কুরআন অনুসারে বিয়ে-fm fb

👉কুরআন অনুসারে বিয়ে

কুরান অনুসারে বিয়ে করতে হলে যে বিষয়গুলো অনুসরন করতে হয় সেগুলো হলো ;
বিয়ে 4:6, 2:221, 4:21, 2:235, 4:24
1- উভয়ের বয়স mature কিনা তা দেখতে হবে (4:6)

2- বিশ্বাসীগন অবিশ্বাসীদেরকে বা মুশরিকীনদের কে বিয়ে করতে পারবেন না (2:221)

3- উভয়কেই একে অপরের প্রতি সুস্পস্ট সম্মতি বা কমিটমেন্ট থাকতে হবে (4:21)

4- বিবাহে সুস্পস্ট প্রকাশ্য ঘোষনা থাকতে হবে (2:235)

5- বিবাহ লিখিত বা কন্টাক্ট হতে হবে (2:235)

6- বিবাহ হল স্থায়ী চুক্তি , অস্থায়ী নয় ॥ 4:21

a) ডিভোর্স দিতে হলে চার মাস অপেক্ষা করতে হবে (2:226)

b) ডিভোর্স এর আগে পারিবারিকভাবে reconcile এর পদক্ষেপ নিতে হবে (4:35)

c) বড়ধরনের নৈতিক অধঃপতন ছাড়া বউকে স্বামীর গৃহ ছাড়া করা যাবে না (65:1)

d) ডিভোর্স দিতে হলে স্ত্রীকে ক্ষতিপূরন দিতে হবে (2:241)

e) সন্তান থাকলে তার ভরনপোষন এর ব্যয়ভার বহন করতে হবে (2:233)

f) সন্তান ছোট হলে সন্তানের লালন পালনের জন্য মাকে দুই বছর ভরনপোষন এর ব্যয় ভার বহন করতে হবে (2:233)

7- স্বামীকে অবশ্যই মোহরানা পরিশোধ করতে হবে (4:24)

এই হল বিবাহের রীতিনীতি ॥
এতে কোন মন্ত্র নেই ॥
বাকী আল্লাহ ভরসা ॥

সালমান রুশদীর স্যাটানিক ভার্সেস-syed wali fbfd

লজিক, বিতর্ক,
সালমান রুশদীর স্যাটানিক ভার্সেস
(কুরআনের আলোকে কুরআন, ইতিহাস হাদিস গ্রন্থ থেকে ‘লজিক, বিতর্ক বিদ্রুপ’ অধ্যায়ের একটি অংশ)

বহুল আলোচিত-সমালোচিত ভারতীয় মুসলিম বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদীর স্যাটানিক ভার্সেস উপন্যাস। এই উপন্যাসে মূলতঃ রাসুল (সঃ) এবং তার সঙ্গী-সাথীদের বিকৃত নামকরণে কাল্পনিক চরিত্র দাঁড় করিয়ে কুরআন ও রাসুল (সঃ) সম্পর্কে সেই সপ্তম শতাব্দির অবিশ্বাসীদের কুরআন ও রাসুল (সঃ) প্রতি উপহাস ও বিদ্রুপাত্মক বিষয়গুলোই উপজীব্য করা হয়েছে।
‘স্য্যাটানিক ভার্সেস’ নামকরণ ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাকের বর্ণনাকৃত ইতিহাসে মুহাম্মাদ (সঃ)-এর মক্কা জীবনের একটি কথিত ঘটনা থেকে নেওয়া হয়েছে। ইবনে ইসহাকের এই মৌখিক ইতিহাস বর্ণনার সূত্র ধরে পরবর্তীতে নবম শতাব্দিতে ইতিহাসবিদ এবং কুরআনের প্রথম তাফসিরকারকদের একজন আল তাবারী তার লিখিত ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার প্রথম পর্যায়ে মক্কায় রাসুল (সঃ) মক্কাবাসী কাফিরদের সাথে একটি সমঝোতায় পৌঁছান। এই সমঝোতার শর্ত হিসেবে রাসুল (সঃ) ও তার অনুসারীরা আল্লাহর ইবাদত করার পাশাপাশি কাবায় রক্ষিত তিনটি মূর্তি লাত, উজ্জা ও মানাত-এর পূজা করবে এই শর্তে যে কাফিররা তাদের তিনটি মূর্তির পূজা করার সঙ্গে মুহাম্মাদ (সঃ) এর আল্লাহরও ইবাদত করবে। বলা হয় এই সমঝোতার অনুমতি দিয়ে আল্লাহ তিনটি আয়াত অবতীর্ণ করার পরই রাসুল (সঃ) এই সমঝোতায় পৌঁছান। কিন্তু সমঝোতায় পৌঁছানোর পরপরই রাসুল (সঃ) বুঝতে পারেন যে তিনি যে তিনটি আয়াত কুরআনের আয়াত মনে করেছেন সেগুলো আসলে জিবরাঈল (আঃ) বাহিত আল্লাহর আয়াত নয়। এটি শয়তান আল্লাহর আয়াত বলে তাকে বিভ্রান্ত করেছে। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ রাসুলকে প্রকৃত বিষয় জানিয়ে ওহী অবতীর্ণ করেন যা পরবর্তীতে সুরা নজম-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। এই ওহি অবতীর্ণ হওয়ার পরপরই রাসুল (সঃ) কাফিরদের সাথে সম্পাদিত চুক্তি থেকে সরে যান।
ইতিহাসবিদ ইবনে ইসহাক ও আল তাবারীর বর্ণনা অনুযায়ী রাসুল ভুলক্রমে শয়তানের বাণীকে ওহী হিসেবে মনে করেন। আাল্লাহর নিকট থেকে ওহী নাজিল হওয়ার পরপরই রাসুল তার ভুল জানতে পেরে সাথে সাথে সে সমঝোতা ভেঙে দেন এবং তিনি তার নিজস্ব ধারায় আল্লাহর একাত্ববাদের বাণীর প্রচারণা চালিয়ে যান।
ইতিহাসবিদ ইবনে ইসহাক ও আল তাবারী তাদের বর্ণনায় এই তিনিটি পংক্তিকে ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ বা ‘শয়তানের পংক্তি’ হিসেবে নামকরণ করা হয়।
সালমান রুশদীর উপন্যাসের নামকরণ এখান থেকেই। এই উপন্যাসে অন্যতম দুই চরিত্র বোম্বের অভিনেতা ফারিশতা এবং একজন ইমিগ্রান্ট চামচা। বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার পর ফারিশতা ও চামচার কথপোকথনের মধ্য দিয়ে উপন্যাসের শুরু। বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়ার পর ফারিশতার নাম হয় জিবরাঈল ও চামচা হয় শয়তান। উপনাস্যের অন্যতম প্রধান চরিত্র মাহু- (রাসুল) এবং আয়েশা। এই সব চরিত্রের বর্ণনার মাধ্যমে লেখক কুরআনকে শয়তানের ভাষ্য হিসেবে এবং মাহু- চরিত্রটিকে একজন ভিলেন হিসেবে তুলে ধরে স্যাটায়ারধর্মী বর্ণনার মাধ্যমে কুরআনের বাণীকে শয়তানের বাণী এবং মুহাম্মাদ (সঃ)-কে একটি হাস্যকর চরিত্র হিসেবে চিত্রিত করার অপপ্রয়াস চালান।
