By abdul Al mamun fbfd
.
হাদিস হল নবী (সঃ) এর কথা-বার্তা, আচার-বিচার, ধ্যান-ধারণা, ব্যবহার-ব্যক্তিত্ব, মতামত-সিদ্ধান্ত, এ সবের বিস্তারিত রিপোর্ট, তাঁর সহচরেরা দিয়ে গেছেন। হাদিস ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, কোরানের পরেই এর স্থান। হাদিস বাদ দিলে ইসলামের সাংঘাতিক অঙ্গহানী হয়ে যায়। বিখ্যাত মওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম তাঁর বিখ্যাত ‘‘হাদিস সংকলনের ইতিহাস’’ বইয়ের ৯৪ পৃষ্ঠায় বিভিন্ন বুলন্দ ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘‘হাদিস অমান্যকারী কাফির’। আমার সন্দেহ হয় যে সে কোনোদিন কোরআন পড়ে নি। কোরআন নাড়ী জাতি কে যে সন্মান দিয়েছে সেই তুলায় হাদিস গুলি চরম অবমাননাকর । এই হাদিস গুলি ইসলামের চেহারাই পালটে দিয়েছে।
সহিহ্ মুসলিম, বই ৩১ হাদিস ৫৯৬৬:
আবু মূসার বর্ণনা মতে নবী (দঃ) বলেছেন: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই ত্রুটিমুক্ত কিন্তু নারীদের মধ্যে কেউ-ই ত্রুটিমুক্ত নয়, কেবল ইমরানের কন্যা মেরী এবং ফারাওয়ের স্ত্রী আয়েশা ছাড়া”।
প্রমাণ দেখাচ্ছি সুনান আবু দাউদ হাদিস থেকে; বই ১১ হাদিস নম্বর ২১৩৫:
কায়েস ইবনে সা’দ বলছেন, ‘‘নবী (দঃ) বললেন: “আমি যদি কাউকে কারো সামনে সেজদা করতে বলতাম, তবে মেয়েদের বলতাম তাদের স্বামীদের সেজদা করতে। কারণ আল্লাহ স্বামীদের বিশেষ অধিকার দিয়েছেন তাদের স্ত্রীদের ওপরে”।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১৪২:
ওমর বিন খাত্তাব বলেছেন: নবী (দঃ) বলেছেন, “কোন স্বামীকে (পরকালে) প্রশ্ন করা হবে না কেন সে বৌকে পিটিয়েছিল”।
সহিহ্ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩০:
আবদুল্লা বিন ওমর বলেছেন, আল্লাহর নবী বলেছেন যে তিন জিনিসের মধ্যে অশুভ আছে, নারী, বাড়ী আর ঘোড়া।
সহিহ্ বোখারি ভল্যুম ৭, হাদিস ৩৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন, নবী বলেছেন যে আমার পর পুরুষের জন্য নারীর চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছু রইল না।
সহিহ্ বোখারি, ভলুম ১, হাদিস ৩০১:
আবু সাইদ আল খুদরী বলেছেন:- একদিন নবী (দঃ) ঈদের নামাজের জন্য মাসাল্লাতে গিয়েছিলেন। সেখানে কিছু নারীদের সামনে দিয়ে যাবার সময় তিনি বললেন, “তোমরা সদকা দাও, কেননা আমি দোজখের আগুনে বেশীর ভাগ নারীদেরই পুড়তে দেখেছি”। তারা বলল:-“এর কারণ কি, ইয়া রসুলুল্লাহ?” তিনি বললেন:-“তোমরা অভিশাপ দাও এবং তোমাদের স্বামীদের প্রতি তোমরা অকৃতজ্ঞ। ধর্মে আর বুদ্ধিতে তোমাদের চেয়ে খাটো আমি আর কাউকে দেখিনি। একজন বুদ্ধিমান সংযমী পুরুষকে তোমাদের কেউ কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে”। তারা বলল:- “ইয়া রসুলুল্লাহ! ধর্মে আর বুদ্ধিতে আমরা খাটো কেন?” তিনি বললেন: “দু’জন নারীর সাক্ষ্য কি একজন পুরুষের সমান নয়?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল বুদ্ধির ঘাটতি। এটা কি সত্যি নয় যে মাসিক-এর সময় নারীরা নামাজ এবং রোজা করতে পারে না?” তারা হ্যাঁ-বাচক জবাব দিল। তিনি বললেন: “এটাই হল ধর্মে ঘাটতি”।
সুনান আবু দাউদ ১১ খণ্ড, হাদিস ২১৫৫:
আবদুল্লা বিন আম’র বিন আ’স বলছেন: ‘নবী (দঃ) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ দাস-দাসী কিনলে বা বিয়ে করলে তাকে বলতে হবে- ও আল্লাহ! আমি এর স্বভাব চরিত্রে ভালো কিছুর জন্য তোমার কাছে প্রার্থনা করি। আর এর চরিত্রের মন্দ থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি। কেউ উট কিনলেও তাকে উটের কুঁজো ধরে এ কথা বলতে হবে”’।
