ষমা করিলেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
২৮ ১৭: ১৭. সে (মূসা আঃ) আরও বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি যেহেতু আমার প্রতি অনুগ্রহ করিয়াছ, আমি কখনও অপরাধীদের সাহায্যকারী হইব না।’
২৮. ২১: ভীত সতর্ক অবস্থায় সে (মূসা আঃ) সেখান হইতে বাহির হইয়া পড়িল এবং বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! আপনি জালিম সম্প্রদায় হইতে আমাকে রক্ষা করুন।’ (রুকু’ ৩)
২৮. ২৪: মূসা তখন উহাদের পক্ষে পশুগুলিকে পানি পান করাইল। তৎপর সে ছায়ার নিচে আশ্রয় গ্রহণ করিয়া বলিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ করিবেন আমি তো তাহার কাঙ্গাল।’
৩৯. ৪৬: বল: ‘হে আল্লাহ্! আকাশম-লী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, আপনার বান্দাগণ যে বিষয়ে মতবিরোধ করে, আপনি তাহাদের মধ্যে উহার ফয়সালা করিয়া দিবেন।’
৪৩. ১২-১৪: আর যিনি সকল প্রকারের জোড়া যুগল সৃষ্টি করেন এবং যিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেন এমন নৌযান ও আন‘আম, যাহাতে তোমরা আরোহন কর, যাহাতে তোমরা উহাদের পৃষ্ঠে স্থির হইয়া বসিতে পার। তারপর তোমাদের প্রতিপালকের অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তোমরা উহার উপর স্থির হইয়া বস; এবং বল:
‘পবিত্র ও মহান তিনি, যিনি ইহাদেরকে (উট, নৌকাসহ যানবাহন) আমাদের বশীভূত করিয়া দিয়াছেন, যদিও আমরা সমর্থ ছিলাম না ইহাদেরকে বশীভূত করিতে। আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিকট অবশ্যই প্রত্যাবর্তন করিব।’
৪৬. ১৫: আমি মানুষকে তাহার মাতা পিতার প্রতি সৎ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়াছি। তাহার জননী তাহাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সহিত এবং প্রসব করে কষ্টের সহিত, , তাহাকে গর্ভে ধারণ করিতে ও তাহার স্তন্য ছাড়াইতে লাগে ৩০ মাস, ক্রমে সে যখন পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং ৪০ বৎসরে উপনীত হয়, তখন বলে:
‘হে আমার প্রতিপালক। আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাহাতে আমি আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারি। আমার প্রতি ও আমার পিতামাতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করিয়াছেন তাহার জন্য এবং যাহাতে আমি সৎকার্য করিতে পারি যাহা আপনি পছন্দ করেন; আমার জন্য আমার সন্তান-সন্তুতিদিগকে সৎকর্মপরায়ন করুন আমি আপনারই অভিমুখী হইলাম। এবং আমি অবশ্যয় সৎকর্মপরায়নদের অন্তর্ভূক্ত।’
৫৯. ১০: যাহারা উহাদের পরে (পরে ইসলাম গ্রহণ করিয়াছে) আসিয়াছে, তাহারা বলে:
‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রণী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা করুন এবং মু’মিনদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে বিদ্বেষ রাখিবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি তো দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।’
৬০. ৪-৫: তোমাদের জন্য ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারীদের মধ্যে রহিয়াছে উত্তম আদর্শ। যখন তাহারা তাহাদের সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল, ‘তোমাদের সঙ্গে এবং তোমরা আল্লাহ্র পরিবর্তে যাহার ইবাদত কর তাহার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নাই। আমরা তোমাদেরকে মানি না। তোমাদের ও আমাদের মধ্যে সৃষ্টি হইল শত্রুতা ও বিদ্বেষ চিরকালের জন্য; যদি না তোমরা এক আল্লাহ্তে ঈমান আন।’ তবে ব্যতিক্রম তাহার পিতার প্রতি ইব্রাহীমের উক্তি; ‘আমি নিশ্চয়ই তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনাা করিব; এবং তোমার ব্যাপারে আল্লাহ্র নিকট আমি কোন অধিকার রাখি না।’