তবে কুরআনকে শয়তানের বাণী এবং মুহাম্মাদ (সঃ)-কে হাস্যকর চরিত্র হিসেবে চিত্রায়ানের প্রচেষ্টা অতীতে বহুজনে করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে স্যটানিক ভার্সেস পশ্চিমা মহলে এত ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেল কেন? এ প্রশ্নে যে বিষয়টি সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো : এই উপন্যাসটির চরিত্র উপস্থাপনা বর্ণনার বৈশিষ্ট্য এবং সর্বোপরি উপনাসের বিচিত্র চরিত্র চিত্রয়ানের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধ সম্পর্কিত যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটিকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে তা হলো, কুরআনে বর্ণিত ইব্রাহীম (আঃ)-এর সন্তান কুরবানি দেওয়ার প্রসঙ্গটি। এই গ্রন্থে প্রশ্ন উত্থাপন করা হয়, ‘সন্তানকে জবেহ’ এর উদ্যোগটি মানবিক দিক থেকে যেহেতু চরম বর্বরতার সুতরাং কুরআন শয়তানের বাণী ব্যতীত আর কি হতে পারে?
সালমান রুশদী তার উপন্যাসে এই যুক্তির মাধ্যমে মানুষের মানবিক মূল্যবোধের দিকটি খুবই কৌশলে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অন্তত পশ্চিমা দুনিয়ায় হলেও বেশ কিছুটা সফল হয়েছেন।
কুরআনে সন্তান হত্যা জঘন্যতম কর্ম বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। ‘পুত্র শিশুরা আমার আর নারী শিশুরা আল্লাহর কন্যা’-এই যুক্তি দিয়ে বহু পিতা তার কন্যা শিশুদের হত্যা করত এবং আরবে তা অনেকটা রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। এই নারী শিশুদের হত্যার বিষয়ে বেশ কয়েকটি আয়াতে কঠোর শাস্তির কথা জানিয়ে তা থেকে বিরত থাকার জন্য উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
“উহাদের কাহাকেও যখন কন্যা সন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তাহার মুখম-ল কাল হইয়া যায় এবং সে অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। উহাকে যে সংবাদ দেওয়া হয়, তাহার গ্লানি হেতু সে নিজ সম্প্রদায় হইতে আত্মগোপন করে। সে চিন্তা করে হীনতা সত্ত্বেও সে উহাকে রাখিয়া দেবে, না মাটিতে পুঁতিয়া ফেলিবে। সাবধান! উাহারা যাহা সিদ্ধান্ত নেয় তাহা কত নিকৃষ্ট!” (১৬ : ৫৮, ৫৯)
“তবে কি তোমাদের জন্য পুত্র সন্তান এবং আল্লাহর জন্য কন্যা সন্তান। এই প্রকার বণ্টন তো অসংগত।” (৫৩ : ২১, ২২)
“যখন জীবন্ত সমাধিস্থ কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হইবে, কী অপরাধে উহাকে হত্যা করা হইয়াছিল?” (৮১ : ৮, ৯)
“তোমাদের সন্তানদের দারিদ্র্যের ভয়ে হত্যা করিও না। উহাদিগকে আমিই রিযিক দেই। এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয়ই উহাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।” (১৭ : ৩১)
সুতরাং যে কুরআন যখন নিজেই সন্তান হত্যাকে বর্বরতম কর্ম বলে অভিহিত করছে এবং কর্মের জন্য কঠোর শাস্তির সংবাদ দিচ্ছে, সেই কুরআন কিভাবে একজন রাসুলকে তার নিজ পুত্রকে জবেহ করার আদেশ দিতে পারে এবং কিভাবে তা একজন অনুগত ব্যক্তির সৎ ও মহৎ কর্ম বলে বর্ণনা করতে পারেÑ যে কোন বিবেকবান, যুক্তিরোধসম্পন্ন ব্যক্তির পক্ষে এ প্রশ্ন উত্থাপন খুবই স্বাভাবিক।