সহিহ্ বোখারী ভল্যুম ৫,৭০৯:
সাহাবী আবু বাক্রা বলছেন, নবী (দঃ) বলেছেন যে, যে জাতি নারীর ওপরে নেতৃত্ব দেবে, সে জাতি কখনো সফলকাম হবে না।
সহিহ্ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩২৪০:
জাবির বলেছেন: আল্লাহর নবী (দঃ) একদিন এক স্ত্রীলোক দেখে তাঁর স্ত্রী জয়নাবের কাছে এলেন, সে তখন একটা চামড়া পাকা করছিল। তিনি তার সাথে সহবাস করলেন। তারপর তিনি তাঁর সাহাবীদের কাছে গিয়ে বললেন, নারী শয়তানের রূপে আসে যায়। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ কোন নারীকে দেখলে নিজের স্ত্রীর কাছে যাবে, তাতে তার মনের অনুভূতি দুর হবে।
এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৬৭:
শয়তান নারীকে বলে: তোমরা আমার সৈন্যদলের অর্ধেক। তোমরা আমার অব্যর্থ তীর। তোমরা আমার বিশ্বস্ত। আমি যা চাই তা তোমাদের মাধ্যমে হাসিল করি। আমার অর্ধেক সৈন্য হল কামনা, বাকি অর্ধেক হল ক্রোধ।
একই বই, ভলুম ২ পৃষ্ঠা ৩৭০-৩৭১ থেকে:
সাইদ ইবনে জুবায়ের বলেছেন, শুধুমাত্র দেখেই দাউদ (দঃ) এর মনে বাসনার উদ্রেক হয়েছিল। তাই তিনি তাঁর পুত্রকে (সুলায়মান দঃ) বললেন:- হে পুত্র! সিংহ বা কালো-কোবরা সাপের পেছনে হাঁটাও ভাল, তবু কোন নারীর পেছনে হাঁটবে না। নবী (দঃ) বলেছেন:-“নারীর প্রতি কামনার চেয়ে পুরুষের জন্য বেশী ক্ষতিকর কিছু আমি রেখে যাচ্ছি না”।
একই বই ভল্যুম ২,পৃষ্ঠা ৩৭৩:
স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় কম থাকতে হবে নতুবা সে তাকে অবজ্ঞা করবে: বয়স,শারীরিক উচ্চতা, ধন সম্পদ, এবং বংশগৌরব। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর চারটি বিষয় বেশী থাকতে হবে:- সৌন্দর্য, চরিত্র, আদব-কায়দা, এবং ধর্মে মতি।
সহিহ্ মুসলিম, বই ২৬, হাদিস ৫৫২৩:
আবদুল্লা বিন ওমর বর্ণনা করছেন:আল্লাহর নবী (দঃ) বলেছেন, দুর্ভাগ্য যদি কিছুতে থাকে, তবে তা হল বাড়ি, ঘোড়া আর নারী’’।
ইসলামী বিশ্বকোষ (ডিকশনারি অব ইসলাম) থেকে পৃষ্ঠা ৬৭৮-৬৭৯:
সমগ্র মানব জাতির জন্য নারীর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছুই আমি রেখে যাচ্ছি না। দুনিয়া এবং নারী থেকে দূরে থাকবে। কারণ নারীর কারণেই ইসরাইলের পুত্ররা প্রথম পাপ করেছিল।
সহিহ্ মুসলিম, বই ৩৬ হাদিস ৬৬০৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন: আল্লাহ’র নবী (দঃ) বলেছেন, আমার পরে পুরুষের জন্য নারীর কারণে ক্ষতির চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছুর সম্ভাবনা আমি রেখে যাচ্ছি না।
শাফী শরিয়া (রিলায়েন্স অফ দি ট্রাভেলার বা উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৬৭২, নম্বর পি-২৮-১:
নবী (দঃ)বলেছেন: পুরুষরা ধ্বংস হয়ে গেছে যখনি তারা মেয়েদের অনুগত হয়েছে।
খুলে দেখা যাক খোদ সহিহ্ মুসলিম হাদিস থেকে, বই ৮ হাদিস ৩৪৭১:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, নবী (দঃ) বলেছেন, বিবি হাওয়া না হলে স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি কখনো অবিশ্বাসের কাজ করত না। অর্থাৎ স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি অবিশ্বাসের কাজ করে থাকে।
এবারে শুনুন ইসলামী বিশ্বকোষ তার ৬৭৫ পৃষ্ঠায় স্বামীদের কি বলছে:
১। কষ্মিন কালেও স্ত্রীকে বেশী পিরীত দেখাবে না হে, তা হলেই সে কিন্তু লাই পেয়ে মাথায় উঠে সর্বদিকে বিশৃঙ্খল করে দেবে। চিত্ত যদি অতি প্রেমে গদগদ হয়ে ওঠেই, তবে অন্তত: স্ত্রীর কাছে সেটা চেপে রেখো বাপু!
