Category Archives: Prophet

Ulil Amar(উলিল আমর) vs Rasool

By nazamul biswas

রসুলের বিকল্প মান্যকর কিছু আছে কি?



এখানে উল্লেখ্য যে, দ্বীনের ক্ষেত্রে উলামাগণকে কিংবা উলিল আমরগণকে কিংবা তাবলীগের আমিরগণকে কিংবা পীরগণকে আনুগত্য করলে সেই আনুগত্য রসূলের হবে এমন কোনো আয়াত পবিত্র কোরআনে নেই। তাছাড়া উলামা, উলিল আমর, আমির, পীর এই নামগুলো রসূলের গুণবাচক নাম এমন উল্লেখ পবিত্র কোরআনে নেই। এজন্য কোনো অবস্থায় ঐ উলামাগণ কিংবা উলিল আমরগণ কিংবা তাবলীগের আমিরগণ কিংবা পীরগণ রসূলের বিকল্প নয়। কারণ দ্বীনের ক্ষেত্রে রসূল ব্যতীত ৩য় কোন ব্যক্তির আনুগত্য করার কথা কোথাও উল্লেখ নেই। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তোমার আল্লাহ বিশ্বাস কর ও রসূল বিশ্বাস কর, বলো না তিন। (সূরা নেছা-১৭১)। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে তোমরা রসূলের আনুগত্য করবে, এজন্য আমি রসূলই পাঠাই (নেছা, ৬৪ আয়াত)। এই আয়াতে প্রমাণ হয় যে, রসূলের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয় নি।
আল্লাহ বলেন, দ্বীনের বিষয় সকল কিছু একমাত্র আল্লাহরই প্রাপ্য। (সূরা যুমার : ৩) রসূলের আনুগত্য করলে সে আনুগত্য আল্লাহর হয়। (সূরা নেসা : ৮০) তাই রসূলের আনুগত্য করলে সে আনুগত্য দ্বীনের আনুগত্যে গণ্য হয়। রসূল ব্যতীত দ্বীনের ক্ষেত্রে অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির আনুগত্য করলে শেরেক হবে। এই জন্য যে, রসূল ব্যতীত তৃতীয় কোনো ব্যক্তির আনুগত্য করলে সে আনুগত্য রসূলের হবে এমন কোনো আয়াত কোরআনে নেই। এই জন্য আল্লাহ বলেন, তোমরা আল্লাহ বিশ্বাস কর ও রসূল বিশ্বাস কর। বলিও না তিন। (সূরা নেসা : ১৭১)
যারা তিন পন্থী তারা বলে, আল্লাহ তো তিনের মধ্যে একজন। (সূরা মায়েদা: ৭৩) অতএব দ্বীনের ক্ষেত্রে একমাত্র রসূল ব্যতীত তৃতীয় কোনো ব্যক্তির আনুগত্য করলে সেটা শেরেকে গণ্য হবে এটা নিশ্চিত। অনেকেই দ্বীনের ক্ষেত্রে তাদের দলের আমিরগণের আনুগত্য করে থাকে। যেহেতু আমিরগণকে তারা রসূল জ্ঞান করে না। তাহলে দ্বীনের ক্ষেত্রে তাদের আমিরগণের আনুগত্য করলে সেটা শেরেকে গণ্য হবে। আবার যারা উলামাগণকে দ্বীনের ক্ষেত্রে আনুগত্য করে থাকে। যেহেতু তারা উলামাগণকে রসূল জ্ঞান করে না। সেহেতু একই যুক্তিতে উলামাগণকে বা আলেমগণকে বা দলের আমিরগণকে দ্বীনের ক্ষেত্রে আনুগত্য করে তারাও শেরেকে গণ্য। আবার যারা মসজিদের বেতনভুক্ত ইমামগণকে দ্বীনের ক্ষেত্রে আনুগত্য করে। যেহেতু মসজিদের ইমামগণকে তারা রসূল জ্ঞান করে না সেহেতু সেই একই যুক্তিতে ঐসকল ইমামগণের দ্বীনের ক্ষেত্রে আনুগত্য করাও শেরেকে গণ্য। আবার যারা দ্বীনের ক্ষেত্রে পীরগণকে আনুগত্য করে থাকে। যেহেতু তাদের পীরগণকে তারা রসূল হিসেবে বিশ্বাস করে না বিধায় সেই সকল তিনপন্থী পীরপন্থীগণও শেরেকে গণ্য। (বি.দ্র. তিনপন্থী পীরপন্থী শেরেকে গণ্য অধ্যায়ে বিস্তারিত দেখুন)। আবার যারা আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা কল্পনা বা অনুমান করে সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা, কল্পনা ও অনুমান মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। (সূরা ইউনুস : ৩৬) এটা এই জন্য গ্রহণযোগ্য নয় যে, আপনি আল্লাহকে যেমনটি ধারণা করেন কিংবা যেমনটি অনুমান করেন আল্লাহ তো তেমনটি নহেন বিধায় আল্লাহ সম্পর্কে আপনার মস্তিষ্কের এই কাল্পনিক মূর্তিটি আল্লাহ সম্পর্কে একটি মেসেলে গণ্য হয়। আর আল্লাহ সম্পর্কে কোনো মেসেল দেওয়া যাবে না। (সূরা নহল : ৭৪) ফলে যারা আল্লাহর কাল্পনিক মূর্তি মস্তিষ্কে রেখে আল্লাহকে সেজদা করে সেটাও কোরআন মাফিক নয়। আবার যারা আল্লাহকে অনুমানের উপর বিশ্বাস করে কাবা ঘরে হজ করতে যান তাদের মস্তিষ্কে কাবা ঘরের ছবি সেজদার সময় স্থির হয়ে যায় কিংবা যারা কাবা ঘরের ছবিকে কল্পনায় এনে সেখানে সেজদা করে তাদের সেজদাও শেরেক হয়। কারণ আল্লাহ ছাড়া সেজদা হারাম। (সূরা জিন : ১৮) এই জন্য ওয়াসজুদুলি হেরেম শরিফ কিংবা ওয়াসজুদুলি মাকামে ইবরাহিম কিংবা ওয়াসজুদুলি বায়তুল্লাহ। অর্থাৎ তোমরা কাবা ঘরকে সেজদা কর কিংবা তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে সেজদা কর, কিংবা তোমরা আল্লাহর ঘরকে সেজদা কর এমন আয়াত কোরআনে আসেনি। তবে আয়াতে এসেছে আত্তাখাযু মিন মাকামে ইবরাহিম মু-উছাল্লি। (সূরা বাকারা : ১২৫) তোমরা মাকামে ইবরাহিমকে উছাল্লি আদায় করার স্থান হিসেবে সাব্যস্ত কর। এখানে উল্লেখ্য যে, উছাল্লি আর সেজদা একশব্দ নয়। কারণ সেজদা হচ্ছে উপাসনামূলক শব্দ। আর উছাল্লি হচ্ছে প্রশংসামূলক শব্দ। কারণ আল্লাহ বান্দার জন্য উছাল্লি কামনা করে। (সূরা যুখরুফ : ৪৩) [বি.