Qibla-Ka’ba

By Zubair Anowar fbfdbd

আমাদের সালাতের কিবলা বা হজ্জ করার স্থান কি মক্কার কাবা না কি জেরুসালেম?
—+——————–+++++++——————————
ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে সালাতের কিবলা বা হজ্জ করার স্থান কি মক্কার কাবা না কি জেরুসালেম, এ বিয়টি নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে।
আমাদেরকে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে, তা হলো- আমরা যদি পুরো কুরআনুল কারিমকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভালভাবে খুটিয়ে খুটিয়ে না পড়ি, তাহলে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অবশ্যই আমরা ভুল করব। তাই পুরো কুরআনকে মাথায় রেখে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এবার আসি মূল আলোচনায়-

সালাতের কিবলা বা হজ্জ করার স্থান সংক্রান্ত যত আয়াত আছে, সবগুলোকে ভালকরে বিস্তারিতভাবে না পড়লে আমরা অবশ্যই ভুল করবো। তাই মক্কা, কাবা, বাইতুল্লাহ, মাসজিদুল হারাম সংক্রান্ত যত আয়াত আছে মোটামুটি সবগুলোকে আনার চেষ্টা করেছি। ধারাবাহিকভাবে বুঝে বুঝে পড়লে আশাকরি বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে।

বাইতুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর:
কাবা ঘরকে যে আল্লাহ তায়ালা বাইতুল হারাম বলেছেন, সে সংক্রান্ত সকল আয়াতগুলো দিলাম। প্রত্যেকটি আয়াত ভালকরে পড়তে হবে।
2:125, 2:127, 2:158; 3:96, 3:97; 5:2, 5:97; 8:35; 14:37; 22:26, 22:29, 22:33; 106/3;

মাসজিদুল হারাম
কাবা ঘরকে যে আল্লাহ তায়ালা মাসজিদুল হারাম বলেছেন, সে সংক্রান্ত সকল আয়াতগুলো দিলাম। প্রত্যেকটি আয়াত ভালকরে পড়তে হবে।
2:144, 2:149, 2:150, 2:191, 2:196, 2:217; 5:2; 8:34; 9:7, 9:19, 9:28; 17:1; 22:25; 48:25, 48:27;
এবার এক আয়াতের সাথে অন্য আয়াতের সংযোগ বা যোগসূত্র স্থাপন করে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করছি:
(আয়াতের সাথে আয়াতের যোগসূত্রগুলো ভালভাবে খেয়াল করতে হবে। কম্পিউটারে সমস্য করার কারণে আরবী দিতে পারিনি। প্রত্যেকটি আয়াতকে অবশ্যই কুরআনের আরবী আয়াতের সাথে মিলিয়ে পড়তে হবে)