ইব্রাহীম ও তাহার অনুসারিগণ বলিয়াছিল:
‘হে আমারদের প্রতিপালক! আমরা আপনারই উপর নির্ভর করিয়াছি, আপনারই অভিমুখী হইয়াছি এবং প্রত্যাবর্তন তো আপনারই নিকট। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের কাফিরদের পীড়নের পাত্র করিবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে ক্ষমা করুন; আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
৬৬. ১১: আল্লাহ্ মু’মিনদের জন্য দিতেছেন ফির‘আওন পত্নীর দৃষ্টান্ত, যে প্রার্থনা করিয়াছিল :
‘হে আমার প্রতিপালক! তোমার সন্নিধানে জান্নাতে আমার জন্য একটি গৃহ নির্মাণ করিও এবং আমাকে উদ্ধার কর ফিরা‘আওন ও তাহার দুষ্কৃতি হইতে এবং আমাকে উদ্ধার কর জালিম সম্প্রদায় হইতে।’
৬৮: ২৬-৩২: অতঃপর উহারা যখন বাগানের অবস্থা প্রত্যক্ষ করিল, তখন বলিল, ‘আমরা তো দিশা হারাইয়া ফেলিয়াছি। বরং আমরা তো বঞ্চিত।’
উহাদের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বলিল, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলি নাই? এখনও তোমরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করিতেছ না কেন?’
তখন উহারা বলিল:
‘আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করিতেছি, আমরা তো সীমালংঘনকারী ছিলাম।’——–। — ‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। সম্ভবত আমাদের প্রতিপালক ইহা হইতে আমাদেরকে উৎকৃষ্টতর বিনিময় দিবেন, আমরা আমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হইলাম।’
৭১. ২৬-২৮: নূহ্ আরও বলিয়াছিল:
‘হে আমার প্রতিপালক! পৃথিবীতে কাফিরগণের মধ্যে হইতে কোন গৃহবাসীকে অব্যাহতি দিও না। তুমি উহাদেরকে অব্যাহতি দিলে উহারা তোমার বান্দাদেরকে পথভ্রষ্ট করিবে এবং জন্ম দিতে থাকিবে কেবল দুষ্কৃতিকারী ও কাফির। হে আমার প্রতিপালক! তুমি ক্ষমা কর আমাকে, আমার পিতামাতাকে এবং যাহারা মু’মিন হইয়া আমার গৃহে প্রবেশ করে তাহাদেরকে এবং মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারীদেরকে; আর জালিমদের শুধুধ্বংসই বৃদ্ধি কর।’
১১৩. ১-৪: বল: ‘আমি শরণ লইতেছি ঊষার স্রষ্টার, তিনি যাহা সৃষ্টি করিয়াছেন তাহার অনিষ্ট হইতে, অনিষ্ট হইতে রাত্রির অন্ধকারের, যখন উহা গভীর হয় এবং অনিষ্ট হইতে সমস্ত নারীদের, যাহারা গ্রন্থিতে ফুৎকার দেয় এবং অনিষ্ট হইতে হিংসকের, যখন সে হিংসা করে।’
১১৪. ১-৬: বল, ‘আমি শরণ লইতেছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির, মানুষের ইলাহের নিকট-আত্মগোপনকারী কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট হইতে- যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্যে হইতে এবং মানুষের মধ্যে হইতে।’
(অনুবাদ: কুরআনুল করিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন)
নোট: আমি চেষ্টা করেছি পবিত্র কুরআনে প্রাথর্ণা সংক্রান্ত সকল আয়াত এখানে সংযুক্ত করার। তবে মানুষ হিসাবে আমার ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। কোন আয়াত বাদ পড়তে পারে। তেমন কিছু কারো নজরে পড়লে তিনি যদি এখানে কমেন্টে বাদ পড়া আয়াতসমূহ উল্লেখ করে আমার ত্রুটি সংশোধন করেন তবে কৃতজ্ঞ হব। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন।