সালাত নিয়ে বিভ্রান্তি।

সালাত নিয়ে বিভ্রান্তি। By Hamid ullah fbfd
“”””””””””””””””””””””””””
কুরআন মানি, হাদিস মানি না, এই শ্লোগানে কিছু লোক মাঠে নেমেছে। তারা আসলে কারা, আমি এই বিষয়ে যাচ্ছি না। তারা যেহেতো নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করছে সেহেতো তাদেরকে মুসলিম মেনে নেয়াই যুক্তিযোক্ত।

আসলে তারা কারা তা জানার জন্য এই লিংকে আসতে পারেন↓
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=231694602341388&id=100065025482830

সালাত, সিয়াম ইত্যাদি, ইসলামের এমন কোন বিষয় নেই, যেখানে তাদের কোন আপত্তি নেই। বরং সর্ব বিষয়ে রয়েছে তাদের বড়োধরণের আপত্তি। যেহেতো সব বিষয়ে এক সাথে আলোচনা সম্ভব নয় সেহেতো আজ সালাত বিষয়ে তাদের আপত্তিনিয়ে কথা বলবো।

“সালাত” বিষয়ে তাদের আপত্তি হলো, (“পৃথিবী জুড়ে মুসলিম কমিউনিটি “সালাত” বলতে যা বুঝে, আসলে তা কুরআনে বর্নিত সালাত নয়। বরং এটা হলো শয়তান বুখারী কর্তৃক শিখানো “সালাত।”) (নাউজুঃ)

তাদের আরো দাবি, (“কুরআনে বর্ণিত সালত মানে হলো, আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলা।”) তদের কেউ আবার বলে, (সালাত মানে সৎকর্ম করা।)

তাদেরকে যখন বলা হয়, আয়াত দ্বারা আপনাদের দাবি প্রমান করুন, তখন তারা ক্ষেপেগিয়ে চটে বসে ও মন্দ ব্যবহারকরে চলে যায়।

তাদের এসব দাবি একেবারে হাস্যকর এবং উদ্দিশ্যপ্রনোদিত। এসব দাবির পক্ষে তাদের হাতে কোন আয়াত নেই। নেই কোন সাক্ষ্য প্রমান।

এসব দাবিকে খন্ডন করারও কোন প্রয়োজন নেই। এসব দাবি যাষ্ট “দিন”কে রাত বলার দাবি যেমন। কেউ যদি “দিন”কে রাত দাবিকরে তখন তা খন্ডন করার কোন প্রয়োজন হয় না। তার পরেও যেহেতো বহু আনপড় মুসলিমরা ফেসবুকে বিচরণকরে, এনিয়ে হয়তো তারা বিভ্রান্ত হতেপারে বিধায় তাদের উদ্দিশ্যে কিছু লিখা প্রয়োজন মনে হচ্ছে।

এবার আসুন, তাদের উদ্দিশ্যপ্রণোদিত দাবিকে পর্যালোচনাকরে দেখা হউক।

পর্যালোচনাঃ

প্রথম কথা হলো, এরা এতো বড়ো মূর্খ, “ঈমান” কি, “ইসলাম” কি, তাও তাদের জানা নেয়। তাদের জানা থাকা উচিৎ কুরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার নাম “সালাত” নয় বরং কুরআনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলার নাম হলো “ঈমান” বা “ইসলাম”। তারা যে প্রতারক তা বুঝার জন্য জ্ঞানীদের জন্য এতটুই যথেষ্ট। তার পরেও কিছু আলোচনা করা যাক।

“সালত” বিষয়ে মহান আল্লাহর ইরশাদ-

قَالُوۡا یٰشُعَیۡبُ اَصَلٰوتُکَ تَاۡمُرُکَ اَنۡ نَّتۡرُکَ مَا یَعۡبُدُ اٰبَآؤُنَاۤ اَوۡ اَنۡ نَّفۡعَلَ فِیۡۤ اَمۡوَالِنَا مَا نَشٰٓؤُاؕ اِنَّکَ لَاَنۡتَ الۡحَلِیۡمُ الرَّشِیۡدُ ﴿۸۷﴾
তারা বলল, ‘হে শু‘আইব, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে যে, আমাদের পিতৃপুরুষগণ যাদের ইবাদাত করত, আমরা তাদের ত্যাগ করি? অথবা আমাদের সম্পদে আমরা ইচ্ছামত যা করি তাও (ত্যাগ করি?) তুমি তো বেশ সহনশীল সুবোধ’! (সুরা হুদ-11:87)

আয়াতের সারাংশ- শু‘আইব’ আঃ যখন কাফিরদের কুফরী নিয়ে কথা বল্লেন তখন কাফিরেরা আশ্চর্য হয়ে বলে উঠল, ‘হে শু‘আইব, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে যে, – – –

আয়াতটি প্রমান করে, “সালাত” একটি মহা ইবাদত। এমন ইবাদত যা সর্ব কালে সকল নবীর উপর ফরজ ছিল।

আয়াতটি আরো প্রমান করে, সালাত পালন কারিদেরকে সর্বকালে সকলেই সম্মান করত। ফলে সালাত পালন কারি হতে অনাকাংকিত কিছু দেখলে সভাবের ন্যয় আশ্চর্য্য হয়ে বলে উঠত, তোমার সালাত কি তোমাকে এই নির্দেশ প্রদান করে? যেমন, বাংলা দেশের পরিবেশেও আশ্চর্য্য হয়ে বলা হয়, নামাজী মানুষ হয়ে এই কাজ! তুর নামাজ কি তুকে একটু খানিও পরিবর্তন করতে পারলো না।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ لَا تَجۡہَرۡ بِصَلَاتِکَ وَ لَا تُخَافِتۡ بِہَا وَ ابۡتَغِ بَیۡنَ ذٰلِکَ سَبِیۡلًا ﴿۱۱۰﴾
তুমি তোমার সালাতে স্বর উঁচু করো না এবং তাতে মৃদুও করো না; বরং এর মাঝামাঝি পথ অবলম্বন কর। (সুরা বনি ইসলাঈল-17:110)

তাদের মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। মহান আল্লাহ আয়াতটিতে পরিস্কার ভাষায় আদেশ দিচ্ছেন যে, “সালাতে” স্বর উঁচুও করো না, একেবারে নিচুও করে না।

জানার বিষয় হলো, “সালাত” মানে যদি আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়, তাহলে স্বর উঁচু-নিচু করার কথা কেন আসবে?
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ নির্দেশ দেন- প্রতি সালাতে তোমরা সুন্দর সাজ সজ্জা গ্রহণ কর। তথা সুন্দর পোষাক নিয়ে সালাত পালন কর। যেমন মহান আল্লাহর ইরশাদ-

یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ خُذُوۡا زِیۡنَتَکُمۡ عِنۡدَ کُلِّ مَسۡجِدٍ وَّ کُلُوۡا وَ اشۡرَبُوۡا وَ لَا تُسۡرِفُوۡا ۚ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الۡمُسۡرِفِیۡنَ ﴿٪۳۱﴾
হে বনী আদম, তোমরা প্রতি সালাতে তোমাদের সুন্দর সাজ সজ্জা গ্রহণ কর এবং খাও, পান কর ও অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সুরা আরাফ-7:31)

সালাত মানে যদি আদেশ-নিষেধ মান্য করা হয়, তবে প্রশ্ন হলো, আদেশ-নিষেধ মানার জন্য কি উত্তম পোষাক পরিধান করতে হয়? সাভাবিক পোষাক নিয়ে কি আদেশ-নিষেধ মানা যাবে না?
——————–
আয়াতটি বলছে, যারা রাত্রে সালাত পালন করে তারা সফল।

প্রশ্ন হলো, সালাত মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্য করা হয় তবে রাতের আঁধারেই কি আদেশ নিষেধ মানতে হবে? শয়তান কোথাকার!

