Category Archives: Bangla

হাদিস কোনটা জাল কোনটা সহিহ

By Mahmood Hasan fbfd

ভুলে ভরা হাদিস কোনটা জাল কোনটা সহিহ, আপনি কি বলতে পারবেন? যেটা যার মতবাদের সাথে মিলে যায় সেটা সঠিক হিসেবে ধরে নেয়, বাকিগুলো জাল ৷

শিয়াদের পাচটা হাদিসের কিতাব, সুন্নিদের ছয়টা আলাদা হাদিসের কিতাব ৷
সুন্নি, শিয়াদের উপদলগুলোর মধ্যেও হাজার হাজার কিতাব ৷ তো ভাই, নবীর কথা কোন কিতাবে আছে??

নবী মৃত্যুর 250 বছর পর সৌদি থেকে 4236 মাইল দুরের একজন পারসিয়ান নবীর নামে একটা কিতাব লিখে বললো এগুলা নবীর বানী ৷ সেটা বিশ্বাস করতে হবে? আব্বাসীয় আমলে স্বেচ্ছাচারি শাষকের বিস্বস্ত সহযোগী বুখারী শাষকের অনুগত থেকে অতি আবেগে শাষকের আরও সান্নিধ্য পাবার মানসে সুন্নিদের জন্য একটা কিতাব লিখল, কারন তৎকালিন শিয়া সুন্নি বিরোধ ছিল ৷ আর শাষক সুন্নিদের আলাদা একটি কিতাবের অপেক্ষাতেই ছিলেন, যেখানে নবীর কর্মকান্ড লেখা থাকবে এবং সেগুলো সুন্নিদের পক্ষে থাকবে ৷ সুন্নিদের পক্ষে নবী ছিলেন, এবং নবীর সমস্ত কার্যকলাপ সুন্নিদের পক্ষে থাকলে, সিংহাসন থেকে আর নামায় কে?

শিয়ারাও নবীর নামে তাদের পক্ষে হাদিস লিখে নিল ৷ এবং আলীকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে আলির বংশ হতে শাষক হবে এমন প্রমান পেশ করে হাদিস লিখলো ৷ এখন সেগুলাই হয়ে গেল ধর্মের বই ? নবীর বানী??

বুখারী পারসিয়ানদের প্রাচিন ধর্ম সাসানীয় যুগের জরুথুষ্টিয় ধর্ম থেকে কপি করে বুখারী লিখেছে ৷
প্রমান চাইলে, জরুথুষ্টিক ধর্ম সম্পর্কে জানুন ৷৷

আল্লাহ কুরআনে স্পষ্ট করে বলেছেন, কুরআন আহসানাল হাদীস(উত্তম বানী) সম্বলিত কিতাব (39:23)।
এর বাইরে সব লাহওয়াল হাদীস (অসার বানী, মানুষের মনগড়া বানী )-31:6
এবং জাসিয়াহ-৬

আমিনের অর্থ

By hamidul islam fbfd

আমারা যে জামাতে সালাত আদাই করার সময় সুরা ফাতিহার শেষে আমিন বলি ! এই আমিনের অর্থা নাজেনে বলি ! আলেমদেরকে আমিনের অর্থ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে আমিন অর্থ ‘ কবুল করো ‘ এটা ডাহা মিথ্যা কথা ‘ আমিন শব্দোটা আরবি না !

কুরআনে থেকে যে আমিন পাওয়া যায় তার অর্থ( বিশ্বস্ত) 7/68::26/107’125’143’162’178::27/39::28/26::44/18 আয়াত দেখলে পাওয়া যাবে ইনসা আল্লাহ ৷ ‘ নবী মুহাঃ সাঃ কে বাল্য কালে মক্কার লোকেরা (আল আমিন) বলে ডাকতো , যার অর্থ বিশ্বাসি ৷ ‘ তারপরে হাদিসেও প্রমান করছে আমিন অর্থ (বিশ্বস্ত) ,, , মুসলিম হাদিস৬১৪৬-(৫৩/২৪১৯) আবূ বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ, যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ….. আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সকল উম্মাতের একজন আমীন (বিশ্বস্ত) থাকে। আর হে উম্মাত! আমাদের আমীন হলেন আবূ উবাইদাহ ইবনু জাররাহ্ (রাযিঃ)। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৩৪, ইসলামিক সেন্টার ৬০৭১)

**কেউ পারলে প্রমাণ করুন যে (আমিন ) অর্থ কবুল করো ‘ কুরআন ও থেকে হাদিস৷

খ্রীষ্টানরা পার্থনা শেষে আমীন বলে !

ঈহুদীরা পার্থনা শেষে আমিন বলে !
আমরা যে আমিন শব্দোটা বলি এটা কুরআনের ভাষানা বা আরবি ও না৷

[‘ইবরাহীম প্রার্থনা শেষে বললেন,] ‘আমার রব! আমাকে সালাতী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও। আমাদের রব! আমার প্রার্থনা কবুল করুন (১৪:৪০); সূরা-১৪, ইবরাহীম, আয়াত-৪০। মুসলিমরা ইবরাহীমের মত প্রার্থনা শেষে ‘রাব্বানা! ওয়াতাকাব্বাল দু-য়ায়ি’
বলেছেন ! আমাদের কে ও দোয়া শেষে (১৪/৪০) আয়াত বলতে হবে ৷ আমিন বর্যন করুন ৷

.

Comments:-
কুরআনে আমীন শব্দটি অনেক জায়গায় আছে।
27/39 আমীন= , বিশ্বস্ত।
26/107,125,143,162,178 আমীন= বিশ্বস্ত।
28/26 আমীন= বিশ্বস্ত।
44/18 আমীন= বিশ্বস্ত।
এখন রাসুল সুরা ফাতিহার শেষে বিশ্বস্ত অর্থে আমীন বলেছেন??
নাকি,
মক্কা বাসী রাসুলকে আল আমীন(আমানতদার, বিশ্বাষী, বিশ্বস্ত) নামে ডাকতো, সেই অনুসারে সুরা ফাতিহার শেষে মানুষকে নিজের উপ নাম আমীন বলতে বলেছেন???
অথচ আরবী ভাষায় আমীন শব্দের অর্থ ” কবুল কর ” নয়।
রাসুল যদি সুরা ফাতিহার পরে ” কবুল কর “কথাটি বলার প্রয়োজন মনে করতেন, তবে নিশ্চয় ” কবুল কর ” কথাটি নিজেও আরবীতে বলতেন, এবং মানুষকেও আরবীতেই ” কবুল কর ” বলা শেখাতেন। কেননা রাসুল এবং সাহাবীগন আরবী ভাষী।
অবশ্য আমীন عَمِينَ (7/64) কথাটি অন্ধ অর্থেও আরবীতে ব্যবহার হয়েছে।.
…..x….

যারা আল্লাহর আয়াত মানে না-কাফির,যালিম,ফাসিক

যারা আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যান করে / যারা আল্লাহর আয়াত মানে না-

১. তারা নবীর শত্রু, শয়তান (৬:১১২)!
২. তারা তাগূত- জাহান্নামী (২:২৫৭)!
৩. তাদের অবস্থা হাঁপানো কুকুরের মত (৭:১৭৬)!
৪. তারা পুস্তকবহনকারী গাধার মত (৬২:৫)।
৫. তারা পশুর মত, বা তার থেকেও বিভ্রান্ত (৭:১৭৯)!
৬. তারা নিকৃষ্ট জীব (৮:২২)!
৭.তারা বধির ও মুক, অন্ধকারে রয়েছে (৬:৩৯)!
৮. তারা কাফির (৫:৪৪)!
৯. তারা যালিম (৫:৪৫)!
১০. তারা ফাসিক (৫:৪৭)!
১১. আল্লাহর আয়াত আসার পর যারা আল্লাহর আয়াত ভুলে থাকবে
তাদেরকে হাসরের মাঠে অন্ধ অবস্থায় উঠানো হবে (২০:১২৪-১২৭)!

### আমি আপনাকে কুরআনের আয়াত দারা গালি দিলাম ।

Source fbgp

যারা আল্লাহর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে

By see below link

‘আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সেই সকল নামেই ডাকবে; যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে; তাদের কৃতকর্মের ফল দেওয়া হবে (৭:১৮০); সূরা-৭, আ‘রাফ, আয়াত-১৮০।

আল্লাহ বলেন-
১. বল, ‘তোমরা ‘আল্লাহ’ (নামে) ডাক বা ‘রাহমান’ (নামে) ডাক, তোমরা যে নামেই ডাক সকল সুন্দর নামই তো তাঁর (১৭:১১০); সূরা-১৭, বনী ইসলাঈল, আয়াত-১১০।
[আল্লাহ নিজে যে সকল নাম বলেছেন দুনিয়ার সকল মানুষ আল্লাহর একটি নাম দিলে সে নাম কখনই আল্লাহর রাখা নাম থেকে সুন্দর হতে পারে না।]
আল্লাহ বলেন-
২. বল, ‘হাসবিইয়াল্লাহু (৯:১২৯; ৩৯:৩৮); সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-১২৯। সূরা-৩৯, যুমার, আয়াত-৩৮।
৩. বল, ‘… ‘আল্লাহুছ সামাদ (১১২:২); সূরা-১১২, ইখলাস, আয়াত-২।
৪. তারা বলত, ‘হাসবুনাল্লাহু (৯:৫৯); সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-১২৯।

আল-কুরআনুল করীম- ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এ ‘আকবার’ শব্দের অর্থ দেখুন- ইবরাহীম বলল, ‘হাযা আকবার [ইহা (সূর্য) সর্ববৃহৎ) [(৬:৭৮); সূরা-৬, আন‘আম, আয়াত-৭৮], ফাযাউল আকবার (মহাভীতি) [(২১:১০৩); সূরা-২১, আম্বিয়া, আয়াত-১০৩]

আকবার শব্দের অর্থ দেখুন-
১. সর্ববৃহৎ (৬:৭৮);
২. মহা (২১:১০৩);
৩. অধিক (২:২১৭, ২১৯; ৪০:১০);
৪. শ্রেষ্ঠ (১৬:৪১; ৪৮);
৫. সর্বশ্রেষ্ঠ (৬:১৯; ৯:৭২; ২৯:৪৫);
৬. গুরুতর (২:২১৭; ৩:১১৮);
৭. শ্রেষ্ঠতর (১৭:২১);
৮. মহত্তর (১৭:২১);
৯. কঠিনতর (৩৯:২৬; ৪০:৫৭; ৬৮:৩৩)। উক্ত অর্থানুসারে ‘আল্লাহু আকবার’ এর ৯টি ভিন্ন অর্থ হতে পারে।

‘আল্লাহু আকবার’ যে আল্লাহর বিকৃত নাম তা কুরআন খুলে সূরা ও আয়াত নং মিলিয়ে দেখুন- ‘রিদ ওয়ানুম মিনাল্লাহি আকবার ( ৯:৭২), ‘ওয়ালি যিকরিল্লাহি আকবার (২৯:৪৫) ও ‘লামাকতুল্লাহি আকরব (৪০:১০)। এসব ক্ষেত্রে আল্লাহ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ডাকতেও বলেন নি।

আল্লাহ বলেন, ‘যারা আমার আয়াতসমূহকে বিকৃত করে তারা আমার অগোচর নয়। শ্রেষ্ঠ কে— যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে, না যে কিয়ামতের দিন নিরাপদে থাকবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা কর (৪১:৪০): সূরা-৪১, হা-মীম আস-সাজদা, আয়াত-৪০।

.

https://m.facebook.com/groups/1805246912824708?view=permalink&id=2152397891442940

খতনা, পোশাক

Fm zahir wapp

[4/22, 12:39 AM] ‪+91 97077 58106‬: ৩৮. কুরআনে ‘খৎনার উল্লেখ নেই, ইঞ্জিল ও তৌরাতে ‘পুরুষের খৎনা

কুরআনে দেখুন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, যারা ইহুদী হয়েছে এবং নাসারা ও সাবিঈন যারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য পুরুস্কার আছে তাদের রবের নিকট। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না;-২:৬২; ৫:৬৯। ‘আর যারা ঈমান আনে ও সৎকার্য করে তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে;-২:৮২।

ইঞ্জিলে দেখুন, ‘অ-ইহুদিদের খৎনা করান দরকার এবং তারা যে মূসার শরীয়ত পালন করে, সেজন্য তাদের হুকুম দেওয়া দরকার;-৫ম খন্ড : প্রেরিত, ১৫:৫, পৃ: ৩৪৬। ‘তুমি যদি মূসার শরীয়ত মেনে চল, তবে খৎনা করাবার মূল্য আছে; … কেবল বাইরের দিক হতে যে ইহুদি সে আসল ইহুদি নয়। দেহের বাইরের খৎনা করান হলেই যে সে আসল খৎনা করান হলো, তাও নয়। কিন্তু অন্তরে যে ইহুদি, সে-ই আসল ইহুদি। আসল খৎনা করাবার কাজ অন্তরের মধ্যেই হয়; ৬ষ্ঠ খ- ঃ রোমীয়, ২:২৫-২৯, পৃ: ৪০১। ‘খৎনা করালেই বা কি আর না করালেই বা কি, খোদার হুকুম পালন করাই হলো আসল কথা;-৭ম খ- : ১ করিস্থীয়, ৭:১৯, পৃ: ৪৫০। ‘যার খৎনা করান হয় সে মূসার গোটা শরীয়ত পালন করতে বাধ্য;-৯ম খ- : গালাতীয়, ৫:৩, পৃ: ৫০৯। ‘এটা ছাড়া, তোমরা মসীহের সংগে যুক্ত হয়েছ বলে তোমাদের খৎনা করা হয়েছে। এ খৎনা কোন মানুষের হাতে করান হয়নি, মসীহ নিজেই তা করেছেন;-১২শ খ- : কলসীয়, ২:১১, পৃ: ৫৪১। ‘এ অবস্থায় অ-ইহুদি বা ইহুদির মধ্যে, খৎনা-করান বা না খৎনা-না-করান লোকের মধ্যে, অশিক্ষিত, নীচজাতি, গোলাম বা স্বাধীন লোকের মধ্যে কোন তফাৎ নেই;-১২শ খন্ড : কলসীয়, ৩:১১, পৃ: ৫৪৩। উপরোক্ত আয়াতগুলো ছাড়াও ইঞ্জিল শরীফের ১৪৩, ১৪৬, ২৫১, ৩১৭, ৩৪৫, ৩৪৯, ৩৬৯, ৪০৪, ৪০৫, ৫০১, ৫০২, ৫০৯, ৫৩৩ ও ৫৮২ পৃষ্ঠায় খৎনার কথা উল্লেখ আছে।

তৌরাতে দেখুন, [আল্লাহ্ ইবরাহীমকে বললেন,] আমার এ যে ব্যবস্থা, যার নিশানা হিসেবে তোমাদের প্রত্যেকটি পুরুষের খৎনা করাতে হবে, তা তোমার ও তোমার বংশের লোকদের মেনে চলতে হবে। … পুরুষ-সন্তানের আট দিনের দিন এ খৎনা করাতে হবে, …. যে লোকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটা নয়, তাকে তার জাতির মধ্য হতে মুছে ফেলা হবে, কারণ সে আমার ব্যবস্থা অমান্য করেছে;-পদাষেশ ১৭:১০-১৪, পৃ: ৪৬। ‘ইবরাহীমের নিজের যখন খৎনা করান হল তখন তাঁর বয়স ছিল ৯৯ বৎসর, আর তাঁর ছেলে ইসমাইলের বয়স ছিল ১৩। একই দিনে ইবরাহীম ও তাঁর ছেলে ইসমাইলের খৎনা করান হয়েছিল;-পদাষেশ ১৭:১০-১৪, পৃ: ৪৭। আল্লহর হুকুম অনুসারে ইবরাহীম আট দিনের দিন তাঁর ছেলে ইসহাকের খৎনা করালেন। ইবরাহীমের বয়স যখন ১০০ বছর তখন তাঁর ছেলে ইসহাকের জন্ম হয়েছিল;-পদায়েশ-২১:৪-৫, পৃ: ৫৭। উপরোক্ত আয়াতগুলো ছাড়াও তৌরাতের-১০৩, ১০৪, ১৬৭, ১৮৯, ২৯৭, ৪৯৭ ও ৫৪৯ পৃষ্ঠায় খৎনার কথা উল্লেখ আছে।

[অপরিচিত কোন মুসলিম, ইহুদী ও শিখ বা বৌদ্ধ পুরুষের মৃতদেহ এবং হিন্দু-মুসলিম, ইহুদী-নাসরা এবং নাস্তিক, বৌদ্ধ বা শিখ ধর্মের মেয়েদের মৃতদেহ থেকে কোন প্রকারেই মুসলিম নারী-পুরুষের লাশ শনাক্ত করা সম্ভব নয়। আল্লাহর কিতাব কুরআনে পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটলে ‘মুসলিম হয় এমন আয়াত পাওয়া যায় না।]
[4/22, 12:44 AM] ‪+91 97077 58106‬: ৩৫. কুরআনে ‘পোষাক স্থান-কাল-পাত্র ভেদে, ইঞ্জিল ও তৌরাতে দাড়ি, টুপি, পাগড়ী ও কোর্তা-জুব্বা
কুরআনে দেখুন, ‘হে বনী আদম! তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশ-ভূষার জন্য আমি তোমাদের লেবাস (পোষাক) দিয়েছি এবং তাকওয়ার লেবাস, এ-ই সর্বোৎকৃষ্ট। এ আল্লাহর আয়াতসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে;-৭:২৬।

ইঞ্জিল শরীফে দেখুন, ‘তিনি তাঁদের (ঈসা তাঁর বার জন সাহাবীকে) জুতা পরতে বললেন বটে, কিন্তু একটার বেশি দুইটা কোর্তা পরতে নিষেধ করলেন;-২য় খ- ঃ মার্ক, ৬ : ১০, পৃ: ৯৯। ইঞ্জিলের ২৮৯ পৃষ্ঠায় কোর্তা এবং ৭৯, ১৯৬, ৬৮৮ ও ৬৯০ পৃষ্ঠায় জুব্বার উল্লেখ আছে।

তৌরাত শরীফে দেখুন, ‘তৌরাতে দেখুন-২৩০, ২৩২, ২৩৩, ২৩৪, ২৬৪, ২৬৬, ২৮১ ও ২৮৬ পৃষ্ঠায় কোর্তা, ২৮৬, ২৯১ ও ৩১০ পৃষ্ঠায় আলখাল্লা এবং ২৩৩, ২৩৪, ২৬৪, ২৮৬ পৃষ্ঠায় মাথায় টুপি পরা ও ২৩০, ২৩৪ ও ২৬৪ পৃষ্ঠায় পাগড়ি পরিধান করার উল্লেখ আছে। ‘ইউসুফ দাঁড়ি কামিয়ে কাপড়-চোপড় বদলিয়ে ফেরাউনের নিকটে গিয়ে উপস্থিত হলেন;-পদায়েশ ৪১:১৪। ‘ইমামদের মাথা কামানো, দাড়ির আগা ছাঁটা কিংবা শরীরের কোন জায়গা ক্ষত করা চলবে না;- লেবীয় ২১:৫। [তৌরাত অনুসারে মুসল্লিরা দাড়ি কামান। কুরআনে সাহায্যকারী নবী হারুণের দাড়ির (২০:৯৪) উল্লেখ আছে। সুতরাং দাড়ি, টুপি, পাগড়ি ও লম্বা জামা নিয়ে বাড়াবাড়ি নয় বরং পোষাক হবে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে।

যা কুরআনে নাই, তা মানেন কার নির্দেশে?