১. পবিত্র কাবা গৃহ:
৫/৯৫: হে ঈমানদারগণ ! ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিকার করো না৷ আর তোমাদের কেউ যদি জেনে বুঝে এমনটি করে বসে, তাহলে যে প্রাণীটি সে মেরেছে গৃহপালিত প্রাণীর মধ্য থেকে তারই সমপর্যায়ের একটি প্রাণী তাকে নয্রানা দিতে হবে, যার ফায়সালা করবে তোমাদের মধ্য থেকে দুজন ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তি৷ আর এ নযরানা কাবা ঘরে পৌঁছাতে হবে৷ অথবা এ গুনাহের কাফ্ফারা হিসেবে কয়েক জন মিসকীনকে খাবার খাওয়াতে হবে৷ অথবা সে অনুপাতে রোযা রাখতে হবে, যাতে সে নিজের কৃতকর্মের ফল ভোগ করে৷ পূর্বে যা কিছু হয়ে গেছে সেসব আল্লাহ মাফ করে দিয়েছেন৷ কিন্তু এখন যদি কেউ সে কাজের পুনরাবৃত্তি করে তাহলে আল্লাহ তার বদলা নেবেন৷ আল্লাহ সবার ওপর বিজয়ী এবং তিনি বদ্লা নেবার ক্ষমতা রাখেন৷
৫/৯৭: আল্লাহ পবিত্র কাবা ঘরকে মানুষের জন্য (সমাজ জীবন) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিণত করেছেন। আর হারাম মাস, কুরবানীর পশু ও গলায় মালা পরা পশুগুলোকেও ( এ কাজে সহায়ক বানিয়ে দিয়েছেন) যাতে তোমরা জানতে পারো যে, আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত জানেন এবং তিনি সব জিনিসের জ্ঞান রাখেন৷
উপরের দুটি আয়াতেই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কাবা গৃহের কথা বলেছেন। এই পবিত্র কাবা গৃহ কোথায়?
নীচের আয়াতগুলির মর্মার্থ এবং ৫/৯৭ নং আয়াতের মর্মার্থ একই
২/১২৫) আর স্মরণ করো তখনকার কথা যখন আমি এই গৃহকে (কা’বা)লোকদের জন্য কেন্দ্র ও নিরাপত্তাস্থল গণ্য করেছিরাম এবং ইবরাহীম যেখানে ইবাদাত করার জন্য দাঁড়ায় সে স্থানটিকে স্থায়ীভাবে নামাযের স্থানে পরিণত করার হুকুম দিয়েছিলাম ৷ আর ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে তাকীদ করে বলেছিলাম, আমার এই গৃহকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকূ’-সিজদাকারীদের জন্য পাক-পবিত্র রাখো৷
৩/৯৬: নিসন্দেহে মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে ইবাদাত গৃহটি নির্মিত হয় সেটি বাক্কায় অবস্থিত ৷ তাকে কল্যাণ ও বরকত দান করা হয়েছিল এবং সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য হিদায়াতের কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছিল ৷

৩/৯৭) তার মধ্যে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শনসমূহ এবং ইবরাহীমের ইবাদাতের স্থান ৷ আর তার অবস্থা হচ্ছে এই যে, যে তার মধ্যে প্রবেশ করেছে, সে নিরাপত্তা লাভ করেছে৷ মানুষের মধ্য থেকে যারা সেখানে পৌঁছার সামর্থ রাখে, তারা যেন এই গৃহের হজ্জ সম্পন্ন করে, এটি তাদের ওপর আল্লাহর অধিকার ৷ আর যে ব্যক্তি এ নির্দেশ মেনে চলতে অস্বীকার করে তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন৷
বাক্কা নগরীই মক্কা নগরী। এ নগরীতেই ইব্রাহীম আ: সর্ব প্রথম আল্লাহর ঘর তৈরী করেছিলেন। যার সামর্থ্য আছে তার জন্য এ ঘরের হজ্জ করা ফরজ।

ইব্রাহীম আ: এর এই গৃহ নির্মানের ঘটনা আল্লাহ তায়ালা ২/১২৫-২/১২৯ নং আয়াত পর্যন্ত বিস্তারিতভাবে বনর্না করেছেন।

২. এই পবিত্র কাবা গৃহই হচ্ছে মাসজিদুল হারাম:
৮/৩৪- কিন্তু এখন কেন তিনি তাদের ওপর আযাব নাযিল করবেন না যখন তারা মসজিদে হারামের পথ রোধ করেছে? অথচ তারা এ মসজিদের বৈধ মুতাওয়াল্লীও নয়৷ এর বৈধ মুতাওয়াল্লী হতে পারে একমাত্র তাকওয়াধারীরাই৷ কিন্তু অধিকাংশ লোক একথা জানে না৷
৮/৩৫-এ ঘরের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাদের সালাত, সুতরাং কুফুরির জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।”
৩. এই কাবা ঘর বা মসজিদুল হারাম মক্কায় অবস্থিত:
৪৮/২৪: তিনিই সেই সত্তা যিনি মক্কা উপত্যকায় তাদের হাত তোমাদের থেকে আর তোমাদের হাত তাদের থেকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাদের ওপর তোমাদেরকে আধিপত্য দান করার পর৷ তোমরা যা কিছু করছিলে আল্লাহ তা দেখছিলেন৷
৪৮/২৫: এরাই তো সেসব লোক যারা কুফরী করেছে, তোমাদেরকে মসজিদে হারামে যেতে বাধা দিয়েছে এবং কুরবানীর উটসমূহকে কুরবানী গাহে পৌঁঠতে দেয়নি৷ যদি (মক্কায়) এমন নারী পুরুষ না থাকতো যাদেরকে তোমরা চিন না অজান্তে তাদেরকে পদদলিত করে ফেলবে এবং তাদের কারণে তোমরা বদনাম কুড়াবে এমন আশংকা না থাকতো (তাহলে যুদ্ধ থামানো হতো না ৷ তা বন্ধ করা হয়েছে এ কারণে) যে, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা যেন তাঁর রহমতের মধ্যে স্থান দেন৷ সেসব মু’মিন যদি আলাদা হয়ে যেতো তাহলে (মক্কাবাসীদের মধ্যে) যারা কাফের ছিল আমি অবশ্যই তাদেরকে কঠিন শাস্তি দিতাম৷

