সালাত ও যাকাতে দীনের ভাই হয়

By saitya gupon thakana

.

‘সত্য কখনো গোপন থাকে না’ গ্রন্থের সংকলকের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি শুধু যাকাত যাকাত করেন। টাকা ছাড়া কিছুই বুঝেন না।

জবাব-
পৃথিবীতে বহু নেতা (ইমাম) আছেন। টাকা ছাড়া কতজন ইমাম (নেতা) চলতে পারেন? আমার নাম ‘আমিরুল ইসলাম’ অর্থাৎ, শান্তির নেতা। তাই ইমাম হিসাবে আমি সবচেয়ে বেশি প্রচার করি কুরআন অনুসারে সালাত ও যাকাতের কথা। আর এই দু’টি কাজ করলে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ নিশ্চিত হওয়া যায়। যেমন-

১. ‘সালাত ও যাকাতে দীনের ভাই হয় (৯:১১; ৪৯:১০)।
২. ‘সালাত ও যাকাতে মু’মিন হয়, জান্নাত নিশ্চিত করে (৯:৭১; ৮:২-৪)।
৩. সালাত ও যাকাতে মসজিদ পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারে (৯:১৮)।
৪. ‘সালাত ও যাকাতে ইমামের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে (২১:৭৩)।
৫. ‘দীন ইসলামের শুরু সালাত ও যাকাত দিয়ে (২:১০৯-১১০; ৪:৭৭)।
৬. ‘আল্লাহ পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করলেও সালাত ও যাকাতের আমল (২২:৪১)।
৭. ‘আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য সালাত ও যাকাত (২৪:৫৬)।
৮. ‘সঠিক দীনের অনুসারি হলো সালাত ও যাকাতে (৯৮:৫)।
৯. ‘যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন সালাত ও যাকাত (১৯:৩১)।
১০. ‘সর্বাবস্থায় সালাত ও যাকাত (২৪:৩৭)।
১১. ‘আল্লাহ সংগে থাকবেন সালাত ও যাকাতে (৫:১২)।
১২. ‘সালাত ও যাকাতে সফলকাম হয় (৩১:৩-৫)।

মূসা নবি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছিলেন-
‘আপনিই আমাদের ওলী; সুতরাং আমাদেরকে ক্ষমা করুন ও আমাদের প্রতি দয়া করুন এবং ক্ষমাশীলদের মধ্যে আপনি তো শ্রেষ্ঠ। আমাদের জন্য নির্ধারিত করুন দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, আমরা আপনার নিকট প্রত্যাবর্তন করেছি। আল্লাহ বললেন, ‘আমার শাস্তি যাকে ইচ্ছা দিয়ে থাকি আর আমার দয়া- তা তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যপ্ত। সুতরাং আমি তা নির্ধারিত করব যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় ও আমার আয়াতে বিশ্বাস করে (৭:১৫৫-১৫৬)।
আর আখিরাতে বিশ্বাসী তারা যারা সালাত পড়ে ও যাকাত দেয় / ব্যয় করে (২:২-৪; ২৭:২-৩; ৩১:৩-৪)।
যারা যাকাত দেয় না তার আখিরাতে অবিশ্বাসী (কাফেরুন)/মুশরেকুন (৪১:৬-৭)।

আল্লঅহ বলেন, ‘আর অবশ্যই আমি এই কুরআনে বহু বিষয়ে বার বার বিবৃত করেছি যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে। কিন্তু এতে তাদের বিমুখতাই বৃদ্ধি পায় (১৭:৪১)। উপরোক্ত আয়াত অনুসারে আমিও বার বার সালাত ও যাকাতের কথা বলি।

আমি প্রত্যেক মাসে আমার উপার্জনের ২.৫% যাকাত দেওয়া শুরু করি ১৯৮৬ সালে কাটাইখানার মোড়, কুষ্টিয়া, ফারুক কোরেশীর নিকট (১৯৮৬-২০০৪)। উনি কুরআন থেকে আমার প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে যাকাত নেওয়া বন্ধ করলে একাই দিতাম। আমার আয়ের ২০% যাকাত দেই ২০০৮ থেকে এবং স্বঘোশসিত অস্থায়ী ইমাম হিসাবে যাকাত আদায়-বন্টন শুরু করি ১৭/০৪/২০১৪ থেকে।

আপনারাই বলুন- উপরোক্ত আয়াতমালা অনুসারে আমি প্রথমে কুরআনের কি কি প্রচার করব?

বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে ‘ইসলামের ইতিহাস .saitya

By saitya gupon thakana fb

.