FM fd fd

কুরআনের বেশিরভাগ আয়াতে আল্লাহ রাসুলকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন,
বলুন,
জানিয়ে দিন,
বলে দিন,
অবিশ্বাসিদের জানান দিন,
সংবাদ দিন,
আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে,
তাদের কাছে পৌছায়ে দিন, ইত্যাদি ইত্যাদি ৷ ডাইরেক্ট আল্লাহ রাসুলকে নির্দেশ দিচ্ছেন কুরআন প্রচারের ৷ তাহলে বুঝুন, রাসুলের মুল দায়িত্ব কি ছিলো? তিনি কি পৌছাতেন?

মিথ্যা হাদিসগুলো দেখুন…..
বোখারী সহ সকল মিথ্যা হাদিসে বলা হয় অনুমানের উপর ৷ অনেক জটলার মাধ্যমে ৷
অমুক তমুকের মুখ থেকে শুনেছেন, আবু হুরায়রা নবিজীকে বলতে শুনেছেন, নবী বলেছেন আল্লাহ এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷
আবু হুরায়রা কর্তৃক বর্নিত, আয়শা বর্নিত, রাসুল এটা করেছেন, ওটা করেছেন আবু হুরায়রা আয়েশা দেখেছেন, সুতরাং এগুলো বিধান ৷

কত মারপ্যাচ করে রাসুলের নামে মিথ্যা হাদিস বানানো ৷ যাতে মানুষ পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে সেজন্য সাহাবী, রাসুল, আল্লাহর নামে নানান দলিল প্রমান ৷

বোখারীর বুদ্ধির তারিফ করতে হয় কিন্তু ৷

যা কুরআনে নাই, তা মানেন কার নির্দেশে?

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী

Courtesy – A. A. Mamun fbfd

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী
:
ইমাম মেহেদী নামক এক ব্যক্তি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক ধরনের গল্প চালু আছে। এই ব্যক্তি নিয়ে গল্পের মূল বিষয় হচ্ছে উনি একদিন পৃথিবীতে আসবেন এবং মুসলিম উম্মাহকে নেতৃত্ব দিবেন, মুসলিম উম্মাহ সাফল্যের শিখরে উঠবে, এরপর কিয়ামত হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কমবেশি সবাই এই গল্প জানেন। আমার প্রশ্ন হল আপনি এই গল্প কিভাবে জানেন? আরেকজনের কাছে শুনেছেন, কোন বইয়ে পড়েছেন অথবা কোন হুজুরের বয়ান শুনেছেন, অথবা সবগুলি। বিভিন্ন বইয়ে আপনি এর স্বপক্ষে হাদিসের থেকে রেফারেন্স পেয়েছেন, হুজুরেরা বলেছে, খুব বেশি হলে আপনি ঐ হাদিসের রেফারেন্স মিলিয়ে দেখেছেন। যার ফলে আপনার বিশ্বাস জন্মেছে যে এই ঘটনা সত্য, এবং এর ফলে আপনি এর উপর নির্ভর করে বসে আছেন যে উনি একদিন এসে মুসলমানদের কে সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিবেন। কিন্তু সময় চলে যায় আর উনিও আসেন না এর ফলে মুসলমানদের দুর্দশাও শেষ হয়না। কিন্তু আপনি স্বপ্ন দেখে যেতেই থাকেন। আপনি স্বপ্ন দেখতে থাকুন, এর মধ্যে আমি উনার সম্পর্কে যে তথ্য গুলি পাওয়া যায় তা নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করে দেখি যে আসলে এই রকম কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব আছে কি না বা উনার সম্পর্কে যে কথা গুলি বলা হয় তা কতটুকু সত্য। আমি এই সম্পর্কে যাদের সাথে কথা বলেছি , একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি যে কেউ এই সংক্রান্ত সবগুলি হাদিস জানেনা, এবং বিভিন্ন বিপরীতমুখী হাদিসের পার্থক্যটা ধরতে পারেন না। আমি এইখানে উনার সম্পর্কে সবগুলি গল্প/হাদিস (আমি যতগুলি জানি আর কি) একসাথে করে দেখব, মূল বিষয়টা কি দাড়ায়ঃ

ইমাম মেহেদী এবং কোরআনঃ
এর আগে আমি ঈসা (আঃ) যে আবার পৃথিবীতে আসবেন না তা আমি কোরআন থেকে প্রমান করে দেখিয়েছি। এটা খুব সহজ একটা বিষয় ছিল যেহেতু ঐ ক্ষেত্রে আমি কোরআনের রেফারেন্স দিতে পেরেছি- যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ Click This Link ) কিন্তু এই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন এই কারনে যে, কোরআনে মেহেদী সংক্রান্ত কোন কথা বলা নাই। যেহেতু মেহেদী নামক কোন কনসেপ্ট কোরআনে নাই, সেহেতু এইখানে কোরআন থেকে এই সম্পর্কে বলার কিছু নাই, কিন্তু আমরা কোরআনের নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখব যে কোরআনের নিয়ম অনুযায়ী এই মেহেদী কনসেপ্ট ইসলামে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কোরআন অনুযায়ীঃ
১। দ্বীন সম্পূর্ণ (৫:৩)
২। কোরআন সত্য মিথ্যা পার্থক্য নির্ণয় কারী (ফুরকান) (২:১৮৫, ২৫:১)
এই আয়াতগুলির সম্মিলিত অর্থ হচ্ছে ঃ

“কোরআনে যা কিছু বলা হয়নি তা আমাদের ধর্ম/দ্বীন এর ব্যপারে গুরুত্তপুর্ন নয় এবং যা কিছু কোরআনের সাথে সাঙ্গর্সিক তা অবশ্যয় বর্জনীয়”।

সুতরাং, যারা কোরআন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তাদের জন্য “মেহেদী বলে কিছু নাই অথবা মেহেদী কোনভাবেই ইসলামে গুরত্বপুর্ন নয়” কোরআন অনুযায়ী এটাই সঠিক বিশ্বাস।

অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে বেশিরভাগ মুসলমানই শুধুমাত্র কোরআনের কথা মানতে চান না। যদি বলেন, আল্লাহ কোরআনে এইটা বলেছে, তাহলে সাথে সাথে তারা আরও দশটা হাদিস নিয়ে আসবেন যেখানে ঠিক এইটার বিপরীত কথা বলে হয়েছে। এই সমস্যাটা ব্যপক। কোন ভাবেই বোঝানো যায়না কোরআন কোনভাবেই হাদিসের সাব-অর্ডিনেট না, বরং এর উলটাটাই সত্য। কোন কারনে হাদিস কোরআনের সাথে কনফ্লিক্ট করলে কোরআনের কথাই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এর উলটা টা প্রমান করার চেস্টায় ব্যস্ত। যারা কোরআন বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এখানেই শেষ। যারা হাদিস থেকে মেহেদীর আগমন সংক্রান্ত বিষয় প্রমান করার চেষ্টায় ব্যস্ত এবং মনে করেন এই বিষয়টা খুবই গুরত্বপুর্ন তাদের জন্য আমার এই চেষ্টা।

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ (ইতিহাস এবং ষড়যন্ত্র)ঃ
ধারনা করা হয় “আব্দুল্লাহ বিন-সাবাহ”- এই মুনাফিক (আগে ইহুদী ছিল, পরে মুসলমান হয়) প্রথমে এই ঈসা (আঃ) এবং মেহেদী আসার গল্প/গুজব ছড়ায়। এমনকি সে মুহাম্মদ (সাঃ) আবার পৃথিবীতে আসবেন এই গুজবও ছড়ায়। তার এই ছড়ানো এই গুজব সেই সময়ে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু প্রথম বীজটা সেই রোপণ করেছে এইটা অনেকের বিশ্বাস। যখন উমাইয়া খিলাফত এবং আব্বাসীয়দের মধ্যে দ্বন্ধ চরমে, তখন আমরা একজন বিশেষ সন্দেহভাজন মানুষের আবির্ভাব দেখি। উনি হচ্ছেন আবু মুসলেম খোরসানি। তিনি ইস্ফানে জন্ম গ্রহণ করেন এবং কুফায় বেড়ে উঠেন। মুহাম্মদ আব্বাসির ছেলে ইব্রাহিম তার মেধায় আকৃস্ট হয়ে তাকে তার পক্ষে প্রচারনা চালানোর দায়িত্ব দেয়। সে প্রচার করে যে খুব শিগ্রই ইমাম মেহেদী খুরসান প্রদেশ থেকে আসবেন এবং তার সেনাবাহিনীর পতাকা এবং পোশাকের রং হবে কাল। এই প্রচার যখন চরমে পৌছাল, সে খুরসান থেকে নিজে কাল পাতাকাবাহী এবং কাল রঙের পোশাক সম্বলিত সেনাবাহিনী নিয়ে বের হল এবং বানু উমাইয়া খিলাফত আক্রমণ করে তাদেরকে পরাজিত করল। (ইমাম মেহেদীর আর্মির সাথে যুদ্ধ করার মানসিক জোর তখন উমাইয়া খিলাফতের ছিলনা বলেই মনে হয়)। এইভাবেই উমাইয়া খিলাফতের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং আব্বাসীয় খিলাফতের শুরু হয়। আব্বাসীয় খলিফা তার মেধায় মুগ্ধ হয়ে এবং তার ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে , যাতে ভবিষ্যতে নিজেরা এই ধরনের বিপদে পড়তে না পারে সেই জন্য তাকে হত্যা করেন। আর এইভাবেই ইমাম মেহেদী নাটকের মধ্য দিয়ে এক ক্ষমতার পালা বদল, এবং এই ধরানার উৎপত্তি।

ধর্মীয় পটভূমিঃ
ইমাম মেহেদীর বিশ্বাসের উত্থান ইরানে (তৎকালীন পার্সিয়ান স্ম্রাজ্য)। ধর্মীয় দিক থেকে দেখলে এইটা মুলত শিয়াদের আবিষ্কার, পরে সুন্নীরা এই ধারণা গ্রহণ করে, যদিও ইমাম মেহেদী নামে কেউ একজন আসবে এই ধরনের কোন অথেনটিক হাদিস সুন্নী গ্রন্থে পাওয়া যায় না। আমরা এখন এই মুসলমানদের এই দুই দল শিয়া এবং সুন্নীদের মধ্যে কিভাবে ইমাম মেহেদী নামক ধারনার জন্ম হয়েছে তা দেখব।

শেহের বানুর ইতিহাসঃ
শিয়া কাহিনী অনুযায়ী, খলিফা হযরত উমরের সময় যখন পারস্য স্ম্রাট ইয়াজদগার্ড (Yazd Gard) মুসলমানদের হাতে পরাজিত হল, তখন তার মেয়েদেরকে উমরের সামনে যুদ্ধবন্দী হিসাবে উপস্থিত করা হল। উমর তাদেরকে ওপেন সেলের অর্ডার দিল, কিন্তু হযরত আলী তাদের বংশগত পরিচয়ের জন্য তাদেরকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দিল।হযরত আলীর পরামর্শ অনুযায়ী তাদের মুল্য নির্ধারণ করা হল এবং তাদের একজনকে ইমাম হুসেন, আরেকজনকে মুহাম্মদ বিন আবু বকর এবং তৃতীয় জন কে আব্দুল্লাহ বিন উমরের কাছে হস্তান্তর করা হল। যে মেয়েটা ইমাম হুসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল তার নাম শেহের বানু ( তার আসল নাম জাহান শাহ- শিয়া দলীল হিসাবে, উমর তার নাম দিয়েছিল শেহের বানু)। এই সম্পর্কে যে বর্ণনা এসেছে তা হলঃ “Abu Abullah! You will have a son from her womb who will be the best in the world.” Hence Ali Ibne Hussain was born, who was the best Arab because he was Hashmi and the best Ajami because he was Iranian.” (Kitab us Shaafi – Vol. I)
এই ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু হচ্ছে তথাকথিত ইমাম মেহেদীর পূর্ব পুরুষ। কিন্তু শিয়াদের বানানো এই গল্প পড়ে এটা বানানো একটা গল্প কারনঃ

১। কোরআন অনুযায়ী যুদ্ধবন্দীদের কে হয় দয়া করে অথবা বিনিময়ের মাধ্যমে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কোন অপশন নাই (৪৭:৪)। হযরত উমর এবং হযরত আলী অবশ্যয় এটা জানতেন। যার ফলে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেওয়া বা কারো কাছে বিক্রি করে দেবার প্রশ্নই আসে না।

২। যখন হযরত সাদ মাদিয়ান দখল করেন, ততক্ষণে মাদিয়ান খালি হয়ে গেছে এবং সম্রাট ইয়াজদগার্ড তার পরিবার সহ পালিয়েছেন। এই জন্য ঐসময়ে তার মেয়েদেরকে বন্দী করার কোন প্রশ্ন আসেনা। তার মেয়েদেরকে একমাত্র তখনই বন্দী করার প্রশ্ন আসে যখন তাকে গুপ্তহত্যা করা হয়, কিন্তু সেই সময়টা হচ্ছে ৩০ হিজরি, যা হযরত উসমানের শাসনকাল, হযরত উমরের নয়।

৩। হযরত ইমাম হুসেইনের জন্ম ৫ হিজরি এবং মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরি, এর অর্থ হযরত ইমাম হুসেইনের ১১ বছরের সময়। এই ১১ বছরে উনি বিয়ে করেছেন এই কথাটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। (হলেও হতে পারে, তবে আমিই ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করিনা)

৪। সম্রাট ইয়াজদগার্ড সিংহাসন আরোহণ করেন ১৩ হিজরিতে (প্রায় একই সময়ে হযরত উমর দ্বিতীয় খলিফা হিসাবে নিযুক্ত হন) যখন তার বয়স ছিল ১৮। মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরিতে, যখন তার বয়স ২১। এখন এই ২১ বছর বয়সে কিভাবে তার তিনটা বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকে তা কোনভাবেই বোধগম্য না।

উপরোক্ত কারনে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারন আছে যে এই শেহের বানুর (যার অস্থিত্ব সন্দেহজনক) সাথে হযরত ইমাম হুসেইনের বিবাহের গল্প বানানো (এই গল্প বানানোর পিছনে একটা বিশাল ষড়যন্ত্র মুলক উদ্দেশ্য আছে, যা এখানে আমার লিখার বিষয় না )।
সুতরাং যদি এই গল্প বানানো হয় তবে ইমাম মেহেদীর অস্তিত্বও বানানো কারন এই দুইজনই (ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু) হচ্ছে ইমাম মেহেদীর বংশ তালিকার প্রথমদিকেই (হযরত আলীর পরে) তাদের স্থান, যাকে বলে গোঁড়ায় গলদ।

ইমাম মেহেদী এবং শিয়া গ্রন্থঃ
এইখানে আমরা যে কথাগুলি বর্ণনা করব তার সবকিছুই আহসানুল মাকাল (যা শিয়াদের খুবই উচ্চ সম্মানিত গ্রন্থ ) থেকে নেওয়া। এই গ্রন্থের কথাগুলি পড়ার সময় দয়া করে নিজের মাথাটাকে একটু ব্যবহার করবেন। একটা বিষয় আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে আমি এখানে কাউকে, বা কোন দল কে ছোট করার উদ্দেশ্যে এই কথা গুলি বর্ণনা করছিনা। আমি শুধু এই বর্ণনার সাথে ইমাম মেহেদীর যোগসূত্র গুলি দেখাবার চেষ্টা করব। তার পরেও যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে আঘাত পান, তবে আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

এই নাটকীয় ঘটনা ঘটে ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ বছর পরে।

১। আমি লেডি মালেকা- রোম সম্রাট কাইজারের পুত্রের কন্যা। আমার মায়ের নাম শামুন (Shamoun)- যে ঈসার বংশধর। কিছু সময় আগে নবী মুহাম্মদ আমার প্রপিতামহ ঈসার সাথে দেখা করেছিল এবং আমাকে (মালেকা) তার ছেলে হাসান আকসারির ( মৃত ৮৭৪ সাল) সাথে বিবাহ দিতে অনুরুধ করেন। (এই হাসান আকসারি হচ্ছে শিয়াদের “আসনা আসিরিয়া” বা ১২ ইমাম দলের ১১তম ইমাম )। ঈসা রাজী হন। নবী মুহাম্মদ বিবাহের অনুষ্ঠানের খুতবা পড়েন (নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে)। নবীর কন্যা ফাতেমা (মৃত ৬৩২ সালে) একদিন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল এবং আমাকে তার পুত্রবধূ হিসাবে গ্রহণ করলেন। এর পর এমন কোন রাত পার হয়নি যে রাতে আমরা আমাদের ভালবাসার মধু পান করিনি।

২। আমি লেডি মালেকা,আমাকে নার্গিস ও বলা হয়। আমি রোম সম্রাটের কন্যা। কিছুদিন আগে আলী (মুহাম্মদের জামাতা) আমার কাছে এসেছিল (হযরত আলীর মৃত্যুর ২১২ বছর পর) । সে আমাকে বলেছিল “নার্গিস তোমার জন্য পুত্র সন্তানের সুখবর যে পূর্ব এবং পশ্চিমের রাজা হবে। এইখবর আগুনের মত সবদিকে ছড়িয়ে পড়ল যে হাসান হাসান আকসারির স্ত্রী এই সময়ের নেতার (ইমাম মেহেদী) মা হতে যাচ্ছেন।

৩।একদিন হাসান আকসারি বলল যে আজকে মেহদীর জন্ম হবে। ঐ পরিবারের একজন স্ত্রীলোক বলল নার্গিসের গর্ভ ধারনের কোন নিদর্শন/ চিহ্ন নাই। তখন আলী এসে বলল “আমরা সাধুরা এবং নবীরা মায়েদের উরুতে (thigh) জন্ম গ্রহণ করি, সেইজন্য আমরা নিষ্কলুষ” ইমাম হাসান ও (মৃত ৬৭০ সাল) আসলেন । যারা ঐসময় উপস্থিত ছিলেন তারা নার্গিসের মধ্যে একটি জমকাল দীপ্তি দেখতে পেলেন। হাসান যুগের নেতার (Master of Times) জন্ম হওয়া দেখল, জন্মের পর থেকেই ইমাম মেহেদী কাবার দিকে সেজদাবনত অবস্থায় ছিল। নতুন জন্ম নেওয়া এই শিশু আকাশের দিকে তর্জনী উঠিয়ে রেখেছিল এবং কালেমা পাঠ করছিল। কুমারী মরিয়ম (হযরত ঈসার মাতা) হাজার হুর নিয়ে উপস্থিত হলেন। উপস্থিত সবাই দেখল ইমাম মেহেদীর ইতিমধ্যে খৎনা করা আছে। সবাই সকল ইমামদের জন্য আল্লাহর কাছে আশীর্বাদ চাইল। চারদিকে আলোকজ্জল হয়ে উঠল। সাদা পাখিরা চারদিকে ভিড় করল। হযরত আলী একটি পাখিকে এই শিশুটিকে(ইমাম মেহেদী) নিয়ে যেতে বলল এবং ৪০ দিন পরে আবার নিয়ে আসতে বলল।