(আল্লাহ রসূল সঃ কে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি মক্কা বিজয় করবেন এবং মাথা মুন্ডন কবে কাবা ঘরে প্রবেশ করবেন অর্থাৎ হজ্জ করবেন….)

৪৮/২৭: প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন- যা ছিল সরাসরি হক৷ ইনশাআল্লাহ তোমরা পূর্ণ নিরাপত্তার সাথে অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে৷ নিজেদের মাথা মুণ্ডন করবে, চুল কাটাবে এবং তোমাদের কোন ভয় থাকবে না৷ তোমরা যা জানতে না তিনি তা জানতেন৷ তাই স্বপ্ন বাস্তব রূপ লাভ করার পূর্বে তিনি তোমাদেরকে এ আসন্ন বিজয় দান করেছেন৷
মক্কা উপত্যকা এবং মসজিদে হারাম কোথায়?

নীচের আয়াতটিতেও হজ্জের সময় মাথা মুন্ডনের কথা আছে এবং মসজিদুল হারামের কথা আছে:

২/১৯৬) আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যখন হজ্জ ও উমরাহ করার নিয়ত করো তখন তা পূর্ণ করো ৷ আর যদি কোথাও আটকা পড়ো তাহলে যে কুরবানী তোমাদের আয়ত্বাধীন হয় তাই আল্লাহর উদ্দেশ্যে পেশ করো ৷ আর কুরবানী তার নিজের জায়গায় পৌছে না যাওয়া পর্যন্ত তোমরা নিজেদের মাথা মুণ্ডন করো না ৷ তবে যে ব্যক্তি রোগগ্রস্ত হয় অথবা যার মাথায় কোন কষ্ট থাকে এবং সেজন্য মাথা মুণ্ডন করে তাহলে তার ‘ফিদিয়া’ হিসেবে রোযা রাখা বা সাদকা দেয়া অথবা কুরবানী করা উচিত ৷ তারপর যদি তোমাদের নিরাপত্তা অর্জিত হয় ( এবং তোমরা হজ্জের আগে মক্কায় পৌছে যাও ) তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে যে ব্যক্তি হজ্জের সময় আসা পর্যন্ত উমরাহর সুযোগ লাভ করে সে যেন সামর্থ অনুযায়ী কুরবানী করে ৷ আর যদি কুরবানীর যোগাড় না হয়, তাহলে হজ্জের যামানায় তিনটি রোযা এবং সাতটি রোযা ঘরে ফিরে গিয়ে, এভাবে পুরো দশটি রোযা যেন রাখে ৷ এই সুবিধে তাদের জন্য যাদের বাড়ী-ঘর মসজিদে হারামের কাছাকাছি নয় ৷ আল্লাহর এ সমস্ত বিধানের বিরোধিতা করা থেকে দূরে থাকো এবং ভালোভাবে জেনে নাও আল্লাহ কঠিন শাস্তি প্রদানকারী ৷

