Category Archives: QuranVSscience

পৃথিবী যে গোলাকার এর স্বপক্ষে কুরআনের আভিনব প্রস্তাবনা 

পৃথিবী যে গোলাকার এর স্বপক্ষে কুরআনের আভিনব প্রস্তাবনা 

——————————————————
‘কুরআনে পৃথিবীকে সমতল বলা হয়েছে’ কুরআনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অনেক পুরাতন । সারা কুরআন ঘেঁটে একটি আয়াতও এরকম খুজে পাইনি যা বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে দাড় করানো যেতে পারে – পৃথিবী সমতল হওয়ার ব্যাপারটিতো অবশ্যই নয় । আরবি ভাষার স্বল্প জ্ঞান ও কুরআনে রুপক অভিব্যক্তি না বুঝার কারণে এই সমস্ত ভুল বুঝাবুঝির শুরু । পাঠকের যদি এই বিষয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছে হয় তবে অনুগ্রহ করে কুরআনের আয়াত রেফারেন্স সহকারে পোষ্ট করবেন । 
যাই হোক , পৃথিবী যে গোলাকার তা কুরআনে খুবই অভিনব ও উচ্চ জ্ঞান মাত্রায় বলা হয়েছে ।ক্ষুদ্র জ্ঞানে ৩ টি আয়াত আমার নজড়ে পড়েছে তা নীচে তুলে ধরলাম । জ্ঞানী পাঠক আরো অধিক প্রমান খুজে পাবেন বলে মার বিশ্বাস ।
প্রমান-১: 
““হে জিন ও মানবকূল, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের أَقْطَارِ  অতিক্রম করা যদি তোমাদের সাধ্যে কুলায়, তবে অতিক্রম কর। কিন্তু বল ব্যতীত তোমরা তা অতিক্রম করতে পারবে না।” (৫৫:৩৩)
 আয়াতে মূল আরাবি أَقْطَارِ (আকতার) قطر (কতর) এর বহু বচন । এর অর্থ ব্যাস ( Diamaeter)  । ব্যাস হল কেন্দ্রকে অতিক্রম করে যাওয়া একটি রেখা যা বৃত্তের দু’টি প্রান্তবিন্দুকে স্পর্শ করে। ব্যাস শুধু একটি গোলাকার বস্তুর ক্ষত্রেই প্রযোজ্য হতে পারে , সমতল বস্তুর জন্য নয় । আয়াত ৫৫:৩৩ প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে যে পৃথিবীর ব্যাস অতিক্রম করতে বলের (Force)  দরকার যা Escape Velocity ও Gravitational Pull এর দিকেও নির্দেশনা দান করে । আমরা এই দুইটি বিষয়ে আপাতত আলচনা করবনা , কিন্তু ব্যাস (قْطَارِ) শব্দটা আমাদের কে পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে দেয় যে কুরআন রচয়িতা পৃথিবী যে গোলাকার তা ভালো করেই জানেন ।
প্রমান-২:
“তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা يُكَوِّرُ করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা يُكَوِّرُ করেন………” (৩৯:০৫)
আয়াত ৩৯:০৫ আয়াত এ ব্যবহৃত ক্রিয়া পদ يُكَوِّرُ (ইউকারু) এর বিশেষ্য পদ ك و ر ( কুরা) থেকে উদ্ভূত । আরবী শব্দ ك و ر মানে বল (Ball ) . যেমন , আরবিতে ফুটবল খেলাকে বলে كُرة القَدَم ( কুরাতুল কদম) । উপরিউক্ত আয়াতে يُكَوِّرُ শব্দ দ্বারা এমন এক আচ্ছাদন প্রক্রিয়াকে বুঝানো হয়েছে যা বৃত্তাকারে ঘটে । 
আমরা জানি গোলাকার পৃথিবী নিজ অক্ষে আবর্তনের    কারনে ২৪ ঘণ্টায় দিন ও রাত সংঘটিত হয় । দিন ও রাতের এই পরির্তন ২ কারণে ঘটেঃ
১- পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে ।

২- পৃথিবী নিক অক্ষে আবর্তন করার কারণে । 
উপরে উল্লেখিত আয়াতে يُكَوِّرُ শব্দ দ্বারা এই দুই শর্তকেই দিন ও রাত্রির পরিবর্তনের জন্য অপরিহার্য করা হয়েছে । অর্থাৎ পৃথিবীকে গোলাকার  আকার দিয়ে আবর্তন করানো হচ্ছে । 
প্রমান-৩
“তিনি দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের মালিক” (৫৫:১৭)
পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে ১৮০ ডিগ্রী ব্যবধানে পৃথিবীর ব্যাসের দুই প্রান্তে যে দুইটি শহর বা দেশ অবস্থান করে তাদেরকে প্রতিপাদ স্থান (Antipode)  বলে । এই দুইটি প্রতিপাদ স্থান একে অপর থেকে সবচেয়ে দূরবর্তি অবস্থানে অবস্থিত হয় ।যেমনঃ স্পেনের মাদ্রিদ ও নিউজিল্যান্ডের    ওয়েবার প্রতিপাদস্থান । যখন মাদ্রিদে ভরদুপুর তখন ওয়েবার মাঝ রাত । একটিতে যখন সবচেয়ে বড় দিন , ঠিক সেই দিনেই অপরটিতে সবচেয়ে বড় রাত । এভাবেই পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে তাদের এই অবস্থানের জন্য একটিতে যখন ভোরের সূর্য উদয় হয় ঠিক তখনই অপর জায়গাতে সূর্য অস্ত যায় । আবার সারাদিন শেষে যখন ১ম স্থানে সন্ধ্যায় সূর্য ডুবা শুরু করে , ঠিক তখনই সারা রাত শেষে অপর প্রতিপাদ স্থানে ভোরের সূর্য উঠে । পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ২৪ ঘণ্টার ভিতরে ২ টি সূর্যদয় ও ২ টি সূর্যাস্ত পর্যবেক্ষন করা সম্ভব শুধু মাত্র পৃথিবী গোলাকার বলে ।     
আয়াত ৩৯:৫ , আয়াত ৫৫:৩৩ এ আমরা দেখেছি যে Technically পৃথিবীর আকার যে গোল তা বুঝানো হয়েছে । উপরের আয়াত ৫৫:১৭ এ যে  সূর্যের ২ টি অস্তাগমন ও ২ টি অস্তাচল এর প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে তা পৃথিবী গোলাকার হওয়ার প্রাকৃতিক ও বাস্তবিক প্রমান ।

By Aryan Khanbd fbfd