দয়া করে মনে রাখুন এই নাটকীয় ঘটনার সময়কাল ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ মৃত্যুর বছর পরে।

পৌরাণিক কাহিনী এমনই মজার। কাহিনী এখানেই শেষ না, আরও আছে।
৪। চল্লিশ দিন পরে পাখিটি যখন শিশুটিকে ফিরিয়ে আনল তখন শিশুটির বয়স দুই বছর। তারপর পাখিটি শিশুটিকে আবার নিয়ে গেল এবং আবার ৪০ দিন পরে ফিরিয়ে নিয়ে আসল। এইসময়ে শিশুটি (ইমাম মেহেদী) পূর্ণ বয়স্ক হয়ে গেল। (আমরা জানিনা চল্লিশ দিনে কিভাবে একটি শিশুর বয়স দুই বছর হয়, আর ৮০ দিনের মাথায় কিভাবে একটি শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক/ পূর্ণ বয়স্ক হয়। পাখিটা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল আমরা সেটাও জানি না)।

৫। ইমাম মেহেদী পাচ বছর বয়সে, তার বাবা হাসান আকসারির মৃত্যুর দশদিন আগে সামারা বা সামারন রাই নামক একটি গুহায় অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই সময় সে সাথে করে নিয়ে যায় সম্পূর্ণ কোরআন যা ৪০ পারা (৩০ পারা নয়) যার আয়াত সংখ্যা ১৭০০০ (৬২০০+ না)। সে আরও সাথে করে নিয়ে গেছে সমস্ত নবীদের (আদম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ পর্যন্ত) গ্রন্থ, আলী এবং ফাতেমার বই, জাফরের বিজ্ঞান, সমস্ত নবীদের মুযেযা, মুসার লাঠি, আদমের শার্ট, সুলাইমানের আংটি ইত্যাদি।

৬। সে কেয়ামতের আগে ঐ গুহা থেক বের হবে। বের হওয়ার পর সে আবুবকর, উমর, এবং উসমান কে কবর থেকে জীবিত করে বের করবে এবং তাদের কে হাজার বার শাস্তি দিয়ে মারবে এবং আবার জীবিত করবে। সে নবীর স্ত্রী আয়েশাকে ( নবীর স্ত্রীদেরকে কোরআনে “বিশ্বাসীদের মা” বলা হয়েছে) জিবীত করবে এবং ব্যভিচারের জন্য শাস্তি প্রদান করবে (হাব্লুল্লাহ, নং ৬)

৭। প্রথমে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবে নবী মুহাম্মদ। (বাশির দারাজাত)

৮। মেহেদী মানুষকে কবর থেকে জীবিত করবে এবং ইচ্ছা অনুযায়ী স্বর্গে বা নরকে প্রেরন করবে। (মিরাতুল আনোয়ার)

৯। ইমাম মেহেদী তার সাথে আসল কোরআন নিয়ে আসবে ইয়াজুজ মাজুজ দের সাথে লড়াই করবে

১০। সে সাথে করে নতুন বই এবং নতুন বিশ্বাস নিয়ে আসবে

এই হচ্ছে শিয়াদের ইমাম মেহেদীর কাহিনী। কোন সাধারণ মানুষ যার নুন্যতম বিচার, বুদ্ধি, বিবেচনা আছে,সে এই শতাব্দীতে এই সব গল্প বিশ্বাস করবে না। আমি এখানে ইমাম মেহেদী নামক তথাকথিত ব্যক্তির গল্পের উৎপত্তির ইতিহাস, শিয়াদের গ্রন্থে এই সম্পর্কে কি লেখা আছে তা বলেছি। ঐতিহাসিক গল্পের সমস্যা কোথায় তাও বলেছি। আর শিয়াদের বই থেকে যা বলেছি তার অসংগতি কি তা পাঠকই নিজে বিবেচনা করুক। এইখানে একটা কথা চাই, এই ১১তম শিয়া ইমাম হাসান আকসারি সম্পর্কে কাজী মুহাম্মদ আলী তার “শামা-ই- হাকিকত” নামক বইয়ে বলেছেনঃ

“এই বিষয়ে খুব শক্ত এবং প্রমানযোগ্য ঐতিহাসিক দলীল আছে যে ,হাসান আকসারি ( ইমাম মেহেদীর বাবা) তার ছোটবেলাতেই মৃত্যু বরন করেন। তিনি কোন সন্তান রেখে যাননি। তার মৃত্যুর পরে তার ভাই জাফর-বিন-নাকী আইন অনুসারে তার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন”।

উপরের যেসব প্রমান দেওয়া হয়েছে তার পরও যারা বিশ্বাস করেন ইমাম মেহেদী নামক একজন আসবেন, তাদের প্রতি আমার কিছুই বলার নাই।

ইমাম মেহেদী এবং সূন্নী গ্রন্থঃ
এই ইমাম মেহেদী ধরনা প্রথমে তৈরী হয় শিয়াদের মাধ্যমে। এই ধারণা তৈরী করার পিছনে ঐতিহাসিক কারণও রয়েছে। আমার বিষয় সেইটা না। সুতরাং আমি সেদিকে যাবনা। সুন্নীরা শিয়াদের এই ধরনা পরে গ্রহণ করে এবং নিজেদের মত করে হাদিস তৈরী করে। সুন্নীদের এই সংক্রান্ত হাদিস গুলি দেখতে Click This Link –এই লিঙ্কে দেখতে পারেন।( লিঙ্ক দিলাম এই কারনে যে সবগুলি হাদিস এইখানে লেখা সম্ভব না।) সুন্নীদের এই হাদিস গুলিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ঃ

১। বিভিন্ন জায়গায় ইমাম মেহেদী অথবা ঐ ধরনের কোন ব্যক্তি অথবা কোন ন্যায়পরায়ণ খলিফার ভবিষ্যৎবাণী করা আছে। স্বভাবিক ভাবে যদি আমরা কোরআনের আলোকে এইসব হাদিস বিশ্লেষণ করি তবে আমরা কোরআনের আলোকে ঐ সকল হাদিসের কিন ভিত্তি নেই। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন যে অদৃশ্য, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে। নবীর ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই।
কোরআনের ৩:৪৪,৩:১৭৯, ৫:১০৯, ৬:৫০, ৭:১৮৮, ১০:২০, ১১:৩১, ১১:৪৯,১২:১০২, ১৮:১১০, ৩০:২, ৭২:২৬-২৮ আয়াতগুলিতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে এবং নবীর নিজের থেকে ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই। কোরআনের এই সঙ্ক্রান্ত সবগুলি আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে দিলাম যাতে পাঠক নিজেই দেখে নিতে পারে। (সবগুলি আয়াত এখানে বর্ণনা করা সম্ভব না) যেমন উদাহরণ সরূপ কোরআনে বলা আছেঃ

“আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না” ? (৬:৫০)

সুতরাং কোরআন অনুযায়ী এই ধরেনর হাদিসের কোন সত্যতা নেই। এইধরনের হাদিসকে বিশ্বাস করলে কোরআনের আয়াতকে আস্বীকার করা হয়। যারা কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আর যারা কোরআনের বিপরীতে শুধু হাদিস বিশ্বাস করেন তাদের জন্যঃ

“আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ যারা বলেছেন মুহাম্মদ তার প্রভুকে দেখেছে তারা মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন “দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন…।“ (৬:১০৩) এবং যদি কেউ বলে মুহাম্মদ অদৃশ্য/ভবিস্যত দেখেছে তাহলেও সে মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ ছাড়া অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে নেই” (বুখারি, ভলিউম ৯, বই ৯৩, হাদিস ৪৭৭)

২।সুন্নীদের মধ্যে এই সংক্রান্ত যত হাদিস আছে তার বেশিরভাগই “জীরাহ” (criticism) রয়েছে। মুতাওয়াত্তির হাদিসে (যে হাদিস একসাথে অনেকেই বর্ণনা করেছেন) মেহেদী নামক কারো নাম পাওয়া যায়না। শুধু বলা আছে একজন ন্যায়পরায়ণ খলিফার আগমন ঘটবে, কিন্তু ঐ ন্যায়পরায়ণ খলিফা মেহেদী কি না সেই বিষয়ে কিছু বলা নেই।

৩। এইসব হাদিস যেমন কোরআনের বিপরীত তেমনি পরস্পর বিরোধী। যেহেতু সব গুলি হাদিস নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়, আমরা “সুনানে আবু দাউদের কিতাবুল মেহেদী অধ্যায়ের কিছু হাদিস দেখব এবং এই ক্ষেত্রে কোরআনের একটি আয়াত (৪:৮২) কে আমরা মাপকাঠি (“ফোরকান”- সত্য মিথ্যা নির্ণয়কারী) হিসাবে ব্যবহার করব। আল্লাহ বলেছেনঃ

“এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত”।(৪:৮২)

১। নবী বলেছেন আমার বংশ থেকে একজনের আবির্ভাব হবে যার নাম হবে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ
২। তার নাম হবে মেহেদী ( মুহাম্মদ না)
৩। তার নাম হবে হারিস (মুহাম্মদ ও না মেহেদী ও না)

মুসলিমে বলা হয়েছে একজন “ মুসলিম কমান্ডার” বুখারীতে বলা হয়েছে একজন ইমাম। দুটা অর্থ এক ধরে নিলেও সে কি মুহাম্মদ, মেহেদী নাকি হারিস এটা বলা মুশকিল। সুতরাং আমরা ৪:৮২ অনুযায়ী এই ব্যপারে অনেক বৈপরিত্য দেখতে পাই। সুতরাং এইসব হাদিস একসাথে পড়লে বুঝা যাবে কোরআন অনুযায়ী এইগুলির কোন সত্যতা নেই,এবং আমাদের নবী কখনওই এই ধরেনর কথা বলেননি। এইসব কথা গুলি আমাদের নবীর নামে বানানো হয়েছে এবং নবীর নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়া প্রভাব এখানে লক্ষ্যনীয়। এটা শিয়াদের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু না।

Reference:
1. Al Quran
2. The Eclipse of Islam-by G.A Parvez
3. Karbala- Fact or Fiction-by Shabbir Ahmed, MD
4. Tahfimul Quran-by Moududi
5. Different hadith books (Abu Daud, Muslim, Bukhari)
6. Ahsanul Makal
7. Different website on Shia and Sunni sects

Author -Hanif Dhaka

মিরাজ ও ইসরা কে করেছিলেন- নবী মুহাম্মদ (সাঃ) না মুসা (আঃ) ?

By arian khan fbfd

মিরাজ ও ইসরা কে করেছিলেন- নবী মুহাম্মদ (সাঃ) না মুসা (আঃ) ?
————————————————-

প্রচলিত ইসলামী শরিয়াতে ‘ইসরা’ (الإسراء ) ও ‘মিরাজ’ (المعراج) বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে । ইসরা মানে ভূ -পথে যাত্রা আর মিরাজ মানে আকাশ পথে উর্ধ্ব যাত্রা । সুন্নি ও শিয়া মতে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইসরার মাধ্যমে মক্কা থেকে জেরুজালেম গিয়েছিলেন আর মিরাজের মাধ্যমে জেরুজালেম থেকে ঘোড়া সাদৃশ্য জন্তুতে চড়ে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন।

মজার বিষয় এই যে এই ইসরা ও মিরাজ যাকে নবী মুহাম্মদের বিরাট মুজিজা মনে করা হয় তাঁর কোন উল্লেখ কোরআনে নেই । ইসরা আরবি শব্দটা কোরআনে পাওয়া যায় কিন্তু মিরাজ নয় । মজার বিষয় এই যে কোরআন অনুসারে ইসরা নবী মুসার জীবনে ঘটেছিল নবী মুহাম্মদের জীবনে নয় ।

সুরা বনি ইসরাইলের ১ম আয়াত দিয়ে শুরু করা যাক।

“পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তাঁর বান্দাহকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন (أَسْرَىٰ) মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (১৭:১)

উপরের আয়াতে কোন নাম না নিয়ে এনে বলা হয়েছে ‘ আমার বান্দা’ । এর ঠিক পরের আয়াতেই সেই বান্দার নাম দেওয়া হয়েছে ।

“এবং আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তা বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশ বানিয়েছি। যেন তোমরা আমাকে ছাড়া কোন কর্মবিধায়ক না বানাও। ” (১৭:২)

আয়াত ১৭:২ এ মুসা নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে । লক্ষ্যনিয় যে সুরার নাম করন করা হয়েছে সুরা বনি ইসরাইল – যা কিনা নবী মুসার কওম । তাই ১৭:১ এ ইসরা সম্পাদনকারী বান্দা বনি ইসরাইলের নবী হওয়াই যুক্তিযুক্ত ।

এবার দেখা যাক রাত্রিকালে ভ্রমণ বা আরবি শব্দ ইসরা কোরআনে কার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ।

ক্রিয়া পদ (IV) ইসরা أَسْرَىٰ কোরআনে ৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে । ১৭:১ তে ১ বার যা আমরা উপরে দেখেছি , ২ বার তা নবী লুতের ক্ষেত্রে (১১:১৮ , ১৫:৬৫ ) এবং ৩ বার নবী মুসার ক্ষেত্রে (২০:৭৭, ২৬:৫২ , ৪৪:২৩ ) নবী মুহাম্মদের ক্ষেত্রে ইসরার কোন রেফারেন্স কোরআনের কোথাও নেই ।

নবীর মুসার ভ্রমণের কথা কোরআনের বহু জায়গাতে বিষদ ভাবে বর্ননা করা হয়েছে (২৮:২৯-৩২, ২০:৯-২৩ , ২৭:৭-১২)

তাই নবী মুসার রাত্রি কালে ভ্রমনের স্পষ্ট বর্ননা এর সাথে ১৭:১ ও ১৭:২ এর সরল সম্পর্ক খুজে পেতে কোন সমস্যা হয়না ।

উপরন্তু নীচের দুইটি আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ বলেছেন যে যদি নবী মুহাম্মদ চান যে তিনি আসমানে আরোহণ করবেন তবে তা চাওয়া তাঁর জন্য অনুচিত । Technically এই দুইটি আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মিরাজে গমন করেননি ।

১-“ আর যদি তাদের উপেক্ষা তোমার উপর কঠিন মনে হয়, তাহলে যদি তুমি পার যমীনে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আসমানে কোন সিঁড়ি অনুসন্ধান করতে, অতঃপর তাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে আসতে (তবে কর)। যদি আল্লাহ চাইতেন তিনি অবশ্যই তাদেরকে হিদায়াতের উপর একত্র করতেন। সুতরাং তুমি কখনো মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। ” ( ৬:৩৫)

২- “অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশে আরোহণ আমরা তখনও বিশ্বাস করবনা যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ করবে যা আমরা পাঠ করব। বলঃ পবিত্র আমার মহান রাব্ব! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।” (১৭:৯৩)

দ্বিতীয়তঃ মিরাজের কল্প কাহিনী অনুসারে নবী মুহাম্মদ জান্নাত আর জাহান্নাম সব দেখে এসেছেন । কিন্তু কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ জান্নাতকে গায়েব (غَيْبِ) বা অদেখা বস্তু বলেছেন (১৯:৬১) আর নবী মুহাম্মদের গায়েবের জ্ঞান নেই বলে নিশ্চিত করেছেন (৬:৫০) । তাই যুক্তিগত ভাবে কোরআন মতে নবী কোন ভাবেই জান্নাত দেখেননি ।

বাকী থাকল ১৭:১ এ বর্নিত ‘আল মাসজিদ আল হারাম ‘ ও ‘আল মাসজিদ আল আকসা’ এর ব্যপারটা । নবী মুসার সাথে এই দুই মাসজিদের সম্পর্ক কি ?

কোরআনে নবী মুসার ইসরা কোথায় থেকে শুরু হয়েছে ও কোথায় শেষ হয়েছে তা খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে ।

নবী মুসা মিশর থেকে পলায়ন করার পরে মিদিওয়ানে আসেন । (২৮:২২)

আমরা জানি যে মিদিয়ান আরব হেজাযের তাবুকে অবস্থিত । তাই নবী মুসা তাঁর জীবদ্দশাতে যে আরব ভূমিতে এসেছিলেন তাঁর স্বাক্ষ কোরআন বহন করে ।

আরো মজার বিষয় এই যে , নবী মুসা আরব ভূমিতে ৮/১০ হজ্জের সমকাল সময় অবস্থান করেছিলেন বলে কোরআন সাক্ষ দেয় (২৮:২৭ ) । আয়াতে বছর বা সাল নয় বরং ثماني حجج ( থামানিয়া হিজাজিন) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । তাই নবী মুসা আরব ভূমিতে এসে ৮ থেকে ১০ বার হজ্জ করেছেন বলে প্রমাণিত হয় । সংগত কারনেই উনাকে হজ্জ করতে আল মাসজিদুল হারামেই যেতে হবে ।

২৮:২৯ এ জানা যায় যে নবী মুসা ৮/১০ হজ্জের মেওয়াদ শেষ করে তাঁর পরিবার সহ ইসরা শুরু করে , তাই তাঁর ভ্রমণ যে আল মাসজিদুল আল হারাম থেকে শুরু হতে পারে তা যুক্তিযুক্ত ও কোরআনে পাওয়া উপাত্তের সাথে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ন ।

ইসরা শুরু করার পর নবী মুসা যে যে জায়গাতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম কোরআনে পাওয়া যায় । সেগুলো হল তুর পর্বত ( ২৮:২৯ ) , তোয়া উপত্যকা (২০:১২ , ৭৯:১৬ ) , মিশর (১০:৮৭) ।

মিশরে অবস্থিত তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাকে পবিত্র (المقدس) ও বরকত ময় (المباركة) বলা হয়েছে ( ২৮:৩০ , ২০:১২ , ৭৯:১৬) ।

তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাতে নবী মুসাকে আল্লাহর তরফ থেকে নিদর্শন দেখানো হয়েছে (২৮:৩১ , ২৮:৩২ ) ।

১৭:১ এ উল্লেখিত আল মাসজিদ আল আকসা এর আশেপাশের স্থানকে কে বরকতময় করা হয়েছে তা তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকার সাথে মিলে যায় ।

১৭:১ ইসরাকারিকে নিদর্শন দেখানো হবে তা নবী মুসার সাথে মিলে যায় ।

ধাঁধার শেষ যে অংশটা বাকী থাকল তা হল , ১৭:১ এর মাসজিদুল আকসা কোথা থেকে আসল ?

মাসজিদ হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সালাত ( নামাজ) আদায় করা হয় । কোরআনের ১০:৮৭ তে মহান আল্লাহ্‌ নবী মুসা , হারুন ও তাঁর অনুসারীদেরকে মিশরে তাদের ঘর সমূহকে ক্বেবলা তে রূপান্তরিত করে সালাত আদায়ের জন্য হুকুম দেন । ৭:১৪৪ থেকে আমরা দেখতে পাই যে নবী মুসা ও তাঁর অনুসারীরা তুর পর্বতেরই অবস্থান করছিল এবং সেখানেই সালাতের জন্য মাসজিদ বানিয়েছিল যা ১০:৮৭ তে বলা হয়েছে । এই মসজিদের নাম আল আকসা ।

তাই কোরআন কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে , নবী মুহাম্মদের নামে যে ইসরা বা মিরাজের কাহিনী মুসলিম সমাজে প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নাই । বরঞ্চ ১৭:১ এর ইসরা কোরআন মতে নবী মুসার ইসরাকেই শক্তভাবে সমর্থন করে ।

Use of Amen 1,2

By zahir

1)- মুসলিমরা কুরআন বর্জন করে ইঞ্জিল, তৌরাত ও যবুরের অনুসরণ করে!

আমিন শব্দের ব্যবহার-
কুরআনে দেখুনঃ আমিন অর্থ বিশ্বস্ত (৭:৬৮; ২৬:১০৭, ১২৫, ১৪৩, ১৬২, ১৭৮; ২৭:৩৯; ২৮:২৬; ৪৪:১৮ আয়াত)। আমাদেরকে ইবরাহীমের অনুসরণ করার নির্দেশ (২:১৩০; ৩:৬৮; ৪:১২৫; ৬:১৬১; ১৬:১২৩)। [‘ইবরাহীম প্রার্থনা শেষে বললেন,] ‘আমার রব! আমাকে সালাতী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও। আমাদের রব! আমার প্রার্থনা কবুল করুন (১৪:৪০); সূরা-১৪, ইবরাহীম, আয়াত-৪০। মুসলিমরা ইবরাহীমের মত প্রার্থনা শেষে ‘রাব্বানা! ওয়াতাকাব্বাল দু-য়ায়ি’ বলেন কি?

ইঞ্জিলে দেখুনঃ ‘ভাইয়েরা, আমাদের খোদাবন্দ ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে এবং পাক-রূহের দেয়া মহব্বতের মধ্য দিয়ে আমি তোমাদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ করচ্ছি, তোমরা আমার জন্য মুনাজাত দ্বারা আমার সংগে যুদ্ধ চালাতে থাক। তোমরা মুনাজাত কর, এহুদিয়াতে যারা খোদাকে অমান্য করে তাদের হাত হতে যেন রক্ষা পাই, …. আমিন;-৬ষ্ঠ খন্ড ঃ রোমীয়-১৫:৩০-৩৩, পৃ: ৪৩৩। ইঞ্জিলের-৪২৫, ৪৩৬, ৪৬৪, ৫১৯, ৬৪২, ৬৫১, ৬৭২, ৬৭৭ ও ৭১৮ পৃষ্ঠায় মুনাজাত শেষে আমিন বলা হয়েছে।

তৌরাতে দেখুনঃ ‘মাবুদ তোমাকে রহমত দান করুন ও রক্ষা করুন; মাবুদের দয়া নূরের মত তোমার উপর পড়ুক, তাঁর মেহেরবানী তোমার উপর থাকুক। মাবুদ তাঁর মুখ তোমার দিকে ফিরান এবং তোমাকে শান্তি দিন, এভাবে তারা বনি-ইসরাইলদের উপর আমার নাম উচ্চারণ করবে, তাতে আমিই তাদের রহমত দান করব;-শূমারী ৭, আয়াত ২৪-২৭, পৃ: ৩৬৮। ‘সে লোকের উপর বদদোয়া দেয়া হয়েছে, যে ছাঁচে ফেলে কিংবা কাঠ বা পাথর খোদাই করে কোন মূর্তি তৈরি করে …. এ সমস্ত মূর্তি মাবুদের ঘৃনার জিনিস, কারিগরের হাতের কাজ মাত্র।’ তখন সকলে বলবে, ‘আমিন’;-দ্বিতীয় বিবরণ ২৭, আয়াত ১৫, পৃ:৫৩৭। তৌরাতের-৫৩৭-৫৩৯ পৃষ্ঠায় (দ্বিতীয় বিবরণ ২৭) এর ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ আয়াতে মুনাজাত শেষে আমিন বলা হয়েছে।

জবুরে দেখুনঃ ‘প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর যিনি ইসরাইলীয়দের মাবুদ, তাঁর প্রশংসা হোক। আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৪১:১৩, পৃঃ ৭৫। ‘চিরকাল তাঁর মহিমাপূর্ণ নামের প্রশংসা হোক; সারা দুনিয়া তাঁর মহিমায় পূর্ণ হোক। আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৭২:২০, পৃ: ১২৮। ‘চিরকাল আলহামদুলিল্লাহ্! আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৮৯:৫২, পৃ: ১৬৪।

[শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে মুসলিমগণ। উক্ত সৌধগুলি ‘কারিগরের হাতের তৈরি’ এবং তাতে ফুল/ ফুলের মালা বা ফুলের তোড়া দ্বারা সম্মান করে ‘দীন ইসলামের’ নামধারী আলেমগণের নিকট থেকে দু‘আ শেষে ‘আমিন, বা আমিন, আমিন’ বলতে শুনা যায়। উক্ত আমিন বা আমিন! আমিন! বলতে বলতে মনে হয় মুসলিমগণ কুরআন শিক্ষা ভুলেই গেছে।] বর্তমান বিশ্বের মুসলিমদের যারা প্রচলিত দীনের অনুসরণ করে তারা সবাই বিভ্রান্ত নয় কি?]

.

2)- http://www.masjidtucson.org/submission/practices/salat/saying_ameen_amen_in_contact_prayers.html

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী

Fm A. A. Mamun fbfd

.

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী

ইমাম মেহেদী নামক এক ব্যক্তি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক ধরনের গল্প চালু আছে। এই ব্যক্তি নিয়ে গল্পের মূল বিষয় হচ্ছে উনি একদিন পৃথিবীতে আসবেন এবং মুসলিম উম্মাহকে নেতৃত্ব দিবেন, মুসলিম উম্মাহ সাফল্যের শিখরে উঠবে, এরপর কিয়ামত হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কমবেশি সবাই এই গল্প জানেন। আমার প্রশ্ন হল আপনি এই গল্প কিভাবে জানেন? আরেকজনের কাছে শুনেছেন, কোন বইয়ে পড়েছেন অথবা কোন হুজুরের বয়ান শুনেছেন, অথবা সবগুলি। বিভিন্ন বইয়ে আপনি এর স্বপক্ষে হাদিসের থেকে রেফারেন্স পেয়েছেন, হুজুরেরা বলেছে, খুব বেশি হলে আপনি ঐ হাদিসের রেফারেন্স মিলিয়ে দেখেছেন। যার ফলে আপনার বিশ্বাস জন্মেছে যে এই ঘটনা সত্য, এবং এর ফলে আপনি এর উপর নির্ভর করে বসে আছেন যে উনি একদিন এসে মুসলমানদের কে সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিবেন। কিন্তু সময় চলে যায় আর উনিও আসেন না এর ফলে মুসলমানদের দুর্দশাও শেষ হয়না। কিন্তু আপনি স্বপ্ন দেখে যেতেই থাকেন। আপনি স্বপ্ন দেখতে থাকুন, এর মধ্যে আমি উনার সম্পর্কে যে তথ্য গুলি পাওয়া যায় তা নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করে দেখি যে আসলে এই রকম কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব আছে কি না বা উনার সম্পর্কে যে কথা গুলি বলা হয় তা কতটুকু সত্য। আমি এই সম্পর্কে যাদের সাথে কথা বলেছি , একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি যে কেউ এই সংক্রান্ত সবগুলি হাদিস জানেনা, এবং বিভিন্ন বিপরীতমুখী হাদিসের পার্থক্যটা ধরতে পারেন না। আমি এইখানে উনার সম্পর্কে সবগুলি গল্প/হাদিস (আমি যতগুলি জানি আর কি) একসাথে করে দেখব, মূল বিষয়টা কি দাড়ায়ঃ

ইমাম মেহেদী এবং কোরআনঃ
এর আগে আমি ঈসা (আঃ) যে আবার পৃথিবীতে আসবেন না তা আমি কোরআন থেকে প্রমান করে দেখিয়েছি। এটা খুব সহজ একটা বিষয় ছিল যেহেতু ঐ ক্ষেত্রে আমি কোরআনের রেফারেন্স দিতে পেরেছি- যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ Click This Link ) কিন্তু এই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন এই কারনে যে, কোরআনে মেহেদী সংক্রান্ত কোন কথা বলা নাই। যেহেতু মেহেদী নামক কোন কনসেপ্ট কোরআনে নাই, সেহেতু এইখানে কোরআন থেকে এই সম্পর্কে বলার কিছু নাই, কিন্তু আমরা কোরআনের নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখব যে কোরআনের নিয়ম অনুযায়ী এই মেহেদী কনসেপ্ট ইসলামে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কোরআন অনুযায়ীঃ
১। দ্বীন সম্পূর্ণ (৫:৩)
২। কোরআন সত্য মিথ্যা পার্থক্য নির্ণয় কারী (ফুরকান) (২:১৮৫, ২৫:১)
এই আয়াতগুলির সম্মিলিত অর্থ হচ্ছে ঃ

“কোরআনে যা কিছু বলা হয়নি তা আমাদের ধর্ম/দ্বীন এর ব্যপারে গুরুত্তপুর্ন নয় এবং যা কিছু কোরআনের সাথে সাঙ্গর্সিক তা অবশ্যয় বর্জনীয়”।

সুতরাং, যারা কোরআন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তাদের জন্য “মেহেদী বলে কিছু নাই অথবা মেহেদী কোনভাবেই ইসলামে গুরত্বপুর্ন নয়” কোরআন অনুযায়ী এটাই সঠিক বিশ্বাস।

অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে বেশিরভাগ মুসলমানই শুধুমাত্র কোরআনের কথা মানতে চান না। যদি বলেন, আল্লাহ কোরআনে এইটা বলেছে, তাহলে সাথে সাথে তারা আরও দশটা হাদিস নিয়ে আসবেন যেখানে ঠিক এইটার বিপরীত কথা বলে হয়েছে। এই সমস্যাটা ব্যপক। কোন ভাবেই বোঝানো যায়না কোরআন কোনভাবেই হাদিসের সাব-অর্ডিনেট না, বরং এর উলটাটাই সত্য। কোন কারনে হাদিস কোরআনের সাথে কনফ্লিক্ট করলে কোরআনের কথাই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এর উলটা টা প্রমান করার চেস্টায় ব্যস্ত। যারা কোরআন বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এখানেই শেষ। যারা হাদিস থেকে মেহেদীর আগমন সংক্রান্ত বিষয় প্রমান করার চেষ্টায় ব্যস্ত এবং মনে করেন এই বিষয়টা খুবই গুরত্বপুর্ন তাদের জন্য আমার এই চেষ্টা।

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ (ইতিহাস এবং ষড়যন্ত্র)ঃ
ধারনা করা হয় “আব্দুল্লাহ বিন-সাবাহ”- এই মুনাফিক (আগে ইহুদী ছিল, পরে মুসলমান হয়) প্রথমে এই ঈসা (আঃ) এবং মেহেদী আসার গল্প/গুজব ছড়ায়। এমনকি সে মুহাম্মদ (সাঃ) আবার পৃথিবীতে আসবেন এই গুজবও ছড়ায়। তার এই ছড়ানো এই গুজব সেই সময়ে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু প্রথম বীজটা সেই রোপণ করেছে এইটা অনেকের বিশ্বাস। যখন উমাইয়া খিলাফত এবং আব্বাসীয়দের মধ্যে দ্বন্ধ চরমে, তখন আমরা একজন বিশেষ সন্দেহভাজন মানুষের আবির্ভাব দেখি। উনি হচ্ছেন আবু মুসলেম খোরসানি। তিনি ইস্ফানে জন্ম গ্রহণ করেন এবং কুফায় বেড়ে উঠেন। মুহাম্মদ আব্বাসির ছেলে ইব্রাহিম তার মেধায় আকৃস্ট হয়ে তাকে তার পক্ষে প্রচারনা চালানোর দায়িত্ব দেয়। সে প্রচার করে যে খুব শিগ্রই ইমাম মেহেদী খুরসান প্রদেশ থেকে আসবেন এবং তার সেনাবাহিনীর পতাকা এবং পোশাকের রং হবে কাল। এই প্রচার যখন চরমে পৌছাল, সে খুরসান থেকে নিজে কাল পাতাকাবাহী এবং কাল রঙের পোশাক সম্বলিত সেনাবাহিনী নিয়ে বের হল এবং বানু উমাইয়া খিলাফত আক্রমণ করে তাদেরকে পরাজিত করল। (ইমাম মেহেদীর আর্মির সাথে যুদ্ধ করার মানসিক জোর তখন উমাইয়া খিলাফতের ছিলনা বলেই মনে হয়)। এইভাবেই উমাইয়া খিলাফতের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং আব্বাসীয় খিলাফতের শুরু হয়। আব্বাসীয় খলিফা তার মেধায় মুগ্ধ হয়ে এবং তার ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে , যাতে ভবিষ্যতে নিজেরা এই ধরনের বিপদে পড়তে না পারে সেই জন্য তাকে হত্যা করেন। আর এইভাবেই ইমাম মেহেদী নাটকের মধ্য দিয়ে এক ক্ষমতার পালা বদল, এবং এই ধরানার উৎপত্তি।

ধর্মীয় পটভূমিঃ
ইমাম মেহেদীর বিশ্বাসের উত্থান ইরানে (তৎকালীন পার্সিয়ান স্ম্রাজ্য)। ধর্মীয় দিক থেকে দেখলে এইটা মুলত শিয়াদের আবিষ্কার, পরে সুন্নীরা এই ধারণা গ্রহণ করে, যদিও ইমাম মেহেদী নামে কেউ একজন আসবে এই ধরনের কোন অথেনটিক হাদিস সুন্নী গ্রন্থে পাওয়া যায় না। আমরা এখন এই মুসলমানদের এই দুই দল শিয়া এবং সুন্নীদের মধ্যে কিভাবে ইমাম মেহেদী নামক ধারনার জন্ম হয়েছে তা দেখব।

শেহের বানুর ইতিহাসঃ
শিয়া কাহিনী অনুযায়ী, খলিফা হযরত উমরের সময় যখন পারস্য স্ম্রাট ইয়াজদগার্ড (Yazd Gard) মুসলমানদের হাতে পরাজিত হল, তখন তার মেয়েদেরকে উমরের সামনে যুদ্ধবন্দী হিসাবে উপস্থিত করা হল। উমর তাদেরকে ওপেন সেলের অর্ডার দিল, কিন্তু হযরত আলী তাদের বংশগত পরিচয়ের জন্য তাদেরকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দিল।হযরত আলীর পরামর্শ অনুযায়ী তাদের মুল্য নির্ধারণ করা হল এবং তাদের একজনকে ইমাম হুসেন, আরেকজনকে মুহাম্মদ বিন আবু বকর এবং তৃতীয় জন কে আব্দুল্লাহ বিন উমরের কাছে হস্তান্তর করা হল। যে মেয়েটা ইমাম হুসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল তার নাম শেহের বানু ( তার আসল নাম জাহান শাহ- শিয়া দলীল হিসাবে, উমর তার নাম দিয়েছিল শেহের বানু)। এই সম্পর্কে যে বর্ণনা এসেছে তা হলঃ “Abu Abullah! You will have a son from her womb who will be the best in the world.” Hence Ali Ibne Hussain was born, who was the best Arab because he was Hashmi and the best Ajami because he was Iranian.” (Kitab us Shaafi – Vol. I)
এই ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু হচ্ছে তথাকথিত ইমাম মেহেদীর পূর্ব পুরুষ। কিন্তু শিয়াদের বানানো এই গল্প পড়ে এটা বানানো একটা গল্প কারনঃ

১। কোরআন অনুযায়ী যুদ্ধবন্দীদের কে হয় দয়া করে অথবা বিনিময়ের মাধ্যমে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কোন অপশন নাই (৪৭:৪)। হযরত উমর এবং হযরত আলী অবশ্যয় এটা জানতেন। যার ফলে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেওয়া বা কারো কাছে বিক্রি করে দেবার প্রশ্নই আসে না।

২। যখন হযরত সাদ মাদিয়ান দখল করেন, ততক্ষণে মাদিয়ান খালি হয়ে গেছে এবং সম্রাট ইয়াজদগার্ড তার পরিবার সহ পালিয়েছেন। এই জন্য ঐসময়ে তার মেয়েদেরকে বন্দী করার কোন প্রশ্ন আসেনা। তার মেয়েদেরকে একমাত্র তখনই বন্দী করার প্রশ্ন আসে যখন তাকে গুপ্তহত্যা করা হয়, কিন্তু সেই সময়টা হচ্ছে ৩০ হিজরি, যা হযরত উসমানের শাসনকাল, হযরত উমরের নয়।

৩। হযরত ইমাম হুসেইনের জন্ম ৫ হিজরি এবং মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরি, এর অর্থ হযরত ইমাম হুসেইনের ১১ বছরের সময়। এই ১১ বছরে উনি বিয়ে করেছেন এই কথাটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। (হলেও হতে পারে, তবে আমিই ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করিনা)

৪। সম্রাট ইয়াজদগার্ড সিংহাসন আরোহণ করেন ১৩ হিজরিতে (প্রায় একই সময়ে হযরত উমর দ্বিতীয় খলিফা হিসাবে নিযুক্ত হন) যখন তার বয়স ছিল ১৮। মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরিতে, যখন তার বয়স ২১। এখন এই ২১ বছর বয়সে কিভাবে তার তিনটা বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকে তা কোনভাবেই বোধগম্য না।

উপরোক্ত কারনে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারন আছে যে এই শেহের বানুর (যার অস্থিত্ব সন্দেহজনক) সাথে হযরত ইমাম হুসেইনের বিবাহের গল্প বানানো (এই গল্প বানানোর পিছনে একটা বিশাল ষড়যন্ত্র মুলক উদ্দেশ্য আছে, যা এখানে আমার লিখার বিষয় না )।
সুতরাং যদি এই গল্প বানানো হয় তবে ইমাম মেহেদীর অস্তিত্বও বানানো কারন এই দুইজনই (ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু) হচ্ছে ইমাম মেহেদীর বংশ তালিকার প্রথমদিকেই (হযরত আলীর পরে) তাদের স্থান, যাকে বলে গোঁড়ায় গলদ।