৪. নিরাপদ নগরী
১৪/৩৫: স্মরণ কর সেই সময়ের কথা যখন ইবরাহীম দোয়া করছিল, “হে আমার রব! এ শহরকে নিরাপত্তার শহরে পরিণত করো এবং আমার ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তিপূজা থেকে বাঁচাও৷
১৪/৩৭) হে আমাদের রব! আমি একটি তৃণ পানিহীন উপত্যকায়(অনুর্বর উপত্যকায়) নিজের বংশধরদের একটি অংশকে তোমার পবিত্র গৃহের কাছে এনে বসবাস করিয়েছি৷ পরওয়ারদিগার! এটা আমি এ জন্য করেছি যে, এরা এখানে নামায কায়েম করবে৷ কাজেই তুমি লোকদের মনকে এদের প্রতি আকৃষ্ট করো এবং ফলাদি দিয়ে এদের আহারের ব্যবস্থা করো, হয়তো এরা শোকরগুজার হবে৷
যারা তীন, জায়তুন, সিনাই পাহাড় এবং এই নিরাপদ নগরী দ্বারা জেরুসালেম কে বুঝাচ্ছেন, তাদের যুক্তি ১৪/৩৭ আয়াত নাকচ করে দেয়। কারণ জেরুসালেম এবং তার আশপাশের এলাকা শস্য-শ্যামল কিন্তু ইব্রাহীম আ: যে নগরী প্র্রতিষ্ঠা করেছিলেন সে নগরী তৃণ পানিহীন উষর উপত্যকায়(অনুর্বর উপত্যকায়) অবস্থিত। এটাই মক্কা নগরী ও তার আশপাশের এলাকার বৈশিষ্ট্য। এ নগরীর আশপাশের এলাকা চরম রুক্ষ ও উষর। এ অনুর্বর উপত্যকায় তীনও জন্মায়না, জায়তুনও জন্মায়না এবং এ শহরই ”বালাদিল আমিন” বা নিরাপদ নগরী।
(ইব্রাহীম আ: এর এ দোয়ারই বরকতে প্রথমে সমস্ত আরবের লোকেরা হজ্জ ও উমরাহ করার জন্য মক্কায় ছুটে আসতো আবার এখন সারা দুনিয়ার লোক সেখানে দৌড়ে যাচ্ছে। তারপর এ দোয়ার বরকতেই সব যুগে সব ধরনের ফল, ফসল ও অন্যান্য জীবন ধারণ সামগ্রী সেখানে পৌঁছে থাকে। অথচ এ তৃণপানি হীন অনুর্বর এলাকায় পুশুখাদ্যও উৎপন্ন হয় না।)

সাফা ও মারওয়া:
১৫৮: নিসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিশানীসমূহের অন্তরভুক্ত৷ কাজেই যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর হ্জ্জ বা উমরাহ করে তার জন্য ঐ দুই পাহাড়ের মাঝখানে ‘সাঈ’ করায় কোন গোনাহ নেই ৷ আর যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ও সাগ্রহে কোন সৎ ও কল্যাণের কাজ করে, আল্লাহ তা জানেন এবং তার যথার্থ মর্যাদা ও মূল্য দান করবেন ৷
এই সাফা ও মারওয়া কোথায়?
দুই জনপদ:
৪৩/৩১: এবং উহারা বলে, এই কুরআন কেন নাজিল করা হলোনা দুই জনপদের কোন প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তির উপর?
এই দুই জনপদ কোনটা কোনটা?
আরাফাত ও মাশআরুল হারাম:
২/১৯৮: আর হজ্জের সাথে সাথে তোমরা যদি তোমাদের রবের অনুগ্রহের সন্ধান করতে থাকো তাহলে তাতে কোন দোষ নেই ৷ তারপর আরাফাত থেকে অগ্রসর হয়ে ‘মাশআরুল হারাম’ (মুয্দালিফা) এর কাছে থেমে আল্লাহকে স্মরণ করো এবং এমনভাবে স্মরণ করো যেভাবে স্মরণ করার জন্য তিনি তোমাদের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ নয়তো ইতিপূর্বে তোমরা তো ছিলে পথভ্রষ্টদের অন্তরভুক্ত ৷