দ্র. এই পুস্তকের ২৪ নং অধ্যায়টি বিস্তারিত দেখুন] এই আয়াত অনুসারে মাকামে ইবরাহিমকে প্রভুর প্রশংসা গুণকীর্তন করার স্থান হিসেবে সাব্যস্ত করতে বলা হয়েছে। তবে সেটা সেজদার লক্ষ্যবস্তু নয়। এ জন্য যারা কাবা ঘরের ছবিকে সেজদার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে অন্তরে স্থির করে সেজদা করে তারাও শেরেকে গণ্য। আর এই ধরনের শেরেকযুক্ত মুশরিকদেরকে কাবা ঘরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কারণ আল্লাহ ঘোষণা করেন যে, মুশরিক (হাজী)দের দায় আল্লাহ নেবেন না কিংবা রসূলও তাদের দায়ভার নেবেন না। (সূরা তওবা : ৩) আবার যারা আল্লাহর সাথে অন্যদের নাম ডাকে তারাও শেরেকে গণ্য। কারণ আল্লাহ বলেন, তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে ডেক না। (সূরা জিন : ১৮) বর্তমানে এক শ্রেণীর লোক আছে, যারা কোনো মূর্তিপূজা করে না আবার কোনো দেবদেবীর উপাসনাও করে না। উহারা কেবল আল্লাহকেই প্রভু বলে বিশ্বাস করে। কিন্তু উহারা আল্লাহর সাথে মূসা (আ.) কিংবা ঈসা (আ.) কিংবা বিগত রসূলগণের নাম জপনা করে। সূরা জিনের ১৮ নং আয়াত অনুসারে তারাও শেরেকে গণ্য। যখন তাদের বলা হলো, তোমরা (শেরেক পথ পরিহার করে) পরিপূর্ণভাবে আল্লাহতে আত্মসমর্পণ কর। (সূরা বাকারা : ২০৮) কারণ আল্লাহতে আত্মসমর্পণ করাই আল্লাহর মনোনীত দ্বীন। (সূরা ইমরান : ৮৫) তখন তারা বলল, আমরা তো আমাদের দ্বীনেই আছি। তখন তাদেরকে বলা হল, তোমরা যে আল্লাহর সাথে তোমাদের রসূল ঈসা আ. ও মূসা (আ.) কিংবা বিগত রসূলগণের নাম জপনা করছ। ফলে তোমরা আল্লাহর সাথে তোমাদের রসূলের নাম জপনা করে শেরেকে গণ্য হচ্ছ। কিন্তু আল্লাহ বলেন, তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেক না। (সূরা জিন : ১৮) তখন তারা বলল, এই যুক্তিতে আল্লাহর সাথে আমাদের রসূলের নাম জপনা করলে যদি শেরেক হয় তাহলে তোমরা যখন আল্লাহর সাথে তোমাদের রসূলের নাম ডাক তাহলে তো তোমরাও আমাদের মতো শেরেকে গণ্য। তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন, কুল ইন্নানী বারিউন মিম্মা তুশরিকা। বল, তোমাদের মতো শেরেক থেকে আমি মুক্ত। (সূরা আনাম : ১৯) তখন তারা বলল, তোমাদেরটা কিভাবে শেরেক মুক্ত হয়? আমরা রসূল থেকে আল্লাহকে ংবঢ়ধৎবঃব না করে আল্লাহ ও রসূলকে একাকার ও অবিচ্ছিন্নভাবে বিশ্বাস করে অর্থাৎ সূরা আল-ফাতহ-এর ১০নং আয়াত অনুসারে রসূলের হাতই আল্লাহর হাত বিশ্বাস করি এ জন্য আমাদেরটা শেরেকমুক্ত। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, আল্লাযিনা ইয়াকফুরুনা বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি ওয়া উরিদুনা আইয়ু র্ফারিকু বায়নাল্লাহা ওয়া রুসুলিহি (অর্থাৎ উহারাই আল্লাহ ও রসুল অস্বীকারকারী যাহারা ইচ্ছাকৃতভাবে রসুল থেকে আল্লাহকে ফারাক করে অর্থাৎ রসুল থেকে আল্লাহকে ংবঢ়ধৎবঃব করে বা ফবংঃবহপব করে অর্থাৎ পৃথক করে বা দূরত্ব করে (সূরা নেসা : ১৫০) অর্থাৎ এই আয়াত অনুসারে যারা রসূল থেকে আল্লাহকে ংবঢ়ধৎবঃব করে উহারাই আল্লাহ ও রসূল অস্বীকারকারী কাফের। পক্ষান্তরে যারা রসূল থেকে আল্লাহকে ংবঢ়ধৎবঃব করে না উহারাই মোমিন। এই মর্মে আল্লা আরো বলেন, ওয়া য়াল্লাজিনা আমানুবিল্লাহি ওয়া রসুলিহি ওয়া লাম উফারিরকু বায় আহাদা মিনহুম, উলাইকা সাওফা উতিহিম উযুরাহুম-বরং যারা আল্লার রসুল বিশ্বাস করে এবং উহাদের মধ্যে কোনো ফারাক করে না। অর্থাৎ রসুল থেকে আল্লাহকে ংবঢ়ধৎবঃব করে না বা ফবংঃবহপব) করে না অর্থাৎ পৃথক করে না বা দূরত্ব করে না। উহাদের জন্য রহিয়াছে পুরস্কার (সুরা নেসা আয়াত-১৫২)। এখানে উল্লেখ যে, এই আয়াত দিয়েই অনেকেই প্রমাণ করতে চায় যে, আল্লাহর রসুলের মধ্যে কোন ফরভবৎবহঃ বা পার্থক্য নেই। কিন্তু তাদের কথা ঠিক নহে কারণ আল্লাহ ও রসূলের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। রসুল হচ্ছে সৃষ্ট আল্লাহ হচ্ছে শ্রষ্ঠা। রসুলের জন্ম-মৃত্যু আছে পক্ষান্তরে আল্লাহর জন্ম-মৃত্যু নেই। রসুলের সাথে আল্লাহ আছে। অর্থাৎ রসূল হচ্ছে আল্লাহর সংশ্লিষ্ট। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া রসূল চলতে পারে না পক্ষান্তরে আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নহে আল্লাহ একক। তবে এই আয়াতের উদ্দেশ্য হবে রসুলের সাথে আল্লাহ আছে বিধায় রসুল থেকে আল্লাহকে পৃথক না করে অর্থাৎ ংবঢ়ধৎবঃব না করে আল্লাহ ও রসুল বিশ্বাস করা। আল্লাহ ও রসূলকে একাকার ও অবিচ্ছিন্নভাবে বিশ্বাস করা। রসূলের হাতই আল্লাহর হাত (সূরা আল-ফাতহ-১০) অর্থাৎ রসূল সুরতে আল্লাহ বিশ্বাস করে সেজদা দিলে রসূল সুরতে, স্বপ্নে আল্লাহর দর্শন হয়। কারণ ইবলিশ যেহেতু আদম সেজদার সামিল হয় না (সূরা হিজর-৩৩) সেহেতু স্বপ্নে আদম সেজদাকারীর চেহারায় ইবলিশ আসে না। তখন কিন্তু রসূল সুরতে স্বপ্নে, রসূলও আসে নাই ইবলিশও আসে নাই। রসূল সুরতে স্বপ্নে স্বয়ং আল্লাহই আসে। এ মর্মে লালন সাইজি তাঁর গানের ভাষায় বলেছে-যিনি মুর্শিদ/গুরু তিনি রসুল, ইহাতে নাই কোনো ভুল। খোদাও সে হয়, এ কথা বলে না লালন কোরানে কয়। এবার এই মর্মে আল্লাহ বলেন তোমরা যখন রসূলের কাছে যাবে তখন তোমাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমনটি থাকবে যে আমরা তো আল্লাহর কাছেই গেলাম। যখন তোমরা রসূলের কাছে বায়াত গ্রহণ করবে তখন তো আল্লাহর কাছেই বায়াত গ্রহণ করলে। (সূরা ফাতহ : ১০) কারণ তাদের হাতের উপরই আল্লাহর হাত। (সূরা ফাতহ : ১০) আর এই মর্মে আল্লাহ বলেন, তোমরা যেখানেই থাক না কেন আমি তোমাদের সাথে আছি। (সূরা হাদিদ : ৪)। আল্লাহ তো রসূলের ভেতরই সক্রিয় আছেন। (সূরা আনফাল : ১৭) আল্লাহ মানুষের গর্দানের শাহ রগ অপেক্ষাও নিকটে। (সূরা কাফ : ১৬) (বি. দ্র. একত্ববাদের দ্বীন অধ্যায় ও আল্লাহর অবস্থান সর্বত্রই অধ্যায় বিস্তারিত দেখুন) আল্লাহ মানুষের অতি নিকটে (সুরা বাকারা-১৮৫) যিনি মুর্শিদ/গুরু তিনি রসুল। (বি.দ্র.এই মর্মে সম্যকগুরুই রসুল অধ্যায় বিস্তারিত দেখুন।) অতএব রসূল থেকে আল্লাহকে ফারাক না করে রসূল সুরতে আল্লাহ বিশ্বাস করাই একত্মবাদে দ্বীন। এখানে উল্লেখ্য যে, ফারাক শব্দ অর্থ পৃথক করা। (আরবী অভিধান পৃ. নং ১৮৭৯) আর পৃথক শব্দের ইংরেজি হচ্ছে ঝবঢ়ধৎধঃব। (ইংরেজি অভিধান পৃ. নং ৭০৩) যেটার অর্থ উরংঃধহপব বা দূরত্ব করা বুঝায়। অর্থাৎ সূরা নেসার ১৫০ নং আয়াতের ভাবার্থ হচ্ছে রসূল থেকে আল্লাহ ঝবঢ়ধৎধঃব বা উরংঃধহপব না করে বিশ্বাস করা। বরং রসূলের হাত আল্লাহর হাত বিশ্বাস করে রসূলের মধ্যে ব্যক্তি রসূলকে বিলীন করে সেই সুরতে আল্লাহ বিশ্বাস করে সেখানে আল্লাহকে বর্তমান জেনে সেজদা করা হয়। এটাই হচ্ছে রসূলের মাধ্যমে ঈমান পরীক্ষা করা। (সূরা ফুরকান : ২০) উপরোক্ত আলোচনায় দেখা গেলো যারা রসুল থেকে আল্লাহকে ফারাক করে বা ঝবঢ়ধৎধঃব (পৃথক) করে উহারা সুরা নেসার ১৫০নং আয়াত অনুসারে আল্লাহ ও রসুলকে অস্বীকারকারী বলে গণ্য। তাই উহারা যখনই রসুল থেকে আল্লাহকে ঝবঢ়ধৎধঃব বা পৃথক করে তখনই উহারা আল্লাহর সাথে রসুলের নাম জপনা করে। ফলে উহারা সুরা জিনের ১৮নং আয়াত অমান্যকারী বলে গণ্য হয়। (কারণ এই আয়াতে বলা হয়েছে তোমরা আল্লাহর সাথে কাউকে ডেকো না।) রসূলের সুরতে আল্লাহ বিশ্বাস করা এটাই ঈমানের একটা পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় লেবাসধারী মোমিনগণও আক্রান্ত হয়। এই পরীক্ষা সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, এমন একটি কঠিন পরীক্ষা করা হবে যে পরীক্ষায় শুধু জালেমরাই আক্রান্ত হবে না। (সূরা আনফাল : ২৫) এইভাবে আমরা রসূল সুরতে আল্লাহ বিশ্বাস করছি বিধায় আমাদেরটা শেরেকমুক্ত। কারণ রসূলের মধ্যে রসূলকে বিলীন করে সেখানে যে আল্লাহর অবস্থান আছে। রসূল সুরতে সেই আল্লাহকেই সেজদা করছি। রসূলকে করছি না। বা আল্লাহর সাথে রসূলকে ডাকছি না। আর এটা আমাদের পক্ষে এইজন্য সম্ভব হচ্ছে যে, সম্যকগুরুই আমাদের রসূল। কাজেই আমাদের রসূল তো বর্তমান বা উপস্থিত আছে। যেহেতু তোমরা তো মুসা (আ.)কে কিংবা ঈসা (আ.)কে কিংবা অনুপস্থিত রসূলগণকে রসূল হিসাবে বিশ্বাস কর। কিন্তু বর্তমান সম্যক গুরুকে রসূল হিসাবে বিশ্বাস কর না। আর তোমাদের রসূল তো বর্তমানে নেই। তাহারা অনুপস্থিত। এইজন্য তোমরা রসূলের হাতের স্পর্শ লাভ করতে পারছ না বিধায় তোমাদের ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে রসূলের নাম ডাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ফলে তোমরা আল্লাহর সাথে রসূলের নাম জপনা করে সূরা জিনের ১৮ নং আয়াতের পরিপন্থী গণ্য। তাই সম্যকগুরুকে রসূল বিশ্বাস করেই সেখানে বায়আত গ্রহণের মাধ্যমে একত্মবাদের দ্বীনের পৌঁছানোই একমাত্র উপায়। তাই এই রসূলের কোনো বিকল্প নেই। এইজন্য সম্যকগুরুকে রসূল বিশ্বাস করে সেই রসূল সুরতে আল্লাহকে সেজদা করা শেরেক মুক্তির একমাত্র পথ। এই পথে না এসে যারা ঈসা (আ.)কে কিংবা মুসা (আ.)কে কিংবা অনুপস্থিত রসূলগণকে রসূল হিসাবে বিশ্বাস করে আল্লাহর সাথে ঈসা (আ.) ও মুসা (আ.) কিংবা অনুপস্থিত রসূলের নাম জপনা করে তারা শেরেকের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, শেরেক করলে কর্ম নিষ্ফল হয়। (সূরা যুমার : ৬৫) শেরেক সবচেয়ে বড় জুলুম। (সূরা লোকমান : ১৩) শেরেক করলে ঈমান কলুষিত হয়। তাই আল্লাহ বলেন, তোমাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করো না। (সূরা আনাম : ৮২) শেরেকের অপরাধ কখনোই ক্ষমা করা হবে না। (সূরা নেসা : ৪৮)
আর যারা সম্যকগুরুকে রসূল বিশ্বাস করে তার সঙ্গ ধারণ করে একত্মবাদের দ্বীনে পৌঁছলো তারা শেরেক থেকে মুক্তি পাবে এই জন্য যে, সম্যকগুরুই রসূল। [বি.দ্র. সম্যকগুরু রসূল অধ্যায় বিস্তারিত দেখুন] আর রসূলের আনুগত্য করলে সে আনুগত্য আল্লাহর হয়। (সূরা নেসা : ৮০) এজন্য সম্যকগুরুকে রসূল বিশ্বাস করে তার আনুগত্যকারীগণ শেরেকমুক্ত। আর যারা সম্যকগুরুকে রসূল বিশ্বাস না করে অনুপস্থিত রসূলগণকে বিশ্বাস করে সম্যকগুরুকে তথা এই রসূলের সঙ্গ ধারণ না করে মারা গেল তখন তারা আফসোস করে বলবে, হায় আমরা যদি রসূলের সঙ্গ ধারণ করতাম! (সূরা ফুরকান : ২৭) দ্বীনের ক্ষেত্রে রসূলের কোনো বিকল্প নেই। অর্থাৎ রসূর ব্যতীত শেরেক মুক্তির কোন উপায় নেই।

Rasool for all the time

By Nazrul biswas fb.