ইমাম মেহেদী এবং শিয়া গ্রন্থঃ
এইখানে আমরা যে কথাগুলি বর্ণনা করব তার সবকিছুই আহসানুল মাকাল (যা শিয়াদের খুবই উচ্চ সম্মানিত গ্রন্থ ) থেকে নেওয়া। এই গ্রন্থের কথাগুলি পড়ার সময় দয়া করে নিজের মাথাটাকে একটু ব্যবহার করবেন। একটা বিষয় আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে আমি এখানে কাউকে, বা কোন দল কে ছোট করার উদ্দেশ্যে এই কথা গুলি বর্ণনা করছিনা। আমি শুধু এই বর্ণনার সাথে ইমাম মেহেদীর যোগসূত্র গুলি দেখাবার চেষ্টা করব। তার পরেও যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে আঘাত পান, তবে আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

এই নাটকীয় ঘটনা ঘটে ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ বছর পরে।

১। আমি লেডি মালেকা- রোম সম্রাট কাইজারের পুত্রের কন্যা। আমার মায়ের নাম শামুন (Shamoun)- যে ঈসার বংশধর। কিছু সময় আগে নবী মুহাম্মদ আমার প্রপিতামহ ঈসার সাথে দেখা করেছিল এবং আমাকে (মালেকা) তার ছেলে হাসান আকসারির ( মৃত ৮৭৪ সাল) সাথে বিবাহ দিতে অনুরুধ করেন। (এই হাসান আকসারি হচ্ছে শিয়াদের “আসনা আসিরিয়া” বা ১২ ইমাম দলের ১১তম ইমাম )। ঈসা রাজী হন। নবী মুহাম্মদ বিবাহের অনুষ্ঠানের খুতবা পড়েন (নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে)। নবীর কন্যা ফাতেমা (মৃত ৬৩২ সালে) একদিন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল এবং আমাকে তার পুত্রবধূ হিসাবে গ্রহণ করলেন। এর পর এমন কোন রাত পার হয়নি যে রাতে আমরা আমাদের ভালবাসার মধু পান করিনি।

২। আমি লেডি মালেকা,আমাকে নার্গিস ও বলা হয়। আমি রোম সম্রাটের কন্যা। কিছুদিন আগে আলী (মুহাম্মদের জামাতা) আমার কাছে এসেছিল (হযরত আলীর মৃত্যুর ২১২ বছর পর) । সে আমাকে বলেছিল “নার্গিস তোমার জন্য পুত্র সন্তানের সুখবর যে পূর্ব এবং পশ্চিমের রাজা হবে। এইখবর আগুনের মত সবদিকে ছড়িয়ে পড়ল যে হাসান হাসান আকসারির স্ত্রী এই সময়ের নেতার (ইমাম মেহেদী) মা হতে যাচ্ছেন।

৩।একদিন হাসান আকসারি বলল যে আজকে মেহদীর জন্ম হবে। ঐ পরিবারের একজন স্ত্রীলোক বলল নার্গিসের গর্ভ ধারনের কোন নিদর্শন/ চিহ্ন নাই। তখন আলী এসে বলল “আমরা সাধুরা এবং নবীরা মায়েদের উরুতে (thigh) জন্ম গ্রহণ করি, সেইজন্য আমরা নিষ্কলুষ” ইমাম হাসান ও (মৃত ৬৭০ সাল) আসলেন । যারা ঐসময় উপস্থিত ছিলেন তারা নার্গিসের মধ্যে একটি জমকাল দীপ্তি দেখতে পেলেন। হাসান যুগের নেতার (Master of Times) জন্ম হওয়া দেখল, জন্মের পর থেকেই ইমাম মেহেদী কাবার দিকে সেজদাবনত অবস্থায় ছিল। নতুন জন্ম নেওয়া এই শিশু আকাশের দিকে তর্জনী উঠিয়ে রেখেছিল এবং কালেমা পাঠ করছিল। কুমারী মরিয়ম (হযরত ঈসার মাতা) হাজার হুর নিয়ে উপস্থিত হলেন। উপস্থিত সবাই দেখল ইমাম মেহেদীর ইতিমধ্যে খৎনা করা আছে। সবাই সকল ইমামদের জন্য আল্লাহর কাছে আশীর্বাদ চাইল। চারদিকে আলোকজ্জল হয়ে উঠল। সাদা পাখিরা চারদিকে ভিড় করল। হযরত আলী একটি পাখিকে এই শিশুটিকে(ইমাম মেহেদী) নিয়ে যেতে বলল এবং ৪০ দিন পরে আবার নিয়ে আসতে বলল।

দয়া করে মনে রাখুন এই নাটকীয় ঘটনার সময়কাল ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ মৃত্যুর বছর পরে।

পৌরাণিক কাহিনী এমনই মজার। কাহিনী এখানেই শেষ না, আরও আছে।
৪। চল্লিশ দিন পরে পাখিটি যখন শিশুটিকে ফিরিয়ে আনল তখন শিশুটির বয়স দুই বছর। তারপর পাখিটি শিশুটিকে আবার নিয়ে গেল এবং আবার ৪০ দিন পরে ফিরিয়ে নিয়ে আসল। এইসময়ে শিশুটি (ইমাম মেহেদী) পূর্ণ বয়স্ক হয়ে গেল। (আমরা জানিনা চল্লিশ দিনে কিভাবে একটি শিশুর বয়স দুই বছর হয়, আর ৮০ দিনের মাথায় কিভাবে একটি শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক/ পূর্ণ বয়স্ক হয়। পাখিটা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল আমরা সেটাও জানি না)।

৫। ইমাম মেহেদী পাচ বছর বয়সে, তার বাবা হাসান আকসারির মৃত্যুর দশদিন আগে সামারা বা সামারন রাই নামক একটি গুহায় অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই সময় সে সাথে করে নিয়ে যায় সম্পূর্ণ কোরআন যা ৪০ পারা (৩০ পারা নয়) যার আয়াত সংখ্যা ১৭০০০ (৬২০০+ না)। সে আরও সাথে করে নিয়ে গেছে সমস্ত নবীদের (আদম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ পর্যন্ত) গ্রন্থ, আলী এবং ফাতেমার বই, জাফরের বিজ্ঞান, সমস্ত নবীদের মুযেযা, মুসার লাঠি, আদমের শার্ট, সুলাইমানের আংটি ইত্যাদি।

৬। সে কেয়ামতের আগে ঐ গুহা থেক বের হবে। বের হওয়ার পর সে আবুবকর, উমর, এবং উসমান কে কবর থেকে জীবিত করে বের করবে এবং তাদের কে হাজার বার শাস্তি দিয়ে মারবে এবং আবার জীবিত করবে। সে নবীর স্ত্রী আয়েশাকে ( নবীর স্ত্রীদেরকে কোরআনে “বিশ্বাসীদের মা” বলা হয়েছে) জিবীত করবে এবং ব্যভিচারের জন্য শাস্তি প্রদান করবে (হাব্লুল্লাহ, নং ৬)

৭। প্রথমে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবে নবী মুহাম্মদ। (বাশির দারাজাত)

৮। মেহেদী মানুষকে কবর থেকে জীবিত করবে এবং ইচ্ছা অনুযায়ী স্বর্গে বা নরকে প্রেরন করবে। (মিরাতুল আনোয়ার)

৯। ইমাম মেহেদী তার সাথে আসল কোরআন নিয়ে আসবে ইয়াজুজ মাজুজ দের সাথে লড়াই করবে

১০। সে সাথে করে নতুন বই এবং নতুন বিশ্বাস নিয়ে আসবে

এই হচ্ছে শিয়াদের ইমাম মেহেদীর কাহিনী। কোন সাধারণ মানুষ যার নুন্যতম বিচার, বুদ্ধি, বিবেচনা আছে,সে এই শতাব্দীতে এই সব গল্প বিশ্বাস করবে না। আমি এখানে ইমাম মেহেদী নামক তথাকথিত ব্যক্তির গল্পের উৎপত্তির ইতিহাস, শিয়াদের গ্রন্থে এই সম্পর্কে কি লেখা আছে তা বলেছি। ঐতিহাসিক গল্পের সমস্যা কোথায় তাও বলেছি। আর শিয়াদের বই থেকে যা বলেছি তার অসংগতি কি তা পাঠকই নিজে বিবেচনা করুক। এইখানে একটা কথা চাই, এই ১১তম শিয়া ইমাম হাসান আকসারি সম্পর্কে কাজী মুহাম্মদ আলী তার “শামা-ই- হাকিকত” নামক বইয়ে বলেছেনঃ

“এই বিষয়ে খুব শক্ত এবং প্রমানযোগ্য ঐতিহাসিক দলীল আছে যে ,হাসান আকসারি ( ইমাম মেহেদীর বাবা) তার ছোটবেলাতেই মৃত্যু বরন করেন। তিনি কোন সন্তান রেখে যাননি। তার মৃত্যুর পরে তার ভাই জাফর-বিন-নাকী আইন অনুসারে তার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন”।

উপরের যেসব প্রমান দেওয়া হয়েছে তার পরও যারা বিশ্বাস করেন ইমাম মেহেদী নামক একজন আসবেন, তাদের প্রতি আমার কিছুই বলার নাই।

ইমাম মেহেদী এবং সূন্নী গ্রন্থঃ
এই ইমাম মেহেদী ধরনা প্রথমে তৈরী হয় শিয়াদের মাধ্যমে। এই ধারণা তৈরী করার পিছনে ঐতিহাসিক কারণও রয়েছে। আমার বিষয় সেইটা না। সুতরাং আমি সেদিকে যাবনা। সুন্নীরা শিয়াদের এই ধরনা পরে গ্রহণ করে এবং নিজেদের মত করে হাদিস তৈরী করে। সুন্নীদের এই সংক্রান্ত হাদিস গুলি দেখতে Click This Link –এই লিঙ্কে দেখতে পারেন।( লিঙ্ক দিলাম এই কারনে যে সবগুলি হাদিস এইখানে লেখা সম্ভব না।) সুন্নীদের এই হাদিস গুলিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ঃ

১। বিভিন্ন জায়গায় ইমাম মেহেদী অথবা ঐ ধরনের কোন ব্যক্তি অথবা কোন ন্যায়পরায়ণ খলিফার ভবিষ্যৎবাণী করা আছে। স্বভাবিক ভাবে যদি আমরা কোরআনের আলোকে এইসব হাদিস বিশ্লেষণ করি তবে আমরা কোরআনের আলোকে ঐ সকল হাদিসের কিন ভিত্তি নেই। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন যে অদৃশ্য, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে। নবীর ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই।
কোরআনের ৩:৪৪,৩:১৭৯, ৫:১০৯, ৬:৫০, ৭:১৮৮, ১০:২০, ১১:৩১, ১১:৪৯,১২:১০২, ১৮:১১০, ৩০:২, ৭২:২৬-২৮ আয়াতগুলিতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে এবং নবীর নিজের থেকে ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই। কোরআনের এই সঙ্ক্রান্ত সবগুলি আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে দিলাম যাতে পাঠক নিজেই দেখে নিতে পারে। (সবগুলি আয়াত এখানে বর্ণনা করা সম্ভব না) যেমন উদাহরণ সরূপ কোরআনে বলা আছেঃ

“আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না” ? (৬:৫০)

সুতরাং কোরআন অনুযায়ী এই ধরেনর হাদিসের কোন সত্যতা নেই। এইধরনের হাদিসকে বিশ্বাস করলে কোরআনের আয়াতকে আস্বীকার করা হয়। যারা কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আর যারা কোরআনের বিপরীতে শুধু হাদিস বিশ্বাস করেন তাদের জন্যঃ

“আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ যারা বলেছেন মুহাম্মদ তার প্রভুকে দেখেছে তারা মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন “দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন…।“ (৬:১০৩) এবং যদি কেউ বলে মুহাম্মদ অদৃশ্য/ভবিস্যত দেখেছে তাহলেও সে মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ ছাড়া অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে নেই” (বুখারি, ভলিউম ৯, বই ৯৩, হাদিস ৪৭৭)

২।সুন্নীদের মধ্যে এই সংক্রান্ত যত হাদিস আছে তার বেশিরভাগই “জীরাহ” (criticism) রয়েছে। মুতাওয়াত্তির হাদিসে (যে হাদিস একসাথে অনেকেই বর্ণনা করেছেন) মেহেদী নামক কারো নাম পাওয়া যায়না। শুধু বলা আছে একজন ন্যায়পরায়ণ খলিফার আগমন ঘটবে, কিন্তু ঐ ন্যায়পরায়ণ খলিফা মেহেদী কি না সেই বিষয়ে কিছু বলা নেই।

৩। এইসব হাদিস যেমন কোরআনের বিপরীত তেমনি পরস্পর বিরোধী। যেহেতু সব গুলি হাদিস নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়, আমরা “সুনানে আবু দাউদের কিতাবুল মেহেদী অধ্যায়ের কিছু হাদিস দেখব এবং এই ক্ষেত্রে কোরআনের একটি আয়াত (৪:৮২) কে আমরা মাপকাঠি (“ফোরকান”- সত্য মিথ্যা নির্ণয়কারী) হিসাবে ব্যবহার করব। আল্লাহ বলেছেনঃ

“এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত”।(৪:৮২)

১। নবী বলেছেন আমার বংশ থেকে একজনের আবির্ভাব হবে যার নাম হবে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ
২। তার নাম হবে মেহেদী ( মুহাম্মদ না)
৩। তার নাম হবে হারিস (মুহাম্মদ ও না মেহেদী ও না)

মুসলিমে বলা হয়েছে একজন “ মুসলিম কমান্ডার” বুখারীতে বলা হয়েছে একজন ইমাম। দুটা অর্থ এক ধরে নিলেও সে কি মুহাম্মদ, মেহেদী নাকি হারিস এটা বলা মুশকিল। সুতরাং আমরা ৪:৮২ অনুযায়ী এই ব্যপারে অনেক বৈপরিত্য দেখতে পাই। সুতরাং এইসব হাদিস একসাথে পড়লে বুঝা যাবে কোরআন অনুযায়ী এইগুলির কোন সত্যতা নেই,এবং আমাদের নবী কখনওই এই ধরেনর কথা বলেননি। এইসব কথা গুলি আমাদের নবীর নামে বানানো হয়েছে এবং নবীর নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়া প্রভাব এখানে লক্ষ্যনীয়। এটা শিয়াদের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু না।

Reference:
1. Al Quran
2. The Eclipse of Islam-by G.A Parvez
3. Karbala- Fact or Fiction-by Shabbir Ahmed, MD
4. Tahfimul Quran-by Moududi
5. Different hadith books (Abu Daud, Muslim, Bukhari)
6. Ahsanul Makal
7. Different website on Shia and Sunni sects
লেখক- হানিফ ঢাকা

কোরানে ‘উম্মী’ শব্দের ব্যবহার

Collection from FB by zahir Alam

কোরানে ‘উম্মী’ শব্দের ব্যবহার

১. অকুলীল্লাজিনা…আছলামতুম। [৩: এমরান-২০] অর্থ: আর বল! যাদের কেতাব দেয়া হয়েছে এবং যাদের কেতাব দেয়া হয়নি, (উম্মীঈনা) ‘ তোমরা সকলে কি আত্মসমর্পণ করেছ?’ (ভক্ত বা নিবেদিত হয়েছ?)

২. হুয়াল্লাজি মিনহুম…। [৬২: জুমুয়া-২] অর্থ: তিনিই উম্মীদিগের মধ্যে তাদেরই একজনকে রাছুলরূপে মনোনীত করেছেন…।

৩. অ মিনহুম…লা ইয়াজুন্নুন। [২: বাকারা-৭৮] অর্থ: তাদের মধ্যে এমন কতক উম্মী লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোনো জ্ঞান নেই, তারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।

উল্লিখিত ৩টি আয়াতে ‘উম্মী’ শব্দের অর্থ ও ব্যবহার স্বচ্ছ আয়নার মতো পরিষ্কার। অর্থাৎ এর পূর্বে যাদের প্রতি কোনো রাছুল আসেনি, যারা পূর্বে কোনো কেতাব বা পথপ্রদর্শক পায়নি, নবীসহ তাদের সকলকেই ‘উম্মী’ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছে।

মহানবী মূর্খ/বকলম ছিলেন না:

রাছুল বি এ, এম এ, ডাক্তার, ডক্টরেট বা ইঞ্জিনিয়ার না হলেও গণ্ডমূর্খ বা বকলম ছিলেন না। এবং তা প্রমাণের জন্য কোরানই যথেষ্ট।

তিনি লিখতে পড়তে জানতেন:

ক. অ কাজালিকা…লিনুবাইয়েনাহু। [৬: আনআম-১০৫] অর্থ: এভাবে আয়াতগুলি বিভিন্নভাবে বর্ণনা করি; ফলে উহারা বলে, ‘তুমি উহা পড়ে নিয়েছ?’ অথচ আমি তো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করি জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য।

খ. ইয়াতলু….হেকমাতা… [৬২: জুমুয়া- ২] …তাদের নিকট তাঁর আয়াত/কেতাব পড়ে শুনায়; তাদের পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত…।

গ. ছুম্মা…মাজনুন। [৪৪: দুখান-১৪] …অতঃপর তারা তাকে অমান্য করে বলে, ‘শিক্ষিত পাগল/শিখানো কথা বলে, সে ত পাগল’।

ঘ. উতলু… কেতাব… [২৯: আনকাবুত- ৪৫] তুমি তোমার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পড়…।

ঙ. অ কালূ…আছিলান। [২৫: ফুরকান-৫] উহারা বলে, এগুলি তো আদিকালের উপকথা, যা সে (মুহাম্মদ) লিখে রাখে। যেগুলি সকাল সন্ধা তাকে পড়ানো/শিখানো হয়/তাঁর নিকট আবৃতি করা হয়।

চ. একরা…কালাম। [৯৬: আলাক-১-৪] তোমার প্রতিপালকের নামে পড়…যিনি লিখিতভাবে/লিখার মাধ্যমে (কাগজ/কলমের সাহায্যে) শিক্ষা দিয়েছেন।

ছ. অ মা…মুবতেলূন। [২৯: আনকাবুত-৪৮] তুমি তো অতীতের কোন কিতাব (নিজে) লিখনি বা পড়নিও, যাতে মিথ্যাবাদীগণ তোমাকে সন্দেহ করতে পারে।

উল্লিখিত আয়াতগুলি পরিস্কার সাক্ষ্য দেয় যে, তিনি লিখতে জানতেন, পড়তে জানতেন, পড়াতে জানতেন, শিক্ষা দিতেন! শিক্ষকতাও করতেন!