৪. বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে ‘ইসলামের ইতিহাস
দাসের হাট থেকে আব্দুল্লহ্ পনের-ষোল বছর বয়সের ‘বারাকাহ্’ নামের এক হাব্শী বালিকা ক্রয় করে। আব্দুল্লাহ্ ‘আমিনাকে বিয়ের দু‘সপ্তাহ্ পরে তাকে বারাকাহর তত্ত্বাবধানে রেখে বাবা আব্দুল মুত্তালিবের নির্দেশে সিরিয়ায় ব্যবসার জন্য চলে যান। আমিনার কাছে রেখে যান ৫টি উট, কিছু ছাগল ও ভেড়া এবং বারাকাহ্কে। এর মধ্যে ঝাঁকে ঝাঁকে আবাবিল পাখির বিষাক্ত পাথর কুচি নিক্ষেপের ফলে কা’বা ঘর ভাংতে আসা বাদশা আবরাহা ও তার হাতির বাহিনী নির্মূল হল। কিছু দিন পর সংবাদ এলো মদিনায় এসে আব্দুল্লাহ্ মারা গেছে। বারাকাহ্ ছাড়া আমিনার পাশে দ্বিতীয় কোন প্রাণী নেই। একদিন শেষ রাতে মুহাম্মাদের জন্ম হয়। বারাকাহ্ মুহাম্মাদকে দু’হাতে তুলে আমিনার পাশে দেয়। ভোরে আব্দুল মুত্তালিব এসে শিশুকে কোলে নিয়ে কা’বায় গিয়ে ঘোষণা দেয়, এ হল ‘মুহাম্মাদ’। মরুবাসী ধাত্রীরা পালনের জন্য শিশুদের নিতে এসে হালিমা অন্য কোন শিশু না পেয়ে বাধ্য হয়ে মুহাম্মাদকে নিল। মুহাম্মাদকে নিয়ে হালিমার আর্থিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হল। মুহাম্মাদের ছয় বছর বয়সে আমিনা বারাকাহ্ ও মুহাম্মাদকে নিয়ে তার স্বামী আব্দুল্লাহ্র কবর যিয়ারত করতে মদিনায় গেল। মুহাম্মাদ বারাকাহর গলা ধরে দশ দিন পর মদিনায় পৌঁছাল। আমিনা ও বারাকাহ্ আব্দুল্লাহর কবরস্থলে চল্লিশ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা কেঁদে কেঁদে কাটাল। তারপর মক্কার পথে আমিনা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং আব্ওয়া নামক এক গ্রামের কাছে অসুস্থ অবস্থায় মারা যায়। বরাকাহ্ মুহাম্মাদকে কোলে-পিঠে করে মরূভূমির বালির মধ্যে নিজ হাতে আমিনাকে কবরস্থ করে আব্দুল মুত্তালিবের ঘরে ওঠে। দু’বছর পর আব্দুল মুত্তালিবের মৃত্যু হয়। তখন মুহাম্মাদ ও বারাকাহ্ আবু তালিবের ঘরে ওঠে। অভাবের সংসারে মুহাম্মাদ মেষ-বকরি চরিয়ে বৃদ্ধ চাচার সংসারে কিছু আয়ের সংস্থান করত। পঁচিশ বছর বয়সে মক্কার সম্ভ্রান্ত ও ধনাঢ্য মহিলা খাদিজাকে বিয়ে করে মুহাম্মাদ তাঁর পালক মাতা বাবাকাহকে নিয়ে খাদিজার ঘরে ওঠে। মুহাম্মাদ বারাকাহ্কে ‘ইয়া আম্মাহ’ বলে ডাকতো। মুহাম্মাদ ও খাদিজা বারাকাহ্কে বুঝিয়ে মদিনার ‘উবাইদ্ ইব্ন যায়দ আল খাযরাজীর’ সাথে বিয়ে দেন। ‘আইমান’ নামে একটি সন্তান হওয়ার পর তিনি মারা যান। বারাকাহ্ আইমানকে কোলে নিয়ে আবার মুহাম্মাদ ও খাদিজার সংসারে এল। তখন ঐ পরিবারে ছিল চাচার দারিদ্র -পীড়িত সংসার থেকে প্রতিদান স্বরূপ আলী এবং পনের-ষোল বছর বয়সের খাদিজার কৃতদাস যায়দ বিন হারীসা। যায়েদ তার পিতার নিকট না যাওয়ায় মুহাম্মাদ তাকে স্বাধীন করে দেন এবং কা’বায় গিয়ে নিজের পুত্র হিসেবে ঘোষণা করেন। বারাকাহ্ এখন গৃহের একমাত্র বয়োবৃদ্ধা হিসেবে মুহাম্মাদ, খাদিজা, যায়দ, আলী এবং আইমানের দেখাশুনা করে। মুহাম্মাদ বারাকাহর মত মা, খাদিজার মত স্ত্রী এবং যায়েদের মত পুত্র পেয়ে বিশ্ব-মানুষের মুক্তির সন্ধ্যানে হেরা গুহায় নিশ্চিত মনে ধ্যান মগ্ন হন। আল্লাহ্ মুহাম্মাদকে চারটি ছেলে দিয়ে একটিও জীবিত রাখেন নি। ফলে বারাকাহ্ মায়ের সম্মানে, যায়েদ সন্তানের অধিকার ও মর্যাদায় মুহাম্মাদ ও খাদিজার সংসারে প্রতিষ্ঠিত হয়। হেরা গুহায় মুহাম্মাদ সপ্তাহভোর কাটাতে লাগল তখন যায়দ সেখানে খাদ্য ও পানীয পৌঁছাত। এভাবে প্রায় এক যুগ পর মুহাম্মাদ ওহী প্রাপ্ত হন। আর যায়দ সর্বপ্রথম তাঁর উপর ঈমান আনে, তারপর খাদিজা বা বারাকাহ্। রাসূলের বয়স যখন ৫০ তখন খাদিজা ও পাঁচ সপ্তাহ পরে চাচা আবু তালেব মৃত্যু হয়। তখন কোরেশদের অত্যাচারে রাসূল যায়দকে সংগে করে তায়েফে হিজরত করেন। তায়েফবাসী রাসূলকে পাথর মেরে জর্জরিত করে। ফলে তিনি আবার মক্কায় আসতে বাধ্য হন। রাসূল তিন বছর সমাজচ্যুত হয়ে ‘দারুল আরকাম’ নামক এক ঘরে লুকিয়ে লুকিয়ে দীনের দাওয়াত দিতেন। তখন তাদের সংবাদ সরবরাহ্ করত বারাকাহ্ ও যায়দ। রাসূলের পালক পুত্র যায়দকে তাঁর ফুফাতো বোন যাইনাবের সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু যাইনাব যায়দকে পছন্দ না করায় আল্লাহর নির্দেশে রাসূল নিজেই যাইনাবকে বিবাহ করেন। রিসালাত প্রাপ্তির সপ্তম বছরে রাসূল তিন তিন বার ঘোষণা দেন ‘কে আছো যে জান্নাত বিবাহ্ করবে?’ প্রত্যেকবারই যায়দ বলে ওঠে ‘আনা, ইয়া রাসূলাল্লাহ্।’ রাসূল বারাকাহ্কে বলতেন ‘উম্মি (আমার মা) এবং যায়দকে বলতেন ‘হিব্ব্ (ভালোবাসা)। রাসূল ষাটের কাছাকাছি বয়সের বারাকাহ্কে ত্রিশোর্ধ যায়দের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করালেন। তাদের মিলনের ফসল এক অসাধারণ শিশু। রাসূল তার নাম রাখলেন ‘উসামা। ধরার মাটিতে রাসূলের একমাত্র মরমী সংগী যায়দ। হিজরতের পর রাসূল ও তাঁর অনুসারী মুসলিমগণ ইহুদী, নাসারা ও মুশরিকদের নিকট মজুরীর বিনিময়ে শ্রম বিক্রি করতেন। ওহুদের যুদ্ধে ওসমানসহ বহু খান্দানী রাসূলকে ফেলে ময়দান ছেড়ে পালিয়েছিল। আহযাবের পর হুদাইবিয়ায় মক্কাবাসীদের সাথে সমঝোতার জন্য তাঁর দূতরূপে যেতে ওমরকে আদেশ করেন কিন্তু ওমর ভয়ে যান নি। ওসমানও উপস্থিত ছিলেন না। হুদাইবিয়ার সন্ধির পর খাইবার অভিযানে রাসূল দুর্গ বিজয়ের জন্য আবু বকর ও পরে ওমরকে পাঠালে তারা দুইজনই ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসে কিন্তু আলী সফল হন। স্ত্রী অসুস্থ বলে ওসমান বদরের যুদ্ধে শরীক হন নি। পরিখার যুদ্ধে প্রাপ্ত বয়স্ক না হলেও রাসূল খুশি হয়ে উসামার কোমরে তলোয়ার ঝুলিয়ে দেন। রাসূল স্বয়ং ২৭ টি যুদ্ধ পরিচালনা করেন এবং অন্যান্য যুদ্ধে যায়দকে সেনাপতি করে পাঠান। সেসকল যুদ্ধে আবু বকর ও ওমর থেকে আরম্ভ করে সকল কোরেশীরা সাধারণ সৈনিক। যায়দ প্রত্যেকটি যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে। কিন্তু বুসরার যুদ্ধে রাসূল একাধিক সেনাপতি নিয়োগ করেন এবং কয়েক মাইল পায়ে হেঁটে যায়দকে বিদায় দেন। যুদ্ধে যায়দ শহীদ হন। আর খালেদ ও আবু হোরায়রারা ফুররার (পলাতক) বলে তিরস্কৃত হয়। বদর যুদ্ধে পর বন্দীদের দশজন মুসলিম শিশুকে লিখন ও ব্যাকরণ শিক্ষাদানের শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়। ঐ সময় মদিনায় নয়টি মসজিদ-বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। পুরুষের সাথে নারীদের শিক্ষা দেওয়া হয়। শিশুদের শিক্ষার জন্য প্রত্যেক মহল্লায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। বেদুঈনদের শিক্ষার জন্য মুয়াল্লীম নিযুক্ত করা হয়। মদিনাকে রাজধানী করে মুহাম্মাদ খাইবার, মক্কা, তায়িফ, তায়াম, সানা, ইয়েমেন, বাহ্রাইন, উমান ও হাযরামাউথে প্রাদেশিক শাসন কর্তা নিয়োগ করেন। মুহাম্মাদ ছিলেন সালাতের ইমাম, প্রধান সেনাপতি, বিচারক ও প্রশাসক। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অর্জিত সম্পদের, জিযিয়ার খুমুশ (এক-পঞ্চমাংশ), সদকা (স্বেচ্ছামূলক দান) ইত্যাদি আদায়-বণ্টন করতেন। প্রতিটি মুহুর্তেই তাকে তার অনুসারিদের সংগঠিত রাখার এবং যুদ্ধের প্রস্তিুতিতে থাকতে হত। তায়েফ অভিযানে রাসূলের সাথে আবু বকর ও ওমরসহ পনের হাজার সৈন্যের বহর ছিল। রাসূলের সংগে বারাকাহ্, তাঁর দু’টি সন্তান আইমান ও উসামাহ। যুদ্ধ শুরু হতেই শত্রুর অতর্কিত আক্রমনে রাসূলকে ফেলে অন্যরা পলায়ণ করে। হিজরতের আট বছর পরে হুনাইনের যুদ্ধে (৯:২৫) রাসূলকে ফেলে আবু বকর ও ওমর পালিয়েছিলেন, কিন্তু বারাকাহ্র পুত্র আইমান শহীদ হয়। সুরাহ হুজারাত নাযিল হলে আবু বকর ও ওমর সংযত হয়। আবু কবরের কন্যা মা আয়শা ও ওমরের কন্যা মা হাফসা একের পর এক অঘটন ঘটায়। ফলে তাদের জন্য নুহ ও লূতের স্ত্রীদের দৃষ্টান্ত দেখিয়ে নাযিল হয় সূরা তাহরীম। রাসুল মক্কা বিজয়ের যাত্রায় বারাকাহ্দের সংগে আনেন এবং বেলাল ও উসামাকে নিয়ে কা’বায় প্রবেশ করেন। ওহুদের যুদ্ধে শোকবিহ্বল স্তব্ধ পরিবেশে রাসূলের চাচা নিহত হামযার বক্ষ চিরে যে হিন্দা কলিজা চর্বন করেছিল তার স্বামী দীর্ঘ দিনের শত্রু আবু সুফিয়ানসহ মক্কাবাসীদের অন্যায় ও অত্যাচার ভুলে গিয়ে তাদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করলেন। বিদায় হজ্জে রাসূল ঘাষণা দিলেন, ‘কোন আরবের উপর অনারবের যেমন প্রাধান্য নেই, তেমনি অনারবদের উপর আরবেরও কোন প্রাধান্য নেই। কোন শ্বেতাঙ্গের উপর যেমন কৃষ্ণাঙ্গের কোন প্রাধান্য নেই, তেমনি কৃষ্ণাঙ্গের উপর শ্বেতাঙ্গের কোন প্রাধান্য নেই। পরস্পরের মাপকাঠি হচ্ছে একমাত্র আল্লাহভীতি। মু’মিনগণ পরষ্পর ভাই ভাই। আমি তোমাদের মধ্যে একটি জিনিস রেখে যাচ্ছি তা হলো আল্লাহর কিতাব (কুরআন)। যতদিন তোমরা একে অনুশীলন করবে, ততদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। (মুসলিম থেকে) রাসূল আকাশের দিকে মুখ করে বলেন, ‘আমার রব! আমি কী আপনার বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছি?’ সমবেত কণ্ঠে জনগণ জবাব দিয়েছিল, ‘হ্যাঁ, আপনি আমাদের নিকট তা পৌঁছে দিয়েছেন। বিদায় হজ্জের দুইমাস পরে রাসূল যেখানে একজন মুসলিম দূতকে হত্যা করা হয়, সেখানে হত্যাকান্ডের সমুচিত শাস্তিদেওয়ার জন্য সিরিয়া অভিযানের নির্দেশ দেন। রাসূলের পালক পুত্র যায়েদ ও পালক মাতা বারাকাহ্র পুত্র উসামার উপর সে দায়িত্ব অর্পিত হয়। বিশ্বের মানুষের জন্য একজাতির পতাকা উত্তোলন করে রাসূলের ইন্তেকালের পূর্বে ত্রিশ হাজার সৈনিক একত্র করে মাত্র আঠারো বয়সের সমর নায়ক উসামার হাতে দিয়ে আবুবকর, উমর, উসমান, আলী, তালহা, যুবাইরর, আব্দুর রহমান, ইবন আউফ, সাআদ্ ইবন আবি ওয়াক্কাস, আবু উবাইদাসহ খান্দানী ও বয়োবৃদ্ধদের উপর সেনাপতি বানান এবং বলে যান, ‘উসামার পতাকা তলে যারা থাকবে না, তাদের উপর লা’নত।’ রাসূলের উক্ত বাণী দ্বারা বুঝা যায় রাসূলের পরবর্তী ইমাম হবে উসামা। কারণ উসামা শুধু সালাতের ইমামই নয় ত্রিশ হাজার সৈন্যেরও যুদ্ধের ইমাম। রাসূলের মৃত্যু সাংবাদ শুনে ওমর তা বিশ্বাস করেন নি। আবু বকর তখন মদিনার নিকটবর্তী ‘সানাহ’ নামক স্থানে। ইমাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে চারটি দলের উদ্ভব হল। ওমর আবু বকরের হাতে তার আনুগত্যের শপথ নিল। রাসূলের লাশ ঘিরে বসে আলী, তালহা, যুবায়র ও আব্বাস। রাসূল সোমরার দুপুরে ইন্তেকাল করেছেন। সোমবার দিন-রাত গেল, মঙ্গলবার দিন-রাত গেল। বুধবার দিন গেল, রাতে উসামাহ্, বিলাল ও শাকরান পানি আনে। আলী নিজ হাতে গোসল করায়। উসামাহ্ ও বিলাল পানি ঢালে। আব্বাস, ফজল ইবন আববাস ও কুসম ইবন আব্বাসও সহায়তা করে। রাতের অন্ধকারে জানাযা ছাড়া রাসূলের মৃত লাশের দাফন হলো। কিন্তু আবু বকর সিদ্দীকে আকবর, ওমর ফারুকে আযম ও ওসমান গনীর কোন সংবাদ ছিল না। ঈসা নবীর ১২ জন সংগীর মধ্যে জুডাস ত্রিশটি রৌপ্য মুদ্রার বিনিময়ে তাঁকে ঘাতকের হাতে বিক্রি করেছিল। তখন কেউ ঈসা নবীকে সাহায্য করে নি। ঠিক একই রকম ভাবে রাসূলের মৃত্যুর পর তাঁর লাশ মাটির উপর রেখেই আবু বকর ঘোষণা দিয়েছিল, ‘আল, আইম্মাতু মিন্ কোরেশ’। এ কালেমার উপর ভিত্তি করেই আবু বকর খলিফা হয়ে ফাতেমার পিতার স্থান দখন করল। সকল মানুষ আল্লাহর খলিফা। ইমাম না হয়ে মিথ্যার বেড়াজালে আবু বকর হলো কোরেশদের খলিফা। আবু বকর ও ওমর কোরেশী খিলাফতের পত্তন করলে আলী শুধু বলেছিলেন, ‘তোমরা যে কথা বলে মদিনাবাসী আনসারদের বঞ্চিত করলে, তা যদি সত্য হয়, তা’হলে আমিই তার বড় হকদার। কারণ, আমি একদিকে কোরেশী, হাশেমী, আবু তালেবের পুত্র এবং রাসূলের প্রিয়তম কন্যার স্বামী। রাসূলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েই মক্কার কোরেশ ও তাদের অনুসারীরা আনন্দে ফেটে পড়েছিল যে তাদের ভয়ে রাসূলের নিয়োজিত গভর্ণর ও নায়েব ইবন উসাইদ প্রাণ রক্ষার্থে পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় এবং সপ্তাহ ধরে আযান ও সালাত বন্ধ থাকে। আলী ও ফাতিমা আবু বকরকে সমর্থ না দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন। ওমর ফাতিমার ঘরের চার দিকে লাকড়ি জমা করে আগুন লাগাতে চেষ্টা করেন। ওমরের ধাক্কাধাক্কিতে দরজা ভেঙ্গে তার আঘাতে ফাতিমা মাটিতে পড়ে গেলে তার গর্ভপাত ঘটে। তার ছয় মাস পরে তিনি মারা যান। ওমর আলীকে জোর করে মসজিদের নববীতে নিয়ে গেলেও আবু বকরের হাতে বায়আত হন নি। ফাতিমা অসিয়ত করে যান আবু বকর ও ওমর যেন তার জানাযা না পড়ে। বিশ্বে একই সময়ে একাধিক নবী-রাসূলের কোন আত্ম কলহ হয় নি কিন্তু কথিত চার খালিফার তিন খলিফা এবং আশারায়ে মুবাশ্বারা মধ্যে পাঁচ জন আত্ম কলহে মারা যান। রাসূলের মৃত্যুর পর ‘রব উঠল, উসামাকে বদলাও, তার যুদ্ধ বাতিল কর, অথবা স্থগিত কর। আবু বকর ওমরসহ অন্যান্যদের কথা উপেক্ষা করে রাসূলের নির্দেশ ও কঠোর হুশিয়ারী অনুযায়ী উসামাহর বাহিনী প্রেরণ করেন। আবু বকর তখন বলেছিলেন, ‘আমি কে যে, আল্লাহর রাসূল নিজে যে অভিযানে প্রেরণের আদেশ দিয়ে গিয়েছেন তা বন্ধ করব?’ উসামার বাহিনীর আগমনের বার্তা শুনে বুসরার রাজা রাজ্য ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। উসামা বিনা যুদ্ধে সম্পূর্ণ সমৃদ্ধ এলাকা দখল করে এবং চল্লিশ হাজার উটসহ বিরাট পরিমাণ গণিমতের মাল নিয়ে ফিরে আসে। ক্ষমতালোভী আবু বকর উসামার সেনাপতির পদ খতম করলেন। শতকরা প্রায় আশি জন মোর্তাদ হয়ে ভ-নবীদের অনুসারী হল। মুউতার যুদ্ধে পলায়ণকারীদের নেতা খালিদ্ ইবন ওয়ালিদকে সেনাপতি করা হলো। কোরেশ রাজত্বে যাকাত দিতে অস্বীকার করায় আবু বকরের নির্দেশে হাজার হাজার মুসলিম নিধন হল। যুদ্ধবন্দী ছেলে-মেয়েদের দাস-দাসী বানানো হল। খালেদ সালাতরত অবস্থায় মালিক বিন নুওয়াইরাকে হত্যা করে রাতে তার পরমা সুন্দরী স্ত্রী লায়লাকে ভোগ করল। মালিকের ভাই ওমর, আলী, সাআদ ও আবু উবাইদাদের সংগে আবু বকরের কাছে বিচার চাইল কিন্তু আবু বকর সাইফুল্লাহ্র বিচার না করে কৈফিয়ত তলব করল। আবু বকর যা করেছে, ওমর তা করে নি। যারা যাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল আবু বকর তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত করে পুরুষদের দাস ও নারীদের দাসীরূপে বন্টন করে। আবু বকর সোয়া দু’বছর শাসন চালায়। ইয়ামামার যুদ্ধে কোরেশ শাসন প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আবু বকরের নির্দেশে দুই হাজার মুসলিম সৈন্য নিহত হয়, যা রাসূলের ২৩ বছরের সংগ্রামী জীবনেও হয় নি। আবু বকর তার মৃত্যু আসন্ন মনে করে ওসমানকে ডেকে তার জীবদ্দশায় লিখিতভাবে ওমরকে তার স্থলাভিষিক্ত করেন। আবু বকর নিজেকে রাসূলের খলিফা (খলীফাতু রাসূলিল্লাহ্) বলে স্থাপিত করেন। আর ওমর ক্ষমতায় বসে নিজেকে রাসূলের খালিফার খলিফা (খলীফাতু খলীফাতু রাসূলিল্লাহ্) নামে চালান। কিছু দিন পর আমর অথবা মুগীরা এসে ‘সালামুন আলাইকা’ ইয়া আমিরাল মু’মিনীন’ বলে ওমরের পদবী খলিফা থেকে আমীরুল মু’মিনীন বানাল। ওমর রোমান ও পারস্য সাম্রাজ্যের পেশাদার সেনাবাহিনীর আদলে বেতন ভুক্ত মুসলিম সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং বহু ইয়াহুদী ও নাসারাকে সৈনিক হিসেবে নিয়োগ দেন। ফলে হিয্বুল্লাহর (আল্লাহর) সেনাবাহিনীর বিলুপ্তি ঘটে। আবু বকর কোরেশী মুহাজির রূপে ক্ষমতায় বসলেও সম্পদ বন্টনে রাসূলের আচরিত নিয়ম পালন করে কিন্তু ওমর তাতে আমূল পরিবর্তন আনে। ওমর পারস্য জাতির পরাজিত সম্রাটের দু’কন্যাকে দাস বিক্রয়ের হাটে বিক্রয়ের জন্য পাঠান। আলী তাকে প্রশ্ন করেছেন, ‘আল্লাহ্ কি তাঁর শেষ নবীকে প্রেরণ করেছিলেন আমাদের দ্বারা জাতিসমূহকে পরাজিত করে তাদের হাটে-বাজারে বিক্রয় করে আমাদের দাস-দাসীতে পরিণত করতে? ওমর কোন সদুত্তর দিতে পারে নি। ওমর মানুষের ইচ্ছা মত কুরআনের বিরুদ্ধে তিন মাসের স্থলে একসাথে তিন তালাকের বৈধতা দিলেন। সাধারণ ক্ষমায় মুগীরা মদিনায় থাকার অনুমতি পায়। ওমরের আমলে মুগীরা ব্যভিচাররত অবস্থায় ধরা পড়ে। পরাজিত এক ইরানী প্রকৌশলী আবু লুলু ধৃত হয়ে মদিনায় আসে। তাকে মুগীরার দাসত্বে দেয়া হয়। সে বাতাসে চালিত আটাকল তৈরি করতে জানত। মুগীরা তাকে মাসিক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে বাধ্য করত। লুলুর পক্ষে তা দেয়া অসম্ভব হলে ওমরের নিকট নালিশ করে। কিন্তু ওমর মুগীরার পক্ষে রায় দেন। লুলু অসন্তুষ্ট হয়ে ওমরকে সালাতরত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টায় আহত করে। তাতেই ওমরের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে ওমর পরবর্তী নির্বাচনের জন্য ছয় জন কোরেশ ব্যক্তির এক প্যানেল করে যান। ওমরের পুত্র উবাইদুল্লাহ্ কুরআনের আইন অমান্য করে পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে আবু লুলু, তার স্ত্রী, এক ইরানী রাজকুমার হরমুযান, তার স্ত্রী ও তার শিশু কন্যাসহ মোট সাত জনকে নিজ হাতে হত্যা করে। ওমরের শাসনকাল ছিল দশ বছর। ওমর মুসলিম ব্যবসায়ী ও বিদেশীদের নিকট থেকে শতকরা দশভাগ শুল্ক আদায় করতেন। ফসলেরও দশমাংশ যাকাত হিসেবে আদায় করতেন। ওসমান খলিফা হওয়ার পর আলীসহ সকল মদিনাবাসী সর্বপ্রথম উবাইদুল্লাহ্ ইবন ওমরের কুরআন অনুসারে বিচারের পরামর্শ ও তাগিদ দেন। ওসমান লোকভয়ে ওমরের ছেলের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করেন নি। ওসমান রাসূল কর্তৃক অভিশপ্ত ও মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত অপরাধী মারওয়ানের সাথে মেয়ে বিয়ে দিয়ে প্রধান মন্ত্রী, হাকামকে বনী কোযাআর সদকার তহসীলদার, ইবন সারাকে মিশরের গভর্নর, ওয়ালিদ ইবন উকবাকে ইরাকের গর্ভনর নিযুক্ত করেন। আবু যারকে সত্য বলার জন্য নির্বাসনে পাঠান। ওয়ালিদ বাইতুল মালের অর্থে ইরাকে মদ্যপান ও নর্তকীদের আড্ডা জমাতো। মা আয়শা এর প্রতিবাদ করলে ওসমান তাকে নূহ্ ও লূতের স্ত্রীর সাথে তুলনার আয়াত (৬৬:১০) পড়ে অপদস্থ করেন। আল্লাহ্ (৪৭:৩৮) গনী (ধনী), কিন্তু যারা ওসমানকে সামনে রেখে বিজিত রাজ্য থেকে আসা বাইতুল মালকে লুটেছে তারাই বলত ওসমান গনী। ওসমান, আব্দুর রহমান ও ইবন আউফ গনী (ধনী) হয়েছিল। তালহা ও যুবাইর এতো ধনী হয়েছিল যে, তাদের দৈনিক আয় শত শত দিনার ছাড়িয়ে যায়। আব্দুর রহমান ইবন আউফ মোট ষাটটি বিবাহ করে। যারা খুব কম বিবাহ করেছে তাদের বিয়ের সংখ্যাও ডজনের কম ছিল না। আলীর ছেলে হাসান তার একচল্লিশ বছর জীবনে এক হাজারটি বিবাহ করে। যারা সবচেয়ে কম বলে, তাদের মতেও তার বিবাহ একশটি। রাসূল বলেছেন, ‘আমার পর তোমরা ইবন মাসউদের নিকট থেকে কুরআন গ্রহণ করবে। কিন্তু ওসমান নিজে তার উপর হাত তোলেন এবং অন্ডকোষে লাথি মারেন। সন্ত্রাসীদের তার উপর লেলিয়ে দেন, ফলে সে গণপিটুনীতে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে তাকে মসজিদে নববীর বাইরে মৃত অবস্থায় ফেলা হয়। ওসমান বাইতুল মাল থেকে তার প্রাপ্য এবং পরিবারের ভাতাও বন্ধ করে দেন। অথচ ওসমান তার শাসনামলে মদিনায় তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের জন্য সাতটি প্রাসাদ নির্মান করেন। হাকামের কবরের উপর ওসমানই সর্বপ্রথম মদিনায় স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করেন। প্রতিবাদী ন্যায়বিচার প্রার্থীরা প্রায় দু’মাস ওসমানকে গৃহে অবরুদ্ধ রাখে। তারপর দুই মিসরবাসী ৮২ বছর বয়স্ক ওসমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শেষ পর্যন্ত তিন দিন পর ওসমানের পচা লাশ জানাযা ছাড়াই আলীর নির্দেশে ইয়াহুদীদের গোরস্থানে রাতের অন্ধকারে মাটিচাপা দেয়া হলো। ওসমানের মৃত্যুর ছয় দিন পর আল্লাহর কিতাব অনুসারে শাসনকার্য পরিচানার জন্য আলীর কোরেশী ও হাসেমী ইমামাত আরম্ভ হয়। আবদুল্লাহ্ ইবন আউফের শর্ত ছিল ‘আল্লাহ্ ও রাসূলের আনুগত্যের পর আবু বকর ও ওমরের সুন্নাত অনুসারে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হবে। উত্তরে আলী বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের নিয়ম অনুসারে শফথ নিতে পারি কিন্তু আবু বকর ও ওমরের কোন সুন্নাত নেই। রাসূলের নিয়োগকৃত সেনাপতি উসামাহকে ধরে আনা হয় আলীর পক্ষ নেওয়ার জন্য। তিনি আগের মতই নিরপেক্ষ থাকতে চাইলে তাকে গণ পিটুনি দেওয়া হয়। নির্যাতিত, লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়ে জুরুফে চলে যান (এখানে রাসূল যুদ্ধের জন্য তার হতে পতাকা তুলে দিয়ে ছিলেন)। আলীকে আশারায়ে মুবাশশারার তালহা, যুবাইর ও সা’আদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস এবং মা আয়শা খলিফা হিসেবে গ্রহণ করেন নি। মা আয়শা আলীর বিরুদ্ধে সাত দিনের যুদ্ধের নেতৃত্ত্ব দেন। তাতে দু’বোনকে বিধবা করে দশ হাজার পিতামাতার নিবেদিত প্রাণ সন্তানকে হত্যা করে তাদের লাশ বানিয়ে ঘরে ফিরেন। উষ্ট্রের ঐ যুদ্ধে আলী বিজয়ী হলে গনিমতের মাল যোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন হবে না বলে নির্দেশ দিলে তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। তখন আলী সর্বপ্রথম মা আয়শাকে বণ্টন করতে চান এবং বলেন, ‘তোমরা কে তাকে দাসী রূপে নিবে বল?’ পরে রমযান মাসের মসজিদের সালাত কায়েম করার উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় আততায়ীর রহমান ইবনে মুলজাম খারিজীর তরবারির আঘাতে আলী নিহত হয়। আর আলীর লাশ বস্তায় ভরে উটের পিঠে রেখে মরুভুমির মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হলে। তাই বলা হয় ‘উটের পিঠে আলীর কবর। আলীর মৃত্যুর পর মুয়াবিয়া ধীরমস্তিষ্ক, হিসেবী, নাস্তিক আরব ইসলামী এলাকার উপর রাজত্ব করেছিলেন। মুয়াবিয়া রাজা হয়ে মা আয়শার জন্য মোটা অঙ্কের ভাতা প্রদান করে। মারওয়ান অথবা তার মুয়াযযিন আবু হুরায়রা (বিড়ালের বাবা) মা আয়শার যানাযা পড়ে। মুয়াবিয়া ক্ষমতায় বসে প্রতিটি মসজিদে জুমা, ঈদে ও হাজ্জে আলীকে অভিশাপ করে খুৎবা চালু করে। আলীর কাছে বর্শার মাথায় ঝুলানো মুয়াবিয়ার সে দিনের কুরআন আজও মানব জাতির বুকে বর্শা হয়ে বিধছে। কারণ কুরআনের কথা বলা হয় কিন্তু কুরআনে কি আছে, কি করতে হবে তার দিক নির্দেশনা খলিফাদের আমল থেকে তেমন কিছু দেখা যায় না। রাসূলের মৃত্যুর পর আবু বকর, ওমর ও ওসমান নিজেদের মৃত্যু এড়াতে কেউ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে নি। মুয়াবিয়া মুসলিম রাষ্ট্রকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পরিণত এবং রাজতন্ত্রের সূচনা করে। খলিফাদের চাটুকারগণই তাদের নামের শেষে সিদ্দিকে আকবর, ফারুকে আযম, ওসমান গনী, মাওলা আলী, আয়শা সিদ্দিকা, খালিদ সাইফুল্লাহ্ ইত্যাদি নাম দিয়ে রাসূলের নামে অসংখ্য হাদিস তৈরি করেছিল। রাসূল আবু বকরের নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন আব্দুল্লাহ্। অথচ তিনি (বানানের ভুল হলে) আবু বকর (গরুর বাবা) হিসেবেই বিশ্বে অমরত্ব লাভ করেন। মুয়াবিয়া কতৃক মাইসুন ধর্ষিত হওয়ার ফলে ইয়াজিদের জন্ম হলে পরে ইয়াজিদের ছেলের নাম রাখা হয় দ্বিতীয় মুয়াবিয়া। আলীর ছেলে হাসান খোজেস্তানের রাজস্বের বিনিময়ে মুয়াবিয়ার হাতে বায়আত হয়ে তার নানার ইমামত খতম করে। রাসূলের অভিশপ্ত মনজুর ইবন যিব্বানের (সৎ মা-ছেলের দাম্পত্যে) সুন্দরী মেয়েকেও হাসান বিয়ে করে। ইয়াজিদ বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ৩১৩ জনের মধ্যে জীবিতদের মধ্য থেকে বেছে বেছে প্রায় ৫০ জনকে হত্যা করে। মুসলিমদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও অন্যান্য ইমারত ধ্বংস করে। দশ হাজার মদিনাবাসীকে হত্যা করে, তিন থেকে পাঁচ দিন এবাহা (ধ্বংস যজ্ঞ চালানোর) ঘোষণা করে মদিনার আনসার ও মুহাজিরদের হাজার হাজার কুমারী মেয়েদের উপর রোমান ও খৃস্টানদের সাহায্য পুষ্ট সিরিয়ান সৈন্যদের দ্বারা ব্যভিচার ও গণধর্ষণ চালায়, যার ফলে ন্যূনপক্ষে এক হাজার কুমারী গর্ভবতী হয় এবং এক সপ্তাহের জন্য মসজিদে নববী ঘোড়ার আস্তাবলে পরিণত হয়। আবু সুফয়ানের পুত্র মুয়াবিয়া ও তার পুত্র ইয়াজিদ মক্কা ও মদিনার কেন্দ্রীয় গুরুত্বকে উৎখাত করে দামেস্কে রাজধানী স্থাপন করে। মদিনা ধ্বংসের পর দুইমাস মক্কা অবরোধ করে রাখে এবং তারা কা’বাতে অগ্নিসংযোগ করে। ফলে কা’বার কৃষ্ণপাথর ত্রিখন্ডিত হয়। আবু সুফয়ানের জারজ সন্তান যিয়াদের পুত্র ইবন যিয়াদই ইয়াজিদের প্রথম বছরে কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায়, ইয়াজিদের নেতৃত্ত্বে দ্বিতীয় বছরে মদিনার ধ্বংস সাধন করা হয় এবং তার সৈন্যদের দ্বারা তৃতীয় বছরে কা’বা বিধ্বস্ত করে। সিরিয়ার সৈন্যবাহিনী মক্কা বিধ্বস্ত করার সময় মদ্যপ ও ব্যভিচারী ইয়াযীদ বাঁদর নিয়ে খেলতে খেলতে ঘোড়ার উপর থেকে পড়ে ঘাড় ভেঙ্গে মারা যায়। তখন শিয়া এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের জন্ম হয়। আর ৮:৪১ আয়াতের গনিমাত বা গনিমার অর্থাৎ অর্জিত বা বৈধভাবে উপার্জিত অর্থের এক-পঞ্চমাংশ নিয়মিত রাষ্ট্রীয় তহবিলে জমা না দিয়ে সুন্নিরা ৬ খাতের প্রথম ৩ খাত বাদ দেয়, ফলে ৫ এর অর্ধেক আড়াই হয়। পরে বছর শেষে ২.৫% যাকাত দেওয়ার প্রচলন করে। অন্য দিকে শিয়ারা তাদের উপার্জিত অর্থের এক-পঞ্চমাংশ যাকাত হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দেয় তবে তা বছর শেষে। মুসলিম জাতি বিভক্ত হয়ে তাদের অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা ধ্বংস করে। সু-প্রিয় পাঠক! উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যার জন্য ‘লিসান আল আরব’ গ্রন্থ দেখতে পারেন। আবু বকর থেকে আরম্ভ করে মুয়াবিয়া ও ইয়াজিদের চাটুকাররা রাসূলের নামে কোরেশী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যত প্রকার মিথ্যা হাদিস তৈরি করেছিল সেসব মিথ্যা আর কিছু সত্য বুখারী-মুসলিমরা সংগ্রহ করে। মুসলিমরা কুরআন বর্জন করে রাজাবাদশাদের তৈরি ফতুয়া আর মিথ্যাবাদী কোরেশদের তৈরি মিথ্যা হাদিসের অনুসরণ করে। ধর্ম নিরপেক্ষ শাসক আব্দুল মালিক জেরুজালেমে ‘কুব্বাতুল সাখরা বা প্রস্তর গম্বুজ মসজিদ তৈরি করে সেখান হজ্জ অনুষ্ঠানের আদেশ দিয়েছিলেন। তিনি ৮৬ হিজরীতে মৃত্যুবরন করেন। শিয়া-সুন্নীদের মত আরও বহু দলে বিভক্ত হলে মুসলিমদের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা শুরুহয়। সপ্তম শতাব্দির প্রথম নাস্তিক খলিফা উমাইয়া বিভিন্ন কারণে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষকে হত্যা করে। প্রথম ওয়ালিদ খলিফা হলে মক্কা, মদিনা, কুফা ও বসরা কুরআন-হাদিস চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়। তিনি দামেশ্কে কেন্দ্রীয় মসজিদ, মদিনয়া নবীর মসজিদ ও জেরুজালেমের আকসা মসজিদ পুননির্মাণ ও সম্প্রসারণ করেন। ওমর বিন আব্দুল আযীয (দ্বিতীয় ওমর) (৭১৭-৭২০) ক্ষমতায় বসে মুয়াবিয়া প্রবর্তিত শুক্রবারের সালাতের খুৎবায় আলীর পরিবারের প্রতি অভিশাপ দেওয়ার প্রথা বাতিল করেন। ছিনিয়ে নেওয়া ‘ফিদাক’ ফলের বাগান নবী পরিবারকে ফেরত দেন। তিনি কর প্রথা রহিত করে যাকাত প্রথার প্রচলন করা শুরু করেন এবং আরব-অনারব, শিয়া-সুন্নীসহ সকল ভিন্নমতাবলম্মীদের মধ্যকার বিরোধ ও বিভ্রান্তি দূর করেছিলেন।
‘বিশ্ব চলছে ইঞ্জিলের বিকৃত আইনে!কুরআনে আছে কি?’ গ্রন্থ থেকে সংকলিত।

কুরআনে ‘নবীদের নামের আগে ‘সালামুন আলা’

কুরআনে ‘নবীদের নামের আগে ‘সালামুন আলা, প্রচলিত রয়েছে আগে ইঞ্জিল ও পরে তৌরাতের অনুসরণ (হযরত ও আঃ)!