اَمَّنۡ ہُوَ قَانِتٌ اٰنَآءَ الَّیۡلِ سَاجِدًا وَّ قَآئِمًا یَّحۡذَرُ الۡاٰخِرَۃَ وَ یَرۡجُوۡا رَحۡمَۃَ رَبِّہٖ ؕ قُلۡ ہَلۡ یَسۡتَوِی الَّذِیۡنَ یَعۡلَمُوۡنَ وَ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡلَمُوۡنَ ؕ اِنَّمَا یَتَذَکَّرُ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ ٪﴿۹﴾
যে ব্যক্তি রাতের প্রহরে সিদজাবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে, আখিরাতকে ভয় করে এবং তার রব-এর রহমত প্রত্যাশা করে (সে কি তার সমান যে এরূপ করে না) বল, ‘যারা জানে আর যারা জানে না তারা কি সমান?’ বিবেকবান লোকেরাই কেবল উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা জুমার-39:9)
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ اِذۡ جَعَلۡنَا الۡبَیۡتَ مَثَابَۃً لِّلنَّاسِ وَ اَمۡنًا ؕ وَ اتَّخِذُوۡا مِنۡ مَّقَامِ اِبۡرٰہٖمَ مُصَلًّی ؕ وَ عَہِدۡنَاۤ اِلٰۤی اِبۡرٰہٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ اَنۡ طَہِّرَا بَیۡتِیَ لِلطَّآئِفِیۡنَ وَ الۡعٰکِفِیۡنَ وَ الرُّکَّعِ السُّجُوۡدِ ﴿۱۲۵﴾
আর স্মরণ কর, যখন আমি কাবাকে মানুষের জন্য মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানালাম এবং (আদেশ দিলাম যে,) ‘তোমরা মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর’। আর আমি ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে, ‘তোমরা আমার গৃহকে তাওয়াফকারী, ‘ইতিকাফকারী ও রুকূকারী-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর’। (সুরা বাকরা-2:125)

সারাংশ, মহান আল্লাহ কাবা শরীফকে মুসলিমদের মিলনকেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান বানিয়েছেন। মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে ঘোষণা করছেন। এবং মুসলিমদেরকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন যে, কাবা শরীফকে তাওয়াফকারী, ‘ইতিকাফকারী ও রুকূকারী-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করে রাখবে।

প্রশ্ন হলো, “সালাত” মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয়, তবে মাকানে ইবরাহীমকে সালাতের জন্য নির্ধারণকরার মানে কি? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি মাকামে ইবরাহীমে যেতে হবে? এর বাইরে কি আদেশ নিষেধ মানতে হবে না।

সালাত পালনের জন্য কাবা শরীফকে পবিত্র রাখতে বলা হয়েছে।

প্রশ্ন হলো, সালাতের মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে কাবা শরীফকে পবিত্র রাখার আদেশ কেন দেয়া হলো? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি পবিত্র হতে হয়? কাবা শরীফকে পবিত্র রাখলে আদেশ নিষেধ মানা যাবে না হয় মানা যাবে না, এজন্য কি কাবা শরীফকে পবিত্র রাখার আদেশ দেয়া হয়েছে কি?

কুরআন বিকৃতিকরে এমন জঘন্য বিকৃতিও কি করে? মনে হয় শয়তানও কুরআনের সাথে এমন জঘন্য বিয়াদবি করে নায়।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ مِنَ الَّیۡلِ فَاسۡجُدۡ لَہٗ وَ سَبِّحۡہُ لَیۡلًا طَوِیۡلًا ﴿۲۶﴾
আর রাতের একাংশে তার উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হও এবং দীর্ঘ রাত ধরে তাঁর তাসবীহ পাঠ কর। (সুরা ইনসান-76:26)

তথা রাতের একাংশে আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হও এবং দীর্ঘ রাত ধরে আল্লাহর তাসবীহ পাঠ কর।

সিজদা সালাতের মূল অংশের মধ্যে একটি। সালাত মানে যদি আল্লাহর আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে রাতের এই অন্ধকারে কোন আদেশ নিষেধ মান্যজরার কথা বলা হলো? যে আদেশে নিষেধে তাসবি পাট করতে হয়? আদেশ নিষেধ কি তাসবিহ করে করে মান্যকরা হয়? জবাব দাও শয়তানের দল।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

وَ الَّذِیۡنَ یَبِیۡتُوۡنَ لِرَبِّہِمۡ سُجَّدًا وَّ قِیَامًا ﴿۶۴﴾
আর যারা তাদের রবের জন্য সিজদারত ও দন্ডায়মান হয়ে রাত্রি যাপন করে। (সুরা ফুরকান-25:64)