রাসুল ব্যবস্থা সার্বক্ষনিকঃ

আল্লাহ বলেন, আমি প্রত্যেক জনপদের কেন্দ্রে আমার আয়াত আবৃতি করার জন্য রসূল প্রেরণ না করে কোনো জনপদ ধ্বংস করি না। (কাছাস, ৫৯ আয়াত)। আল্লাহ প্রত্যেক উম্মতের কাছে রসূল পাঠিয়ে থাকেন (ইউনুস, ৪৭ আয়াত)। এই ভাবে প্রত্যেকের কাছে রসূল না পাঠিয়ে আল্লাহ কাউকে শাস্তি দেন না। (বনি ইসরাইল, ১৫ আয়াত) রসূল না পাঠিয়ে কোনো জনপদ আল্লাহ ধ্বংস করলে বা আল্লাহ কাউকে শাস্তি দিলে তারা বলত, আমাদের কাছে রসূল প্রেরণ করলে না কেন? করলে আমরা মুমিন হতাম। (কাছাস, ৪৭ আয়াত)। মমিনদের মধ্য থেকেই মমিনদের কাছে রসূল পাঠায়। যারা মমিনদেরকে পবিত্র করে। (ইমরান, ১৬৪ আয়াত)। যারা রসূলগণকে অস্বীকার করেছিল তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কি ভাবে কাফের হলে? তোমাদের মধ্যে রসূল থাকা সত্ত্বেও (ইমরান, ১০১ আয়াত)। সেদিন কাফেরদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে কি রসূল এসেছিল না? তারা বলিবে হ্যাঁ, এসেছিল, আমরা রসূলকে মানি নি (জুমার, ৭১ আয়াত)। এই মর্মে সাক্ষ্য দেয়া হবে যে, তাদের মধ্য থেকে তাদের কাছে রসূল এসেছিল, কিন্তু তারা রসূলকে অস্বীকার করেছিল (নহল, ১১৩ আয়াত)। তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে রসূল পাঠাই, যিনি তোমাকে কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেন, অজানা বিষয় শিক্ষা দেন (বাকারা, ১৫১ আয়াত)। এখানে উল্লেখ্য যে, তোমাদের মধ্য থেকে বলতে তোমাদের মধ্যে বর্তমান উপস্থিত রসূলকে বুঝানো হয়েছে। এই জন্য বলা হয়েছে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে রসূল পাঠানো হয়েছে। নিজেদের মধ্য থেকে বসূল বলতে নিজেদের বংশগত অবস্থা বুঝানো হয় নি, কারণ জিন সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে এ যাবৎ পর্যন্ত কোনো রসূল আসে নি, তারপরও জিনদেরকে সেদিন জিজ্ঞাসা করা হবে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে কি রসূল এসেছিল না? (আনামের ১৩০ আয়াত) এতে প্রমাণ হয় যে, তোমাদের মধ্য থেকেই রসূল পাঠিয়েছি কথা দিয়ে বংশগত বুঝানো হয় নি, বরং স্বয়ং রসূল উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছে। রসূলের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য এই মর্মে সকল নবীর কাছ থেকে আল্লাহ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, তোমাদিগকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়াছি অতঃপর তোমাদের কাছে যা কিছু আছে তার সমর্থক রূপে যখন রসূল তোমাদের কাছে আসবে তখন তোমরা অবশ্যই তাকে বিশ্বাস করবে এবং (রিসালাত দিয়ে) তাকে সাহায্য করবে। এই সম্পর্কে আমার অঙ্গিকার তোমরা কী গ্রহণ করলে? তারা বলিল আমরা স্বীকার করলাম। (ইমরান, ৮১ আয়াত)। তাই প্রত্যেক নবী তার শেষাংশে একজনকে রিসালাতের ভার অর্পণ করার মাধ্যমে রসূল পদে একজন রসূল রেখে গেছেন যাতে পরবর্তী নবী আসা পর্যন্ত রসূলের ধারা অব্যাহত থাকে। যেমনÑ মূসা (আ.)-এর পরবর্তীতে হারুনকে স্থলাভিষিক্ত করল (আরাফ, ১৪২ আয়াত)। তার পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে পর্যায়ক্রমে রসূল এসেছে (বাকারা, ৮৭ আয়াত)। এভাবে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক রসূল পাঠিয়ে রসূলের ধারা অব্যাহত রাখা হয়েছে (মমিন, ৪৪আয়াত)। এইভাবে নবীর শেষাংশে রিসালাতের ভার অর্পনের মাধ্যমে পরবর্তী নবী আসা পর্যন্ত রিসালাত প্রাপ্ত রসূলগণ দায়িত্ব পালন করেন। এই মর্মে আল্লাহ বলেন “নবী প্রেরণের বিরতির পর অর্থাৎ দুই নবীর মধ্যবর্তী ফাতারাতি পিরিয়ডে আমি রসূল পাঠাই, যাতে তারা না বলতে পারে, আমরাতো কোনো সতর্ককারী রসূল পাইনি। (মায়েদা, ১৯ আয়াত)। এই আয়াতে ফাতারাতি শব্দ এসেছে, ফাতারাতি অর্থ দুই নবীর মধ্যবর্তী সময়কাল (আরবি অভিধান, পৃ. ১৮৬২)। যেমন নবী ঈসা (আ.) এবং নবী মোহাম্মদ (স.) এর মাঝখানে ৫০০ বছর এই পিরিয়ডটা ফাতারাতি পিরিয়ড, যেখানে কোনো নবী ছিল না। এই পিরিয়ডে রিসালাতপ্রাপ্ত রসূলগণই দ্বীন প্রচার করছে। পূর্ববর্তী নবীর কিতাব অনুসারে দ্বীন প্রচার করাই একমাত্র রিসালাত প্রাপ্ত রসূলের দায়িত্ব (মায়েদা, ৯৯ আয়াত)। এইভাবে ফাতারাতি পিরিয়ডে নবী অনুপস্থিত থাকে আর অনুপস্থিত ব্যক্তির আনুগত্য করা সম্ভব নয় বিধায় পবিত্র কোরআনে নবীর আনুগত্য কর মর্মে কোনো আয়াত আসে নি। নবী সার্বক্ষণিক নয় বরং রসূল সার্বক্ষণিক উপস্থিত থাকে বিধায় কোরআনে বার বার রসূলের আনুগত্য কর কথা বলা হয়েছে। ফাতারাতি পিরিয়ডের রসূলগণ কিন্তু নবী নয় এরা শুধু রসূল

Is Navi and Rasool same?