ছ নং দেখে নিশ্চিত হোন যে, অতীতের গ্রন্থগুলি, যাতে নবী-রাছুল আগমনের ভবিষ্যৎ বাণী উল্লেখ আছে যা তিনি নিজে লিখেননি, নিজে পড়েননি, নিজে অনুসরণ করেননি; এমনকি তিনি তখন উপস্থিতও ছিলেন না, যাতে অবিশ্বাসীগণ সন্দেহ করতে পারে যে, মুহাম্মদ স্বয়ং উহা নিজ হাতে নকল করেছে।

আদিকাল থেকে রাছুলের নামে কুৎসা রটিত হয়ে আসছে যে, তিনি মূর্খ বকলম ছিলেন এবং বকলম নবীর মাধ্যমে কোরান অহি হয়ে প্রকাশ করাকে মুছলমানগণ একটি অন্যতম মোজেজা বলেও বিশ্বময় প্রচার করতে গৌরব বোধ করে; এবং তার স্বপক্ষে কোরানে উল্লিখিত ‘উম্মী’ শব্দটি ব্যবহার করে। মূলত ‘উম্মী’ শব্দটির অর্থ প্রধানত সাদাসিধা, নির্দোষ, সরল প্রকৃতির; ইংরাজিতে যাকে ‘ইন্নোছেন্ট’ বলে কিন্তু তিনি ইল্লিটারেট বা ইডিয়ট ছিলেন না।

আল্লাহ কি! অহি কি! কেতাব কি! জিব্রাইল কি! ইত্যাদি সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ অজ্ঞ (উম্মী) ছিলেন। এ অর্থেই তিনি উম্মী ছিলেন এবং তাঁর সম্প্রদায়ও উম্মী ছিল; যাদের কাছে এর পূর্বে কোন নবী-রাছুল আসেনি, কেতাবও আসেনি! এমন সম্প্রদায়কেই কোরানে উম্মী বলা হয়েছে (তথ্য: ৩: ২০; ৬২: ২; ২: ৭৮)। এজন্যই নবীসহ আবুযেহেল, আবু সুফিয়ান, আলী, পণ্ডিত মাবিয়াসহ কবি-সাহিত্যিক, দার্শনিক, রাজনীতিবিদসহ পূর্ণ জাতিটিকেই ‘উম্মী’ বলা হয়েছে।

ধর্মকে পূজি বানিয়ে অর্থ ( টাকা ) কামাই করার কোন সুযগ নাই

By Rakib Ahmed fbfd

ধর্মকে পূজি বানিয়ে অর্থ ( টাকা ) কামাই করার কোন সুযগ নাই।
কোরআন দেখুন………..
সূরা: সাবা- আয়াত: ৪৭
বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না, বরং তা তোমরাই রাখ। আমার পারিশ্র মিক তো আল্লাহর কাছে রয়েছে। প্রত্যেক বিষয় তার সামনেই।
সূরা: ছোয়াদ- আয়াত: ৮৬
বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন মজরী চাই না আর আমি লৌকিকতাকারীও নই।

সূরা: হুদ- আয়াত: ২৯
হে আমার জাতি! আমি তো এজন্য তোমাদের কাছে কোন অর্থ ( টাকা ) চাই না! আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহর জিম্মায় রয়েছে। আমি কিন্তু ইমানদারদের তারিয়ে দিতে পারিনা। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত লাভ করবে। বরং তোমাদেরকেই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি।

সূরা: ফুরকান- আয়াত: ৫৭
বলুন, আমি তোমাদের কাছে এর কোন পারিশ্রমিক চাই না, যে ইচ্ছা করে সে তার পালনকর্তার পথ অবলম্বন করুক।

সূরা: হুদ- আয়াত: ৫১
হে আমার জাতি, আমি এ জন্য তোমাদের কাছে কোন মজুরী চাই না, আমার মজুরী তারই কাছে আছে যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন! তবুও তোমরা কেন বোঝনা।

সকল নবী রাসূল মানুষকে কি বলেছেন দেখুন।
সূরা: আশ শুআ’রা- আয়াত: ১০৯
আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না, আমার পারিশ্রমিক তো বিশ্ব পালনকর্তাই দেবেন।

দয়াময় আল্লাহ কি বলেন দেখুন।
সূরা: আল মু’মিনুন- আয়াত: ৭২
না আপনি তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চান ? আপনার পালনকর্তার পারিশ্রমিক উত্তম এবং তিনিই রিযিকদাতা।

সূরা: আত্ব তুর- আয়াত: ৪০
না আপনি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান যে তাদের উপর জরিমানার বোঝা চেপে পরে।

সূরা: আশ্-শুরা- আয়াত: ২৩
………………………………………………………………..বলুন, আমি আমার দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে কেবল মাত্র আত্নীয়তাজনিত সৌহার্দ চাই।……………………………………………………।

সূরা: আশ শুআ’রা- আয়াত: ১২৭
আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না! আমার পারিশ্রমিক তো পালনকর্তা দেবেন।

সূরা: আশ শুআ’রা- আয়াত: ১৪৫
আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না! আমার পারিশ্রমিক তো বিশ্ব পালনকর্তা দিবেন।

সূরা: আশ শুআ’রা- আয়াত: ১৬৪
আমি এর জন্যে তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না! আমার পারিশ্রমিক তো বিশ্ব পালনকর্তা দেবেন।

সূরা: আশ শুআ’রা- আয়াত: ১৮০
আমি তোমাদের কাছে এর জন্য কোন পারিশ্রমিক চাই না! আমার পারিশ্রমিক তো বিশ্ব পালনকর্তা দিবেন।

সূরা: ইউনুস- আয়াত: ৭২
……………………………………………………………….
আমি তোমাদের কাছে কোন রকম বিনিময় কমনা করি না! আমার বিনিময় হল আল্লাহর দায়িত্বে…………………………………………….।

সূরা: ইউসুফ- আয়াত: ১০৪
আপনি এর জন্যে তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চান না! এটা তো সারা বিশ্বের জন্য উপদেশ ছারা কিছু নয়।

সূরা: আল আন-আম- আয়াত: ৯০
……………………………………………………………
আপনি বলে দিন, আমি এর জন্য তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না! এটি সারা বিশ্বের জন্যে উপদেশ মাত্র।

////////
এবার দেখুন যারা পারিশ্রমিক নিতো
যারা ইসলামকে বেচা কিনা করতো

সূরা: আল ইমরান- আয়াত: ১৮৭
আর আল্লাহ যখন আহলে কিতাবদের কাছ থেকে প্রতিজ্ঞা গ্রহন করলেন যে, তা মানুষের নিকট বর্ণনা করবে এবং গোপন করবে না, তখন তারা সে প্রতিজ্ঞাকে নিযেদের পেছনে ফেলে রাখল আর তার কেনা-বেচা শুরু করল সামান্য অর্থের বিনিময়ে! সুতরাং কতইনা মন্দ তাদের এ বেচা-কিনা।

এবার দেখুন যারা বেচা-কিনা করে না।
সূরা: আল ইমরান- আয়াত: ১৯৯
আর আহলে কিতাবদের মধ্য কেউ কেউ এমনও রয়েছে, যারা আল্লাহর উপর ইমান আনে যা কিছু তোমার উপর অবতীর্ণ হয় আর যা কিছু তাদের উপর অবতীর্ণ হয়েছে সেগুলোর উপর, আল্লাহর সামনে বিনয়াবনত থাকে এবং আল্লাহর আয়াতসমূহকে স্বল্পমুল্যের বিনিময়ে সওদা করে না, তারাই হলো সে লোক যাদের জন্যে পারিশ্রমিক রয়েছে তাদের পালনকর্তার নিকট! নিশ্চই আল্লাহ যথাশীগ্রই হিসেব চুকিয়ে দেবেন।

এবার দেখুন যারা অর্থ (টাকা) কামাই করে তাদের
শাস্তি।
সূরা: বাক্বারা- আয়াত: ১৭৪
নিশ্চই যারা সেসব বিষয় গোপন করে, যা আল্লাহ কিতাবে নাযিল করেছেন এবং তুচ্ছ অর্থ ( টাকা ) গ্রহণ করে, তারা আগুন ছারা নিযেদের পেটে আর কিছুই ভর্তি করছে না। আর আল্লাহ কেয়ামতএর দিন না তাদের সাথে কথা বলবেন না তাদের পবিত্র করবেন। বরং তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।
////
( তাদের আরো আযাব এর কথা আল্লাহ বলেছে )
কোরআন দেখুন……..
সূরা: তওবা- আয়াত: ৩৪
সূরা: বাক্বারা- আয়াত: ৭৯
সূরা: আল ইমরান ,, : ৭৮

সূরা: আল আ’রাফ- আয়াত: ১৬৯
তারপর তাদের পিছনে এসেছে কিছু অপদার্থ, যারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবের! তারা নিকৃষ্ট পার্থিব উপকরণ আহরণ করছে এবং বলছে আমাদেরকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে………………………………………………//////

মূল বিষয় হলো যারা ধর্মকে পূজি বানিয়ে
অর্থ ( টাকা ) কামাই করে, তাদের সাথে
আল্লাহ কথা বলবেন না এবং তাদেরকে
পবিত্র করবেন না।
তারা তাদের পেটে আগুন ভর্তি করছে।
সূরা: বাক্বারা- আয়াত: ১৭৪

( ধন্যবাদ আপনাদের আয়াতগুলো পড়ার জন্য )

.

comments link

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2136450836631983&id=100008012626159

কোরআন নাড়ী জাতি কে যে সন্মান দিয়েছে সেই তুলায় হাদিস গুলি চরম অবমাননাকর

By abdul Al mamun fbfd

.

হাদিস হল নবী (সঃ) এর কথা-বার্তা, আচার-বিচার, ধ্যান-ধারণা, ব্যবহার-ব্যক্তিত্ব, মতামত-সিদ্ধান্ত, এ সবের বিস্তারিত রিপোর্ট, তাঁর সহচরেরা দিয়ে গেছেন। হাদিস ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, কোরানের পরেই এর স্থান। হাদিস বাদ দিলে ইসলামের সাংঘাতিক অঙ্গহানী হয়ে যায়। বিখ্যাত মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম তাঁর বিখ্যাত ‘‘হাদিস সংকলনের ইতিহাস’’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় বিভিন্ন বুলন্দ ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘‘হাদিস অমান্যকারী কাফির’। আমার সন্দেহ হয় যে সে কোনোদিন কোরআন পড়ে নি। কোরআন নাড়ী জাতি কে যে সন্মান দিয়েছে সেই তুলায় হাদিস গুলি চরম অবমাননাকর । এই হাদিস গুলি ইসলামের চেহারাই পালটে দিয়েছে।

সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৩১ হাদিস ৫৯৬৬:
আবু মূসার বর্ণনা মতে নবী (দঃ) বলেছেন: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই ত্রুটিমুক্ত কিন্তু নারীদের মধ্যে কেউ-ই ত্রুটিমুক্ত নয়, কেবল ইমরানের কন্যা মেরী এবং ফারাওয়ের স্ত্রী আয়েশা ছাড়া”।

প্রমাণ দেখাচ্ছি সুনান আবু দাউদ হাদিস থেকে; বই ১১ হাদিস নম্বর ২১৩৫:
কায়েস ইবনে সা’দ বলছেন, ‘‘নবী (দঃ) বললেন: “আমি যদি কাউকে কারো সামনে সেজদা করতে বলতাম, তবে মেয়েদের বলতাম তাদের স্বামীদের সেজদা করতে। কারণ আল্লাহ স্বামীদের বিশেষ অধিকার দিয়েছেন তাদের স্ত্রীদের ওপরে”।

সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১৪২:
ওমর বিন খাত্তাব বলেছেন: নবী (দঃ) বলেছেন, “কোন স্বামীকে (পরকালে) প্রশ্ন করা হবে না কেন সে বৌকে পিটিয়েছিল”।

সহিহ্‌ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩০:
আবদুল্লা বিন ওমর বলেছেন, আল্লাহর নবী বলেছেন যে তিন জিনিসের মধ্যে অশুভ আছে, নারী, বাড়ী আর ঘোড়া।

সহিহ্‌ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন, নবী বলেছেন যে আমার পর পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছু রইল না।

সহিহ্‌ বোখারি, ভলুম ১, হাদিস ৩০১:
আবু সাইদ আল খুদরী বলেছেন:- একদিন নবী (দঃ) ঈদের নামাজের জন্য মাসাল্লাতে গিয়েছিলেন। সেখানে কিছু নারীদের সামনে দিয়ে যাবার সময় তিনি বললেন, “তোমরা সদকা দাও, কেননা আমি দোজখের আগুনে বেশীর ভাগ নারীদেরই পুড়তে দেখেছি”। তারা বলল:-“এর কারণ কি, ইয়া রসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন:-“তোমরা অভিশাপ দাও এবং তোমাদের স্বামীদের প্রতি তোমরা অকৃতজ্ঞ। ধর্মে আর বুদ্ধিতে তোমাদের চেয়ে খাটো আমি আর কাউকে দেখিনি। একজন বুদ্ধিমান সংযমী পুরুষকে তোমাদের কেউ কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে”। তারা বলল:- “ইয়া রসুলুল্লাহ! ধর্মে আর বুদ্ধিতে আমরা খাটো কেন?” তিনি বললেন: “দু’জন নারীর সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সমান নয়?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি সত্যি নয় যে মাসিক-এর সময় নারীরা নামাজ এবং রোজা করতে পারে না?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল ধর্মে ঘাটতি”।

সুনান আবু দাউদ ১১ খণ্ড, হাদিস ২১৫৫:
আবদুল্লা বিন আম’র বিন আ’স বলছেন: ‘নবী (দঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ দাস-দাসী কিনলে বা বিয়ে করলে তাকে বলতে হবে- ও আল্লাহ! আমি এর স্বভাব চরিত্রে ভালো কিছুর জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করি। আর এর চরিত্রের মন্দ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি। কেউ উট কিনলেও তাকে উটের কুঁজো ধরে এ কথা বলতে হবে”’।

সহিহ্‌ বোখারী ভল্যুম ৫,৭০৯:
সাহাবী আবু বাক্‌রা বলছেন, নবী (দঃ) বলেছেন যে, যে জাতি নারীর ওপরে নেতৃত্ব দেবে, সে জাতি কখনো সফলকাম হবে না।

সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩২৪০:
জাবির বলেছেন: আল্লাহর নবী (দঃ) একদিন এক স্ত্রীলোক দেখে তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে এলেন, সে তখন একটা চামড়া পাকা করছিল। তিনি তার সাথে সহবাস করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের কাছে গিয়ে বললেন, নারী শয়তানের রূপে আসে যায়। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নারীকে দেখলে নিজের স্ত্রীর কাছে যাবে, তাতে তার মনের অনুভূতি দুর হবে।

এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৬৭:
শয়তান নারীকে বলে: তোমরা আমার সৈন্যদলের অর্ধেক। তোমরা আমার অব্যর্থ তীর। তোমরা আমার বিশ্বস্ত। আমি যা চাই তা তোমাদের মাধ্যমে হাসিল করি। আমার অর্ধেক সৈন্য হল কামনা, বাকি অর্ধেক হল ক্রোধ।
একই বই, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৭০-৩৭১ থেকে:
সাইদ ইবনে জুবায়ের বলেছেন, শুধুমাত্র দেখেই দাউদ (দঃ) এর মনে বাসনার উদ্রেক হয়েছিল। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে (সুলায়মান দঃ) বললেন:- হে পুত্র! সিংহ বা কালো-কোবরা সাপের পেছনে হাঁটাও ভাল, তবু কোন নারীর পেছনে হাঁটবে না। নবী (দঃ) বলেছেন:-“নারীর প্রতি কামনার চেয়ে পুরুষের জন্য বেশী ক্ষতিকর কিছু আমি রেখে যাচ্ছি না”।
একই বই ভল্যুম ২,পৃষ্ঠা ৩৭৩:
স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় কম থাকতে হবে নতুবা সে তাকে অবজ্ঞা করবে: বয়স,শারীরিক উচ্চতা, ধন সম্পদ, এবং বংশগৌরব। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় বেশী থাকতে হবে:- সৌন্দর্য, চরিত্র, আদব-কায়দা, এবং ধর্মে মতি।
সহিহ্‌ মুসলিম, বই ২৬, হাদিস ৫৫২৩:
আবদুল্লা বিন ওমর বর্ণনা করছেন:আল্লাহর নবী (দঃ) বলেছেন, দুর্ভাগ্য যদি কিছুতে থাকে, তবে তা হল বাড়ি, ঘোড়া আর নারী’’।
ইসলামী বিশ্বকোষ (ডিকশনারি অব ইসলাম) থেকে পৃষ্ঠা ৬৭৮-৬৭৯:
সমগ্র মানব জাতির জন্য নারীর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছুই আমি রেখে যাচ্ছি না। দুনিয়া এবং নারী থেকে দূরে থাকবে। কারণ নারীর কারণেই ইসরাইলের পুত্ররা প্রথম পাপ করেছিল।
সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৩৬ হাদিস ৬৬০৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন: আল্লাহ’র নবী (দঃ) বলেছেন, আমার পরে পুরুষের জন্য নারীর কারণে ক্ষতির চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছুর সম্ভাবনা আমি রেখে যাচ্ছি না।
শাফী শরিয়া (রিলায়েন্স অফ দি ট্রাভেলার বা উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৬৭২, নম্বর পি-২৮-১:
নবী (দঃ)বলেছেন: পুরুষরা ধ্বংস হয়ে গেছে যখনি তারা মেয়েদের অনুগত হয়েছে।
খুলে দেখা যাক খোদ সহিহ্‌ মুসলিম হাদিস থেকে, বই ৮ হাদিস ৩৪৭১:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, নবী (দঃ) বলেছেন, বিবি হাওয়া না হলে স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি কখনো অবিশ্বাসের কাজ করত না। অর্থাৎ স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি অবিশ্বাসের কাজ করে থাকে।
এবারে শুনুন ইসলামী বিশ্বকোষ তার ৬৭৫ পৃষ্ঠায় স্বামীদের কি বলছে:
১। কষ্মিন কালেও স্ত্রীকে বেশী পিরীত দেখাবে না হে, তা হলেই সে কিন্তু লাই পেয়ে মাথায় উঠে সর্বদিকে বিশৃঙ্খল করে দেবে। চিত্ত যদি অতি প্রেমে গদগদ হয়ে ওঠেই, তবে অন্তত: স্ত্রীর কাছে সেটা চেপে রেখো বাপু!
২। বিষয়-সম্পত্তির পরিমাণ তো স্ত্রীকে বলবেই না, অন্যান্য গোপন কথাও লুকিয়ে রেখো সযত্নে। তা না হলেই কিন্তু সে তার দুর্বুদ্ধির কারণে সর্বনাশ করে দেবে সবকিছু।
৩। ও হ্যাঁ, তাকে কখনো কোন বাদ্য-বাজনা করতে দেবে না, আর যেতে দেবে না বাইরেও। পুরুষদের কথা বার্তা তো কিছুতেই শুনতে দেবে না।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২০৪৫:
মাকিল ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবীকে (দঃ) বলল “একটা উচ্চ বংশের সুন্দরী মেয়ে আছে, কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করতে পারি?” নবী (দঃ) বললেন,”না”। সে তাঁর কাছে আবার এল। নবী (দঃ) আবার তাকে নিষেধ করলেন। সে তৃতীয়বার তাঁর কাছে এলে নবী (দঃ) বললেন:”সেই মেয়েদের বিয়ে কর যারা প্রেমময়ী এবং উৎপাদনশীল। কারণ আমি তোমাদের দিয়ে সংখ্যায় অন্যদের পরাস্ত করব”।
এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১, পৃষ্ঠা ২২৮:
নবী (দঃ)বলেছেন, উর্বর এবং বাধ্য মেয়েদের বিয়ে কর। যদি সে অবিবাহিতা হয় এবং অন্যান্য অবস্থা জানা না থাকে, তবে তার স্বাস্থ্য এবং যৌবন খেয়াল করবে যাতে সে উর্বর হয়।
এহিয়া উলুম আল দীন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২৬- ২২৮-এ। দেখুন, কাকে বিয়ে করতে হবে সে ব্যাপারে কি রকম উদ্ভট পরামর্শ দেয়া আছে:
তাকে অসুন্দরী হলে চলবে না, হতে হবে সুন্দরী। তার স্বভাবটাও হতে হবে সুন্দর। এবং আরও:- নবী বলেছেন: সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তাকালে স্বামী তৃপ্ত হয়, স্বামীর যে বাধ্য, এবং স্বামীর অবর্তমানে যে নিজের এবং তার সম্পদ রক্ষা করে। যে সব মেয়েদের বিয়ে করা যাবে না তারা হল, বিবাহিতা, ধর্মত্যাগিনী, নাস্তিক, নারীবাদী, স্বাধীনচেতা, অগ্নিপূজক, মূর্তিপূজক, অশ্লীল যৌনাচারে অভিযুক্ত তা সে প্রমাণিত হোক বা না-ই হোক, এবং এ ছাড়া কোরানে যাদের নিষেধ করা হয়েছে আত্মীয়তার কারণে।