কুরআনে দেখুন, ‘সালামুন আলা নূহীন ফিল আলামীন (সমগ্র বিশ্বের মধ্যে নূহের উপর শান্তি বর্ষিত হোক);-৩৭:৭৯। একই ভাবে ‘সালামুন আলা ইব্রাহীম;-৩৭:১০৯। ‘সালামুন আলা মূসা ওয়া হারুণ;-৩৭:১২০। ‘সালামুন আলা ইল্য়াসীন;-৩৭:১৩০। ‘সালামুন আলাল্ মুরসালিন;-৩৭:১৮১। [‘দীন ইসলামের অধিকাংশ বিভ্রান্ত আলেমগণ ইঞ্জিল ও তৌরাতের বিকৃত আইন অনুসারে বলেন,] ‘হযরত ইব্রাহীম বা হযরত ইব্রাহীম (আঃ), হযরাত মূসা বা হযরত মূসা (আঃ), হযরত হারুণ বা হযরত হারুণ (আঃ), হযরত নূহ বা হযরত নূহ (আঃ), হযরত ইলয়াসীন বা হযরত ইলয়াসীন (আঃ) ইত্যাদি।]

কুরআনে দেখুন, ‘এ অবশ্যই এক মহিমময় কিতাব কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করতে পারে না- অগ্র হতেও নয়, পশ্চাত হতেও নয়;-৪১:৪১, ৪২। [উপরোক্ত আয়াত অনুসারে কোন নবী বা রাসূলের নামের আগে হযরত বা নামের পরে (আঃ) যোগ করা যাবে না। আল্লাহ্ আরও বলেন,] ‘তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে শুনে সত্য গোপন করো না;-২:৪২। ‘তোমরা কেন সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত কর এবং সত্য গোপন কর, যখন তোমরা জান?;-৩:৭১।

ইঞ্জিলে দেখুন, ‘নবী-রাসূলদের নামের আগে হযরত লেখা হয়েছে। যেমন- হযরত আদম-৪০৭ পৃ:, হযরত ইব্রাহিম-৪৯৮, ৭২৭, ৭২৯, ৭৩০, ৭৩৫, ৭৩৮ পৃ:, হযরত ঈসা-৭৩৫ পৃ:, হযরত-মরিয়ম-১৩৮, ৭২৮ পৃ:, হযরত আইয়ুব-৭২৬ পৃ:, হযরত ইসমাইল-৭২৯ পৃ:, হযরত জাকারিয়া-১৩৮, ১৪৩ পৃ:, হযরত ইস্হাক-৭২৭, ৭২৯, ৭৩০ পৃ: হযরত ইয়াকুব-৫২, ১১৬, ৫৯০, ৬২২, ৬৬৮, ৭২৭, ৭২৯, ৭৩০ পৃ:, হযরত ইয়াহিয়া-১০, ২৬, ৮৪, ১৬৫, ১৬৪, ২৩১, ২৩৭, ৭৩৭ পৃষ্ঠায় দেখুন।

তৌরাতে দেখুন, ‘নবী-রাসূলদের নামের আগে হযরত ও পরে (আঃ) লেখা হয়েছে। যেমন – হযরত আদম (আঃ)-১০, ২১, ৫৮৭ পৃ:, হযরত নূহ (আঃ)-১০, ২৪, ৩০, ৫৭২ পৃ:, হযরত ইব্রাহিম (আঃ)-১০, ২২, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৪০, ৪১, ৪৩, ৪৭, ৫৭, ৫৯, ৬০, ৭১, ৪০, ৫৭, ৫৭৩, ৫৭৪, ৫৮০, ৫৮৩, ৫৮৪ পৃ:, হযরত ইস্হাক (আঃ)-১০, ৪৬, ৬৪, ৬৫, ৫৭৪ পৃ:, হযরত ইদ্রিস (আঃ)- ৫ পৃ:, হযরত-যুলফিকল (আঃ)-৫৮৭ পৃ:, হযরত শু’আইব (আঃ)-২০৪ পৃ:, হযরত মূসা (আঃ)-৫, ৯, ১০, ১৫৭, ১৫৯, ১৬০, ১৬২, ১৬৪, ১৬৬, ১৬৭, ১৭১, ১৭২, ১৯৫, ২০৪, ২০৫, ২২২, ২৪৩, ২৫১, ৩৯১, ৩৯৮, ৪৩৭, ৪৬৫, ৪৭৬, ৪৭৭, ৪৮৪, ৪৯৫, ৫৫৪, ৫৬১, ৫৬১, ৪৬৬ পৃ:, হযরত হারুন (আঃ)-১৬৭, ১৭১, ১৭৩, ২৪২, ৩৫৫, ৪০২, ৪১২, ৫৭৩, ৫৮৭ পৃ:, হযরত লুত (আঃ)-১২, ৩৭, ৫১, ৫২, ৫৪, ৫৭১, ৫৮৫, ৫৮৬ পৃ:, হযরত ইয়াকুব (আঃ)-১০, ৭১, ৮১, ৮২, ৮৪, ৯১, ৯৩, ৯৫, ৯৭, ৯৯, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৫, ১৩৫, ১৪১, ১৪৩, ১৪৬, ১৫৩, ৫৭৪ পৃ: হযরত ইউসুফ (আঃ)-১০, ১১৩, ১১৪, ১১৮, ১২০, ১২৩, ১২৪, ১২৫, ১২৭, ১২৮, ১৩৮, ১৪৩, ১৪৬, ১৫৫, ১৫৭, ৫৮৩ পৃষ্ঠায়।

[কুরআনে হযরত বা আঃ শব্দ দেখা যায় না। দীন ইসলামের বিভ্রান্ত আলেমগণ কুরআনে উল্লেখিত ‘সালামুন আলা ইবরাহীম (৩৭:১০৯) বা, ‘সালামুন আলা মূসা (৩৭:১২০) অথবা ‘সালামুন আলা ইলয়াসীন (৩৭:১৩০) না বলে ইঞ্জিল ও তৌরাত অনুসারে বলেন, ‘হযরত ইবরাহীম (আঃ) বা, হযরত মূসা (আঃ) অথবা হযরত ইলয়াসীন (আঃ) বলেন।]

Bukharian not follow Quran .Saitya

যারা বুখারি-মুসলিমদের হাদিস মানেন তাদের কথা-
রাসূল কুরআন মানেন নি, তাই আমরাও কুরআন মানি না, মানব না।

প্রমাণ-
১. আর রাহমান, তিনিই (আল্লাহই) শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন (সূরা-৫৫, রাহমান, আয়াতঃ ২-৩।

উক্ত আয়াত অমান্য করে রাসূল মানুষকে কুরআন শিক্ষা না দিয়ে বুখারি-মুসলিমদের হাদিস শিক্ষা দিয়েছেন।

২.. ‘আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সেই সকল নামেই ডাকবে; যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে; তাদের কৃতকর্মের ফল দেওয়া হবে (৭:১৮০); সূরা-৭, আ‘রাফ, আয়াত-১৮০।

বল, ‘তোমরা ‘আল্লাহ’ (নামে) ডাক বা ‘রাহমান’ (নামে) ডাক, তোমরা যে নামেই ডাক সকল সুন্দর নামই তো তাঁর (১৭:১১০); সূরা-১৭, বনী ইসলাঈল, আয়াত-১১০।

রাসূল আল্লাহর উক্ত নির্দেশ অমান্য করে ‘আল্লাহ’ (নামে) না ডেকে সম্রাট আকবারের নাম যুক্ত করে বলেন-
‘আল্লাহু আকবার’। আযানে ‘আল্লাহু আকবার’, সালাতে ‘আল্লাহু আকবার’ গরু-ছাগল যবেহ করার সময় ‘আল্লাহু আকবার’। আবার মানুষ হত্যা করে তাও ‘আল্লাহু আকবার’ বলে।

৩. কুরআন পাঠের আগে আল্লাহ বলতে বলেন (১৬:৯৮) বল,
‘রাব্বি আঊযূবিকা মিন হামাযাতিশ্ শাইয়াতীন, ওয়া আঊযূবিকা রাব্বি আয়ইয়াহ্ দূরূন।
(আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হতে, আমার রব! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি আমার নিকট তাদের উপস্থিতি হতে) সূরা-২৩, মু‘মিনুন, আয়াতঃ ৯৭-৯৮।

রাসূল কুরআন পাঠের আগে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য বলেন-
‘আঊযূবিল্লাহি-মিনাশ্-শায়তানির- রাযীম।
(আমি আল্লাহর নিকট পানাহ্ চাই বিতাড়িত শয়তান হতে)-মেশকাত-৫/২৩০৬।

..

৪. যারা আমার (আল্লাহর) আয়াতসমূহে ঈমান আনে তারা যখন তোমার (রাসূলের) নিকট আসে তখন তুমি (মুহাম্মাদ) তাদেরকে বল,
‘সালামুন আলাইকুম (সূরা-৬, আন‘আম, আয়াত-৫৪)।

রাসূল আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে সালামের প্রত্যাশী ছিলেন-
‘রাসূলের কাছে কেউ আসলে তিনি তাকে বলতেন, চলে যাও এবং এসে বল, ‘আস্সালামু আলাইকুম’ (তিরমিযি ও আবূ দাঊদ);-মেশকাত-৯/৪৪৬৬।

৫. সালাত পড়ার সময় আল্লাহ রাসূলকে বললেন-
‘তোমার সালাতের স্বর উচ্চ করও না এবং অতিশয় ক্ষীণও করও না; এ দুইয়ের মধ্যপথ অবলম্বণ কর (সূরা-১৭, বনী ইসরাঈল, আয়াত-১১০)।

রাসূল আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষা দিলেন-
তোমরা সালাতে স্বর উচ্চ কর, নিরব কর, মধ্যম কর। মহিলারা মনে মনে পড় (প্রমাণ- কাবাসহ বিশ্বের সকল মসজিদে বা অন্য স্থানে যারা সালাত পড়ে।]

৬. আল্লাহ বলেন, ‘অপর কতক লোকে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেছে, তারা এক সৎকর্মের সাথে অপর অসৎকর্ম মিশ্রিত করেছে। … … … তাদের সম্পদ হতে সদকা গ্রহণ কর।
… … তাদের জন্য দু’আ কর। (সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-১০৩)।

রাসূল আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে সদকা আদায়-বন্টন না করে দু‘আ শিক্ষা দিলেন-
রাত্রের শেষার্ধের মধ্য ভাগের দু’আ এবং ফরয সালাতের পরের দু’আ দ্রুত কবূল হয় (তিরমিযি);-৩/১১৬৩।

৭. আল্লাহ বলেন,
ক. ‘হে মু’মিনগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই তার মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় (যাকাত-সদকা) কর (সূরা-২, বাকারা, আয়াত-২৬৭)।
খ. ফসল কর্তনের দিন তার হক (যাকাত-সদকা) প্রদান কর (সূরা-৬, আন‘আম, আয়াত-১৪১)।

রাসূল আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে বলে দিলেন-
যে ব্যক্তি কোন মাল লাভ করেছে তার সে মালে যাকাত দেয় হবে না যাবৎ না তার প্রতি বর্ষ গোজরিয়া যায় (তিরমিযি);-মেশকাত-৪/১৬৯৫।

৮. আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই সদ্কাসমূহ ১. ফকির, ২. মিসকিন, ৩. আমেল, ৪. মন জয়ে, ৫. দাস মুক্তি, ৬. ঋণ মুক্তি, ৭. আল্লাহর পথে ও ৮. পথিকদের জন্য। এ আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ (সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-৬০)।

রাসূল আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে বলে দিলেন-
ক. আত্মীয়দের সদ্কা করার সম্পর্কে রাসূল বলেন, ‘তাদের জন্য দুইগুণ সওয়াব রয়েছে, আত্মীয়তার সওয়াব এবং সদ্কার সওয়াব (মেশকাত-৪/১৮৩৮)। ‘
খ. কোন সদ্কা শ্রেষ্ঠ তা জিজ্ঞাসা করায় রাসূল বলেন, গরীবের কষ্টের সদ্কা, এবং তুমি তোমার সদ্কা আরম্ভ করবে তোমাদের পোষ্যদের ধরে (আবূ দাঊদ);-মেশকাত-৪/১৮৪২। ‘
গ. গরীবের প্রতি সদ্কা করা হলো শুধু সদ্কা আর আত্মীয়ের প্রতি সদ্কা করা হলো সদ্কা ও আত্মীয়তা রক্ষা উভয়ই (আহমদ, তিরমিযি, নাসাঈ, ইবনু মাযাহ ও দারেমী);-মেশকাত-৪/১৮৪৩।

আল্লাহর নির্দেশ অমান্য হাজার হাজার হাদিসের মধ্য থেকে ‘সত্য কখনো গোপন থাকে না’ গ্রন্থের সংকলন।

‘সত্য কখনো গোপন থাকে না’ গ্রন্থে দেখানো হয়েছে বিশ্বের মুসলিমদের সকল বিশ্বাস ও ধর্মানুষ্ঠান কুরাআন বিরোধী।
বই¬টি পড়ুন এবং http://www.facebook.com/truthneverbehidden এই page এ like দিন, Share করুন।

.

Source

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1994321230822030&id=1649306628656827

The Burden of Hadith

By aryan khan fbfd

The Burden of Hadith
——————————

তারা বলে হাদিস ছাড়া কুরআন অচল ।

১ খন্ডের কুরআনকে বুঝতে তারা অক্ষম । তাদের কাছে কোরআন দুর্বোধ্য , কঠিন , অসাড় ।

তারা ডজন কে ডজন খন্ডের হাদিস কিতাব রচনা করেছে এই কুরআন কে বোঝার জন্য ।

তাতেও কি তাদের কুরআন বুঝা হয়েছে ?
তারা তাও অতৃপ্ত ।

তারা হাদিস ব্যাখ্যা করার জন্য হাজার হাজার পাতার শরহে কিতাব রচনা করেছে ।

ইসলাম কি এবার তারা জেনে গেছে ?

না ! এখনো তারা অতৃপ্ত ।

এই হাদিসের অনুসারীরা ইসলামকে দল , মারজা , ফিরকা , মাজহাবে শত শত ভাগে টুকরো করে ফেলেছে । একেক জনের কাছে ইসলাম একেক রঙের । হানাফি , শাফি , মালিকি , হাম্বলি , সালাফি , জাফরি , ইসমাইলি , জাইদি ….. এ যেন এক দাবার ছক । কে জিতবে আর কে হারবে – তাঁর রক্তক্ষয় যুদ্ধ হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ।

অভাব , অশিক্ষা , দুর্নিতি , মারামারি , হানানহানি, অমানবতা, নারী নির্যাতন, মহামারী , অসুখ-বালা এই সমস্ত জাতির ভাগ্য । দাস দাসীর মতো তারা হিন্দু , খ্রিস্টান , ইহুদী এই সমস্ত অবিশ্বাসী জাতির কাছে নিষ্পেষিত , অত্যাচারিত ।

কোথায় তাদের আল্লাহ্‌ ?

আল্লাহ্‌ তো আল্লাহর জায়গাতেই আছেন , কিন্তু কেন আল্লাহ্‌ তাদের উপর নারাজ ?

ইহুদী নয় খ্রিষ্টান নয় বরং তারাই প্রথম আল্লহার চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার উদ্যোগ নেয় । আল্লাহ্‌ মানব জাতির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেনঃ

“….অতএব, তারা যদি সত্যবাদী হয় তবে তার অনুরূপ হাদিস(بِحَدِيثٍ مِثْلِهِ) নিয়ে আসুক। ” (৫২:৩৪ )

মহান আল্লাহর দাবি যে কোরআনই হচ্ছে একমাত্র বিশুদ্ধ হাদিস (৪:৮৭, ৩৯:২৩, ১২:১১১ ) আর মানব রচিত হাদিসগুলো ভ্রান্ত (১২:১১১, ৪৫:৬, ৩১:০৬) ।

সুন্নিরা যারা পৃথিবীর ৯০% মুসলিম জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা দাবি করে যে কুরআন ছাড়াও তাদের কাছে আরো ২ টি কিতাব আছে যা কুরআনের মতোই ১০০% বিশুদ্ধ – আর তা হলো সহিহ বুখারি আর সহিহ মুসলিম ।

মহান আল্লাহ্‌ বলেন = কুরানই একমাত্র গ্রহণযোগ্য বিশুদ্ধ হাদিস । মানব রচিত যে কোন হাদিস পরিত্যাজ্য ।

সুন্নিরা বলে = বুখারি আর মুসলিম ১০০ % বিশুদ্ধ কিতাব । মানব রচিত হাদিস ছাড়া আল্লাহর কোরআন এর কোন দাম নেই । হাদিস ছাড়া কোরআন অর্থহীন , অসাড় ।

মহান আল্লাহ্‌ বনাম সুন্নি/শিয়া !!

কে জিতবে বলে আপনাদের মনে হয় ?

যেদিন থেকে এই সুন্নি শিয়ারা তাদের মানব রচিত হাদিসের কাছে ইসলামকে বেচে দিয়েছে সেই দিন থেকে মহান শাস্তি দাতা আল্লাহর রোষানলে তারা পতিত হয়েছে ।

তাদের সামনে তো মহান আল্লাহর এই ভয়ঙ্কর সাবধানবানী ছিল , তারা কেন তা দেখল না ?

“মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য অসাড় হাদিস (لَهْوَ الْحَدِيثِ) ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।

আর তার কাছে যখন আমার আয়াতসমূহ (آيَاتُنَا) পাঠ করা হয় তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে শুনতে পায়নি, তার দু’কানে যেন বধিরতা; সুতরাং তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।” (৩১:৬-৭)

মহান আল্লাহ্‌ তাঁর কোরআনের আয়াত কে অবজ্ঞা করে মানব রচিত হাদিসের দিকে যারা ছুটে যাবে তাদের জন্য শাস্তির ওয়াদা করেছেন । এই আয়াত তো দিবালোকের মতো স্পষ্ট , তাঁর পরেও কেন তারা বুঝেনা ??

মহান আল্লাহর ব্যাথাময় আকুতি দিয়ে এই পোষ্টের ইতি টানলামঃ

“আমিতো তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি কিতাব যাতে আছে তোমাদেরই স্মরণ রয়েছে , তবুও কি তোমরা বুঝবেনা ?” (২১:১০)

মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে,” মৃতদেহেের দাফন প্রক্রিয়া “

By azmirul islam fbfd

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহিন
—————————————-
মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে,” মৃতদেহেের দাফন
প্রক্রিয়া ”
—————————————————–
৩২সূরা,ছাজ্বদাহ-৭:……… যিনি মাটি হইতে মানব সৃষ্টির সুচনা করিয়াছেন।
** পরে রূহ বা জীবন দেন–১৫/২৯,৩৮/৭২,
** তোমাদের মধ্যে জোড়া সৃজেন–৪২/১১,
** তারপর বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন–২৫/৫৪, এবং,
** বেগবান পানি –৮৬/৬, ও
** তুচ্ছ পানির নির্যাস হইতে তার বংশ বিস্তার করেন–৩২/৮,
যাহা,
** পিঠ ও বুকের মধ্য হইতে নির্গত-৮৬/৭।
** পরে মৃত্যু দেন ও কবরস্থ করেন-৮০/২১।
** উল্লে্খ্য যে, মৃতের জন্য কান্নাকাটি, শোকার্ত হওয়া বা শোকপালন হারাম–৫৭/২২,২৩।
—————–
— কবরস্থের প্রক্রিয়া —
** ৫সূরা,মা’য়িদাহ-৩১: আল্লাহ কাক পাঠাইলেন কি ভাবে ভাইয়ের মৃতদেহ ঢাকা যায় তা দেখানোর জন্য সে মাটি খুঁড়িতে লাগিল……
— যেহেতু,
— জীবিত ও মৃতদের আশ্রয়স্থল যমীন–৭৭/২৫,২৬।
** আর এ বিষয়ে মহান আল্লাহর ওয়াদাও রয়েছে — ২০/৫৫, ৭/২৫, ৭১/১৭,১৮।
— উল্লেখিত আয়াতে সুস্পষ্ট যে,মৃতের জন্য শুধু একটিই কাজ, তা হলো কবরস্থ করা বা মাটি চাপা দেয়া।
— নিয়মটি এত সহজ হওয়ার বিষয়ে মহান আল্লাহ বলেন,
** মানুষের কষ্টের জন্য কুরআন নাযিল করি নাই–২০/২,
** আল্লাহ তোমাদের অসুবিধা করিতে চান না…..৫/৬,
** আল্লাহ তোমাদের সহজ চান, কঠিন চান না–২/১৮৫,
— কেননা,
** মহান আল্লাহ বিশ্ববাসীর প্রতি করুনাময় দয়ালু –২/১৪৩,২৫১।
—————-
— সমাজের প্রচলিত নিয়ম —
# ১|গোসল করানোঃ
মহান আল্লাহর আদেশ ছিল ,জীবিত অবস্থায়…
** পোষাকের –৭৪/৪,
** শরীরের –৫/৬, এবং
**মনের পবিত্রতা অর্জনের-৫/৪১,৭৯/১৮,১৯
এমন কি,
** পোষাক,শরীর ও মন যেন অপবিত্র না হয়, সেরকম চিন্তা,কথা ও কাজ-কর্ম থেকেও দূরে থাকতে বলা হয়েছিল –৭৪/৫।
অতএব,
— মৃতদেহের পাক-পবিত্রতা বা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য যে গোসল দেয়া হয়,তা’তে তার কোন উপকার বা অপকার হয় না।এটা মানব রচিত বিধানে সময়ক্ষেপন ও মৃতের পরিবারের অন্তরে মিথ্যে প্রশান্তির আশ্বাস দেয়া।
——————-
# ২| সাদা কাপড়ে মোড়ানোঃ
মহান আল্লাহর আদেশ–
** বস্ত্র দ্বারা আবৃতের –৭/২৬,
** বিবস্ত্রতা নিষিদ্ধ –৭/২৭
অতএব,
— সাদা রংয়ের নতুন কাপড়ে মুড়িয়ে কবরস্থ এমন বিধান মানুষের তৈরী, যা সময়, অর্থ ও কাপড়ের অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। মৃতদেহের পরিহিত বস্ত্রই কবরস্থের জন্য যথেষ্ট।
— বরং এইঅর্থ বা বস্ত্র,পবিত্র বিধান অনুযায়ী,
** অসহায়, দুঃস্থ বা গরীবকে দান –৫/৮৯,
কেননা,
** বলুন,রর তো হারাম করিয়াছে্েন, যে বিষয়ে কোন বিধান বা প্রমান নাযিল করেন নাই,তা পালন করা –৭/৩৩।
———————-
# ৩| জানাজার নামাজঃ
মহান আল্লাহর আদেশ,
**(হে মূসা)আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণে নামায কায়েম কর–২০/১৪।
— নামাজের উদ্দেশ্য, সময় ও প্রক্রিয়া সুনির্দিষ্ট ভাবে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তুু মৃতের জন্য,জানাজা বা জানাজার নামাজ, এমন শব্দ বা বাক্য যেকোন ভাবেই হোক না কেন, পবিত্র কুরআনে নাই।
— লক্ষ্য করুন,
** পৃথিবীর ১ম মৃতদেহের দাফন প্রক্রিয়ায়, সরাসরি কবর খনন দেখানো হয়েছে,একটি কাকের দ্বারা –৫/২৭-৩১।
— এখানে গোসল,নতুন সাদা কাপড়ে মোড়ানো
বা মৃতকে সামনে রেখে নামাজ, কোনটাই আদেশ করা হয়নি।
— বরং,
** পবিত্র কুরআনে যা বলা হয়নি বা শিখানো হয়নি,সেই না জানা বিষয়ের অনুসরনও হারাম করা হয়েছে –১৭/৩৬।
—————–
# ৪| মৃতের জন্য,পবিত্র কুরআন খতম ও বকশী দেয়াঃ
— মহান আল্লাহর আদেশ,
** পবিত্র কুরআন — পড়ো — ৯৬/১
— বুঝো — ৬/১৫১
— মানো — ৪৭/৩
— সৎকাজ করো –২৩/৫১
— সৎকাজকে স্থায়ী করো-১৮/৪৬
— উল্লেখিত পবিত্র আয়াত দ্বারা স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে যে, পবিত্র কুরআন খতম বা বকশী দেয়ার জন্য নাযিল করা হয়নি।
— কেননা,
** অন্যের দ্বারা খারাপ বা ভাল কোন কর্মই জীবিত বা মৃত কারো জন্যই বিনিময় হিসেবে গ্রহন করা হবে না–২/৪৮,১২৩
— যেমন,
** পরকালে পাপীরা শাস্তির মুখে সন্তান দিতে চাইবে –৭০/১১,
** স্ত্রী ও ভাইকে –৭০/১২,
** আশ্রয়দাতা ও আত্মীয়কে –৭০/১৩,
** এমনকি পৃথিবীর সকলকে, যেন তাকে মুক্তি দেয়া হয় –৭০/১৪,
** কিন্তু, না,(তা গ্রহন করা হবেনা)-৭০/১৫।
— এ জন্য যে,
** প্রত্যেকে স্বীয় কর্মের জন্য দায়ী–৭৪/৩৮।
——————
# ৫| মৃতের জন্য দূ”আঃ
— মহান আল্লাহর আদেশ,
** (ও নবী)তাদের কেহ মরিলে, না দূ’আ করিবে, না কবরে দাঁড়াইবে, কেননা,তারা আল্লাহ ও রাসুলের অবাধ্য হইয়া মারা গিয়াছে –৯/৮৪।
** আল্লাহ ও রাসুলের অবাধ্যদের, পৃথিবীতে নির্নয়ের মাপকাঠি সুস্পষ্ট আয়াত –৫৮/৫।
** পরকালেও তাদের নির্নয়ের মাপকাঠি পবিত্র কুরআন –৩৬/৭০।
–অতএব,
** এসব অবাধ্য আয়াত প্রত্যাখানকারী, শরীককারীরা, যত আপনই হোক না কেন,
তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা নবী ও মু’মিনদের জন্য হারাম –৯/১১৩
— যেহেতু,
** তারা জাহান্নামী –৯/১১৩।
তবে,
** মু’মিন নর-নারীর পাপের জন্য, সকলকে ক্ষমা চাওয়ার আদেশ –৪৭/১৯।
** মহান আল্লাহর এই পবিত্র আদেশের একনিষ্ঠ অনুগামী হয়ে,নবী ইব্রাহিম মু’মিনদের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন–১৪/৪১।
** নবী নূহও সকল মু’মিন নর-নারীর জন্য ক্ষমা চেয়েছেন –৭১/২৮।
** সকল ফিরিশতাও মু’মিনদের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন –৪০/৭।
— আর,
** মহান আল্লাহও মু’মিনদেরকেই ক্ষমা করার ওয়াদা দিয়েছেন — ৫/৯।
— তারাই মু’মিন,
** আল্লাহর নাম উচ্চারিত হলে,যাদের অন্তর কেঁপে উঠে,আয়াত পাঠ হলে,যাদের ঈমান বৃদ্ধি হয় আর তারা দানকারী –৮/২,৩।
** যারা (শুধুমাত্র) আল্লাহর দেয়া সত্যকে মানে–৪৭/৩, এবং
** (শুধুমাত্র) মহান আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব, পবিত্র কুরআনের অনুসরন করে–৬/১৫৫,
** অন্য কোন অভিভাবক বা মানব রচিত কোন কিতাবকে নয় –৭/৩।
— যেহেতু,
** আমরা আল্লাহর এবং আল্লাহর কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন –২/১৫৬,
— সেহেতু,
** আমাদের দাফন প্রক্রিয়া যেন, আমাদের মহান স্রষ্টার পবিত্র বিধান কুরআন অনুযায়ীই হয়–৫/৩১,
** কেননা, মহান আল্লাহ প্রার্থনা গ্রহনকারী–১৪/৪০,
— তাদের জন্য,
** যারা সহজ পথ স্বরূপ –৮১/২৮
** একমাত্র বিধান হিসেবে –৬৫/৫
** পবিত্র কুরআনকেই গ্রহন করে –৭/৩।

— সকল মু’মিন ও মু’মিনা, আসুন আমাদের জীবন-মৃত্যু এবং এর মধ্যবর্তী সময় ও পারলৌকিক সময়ের অনন্ত জীবনকে শাস্তিমুক্ত, আলোকময় ও জান্নাতের অধিকারী করে তুলতে, মহাগ্রন্থ কুরআনের অনুসরন করি,পড়ি,বুঝি,মেনে চলি।
আলহামদুলিল্লাহ।

কথিত আহলে হাদীসের শিরকি আকিদাঃ আহলে হাদীস Vs আহলে কিতাব

By masum ali fbfd

কথিত আহলে হাদীসের শিরকি আকিদাঃ আহলে হাদীস Vs আহলে কিতাব:
——————————-
কথিত আহলে হাদীসগণ রাজতন্ত্রের পূঁজারী পক্ষান্তরে গণতন্ত্রের বিরোধী। গণতান্ত্রিক পন্থায় যারা ইসলামী রাষ্ট্র গঠন করে তাগুতের প্রভুত্ব খতম করে সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর আইন কার্যকর করতে চায় তাদের ঘোর বিরোধী আহলে হাদীস। ইসলামী রাষ্ট্র গঠনে গণতন্ত্রের বিরোধী হলেও তারা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত তাগুত সরকারের বিরোধীতা করে না, যদিও সেই সরকার আল্লাহর আইন পরিত্যাগ করে নিজের মনমত আইন তৈরি করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে। বরং তারা শাসকের আনুগত্য করাকে ফরজ বলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তাদের আনুগত্য করে, যারা হারাম কে হালাল এবং হালাল কে হারামে পরিণত করে। আর এটাই হলো তাদের শিরকি আকিদা।
.
কারণ কোন বাছ-বিচার না করে, নিঃশর্তে এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য- এটি একটি ইবাদত। আর এই আনুগত্য একমাত্র মহান আল্লাহরই নিমিত্ত। অন্য কাউকে এরূপ আনুগত্য করলে শিরক বলে গণ্য হবে। হযরত মূসা )আ( ও হারুন )আ( কে আল্লাহ তা’য়ালা ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের নিটক দাওয়াত দেওয়ার জন্য পাঠালে-
.
فَقَالُوٓا۟ أَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عَٰبِدُونَ
.
তারা বলল, ‘আমরা কি আমাদেরই মত দু’জন লোকের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব? অথচ তাদের সম্প্রদায় আমাদের ইবাদতকারী )দাসত্বকারী(।
)সূরা মু’মিনীনঃ৪৭(
এখান عَٰبِدُونَ বলতে পূঁজা বা উপাসনাকে বুঝানো হয়নি বরং আনুগত্য করাকে বুঝানো হয়েছে। কেননা, মূসা )আ( এর সম্প্রদায়ের লোকজন ফেরাউন ও তার পরিষদবর্গের কোন বাছ-বিচার না করে, নিঃশর্তে এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য করতো, যে আনুগত্য ইবাদতে পরিণত হয়েছিল। যার কারণে আল্লাহ عَٰبِدُونَ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
.
হাদীসে ইরশাদ হয়েছে:
.
عَنْ أُمِّ حُصَيْنٍ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلَّم لاَ طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ في مَعْصِيَةِ الخَالِقِ
.
“উম্মে হুসাইন )রা:( থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ )সা:( ইরশাদ করেছেন: স্রষ্টাকে অমান্য করে সৃষ্টিজগতের কারো আনুগত্য চলবে না”। )জামেউল আহাদীস: হা: ১৩৪০৫, মুয়াত্তা: হা: ১০, মু’জামূল কাবীর: হা: ৩৮১, মুসনাদে শিহাব: হা: ৮৭৩ আবি শাইবা: হা: ৩৩৭১৭, কানযুল উম্মাল: হা: ১৪৮৭৫।(
স্রষ্টাকে অমান্য করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা হারাম। আর এই হারাম আনুগত্যকে কেউ যদি ফরজ বা আবশ্যিক তো দূরের কথা জায়েয হিসাবে পালন করে তাহলে সেই আনুগত্য হবে শিরক।
.
মহান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ
.
وَلَا تَأْكُلُوا۟ مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ ٱسْمُ ٱللَّهِ عَلَيْهِ وَإِنَّهُۥ لَفِسْقٌۗ وَإِنَّ ٱلشَّيَٰطِينَ لَيُوحُونَ إِلَىٰٓ أَوْلِيَآئِهِمْ لِيُجَٰدِلُوكُمْۖ وَإِنْ أَطَعْتُمُوهُمْإِنَّكُمْ لَمُشْرِكُونَ
.
যাতে )যবহ করার সময়( আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তা তোমরা মোটেই খাবে না, তা হচ্ছে পাপাচার, শয়তান তার বন্ধুদেরকে তোমাদের সঙ্গে বিবাদ করার জন্য প্ররোচিত করে; যদি তোমরা তাদের কথা মান্য করে চল তাহলে তোমরা অবশ্যই মুশরিক হয়ে যাবে।
)সূরা আনআমঃ১২১(
এখানে কাফেরদের স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আনুগত্য করাকে শিরক বলা হয়েছে। অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ
.
ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْأَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلْمَسِيحَ ٱبْنَ مَرْيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوٓا۟ إِلَٰهًا وَٰحِدًاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبْحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشْرِكُونَ
.
তারা )আহলে কিতাবরা( আল্লাহকে ছেড়ে নিজেদের পন্ডিত ও ধর্ম যাজকদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে এবং মারইয়ামের পুত্র মসীহকেও। অথচ তাদের প্রতি শুধু এই আদেশ করা হয়েছে যে, তারা শুধুমাত্র এক মা‘বূদের ইবাদাত )দাসত্ব( করবে যিনি ব্যতীত ইলাহ হওয়ার যোগ্য কেহই নয়। তিনি তাদের অংশী স্থির করা হতে পবিত্র।
)সূরা তওবাঃ৩১(ইহুদী-খ্রিষ্টানরা আল্লাহ কে পরিত্যাগ করে তাঁর বান্দাদেরকে রব হিসাবে গ্রহণ করায় আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ
.
قُلْ يَٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَٰبِ تَعَالَوْا۟ إِلَىٰ كَلِمَةٍ سَوَآءٍۭ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ أَلَّا نَعْبُدَ إِلَّا ٱللَّهَ وَلَا نُشْرِكَ بِهِۦ شَيْـًٔا وَلَا يَتَّخِذَ بَعْضُنَا بَعْضًا أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِۚ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَقُولُوا۟ ٱشْهَدُوا۟ بِأَنَّا مُسْلِمُونَ
.
)হে নবী( বলুন, হে আহলে কিতাব! এসো সে কথায় যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে। )তা হলো( আমরা যেন, আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদাত )দাসত্ব( না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে আমরা পরস্পর কেহকে রব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তারা ফিরে যায় তাহলে বলঃ সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম )আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী(
)সূরা আলি ইমরানঃ৬৪(
.
আহলে কিতাবরা যেমন আনুগত্যের ব্যাপারে তাদের তাগুতপন্থী ধর্মযাজক ও সমাজপতিদের রব হিসােব গ্রহণ করত ঠিক তেমনি আহলে হাদীসরা তাদের তাগুতপন্থী শাসকের আনুগত্য করা ফরজ বলে মেনে নিয়ে তাদের রব হিসাবে গ্রহণ করেছে। আর রাসূলুল্লাহ )সা( এর ভাষায় فتلك عبادتهم. এই আনুগত্যই হলো তাদের ইবাদত, যা সুস্পষ্ট শিরক। এজন্য আল্লাহ তা’য়ালা আহলে কিতাবদের যা বলতে বলেছেন আমরা আহলে হাদীসদেরও সে কথায় বলব:
.
হে আহলে হাদীস! এসো সেই বিষয়ে যা আমাদের ও তোমার মধ্যে সুসাদৃশ্য রয়েছে। )তা হলো( আমরা যেন, আল্লাহ ব্যতীত কারও ইবাদত না করি এবং তাঁর সাথে কোন অংশী স্থির না করি এবং আল্লাহকে পরিত্যাগ করে )আল্লাহর নাফরমানী মূলক কোন কাজে কারো আনুগত্য করা ফরজ বলে( আমরা পরস্পর কেহকে রব রূপে গ্রহণ না করি। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরাও তাহলে বলব: তোমরা সাক্ষী থেকো যে, আমরা মুসলিম, আল্লাহর নিকট আত্মসমপর্নকারী।)তাই আল্লাহর নাফরমানী মূলক কোন কাজে আনুগত্য করাকে আমরা ফরজ তো দূরের কথা জায়েয বা বৈধ বলে মনে করি না এবং আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে রব হিসাবে গ্রহণ করি না।

.

Comment

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=436273733473927&id=100012739129179

ধর্ম দুই প্রকার যথা, ১/ চলন্ত ধর্ম ২/ চুড়ান্ত ধর্ম

By badsah munsi fbfd

আপনি কি জানে ধর্ম কয় প্রকার, জানা না থাকলে জেনে নিন। শুনুন ধর্ম দুই প্রকার যথা, ১/ চলন্ত ধর্ম
২/ চুড়ান্ত ধর্ম, চুড়ান্ত ধর্ম সেটা যেটা আল্লাহর বেধে দেওয়া নির্ধারিত ধর্ম, যার সনদ বা দলিল হিসেবে আল্লাহ নবি মুহাম্মদের উপরে কুরআন বিস্তারিত ব্যক্ষা করে পাঠিয়েছেন,
আর চলন্ত ধর্ম হলো, যা পুর্ব হতে বাপ দাদারা করে এসেছে, আর তাদের বিধানের অভাব নেই, যেমন বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ তিরমীজি, মেশকাত দার কুতুনি মুয়াত্তা ফাজায়েলে আমাল বেহেস্তি জেওর মোকসেদ। সহ আরো অগনিত, আছে,, যে গুলোর সনদ আল্লাহ দেয়নি। আফসোস হলো, যখন তাদের বলা হয় তোমরা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, সেই চুড়ান্ত ধর্মের দিকে ফিরে এস, তখন, তারা বলে না, বরং আমরা আমাদের বাপ দাদাদের যে চলন্ত বা প্রচলিত ধর্মের উপর পেয়েছি সেটা উপরই থাকবো,যদিও তাদের বাপ দাদারা কিছু জানতো না জানতো না সরল পথ, (কুরআন) ২:১৭০) আর তারাই কাফের যারা সরল পথ (আল্লাহর আয়াত)মানেনা ২৯:৪৭)

…….

Comments

বাদশা ভাই অসাধারন। আপনার কথা মুসলিম, মুমিন,মুত্তাকী ছাড়া, পীর/বুজর্গ /বাপদাদার ধর্মের অনুসারী তথা ৬/১১২ নং আয়াতের নবীর শত্রুদের তৈরী ৩১/৬ লাহওয়াল হাদিসের অনুসারীরা বুঝবে না।
কারন তাদের সাথে আল্লাহ এবং নবীর কোন সম্পর্কই নেই, ৩/২৮, ৬/১৫৯।

…..

হাদিস ওয়ালাদের মাথাই এ গুলো ঢুকবে না। পারে অযথা তর্ক করতে। সূরা, ১০/১৫

…..