২। বিষয়-সম্পত্তির পরিমাণ তো স্ত্রীকে বলবেই না, অন্যান্য গোপন কথাও লুকিয়ে রেখো সযত্নে। তা না হলেই কিন্তু সে তার দুর্বুদ্ধির কারণে সর্বনাশ করে দেবে সবকিছু।
৩। ও হ্যাঁ, তাকে কখনো কোন বাদ্য-বাজনা করতে দেবে না, আর যেতে দেবে না বাইরেও। পুরুষদের কথা বার্তা তো কিছুতেই শুনতে দেবে না।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২০৪৫:
মাকিল ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবীকে (দঃ) বলল “একটা উচ্চ বংশের সুন্দরী মেয়ে আছে, কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করতে পারি?” নবী (দঃ) বললেন,”না”। সে তাঁর কাছে আবার এল। নবী (দঃ) আবার তাকে নিষেধ করলেন। সে তৃতীয়বার তাঁর কাছে এলে নবী (দঃ) বললেন:”সেই মেয়েদের বিয়ে কর যারা প্রেমময়ী এবং উৎপাদনশীল। কারণ আমি তোমাদের দিয়ে সংখ্যায় অন্যদের পরাস্ত করব”।
এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১, পৃষ্ঠা ২২৮:
নবী (দঃ)বলেছেন, উর্বর এবং বাধ্য মেয়েদের বিয়ে কর। যদি সে অবিবাহিতা হয় এবং অন্যান্য অবস্থা জানা না থাকে, তবে তার স্বাস্থ্য এবং যৌবন খেয়াল করবে যাতে সে উর্বর হয়।
এহিয়া উলুম আল দীন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২৬- ২২৮-এ। দেখুন, কাকে বিয়ে করতে হবে সে ব্যাপারে কি রকম উদ্ভট পরামর্শ দেয়া আছে:
তাকে অসুন্দরী হলে চলবে না, হতে হবে সুন্দরী। তার স্বভাবটাও হতে হবে সুন্দর। এবং আরও:- নবী বলেছেন: সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তাকালে স্বামী তৃপ্ত হয়, স্বামীর যে বাধ্য, এবং স্বামীর অবর্তমানে যে নিজের এবং তার সম্পদ রক্ষা করে। যে সব মেয়েদের বিয়ে করা যাবে না তারা হল, বিবাহিতা, ধর্মত্যাগিনী, নাস্তিক, নারীবাদী, স্বাধীনচেতা, অগ্নিপূজক, মূর্তিপূজক, অশ্লীল যৌনাচারে অভিযুক্ত তা সে প্রমাণিত হোক বা না-ই হোক, এবং এ ছাড়া কোরানে যাদের নিষেধ করা হয়েছে আত্মীয়তার কারণে।
সহিহ্ বোখারি ভলুম ৭ হাদিস ৮১:
উকবার বর্ণনামতে নবী (দঃ) বলেছেন: (বিয়ের) যে সব বিধানের মাধ্যমে তোমাদের অধিকার দেয়া হয়েছে (নারীদের) গোপন অঙ্গ উপভোগ করবার, সেগুলো মেনে চলতেই হবে।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২৬:
বাসরাহ্ নামে এক আনসারি বর্ণনা করলেন:
আমি পর্দায় আবৃত থাকা এক কুমারীকে বিবাহ করলাম। আমি যখন তার নিকটে আসলাম তখন তাকে দেখলাম গর্ভবতী। (আমি ব্যাপারটা নবীকে জানালাম।) নবী (সাঃ) বললেন: ‘মেয়েটি মোহরানা পাবে। কেননা তুমি যখন তাকে মোহরানা দিলে তখন তার যোনি তোমার জন্য আইনসিদ্ধ হয়ে গেল। শিশুটি তোমার ক্রীতদাস হবে এবং শিশুর জন্মের পর মেয়েটিকে প্রহার করবে (এই মত ছিল হাসানের)।‘ ইবনে আবুস সারী বলেছেন: ‘তোমার লোকেরা তাকে প্রহার করবে—খুব কঠোর ভাবে।‘
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২১:
মোহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে সওবান নবীর (দঃ) এক সাহাবি থেকে বর্ণনা করলেন: আলী নবীর (দঃ) কন্যা ফাতেমাকে বিবাহ করে তাঁর সাথে সহবাস করতে চাইলেন। আল্লাহ্র নবী (দঃ) আলীকে নিষেধ করলেন তাঁর কন্যার সাথে সহবাস করতে যতক্ষণ না আলী ফাতেমাকে কিছু দিয়ে দেন। আলী বললেন: ‘আমার কাছে কিছুই নেই’। আল্লাহ্র রসুল (দঃ) বললেন: ‘তোমার যুদ্ধের পোশাক তাকে দিয়ে দাও।‘ আলী তাই করলেন এবং ফাতেমার সাথে সহবাস করলেন।
১। সহিহ্ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩৩৬৬:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন, যে স্ত্রী স্বামীর বিছানা থেকে অন্যত্র রাত্রি যাপন করে, ফেরেশতারা তাকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে।
২। সহিহ্ মুসলিম, বই ৮, হাদিস ৩৩৬৭:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন: যাঁর হাতে আমার জীবন (আল্লাহ) তাঁর নামে বলছি, যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে, আর সে স্ত্রী সাড়া না দেয়, তবে সে স্বামী খুশী না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন।