আল্লাহ বলেন, এই আদেশের মাধ্যমে তিনি তার প্রিয় রাসুল ইব্রাহীম (আঃ)-কে পরীক্ষা করেন এবং এ পরীক্ষা শুধুমাত্র ইব্রাহীম (আঃ)-এর জন্যই।
আল্লাহ বলেন :
“নিশ্চয়ই ইহা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাহাকে মুক্ত করিলাম এক কুরবানীর বিনিময়ে। আমি ইহা পরবর্তীদের স্মরণে রাখিয়াছি। ইব্রাহীমের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।” (৩৭ঃ ১০৬-১০৯)
কি এমন বিষয় ছিল ইব্রাহীম (আঃ)-এর জীবনে যার জন্য এ কাজটি যে ইব্রাহীম (আঃ)-এর জন্য মোটেও বর্বরতা নয় বরং তিনি যে প্রকৃত আত্মসমর্পনকারী, অনুগত, কৃতজ্ঞ এবং জ্ঞানী তার এক কঠিন পরীক্ষা মাত্র?
এ প্রশ্নের খুবই শক্ত যুক্তিসংগত এবং যে কোন মানবিক গুলবলী সম্পন্ন ব্যক্তির কাছে অবশ্যয়ই গ্রহণযোগ্য বাধ্য জবাবটি কুরআনে বর্ণিত ইব্রাহীম (আঃ) জীবনের কয়েকটি ঘটনার মধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে নিচের আয়াতগুলো লক্ষ্য করা যেতে পারে :
“উহারা বলিল, ‘ইহার জন্য এক ইমারত নির্মাণ কর, অতঃপর ইহাকে জলন্ত অগ্নিতে নিক্ষেপ কর।। উহারা তাহার বিরুদ্ধে চক্রান্তের সংকল্প করিয়াছিল; কিন্তু আমি উহাদিগকে অতিশয় হেয় করিয়া দিলাম।” ( ৩৭ঃ ৯৭, ৯৮)
“তোমার নিকট ইব্রাহীমের সম্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত আসিয়াছে কি? যখন তাহারা তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বলিল, সালাম।’ উত্তরে সে বলিল, ‘সালাম। ইহারা তো অপরিচিত লোক।
অতঃপর ইব্রাহীম তাহার স্ত্রীর নিকট গেল এবং একটি মাংসল গো-বৎস ভাজা লইয়া আসিল ও তাহাদের সামনে রাখিল এবং বলিল, তোমরা খাইতেছ না কেন।
ইহাতে উহাদের সম্পর্কে তাহার মনে সন্দেহ সৃষ্টি হইল।
উহারা বলিল, ‘ভীত হইও না। অতঃপর উহারা তাহাকে এক জ্ঞানী পুত্রের সুসংবাদ দিলো।
তখন তাহার স্ত্রী চীৎকার করিতে করিতে সম্মুখে আসিল এবং গাল চাপড়াইয়া বলিল, ‘‘এই বৃদ্ধা-বন্ধার সন্তান হইবে। তাহারা বলিল, ‘তোমার প্রতিপালক এই রকমই বলিয়াছেন; তিনি প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ।” (৫১ঃ ২৪-৩০)
“যখন ইব্রাহীম বলিল, ‘ হে আমার প্রতিপালক! কিভাবে তুমি মৃতকে জীবিত কর আমাকে দেখাও।’ তিনি বলিলেন, ‘তবে কি তুমি বিশ্বাস কর না?’ সে বলিল, ‘কেন করিব না, তবে ইহা কেবল আমার চিত্ত প্রশান্তির জন্য।’ তিনি বলিলেন, ‘তবে চারটি পাখি লও এবং উহাদেরকে তোমার বশীভূত করিয়া লও। তৎপর তাহাদের এক অংশ এক এক পাহাড়ে স্থাপন কর। অতঃপর উহাদেরেকে ডাক দাও, উহারা দ্রƒত গতিতে তোমার নিকট চলিয়া আসিবে। জানিয়া রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” (২ঃ ২৬০)
“সে বলিল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চলিলাম তিনি আমাকে অবশ্যয়ই সৎ পথে পরিচালিত করিবেন।; হে আমার প্রতিপালক আমাকে এক সৎ কর্মপরায়ণ সন্তান দান কর।’ অতঃপর আমি তাহাকে এক স্থিরবুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। অতঃপর সে যখন তাহার পিতার সঙ্গে কাজ করিবার মতো বয়সে উপনীত হইল তখন ইব্রাহীম বলিল, বৎস আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহ করিতেছি। এখন তোমার অভিমত কি বল? সে বলিল, ‘হে আমার পিতা । আপনি যাহা আদিষ্ট হইয়াছেন তাহাই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাইবেন। যখন তাহারা উভয়ে আনুগত্য করিল এবং ইব্রাহীম তাহার পুত্রকে কাত করিয়া শায়িত করিল, তখন আমি তাহাকে আহবান করিয়া বলিলাম, ‘ হে ইব্রাহীম! তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করিলে।’Ñ এইভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করি। নিশ্চয়ই ইহা ছিল এক স্পষ্ট পরীক্ষা।