নবী মোহাম্মদ রাসুলের কুরআনের বাহিরে কোন বানী প্রচার করার ক্ষমতা ছিল না ।
১০/১৫;৬/১৫;১৭/৭৩-৭৫;৪২/২৪;৫৩/২-৪;৬৯/৪৩-৪৮;৭২/২৭-২৮।

নবীর সাথে আয়েশার বিবাহকালিন বয়স

By aryan khan fbfd

নবীর সাথে আয়েশার বিবাহকালিন বয়স
————————————————

নবী মুহাম্মদের (সাঃ) এর সাথে মা আয়েশার (রাঃ) এর বাল্য বিবাহের বিষয়টি ইসলামের কটাক্ষকারীদের কাছে যেমন এক প্রিয় হাতিয়ার তেমনি যুক্তিপ্রবন আধুনিক মনা মুসলিমদের জন্য অস্বস্তির কারন । পক্ষান্তরে নীচু মনা মুসলিমদের জন্য নবীর নামে চালান দেওয়া এই অনৈতিক কাজ তাদের কুকর্মের লাইসেন্স স্বরূপ । সহিহ হাদিসের দোহাই দিয়ে বর্নিত হয়েছে যে হযরত আয়েশার বছর যখন ৬/৭ তখন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন এবং ৯ বছরে আয়েশাকে গৃহে নিয়ে যান । তখন নবীর বয়স ছিল ৫৪ বৎসর ।

৫০ ঊর্ধ কোন পুরুষের সাথে আপনার ৬/৭ বৎসরের মেয়ে বা বোনকে কি বিবাহ দিবেন ? আমার বিশ্বাস ১০০% সুশীল মনের কাছ থেকে উত্তর আসবে ‘কক্ষন না ! ’ । ৬/৭/৯ বৎসরের মেয়ে না শারিরীক না মানসিক ভাবে কোন পুরুষের সাথে সংসার করতে সক্ষম । এই বয়স তাদের খেলার বয়স , স্বপ্ন দেখার বয়স , পৃথিবীকে প্রত্যহ নতুন করে চেনা ও জানার বয়স ।

যে কোরআন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিয়েছিলেন ও আজীবন নিজে মেনে পৃথিবীর সামনে নজির স্থাপন করেছিলেন সেই কোরআন বাল্য বিবাহের স্মপূর্ন বিপক্ষে মতামত দিয়েছে । মহান আল্লাহ্ কোরানে এমন মেয়েদের বিবাহ যোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন যারা পূর্ন বয়স্ক , বুদ্ধি সম্মত ও তাদের পারিপার্শিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল । Human Physiology অনুসারে এই সমস্ত বিচক্ষনতা একজন ৬-৯ বছরের মেয়ের ভেতরে থাকার কোন প্রশ্নই উঠেনা ।

বাল্য বিবাহের বিপক্ষে কোরআন থেকে প্রমাণ ঃ

১- কোরান নির্দেশ দেয় যে, যে নারী দ্বীনের মূলনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখে তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া যাবে । ( কুরআন , ৫.৫, ৪.২৫, ৩৩.৪৯, ২৪.৩২ )

দ্বীনের মূল নীতি জানা ও মানার জন্য একজন নারীকে দ্বীন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে । শুধু কোরআনের ২.১৭৭ আয়াত দ্বীনের ১০ টি আর্টিকেলের উল্লেখ রয়েছে , কোরআনের আরোও গভীরে গেলে দ্বীনের আরোও জটিল বিষয় গুলো সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া যায় । ৬/৯ বছরের একজন মেয়ের অপেক্ষা এই পর্যায়ের জ্ঞান রাখা ও বোঝা অসম্ভব । একমাত্র পূর্নমনা ও বুদ্ধিমতী মেয়েরাই এই দ্বীনি জ্ঞান বোঝা ও মানার যোগ্যতা রাখে ।

২- কোরআনের ৪:৬ এ বলা হয়েছে যে যাদের কাছে এতিম মেয়েরা পালিত হয় তারা যেন সেই সমস্ত মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা তখনই করে যখন তারা তাদের কাছে গচ্ছিত সম্পদের হিসাব নিজেই বুঝে নিতে পারার মতো বুদ্ধিমতী হয় । সম্পত্তির হিসাব ও টাকা পয়সার লেনদেন করা বাচ্চাদের কাজ হয় , তার জন্য এক জনকে যথেষ্ট বয়ঃপ্রাপ্ত হতে হয় ।

৩- কুরআনের ৪:৪ এবং ২:২৩৭ এ বলা হয়েছে যে বিবাহের শর্ত মোহরানার লেনদেন সম্পর্কিত জটিলতা সৃষ্টী হলে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে বসে এই বিষয়ে সমঝোতা মূলক সিদ্ধান্তে পৌছাবে । ৬/৯ বছরএর একটা মেয়ের পক্ষে মোহরানার হিসাব নিকাষ তো দুরের কথা , মোহরানা যে কি তার বিন্দুমাত্র জ্ঞান রাখাও অসম্ভব ।

৪- বিবাহোত্তর তালাক সম্পর্কিত জটিলতার ক্ষেত্রে একজন স্ত্রীকে সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলা করার কথা কুরআনের ৪:৩৫, ১২৮ ও ১২৯ আয়াতে বলা হয়েছে । প্রয়োজনে স্ত্রীরা তাদের অভিবাবক বা উকিল কে নিয়োগ করে তার স্বামীর সাথে চলমান সংকটের সুরাহা করতে পারে বলে উক্ত আয়াতগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । এর জন্য একটি নারীর Maturity ও Adultness থাকা বাঞ্ছনীয় ।

৫- নবীর স্ত্রী সংক্রান্ত বেশ কিছু আয়াত কোরআনে পাওয়া যায় যার একটিতেও কোন ইংগিত মিলেনা যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর কোন বালিকা স্ত্রী ছিল । নিচে এরূপ কয়েকটি আয়াত তুলে ধরা হলঃ

ক) “হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।” (৩৩.২৮)

নোটঃ শিশু আয়েশার কোন পার্থিব বাসনা মহান আল্লাহকে রাগান্বিত করতে পারে ? উপরের আয়াত প্রমাণ করে যে নবীর পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তারা পার্থিব জীবনে কোনটি ঠিক ও কোনটি বেঠিক তা বোঝার মতো সামর্থ তাদের ছিল ।

খ) “হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।” (৩৩.৩০)

নোটঃ এই আয়াত নাযিলের সময় নবী পত্নী আয়েশার বয়স খুব বেশী হলে ১২ বছর হতে পারে । ১২ বছরের কিশোরীর জন্য দ্বীগুন শাস্তি ?? মহান আল্লাহর নীতি হচ্ছে তিনি শুধু তাদেরই শাস্তি দেন যারা জেনে শুনে বুঝে ভুল করে । ১৮ বছরের পূর্বে একজন মানুষের এ চেতনা আসেনা ।

গ) “হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।” (৩৩.৫৩)

নোটঃ কুরআন মতে নবী পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত তাই তাদের সাথে পর পুরুষের সাথে যোগাযোগে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে ।

ঘ) “হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (৩৩.৫৯)

নোটঃ এই আয়াত আবারো প্রমাণ করে যে নবী পত্নীরা সবাই বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন ।

আমার বিশ্বাস কোরআনে এই সম্পর্কে উপরের আয়াতগুলো ছাড়াও আরো বহু আয়াত আছে যার দ্বারা আরো দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করা যাবে যে বিবাহ শুধু মাত্র বয়ঃপ্রাপ্ত নারীদের সাথেই সম্পাদিত হতে পারে , নতুবা নয় । মহান আল্লাহ্‌ কুরআনে নিশ্চিত করেছেন যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআনে নাযিল্কৃত সব হুকুম নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন (কুরআন, ৬.৫০,৭.২০৩, ১০.১৫, ৪৬.৯) , তাই নবীর ২৫০ বছর পর লিখিত হাদিসে নবীর সাথে মা আয়েশার বাল্য বিবাহ যে এক নিরেট মিথ্যাচার তা সহজেই অনুমেয় । নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কোরআনের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন এবং মহান আল্লাহ্‌ তাতে সাঁই দিবেন তা অবান্তর ।

যদিও কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ যা বলেছেন ও দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাই মুমিনদের জন্য যথেষ্ট , তার পরেও বিশেষত নবীর সাথে মা আয়েশার বিবাহের বিষয়ে বহু উৎস থেকে দেখা যায় যে মা আয়েশার বয়স ৬/৯ এর চেয়ে অনেক বেশী ছিল। নিচে সংক্ষেপে এই উৎস গুলো থেকে তিনটি তুলে ধরা হলঃ

১- “আবু বকরের সব সন্তানেরা নবীর নবুওয়তের পূর্বে জন্ম নিয়েছে ” (Tarikhu’l-umam wa’l-mamlu’k, Al-Tabari (died 922), Vol. 4, p. 50, Arabic, Dara’l-fikr, Beirut, 1979)

নবী নবুয়ত পান ৬১০ সালে আর নবীর সাথে আয়েশা থাকা শুরু করেন ৬২৪ সালে । উপরের তথ্য অনুসারে আয়েশা ৬১০ সালের পূর্বে জন্ম নেন । তার মানে আয়েশার (রাঃ) বয়স কম সে কম ১৪ ছিল যখন নবী উনাকে তার ঘরে নিয়ে যান ।

২- “ উহুদের যুদ্ধে ১৫ বছরের নিচে কাউকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি ” ( সহিহ বুখারি)

“ নবী পত্নী আয়েশা উহুদের যুদ্ধে অংশ নেন ” ( সহিহ বুখারি)

উহুদের যুদ্ধ ৬২৪/৬২৫ সালে সংঘটিত হয় । উপরের বর্ননা অনুসারে আয়েশার বয়স সেই সময়ে কম সে কম ১৫ ছিল । এই সাল থেকে নবীর সাথে বিবি আয়েশা এক সাথে থাকা শুরু করেন ।

৩- “ আবু বকরের জৈষ্ঠ কন্যা আসমা আয়েশার চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিল ” (Al-Bidayah wa’l-nihayah, Ibn Kathir, Vol. 8, p. 371, Dar al-fikr al-`arabi, Al-jizah, 1933)

“ আসমা ১০০ বছরে ৭৪/৭৫ হিজরিতে মৃত্যুবরন করেন ” (Taqribu’l-tehzib, Ibn Hajar Al-Asqalani, Pg 654, Arabic, Bab fi’l-nisa’, al-harfu’l-alif, Lucknow)

উপরের তথ্য অনুসারে ৭৪ হিজরিতে আয়েশার বড় বোন আসমার বয়স ছিল ১০০ বছর ; আয়েশা তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট হওয়ার তার বয়স ছিল ৯০ বছর । তাহলে ১ম হিজরিতে আয়েশার বয়স ছিল ৯০-৭৪= ১৬ বছর ।
অতএব নবী যখন আয়েশা নিজের গৃহে নিয়ে যান তখন আয়েশার বয়স ছিল ১৭ ।

উপরের ৩ টি রেফারেন্স থেকে আমরা এই তথ্য পাই যে যখন নবী মা আয়েশার (রাঃ) এর সাথে এক সাথে থাকা শুরু করেন তখন মা আয়েশার বয়স সীমা ১৪ থেকে ১৭ এর ভেতরে ছিল ।

একটি সমীক্ষা আল-কোরআন(may ok)

একটি সমীক্ষা

আল-কোরআন

মানবজাতির সার্বজনীন পথনির্দেশক

মোহাম্মাদ আব্দুল মালেক

http://www.astudyofalquranbd.org/

একটি সমীক্ষা

আল-কোরআন

মানবজাতির সার্বজনীন পথনির্দেশক

মোহাম্মাদ আব্দুল মালেক

Details is Salat-হাদিস না থাকলে নামাজ কিভাবে পড়ব? কোরান থেকে দেখিয়ে দিন নামাজ কিভাবে পড়তে হবে?

By aamamun fbfd

হাদিস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র কোরান অনুসরন করার কথা বল্লেই , অবধারিত ভাবেই যে প্রশ্নটির সম্মুখীন হতে হয় তা হলো – হাদিস না থাকলে নামাজ কিভাবে পড়ব? কোরান থেকে দেখিয়ে দিন নামাজ কিভাবে পড়তে হবে?

মজার ব্যাপার হলো বিশ্বের ৫% মুসলমান ও দৈনিক নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে না এবং যারা পড়ে তাদের কয়জন নামাজে কি পড়ছে তা জানে , বলা দুরূহ। সাকুল্যে ১% মুসলমান কোরান বুঝে পড়ে কিনা সন্দেহ। (৫% ও ১% এর পরিসংখ্যানটি আনুমানিক।) তারপরেও নামাজ নিয়ে বিতর্কে এদের উৎসাহে কমতি নেই। কোরানে নামাজ কিভাবে পড়তে হবে তার খুটিনাটি বর্ণনা নেই এটা যেমন সত্য , তেমনি হাদিস থেকে নামাজ শিখতে গেলে বিভ্রান্তি যে আরো বাড়বে সেটা ও তেমন সত্য?

তাহলে নামাজ কিভাবে পড়তে হবে , সেটা বলতে আল্লাহ কি ভুলে গিয়েছেন? (নাউজুবিল্লাহ) নাকি আমাদের কোথাও ভুল হচ্ছে? কোরানে যে ‘সালাতের’ কথা বলা হচ্ছে তার অর্থ কি নামাজ? নাকি এ দুটি ভিন্ন কোন বিষয়? অথবা নামাজ সালাতের একটি ক্ষুদ্রতর অংশ , এমন কি হতে পারে?

কোরানে সালাত নিয়ে কি বলেছে , সেটা জানার আগে চলুন হাদিস নামাজ নিয়ে আমাদের কি শেখাচ্ছে সেটা জেনে নেই-

ওজু

– হজরত আনাস বলেছেন: রসূল প্রতিবার নামাজের আগে ওজু করতেন। (বুখারি)
– হজরত ইবনে আব্বাস বলেছেন: রসূল কিছুক্ষন ঘুমালেন – মসজিদে গেলেন ও ওজু ছাড়া নামাজ পড়লেন। (বুখারি)
– রসূলের সাহাবারা ঘুম থেকে উঠে ওজু না করেই নামাজ পড়তেন। (মুসলিম)

ফরজ গোসল

– হজরত উসমান বলেছেন: যদি কেউ বীর্যপাতের আগেই পুরুষাঙ্গ বের করে নিয়ে আসে , তাহলে সে যেন পুরুষাঙ্গ ধৌত করে ও ওজু করে। (গোসল করা লাগবে না) (বুখারি)
– প্রবেশ করালেই ওজু করা বাধ্যতামূলক। (মুয়াত্তা)
– রসূল বলেছেন: যখন কেউ স্ত্রীলোকের পায়ের মাঝে বসে জোরে ঠেলে , বীর্যপাত হোক বা না হোক গোসল বাধ্যতামূলক। (মুসলিম)
– উব্বি বিন কাব রসূলকে জিজ্ঞাসা করলেন , ” যদি কেউ সহবাস করে কিন্তু বীর্যপাতের আগেই বের হয়ে আসে , তার কি গোসল করা লাগবে? তিনি উত্তর দিলেন , ” তার উচিৎ ওজু করে প্রার্থনা (pray) করা।

খাওয়ার পরে ওজু

– রসূল বলেছেন: আগুনে রান্না করা কোন কিছু খাওয়ার পরেই নুতন করে ওজু কর। (মুসলিম)
– ইবনে আব্বাস বলেছেন , ” রসূলুল্লাহ ছাগলের ঘাড়ের রোস্ট খাওয়ার পরে ওজু না করেই নামাজ পড়লেন। (মুসলিম)

তাকবীর

– হজরত বিলালকে আদেশ করা হয়েছিল আজানে দুই তাকবীর এবং ইকামাতে এক তাকবীর বলার জন্য। (মুসলিম)
– এখন মসজিদে ইকামতের সময় ও ২ তাকবীর বলা হয়। হয়তো বা ইকামতের সময় ২ তাকবীর বলার হাদিস ও আছে। হাদীস অনুসারীরা ভাল বলতে পারবেন।

নামাজে সুরা ও দোয়া পড়া-

– নামাজে সুরা ফাতিহার পরে আর কিছু পড়া লাগবে কি না , এমন প্রশ্নের জবাবে আবু হুরাইরা বল্লেন , যে কোন সুরা পড়াই ভাল , কিন্তু শুধু মাত্র সুরা ফাতিহা পড়াই যথেষ্ঠ। (মুসলিম)
– ফিকহের সকল ইমামগনের মত হলো শধুমাত্র সুরা ফাতিহা পড়লে নামাজ হবে না।

– হজরত উমর “সুভানাকাল্লাহুম্মা—-” জোরে জোরে পড়তেন।(মুসলিম)
– ইমামগণ আমাদের “সুভানাকাল্লাহুম্মা—-” মনে মনে পড়তে বলেছেন।
– হজরত আনাস বলেছেন ,” আমি রসুলুল্লাহ , আবু বকর , উমর এবং উসমানের পিছনে নামাজ পড়েছি। তারা আল-ফাতিহা দিয়ে নামাজ শুরু করেছেন , “সুভানাকাল্লাহুম্মা—-” দিয়ে নয়। (মুসলিম)

– যখন মসজিদে নববিতে মিম্বার তৈরি হলো , রসূল এর উপরে উঠলেন , কিবলার দিকে ফিরলেন , তাকবীর দিলেন , লোকজন সারিবদ্ধ হলো। আবৃত্তির (recitation) পরে উনি হাটুর উপরে রূকুতে গেলেন , তারপর মিম্বার থেকে নেমে আসলেন , মাটিতে সিজদা দিলেন , তারপর আবার মিম্বারে উঠলেন। তিনি আবারো রূকুতে গেলেন এবং তারপরে মাটিতে নেমে এসে সিজদা দিলেন। (বুখারি) (এমনভাবে নামাজ পড়ার কথা আগে কখনো শুনিনি বা দেখিনি , আপনারা শুনেছেন?)

– রসুলুল্লাহ তার মেয়ে ‘জয়নাবে’র ছোট্ট মেয়ে ‘আমামা’কে তুলে নিয়ে (কোলে নাকি ঘাড়ে – জানি না) নামাজ পড়া শুরু করলেন। যখন সিজদায় গেলেন , তিনি তাকে মাটিতে নামিয়ে রাখলেন এবং যখন উঠলেন তাকে (‘আমামা’) আবার তুলে নিলেন। (বুখারি)

– যদি কেউ নামাজীর সামনে দিয়ে যায় , তাকে থামাও। যদি সে না থামে , তাকে হত্যা কর কারন সে শয়তান। (বুখারি)
-আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেন , ” আমি একটি মেয়ে-গাধায় চড়ে মিনায় গেলাম। রসুলুল্লাহ নামাজ পড়াচ্ছিলেন। আমি কয়েকজন নামাজির সামনে দিয়ে যেয়ে গাধার পিঠ থেকে নামলাম ও নামাজে যোগ দিলাম। কেউ প্রতিবাদ করেনি।(বুখারি)
– হজরত সাদ বিন আবি ওয়াকাস নামাজের চলাকালীন সামনে দিয়ে যেতেন। (মুয়াত্তা)
– নামাজ চলাকালীন কেউ সামনে দিয়ে গেলে নামাজের ক্ষতি হয় না। (মুয়াত্তা)
– রসুলুল্লাহ বলেছেন , ” সামনে দিয়ে স্ত্রীলোক , গাধা বা কুকুর গেলে নামাজ ভেঙ্গে যায়। (মুসলিম)
– হজরত আয়েশা বলেছেন ,”তোমরা (হাদিস বর্ণনাকারীগণ) আমাদেরকে গাধা ও কুকুর বানিয়েছ। আল্লাহর কসম! রসুলুল্লাহ যখন নামাজ পড়তেন , তখন আমি তার সামনে কম্বলের উপরে শুয়ে থাকতাম।(মুসলিম)

– বুখারিতে ৪ টি হাদিস আছে যেখানে বলা হয়েছে: রসূল রূকুতে যাওয়ার আগে ও আত্তাহিয়াতু পড়ে ওঠার সময় কান পর্যন্ত দুই হাত তুলতেন। (আমাদের দেশের মুসলমানেরা কেন হাত তোলে না? তাহলে কি তারা বুখারির হাদিস মানে না?)

-রসূলুল্লাহ কোন ওজর ছাড়াই বা ভ্রমন না করলেও যোহর ও আছর এবং মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে পড়তেন। (মুয়াত্তা , মুসলিম)

– মুয়াবিয়া বিন হাকাম রসূলের সাথে নামাজ পড়ছিলেন। এক নামাজী হাঁচি দিলেন এবং আমি প্রথামতো “ইয়ারহামাকাল্লাহ”বল্লাম। নামাজ শেষে রসূল বল্লেন ,”নামাজের ভিতরে মনুষ্য কথার অনুমতি নেই। (মুসলিম)
– একদা নামাজ পড়া অবস্থায় রসূলের সামনে শয়তান আসল এবং তিনি ৩ বার বল্লেন , “তোমার উপরে আল্লাহর অভিশাপ”। (মুসলিম) (হতে পারে , রসূলের কথা মনুষ্য কথা নয়)

– বৃষ্টির জন্য দো’য়া করার সময় ছাড়া আর কোন সময় রসূল হাত তুলতেন না। (বুখারি)
– যে কোন দো’য়া করার সময় তিনি হাত তুলতেন।(সুত্র এত বেশি যে উল্লেখ করলাম না)

– রসুলুল্লাহ জুতা পায়ে দিয়ে নামাজ পড়তেন। (বুখারি , মুসলিম, নিসায়ি)

– সাহাবারা তীরবিদ্ধ জায়গা থেকে রক্ত পড়তে থাকা অবস্থায় নামাজ পড়তেন। (বুখারি , মুসলিম , ইবনে মাজাহ ও আরো অনেকে)
– শরীরের কোন জায়গা থেকে রক্ত বের হলে নামাজ ও ওজু দুটোই বাতিল হয়ে যায়। ( বুখারি , মুসলিম , ইবনে মাজাহ ও আরো অনেকে)

– হজরত আনাস বলেছেন , “রসূল পুরো নামাজ খুবি অল্প সময়ে পড়তেন। (মুসলিম)
– রসূল সেই ইমামদের বকতেন , যারা লম্বা সময় ধরে নামাজ পড়াতেন। (মুসলিম)
– হজরত আনাস বলেছেন ,” রসূল রুকুর পরে এত দীর্ঘ সময় স্থীর ভাবে দাড়িয়ে থাকতেন যে মনে হোত তিনি সামনে বাড়তে ভুলে গেছেন। সিজদার সময়ও একি অবস্থা হোত। (মুসলিম)
– আবু সায়িদ খাদরি বর্ণনা করেছেন: রসুলুল্লাহ এত দীর্ঘ সময় ধরে নামাজ পড়াতেন যে ধরা যাক দুপুরের নামাজ শুরু হলো। এক লোক বাকী কবরস্থানে হেটে গেল , বাড়িতে ফিরে এসে ওজু করে মসজিদে গিয়ে দেখতে পাবে তখনো তিনি প্রথম রাকাত পড়াচ্ছেন। (মুসলিম)

এছাড়াও বুখারি ও মুসলিমে নামাজের বিভিন্ন পয়েন্টে কোন দো’য়া পড়তে হবে , তা নিয়ে পরস্পর বিরোধী অসংখ্য হাদিস পাওয়া যায়।

এই হলো হাদিস থেকে নামাজ শিক্ষা।

১) ঘুমের মধ্যে নাক ডাকলে , আপনার ওজু করা লাগবে না। দুঃখিত , ওজু করা লাগবে।
২) রান্না করা খাবার খেলে ওজু ভেঙ্গে যায় কিন্তু ছগলের রোষ্ট খেলে ওজু ভাঙ্গে না।
৩) রক্ত পড়লে নামাজ ও ওজু বাতিল হয় না। দুঃখিত , বাতিল হয়।
৪) বীর্যপাত না হলে গোসল লাগবে না। দুঃখিত , লাগবে।
৫) আপনি জোহর ও আছর এবং মাগরিব ও এশার নামাজ একত্রে পড়তে পারবেন। দুঃখিত , একত্রে পড়তে পারবেন না।
৬) দো’য়ার সময় হাত তুলুন। না না , দো’য়ার সময় হাত তুলবেন না।
৭) রুকুতে যাওয়ার আগে ঘাড় পর্যন্ত দুই হাত তুলুন। না না , হাত তুলবেন না।
৮) বাচ্চাকে কোলে নিয়ে নামাজ পড়তে পারেন। আপনি এমনটি করতে পারেন না।(ফিকহ)
৯) নামাজের সময় ঈমাম সিড়ি বেয়ে ওঠা নামা করতে পারে। আদৌ নয়।(ফিকহ)
১০) নামাজে শুধুমাত্র সুরা ফাতিহা পড়াই যথেষ্ট। দুঃখিত , যথেষ্ট নয়।
১১) নামাজের শুরুতে রসূল ‘সুভানাকাল্লাহুম্মা’ পড়া যায়। না না , যায় না।
১২) নামাজের ভিতরে আপনি শয়তান বা অন্য কাউকে অভিশাপ দিতে পারেন। না না , কখনো না।
১৩) আত্তাহিয়াতুর পরে যে কোন দো’য়া পড়তে পারেন। না , শুধুমাত্র এইটা আর এইটা।
১৪) নামাজের সময় যেই সামনে দিয়ে যাবে , মানা করলে না শুনলে তাকে হত্যা কর। শুধুমাত্র হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও সাদ বিন আবি ওয়াকাসকে ছাড়া।
১৫) স্ত্রীলোক , গাধা ও কুকুর সামনে দিয়ে গেলে নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। তবে তোমার স্ত্রী নামাজের সময় তোমার সামনে জায়নামাজে শুয়ে থাকলেও নামাজ বাতিল হবে না।

সহীহ হাদীস অমান্য না করে আপনি কিভাবে নামাজ পড়বেন , সেটা আপনিই ঠিক করুন। আমার পক্ষে এই ধাঁধার সমাধান করা দুরূহ ব্যাপার।

৬:১১৪-১১৫. তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন বিচারক অনুসন্ধান করব, অথচ তিনিই তোমাদের প্রতি বিস্তারিত গ্রন্থ অবতীর্ন করেছেন? আমি যাদেরকে গ্রন্থ প্রদান করেছি, তারা নিশ্চিত জানে যে, এটি আপনার প্রতি পালকের পক্ষ থেকে সত্যসহ অবর্তীর্ন হয়েছে। অতএব, আপনি সংশয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।

আপনার প্রতিপালকের বাক্য পূর্ণ সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী।

নামাজ ফারসি শব্দ। কোরানে বর্ণীত আকিমুস সালাতের অর্থ ব্যাপক হলেও আমরা সাধারনত সালাত বলতে নামাজ পড়াকেই বুঝে থাকি।কোরানে ৬৭ বার সালাতের উল্লেখ করা হয়েছে। এর পরে ও সালাতের খুটিনাটির খোঁজে যারা কোরান ছাড়া অন্য গ্রন্থের স্মরনাপন্ন হয় , তারা কোরানে বর্নীত সেই ইহুদিদের কথাই মনে করিয়ে দেয় , যাদেরকে গরু জবাই করতে বলা হয়েছিল। যে কোন একটি গরু জবাই দিলেই যখন সহজে কাজ সমাধা হয়ে যেত , সেখানে খুটিনাটি জানতে চেয়ে তারা গরু খোঁজার কাজটি কঠিন করে তুলেছিল।

২:৬৭-৭০ যখন মূসা (আঃ) স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের একটি গরু জবাই করতে বলেছেন। তারা বলল, তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ? মূসা (আঃ) বললেন, মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি।

তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা হয়। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলছেন, সেটা হবে একটা গাভী, যা বৃদ্ধ নয় এবং কুমারীও নয়-বার্ধক্য ও যৌবনের মাঝামাঝি বয়সের। এখন আদিষ্ট কাজ করে ফেল।

তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রঙ কিরূপ হবে? মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী-যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে।

তারা বলল, আপনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন-তিনি বলে দিন যে, সেটা কিরূপ? কেননা, গরু আমাদের কাছে সাদৃশ্যশীল মনে হয়। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা অবশ্যই পথপ্রাপ্ত হব। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেন যে, এ গাভী ভূকর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়-হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত।

একে একে কোরান থেকে নিম্ন লিখিত বিষয় নিয়ে লিখব –

১) সালাতের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য
২) সালাতের ইতিহাস
৩) সালাত পূর্ব করনীয়
৪) সালাতে অঙ্গবিন্যাস
৫) সালাতে কি বলতে হবে?
৬) দৈনিক সালাতের সংখ্যা
৭) কয় রাকাত?
৮) জুমা বারের সালাত
৯) আমার সালাত

১) সালাতের প্রয়োজনীয়তা ও উদ্দেশ্য

আল্লাহকে স্মরন করার জন্যই সালাত।

২০:১৪ আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।

সালাত অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে।
২৯:৪৫ আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং সালাত কায়েম করুন। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর।

এই আয়াত থেকে আমরা আরো জানতে পারি – আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। সালাত আল্লাহকে স্মরন করার একটা উপায় মাত্র। সালাত ছাড়াও আল্লাহকে স্মরন করা যায় এবং সকলসময় সেটাই করতে বলা হয়েছে কোরানে।
৪:১০৩ অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন সালাত ঠিক করে পড়। নিশ্চয় সালাত মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
সালাত পরকালের জন্য সর্বোত্তম বিনিয়োগ
৩৫:২৯ যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না।
সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাইতে বলা হয়েছে।
২:৪৫ ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর সালাতের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।
২:১৫৩ হে মুমিন গন! তোমরা ধৈর্য্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চিতই আল্লাহ ধৈর্য্যশীলদের সাথে রয়েছেন।
অর্থাৎ মানুষের স্ব স্ব সত্তাই আল্লাহ। এ ছাড়া স্রষ্টার যে ধারনা সকল ধর্ম প্রচার করে তা মূলত স্রষ্টা বা আল্লাহ নয়।
এবার বলুন এ সকল পাগলকে কোন পাগলা গরাদে পাঠানো উচিত!
২) সালাতের ইতিহাস
সালাতের ইতিহাস অনেক পুরনো। কোরান থেকে যেটা জানা যায় ইব্রাহিম নবীর সময় থেকে শুরু করে পরবর্তি সকল নবী রসূলের আমলে সালাত প্রচলিত ছিল। সময়ের সাথে সাথে মানুষ সঠিক সালাত ভুলে গিয়েছিল বা বিকৃত করে ফেলেছিল।
সালাত ১৪০০ বছর আগের নুতন কোন আবিস্কার নয়। কোরান থেকেই জানতে পারি , রসূল মুহাম্মদের সমসাময়িক কাফের মুশরিকরা ও সালাত পালন করত। তবে তাদের প্রধান উপাস্য আল্লাহর সাথে সাথে অন্যান্য শরীক আলাত , মানাত ও উজ্জার উপাসনা ও করত। তাদের বিশ্বাস ছিল এই শরীকরা তাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তি করবে , তাদের জন্য সুপারিশ করবে। রসূলকে দিয়ে আল্লাহ সালাতকে শরীকমুক্ত করে শুধুমাত্র আল্লাহ বন্দনা ও আল্লাহর স্মরনে সঠিক সালাত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।
শয়তান তো আর হাত গুটিয়ে বসে নেই। তাই তো দেখতে পাই আজকের মুসলমানেরা সালাতে আল্লাহর সাথে সাথে অন্যান্য শরিকদের স্মরন করে , তাদের জন্য প্রার্থনা করে। না করলে নাকি সালাতই হবে না। এদের বিশ্বাস এই শরীকরা তাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তি করবে , আল্লাহর কাছে তাদের জন্য সুপারিশ করবে। শরীকদের গ্রন্থ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আল্লাহর কিতাব অনুসরনের কথা বল্লে , গালাগালির নহর বয়ে যায় , শারীরিক নিগ্রহের ধামকি দেয় , কন্ঠরোধের হুমকিই শুধু দেয় না বাস্তবেই কন্ঠরোধ করে।
ইব্রাহিমের সালাত।
২:১২৫ যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের ( مُصَلًّى) জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।
মূসা ও হারুনের সালাত।
১০:৮৭ আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং সালাত কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর।
ঈসার সালাত।
১৯:৩১ আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।
শুয়েবের সালাত।
১১:৮৭ তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার সালাত কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।
জাকারিয়ার সালাত।
৩:৩৯ যখন তিনি কামরার ভেতরে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়া সম্পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।
বণী ইস্রাইলের সালাত।
২:৪৩ আর সালাত কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং সালাতে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।
লুকমানের সালাত।
৩১:১৭ হে বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।
রসূলের সমসাময়িক কাফেরদের সালাত।
৮:৩৫ আর কা’বার নিকট তাদের সালাত শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কোন কিছুই ছিল না। অতএব, এবার নিজেদের কৃত কুফরীর আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।
আল্লাহর নিকটবর্তি হওয়ার আশায় শরীকদের জন্য উপাসনা।
৩৯:৩ জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
৩) সালাত পূর্ব করনীয়
৪:১০৩ …….. নিশ্চয় সালাত বিশ্বাসীদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
আল্লাহর স্মরন সর্বশ্রেষ্ঠ। বাস্তবে আমরা জীবণ ও জীবিকার অন্বেষনে এমনই ব্যাস্ত হয়ে পড়ি যে আল্লাহকে সকল সময় স্মরন করার কথা ভুলেই যাই। সকল কাজ কাম বাদ দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সালাত ফরজ হওয়ায় আল্লাহকে স্মরনের কাজটি বিশ্বাসীদের জন্য সহজ হয়ে গিয়েছে।
সালাত একটি আনুষ্ঠানিক ধর্মীয় আচার। সালাতের পূর্বে ও সালাত চলাকালিন কিছু শর্ত পালন আবশ্যকীয়। এই শর্ত মানসিক ও শারিরীক উভয় প্রকারের।
সচেতন মন
যেহেতু বিশ্বাসীরা সালাতের মাধ্যমে আল্লাহকে আল্লাহকে স্মরন করে ও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে , সে কারনে সালাতে কি বলছে সেটা বোঝা আবশ্যকীয় করা হয়েছে। একারনে আমরা দেখতে পাই নেশাগ্রস্থ অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তি হতে নিষেধ করা হয়েছে।
৪:৪৩ হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ, ………
বিনয়ী বিনীত
২৩:১-২ মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের সালাতে বিনয়-নম্র।
লোক দেখানো সালাত
১০৭:৪-৬ অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর, যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর (না বুঝে পড়ে); যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে।
পরিধেয় বস্ত্র
৭:৩১ হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক সালাতের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও,………
জুতা
২০:১২ আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ।
ওজু – গোসল – তায়াম্মুম
৫:৬ হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং পদযুগল গিটসহ। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে সারা দেহ পবিত্র করে নাও এবং যদি তোমরা রুগ্ন হও, অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে অথবা তোমরা স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর, অতঃপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-অর্থাৎ, স্বীয় মুখ-মন্ডল ও হস্তদ্বয় মাটি দ্বারা মুছে ফেল। আল্লাহ তোমাদেরকে অসুবিধায় ফেলতে চান না; কিন্তু তোমাদেরকে পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি স্বীয় নেয়ামত পূর্ণ করতে চান-যাতে তোমরা কৃতজ্ঞাতা প্রকাশ কর।
৪:৪৩ হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ, আর (নামাযের কাছে যেও না) ফরয গোসলের আবস্থায়ও যতক্ষণ না গোসল করে নাও। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাক কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে কিংবা নারী গমন করে থাকে, কিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল।
কিবলা
২:১৪২ এখন নির্বোধেরা বলবে, কিসে মুসলমানদের ফিরিয়ে দিল তাদের ঐ কেবলা থেকে, যার উপর তারা ছিল? আপনি বলুনঃ পূর্ব ও পশ্চিম আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা সরল পথে চালান।

২:১৪৪ নিশ্চয়ই আমি আপনাকে বার বার আকাশের দিকে তাকাতে দেখি। অতএব, অবশ্যই আমি আপনাকে সে কেবলার দিকেই ঘুরিয়ে দেব যাকে আপনি পছন্দ করেন। এখন আপনি মসজিদুল-হারামের দিকে মুখ করুন এবং তোমরা যেখানেই থাক, সেদিকে মুখ কর। যারা আহলে-কিতাব, তারা অবশ্যই জানে যে, এটাই ঠিক পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আল্লাহ বেখবর নন, সে সমস্ত কর্ম সম্পর্কে যা তারা করে।

২:১৭৭ সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।

সালাতে অঙ্গবিন্যাস

কোরানে সালাত ব্যাপক অর্থে ব্যাবহৃত হলেও এই পোস্টে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক সালাত যেটাকে আমরা নামাজ বলে জানি , সেটার ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকব।

আনুষ্ঠানিক সালাতের উদাহরন আমরা দেখতে পাই ৪:১০২ আয়াতে। কোরানের আয়াতগুলো থেকে আমরা সালাতে ৩ টি পজিশান বা শারীরিক অবস্থানের কথা জানতে পারি। দাড়ানো , রুকু ও সেজদা।

৪:১০২ নং আয়াত থেকে এটা পরিস্কার , সালাত শুরু হবে দাড়ানোর মাধ্যমে এবং শেষ হবে সেজদার মধ্য দিয়ে।

দাড়ানো

২:২৩৮ সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।

রুকু

২:৪৩ আর নামায কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং সালাতে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।( যেটাকে আমরা রুকু বলে জানি وَارْكَعُواْ مَعَ الرَّاكِعِينَ)

৯:১১২ তারা তওবাকারী, এবাদতকারী, শোকরগোযার, (দুনিয়ার সাথে) সম্পর্কচ্ছেদকারী, রুকু ও সিজদা আদায়কারী, সৎকাজের আদেশ দানকারী ও মন্দ কাজ থেকে নিবৃতকারী এবং আল্লাহর দেওয়া সীমাসমূহের হেফাযতকারী। বস্তুতঃ সুসংবাদ দাও ঈমানদারদেরকে।

সেজদা

৪:১০২ যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়। কাফেররা চায় যে, তোমরা কোন রূপে অসতর্ক থাক, যাতে তারা একযোগে তোমাদেরকে আক্রমণ করে বসে। যদি বৃষ্টির কারণে তোমাদের কষ্ট হয় অথবা তোমরা অসুস্থ হও তবে স্বীয় অস্ত্র পরিত্যাগ করায় তোমাদের কোন গোনাহ নেই এবং সাথে নিয়ে নাও তোমাদের আত্নরক্ষার অস্ত্র। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদের জন্যে অপমানকর শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।

সালাতে কি বলতে হবে?

সালাতে আমরা যেটাই বলিনা কেন , সেটা বুঝে বলতে হবে এবং মধ্যম স্বরে বলতে হবে। মনে মনে ও না বা চেচিয়ে পাড়া মাথায় করাও না। এটাই কোরানিক নির্দেশ। ১৭:১১০ আয়াত যেহেতু সালাত সংক্রান্ত , সেহেতু ১৭:১১১ আয়াতেও সালাতের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেই ধরে নেয়া যেতে পারে। সালাতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর স্মরন করি , তার সাহায্য প্রার্থনা করি , তার প্রশংসা করি সর্বপরি তার উপাসনা করি। সুরা ফাতেহার ৭ টি আয়াতের মাধ্যমে এগুলোর সবি করা সম্ভব। ধারনা করা হয় ১৫:৮৭ আয়াতে সুরা ফাতেহার কথাই বলা হয়েছে (আল্লাহই ভাল জানেন)। আল্লাহ কোরানে তার পবিত্রতা ঘোষনা করতে বলছেন , যেটা আমরা করে থাকি রুকু ও সেজদাতে।

সালাতে মধ্যম স্বর

১৭:১১০ বলুনঃ আল্লাহ বলে আহবান কর কিংবা রহমান বলে, যে নামেই আহবান কর না কেন, সব সুন্দর নাম তাঁরই। আপনি নিজের নামায আদায়কালে স্বর উচ্চগ্রাসে নিয়ে গিয়ে পড়বেন না এবং নিঃশব্দেও পড়বেন না। এতদুভয়ের মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন।

তাকবীর (আল্লাহু আকবর) বা আল্লাহর মহত্ব বর্ণনা করা

১৭:১১১ বলুনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি না কোন সন্তান রাখেন, না তাঁর সার্বভৌমত্বে কোন শরীক আছে এবং যিনি দুর্দশাগ্রস্ত হন না, যে কারণে তাঁর কোন সাহয্যকারীর প্রয়োজন হতে পারে। সুতরাং আপনি স-সম্ভ্রমে তাঁর মাহাত্ন (وَكَبِّرْهُ تَكْبِيرًا) বর্ণনা করতে থাকুন।

কোরান থেকে পাঠ করা

২৯:৪৫ আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামায কায়েম করুন।

সূরা ফাতেহা

১৫:৮৭আমি আপনাকে সাতটি বার বার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কোরআন দিয়েছি।

রুকু ও সেজদাতে তাসবীহ

৫৬:৭৪
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামে পবিত্রতা ঘোষণা করুন।

৮৭:১
سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى
আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন

৫০:৪০ রাত্রির কিছু অংশে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন এবং নামাযের পশ্চাতেও (السُّجُودِ)।

শাহাদা

৩:১৮ আল্লাহ সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তাঁকে ছাড়া আর কোন উপাস্য নেই। ফেরেশতাগণ এবং ন্যায়নিষ্ঠ জ্ঞানীগণও সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।

দৈনিক সালাতের সংখ্যা

কোরানে পরিস্কারভাবে বলা নেই , দৈনিক কয়বার সালাতের জন্য দাড়ানো লাগবে। কেন কোরানে দৈনিক সালাতের সংখ্যার পরিস্কার উল্লেখ নেই , তার গূঢ় কারন আল্লাহই ভাল জানেন। যেহেতু কোরানে দৈনিক সালাতের সংখ্যার পরিস্কার উল্লেখ নেই , সেহেতু ধরে নেয়া যায় দৈনিক সালাতের সংখ্যা নির্ধারনের ভার আল্লাহ মুত্তাকিনদের বুঝের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন।

একারনে আমরা দেখতে পাই , কেউ বলছেন কোরানে দৈনিক ৫ বার , কেউ বা দৈনিক ৩ বার , আবার কেউ বা দৈনিক ২ বার সালাতের কথা বলা হয়েছে বলে দাবি করছেন।

যারা দৈনিক ২বার সালাতের কথা বলেন তাদের যুক্তি হলো , কোরানে ২ টি সালাতের নাম খুজে পাওয়া যায় – ‘সালাতুল ফজর’ এবং ‘সালাতুল ঈশা’। যোহর , আছর ও মাগরিব নামে কোন সালাতের কথা কোরানে বলা নেই।

যারা দৈনিক ৩/৫ বার সালাতের কথা বলেন তাদের যুক্তি হলো , কোরানে ২:২৩৮
حَافِظُواْ عَلَى الصَّلَوَاتِ ‘সালাওয়াত’ সংরক্ষনের কথা বলা হয়েছে। ‘সালাওয়াত’ সালাতের বহুবচন অর্থাৎ তিন বা ততোধিক সালাত। এর সপক্ষে এরা আরো একটি সালাতের কথা বলেন , যার নাম ‘সালাতুল উস্তা’। ‘সালাতুল উস্তা’ অর্থ কেউ করেছেন মধ্যবর্তী সালাত , আর দৈনিক ২বার সালাতের সমর্থকরা করেছেন উত্তম সালাত , যেটা ফজর বা ঈশাকেই নির্দেশ করে।

দৈনিক ২বার সালাত

24:58 হে মুমিনগণ! তোমাদের দাসদাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়নি তারা যেন তিন সময়ে তোমাদের কাছে অনুমতি গ্রহণ করে, ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরে যখন তোমরা বস্ত্র খুলে রাখ এবং এশার নামাযের পর। এই তিন সময় তোমাদের দেহ খোলার সময়। এ সময়ের পর তোমাদের ও তাদের জন্যে কোন দোষ নেই। তোমাদের একে অপরের কাছে তো যাতায়াত করতেই হয়, এমনি ভাবে আল্লাহ তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ বিবৃত করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

11:114 আর দিনের দুই প্রান্তেই নামায ঠিক রাখবে, এবং রাতের প্রান্তভাগে পূর্ণ কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়, যারা স্মরণ রাখে তাদের জন্য এটি এক মহা স্মারক।

দৈনিক ৩ বার সালাত

2:238 সমস্ত নামাযের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাযের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও।

দৈনিক ৫ বার সালাত

17:78 সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন এবং ফজরের কোরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কোরআন পাঠ মুখোমুখি হয়।

(1) The Dawn Prayer (Fajr in Arabic) given in 11:114, 24:58

(2) The Noon Prayer (Zuher in Arabic) , given in 17:78

(3) The Afternoon Prayer (Asr in Arabic), given in 2:238

(4) The sunset Prayer (Maghrib in Arabic), given in 11:114

(5) The Night Prayer (Isha in Arabic), given in 24:58

কয় রাকাত?

কোরানে রাকাতের কথা বলা নেই। তবে যদি আমরা ৪:১০২ নং আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করি , তাহলে সালাতে ২ টি রাকাত আছে বলেই প্রতীয়মান হয়।

৪:১০২ যখন আপনি তাদের মধ্যে থাকেন, অতঃপর নামাযে দাঁড়ান, তখন যেন একদল দাঁড়ায় আপনার সাথে এবং তারা যেন স্বীয় অস্ত্র সাথে নেয়। অতঃপর যখন তারা সেজদা সম্পন্ন করে, তখন আপনার কাছ থেকে যেন সরে যায় এবং অন্য দল যেন আসে, যারা নামায পড়েনি। অতঃপর তারা যেন আপনার সাথে নামায পড়ে এবং আত্মরক্ষার হাতিয়ার সাথে নেয়।
প্রথমেই আমি সকলকে সতর্ক করে দিতে চাই যে , নামাজ সম্পর্কে আমার এই বক্তব্য, সম্পুর্নরুপে আমার নিজস্ব। কেউ যদি আমার লেখা পড়ে বিভ্রান্ত হন ,তবে তা নিজ দায়িত্বে হবেন, আমি কারো দায়িত্ব নিতে রাজি নই।)

আমি এমন কোন গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তি নই যে আমি কিভাবে নামাজ পড়ি সেটা অন্যদের জানা আবশ্যক বা অন্যদের জন্য অনুকরনীয়। আমি মনে করি কে কিভাবে নামাজ পড়বে এবং নামাজের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরন করবে ও আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে , সেটা যার যার নিজস্ব বিষয়। নামাজ নিয়ে দ্বিচারিতার অভিযোগ খন্ডন ও জিয়াউদ্দিন সাহেবের সাথে ডিলের কারনেই আমার নামাজ নিয়ে এই লেখা।

আমি প্রচলিত নিয়মেই কোরানের আলোকে কিছু সংশোধনীসহ দৈনিক ৫ বার ফরজ নামাজ পড়ি। কোন সুন্নত নামাজ পড়ি না। ফরজ নামাজের প্রচলিত নিয়ম বা রাকাত সংখ্যা তো কোরানে নেই। তাহলে কোরান বহির্ভূত পদ্ধতিতে নামাজ পড়ে আমি দ্বিচারিতা বা ভন্ডামি করছি কিনা? না , করছি না। কারন-

১) কোরানে যেহেতু নামাজ পড়ার সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা রাকাত সংখ্যার উল্লেখ নেই , সেহেতু আমি মনে করি আল্লাহ আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন যার যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে নামাজ পড়ার। নামাজের মধ্যে শিস না দিলে ও তালি না বাজালেই হলো (৮:৩৫)।

২) কোরান অনুযায়ী নামাজের যে ৩ অঙ্গভঙ্গির কথা বলা হয়েছে – দাড়ানো , রূকু ও সিজদা , এর সবগুলোই আমরা প্রচলিত নামাজের সময় করে থাকি। সুতরাং প্রচলিত নিয়মে নামাজ পড়ে আমি কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু করছি না।

৩) আমি নামাজ শিখেছি বাপ মার নামাজ পড়া দেখে ও নামাজের খুটি নাটি জেনেছি সম্ভবত আমাদের বাড়িতে যে মৌলভি সাহেব লজিং থাকতেন , তার কাছে। আমাদের দেশে অধিকাংশ লোক এভাবেই নামাজ পড়া শেখে। এটাকেই বলে ‘বিল মারুফ’ বা সমাজে প্রচলিত , অনুমোদিত ও গৃহীত কোন নিয়ম। ভিন্ন ভিন্ন সমাজের জন্য ‘বিল মারুফ’ সাধারনত ভিন্ন হয়ে থাকে। কোরানে বহু বার বিল মারুফ অনুযায়ী বিচার করতে বা মেনে চলতে বলা হয়েছে।

৪) একটা বিষয় লক্ষনীয় , কোরানে না থাকলেও সমগ্র বিশ্বে বর্তমানে মুসলমানদের মধ্যে ফরজ নামাজের রাকাতের সংখ্যা নিয়ে কোন দ্বিমত নেই , আর নামাজ পড়ার ধরনের মধ্যেও যে পার্থক্য , তা খুবই সামান্য। এর থেকে কি এটাই প্রতীয়মান হয়না যে , আল্লাহ নামাজকে মানুষের পালনের মাধ্যমে সংরক্ষন করছেন বা সংরক্ষন করবেন কেয়ামত পর্যন্ত। যে কারনে কোরানে নামাজ কত রাকাত , বা সঠিক ভাবে নামাজ কি ভাবে পড়তে হবে , তা লেখেন নি। খেয়াল করুন ফরজ নামাজে কোন বিভক্তি নেই। ইচ্ছা করলেই কেউ ফরজ নামাজের সংখ্যা বা রাকাত সংখ্যা পরিবর্তন করতে পারেনা বা যদি করেও কেউ মানবে না। ৪:১০২ আয়াত থেকে এটা প্রতীয়মান হয় যে , নামাজে রাকাতের সংখ্যা দুই বা ততোধিক। একারনে ফরজ নামাজে প্রচলিত রাকাত সংখ্যা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক নয় বিধায় আমি প্রচলিত রাকাত সংখ্যা অনুযায়ী নামাজ পড়ে থাকি।

সংশোধনিসমূহ-

১) আমি নামাজের শুরুতে কোন নিয়ত করি না। আল্লাহ প্রতিটি বান্দার মনের খবর জানেন। একারনে ঘটা করে নিয়ত করাকে আমার কাছে বাহুল্য মনে হয়।

২) আমি সাধারনত বাড়িতে একাকি নামাজ পড়ি। ১০৭ সূরাতে লোক দেখানো নামাজ পড়তে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। শুধু জুম্মার নামাজ মসজিদে পড়ি এবং কখনো কার্যোপলক্ষে বাড়ির বাইরে থাকলে মসজিদে ওয়াক্তের নামাজ জামাতের সাথে পড়ি।

৩) বাড়িতে পুরো নামাজই ২ , ৩ বা ৪ রাকাত যখন যেটা প্রযোজ্য , মধ্যম স্বরে পড়ি। এমনকি রুকু ও সিজদার সময় তাসবীহ এবং বৈঠকের সময় শাহাদা ও কোরান থেকে দোয়া মধ্যম স্বরে পড়ি।

৪) ১ম ২ রাকাতে সুরা ফাতিহার পরে ‘قُلْ ‘ শব্দটি বাদ দিয়ে সূরা ফালাক্ক ও সূরা নাস পড়ি।

৫) বৈঠকে আত্তাহিয়াতু ও দরূদ পড়ি না। বদলে ৩:১৮ আয়াত শাহাদা হিসাবে এবং কোরান থেকে বিভিন্ন দোয়া পড়ি।

পরিশেষে এটাই বলব , আমার নামাজ সময়ের সাথে আমার জ্ঞানার্জনের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতে ও পরিবর্তনের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
লেখক-ফারুক (সদালাপ).

.

Main- http://faruk55kw.blogspot.com/2012/08/?m=1

কাফির,যালিম,ফাসিক কে বা কারা?+কাফিররাই যলিম।

By Amirul Islam fbfd

আজ শুক্রবার, ০২/০৩/২০১৮ খ্রি: ‘দারুস সালামে’ কুরআন থেকে সংক্ষেপে আলোচনা হয়-
১. কাফির কে বা কারা?
২. যালিম কে বা কারা?
৩. ফাসিক কে বা কারা?
৪. কাফিররাই যলিম।
প্রশ্নোত্তরে ছিল-
৫. সকলকেই কেন যাকাতের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়?
৬. যাকাত-সদকা একা একা নিজ হাতে দিলে কি আল্লাহ কবূল করবেন না?
৭. অধিকাংশ লোক কুরআনের বিধান না মানর কারণ কি?

জবাব-
১. কাফির কে বা কারা?
উত্তর: কুরআনে তিন ধরনের কাফির দেখা যায়-
ক. ‘আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেই না তারাই কাফির (৫:৪৪); সূরা-৫, মায়িদা, আয়াত-৪৪ । [উপরোক্ত আয়াত অনুসারে ‘আল্লাহর কিতাব অনুসারে বিধান না দিলে কাফির।]
‘কেবল কাফিররাই আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করে (২৯:৪৭); সূরা-২৯, আনকাবূত, আয়াত-৪৭ ।

খ. ‘যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে ও তাঁর রাসূলদেরকেও এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের মধ্যে তারতম্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতক বিশ্বাস করি ও কতক অবিশ্বাস করি’ আর তারা মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করতে চায়, তারাই প্রকৃত কাফির (৪:১৫০-১৫১); সূরা-৪, নিসা, আয়াতঃ ৪:১৫০-১৫১। [উপরোক্ত আয়াত অনুসারে কুরআনের সাথে নিজেদের মনমত কোন বিষয় যোগ করে ধর্ম বানিয়ে নিলেও কাফির!]

গ. ‘যারা যাকাত প্রদান করে না তারা আখিরাতে (বিশ্বাস করে না) কাফির (৪১:৭)। ‘সম্পদ দিলে যাকাত হয় (৯২:১৮)।

২. যালিম কে বা কারা?
উত্তর: কুরআনে বিভিন্ন ধরনের যালিম দেখা যায়-
ক. ‘আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেই না তারাই যালিম (৫:৪৫); সূরা-৫, মায়িদা, আয়াত-৪৫ । [উপরোক্ত আয়াত অনুসারে ‘আল্লাহর কিতাব অনুসারে বিধান না দিলে যালিম।]

খ. ‘আল্লাহর নিকট হতে তার কাছে যে প্রমাণ আছে তা যে গোপন করে তার অপেক্ষা অধিকতর যালিম আর কে হতে পারে? (২:১৪০)।

গ. ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে অথবা তাঁর আয়াত প্রত্যাখ্যান করে তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? (৬:২১, ৯৩, ১৪৪)।

ঘ. ‘যে কেউ আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যান করে এবং তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার চেয়ে বড় যালিম আর কে? যারা আমার আয়াতসমূহ হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় সত্যবিমুখতার জন্য আমি তাদের নিকৃষ্ট শাস্তি দিব (৬:১৫৭)।

ঙ. ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করে কিংবা তাঁর আয়াত অস্বীকার করে তার অপেক্ষা বড় যালিম আর কে? (৭:৩৭; ১০:১৭; ১১:১৮; ২৯:৬৮; ৬১:৭)।

চ. ‘কোন ব্যক্তিকে তার রবের আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দেয়ার পর সে যদি তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং তার কৃতকর্মসমূহ ভুলে যায় তবে তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? (১৮:৫৭)।
ছ. ‘যে ব্যক্তি তার রবের আয়াতসমূহ দ্বারা উপদিষ্ট হয়ে তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক যালিম আর কে? (৩২:২২)। ‘বরং যালিমেরা আল্লাহর আয়াত অস্বীকার করে (৬:৩৩; ৩৯:৩২)।

৩. ফাসিক কে বা কারা?
ক. ‘আল্লাহ্ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেই না তারাই ফাসিক (৫:৪৭); সূরা-৫, মায়িদা, আয়াত-৪৭ । [উপরোক্ত আয়াত অনুসারে ‘আল্লাহর কিতাব অনুসারে বিধান না দিলে ফাসিক।]

খ. ‘আমি তোমার প্রতি স্পষ্ট আয়াত অবতীর্ণ করেছি, ফাসিকরা ব্যতিত অন্য কেউ তা প্রত্যাখ্যান করে না (২:৯৯)।

গ. ‘তাদের অধিকাংশই ফাসিক, তারা আল্লাহর আয়াতকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় (দীন নিয়ে ব্যবসা) করে এবং তারা মানুষকে তাঁর পথ হতে নিবৃত করে (৯:৮-৯)।

ঘ. ‘বল, ‘তোমরা স্বেচ্ছায় ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছায়, তোমাদের নিকট হতে তা কিছুতেই গৃহীত হবে না; তোমরা তো সত্যত্যাগী সম্প্রদায়।’ তাদের অর্থ সাহায্য গ্রহণ করা নিষেধ করা হয়েছে এজন্য যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করে, সালাতে শৈথিল্যের সঙ্গে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে অর্থ সাহায্য কর (৯:৫৩-৫৪)।

ঙ. ‘আমি শীঘ্রই ফাসিকদের বাসস্থান তোমাদেরকে দেখাব … … তারা সৎপথ দেখলেও তাকে পথ বলে গ্রহণ করবে না, কিন্তু তারা ভ্রান্ত পথ দেখলে তাকে পথ হিসেবে গ্রহণ করবে। এটা এ হেতু যে, তারা আমার আয়াতকে অস্বীকার করেছে (৭:৪৫-৪৬)।

৪. কাফিররাই যলিম। যলিমরাই কাফির।
ক. ‘হে মু‘মিনগণ! আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি তা হতে তোমরা ব্যয় কর সেই দিন আসার পূর্বে,যেই দিন ক্রয়-বিক্রয়, বন্ধুত্ব ও সুপারিশ থাকবে না এবং কাফিররাই যলিম (২:২৫৪)।

খ. `যে ব্যক্তি আল্লাহ সম্বন্ধে মিথ্যা বলে এবং সত্য আসার পর তা অস্বীকার করে তা আপেক্ষা অধিকা যালিম আর কে? কাফিরদের আবাস্থল কি জাহান্নাম নয়?(৩৯:৩২)।

প্রশ্নোত্তরে ছিল-
৫. সকলকেই কেন যাকাতের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়?

মানুষ একটি উম্মত (জাতি) ছিল এবং আল্লাহ এক উম্মত (জাতি) হতে বলেছেন-

যেমন-
ক. আল্লাহ তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউ হয় কাফির এবং তোমাদের মধ্যে কেউ হয় মু‘মিন (৬৪:২)।

খ. আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একটি মু‘মিন দল ছিল ….. (২৩:১০৯-১১১)।

গ. যাদেরকে আমি সৃষ্টি করেছি তাদের মধ্যে একদল লোক আছে যারা ন্যায়ভাবে পথ দেখায় এবং ন্যায়ভাবে বিচার করে (৭:১৮১)।

গ. সমস্ত মানুষ ছিল একই ‍উম্মত (জাতি) … (২:২১৩)।

ঘ. ‘তোমাদের এ যে উম্মত (জাতি) এ তো একই উম্মত এবং আমিই তোমাদের রব … (২৩:৫২; ২১:৯২; ১০:১৯)।

ঙ. ‘ইচ্ছা করলে আল্লাহ তোমাদেরকে এক উম্মত (জাতি) করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন তা দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। সুতরাং তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগীতা কর (৫:৪৮; ১৬:৯৩)।

চ. ‘তোমাদের মধ্যে এমন এক উম্মত (জাতি) হোক যারা কল্যাণের দিকে মানষকে আহ্বান করবে, সৎকাজের আদেশ দিবে এবং অসৎ কাজে নিষেধ করবে; এরাই সফলকাম (৩:১০৪)।

উররোক্ত আয়াতগুলো অনুসারে এক স্রষ্টার, একই বিশ্বে, একই সংবিধান কুরআনের মাধ্যমে এক উম্মত (জাতি) গঠন করার জন্য আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। নিচের আয়াতটি মনোযোগসহকারে পড়ুন-

‘আল্লাহ জনপদবাসীদের নিকট হতে তাঁর রাসূলকে (ইমামকে) যা কিছু দিয়েছেন তা- ১. আল্লাহর, ২. রাসূলের, ৩. স্বজনদের (৯:১১), ৪. ইয়াতিমদের, ৫. মিসকিনদের ও ৬. পথচারীদের, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান কেবল তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে। রাসূল (ইমাম) তোমাদের যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর; আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর (৫৯:৭)।

উপরোক্ত আয়াতে ‘রাসূল/ইমাম তোমাদের যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর।’
উক্ত আয়াত অনুসারে সকলকেই অর্থ দিতে হবে এবং ন্যায় ভাবে দিতে হবে। তাই আমি যাকাত দাতাদের মধ্যে মাথাপিছু বন্টন করি।

এর ফলে-
ক. ধনী বেশি দিয়েছিল, পেল কম। সে বুঝতে পারল আমার দীনের ভায়েরা অনেক কষ্টে আছে। ফলে সে অতিরিক্ত সদকা দিবে। এই সদকা দীনের দরিদ্র ভাইদের মধ্যে ৮ খাতে ব্যয় হবে (৯:৬০)।

খ. দরিদ্র কম দিয়েছিল, পেল বেশি। ফলে সে বুঝতে পারল আমার দীনের ভাইদের আয় বেশি নয়। তাদের আয় বেশি হলে আমি ভাতা বেশি পেতাম।

সকলের একটি দায়িত্ব আছে, তা হলো-
লোকে তোমাকে প্রশ্ন করে তারা কী ব্যয় করবে। বল, ‘যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করবে তা পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম, মিসকিত এবং মুসাফিরদের জন্য … (২:২১৫)।

যাকাত-সদকা বন্টন পদ্ধতি যেমন কার কাছে কি পরিমাণ সম্পদ আছে তা জানা যাবে। ফলে কেন্দ্র থেকে এক ধরনের ব্যয় হচ্ছে। আর ভাতা পাওয়ার ফলে তারাও উক্ত সম্পদ নিজ হাতে ব্যয় করতে পারছে। এর ফলে সমাজে দাতার সংখ্যা বাড়বে এবং সকলের মধ্যে সাহায্য-সহযোগীতার হাত বাড়বে, সমাজে শান্তি ফিরে আসবে।

৬. যাকাত-সদকা একা একা নিজ হাতে দিলে কি আল্লাহ কবূল করবেন না?

আল্লাহ এক উম্মত (জাতি) হতে বলেছেন। ফলে একজন ইমামকে বিশ্বাস করতেই হবে, অথবা নিজেই এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।

আল্লাহ বলেন, `তাদের সম্পদ হতে সদকা গ্রহণ কর। এর দ্বারা তুমি তাদেরকে পবিত্র কর ও পরিশোধিত কর। তাদেরকে দু‘আ কর। তোমার দু‘আ তো তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর।, আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। তারা কি জানে না যে, আল্লাহ তো তাঁর বান্দাদের তওবা কবূল করেন এবং সদকা গ্রহণ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালূ (৯:১০৩-৪)। উপরোক্ত আয়াত অনুসারে রাসূলের/ইমামের নিকট যাকাত-সদকা দিলেই আল্লাহ কবূল করেন।

যারা বিশ্বাস না করে একা একা ব্যয় করবে তাদের সম্বন্ধে আল্লাহ বলেন-
‘আল্লাহর পথ হতে মানুষকে নিবৃত্ত করার জন্য অবিশ্বাসীরা তাদের ধনসম্পদ ব্যয় করতেই থাকবে; অতঃপর তা তাদের মনস্তাপের কারণ হবে, এর পর তারা পরাভূত হবে এবং যারা অবিশ্বাস করে তাদেরকে জাহান্নামে একত্রিত করা হবে। এ এজন্য, আল্লাহ কুজনকে সুজন হতে পৃথক করবেন এবং কুজনদের এককে অপরের উপর রাখবেন, অতঃপর সকলকে স্তুপীকৃত করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন, এরাই ক্ষতিগ্রস্ত (৮:৩৬-৩৭)।

৭. অধিকাংশ লোক কুরআনের বিধান না মানর কারণ কি?

‘যারা যাকাত প্রদান করে না তারা আখিরাতে (বিশ্বাস করে না) কাফির (৪১:৭)। আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না (১৬:১০৭)। আর কাফিরদের প্রার্থনা ব্যর্থই হয় (১৩:১৪; ৪০:৫০)।
‘তুমি যখন কুরআন পাঠ কর তখন তোমার ও যারা আখিরাত বিশ্বাস করে না তাদের মধ্যে এক প্রচ্ছন্ন পর্দা রেখে দেই। আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়েছি যেন তারা উপলব্ধি করতে না পারে এবং তাদেরকে বধির করেছি … … (১৭:৪৫-৪৬)। সুতরাং ইমামের নিকট যাকাত-সদকা দিয়ে নিজের প্রচ্ছন্ন পর্দা নিজেকেই উন্মোচিত করতে হবে।

হুর+a link

By aryan khan fbfd

হুর নিয়ে ইসলামকে ঘিরে যথেষ্ট নোংরা ধারনা বিধর্মীরা পোষণ করে । এমনকি মুসলিম পুরুষদের মাঝে বেশ উত্তেজনা আছে যে তারা জান্নাতে গেলে অনেক হুর পাবে , তাদের সাথে অনেক রংগ তামাশা করবে । তারা মনে করে যে তাদের স্ত্রীরা এই সমস্ত হুরদের রানী হয়ে তাদের স্বামীকে শত শত হুরদের সাথে কেলী করতে দেখবে । এটা একটা Double Standard বৈ কিছুই নয় । পুরুষ শাসিত মুসলিম সমাজে এই সমস্ত পুরুষ ইমামরা তাদের নিজের স্বার্থে যেভাবে মন চাই সেভাবেই ইসলামের নামে এইসব নোংরা জিনিস কে জায়েজ করিয়ে নিয়েছে এবং মেয়েদেরকে পায়ের নীচে ঐ একই ইসলামের দোহাই দিয়ে দাবিয়ে রেখেছে ।

যাই হোক , মহান আল্লাহ্ কুরআনে হুর সংক্রান্ত এই সকল নোংরামি ও মিথ্যাচার কে প্রশ্রয় দেননি । নিচের সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে আমরা কুরআনে ‘হুর’ এর সঠিক স্বরূপ জানতে পারব বলে বিশ্বাস রাখি ।

১- কোরানের ব্যবহৃত হুর (حُـورِی) বহু বচন যা স্ত্রী ও পুরুষ – এই দুই অর্থেই ব্যবহৃত হয় । এক বচন অর্থে হুর শব্দটি স্ত্রী বা পুরুষ লিঙ্গে বিভক্ত হতে পারে (হাওরা/ حَوْراء স্ত্রী লিঙ্গ , আহওয়ার/ أحْوَر পুং লিঙ্গ) কিন্তু বহু বচন অর্থে নয় । তাই হুর কে শুধু নারী কল্পনা করা নিতান্তই বাতুলতা । উপরন্তু কুরআনে ইশা (আঃ) এর শিষ্যদেরকে ‘হাওয়ারী/ ْحَوَارِيُّونَ’ (৩.৫২, ৫.১১১, ৬১.১৪) বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে যা ‘হুর’ শব্দ থেকে এসেছে । হাওয়ারী একটি পুং বাচক শব্দ এবং আমরা জানি যে ইশা (আঃ) এর শিষ্যরা বেশির ভাগই পুরুষ ছিলেন ।
তাই কোরআন থেকে এটা পরিষ্কার যে ‘হুর’ পুরুষও হতে পারে আবার নারীও হতে পারে ।

২- জান্নাতে পুরুষ ও নারী সম-ব্যবহার পাবে বলে মহান আল্লাহ্‌ নিশ্চিত করেছেনঃ
“ পুরুষ হোক কিংবা নারী, যে কোন সৎকর্ম করে এবং বিশ্বাসী হয়, তবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণ ও নষ্ট হবে না।” (৪.১২৪)
তাই জান্নাতি পুরুষ যদি মেয়ে হুর পাই তবে জান্নাতি নারী অবশ্যই পুরুষ হুর পাবে ।

৩- জান্নাতে হুর কি সবার জন্য ? কুরআন থেকে তা ‘না’ বলে মনে হয় । যদি জান্নাতির পরিবার পরিজনও জান্নাতি হয় , তবে তারা পুরো পরিবার নিয়ে জান্নাতে বসবাস করবে বলে আল্লাহ্‌ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেনঃ

“তা হচ্ছে বসবাসের বাগান। তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের সৎকর্মশীল বাপ-দাদা, স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানেরা। ফেরেশতারা তাদের কাছে আসবে প্রত্যেক দরজা দিয়ে।” (১৩.২৩)

তাই জান্নাতি স্বামীর স্ত্রীও যদি জান্নাতি হয় তবে তারা জান্নাতে স্বামী স্ত্রী হিসেবেই অবস্থান করবে ।

বিপত্তি হবে যদি স্বামী বা স্ত্রীর যেকোন একজন জান্নাতে প্রবেশ করলে আর অন্য জন জাহান্নামি হলে সেক্ষেত্রে কি হবে ? এই অবস্থাতে ‘হুর’ এর সাথে তাদের বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে তাদের সঙ্গী/ সঙ্গিনী এর ফাকা স্থান পূরন করা হবে । নিচের আয়াতটি এই বিষয়ে লক্ষ্যনীয়ঃ

“তারা শ্রেণীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়তলোচনা/ন হুরদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে দেব। ” (৫২.২০)

৫২.২০ থেকে মনে হয় যে , এই সমস্ত জান্নাতি তাদের পরিবার পরিজন বিহীন নিঃসঙ্গ অবস্থায় জান্নাতে প্রবেশ করেছে । তাই তাদের জান্নাতে সংগ দেওয়ার জন্য এই সমস্ত হুরদেরকে তাদের সাথে মিলিয়ে দেওয়া হবে ।

More link:-

Hur-72 in Paradise? Nonsence the socalled Hadith & Misinterpretation of Quran from socalled Hadith

কেন ইসরায়েলের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছে না মুসলিমরা?

কেন ইসরায়েলের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছে না মুসলিমরা?
by এগিয়ে চলো ডেস্ক | Dec 11, 2017 | অদ্ভুত,বিস্ময়,অবিশ্বাস্য, এরাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড | 0 comments

অনেকের মনে প্রশ্ন, দেড়শ কোটি মুসলিম দুনিয়ায় থাকতে মাত্র ৫০/৬০ লক্ষ ইহুদী কিভাবে মাথার উপর ছুড়ি ঘুরাচ্ছে? ইয়েস, মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন! উত্তরটা আপনারও জানা, তারপরও দিচ্ছি- জ্ঞানবিজ্ঞান আর প্রযুক্তি দিয়ে। অনেকে বলেন সালাউদ্দিন আইয়ুবির মতো বীর আর নাই, তাই আমাদের পরাজয় হচ্ছে! এদের কে বুঝাবে যে যুগের পরিবর্তন হয়েছে? মানুষ এখন ঢাল-তলোয়ার, বর্শা দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করে না! করে স্বয়ংক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে, ওয়ার প্লেন রাডার দিয়ে, একে ৪৭ দিয়ে!
তাহলে মুসলিমরা কেন পারছে না? কারণ মুসলিমরা জ্ঞান বিজ্ঞানকে ভয় পায়- তাদের ধারণা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত হলে ধর্ম বলতে কিছু থাকবে না, তাই একে ইহুদী নাসারার ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে এর থেকে দূরে থাকাটাই মঙ্গল! তা না হলে বেহেশত হাতছাড়া হয়ে যাবে। আফসোস মুসলমানরা এখনো বহু বিবাহ, তালাক, হিল্লা আর মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ রাখার আইন নিয়েই পড়ে আছে! মানুষ যেসময় জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে চন্দ্র সূর্য গ্রহ নক্ষত্রে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত- আমরা তখনো বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত!

আমরা যখন কলেরাকে উলাওটা নামন দানবের কাজ, কুষ্ঠ রোগী আর গুটি বসন্তকে সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ আখ্যা দিতে ব্যস্ত– তখন ইহুদি নাসারারা বের করলো টিকা প্রতিষেধক! জীবাণু দিয়েই জীবাণু মারার কৌশল! যক্ষ্মা টাইফয়েড পোলিও হলেও চলতো পানিপড়া চিকিৎসা। শুধু সঠিক জ্ঞানচর্চার অভাবে আমরা ইহুদি নাসারার সাথে পারি না!
ইসরায়েলের আয়তন কত? জনসংখ্যা? অথচ সেই পুঁচকে একটা দেশের ভয়ে মরক্কো থেকে ধরে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত কোন মুসলিম দেশ টু শব্দটিও উচ্চারণ করতে পারেনা! ২০১৪ তে গাজা অবরুদ্ধ করে ১৪০০ প্যালেস্টাইনি মেরেছে শুধু ব্যারেল বোমা, নিয়ন্ত্রণ ক্রুড মিসাইল আর হোয়াইট ফসফরাস দিয়ে! তাদের আছে অত্যাধুনিক আন্তঃ মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র– যা দিয়ে জায়গায় বসে কম্পিউটার টিপে আরেকটা দেশের একটা শহরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আক্রমণ করতে পারবে! মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম- আরেক দেশ থেকে ছোঁড়া মিসাইল ভূমিতে পরার আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে আকাশপথে! আছে নিউক্লিয়ার বা এটম বোম্ব! আছে সুদক্ষ পাইলটসহ ওয়ার প্লেইন, আছে শব্দবিহীন রাডার ফাঁকি দেয়ার মতো পাইলটবিহীন বোমারু বিমান! এখন বলেন কোন আরব বা মুসলিম দেশটার এত কিছু আছে? আর তাই ইসরায়েলের সাথে কেউ ভিড়ে না! ১৯৬৭ এ একবার ভিড়েছিলো– ১৭ টি আরব দেশ মাত্র ৫ দিনে আত্মসমর্পণ করে! তথাপি মিশর হারিয়েছিলো সিনাই উপত্যকা, জর্ডান হারিয়েছিল ডেড সি, সিরিয়া গোলান মালভূমি!
আজকে আমরা কিছু হলেই বলি ইহুদি নাসারার ষড়যন্ত্র! অথচ তাদের এই বিস্ময়কর উন্নয়ন দেখেও শিখি না আমাদের গ্যাপটা কোথায়! তিতা হলেও সত্য, এই ইহুদী নাসারার আবিষ্কারের দরুন আজকে দুটো ভাত রুটি খেতে পারছি- কি অবাক হচ্ছেন? জিন গবেষণা করে চাউলের গমের শস্যদানার হাইব্রডাইজেশন না করলে বছরে বছরে দূর্ভিক্ষ হতো! বছরে একবার ফসলে কি ৭০০ কোটি মানুষের আহার হতো? এইসব ফার্মি, পোল্ট্রি, ব্রয়লার লেয়ার খাদ্য বিপ্লব ঘটিয়েছে! যাকে আমরা বলি জি এম ও ফুড! প্রচণ্ড গরমে এসি, ফ্যান, বিদ্যুৎ তো আছেই! আজকে বিজ্ঞানের অবদানেই মরুভূমি তে ফসল ফলে। লবণাক্ত পানিকে রিফাইন করে পানের উপযোগী করা হয়েছে। এখন আর পানির অভাবে তায়াম্মুম করা লাগে না! তারপরও কি ইহুদি নাসারার অবদান নাই? গরু, ঘোড়া, উটের বদলে চড়ছি ফেরারি অডি গাড়িতে! উড়োজাহাজ, বুলেট ট্রেন তো আছেই! আছে কিডনি-লিভার পর্যন্ত চেঞ্জ করার অবদান! এই যে রক্তের গ্রুপ আর তা দিয়ে মানুষ বাঁচানো- এটাও তাদের আবিষ্কার! এরপরও ইহুদি নাসারার অবদান নাই? এই যে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ফেইসবুক- এইগুলাই বা কম কি? তারপরও এরা ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে, তাই না?
হ্যাঁ, একমাত্র ছাগুরাই বিশ্বাস করে ইহুদী নাসারা দিনরাত ষড়যন্ত্র করছে, আর আমাদের এই অভাব এই দৈনদশার জন্য তারাই একমাত্র দায়ী! অথচ তাদের আবিষ্কৃত জিনিস ছাড়া একদিনও কেউ চলতে পারবে না। এইতো সৌদি আরব কিছুদিন আগেই আমেরিকা থেকে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে! এই ইহুদি নাসারার কাছ থেকেই কিনেছে! এই যে সৌদির তেল স্বর্ণ মাটির নিচে পড়েছিলো- তা এই ইহুদি নাসারার আবিষ্কার করা প্রযুক্তির কারণেই বিক্রি করে দু’ পয়সা কামাচ্ছে! তালেবান বলেন আইএস বলেন, ইহুদির আবিষ্কার Ak 47, m15 বন্দুক, আর ডি এক্স দিয়ে সুইসাইড বেল্ট বানায়! অর্থাৎ মরতে গেলেও ইহুদি নাসারাই লাগে!
মোদ্দাকথা, মুসলিম জাতি যতদিন শিক্ষাদীক্ষা জ্ঞানবিজ্ঞানে প্রভুত উন্নতি না করবে, ততদিন মার খেয়েই যাবে! নিজেরাই নিজেদের মারবে! কখনো শিয়া সুন্নি নিয়ে, কখনো খিলাফত জিহাদ নিয়ে! আজকের সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ! অথচ, পাশাপাশি বৌদ্ধরা, হিন্দুরা, খ্রিস্টান ইহুদী জরাথ্রুস্ট্ররা- কোথায় পৌঁছে গেছে! আর সৌদি আরব প্রতিবেশি ইরানকে আইসোলেট করে রেখেছে; কারণ তারা সহি মুসলিম না! শিয়া!
অথচ পুঁচকে একটা ইসরায়েল আর প্রায় ১ কোটি ইহুদি, ১.৮ বিলিয়ন মুসলমানকে তুর্কিনাচন নাচাচ্ছে! কি অর্থনীতি, কি রাজনীতি, কি সামরিক শক্তি- সব দিক থেকেই! আজ পর্যন্ত শুনছেন একটা ইহুদি যুবক সুইসাইড বোম এটাক করছে? ওদের যুবারা পড়াশোনা করে দেশের বিজ্ঞানি, পাইলট, মিলিটারি, প্রফেসর ডাক্তার হয়! আর মুসলিম যুবারা হয় জিহাদি! নিউজ শুনেন, দিনাজপুরের কাহারুলে মসজিদে সাড়ে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেন ৪২ বছরের মাদ্রাসা শিক্ষক! কাবুলে মসজিদে বোমা বিস্ফারণ! নিহত কয়েক ডজন! মিশরের সিনাইয়ে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ২৫৩ জন! এইখানেও কি ইহুদি নাসারার হাত ছিলো?
মুসলিম জাতির এই দৈন দশার কবে মুক্তি মিলবে? নিজেদের ভেতরের এই হানাহানি, ফতোয়াবাজি আর জিহাদ নামক ক্যান্সার থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে কি? নাকি আজীবন ইহুদি নাসারার ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে দিবে? আর উলটা নিজেরা নিজেরা কামড়াকামড়ি করে আধমরা হয়ে পড়ে থাকবে; সেই সুযোগে জেরুজালেম না– আরো অনেক কিছুই হাতছাড়া হবে!

.

By saidur rahman fbfd

SALAT as per Quran

সকলকে পড়ার অনুরোধ রহিলো!!!!!

সালাত কি? যদি মোসলমানরা বুজতো তাহলে এই ভাবে কামরা কামরি করতো না,,কারো মতে হাত বাধতে হবে নাভির নিচে, কারো মতে নাভি ও বুকের মাঝা মাঝি,কারো মতে বুকে,,দারাতে হবে দুই পায়ের মাঝে ৪ আঙ্গুল ফাক করে, কারো মতে দুই পা চেগাইয়া মাছ ধরার ভেসালের মতো,সয়তান আটকানোর জন্য কিন্তুু ঐ গাধা বোজেনা ওর পাছার নিচে ৩ হাত ফাকা ওর মাথার উপরে সবই ফাকা,, সয়তান নাকি পা দিয়ে আটকাবে হা হা হা,, কারো মতে আমিন জোরে, কারো মতে আমিন আস্তে অথচ ফাতেহার শেষে আমিন অই নাই হা হা হা,,এই রকম আরো অনেক মতোভেদ আছে বলে শেষ করার মতো নয়,, এই মতোভেদ বোখারী মুসলিম সাবরা ও আরো হাদিস লেখক গন মোসলমানদের ভিতর কামরা কামরি লাগানোর জন্য তৈরি করে নবির নাম দিয়ে চালিয়ে দিয়েছে,,

আশুন সালাতের বিশয়ে কোরআন কি বলে দেখি!!!

১/সালাতে দারানোর আগে অযু (৫:৬)
২/কিবলার দিকে মুখ করে(২:১১৫; ১৪২;১৭৭)
৩/আউযুবিল্লাহ পড়ার নির্দেশ(১৬:৯৮)
৪/শয়তানের প্ররোচনা হতে আশ্রয় চেয়ে(২৩:৯৭-৯৮)
৫/রাসুল কোরআন থেকে পরতেন(১০:৬১)
৬/সালাত দারিয়ে পরার নির্দেশ(২:২৩৮)
৭/দারিয়ে সালাত পরতে হবে(৩:৩৯;৪:১০২)(৪:১৪২)(২৬:২১৭-২১৮)(৬২:১১)(৭২:১৯)
৮/সালাত মধ্যম স্বরে পরার নির্দেশ(১৭:১১০)
৯/সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা(২:৪৫;১৫৩)
১০/প্রার্থনা মুলক আয়াত দিয়ে সালাত পড়ি(৩:১৪৭-১৪৮; ১৯১-১৯৫)(৫:৮৩-৮৫)(৪৬:১৫-১৬)(২৫:৭৪-৭৬)
১১/সালাত পরতে হবে বুঝে(৪:৪৩)(১৭:৩৬)
১২/সালাত পরতে হবে রবের স্মরনে(২০:১৪)
১৩/সিজদা নত হয়ে মেনে নিতে হবে(১২:৪; ১০০)
১৪/সালাত সম্পর্কে আল্লাহর সকল আদেশ নত হয়ে মেনে নিতে হবে(২:৫৮;) (৪:১৫৪)(৭:১৬১)
১৫/সালাত নিদিষ্ট সময়ে পরতে হবে(৪:১০৩)
১৬/দুইবার পরার নির্দেশ(১১:১১৪)(১৭:৭৮)
১৭/সকাল ও সন্ধায়(২৪:৩৬)(৩৩:৪২)(৩৮:১৮)(৪০:৫৫)(৭৬:২৫)
১৮/রাসুলের সাথে দুই সময়ে উঠা বসা করতেন(৬:৫২)(১৮:২৮)(৪৮:৯)
১৯/দুই ওয়াক্ত ( ফজর ও ইশা)(২৪:৫৮)

Fb

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=205227676891511&id=100022128414312

.

SALAT waqt 2 or 3:-

http://www.quran-islam.org/faq/2_or_3_prayers_per_day_(P1142).html