By MD Nazrul Biswas

নবী ও রসুল কি? এদের ভিতর পার্থক্য করা যাবে কিঃ

অনেকেই বলে ওহীর সাথে রসুলের সম্পর্ক। প্রত্যেক রসূলের উপর ওহী নাযিল হয়েছে। ওহী যখন শেষ রসূলও শেষ, তাদের এই কথা ঠিক নহে, কারণ প্রত্যেক রসূল ওহী প্রাপ্ত নহে। বরং প্রত্যেক নবী ওহী প্রাপ্ত। কারণ প্রত্যেক নবীই কিতাব প্রাপ্ত (ইমরান ঃ ৮১) আর ওহী ব্যতিত কোন কিতাব হতে পারে না বিধায় প্রত্যেক নবীই ওহী প্রাপ্ত এটা নিশ্চিত। আল্লাহ বলেন, আমি নবীদের উপরে ওহী নাযিল করি (সূরা নেসাঃ ১৬৩)। কারণ আল্লাহ নবীদের নবুয়ত দিয়েছেন বিধায় তারা নবী। আর নবীদের কে নবুয়ত দান করেছেন (ইমরান-৭৯)। তাহলে দেখা গেল প্রত্যেক নবীই নবুয়ত প্রাপ্ত ওহী প্রাপ্ত ও কিতাব প্রাপ্ত। আর নবীদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুয়ত, ওহী এবং কিতাব পৌছানের পরে তাকে আবার রিসালাত দেওয়া হইল (সূরা জ্বীন- ২৩)। যাকে নবুয়ত দেওয়া হয় তিনি নবী। তাহলে দেখা গেল ওহীর সাথে নবীর সম্পর্ক। ওহী শেষ বিধায় নবীও শেষ (আহয়াব-৪০)। ওহীর সাথে সকল রসূলের সম্পর্ক নাও থাকতে পারে। রসূলের কাজ হচ্ছে ওহী প্রচার করা (মায়েদা-৯৯)। প্রচার কাজ শেষ হবে না বিধায় রসূল শেষ এমন আয়াত আসে নাই। কাজেই ওহী শেষ রসূল শেষ এমন কথার কোন ভিত্তি নেই। এখানে উল্লেখ যে, আর যাকে রিসালাত দেওয়া হয় তিনি রসূল প্রত্যেক নবীই রিসালত প্রাপ্ত (৭২ঃ২৩)। তাহলে দেখা গেল প্রত্যেক নবীই রসূল। কারণ প্রত্যেক নবীই ওহী প্রাপ্ত রিসালত প্রাপ্ত। আর তাই নবীদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। (বাকারা- ১৩৬) তাহলে দেখা গেল নবীদের উপর দুইটি পদ, একটি হচ্ছে নবী পদ, অপরটি হচ্ছে রসূল পদ। তবে নবী পদটা হস্তান্তযোগ্য নহে। পক্ষান্তরে রসূল পদটা হস্তান্তরযাগ্য (সূরা আনআম- ১২৪)। তাই প্রত্যেক নবীই তার শেষাংশে তাঁর বিশ্বস্থ এবং ঘনিষ্ট একজনকে রিসালত দিয়ে রসূল হিসাবে রেখে যাবেন। এই মর্মে নবীদের কাছ থেকে আল্লাহ অঙ্গীকার নিয়েছিলেন তোমার কাছে যখন একজন রসূল আসবে তখন তুমি তাদেরকে বিশ্বাস করবে ও সাহায্য করবে (ইমরান-৮১)। এই আয়াত অনুসারে নবীর পরেই একজন রসূল থেকে যাচ্ছে। অর্থাৎ নবীর কাছে যে রসূল পদটা সংরক্ষিত ছিল এটা তিনি হস্তান্তর করে রসূল রেখে গেলেন। এই রসূল কিন্তু নবী নহেন। কারণ নবী পদটি হস্তান্তরযোগ্য নহে বিধায় যাকে রিসালত দিয়ে সাহায্য করে রসূল হিসাবে রেখে গেলেন তার উপর নবুয়ত পদ নেই। এই রসূলগণ পরবর্তী নবী আসা পর্যন্ত অর্থাৎ দুই নবীর মধ্যবর্তী ফাতারাতি পিরিয়তে দায়িত্ব পালন করেন (মায়েদা-১৯)। কিংবা নবী যখন শেষ তখনও ঐ রসূলগণ দায়িত্ব পালন করবেন। এইভাবে পর্যায়ক্রমে রসূলের ধারা অব্যাহত আছে। (বাকারা-৮৭) এবং এইভাবে একের পর এক বিরতিহীন ভাবে রসূল চলবে। (মমিন-৪৪)। এখানে উল্লেখ্য যে, নবীগণ রসূল, এই রসূলগণ ওহী প্রাপ্ত (মায়েদা-৬৭)। কারণ এই রসূলগণ আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য প্রাপ্ত অর্থাৎ রিসালত প্রাপ্ত (সূরা জ্বীন- ২৩)। পক্ষান্তরে আর এক শ্রেণির রসূল আছেন, যে সকল রসূলগণ নবীর কাছ থেকে রিসালত প্রাপ্ত অর্থাৎ সাহায্য প্রাপ্ত (ইমরান-৮১)। এরা কিন্তু ওহী প্রাপ্ত রসূল নহেন। এরা নবী নহে। এই মর্মে আল্লাহ বলেন আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে এমন অনেক রসূল যারা নবী নহে (হজ্ব-৫২)? কারণ ইহাদের প্রতি ছিল না কোন ওহী। যেহেতু প্রত্যেক নবীই কিতাব প্রাপ্ত (ইমরান ৮১)। যেহেতু এই রসূলগণের প্রতি কোন ওহী ছিল না বিধায় এরা নবী নহে। এরা ছিল ওহী ব্যতীত রসূল। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, ওয়া মা আর সালনা মিন কাবলিকা মিনার রাসূলি ইল্লা ‘নু’ ‘ওহী’ ইলাইহি, আন্নাহু লা ইলাহা ইল্লা আনা ফা তাবুদুনা। অর্থ ঃ আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে এমন অনেক রসূল যাদের প্রতি ছিল না কোন ওহী। নিশ্চয় উহারা শুধু এই কথায় প্রচার করিত যে, “আমি ছাড়া কোন ইলাহা নেই। অতএব তোমরা আমারই ইবাদত কর” (২১ ঃ ২৫)। আল্লাহ বলেন, ওয়া মা আরছালনা মিন কাবলিকা মিনার রসুলি ইল্লা-নু ওহীই ইলাইহি আন্নাহু লা-ইলাহা ইল্লা আনা ফা তাবুদুনা (২১ ঃ ২৫)। এখানে মা শব্দের অর্থ না সূচক অথবা প্রশ্নবোধক (আ ঃ অভিঃ পৃঃ নং ২১৯৩) আরছালনা অর্থ আমি পাঠিয়েছি (আ ঃ অভিঃ পৃঃ নং ১৫২) কাবলিকা অর্থ তোমার পূর্বে (আ ঃ অভিঃ পৃঃ নং ১৯১৮) মিনার রসুলি – রসূলদের মধ্য হইতে। আন্না অর্থ নিশ্চয়তাবোধক অব্যয়, যাহা দুই বাক্যের মাঝখানে বসে, তার পরবর্তী খবরকে পেশ দেয়। (আ ঃ অভিঃ পৃঃ নং ৫১৬)। হু একটি সর্বনাম, যার অর্থ তিনি বা সে (আঃ দিশারী অভিঃ ১৯৪)। আর এই আয়াতে পূর্বের বাক্যে উল্লেখিত রসুলকে বোঝানো হইয়াছে। অর্থাৎ আন্নাহু শব্দটা দুই বাক্যের মাঝখানে বসে দুটি বাক্যকে আলাদা