এই আরাফাত ও মাশআরুল হারাম কোথায়?
কুরাইশ
১০৬/৩: অতএব উহারা (কুরাইশরা) ইবাদত করুক এই গৃহের রবের ।
কুরাইশরা কোথায় বসবাস করতো এবং এই গৃহ কোথায়?
বর্তমানেও কুরাইশরা সৌদিআরবের মক্কায় বসবাস করে। যার মাধ্যমে কুরাইশ গোত্রের উৎপত্তি, তার নাম ফিহর ইবনে মালিক।

হাতীওয়ালা:
সুরা ফীলের মধ্যে যে হাতীওয়ালাদের কথা বলা হয়েছে, এই হাতীওয়ালারা কোথা থেকে এসেছে এবং কোথায় কী ধ্বংস করেছে?
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে আমাদের সালাতের কিবলা বা হজ্জ করার স্থান মক্কার কাবা, জেরুসালেম নয়।

Salat of various Prophets.

(by secterian)

সালাতের ইতিহাসঃ
সালাতের ইতিহাস অনেক পুরনো। কোরআন থেকে যেটা জানা যায় ইব্রাহিম নবীর সময় থেকে শুরু করে পরবর্তি সকল নবী রসূলের আমলে সালাত প্রচলিত ছিল।

ইব্রাহিমের সালাত।
২:১২৫ যখন আমি কা’বা গৃহকে মানুষের জন্যে সম্মিলন স্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ইব্রাহীমের দাঁড়ানোর জায়গাকে সালাতের ( ﻣُﺼَﻠًّﻰ ) জায়গা বানাও এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।

মূসা ও হারুনের সালাত।
১০:৮৭ আর আমি নির্দেশ পাঠালাম মূসা এবং তার ভাইয়ের প্রতি যে, তোমরা তোমাদের জাতির জন্য মিসরের মাটিতে বাস স্থান নির্ধারণ কর। আর তোমাদের ঘরগুলো বানাবে কেবলামুখী করে এবং সালাত কায়েম কর আর যারা ঈমানদার তাদেরকে সুসংবাদ দান কর।

ঈসার সালাত।
১৯:৩১ আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, যতদিন জীবিত থাকি, ততদিন নামায ও যাকাত আদায় করতে।

শুয়েবের সালাত।
১১:৮৭ তারা বলল-হে শোয়ায়েব (আঃ) আপনার সালাত কি আপনাকে ইহাই শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের বাপ-দাদারা যাদের উপাসনা করত? অথবা আমাদের ধন-সম্পদে ইচ্ছামত যা কিছু করে থাকি, তা ছেড়ে দেব? আপনি তো একজন খাস মহৎ ব্যক্তি ও সৎপথের পথিক।

জাকারিয়ার সালাত।
৩:৩৯ যখন তিনি কামরার ভেতরে সালাতে দাঁড়িয়েছিলেন, তখন ফেরেশতারা তাঁকে ডেকে বললেন যে, আল্লাহ তোমাকে সুসংবাদ দিচ্ছেন ইয়াহইয়া সম্পর্কে, যিনি সাক্ষ্য দেবেন আল্লাহর নির্দেশের সত্যতা সম্পর্কে, যিনি নেতা হবেন এবং নারীদের সংস্পর্শে যাবেন না, তিনি অত্যন্ত সৎকর্মশীল নবী হবেন।

বণী ইস্রাইলের সালাত।
২:৪৩ আর সালাত কায়েম কর, যাকাত দান কর এবং সালাতে অবনত হও তাদের সাথে, যারা অবনত হয়।

লুকমানের সালাত।
৩১:১৭ হে বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।
রসূলের সমসাময়িক কাফেরদের সালাত।
৮:৩৫ আর কা’বার নিকট তাদের সালাত শিস দেয়া আর তালি বাজানো ছাড়া অন্য কোন কিছুই ছিল না। অতএব, এবার নিজেদের কৃত কুফরীর আযাবের স্বাদ গ্রহণ কর।

সুতরাং আমরা নিজে নিজে কোরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করি তা ভালো, কিন্তু এমন কিছু নতুন আবিষ্কার না করি, যেটা পূর্বেকার সালাতে ছিলোনা। কারণ আল্লাহ বলছেনঃ

(৫ঃ৩) আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম এবং
তোমাদের উপর আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম।