Salat vs Namaz bn fb

নামাজ পড় না সালাৎ প্রতিষ্ঠিত কর ?
“নামাজ” শব্দটি ফারসি ভাষার শব্দ—- অর্থ প্রার্থনা এবং সালাৎ শব্দটি আরবি ভাষার —অর্থ ‘সৎকর্ম’ । একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার জন্য সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত করাই প্রকৃত নির্দেশ। প্রার্থনা পড়া (নামাজ পড়া) একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার নির্দেশ নয়।
হে মানবজাতি ! প্রার্থনা পড়ার পরিবর্তে ‘সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত’ করাই উত্তম। সালাতে ব্যবহৃত সকল শব্দের ও বাক্যের সঠিক অর্থ ও পরিপূর্ণ মনের ভাব বোঝার মাধ্যমে সালাত (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার কাছে অবুঝের মত প্রার্থনা পড়া গৃহিত হবে না।
হে মানবজাতি ! নামাজ (প্রার্থনা) পড় শব্দটি স্বর শব্দ থেকে নিশ্চিন্ন করে ‘সালাত (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত’ শব্দ দুটি ব্যবহার করা উত্তম। সৎকর্ম প্রতিষ্ঠিত করো, প্রার্থনা পড় না।
১৮। সলাৎ (সৎকর্ম) —- হে মানবজাতি ! কেবলমাত্র একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার জন্য সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত কর সকালে (ফজর), দুপুরে (জোহর), বিকালে (আসর), সন্ধায় (মাগরিব), রাত্রে (এশা) এবং মধ্যরাতের পর (তাহাজ্জদ) এবং অতিরিক্তসমূহ (নাফিলিয়াত) সলাৎ প্রতিষ্ঠিত কর।অতিরিক্ত (নফল) এর নামে অর্থহীন শব্দ ব্যবহার করে এবং কোন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কোন সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত কর না।
স্মরণ রেখ ! সঠিক সূর্যোদয়ে, দুপুরে, সূর্যাস্তকালে ও মধ্যরাতে সলাৎ প্রতিষ্ঠিত কর না। সলাতে ব্যবহৃত সকল শব্দ ও বাক্যসমূহের অর্থ সঠিকভাবে মন, হৃদয় ও অন্তরাত্মায় বোধগম্য না হলে সলাৎ প্রতিষ্ঠিত হবে না।
সত্যভাবে ! ‘নামাজ’ শব্দটি ফার্সী ভাষার এবং অর্থ হল — ‘প্রার্থনা’। সলাৎ (সৎকর্ম) আর নামাজ (প্রার্থনা) এক নয়।
সলাৎ (সৎকর্ম) প্রতিষ্ঠিত করা এবং (নামাজ) প্রার্থনা পড়া এক নয় ; এত পার্থক্য যেমন — ‘আমি একটা বাড়ী নির্মান করি” শব্দগুলি লক্ষ লক্ষ বার পড়লে বা বললে বাড়ীটি অবশ্যই বাস্তবে নির্মান হবে না ; অতএব, এখন তুমি কি করবে ? প্রার্থনা (নামাজ ) পড়বে, না সলাতে ব্যবহৃত সকল শব্দ ও বাক্যসমূহের অর্থ সঠিকভাবে মন, হৃদয় ও অন্তরাত্মায় বোধগম্য হবার পর একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার সামনে দাড়াবে ? বিজ্ঞ আর মূর্খের মধ্যে এতটুকুই পার্থক্য।
তোমরা সালাতসমূহ ও মধ্যবর্তী সালাতকে সংরক্ষণ কর এবং বিনীত ভাবে একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য দন্ডায়মান হও। ২৩৯। অনন্তর যদি তোমরা আশঙ্কা কর তবে আরোহী বা পদাতিক অবস্থাতেই প্রতিষ্ঠিত কর ; পরে যখন তোমরা নিরাপদ হও তখন তিনি তোমাদের যেরূপ শিক্ষা দিয়াছেন —– যাহা তোমরা জানিতে না —— তদ্রূপ একমাত্র সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ কর (বাকার – ২৩৮,২৩৯)।
“৪৩।ও মরিয়ম ! তোমার প্রতিপালকের আরাধনা কর এবং সেজদা কর ও রুকু-কারীগণের সহিত রুকুকর (এমরান-৪৩)।”