রেখে অর্থ করে, যেমন সুরা বাকারার ২৬ নং আয়াত এবং ৬৮ ও ৬৯ নং আয়াত আন্না শব্দ এই ভাবে ব্যবহৃত হইয়াছে। সেই অনুসারে এখানে এই আয়াতের আন্না শব্দ দিয়ে আয়াতের প্রথম অংশ, (আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে এমন অনেক রসূল, যাদের প্রতি ছিলনা কোন ওহী।) এই অংশটিকে ২য় অংশ থেকে (আমি ছাড়া কোন ইলাহা নেই। অতএব তোমরা আমার ইবাদত কর) আলাদা করা হয়েছে। অনেকেই এই আয়াতটিকে প্রত্যেক নবীর উপর একটি কমন ওহী এসেছে এই অর্থে ব্যবহার করে। তাদের উদ্দেশ্য ঠিক নহে। কারণ প্রত্যেক নবীর উপর একটি কমন ওহী এসেছে এটা প্রকাশ করাই যদি এই আয়াতের উদ্দেশ্য হইত তাহলে আয়াতটিতে রসূল শব্দ না এসে নবী শব্দ আসতো। কারণ প্রত্যেক নবীই কিতাবপ্রাপ্ত (ইমরান ৮১)। আর নীবদের উপরতো ওহী নাযিল হয়েছে (সুরা নেসা ১৬৩)। যেহেতু সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতে নবী শব্দ না এসে রসূল এসেছে বিধায় প্রমাণিত হয় যে, উক্ত আয়াতের উদ্দেশ্য কমন ওহী ব্যক্ত করা নহে এটা নিশ্চিত। উক্ত আয়াতটিকে কমন ওহীর আয়াত হিসেবে অর্থ না করার দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে এই যে, যদি আয়াতটিকে কমন ওহীর দিকে অর্থ করা হয়, তাহলে প্রমাণ হয় যে, ওহী ব্যতীত কোন রসূল নেই। সে ক্ষেত্রে উক্ত আয়াতটি, সূরা মায়েদার ১৯নং আয়াতের পরিপন্থি হয়। কারণ এই আয়াতের বলা হয়েছে দুই নবীর মধ্যবর্তী ফাতারাতি পিরিয়ডে যখন ওহী বিরতি ছিল তখনও রসূল ছিল। এরা ছিল ওহী ব্যতীত রসূল। কারণ ঈসা (আ.) এর পর থেকেই মোহাম্মদ (সা.) এর পূর্ব পর্যন্ত এই পাঁচশত বৎসর কোন ওহী ছিল না। অথচ এখানে রসূল ছিল। এটাই সূরা মায়েদার ১৯নং আয়াতে ইঙ্গিত আসছে। কাজেই যদি কেহ সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতটি এমনভাবে অর্থ করে যে, ওহী ব্যতীত কোন রসূল ছিল না। সেক্ষেত্রে উক্ত আয়াতের সাথে সূরা মায়েদার ১৯নং আয়াতের বিরোধ হবে বিধায় সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতটিকে কমন ওহীর দিকে অর্থ না করে বরং আয়াতের প্রকৃত যে উদ্দেশ্য, তোমার পূর্বে এমন অনেক রসূল পাঠিয়েছি যারা ওহী ব্যতীত রসূল। তাহলে উক্ত আয়াতটি পবিত্র কোরানের কোন আয়াতের সাথে পরস্পর বিরোধী হবে না এটা নিশ্চিত। তাছাড়াও উক্ত আয়াতটি কমন ওহীর দিকে অর্থ না করার তৃতীয় কারণ হচ্ছে এই যে, পূর্বে নাযিলকৃত ওহীকে বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে (সূরা বাকারায় আয়াত নং-৪)। বিধায় একই ওহী বারবার কিংবা প্রত্যেক নবীর কাছে নাযিল হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না বরং একই ওহী প্রত্যেক রসূল প্রচার করতে পারবে এতে কোন সন্দেহ নেই বিধায় সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতে যে সকল রসূলের কাছে কোন ওহী নাযিল হয়নি তাহারা পূর্বে নাযিলকৃত ওহীগুলিকে বিশ্বাস করে বারবার প্রচার করেছে তাহাই বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে পূর্বে নাযিলকৃত ওহী, ‘আমি ছাড়া কোন ইলাহা নেই অতএব তোমরা আমার ইবাদত করো’ সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতের অর্থ এটাই। তার পরেও সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতটিকে কমন ওহির দিকে অর্থ না করার প্রকৃত কারণ হচ্ছে এই যে, আরবী ব্যাকরণ থেকে জানা যায় বিশেষ্যের আগে ما (মা) শব্দ আসলে অর্থ হয় কী? যেমন مااسمك তোমার নাম কী? আর যখন একই বাক্যে ما (মা) এবং الا )ইল্লা) শব্দ আসে তখন সেটা না সূচক প্রশ্নবোধক হয়। এই ধরণের م (মা) কে م وصله মা-মাওচুলা বলে। যেমন ওয়া মা মুহাম্মাদিন ইল্লা রাসুলান। অর্থ মুহাম্মদ কী রসূল ব্যতীত নহে? (সুরা ইমরান ১৪৪) ওয়া মা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন। অর্থ আমি কি তোমাকে পাঠাইনি জগতের জন্য রহমত স্বরূপ অন্যকে ব্যতিত? (আম্বিয়া-১০৭)। এই আয়াতে মা এবং ইল্লা শব্দ এসেছে বিধায় বাক্যের প্রথম অংশে না সূচক প্রশ্নবোধক অর্থ ব্যবহৃত হবে এবং পরের অংশে ইল্লা শব্দের অর্থ বহাল রেখে যে অর্থ আসে সে অর্থে আয়াতটিকে অর্থ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আয়াতটির সরল অর্থ হয় আমি একমাত্র তোমাকে পাঠিয়েছি জগতের জন্য রহমত স্বরূপ। যেমন উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আমি কি তোমার কাছে পাঠাইনি ছাত্রদের মধ্য থেকে এমন অনেক ছাত্র যারা ছিল কিতাব ব্যতিত? এক্ষেত্রে যেভাবেই অর্থ করি না কেন, এর প্রকৃত অর্থটা হবে এরকম-তোমার কাছে কিতাব ব্যতিত কিছু ছাত্র পাঠিয়েছি, এর বাইরে অর্থ করলে বাক্যের অর্থ বিপরীত হবে। সেক্ষেত্রে যদি কেহ প্রথম অংশের প্রশ্নবোধকটা উঠিয়ে দিয়ে অর্থ করে তখন অর্থ কিন্তু পরিবর্তন হয়ে বিপরীত দিকে চলে যায়। যেমন