আমি তাহাকে মুক্ত করিলাম এক কুরবানির বিনিময়ে। আমি ইহা পরবর্তীদের স্মরণে রাখিয়াছি। ইব্রাহীমের ওপর শান্তি বর্ষিত হোউক।” (৩৭ঃ ৯৯-১০৯)
ইব্রাহীম (আঃ)-এর জীবনের উল্লেখিত চারটি ঘটনার প্রথম তিনটি ঘটনার উদাহরণ দিয়ে যদি সর্বোচ্চ মানবিকতাবোধ সম্পন্ন যুক্তিবাদী ও জ্ঞানী কোন ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে অগ্নিকু-ে নিক্ষেপ করা হচ্ছে, আপনার অভিজ্ঞতায় আপনি জানেন যে আগুনের কু-ে নিক্ষেপ করার পর আপনি পুড়ে মারা যাচ্ছেন, টিক সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তি আপনার সামনে উপস্থিত হয়ে বলল, ‘ভয় করো না, আগুন তোমার কোনই ক্ষতি করবে না। আপনাকে অগ্নিকু-ে নিক্ষেপ করা হলো, আপনি অবাক বিস্ময়ে দেখলেন কোথায় আগুন, এত শান্তির আবাস।
আপনার জীবনে দ্বিতীয় ঘটনা, আপনার স্ত্রী বন্ধ্যা এবং বৃদ্ধা। সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা সে হারিয়েছে। এমন সময় সে ব্যক্তি আপনার সামনে এসে হাজির হয়ে বলল, তুমি এক সু-সন্তানের পিতা হবে, আপনি অবাক বিস্ময়ে দেখলেন আপনার বৃদ্ধা-বন্ধ্যা স্ত্রী গর্ভবতী হয়েছেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের পর তিনি এক জ্ঞানী সন্তানের জন্ম দিলেন। তৃতীয়বার সে ব্যক্তির সামনে আপনি হাজির, আপনি বললেন তুমি তো মৃতকে জীবিত করতে পার , কিভাবে কর আমাকে দেখাও। ঐ ব্যক্তির পরামর্শে আপনি চারটি পাখিকে টুকরো টুকরো করে খ-াংশ চারটি পাহাড়ে রেখে আসলেন। তারপর সে পাখিরা আপনার ডাকে জীবন্ত হয়ে আপনার ঘরে ফিরে এলো। চতুর্থবার ঐ ব্যক্তি হাজির, তিনি মনে মনে ঠিক করেছেন, আপনাকে তিনি পরীক্ষা করতে চান, আপনার জীবনে উল্লেখিত তিনিটি অলৌকিক ঘটনার পর তার প্রতি আপনার বিশ্বাস কৃতজ্ঞতাবোধ কতটুকু? তিনি আপনাকে আদেশ দিলেন, তোমার সন্তানকে জবেহ্ কর!
আপনার জন্য নিশ্চিতই এটি কঠিন। ঐ ব্যক্তিকে যে আপনার মতো করে জানে না, তার জন্য এই কাজটি নিঃসন্দেহে বর্বরতা, শয়তানের কর্ম! কিন্তু আপনি যদি একজন কৃতজ্ঞ, বুদ্ধিমান, যুক্তিবোধসম্পন্ন ও জ্ঞানী ব্যক্তি হন, আপনি কি করবেন? কিম্বা এই ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে যিনি বর্বরতার প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন, সেই সালমান রুশদি আপনার স্থানে থাকেন এবং তিনি যদি কৃতজ্ঞ, বুদ্ধিমান, যুক্তিবোধসম্পন্ন এবং জ্ঞানী হন তাহলে তিনি কি করতেন?
নিঃসন্দেহে একজন কৃতজ্ঞ, বুদ্ধিমান, যুক্তিবোধসম্পন্ন জ্ঞানীর জন্য ঐ পরিস্থিতিতে যে কাজটি করা উচিত ইব্রাহীম সেই কাজটিই করেছিলেন।
অধিকন্তু তিনি তার নিজের বিষয়টি সন্তানের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেননি। তিনি তার সন্তানের অনুমতি প্রার্থনা করে আধুনিক উচ্চ মানবিকতাবোধ সম্পন্ন একজন ব্যক্তির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটান এবং এর মাধ্যমে তার চরিত্রের মহত্বম আরেকটি দিকও প্রকাশ পায়।