৩। ইমাম গাজ্জালী, বই এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১ পৃষ্ঠা ২৩৫:
নিজের সমস্ত আত্মীয়, এমন কি নিজের থেকেও স্বামীকে বেশী প্রাধান্য দিতে হবে। যখনই স্বামীর ইচ্ছে হবে তখনই সে যাতে স্ত্রীকে উপভোগ করতে পারে সে জন্য স্ত্রী নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার এবং তৈরি রাখবে।
৪। ইমাম শাফি শারিয়া আইন (উমদাত আল সালিক) থেকে, পৃষ্ঠা ৫২৫ আইন নম্বর এম-৫-১:
স্বামীর যৌন-আহ্বানে স্ত্রীকে অনতিবিলম্বে সাড়া দিতে হবে যখনই সে ডাকবে, যদি শারীরিকভাবে সে স্ত্রী সক্ষম হয়। স্বামীর আহ্বানকে স্ত্রী তিনদিনের বেশী দেরি করাতে পারবে না।
৫। শারিয়া আইন থেকে (উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৫২৬ আইন নম্বর এম-৫-৬:
যৌন মিলনের জন্য শরীর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে স্ত্রীকে চাপ দেবার অধিকার স্বামীর আছে।
৬। শারিয়া আইন থেকে, পৃষ্ঠা ৯৪ আইন নম্বর ই-১৩-৫:
স্ত্রী যদি বলে তার মাসিক হয়েছে আর স্বামী যদি তা বিশ্বাস না করে, তাহলে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা স্বামীর জন্য আইনত: সিদ্ধ।
৭। শারিয়া আইন ত্থেকে, পৃষ্ঠা ৫৩৮ আইন নম্বর এম-১০-৪:
নবী (দঃ) বলেছেন, আল্লাহ এবং কেয়ামতে যে স্ত্রী বিশ্বাস করে, সে স্বামীর অনিচ্ছায় কাউকে বাসায় ঢুকতে দিতে বা বাসার বাইরে যেতে পারবে না।
বাংলা কোরান, পৃষ্ঠা ৮৬৭, তফসির:
কুরতুবী বলেন: এ আমাদের আরও শিক্ষা দিয়েছে যে, স্ত্রীর যে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর যিম্মায় ওয়াজিব (বাধ্য), তা চারটি বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ: আহার,পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। স্বামী এর বেশী কিছু স্ত্রীকে দিলে অথবা ব্যয় করলে তা হবে অনুগ্রহ, অপরিহার্য নয়।
স্ত্রীর ভরণপোষণ
এই ব্যাপারে শারিয়া আইন একেবারে জলবৎতরলং। দেখুন:
শারিয়া আইন এম ১১.২ (ঐ বই পৃঃ ৫৪২)
স্বামীকে স্ত্রীর দৈনিক ভরণপোষণের ব্যয় বহন করতে হবে। স্বামী সচ্ছল হলে স্ত্রীকে প্রতিদিন এক লিটার শস্য দিতে হবে যা কিনা ঐ অঞ্চলের প্রধান খাদ্য। (O. এখানে প্রধান খাদ্য বলতে বুঝান হচ্ছে যা ঐ অঞ্চলের লোকেরা সর্বদা খায়, এমনকি তা যদি শক্ত, সাদা পনিরও হয়। স্ত্রী যদি তা গ্রহণ না করে অন্য কিছু খেতে চায়, তবে স্বামী তা সরবরাহ করতে বাধ্য থাকবে না। স্বামী যদি প্রধান খাদ্য ছাড়াও স্ত্রীকে অন্য কিছু খেতে দেয় তা স্ত্রী গ্রহণ না করলেও করতে পারে।) অসচ্ছল স্বামী প্রতিদিন তার স্ত্রীকে ০.৫১ লিটার খাদ্যশস্য দিবে। আর যদি স্বামীর সামর্থ্য এর মাঝামাঝি হয় তবে স্বামী তার স্ত্রীকে প্রতিদিন ০.৭৭ লিটার খাদ্যশস্য দিতে বাধ্য থাকবে।
এছাড়াও স্বামীকে শস্য পেষণের খরচ দিতে হবে যাতে ঐ শস্য আটা করে রুটি বানানো হয়। (O. স্ত্রী একাজ নিজে করলেও স্বামীকে খরচটা দিতে হবে স্ত্রীকে।) রুটি খাওয়ার জন্য অন্য যে সব সামগ্রী দরকার, যেমন, মাংস, তেল, লবণ, খেজুর, সির্কা, পনীর ইত্যাদি তা ও সরবরাহ করতে হবে। এসবের পরিমাণ নির্ভর করবে মরশুমের উপর। ফলের মরশুমে যে ফল পাওয়া যাবে তাই হবে প্রধান। ঐ শহরের লোকেরা যে পরিমাণ মাংস খায় স্ত্রীকেও সেই পরিমাণ মাংস দিতে হবে।
স্বামী স্ত্রী উভয়ে রাজী থাকলে স্ত্রীর দৈনিক খোরপোষের খরচ স্বামী টাকায় অথবা কাপড়ে দিতে পারবে।
শারিয়া আইন ১১.৩ (ঐ বই, পৃঃ ৫৪৩) স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের জন্য দরকারি বস্তু সমূহ:
স্ত্রী তার কেশবিন্যাসের জন্য তেল, শ্যাম্পু, সাবান, চিরুনি পাবে। (যা সেই সহরে সচরাচর ব্যবহার হয়।) স্বামীকে তার স্ত্রীর বগলের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য যে সুগন্ধির প্রয়োজন তা দিতে হবে। যৌন সংগমের পূর্বে ও পরে স্ত্রীর গোসলের যে পানি দরকার তা স্বামীকে দিতে হবে। সন্তান প্রসবের পরে রক্ত ধৌত করার জন্য যে পানির প্রয়োজন তাও স্বামীকে দিতে হবে। এই দুটি কারণ ছাড়া স্বামী তার স্ত্রীকে সাধারণ গোসল অথবা ধৌতের জন্যে যে পানির প্রয়োজন তার খরচ দিতে বাধ্য থাকবে না।