আমি তোমার কাছে কিতাব ব্যতিত কোন ছাত্র পাঠাইনি। বা আমি পাঠাইনি কোন ছাত্র কিতাব ব্যতিত। এখানে প্রশ্নবোধক শব্দ উঠিয়ে দেওয়ায় বাক্যের অর্থ বিপরীত হয়ে গেল। যেহেতু চিঠিতে প্রশ্নবোধক এসেছে আর সেক্ষেত্রে প্রশ্নবোধক বাদ দিলে যদি প্রকৃত অর্থ বিপরীত দিকে হয় তাহলে কোন অবস্থায় উক্ত বাক্যে প্রশ্নবোধক শব্দ বাদ দেওয়া যাবে না। ঠিক তদ্রুপ সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতে এসেছে ‘ওযা মা আরসালনা মিন কাবলিকা মিনার রাসুলি ইল্লা নু ওহি ইলাইহি। অর্থ আমি কি পাঠাইনি, তোমার পূর্বে রসূলদের মধ্য থেকে এমন অনেক রসূলকে, যারা ছিল ওহি ব্যতিত? এখন যদি কেহ প্রশ্নবোধকটা উঠিয়ে দেয় তাহলে অর্থটা এর বিপরীত হবে। যেমন আমি পাঠাইনি তোমার পূর্বে রসূলদের মধ্য থেকে এমন রসূল যারা ছিল ওহি ব্যতিত। তাহলে কিন্তু আল্লার কথার বিপরীত অর্থ হবে। আর সেক্ষেত্রে আয়াতের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। আয়াতের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হলে তার জন্য কঠিন শাস্তি (সূরা হজ্ব-৫১)। কাজেই সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতটিকে প্রশ্নবোধক রেখেই অর্থ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আয়াতের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে না। তাই আয়াতটির প্রকৃত অর্থ হবে ‘আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে রসূলদের মধ্য থেকে এমন অনেক রসূলকে যারা ছিল ওহি ব্যতিত’। অর্থাৎ ওহি ব্যতিতও অনেক রসূল ছিল। আরেকটি আয়াত যেমন সূরা হজ্বের ৫২ নং আয়াতে এসেছেÑওমা আরসালনা মিন কাবলিকা মিনার রাসুলি লা নাবি ইল্লা ইজা তামান্নাই। …অর্থ আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে রসূলদের মধ্য থেকে এমন অনেক রসূল যারা নবী নহে। উক্ত দুই আয়াতে প্রশ্নবোধক শব্দ বাদ দিয়ে কোন অর্থ গ্রহণযোগ্য নহে। কারণ ওমা আরসালনা মিন কাবলিকা মিনার রাসুলি শব্দ দিয়ে রসূলদের মধ্যে দুই ধরণের রসূলের কথা বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ রসূলদের মধ্যে পার্থক্য আছে (সুরা বাকারা-২৫৩)। পবিত্র কোরআনে এমন কোন আয়াত নেই যে, মা আরসালনা মিন কাবলিকা মিনান নাবীই। অর্থাৎ আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে নবীদের মধ্য থেকে এমন অনেক নবী? নবীদের মধ্য থেকে এমন অনেক নবী আছে, এমন কথা কোরআনে আসে নাই। কারণ নবীদের ভিতরে কোন পার্থক্য নাই (বাকারা-১৩৬)। সকল নবীই ওহি প্রাপ্ত বা কিতাব প্রাপ্ত। (ইমরান-৮১) (নেসা-১৬৩)। পক্ষান্তরে রসূলদের মধ্য থেকে এমন অনেক রসূল কথা কোরআনে আসছে। এতে প্রমাণ হয় রসূল দুই ধরনের। এক ধরনের রসূল ওহি প্রাপ্ত (মায়েদা-৬৭) আর অপর রসূল ওহি ব্যতীত (আম্বিয়া-২৫)। আর এই দুই ধরনের রসূলের মধ্য থেকে ওহি প্রাপ্ত রসুলের নাম কোরআনে এসেছে, আর ওহি ব্যতিত রসুলের নাম কোরআনে আসে নাই। (নেসা-১৬৪)। কাজেই উপরোক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতটিকে কমন ওহির আয়াত হিসাবে অর্থ করা যাবে না কিংবা ওহি ব্যতিত কোন রসূল নেই এমন ভাবে অর্থ করা যাবে না। করলে সেটা অন্য আয়াতের সাথে পরস্পর বিরোধী হবে বিধায় উক্ত আয়াতের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে। তাছাড়া যদি কেহ উক্ত আয়াতের অর্থ অন্যভাবে করে আয়াতের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি হল জাহান্নাম (সূরা হজ্ব ৫১)। কাজেই সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতটিকে কমন ওহী নাযিলের দিকে অর্থ করা থেকে বিরত থাকাই উত্তম। কাজেই সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতটির প্রকৃত উদ্দেশ্য ওহী ব্যতীত অনেক রসূল ছিল। আর সম্যকগুরুগণই হচ্ছে ওহী ব্যতীত রসূল। অনেকে আছে যারা ওহীপ্রাপ্ত রসূলগণকে বিশ্বাস করে আর ওহী ব্যতীত রসূলগণকে অস্বীকার করে। এদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন উহারা কতক রসূলকে বিশ্বাস করে আর কতক রসূলকে অস্বীকার করেন। উহারা এই বিষয়ের মধ্যে একটা মধ্যবর্তী পথ অবলম্বন করতে চায় (সূরা নেসা ১৫০)। মূলত উহারাও কাফের বলে গণ্য হয় (সূরা নেসা ১৫১)। উপরোক্ত আলোচনায় প্রমাণিত হয় যে, রসূল হচ্ছে দুই প্রকার। একটা হচ্ছে ওহীপ্রাপ্ত রসূল আর অপরটি হচ্ছে ওহী ব্যতীত রসূল। এইজন্য রসূলের মধ্যে পার্থক্য আছে (বাকারা- ২৫৩)। আর সেই পার্থক্যটা হচ্ছে এই যে, একটি হচ্ছে ওহীপ্রাপ্ত রসূল (মায়েদা-৬৭) অপরটি হচ্ছে ওহী ব্যতিত রসূল (ইমরান-৮১) (সূরা আম্বিয়া-২৫)। যে রসূলটা নবীর কাছ থেকে রেসালতের মাধ্যমে আসছে। (ইমরান-৮১)। তিনি ওহী ব্যতীত রসূল। এখানে উল্লেখ্য যে, আল্লাহ যখন সরাসরি নবীর কাছে ওহী নাযিল করেন তখন তিনি শয়তান থেকে ওহীকে নিজে হেফাজত করে