আয়াতটি পরিস্কার ভাষায় ঘোষাণা করছে, “সালাত” মানে আল্লাহর আদেশ নিষেধ মান্যকরা নয়। বরং “সালাত” মানে হলো, রবের জন্য সিজদারত হওয়া, রবের জন্য দন্ডায়মান হওয়া।

আয়াতটি পাওয়ার পর “সালাত” নিয়ে মুসলিমদের কোন কনফিউজ থাকার কথা নয়। তারপরেও কিন্তু তারা মানবে না। কারণ, আসলে তারা মুসলিম নয় বরং অমুসলিম। আসলে তারা কুরআন মানে না বরং কুরআন মানার ভানকরে মাত্র।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

(اِنَّ الْمُنٰفِقِیْنَ یُخٰدِعُوْنَ اللہَ وَھُوَ خَادِعُھُمْﺆ وَاِذَا قَامُوْٓا اِلَی الصَّلٰوةِ قَامُوْا کُسَالٰیﺫ یُرَا۬ءُوْنَ النَّاسَ وَلَا یَذْکُرُوْنَ اللہَ اِلَّا قَلِیْلًاﯝﺬ مُّذَبْذَبِیْنَ بَیْنَ ذٰلِکَﺣ لَآ اِلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِ وَلَآ اِلٰی ھٰٓؤُلَا۬ئِﺚ وَمَنْ یُّضْلِلِ اللہُ فَلَنْ تَجِدَ لَھ۫ سَبِیْلًاﯞ)
“নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে; বস্তুত তিনি তাদেরকে ধোঁকায় ফেলেন, আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায়- কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহকে তারা অল্পই স্মরণ করে; দোটানায় দোদুল্যমান- না এদের দিকে, না ওদের দিকে! এবং আল্লাহ যাকে পথভ্রষ্ট করেন তুমি তার জন্য কখনও কোন পথ পাবে না।”(সূরা নিসা ৪:১৪২-৪৩)

সারাংশ, মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি করে। আল্লাহর সঙ্গে ধোঁকাবাজি সম্ভব নয়। বরং তারাই নিজেরাই ধোঁকায় আছে। তারা শৈথিল্যের সাথে সালাতে দাঁড়ায়। তাও প্রকৃতভাবে নয় বরং লোক দেখানোর জন্য সালাত পালনকরার ভানকরে। তারা সালাতে মনোযোগিও নয়।

প্রশ্ন হলো, সালাত মানে যদি আদেশ নিষেধ মান্যকরা হয় তবে সালাতে শৈথিল্যের সাথে দাঁড়ানোর মানে কি? আদেশ নিষেধ মানার জন্য কি দাঁড়াতে হবে? দাঁড়াতে হলেও কি নির্দিষ্ট আকারে দাঁড়াতে হবে? না হয় আদেশ নিষেধ মান্যকরা হবে না, এমন কি?

হাসি আসে এমন অদ্ভোধ প্রতারকের দাবি দেখলে।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَقۡرَبُوا الصَّلٰوۃَ وَ اَنۡتُمۡ سُکٰرٰی حَتّٰی تَعۡلَمُوۡا مَا تَقُوۡلُوۡنَ وَ لَا جُنُبًا اِلَّا عَابِرِیۡ سَبِیۡلٍ حَتّٰی تَغۡتَسِلُوۡا ؕ وَ اِنۡ کُنۡتُمۡ مَّرۡضٰۤی اَوۡ عَلٰی سَفَرٍ اَوۡ جَآءَ اَحَدٌ مِّنۡکُمۡ مِّنَ الۡغَآئِطِ اَوۡ لٰمَسۡتُمُ النِّسَآءَ فَلَمۡ تَجِدُوۡا مَآءً فَتَیَمَّمُوۡا صَعِیۡدًا طَیِّبًا فَامۡسَحُوۡا بِوُجُوۡہِکُمۡ وَ اَیۡدِیۡکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَفُوًّا غَفُوۡرًا ﴿۴۳﴾
হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা বুঝতে পার যা তোমরা বল এবং অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ না তোমরা গোসল কর, তবে যদি তোমরা পথ অতিক্রমকারী হও। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও বা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সম্ভোগ কর, তবে যদি পানি না পাও তাহলে পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম কর* । সুতরাং তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত মাসেহ কর। নিশ্চয় আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল।