শারিয়া আইন এম ১১.৫ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪) কাপড় চোপড়ের খরচ:
স্ত্রী যে অঞ্চলে থাকবে ঐ অঞ্চলের যা প্রধান পোশাক স্ত্রী তা পাবে। (O. পোশাক নির্ভর করবে স্ত্রী লম্বা না বেঁটে, খর্ব না স্থূল এবং মরশুম গ্রীষ্ম না শীত কাল।) গ্রীষ্ম কালে স্বামী বাধ্য থাকবে স্ত্রীকে মাথা ঢাকার কাপড় দিতে। এছাড়া গায়ের লম্বা জামা, অন্তর্বাস, জুতা ও একটা গায়ের চাদর দিতে হবে, কেননা স্ত্রীকে হয়ত বাইরে যেতে হতে পারে। শীতের মরশুমে ঐ একই পোশাক দিতে হবে এবং অতিরিক্ত হিসাবে একটা লেপের মত সুতি বস্ত্রও দিতে হবে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষার জন্য। শীতের সময় প্রয়োজন পড়লে গরম করার তেল অথবা লাকড়ি যা দরকার তাও দিতে হবে। এ ছাড়াও সামর্থ্য অনুযায়ী স্বামীকে দিতে হবে, কম্বল, বিছানার চাদর, বালিশ ইত্যাদি। (O. খাওয়াদাওয়া ও পান করার জন্য যেসব সামগ্রী দরকার তাও স্ত্রীকে দেওয়া দরকার।)
শারিয়া আইন এম ১১.৯ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৫): স্বামীর ভরণপোষণ শর্তযুক্ত:
স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বামী সে পর্যন্তই বহন করবে যে পর্যন্ত চাহিবার মাত্র স্ত্রী তার স্বামীকে দেহদান করে অথবা দেহদানের প্রস্তুতি দেখায়। এর অর্থ হচ্ছে স্ত্রী স্বামীকে পূর্ণ যৌন উপভোগ করতে দিবে এবং কোন অবস্থাতেই স্বামীর যৌন চাহিদার প্রত্যাখ্যান করবে না। স্বামীর ভরণপোষণ স্ত্রী পাবেনা যখন:
স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হবে, তার মানে যখন স্ত্রী স্বামীর আদেশ অমান্য করবে এক মুহূর্তের জন্যে হলেও।
স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে ভ্রমণে যায় অথবা স্বামীর অনুমতি নেয়, কিন্তু ভ্রমণ করে নিজের প্রয়োজনে।
স্ত্রী হজ্জ অথবা ওমরা করার উদ্দেশ্যে এহরাম করে।
স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে নফল রোজা রাখে।
আইন এম ১১.৪ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪)
স্বামী তার স্ত্রীর প্রসাধন সামগ্রী, চিকিৎসকের খরচ, ঔষধের খরচ অথবা এই ধরনের অন্যান্য খরচ বহন করতে বাধ্য থাকবে না, যদিও স্বামী চাইলে তা করতে পারে। এটা শুধু সুপারিশ, বাধ্যবাধকতা নয়। কিন্তু শিশু জন্মের সাথে জড়িত খরচ স্বামীকে বহন করতে হবে।
আইন এম ১১.৬ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৪)
দৈনিক ভাতা শুরু হবে দিনের শুরুতে। স্বামী তার স্ত্রীকে দিনের প্রথমে স্ত্রীর দৈনিক ভাতা দিতে বাধ্য থাকবে। মরশুমের শুরুতেই স্বামী তার স্ত্রীকে পোশাকের কাপড় দিয়ে দিবে।
তালাক প্রাপ্ত ও গর্ভবতী স্ত্রীদের কি অবস্থা?
আইন এম ১১.১০ (ঐ বই পৃঃ ৫৪৬)
যে স্ত্রী ইদ্দতে থাকবে, সে তালাক (অস্থায়ী) অথবা বিধবার জন্যই হোক, তার অধিকার থাকবে স্বামীর গৃহে থাকার ইদ্দতের সময় পর্যন্ত। এরপর ভরণপোষণের ব্যাপারটা এই রকম:
১। তিন তালাক (স্থায়ী তালাক) হয়ে গেলে স্ত্রী ইদ্দতের সময় ভরণপোষণ অথবা ইদ্দতের পর কোন প্রকার ভরণপোষণ পাবে না। বিধবা নারীও কোন দৈনিক ভাতা পাবে না।
২। ভরণপোষণ হবে একমাত্র ইদ্দতের সময়, তাও যদি তালাক অস্থায়ী হয় যথা এক তালাক অথবা দুই তালাক, যেখানে সম্ভাবনা আছে যে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে ফেরত চাইবে।
৩। তিন তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে সে দৈনিক ভাতা পাবে (A. শিশু ভূমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত। এর পর শিশুর দেখা শোনা ও লালনপালনের জন্যে।)। স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা না থাকলে সে কোন ভাতাই পাবে না।
শারিয়া আইন (উমদাত আল-সালিক) নম্বর এম ৫.৪ (পৃঃ ৫২৬):
স্ত্রীর দেহকে উপভোগ করার পূর্ণ অধিকার থাকবে স্বামীর। (A: আপাদমস্তক পর্যন্ত, তথা পায়ের পাতা পর্যন্ত। কিন্তু পায়ু পথে সঙ্গম করা যাবেনা—এটা বে-আইনি)। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যৌনসংগম কালে স্ত্রী যেন ব্যথা না পায়। স্বামী তার স্ত্রীকে যেখানে খুশী নিয়ে যেতে পারবে।