সহিহ্‌ বোখারি ভলুম ৭ হাদিস ৮১:
উকবার বর্ণনামতে নবী (দঃ) বলেছেন: (বিয়ের) যে সব বিধানের মাধ্যমে তোমাদের অধিকার দেয়া হয়েছে (নারীদের) গোপন অঙ্গ উপভোগ করবার, সেগুলো মেনে চলতেই হবে।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২৬:
বাসরাহ্‌ নামে এক আনসারি বর্ণনা করলেন:
আমি পর্দায় আবৃত থাকা এক কুমারীকে বিবাহ করলাম। আমি যখন তার নিকটে আসলাম তখন তাকে দেখলাম গর্ভবতী। (আমি ব্যাপারটা নবীকে জানালাম।) নবী (সাঃ) বললেন: ‘মেয়েটি মোহরানা পাবে। কেননা তুমি যখন তাকে মোহরানা দিলে তখন তার যোনি তোমার জন্য আইনসিদ্ধ হয়ে গেল। শিশুটি তোমার ক্রীতদাস হবে এবং শিশুর জন্মের পর মেয়েটিকে প্রহার করবে (এই মত ছিল হাসানের)।‘ ইবনে আবুস সারী বলেছেন: ‘তোমার লোকেরা তাকে প্রহার করবে—খুব কঠোর ভাবে।‘

সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২১:
মোহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে সওবান নবীর (দঃ) এক সাহাবি থেকে বর্ণনা করলেন: আলী নবীর (দঃ) কন্যা ফাতেমাকে বিবাহ করে তাঁর সাথে সহবাস করতে চাইলেন। আল্লাহ্‌র নবী (দঃ) আলীকে নিষেধ করলেন তাঁর কন্যার সাথে সহবাস করতে যতক্ষণ না আলী ফাতেমাকে কিছু দিয়ে দেন। আলী বললেন: ‘আমার কাছে কিছুই নেই’। আল্লাহ্‌র রসুল (দঃ) বললেন: ‘তোমার যুদ্ধের পোশাক তাকে দিয়ে দাও।‘ আলী তাই করলেন এবং ফাতেমার সাথে সহবাস করলেন।
১। সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩৩৬৬:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন, যে স্ত্রী স্বামীর বিছানা থেকে অন্যত্র রাত্রি যাপন করে, ফেরেশতারা তাকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে।
২। সহিহ্‌ মুসলিম, বই ৮, হাদিস ৩৩৬৭:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন: যাঁর হাতে আমার জীবন (আল্লাহ) তাঁর নামে বলছি, যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে, আর সে স্ত্রী সাড়া না দেয়, তবে সে স্বামী খুশী না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন।
৩। ইমাম গাজ্জালী, বই এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১ পৃষ্ঠা ২৩৫:
নিজের সমস্ত আত্মীয়, এমন কি নিজের থেকেও স্বামীকে বেশী প্রাধান্য দিতে হবে। যখনই স্বামীর ইচ্ছে হবে তখনই সে যাতে স্ত্রীকে উপভোগ করতে পারে সে জন্য স্ত্রী নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার এবং তৈরি রাখবে।
৪। ইমাম শাফি শারিয়া আইন (উমদাত আল সালিক) থেকে, পৃষ্ঠা ৫২৫ আইন নম্বর এম-৫-১:
স্বামীর যৌন-আহ্বানে স্ত্রীকে অনতিবিলম্বে সাড়া দিতে হবে যখনই সে ডাকবে, যদি শারীরিকভাবে সে স্ত্রী সক্ষম হয়। স্বামীর আহ্বানকে স্ত্রী তিনদিনের বেশী দেরি করাতে পারবে না।
৫। শারিয়া আইন থেকে (উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৫২৬ আইন নম্বর এম-৫-৬:
যৌন মিলনের জন্য শরীর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে স্ত্রীকে চাপ দেবার অধিকার স্বামীর আছে।
৬। শারিয়া আইন থেকে, পৃষ্ঠা ৯৪ আইন নম্বর ই-১৩-৫:
স্ত্রী যদি বলে তার মাসিক হয়েছে আর স্বামী যদি তা বিশ্বাস না করে, তাহলে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা স্বামীর জন্য আইনত: সিদ্ধ।
৭। শারিয়া আইন ত্থেকে, পৃষ্ঠা ৫৩৮ আইন নম্বর এম-১০-৪:
নবী (দঃ) বলেছেন, আল্লাহ এবং কেয়ামতে যে স্ত্রী বিশ্বাস করে, সে স্বামীর অনিচ্ছায় কাউকে বাসায় ঢুকতে দিতে বা বাসার বাইরে যেতে পারবে না।
বাংলা কোরান, পৃষ্ঠা ৮৬৭, তফসির:
কুরতুবী বলেন: এ আমাদের আরও শিক্ষা দিয়েছে যে, স্ত্রীর যে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর যিম্মায় ওয়াজিব (বাধ্য), তা চারটি বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ: আহার,পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। স্বামী এর বেশী কিছু স্ত্রীকে দিলে অথবা ব্যয় করলে তা হবে অনুগ্রহ, অপরিহার্য নয়।
স্ত্রীর ভরণপোষণ
এই ব্যাপারে শারিয়া আইন একেবারে জলবৎতরলং। দেখুন:
শারিয়া আইন এম ১১.২ (ঐ বই পৃঃ ৫৪২)
স্বামীকে স্ত্রীর দৈনিক ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে হবে। স্বামী সচ্ছল হলে স্ত্রীকে প্রতিদিন এক লিটার শস্য দিতে হবে যা কিনা ঐ অঞ্চলের প্রধান খাদ্য। (O. এখানে প্রধান খাদ্য বলতে বুঝান হচ্ছে যা ঐ অঞ্চলের লোকেরা সর্বদা খায়, এমনকি তা যদি শক্ত, সাদা পনিরও হয়। স্ত্রী যদি তা গ্রহণ না করে অন্য কিছু খেতে চায়, তবে স্বামী তা সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে না। স্বামী যদি প্রধান খাদ্য ছাড়াও স্ত্রীকে অন্য কিছু খেতে দেয় তা স্ত্রী গ্রহণ না করলেও করতে পারে।) অসচ্ছল স্বামী প্রতিদিন তার স্ত্রীকে ০.৫১ লিটার খাদ্যশস্য দিবে। আর যদি স্বামীর সামর্থ্য এর মাঝামাঝি হয় তবে স্বামী তার স্ত্রীকে প্রতিদিন ০.৭৭ লিটার খাদ্যশস্য দিতে বাধ্য থাকবে।
এছাড়াও স্বামীকে শস্য পেষণের খরচ দিতে হবে যাতে ঐ শস্য আটা করে রুটি বানানো হয়। (O. স্ত্রী একাজ নিজে করলেও স্বামীকে খরচটা দিতে হবে স্ত্রীকে।) রুটি খাওয়ার জন্য অন্য যে সব সামগ্রী দরকার, যেমন, মাংস, তেল, লবণ, খেজুর, সির্কা, পনীর ইত্যাদি তা ও সরবরাহ করতে হবে। এসবের পরিমাণ নির্ভর করবে মরশুমের উপর। ফলের মরশুমে যে ফল পাওয়া যাবে তাই হবে প্রধান। ঐ শহরের লোকেরা যে পরিমাণ মাংস খায় স্ত্রীকেও সেই পরিমাণ মাংস দিতে হবে।
স্বামী স্ত্রী উভয়ে রাজী থাকলে স্ত্রীর দৈনিক খোরপোষের খরচ স্বামী টাকায় অথবা কাপড়ে দিতে পারবে।
শারিয়া আইন ১১.৩ (ঐ বই, পৃঃ ৫৪৩) স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের জন্য দরকারি বস্তু সমূহ:
স্ত্রী তার কেশবিন্যাসের জন্য তেল, শ্যাম্পু, সাবান, চিরুনি পাবে। (যা সেই সহরে সচরাচর ব্যবহার হয়।) স্বামীকে তার স্ত্রীর বগলের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য যে সুগন্ধির প্রয়োজন তা দিতে হবে। যৌন সংগমের পূর্বে ও পরে স্ত্রীর গোসলের যে পানি দরকার তা স্বামীকে দিতে হবে। সন্তান প্রসবের পরে রক্ত ধৌত করার জন্য যে পানির প্রয়োজন তাও স্বামীকে দিতে হবে। এই দুটি কারণ ছাড়া স্বামী তার স্ত্রীকে সাধারণ গোসল অথবা ধৌতের জন্যে যে পানির প্রয়োজন তার খরচ দিতে বাধ্য থাকবে না।

শারিয়া আইন এম ১১.৫ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪) কাপড় চোপড়ের খরচ:
স্ত্রী যে অঞ্চলে থাকবে ঐ অঞ্চলের যা প্রধান পোশাক স্ত্রী তা পাবে। (O. পোশাক নির্ভর করবে স্ত্রী লম্বা না বেঁটে, খর্ব না স্থূল এবং মরশুম গ্রীষ্ম না শীত কাল।) গ্রীষ্ম কালে স্বামী বাধ্য থাকবে স্ত্রীকে মাথা ঢাকার কাপড় দিতে। এছাড়া গায়ের লম্বা জামা, অন্তর্বাস, জুতা ও একটা গায়ের চাদর দিতে হবে, কেননা স্ত্রীকে হয়ত বাইরে যেতে হতে পারে। শীতের মরশুমে ঐ একই পোশাক দিতে হবে এবং অতিরিক্ত হিসাবে একটা লেপের মত সুতি বস্ত্রও দিতে হবে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষার জন্য। শীতের সময় প্রয়োজন পড়লে গরম করার তেল অথবা লাকড়ি যা দরকার তাও দিতে হবে। এ ছাড়াও সামর্থ্য অনুযায়ী স্বামীকে দিতে হবে, কম্বল, বিছানার চাদর, বালিশ ইত্যাদি। (O. খাওয়াদাওয়া ও পান করার জন্য যেসব সামগ্রী দরকার তাও স্ত্রীকে দেওয়া দরকার।)

শারিয়া আইন এম ১১.৯ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৫): স্বামীর ভরণপোষণ শর্তযুক্ত:
স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বামী সে পর্যন্তই বহন করবে যে পর্যন্ত চাহিবার মাত্র স্ত্রী তার স্বামীকে দেহদান করে অথবা দেহদানের প্রস্তুতি দেখায়। এর অর্থ হচ্ছে স্ত্রী স্বামীকে পূর্ণ যৌন উপভোগ করতে দিবে এবং কোন অবস্থাতেই স্বামীর যৌন চাহিদার প্রত্যাখ্যান করবে না। স্বামীর ভরণপোষণ স্ত্রী পাবেনা যখন:
স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হবে, তার মানে যখন স্ত্রী স্বামীর আদেশ অমান্য করবে এক মুহূর্তের জন্যে হলেও।
স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে ভ্রমণে যায় অথবা স্বামীর অনুমতি নেয়, কিন্তু ভ্রমণ করে নিজের প্রয়োজনে।
স্ত্রী হজ্জ অথবা ওমরা করার উদ্দেশ্যে এহরাম করে।
স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে নফল রোজা রাখে।

আইন এম ১১.৪ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪)
স্বামী তার স্ত্রীর প্রসাধন সামগ্রী, চিকিৎসকের খরচ, ঔষধের খরচ অথবা এই ধরনের অন্যান্য খরচ বহন করতে বাধ্য থাকবে না, যদিও স্বামী চাইলে তা করতে পারে। এটা শুধু সুপারিশ, বাধ্যবাধকতা নয়। কিন্তু শিশু জন্মের সাথে জড়িত খরচ স্বামীকে বহন করতে হবে।
আইন এম ১১.৬ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪)
দৈনিক ভাতা শুরু হবে দিনের শুরুতে। স্বামী তার স্ত্রীকে দিনের প্রথমে স্ত্রীর দৈনিক ভাতা দিতে বাধ্য থাকবে। মরশুমের শুরুতেই স্বামী তার স্ত্রীকে পোশাকের কাপড় দিয়ে দিবে।
তালাক প্রাপ্ত ও গর্ভবতী স্ত্রীদের কি অবস্থা?
আইন এম ১১.১০ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৬)
যে স্ত্রী ইদ্দতে থাকবে, সে তালাক (অস্থায়ী) অথবা বিধবার জন্যই হোক, তার অধিকার থাকবে স্বামীর গৃহে থাকার ইদ্দতের সময় পর্যন্ত। এরপর ভরণপোষণের ব্যাপারটা এই রকম:
১। তিন তালাক (স্থায়ী তালাক) হয়ে গেলে স্ত্রী ইদ্দতের সময় ভরণপোষণ অথবা ইদ্দতের পর কোন প্রকার ভরণপোষণ পাবে না। বিধবা নারীও কোন দৈনিক ভাতা পাবে না।
২। ভরণপোষণ হবে একমাত্র ইদ্দতের সময়, তাও যদি তালাক অস্থায়ী হয় যথা এক তালাক অথবা দুই তালাক, যেখানে সম্ভাবনা আছে যে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে ফেরত চাইবে।
৩। তিন তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে সে দৈনিক ভাতা পাবে (A. শিশু ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত। এর পর শিশুর দেখা শোনা ও লালনপালনের জন্যে।)। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা না থাকলে সে কোন ভাতাই পাবে না।

শারিয়া আইন (উমদাত আল-সালিক) নম্বর এম ৫.৪ (পৃঃ ৫২৬):
স্ত্রীর দেহকে উপভোগ করার পূর্ণ অধিকার থাকবে স্বামীর। (A: আপাদমস্তক পর্যন্ত, তথা পায়ের পাতা পর্যন্ত। কিন্তু পায়ু পথে সঙ্গম করা যাবেনা—এটা বে-আইনি)। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যৌনসংগম কালে স্ত্রী যেন ব্যথা না পায়। স্বামী তার স্ত্রীকে যেখানে খুশী নিয়ে যেতে পারবে।

শারিয়া আইন (ঐ বই) নম্বর এম ৫.৬:
স্ত্রী তার যৌনাঙ্গকে সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বাধ্য থাকবে—এটা স্বামীর অন্যতম অধিকার। এই জন্য স্ত্রীকে মাসিক স্রাবের পর গোসল নিতে হবে এবং স্বামীর পূর্ণ যৌন উপভোগ করার জন্য যা যা দরকার তা তাকে করতে হবে। এর মাঝে থাকছে নিয়মিত যৌনাঙ্গের কেশ কামানো, এবং যৌনাঙ্গের ভিতরে জমে যাওয়া ময়লা দূর করা।

সহিহ মুসলিম বই ৮, নম্বর ৩৩৬৬:
আবু হুরায়রা বললেন: আল্লার রসুল (সঃ) বলেছেন যদি কোন রমণী তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাত্রি যাপন করে তবে ফেরেশতারা সেই নারীকে অভিশাপ দেয় ভোরবেলা পর্যন্ত। এই হাদিসটা অন্যের ভাষ্য দিয়েও বলা হয়েছে—যাতে বলা হয়েছে: যতক্ষণ না স্ত্রী স্বামীর বিছানায় ফিরে আসে।
এহিয়া উলুম আল-দীন, ভলুম ১ পৃঃ ২৩৫
স্ত্রী তার স্বামীকে নিজের এবং তার আত্মীয়ের চাইতেও বেশী ভালবাসবে। স্ত্রীকে সদা সর্বদা পরিষ্কার ছিমছাম থাকতে হবে যাতে করে স্বামী যখন খুশী তাকে উপভোগ করতে পারে।
ঐ বই, পৃঃ ২৩৬
স্ত্রীকে সর্বদা ন্যায়পরায়ণতা মেনে চলতে হবে। স্ত্রীকে স্বামীর অবর্তমানে দুঃখিত হতে হবে। যখন স্বামী ফিরে আসবে তখন স্ত্রীকে হাসিখুশি দেখাতে হবে এবং নিজের দেহকে প্রস্তুত রাখবে স্বামীর আনন্দের জন্যে।
শারিয়া আইন এম ১০.৪ (উমদাত আল-সালিক, পৃঃ ৫৩৮)
স্ত্রীর গৃহ ত্যাগ করা যাবে না। স্বামীর অধিকার থাকবে স্ত্রীকে গৃহের বাইরে না যেতে দেওয়া। (O. এটা এ কারণে যে বাইহাকী বলেছেন যে রসুলুল্লাহ বলেছেন: যে রমণী আল্লাহ ও কেয়ামতে বিশ্বাস করে সে কখনো তার স্বামীর অবর্তমানে কোন বেগানা লোককে তার গৃহে প্রকাশের অনুমতি দিবে না, অথবা সেই রমণী গৃহের বাইরে যাবে যখন তার স্বামী বিক্ষুব্ধ হবে।
কিন্তু স্ত্রীর কোন আত্মীয় মারা গেলে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে গৃহ ত্যাগের অনুমতি দিতে পারে।