তাদের শয়তানী মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। আয়াতটিতে সালাতের জন্য পবিত্রতাকে অসাভাবিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এবং বলা হয়েছে-
(১) নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না,

(২) অপবিত্র অবস্থায়ও না, যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্রতা অর্জন করবে না।

(৩) এমন কি যদি তোমরা অসুস্থ হওয়ার কারণে গোসলকরে পবিত্র হতে না পারো, অথবা সফরে থাকার কারণে গোসলের জন্য পানি না পাও, অথবা প্রস্রাব-পায়খানা পর অজুকরে পবিত্র হওয়ার জন্য পানি না পাও, অথবা স্ত্রী সম্ভোগ করার পর গোসলকরে পবিত্র হওয়ার জন্য পানি না পাও তার পরেও অবিত্র অবস্থায় “সালাত” পালন করতে পারবে না। বরং পবিত্র মাটিতে তায়াম্মুম করে পবিত্রতা অর্জনকরে হলেও “সালাত” পালন করবে তার পরেও অপবিত্র অবস্থায় সালাত পালন করা যাবে না।

এতো পরিস্কারকরে বলার পরেও কোন মুখে, কোন যুক্তিয়ে বলা হয়, “সালাত” মানে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করা? আদেশ-নিষেধ মান্য করার জন্য পবিত্র হতে হবে এমন কথা কি কোন মূর্খও বলবে? এতে পরিপূর্ণ পরিস্কার হয়ে যায় যে, “সালাত” একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদাত। ইবাদতের জন্য পবিত্রতা জরুরী। যারা “সালাত” মানে ভিন্ন কিছু বলে তারা শয়তান। তারা কুরআনকে অমান্যকারী।
——————–
“সালাত” বিষয়ে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

فَاِذَا قَضَیۡتُمُ الصَّلٰوۃَ فَاذۡکُرُوا اللّٰہَ قِیٰمًا وَّ قُعُوۡدًا وَّ عَلٰی جُنُوۡبِکُمۡ ۚ فَاِذَا اطۡمَاۡنَنۡتُمۡ فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ ۚ اِنَّ الصَّلٰوۃَ کَانَتۡ عَلَی الۡمُؤۡمِنِیۡنَ کِتٰبًا مَّوۡقُوۡتًا ﴿۱۰۳﴾
অতঃপর যখন তোমরা সালাত পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। (সুরা নিসা-4:103)

তাদের শয়তানী মুখ বন্ধ করার জন্য আয়াতটি যথেষ্ঠ। আয়াতটিতে পরিস্কার ভাষায় বলা হচ্ছে, “সালাত” পালন করার পর তোমরা এই, এই কাজ গুলো করবে। অতপর যখন “সালাতে”র সময় হবে তখন পূর্বের ন্যয় তোমরা পূণরাই “সালাত” পালন করবে। কারণ, “সালাত” মুমিনদের উপর সব সময় ফরজ নয় বরং নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।

এতে পরিস্কার হয়ে যায়, “সালাত” নির্দিষ্ট ইবাদতের নাম। যা নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট নিয়মানোসারে পালন করতে হয়। আদেশ-নিষেধ মান্য করার নাম যদি “সালাত” হতো তবে নির্দিস্ট সময়ে নির্দিষ্টভাবে, নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী করার কথা কখনো বলা হতো না। কারণ, মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মানার জন্য জন্য সময়, টাইম-তারিখ নির্ধারিত হতে পারে না। নির্ধারিত সময়ে মানবো, সময়ের বাহিরে মানবো না এমন হতে পারে না।

এদের মূল উদ্দেশ্য হলো, হাদিসকে অকার্যকর করা। এরপর সালাতকে উচ্ছেদ করা (যেহেতু সালাতের অন্তত 90 পার্সেন্ট হাদিস) অতপর পৃথিবীর মসজিদ সমূহকে ধ্বংস করা (যেহেতু মসজিদগুলো দাঁড়িয়ে আছে সালাতকে কেন্দ্র করেই) অতপর পৃথিবীতে ইসলামিয়াতের পরিবর্তে জাহিলিয়াত কায়েম করা। এটাই এদের সরল অংক।
এ হলো হাদিস অস্বীকার করার মূল রহস্য।
https://www.facebook.com/100065025482830/posts/293856692791845/