9:111-আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেনআল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন

মুসলিম সংবিধান।
পোস্ট নং ১২৬/২১
বেহেশত কি ভাবে ক্রয় করতে হবে উহার বিবরণ।

اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَ یُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ وَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِکُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِکَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ ﴿۱۱۱﴾

নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা আল্লাহর পথে লড়াই করে। অতএব তারা মারে ও মরে। তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে এ সম্পর্কে সত্য ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ ওয়াদা পূরণে আল্লাহর চেয়ে অধিক কে হতে পারে? সুতরাং তোমরা (আল্লাহর সংগে) যে সওদা করেছ, সে সওদার জন্য আনন্দিত হও এবং সেটাই মহাসাফল্য। ৯:১১১

সারাংশঃ
বেহেশত আমরা কি ভাবে ক্রয় করবো?
আল্লাহ তায়ালা সূরা তাওবার ১১১ নং আয়াতে বেহেশত বিক্রয়ের দরপত্র আহবান করেছেন এবং দরপত্রের মূল্যও দিয়ে দিয়েছেন তা হলো—
প্রথমত আমার স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি, স্বর্ণ, রোপ্য, নগদ টাকা পয়সা, মুদ্রা, ব্যাংক একাউন্ট, বিকাশ,নগদ একাউন্ট, সঞ্চয় পত্র, ইত্যাদিতে আমার যত অর্থ আছে সব আল্লাহর জন্য দান করে দিতে হবে। বাকী আছে আমার জান।
দ্বিতীয়ত মুসলিম রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার
জন্যে প্রয়োজনে আমার জানটাও উৎসর্গ করে দিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে নিয়ম নীতির মাধ্যমে জীবন দিয়েদিতে হবে। তা হলো আমি সেনা, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বহিরাগত শত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য তাদের সাথে যুদ্ধ করে আমার জীবটা দিয়ে দিতে আমার কোন দ্বিধা বোধ থাকতে পারবেনা।

আমার জান মাল সব কিছুর বিনিময় আমি যে বেহেশত পেলাম অর্থাৎ, আল্লাহর সাথে আমার যে লেন দেন হলো এটা আমার জন্য আনন্দের বিষয়। এতে আমি ঠকি নাই। বরং আমি জিতেছি। এটাই আমার সাফল্য।

আমরা দুনিয়াতে খালি হাত নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছি আবার দুনিয়া থেকে যাওয়ার সময় খালি হাত নিয়েই যাব। মাঝ খানে আল্লাহই আমাদেরকে সম্পদের মালিক বানায়েছেন। আল্লাহর দেওয়া সম্পদ আল্লাহর ওয়াস্তে দান করলে এর বিনিময় আল্লাহ আমাদেরকে আবার বেহেশতের মালিক বানায়ে দিবেন। অর্থাৎ, যার সম্পদ তাকে দিয়ে দিলাম মাঝ খানে আমি বেহেশতের মালিক হলাম এর চেয়ে বড় খুশি আর কি হতে পারে?
সুতরাং আমরা আল্লাহর সাথে বেহেশত ক্রয়ের এ লেনদেন আনন্দের সাথে করবো।

মোটকথাঃ বেহেশত পেতে হলে আমার সম্পূর্ণ অর্থ সম্পদ আল্লাহর ওয়াস্তে দান করে দিতে হবে, আমার জন্য আমার পকেটে এক পয়সাও রাখা যাবেনা এবং সর্বশেষ প্রয়োজন হলে আমার জীবনটাও
আল্লাহকে দিয়ে দিতে হবে। অর্থাৎ, আমিত্ববোধ বলতে কিছুই থাকতে পারবেনা। কেননা আল্লাহ তায়ালা আমার জান ও মাল জান্নাতের বিনিময় ক্রয় করেছেন। আমার জন্যে জান্নাত ছাড়া আর কিছুই থাকছেনা।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেন —

اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ

নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের জান ও মাল ক্রয় করে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য রয়েছে
জান্নাত।
অর্থাৎ, আল্লাহ তায়ালা মুমিনের নিকট জান্নাত বিক্রয় করবেন মুমিনের সম্পদ এবং জীবনের বিনিময়।

এক কথায় টাকা দিয়ে বেহেশত ক্রয় করতে হবে।
এ টাকা কার কাছে কোন ঠিকানায় দিবেন?

এ টাকা এতিম মিসকিন (অসহায় মানুষ) এর নিকট দিবেন। এরা হলো আল্লাহর নিকট অর্থ পাঠানোর ঠিকানা।

এ ঠিকানায় দিলেই আল্লাহ পেয়ে যাবেন।

বেহেশতের দাম কত?

বেহেশতের দাম কাস্টমার হিসেবে ঠিক করা হয়েছে।

যে কাস্টমারের নিকট কোটি টাকা আছে তার কাছে কোটি টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। এর কমে তার কাছে বেহেশত বিক্রি করবেন না।

যে কাস্টমারের নিকট লক্ষ টাকা আছে তার কাছে লক্ষ টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। এর কমে তার কাছে বেহেশত বিক্রি করবেন না।

যে কাস্টমারের নিকট হাজার টাকা আছে তার কাছে হাজার টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। এর কমে তার কাছে বেহেশত বিক্রি করবেন না।

যে কাস্টমারের নিকট শত টাকা আছে তার কাছে শত টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। এর কমে তার কাছে বেহেশত বিক্রি করবেন না।

যে কাস্টমারের নিকট এক টাকা আছে তার কাছে এক টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। এর কমে তার কাছে বেহেশত বিক্রি করবেন না।

যে কাস্টমারের নিকট শূন্য টাকা আছে তার কাছে শূন্য টাকায় বেহেশত বিক্রয় করা হবে। কেননা সম্পদ পুঞ্জিভূত ও আগলে রাখলে তার জন্য জাহান্নাম অবধারিত।

আমি সব টাকা আল্লাহকে দিয়ে দিলে আমি কি ভাবে চলব আমার সংসার কি ভাবে চলবে?

এ প্রশ্নের উত্তর আল্লাহ প্রথমেই দিয়ে দিয়েছন। তিনি বলেছেন আমি বেহেশত মুমিনের কাছে বিক্রয় করবো, কোন কাফির, মুনাফিক ও মুশরিকের কাছে বিক্রয় করব না।

মুমিন তো আল্লাহর প্রতি এত টুকু বিশ্বাস থাকতে হবে যে আল্লাহ আজকে আমাকে ও আমার পরিবারকে রিযিক সরবরাহ করেছেন, আগামী দিনও সে আল্লাহ আমাদেরকে রিযিক সরবরাহ করবেন।
আল্লাহ তায়ালার প্রতি যার এতটুকু বিশ্বাস নেই সেতো মুমিনই নয়। সে তো কোটি টাকা দিলেও তার কাছে আল্লাহ তায়ালা বেহেশত বিক্রি করবেন না।

  • তাওরাত, ইঞ্জিল ও কুরআনে এ সম্পর্কে সত্য ওয়াদা রয়েছে।
    সকল আসমানী কিতাবে বেহেশত ক্রয়ের নীতিমালা একই যা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্যঃ ইবাদত বন্দেগী তথা নামাজ, রোযা, হজ্ব, পর্দা ও যিকির ইত্যাদি দ্বারা বেহেশত বেচাকেনা হয়না। বেহেশত বেচাকেনা হয় জীবন দিয়ে ও টাকা দ্বারা। আমরা যারা ইবাদত দ্বারা বেহেশত ক্রয় করার চিন্তা ভাবনা করছি। আমাদের এ চিন্তা ভাবনা ভুল।
এখনো সময় আছে আমরা আমাদের ভুল সংশোধন করে নিই।
অপর দিকে আমরা যারা হরতাল অবরোধ
করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে বা প্রতিপক্ষের গুলিতে মারা যাচিছ আমরা নিজেকে শহিদ বলে গর্ববোধ করে বেহেশতের দাবিদার মনে করছি। আমাদের এ চিন্তা ভাবনাও ভুল। কেননা হরতাল অবরোধ এগুলো আল্লাহর রাস্তা নয়। এগুলো দুনিয়া হাসিলের বিভিন্ন পন্থা।
বিঃ দ্রঃ مال মাল শব্দটি عام আম শব্দ (ব্যপকতা অর্থে) ব্যবহৃত হয়। এখানে “মাল” শব্দ দ্বারা যত প্রকারের অর্থ সম্পদ আছে সব গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।