শারিয়া আইন (হানাফি) ডবলু ৪৫.২ (ঐ বই পৃঃ ৯৪৯):
স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে স্বামীর সেবা পরিচর্যা করা। এই কর্তব্য স্ত্রীর কাছে ধর্মের অঙ্গ। সেবা বলতে ধরা হচ্ছে রান্না করা, গৃহ পরিষ্কার করা, রুটি বানানো…ইত্যাদি। স্ত্রীর এসব কাজে বিমুখতা পাপ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু আদালত স্ত্রীকে জোরপূর্বক এই সব কাজ করতে হুকুম দিতে পারবে না।
শারিয়া আইন এম ৫.২ (উমদাত আল সালিক, পৃঃ ৫২৫, ইমাম গাজ্জালী হতে):
স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সংগম করবে চার রাতে এক বার। কেননা স্বামীর হয়ত চার বিবি থাকতে পারে। স্ত্রীকে এর জন্য এই দীর্ঘ অপেক্ষা করতেই হবে। যদি সম্ভব হয় তবে স্বামী এর চাইতে অধিক অথবা কম সঙ্গমও করতে পারে। এমন ভাবে স্ত্রীর সঙ্গমের চাহিদা মিটাতে হবে যেন স্ত্রী চরিত্রবতী থাকে, তার যৌন ক্ষুধা আর না জাগে। এর কারণ এই যে স্বামীর জন্য এটা বাধ্যতামূলক যে তার স্ত্রী যেন সর্বদা চরিত্রাবতী থাকে।

সহিহ মুসলিম, বই ৭ হাদিস ৩১০৫:
আবু হুরায়রা বললেন: “রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে নারী আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে কখনই তার মাহরাম ছাড়া এক দিনের ভ্রমণে যাবে না”।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৪.১৪.৩৭:
মালিক—সাইদ ইবনে আবি সাইদ আল মাকবুরি—আবু হুরায়রা থেকে। মালিক বললেন: আল্লাহ্‌র রসুল (সাঃ) বলেছেন: যে নারী আল্লাহ ও আখেরতে বিশ্বাস করে তার জন্যে তার পুরুষ মাহরাম ছাড়া একদিনের রাস্তা ভ্রমণ করা হালাল নয়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, এমন কি বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মহিলা শ্রমিক বিভিন্ন কল কারখানায় প্রতিদিন কাজ করতে যায়। এ না করলে তাদের সংসার চলবে না। আমরা ইসলামীদের প্রশ্ন করব কি হবে ঐ সব মহিলা শ্রমিকদের যদি তারা শারিয়া আইন বলবত করে? অনেক মহিলা শ্রমিক রাত্রের বেলাতেও ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তাদের কি হবে–ইসলামী আইন চালু হলে?
নারীদের উপাসনা করা ও নিজের শ্রী বৃদ্ধির এবং শোক-বিলাপের কতটুকু অধিকার আছে?
পাশ্চাত্ত্যে অবস্থানরত, পাশ্চাত্ত্যে শিক্ষিত কিছু ইসলামী পণ্ডিত আমাদেরকে সর্বদা শোনাচ্ছেন যে মুসলিম নারীরা মসজিদে স্বাগতম। উপরে উপরে মনে হবে এ তো খুব চমৎকার—ইসলাম কতই না মহৎ নারীদের প্রতি। যে কথাটি এই সব পাশ্চাত্য শিক্ষিত ইসলামীরা চেপে যান তা হচ্ছে যে ইসলাম সব মুসলিম নারীকেই মসজিদে স্বাগতম জানায় না। এব্যাপারে কিছু শারিয়া আইন দেখা যাক।
শারিয়া আইন এফ ১২.৪ (ঐ বই, পৃঃ ১৭১):
…নারীদের জন্যে গৃহে উপাসনা (অর্থাৎ নামাজ) করাই উত্তম। (A. তারা তরুণীই অথবা বৃদ্ধাই হউক)। একজন তরুণী, সুন্দরী, আকর্ষণীয় মহিলার মসজিদে পা রাখা অপরাধমূলক।(O এমনকি তার স্বামী অনুমতি দিলেও)। যদি তরুণীটি আকর্ষণীয় না হয় তবে তার মসজিদে আসা অন্যায় হবে না। আসল কথা হল তরুণী যেন মসজিদের নামাযীদের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। এই জন্যেই আয়েশা (রঃ) বলেছেন: “নবী (সাঃ) যদি দেখে যেতেন আজকালকার মহিলারা কি সব কার্যকলাপ করে তবে উনি নিশ্চয়ই মহিলাদের মসজিদে আসা নিষিদ্ধ করে দিতেন; যেমন করা হয়েছিল বনী ইসরাইলের মহিলাদের।“ এই হাদিসটা বোখারী ও মুসলিম দিয়েছেন।
শারিয়া আইন এফ ২০.৩ (ঐ বই পৃঃ ২১৪):
গ্রহণের সময় নামায। এই সময় নামাযটা দলবদ্ধভাবে মসজিদে পড়া উচিত। যেসব মহিলাদের দেহ আকর্ষণীয় নয় অথবা যারা বৃদ্ধা সেইসব মহিলারাও মসজিদে এই নামায পড়তে পারে। আকর্ষণীয় দেহের মহিলাদের উচিত গৃহের ভিতরে নামায পড়া।
শারিয়া আইন পি ৪২.২ (৩) (ঐ বই পৃঃ ৬৮২):
আল্লাহ ঐ মহিলার প্রতি নযর দিবেন না।
নবী (সাঃ) বলেছেন যে মহিলার স্বামী গৃহে বর্তমান তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর উপবাস (রোজা) রাখা বে আইনি। স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী কোন ব্যক্তিকে গৃহে ঢুকতে দিতে পারবে না।
এই প্রসঙ্গে মাওলানা আজিজুল হক সাহেব আনুবাদিত বোখারী শরীফে যে মন্তব্য করেছেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উনি বাংলা বোখারী হাদিস নম্বর ৪৮৯ (খণ্ড ১) সম্পর্কে লিখেছেন:
ব্যাখাঃ এই হাদীছ দ্বারা ইমাম বোখারী (রঃ) ইহাও প্রমাণ করিয়াছেন যে, নারীদের জন্য মসজিদে যাইতেও স্বামীর অনুমতি গ্রহণ আবশ্যক ছিল।
মাওলানা আজিজুল হক সাহেবের আরও একটি ব্যাখা হাদিস নম্বর ৪৯০ প্রসঙ্গে:
ব্যাখ্যাঃ এই হাদিছ দৃষ্টে বোখারী (রঃ) বলিয়াছেন, নারীদের জন্য মসজিদে অবস্থান সংক্ষিপ্ত করার এবং নামায হইতে দ্রুত বাড়ী প্রত্যাবর্তন করার আদেশ ছিল। এই হাদীছে ইহাও সুস্পষ্ট যে, শুধু মাত্র মসজিদ সংলগ্ন বাড়ী ঘরের নারীরাই মসজিদে আসিত।
সুন্দরী, তরুণীদের মসজিদে ঢোকা উচিত নয়—মেনে নিলাম এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অন্যান্য নামাযীদের মনোযোগ নষ্ট না করার জন্য। অন্যায়টা হচ্ছে–এই আইন কেন প্রযোজ্য হবে না সুদর্শন দেহের তরুণদের উপরে? এই সুদর্শন পুরুষদের প্রতি মহিলারাও যে আকর্ষিত হয়ে পড়তে পারে। এর কারণ কি এই নয় যে আল্লাহ্‌ সর্বদাই পুরুষ পছন্দ করেন—কারণ তিনিও যে পুরুষ!
সত্যি কথা হচ্ছে মোহাম্মদ নিজেই ছিলেন অত্যন্ত লিঙ্গ-কাতর মানুষ (sexist) যা হয়ত তখনকার আরব সমাজে বিদ্যমান ছিল। যদিও উনি চাইছিলেন তৎকালীন আরব মহিলাদের ভাগ্যের কিছুটা উন্নতি হউক, তথাপি খুব সতর্ক ছিলেন যাতে আরব সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতায় তেমন বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন না আনেন। তাই উনি কোনক্রমেই পুরুষ ও মহিলাদের সমান অধিকারের পক্ষপাতী ছিলেন না। আল্লাহ্‌ পাকও এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলেন নাই। যত বড় বড় কথাই নবীজি বলুন না কেন উনার মনের গভীরে বাস করত এক অশিক্ষিত, অমার্জিত, বর্বর বেদুঈন আরব। এবং উনি ভালভাবেই জানতেন বেদুঈন সমাজে মহিলাদের কি ভাবে দেখা হয়। বেদুঈনদের কাছে নারীরা হচ্ছে ‘মাল’ অথবা যৌন সম্ভোগের উপকরণ মাত্র। আমরা এই মনোভাবেরই প্রতিফলন দেখি শারিয়া আইনগুলিতে। নবীজি চাইলেও পারতেন না বেদুঈনদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে। আমরা বিভিন্ন হাদিসে দেখি যে যখনই পুরুষ এবং মহিলার ব্যাপারে নবীজিকে সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে—তিনি প্রায় সর্বদায় পুরুষের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এটাই তাঁর বেদুঈন মনের পরিচয়। কারণ মরুভূমির বেদুঈনদের কাছে পুরুষই হচ্ছে সবার উপরে। নবীজি তার ব্যতিক্রম হলেন না।
এখানে আরও কিছু হাদিস উদ্ধৃতি দেওয়া হল যা থেকে আমরা দেখতে পাব একজন বেদুঈন পুরুষকে তৃপ্ত করতে একজন মহিলার কতদূর পর্যন্ত যেতে হবে।
সহিহ বোখারী, ভলুম ৭, বই ৬২, হাদিস ১৭৩:
জাবির বিন আবদুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) বলেছেন—যদি তুমি রাত্রে বাড়ী পৌঁছ তবে তৎক্ষণাৎ স্ত্রীর নিকট চলে যাবে না। যাবত না সে যৌনাঙ্গের কেশে ক্ষুর ব্যাবহারে পরিচ্ছন্ন হয় এবং মাথার কেশ বিন্যাস করে নেয়। নবী (সাঃ) আরও বললেন: “হে জাবির সন্তান উৎপাদন কর, সন্তান উৎপাদন কর!”
মুসলিম নারীদের জন্য প্রসাধন সামগ্রী ব্যাবহার করা, তথা তাদের মুখমণ্ডল সুশ্রী করা একেবারেই হারাম। সত্যি বলতে যে সব মুসলিম মহিলাগণ নিজেদের সৌন্দর্য বিকাশে ব্যস্ত তাঁদেরকে মুসলিম নারী বলা যাবেনা। তাই বলা যায় যেসব মুসলিমাহ্‌ ঠোঁটে লিপস্টিক মেখে, চক্ষুতে মাসকারা দিয়ে, গালে কুমকুম…ইত্যাদি লাগিয়ে গৃহের বাইরে যান তাঁদের উচিত হবে ঐ সব হারাম প্রসাধন সামগ্রী ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া। তা না করলে এই সব মুসলিমরা যে ইসলামী নরকের আগুনে চিরকাল পুড়তে থাকবেন।
এই ব্যাপারে কিছু হাদিস দেখা যাক।
সহিহ মুসলিম, বই ১, হাদিস ১৮৭:
আবু বুরদা বলেছেন যে আবু মুসা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে আসলো ও উচ্চরবে বিলাপ আরম্ভ করল। যখন আবু মুসা ধাতস্থ হলেন তখন বললেন: তুমি কি জান না? আমি হলপ করে বলছি যে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “যে কেউ কারও অসুস্থতায় মস্তক মুণ্ডন করবে, উচ্চরবে কান্নাকাটি করবে ও পোশাক ছিঁড়ে ফেলবে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।“
সুনান আবু দাঊদ, বই ১, হাদিস ০১৮৮:
আবু হুরায়রা বর্ণনা করলেন:
আল্লাহর সৃষ্ট মহিলাদেরকে মসজিদ যেতে বাধা দিবে না। তবে তাদেরকে মসজিদে যেতে হবে সুগন্ধি না মেখে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে নবীজি পুরুষদেরকে সুপারিশ করেছেন তারা মসজিদে যাবার সময় যেন সুগন্ধি মেখে নেয়। দেখা যাচ্ছে একজন সুন্দরী তরুণী যার আছে আকর্ষণীয় দেহ সে ইসলামে এক বিষম বিড়ম্বনার পাত্র। তাকে নিয়ে কি করা? মহিলা যদি বৃদ্ধা, অসুন্দর, ও কুৎসিত দেহের অধিকারী হয় তবে ইসলামে তার স্থান অনেক উঁচুতে।
দেখা যাক আরও দুই একটি হাদিস।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৩.১.২:
ইয়াহিয়া—মালিক—ওহাব ইবনে কায়সান থেকে। ইয়াহিয়া বর্ণনা করলেন:
মোহাম্মদ ইবনে আমর বলেছেন: “আমি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের সাথে বসেছিলাম। এক ইয়ামানি ব্যক্তি এসে গেল। সে বলল: ‘ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। এরপর ব্যক্তিটি আরও কিছু বলল। ইবনে আব্বাস (তখন তিনি অন্ধ ছিলেন) জিজ্ঞাসা করলেন: “ব্যক্তিটি কে?” উপস্থিত যারা ছিল তারা বলল: “এ হচ্ছে এক ইয়ামানি ব্যক্তি”। এরপর তারা তার পরিচয় জানিয়ে দিল। ইবনে আব্বাস বললেন: শুভেচ্ছার শেষ শব্দ হচ্ছে—আশীর্বাদ”।
ইয়াহিয়া তখন মালিককে জিজ্ঞাসা করলেন: “আমরা কি মহিলাদেরকে শুভেচ্ছা বা সম্ভাষণ জানাতে পারি?” তিনি উত্তর দিলেন: “এক বৃদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানাতে অসুবিধা নাই। তবে এক তরুণীকে আমি শুভেচ্ছা জানাই না।“

The Burden of Hadith

By aryan khan fbfd

The Burden of Hadith
——————————

তারা বলে হাদিস ছাড়া কুরআন অচল ।

১ খন্ডের কুরআনকে বুঝতে তারা অক্ষম । তাদের কাছে কোরআন দুর্বোধ্য , কঠিন , অসাড় ।

তারা ডজন কে ডজন খন্ডের হাদিস কিতাব রচনা করেছে এই কুরআন কে বোঝার জন্য ।

তাতেও কি তাদের কুরআন বুঝা হয়েছে ?
তারা তাও অতৃপ্ত ।

তারা হাদিস ব্যাখ্যা করার জন্য হাজার হাজার পাতার শরহে কিতাব রচনা করেছে ।

ইসলাম কি এবার তারা জেনে গেছে ?

না ! এখনো তারা অতৃপ্ত ।

এই হাদিসের অনুসারীরা ইসলামকে দল , মারজা , ফিরকা , মাজহাবে শত শত ভাগে টুকরো করে ফেলেছে । একেক জনের কাছে ইসলাম একেক রঙের । হানাফি , শাফি , মালিকি , হাম্বলি , সালাফি , জাফরি , ইসমাইলি , জাইদি ….. এ যেন এক দাবার ছক । কে জিতবে আর কে হারবে – তাঁর রক্তক্ষয় যুদ্ধ হাজার বছরের পুরনো ইতিহাস ।

অভাব , অশিক্ষা , দুর্নিতি , মারামারি , হানানহানি, অমানবতা, নারী নির্যাতন, মহামারী , অসুখ-বালা এই সমস্ত জাতির ভাগ্য । দাস দাসীর মতো তারা হিন্দু , খ্রিস্টান , ইহুদী এই সমস্ত অবিশ্বাসী জাতির কাছে নিষ্পেষিত , অত্যাচারিত ।

কোথায় তাদের আল্লাহ্‌ ?

আল্লাহ্‌ তো আল্লাহর জায়গাতেই আছেন , কিন্তু কেন আল্লাহ্‌ তাদের উপর নারাজ ?

ইহুদী নয় খ্রিষ্টান নয় বরং তারাই প্রথম আল্লহার চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার উদ্যোগ নেয় । আল্লাহ্‌ মানব জাতির দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেনঃ

“….অতএব, তারা যদি সত্যবাদী হয় তবে তার অনুরূপ হাদিস(بِحَدِيثٍ مِثْلِهِ) নিয়ে আসুক। ” (৫২:৩৪ )

মহান আল্লাহর দাবি যে কোরআনই হচ্ছে একমাত্র বিশুদ্ধ হাদিস (৪:৮৭, ৩৯:২৩, ১২:১১১ ) আর মানব রচিত হাদিসগুলো ভ্রান্ত (১২:১১১, ৪৫:৬, ৩১:০৬) ।

সুন্নিরা যারা পৃথিবীর ৯০% মুসলিম জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ তারা দাবি করে যে কুরআন ছাড়াও তাদের কাছে আরো ২ টি কিতাব আছে যা কুরআনের মতোই ১০০% বিশুদ্ধ – আর তা হলো সহিহ বুখারি আর সহিহ মুসলিম ।

মহান আল্লাহ্‌ বলেন = কুরানই একমাত্র গ্রহণযোগ্য বিশুদ্ধ হাদিস । মানব রচিত যে কোন হাদিস পরিত্যাজ্য ।

সুন্নিরা বলে = বুখারি আর মুসলিম ১০০ % বিশুদ্ধ কিতাব । মানব রচিত হাদিস ছাড়া আল্লাহর কোরআন এর কোন দাম নেই । হাদিস ছাড়া কোরআন অর্থহীন , অসাড় ।

মহান আল্লাহ্‌ বনাম সুন্নি/শিয়া !!

কে জিতবে বলে আপনাদের মনে হয় ?

যেদিন থেকে এই সুন্নি শিয়ারা তাদের মানব রচিত হাদিসের কাছে ইসলামকে বেচে দিয়েছে সেই দিন থেকে মহান শাস্তি দাতা আল্লাহর রোষানলে তারা পতিত হয়েছে ।

তাদের সামনে তো মহান আল্লাহর এই ভয়ঙ্কর সাবধানবানী ছিল , তারা কেন তা দেখল না ?

“মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহর পথ হতে বিচ্যুত করার জন্য অসাড় হাদিস (لَهْوَ الْحَدِيثِ) ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদেরই জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি।

আর তার কাছে যখন আমার আয়াতসমূহ (آيَاتُنَا) পাঠ করা হয় তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে শুনতে পায়নি, তার দু’কানে যেন বধিরতা; সুতরাং তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও।” (৩১:৬-৭)

মহান আল্লাহ্‌ তাঁর কোরআনের আয়াত কে অবজ্ঞা করে মানব রচিত হাদিসের দিকে যারা ছুটে যাবে তাদের জন্য শাস্তির ওয়াদা করেছেন । এই আয়াত তো দিবালোকের মতো স্পষ্ট , তাঁর পরেও কেন তারা বুঝেনা ??

মহান আল্লাহর ব্যাথাময় আকুতি দিয়ে এই পোষ্টের ইতি টানলামঃ

“আমিতো তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করেছি কিতাব যাতে আছে তোমাদেরই স্মরণ রয়েছে , তবুও কি তোমরা বুঝবেনা ?” (২১:১০)