শারিয়া আইন (ঐ বই) নম্বর এম ৫.৬:
স্ত্রী তার যৌনাঙ্গকে সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বাধ্য থাকবে—এটা স্বামীর অন্যতম অধিকার। এই জন্য স্ত্রীকে মাসিক স্রাবের পর গোসল নিতে হবে এবং স্বামীর পূর্ণ যৌন উপভোগ করার জন্য যা যা দরকার তা তাকে করতে হবে। এর মাঝে থাকছে নিয়মিত যৌনাঙ্গের কেশ কামানো, এবং যৌনাঙ্গের ভিতরে জমে যাওয়া ময়লা দূর করা।
সহিহ মুসলিম বই ৮, নম্বর ৩৩৬৬:
আবু হুরায়রা বললেন: আল্লার রসুল (সঃ) বলেছেন যদি কোন রমণী তার স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাত্রি যাপন করে তবে ফেরেশতারা সেই নারীকে অভিশাপ দেয় ভোরবেলা পর্যন্ত। এই হাদিসটা অন্যের ভাষ্য দিয়েও বলা হয়েছে—যাতে বলা হয়েছে: যতক্ষণ না স্ত্রী স্বামীর বিছানায় ফিরে আসে।
এহিয়া উলুম আল-দীন, ভলুম ১ পৃঃ ২৩৫
স্ত্রী তার স্বামীকে নিজের এবং তার আত্মীয়ের চাইতেও বেশী ভালবাসবে। স্ত্রীকে সদা সর্বদা পরিষ্কার ছিমছাম থাকতে হবে যাতে করে স্বামী যখন খুশী তাকে উপভোগ করতে পারে।
ঐ বই, পৃঃ ২৩৬
স্ত্রীকে সর্বদা ন্যায়পরায়ণতা মেনে চলতে হবে। স্ত্রীকে স্বামীর অবর্তমানে দুঃখিত হতে হবে। যখন স্বামী ফিরে আসবে তখন স্ত্রীকে হাসিখুশি দেখাতে হবে এবং নিজের দেহকে প্রস্তুত রাখবে স্বামীর আনন্দের জন্যে।
শারিয়া আইন এম ১০.৪ (উমদাত আল-সালিক, পৃঃ ৫৩৮)
স্ত্রীর গৃহ ত্যাগ করা যাবে না। স্বামীর অধিকার থাকবে স্ত্রীকে গৃহের বাইরে না যেতে দেওয়া। (O. এটা এ কারণে যে বাইহাকী বলেছেন যে রসুলুল্লাহ বলেছেন: যে রমণী আল্লাহ ও কেয়ামতে বিশ্বাস করে সে কখনো তার স্বামীর অবর্তমানে কোন বেগানা লোককে তার গৃহে প্রকাশের অনুমতি দিবে না, অথবা সেই রমণী গৃহের বাইরে যাবে যখন তার স্বামী বিক্ষুব্ধ হবে।
কিন্তু স্ত্রীর কোন আত্মীয় মারা গেলে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে গৃহ ত্যাগের অনুমতি দিতে পারে।
শারিয়া আইন (হানাফি) ডবলু ৪৫.২ (ঐ বই পৃঃ ৯৪৯):
স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে স্বামীর সেবা পরিচর্যা করা। এই কর্তব্য স্ত্রীর কাছে ধর্মের অঙ্গ। সেবা বলতে ধরা হচ্ছে রান্না করা, গৃহ পরিষ্কার করা, রুটি বানানো…ইত্যাদি। স্ত্রীর এসব কাজে বিমুখতা পাপ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু আদালত স্ত্রীকে জোরপূর্বক এই সব কাজ করতে হুকুম দিতে পারবে না।
শারিয়া আইন এম ৫.২ (উমদাত আল সালিক, পৃঃ ৫২৫, ইমাম গাজ্জালী হতে):
স্বামী তার স্ত্রীর সাথে সংগম করবে চার রাতে এক বার। কেননা স্বামীর হয়ত চার বিবি থাকতে পারে। স্ত্রীকে এর জন্য এই দীর্ঘ অপেক্ষা করতেই হবে। যদি সম্ভব হয় তবে স্বামী এর চাইতে অধিক অথবা কম সঙ্গমও করতে পারে। এমন ভাবে স্ত্রীর সঙ্গমের চাহিদা মিটাতে হবে যেন স্ত্রী চরিত্রবতী থাকে, তার যৌন ক্ষুধা আর না জাগে। এর কারণ এই যে স্বামীর জন্য এটা বাধ্যতামূলক যে তার স্ত্রী যেন সর্বদা চরিত্রাবতী থাকে।
সহিহ মুসলিম, বই ৭ হাদিস ৩১০৫:
আবু হুরায়রা বললেন: “রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে নারী আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে কখনই তার মাহরাম ছাড়া এক দিনের ভ্রমণে যাবে না”।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৪.১৪.৩৭:
মালিক—সাইদ ইবনে আবি সাইদ আল মাকবুরি—আবু হুরায়রা থেকে। মালিক বললেন: আল্লাহ্র রসুল (সাঃ) বলেছেন: যে নারী আল্লাহ ও আখেরতে বিশ্বাস করে তার জন্যে তার পুরুষ মাহরাম ছাড়া একদিনের রাস্তা ভ্রমণ করা হালাল নয়।
ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, এমন কি বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মহিলা শ্রমিক বিভিন্ন কল কারখানায় প্রতিদিন কাজ করতে যায়। এ না করলে তাদের সংসার চলবে না। আমরা ইসলামীদের প্রশ্ন করব কি হবে ঐ সব মহিলা শ্রমিকদের যদি তারা শারিয়া আইন বলবত করে? অনেক মহিলা শ্রমিক রাত্রের বেলাতেও ফ্যাক্টরিতে কাজ করে। তাদের কি হবে–ইসলামী আইন চালু হলে?
নারীদের উপাসনা করা ও নিজের শ্রী বৃদ্ধির এবং শোক-বিলাপের কতটুকু অধিকার আছে?
পাশ্চাত্ত্যে অবস্থানরত, পাশ্চাত্ত্যে শিক্ষিত কিছু ইসলামী পণ্ডিত আমাদেরকে সর্বদা শোনাচ্ছেন যে মুসলিম নারীরা মসজিদে স্বাগতম। উপরে উপরে মনে হবে এ তো খুব চমৎকার—ইসলাম কতই না মহৎ নারীদের প্রতি। যে কথাটি এই সব পাশ্চাত্য শিক্ষিত ইসলামীরা চেপে যান তা হচ্ছে যে ইসলাম সব মুসলিম নারীকেই মসজিদে স্বাগতম জানায় না। এব্যাপারে কিছু শারিয়া আইন দেখা যাক।
শারিয়া আইন এফ ১২.৪ (ঐ বই, পৃঃ ১৭১):
…নারীদের জন্যে গৃহে উপাসনা (অর্থাৎ নামাজ) করাই উত্তম। (A. তারা তরুণীই অথবা বৃদ্ধাই হউক)। একজন তরুণী, সুন্দরী, আকর্ষণীয় মহিলার মসজিদে পা রাখা অপরাধমূলক।(O এমনকি তার স্বামী অনুমতি দিলেও)। যদি তরুণীটি আকর্ষণীয় না হয় তবে তার মসজিদে আসা অন্যায় হবে না। আসল কথা হল তরুণী যেন মসজিদের নামাযীদের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে। এই জন্যেই আয়েশা (রঃ) বলেছেন: “নবী (সাঃ) যদি দেখে যেতেন আজকালকার মহিলারা কি সব কার্যকলাপ করে তবে উনি নিশ্চয়ই মহিলাদের মসজিদে আসা নিষিদ্ধ করে দিতেন; যেমন করা হয়েছিল বনী ইসরাইলের মহিলাদের।“ এই হাদিসটা বোখারী ও মুসলিম দিয়েছেন।
শারিয়া আইন এফ ২০.৩ (ঐ বই পৃঃ ২১৪):
গ্রহণের সময় নামায। এই সময় নামাযটা দলবদ্ধভাবে মসজিদে পড়া উচিত। যেসব মহিলাদের দেহ আকর্ষণীয় নয় অথবা যারা বৃদ্ধা সেইসব মহিলারাও মসজিদে এই নামায পড়তে পারে। আকর্ষণীয় দেহের মহিলাদের উচিত গৃহের ভিতরে নামায পড়া।
শারিয়া আইন পি ৪২.২ (৩) (ঐ বই পৃঃ ৬৮২):
আল্লাহ ঐ মহিলার প্রতি নযর দিবেন না।
নবী (সাঃ) বলেছেন যে মহিলার স্বামী গৃহে বর্তমান তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর উপবাস (রোজা) রাখা বে আইনি। স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রী কোন ব্যক্তিকে গৃহে ঢুকতে দিতে পারবে না।
এই প্রসঙ্গে মাওলানা আজিজুল হক সাহেব আনুবাদিত বোখারী শরীফে যে মন্তব্য করেছেন তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। উনি বাংলা বোখারী হাদিস নম্বর ৪৮৯ (খণ্ড ১) সম্পর্কে লিখেছেন:
ব্যাখাঃ এই হাদীছ দ্বারা ইমাম বোখারী (রঃ) ইহাও প্রমাণ করিয়াছেন যে, নারীদের জন্য মসজিদে যাইতেও স্বামীর অনুমতি গ্রহণ আবশ্যক ছিল।
মাওলানা আজিজুল হক সাহেবের আরও একটি ব্যাখা হাদিস নম্বর ৪৯০ প্রসঙ্গে:
ব্যাখ্যাঃ এই হাদিছ দৃষ্টে বোখারী (রঃ) বলিয়াছেন, নারীদের জন্য মসজিদে অবস্থান সংক্ষিপ্ত করার এবং নামায হইতে দ্রুত বাড়ী প্রত্যাবর্তন করার আদেশ ছিল। এই হাদীছে ইহাও সুস্পষ্ট যে, শুধু মাত্র মসজিদ সংলগ্ন বাড়ী ঘরের নারীরাই মসজিদে আসিত।
সুন্দরী, তরুণীদের মসজিদে ঢোকা উচিত নয়—মেনে নিলাম এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অন্যান্য নামাযীদের মনোযোগ নষ্ট না করার জন্য। অন্যায়টা হচ্ছে–এই আইন কেন প্রযোজ্য হবে না সুদর্শন দেহের তরুণদের উপরে? এই সুদর্শন পুরুষদের প্রতি মহিলারাও যে আকর্ষিত হয়ে পড়তে পারে। এর কারণ কি এই নয় যে আল্লাহ্ সর্বদাই পুরুষ পছন্দ করেন—কারণ তিনিও যে পুরুষ!
সত্যি কথা হচ্ছে মোহাম্মদ নিজেই ছিলেন অত্যন্ত লিঙ্গ-কাতর মানুষ (sexist) যা হয়ত তখনকার আরব সমাজে বিদ্যমান ছিল। যদিও উনি চাইছিলেন তৎকালীন আরব মহিলাদের ভাগ্যের কিছুটা উন্নতি হউক, তথাপি খুব সতর্ক ছিলেন যাতে আরব সমাজের পুরুষতান্ত্রিকতায় তেমন বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন না আনেন। তাই উনি কোনক্রমেই পুরুষ ও মহিলাদের সমান অধিকারের পক্ষপাতী ছিলেন না। আল্লাহ্ পাকও এ ব্যাপারে তেমন কিছু বলেন নাই। যত বড় বড় কথাই নবীজি বলুন না কেন উনার মনের গভীরে বাস করত এক অশিক্ষিত, অমার্জিত, বর্বর বেদুঈন আরব। এবং উনি ভালভাবেই জানতেন বেদুঈন সমাজে মহিলাদের কি ভাবে দেখা হয়। বেদুঈনদের কাছে নারীরা হচ্ছে ‘মাল’ অথবা যৌন সম্ভোগের উপকরণ মাত্র। আমরা এই মনোভাবেরই প্রতিফলন দেখি শারিয়া আইনগুলিতে। নবীজি চাইলেও পারতেন না বেদুঈনদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে। আমরা বিভিন্ন হাদিসে দেখি যে যখনই পুরুষ এবং মহিলার ব্যাপারে নবীজিকে সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে—তিনি প্রায় সর্বদায় পুরুষের পক্ষে রায় দিয়েছেন। এটাই তাঁর বেদুঈন মনের পরিচয়। কারণ মরুভূমির বেদুঈনদের কাছে পুরুষই হচ্ছে সবার উপরে। নবীজি তার ব্যতিক্রম হলেন না।
এখানে আরও কিছু হাদিস উদ্ধৃতি দেওয়া হল যা থেকে আমরা দেখতে পাব একজন বেদুঈন পুরুষকে তৃপ্ত করতে একজন মহিলার কতদূর পর্যন্ত যেতে হবে।
সহিহ বোখারী, ভলুম ৭, বই ৬২, হাদিস ১৭৩:
জাবির বিন আবদুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) বলেছেন—যদি তুমি রাত্রে বাড়ী পৌঁছ তবে তৎক্ষণাৎ স্ত্রীর নিকট চলে যাবে না। যাবত না সে যৌনাঙ্গের কেশে ক্ষুর ব্যাবহারে পরিচ্ছন্ন হয় এবং মাথার কেশ বিন্যাস করে নেয়। নবী (সাঃ) আরও বললেন: “হে জাবির সন্তান উৎপাদন কর, সন্তান উৎপাদন কর!”
মুসলিম নারীদের জন্য প্রসাধন সামগ্রী ব্যাবহার করা, তথা তাদের মুখমণ্ডল সুশ্রী করা একেবারেই হারাম। সত্যি বলতে যে সব মুসলিম মহিলাগণ নিজেদের সৌন্দর্য বিকাশে ব্যস্ত তাঁদেরকে মুসলিম নারী বলা যাবেনা। তাই বলা যায় যেসব মুসলিমাহ্ ঠোঁটে লিপস্টিক মেখে, চক্ষুতে মাসকারা দিয়ে, গালে কুমকুম…ইত্যাদি লাগিয়ে গৃহের বাইরে যান তাঁদের উচিত হবে ঐ সব হারাম প্রসাধন সামগ্রী ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া। তা না করলে এই সব মুসলিমরা যে ইসলামী নরকের আগুনে চিরকাল পুড়তে থাকবেন।
এই ব্যাপারে কিছু হাদিস দেখা যাক।
সহিহ মুসলিম, বই ১, হাদিস ১৮৭:
আবু বুরদা বলেছেন যে আবু মুসা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে আসলো ও উচ্চরবে বিলাপ আরম্ভ করল। যখন আবু মুসা ধাতস্থ হলেন তখন বললেন: তুমি কি জান না? আমি হলপ করে বলছি যে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “যে কেউ কারও অসুস্থতায় মস্তক মুণ্ডন করবে, উচ্চরবে কান্নাকাটি করবে ও পোশাক ছিঁড়ে ফেলবে তার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।“
সুনান আবু দাঊদ, বই ১, হাদিস ০১৮৮:
আবু হুরায়রা বর্ণনা করলেন:
আল্লাহর সৃষ্ট মহিলাদেরকে মসজিদ যেতে বাধা দিবে না। তবে তাদেরকে মসজিদে যেতে হবে সুগন্ধি না মেখে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে নবীজি পুরুষদেরকে সুপারিশ করেছেন তারা মসজিদে যাবার সময় যেন সুগন্ধি মেখে নেয়। দেখা যাচ্ছে একজন সুন্দরী তরুণী যার আছে আকর্ষণীয় দেহ সে ইসলামে এক বিষম বিড়ম্বনার পাত্র। তাকে নিয়ে কি করা? মহিলা যদি বৃদ্ধা, অসুন্দর, ও কুৎসিত দেহের অধিকারী হয় তবে ইসলামে তার স্থান অনেক উঁচুতে।
দেখা যাক আরও দুই একটি হাদিস।
মালিকের মুয়াত্তা, হাদিস ৫৩.১.২:
ইয়াহিয়া—মালিক—ওহাব ইবনে কায়সান থেকে। ইয়াহিয়া বর্ণনা করলেন:
মোহাম্মদ ইবনে আমর বলেছেন: “আমি আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের সাথে বসেছিলাম। এক ইয়ামানি ব্যক্তি এসে গেল। সে বলল: ‘ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারকাতুহু। এরপর ব্যক্তিটি আরও কিছু বলল। ইবনে আব্বাস (তখন তিনি অন্ধ ছিলেন) জিজ্ঞাসা করলেন: “ব্যক্তিটি কে?” উপস্থিত যারা ছিল তারা বলল: “এ হচ্ছে এক ইয়ামানি ব্যক্তি”। এরপর তারা তার পরিচয় জানিয়ে দিল। ইবনে আব্বাস বললেন: শুভেচ্ছার শেষ শব্দ হচ্ছে—আশীর্বাদ”।
ইয়াহিয়া তখন মালিককে জিজ্ঞাসা করলেন: “আমরা কি মহিলাদেরকে শুভেচ্ছা বা সম্ভাষণ জানাতে পারি?” তিনি উত্তর দিলেন: “এক বৃদ্ধাকে শুভেচ্ছা জানাতে অসুবিধা নাই। তবে এক তরুণীকে আমি শুভেচ্ছা জানাই না।“