থাকেন (সূরা হিযর-১৭)। কিন্তু যে সকল রসূল, নবী নহেন, নবীর কাছ থেকে রিসালত প্রাপ্ত। সেই সকল রসূলগণ, সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াত অনুসারে পূর্বের নবী এবং রসূলগণের কিতাবের আয়াত প্রচার করতে গেলে তখন শয়তান তাদের অন্তরে কিছু প্রক্ষিপ্ত করে আল্লাহর আয়াতকে ব্যর্থ করার জন্য কিন্তু আল্লাহ নিজেই তখন তাদের অন্তর থেকে তাহা বিদুরিত করে দিয়ে আল্লাহর আয়াতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, আমি কি পাঠাইনি তোমার পূর্বে এমন অনেক রসূল, যারা নবী নহে, উহারা যখন (পুর্বে নবীদের কিতাব থেকে আয়াত প্রচারের) আকাঙ্খা করিত, তখন শয়তান তাদের অন্তরে কিছু প্রক্ষিপ্ত করিত, তখন শয়তান তাদের অন্তরে যাহা প্রক্ষিপ্ত করিয়াছিল, আল্লাহ তাহা বিদুরিত করিয়া আল্লাহর আয়াতকে সু-প্রতিষ্ঠিত রাখে। আল্লাহ প্রজ্ঞাময় এবং সর্বজ্ঞ। (হজ্ব-৫২)। এখানে উল্লেখ্য যে, যারা রসূল নহে এমনসব লোক যখন কোরআন প্রচার করতে যায়, তখনই তাদের অন্তরে শয়তান কিছু প্রক্ষিপ্ত করে মানুষের মধ্যে আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরী করে। তখনই কুরআনের এক আয়াতের অনুবাদ অন্য আয়াতের অনুবাদের সহিত পরিপন্থী হয়ে যায়। কিন্তু জেনে রাখবেন, কুরআনের মধ্যে পরস্পর বিরোধী কোন আয়াত নেই। এই জন্য কুরআন শিক্ষার জন্য আল্লাহ বলেন, রাসূল তোমাদিগকে কুরআন শিক্ষা দিবেন। (সূরা বাকারা-১৫১) (সূরা ইমরান-১৬৪)। এজন্য আল্লাহ বলেন, প্রত্যেক গ্রামে বা জনপদে আমার আয়াত আবৃত্তি করার জন্য রসূল পাঠাই (কাসাস-৫৯)। অনেকেই বলেন, প্রত্যেক রাসূলই কিতাবপ্রাপ্ত। যাহা উপরোক্ত আলোচনার পরিপন্থী কথা। এই মর্মে তারা পবিত্র কুরআনের সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতটি এই ভাবে অর্থ করে যে, তোমার পূর্বে যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি তারা সকলেই ওহীপ্রাপ্ত। কিন্তু না, এই আয়াতে এ কথা বলা হয় নাই (বি: দ্র: পূর্বে এই আয়াতের শব্দ বিশ্লেষণ করা হয়েছে সেখানে বিস্তারিত কেধুন) প্রত্যেক রাসূল ওহী প্রাপ্ত নহে। প্রত্যেক রসূল ওহীপ্রাপ্ত, এই আয়াতে এটা বলা হয়নি, কারণ এমনটি বললে এই আয়াতটি অর্থাৎ (২১ : ২৫) আয়াতটি সূরা ইমরানের ৮১নং আয়াতের এবং সূরা হজ্বের ৫২নং আয়াতের সাথে পরস্পর বিরোধি বলে গণ্য হয়। কারণ প্রত্যেক রসূল ওহী প্রাপ্ত হলে প্রত্যেক রসূল কিতাব প্রাপ্ত হতো। কিন্তু আয়াতে বলেছে, প্রত্যেক নবী কিতাব প্রাপ্ত। (সুরা ইমরান ৮১) আর ওহী কিতাবের অংশ, ওহী ব্যতিত কোন কিতাব নেই। বিধায় এই আয়াত অনুসারে প্রত্যেক নবী ওহী প্রাপ্ত। যারা ওহী প্রাপ্ত তাদের কথা বলাই যদি সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতে উদ্দেশ্য হতো, তাহলে আয়াতটিতে বলা হতো, তোমার পূর্বে আমি ওহী ব্যতীত কোন নবী প্রেরণ করি নাই। কিংবা তোমার পূর্বে আমি যেসকল নবী পাঠিয়েছি তারা সকলে ওহী প্রাপ্ত। তাহলে সূরা ইমরানের ৮১নং আয়াতের সাথে সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতটি পরস্পর বিরোধী হইত না। যেহেতু সূরা আম্বিয়ার ২৫ নং আয়াতে নবীর কথা আসে নাই। বরং রাসূল শব্দ এসেছে, তাহলে উক্ত আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে তোমার পূর্বে ওহী ব্যতীত অনেক রসূল ছিল এই কথা ব্যক্ত করেন। এখানে উল্লেখ যে, নবী মোহাম্মদ (স:) এর পূর্বে এবং ঈসা (আ:)-এর পরে অর্থাৎ ঈসা (আ:) এর পরে মোহাম্মদ (স:) এর পূর্বে মাঝখানে এই ৫০০ বৎসর এখানে কোন ওহী ছিল না। অথচ এখানে রসুল ছিল (সূরা মায়েদা-১৯)। আর সেই রসুলগণ ছিল ওহী ব্যতিত রসুল। আর এই ধরনের রসূলগণের নাম কিতাবে উল্লেখ আসে নাই (সুরা নেসা-১৬৪)। আর এই রসূলদের কথায় সূরা আম্বিয়ার ২৫নং আয়াতে বলা হয়েছে। নবীর কাজ ওহী প্রচার করা এমন আয়াত আসে নাই, বরং আয়াতে আসছে রসূলের কাজ হচ্ছে ওহী প্রচার করা। (মায়েদা-৯৯), (মায়েদা-৬৭)। তারপরও যদি কেহ মায়েদার ৬৭ আয়াত দিয়ে প্রমান করতে চায় যে, প্রত্যেক নবীর উপর যেমন ওহী নাযিল হয়েছে তেমনই প্রত্যেক রসূলের উপরও ওহী নাযিল হয়েছে। অর্থাৎ যদি তারা এমনটি বলে যে, প্রত্যেক নবীই ওহী প্রাপ্ত এবং প্রত্যেক রসূল ওহী প্রাপ্ত। অর্থাৎ নবী ও রসূল শব্দটি শুধু ওহীর সাথে সম্পৃক্ত। তাদের কথায় প্রমাণ হয় যে, নবী এবং রসূলের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। নবী ও রসূল একই ব্যক্তি এক পদ, যেটা ওহীর সাথে সর্ম্পক্যযুক্ত। তাদের কথা ঠিক নহে এই জন্য যে, নবী ও রসূল এক পদ নয়। প্রত্যেক নবীই কিতাবপ্রাপ্ত বা অহীপ্রাপ্ত (সূরা ইমরান-৮১)। কিন্তু প্রত্যেক রসুল কিতাবপ্রাপ্ত নহে বিধায় প্রত্যেক রসূল নবী নহে। এই মর্মে আল্লাহ বলেন তোমার পূর্বে আমি কি এমন অনেক রসুল পাঠাইনি যারা নবী নহে (সূরা হজ্জ্ব-৫২)? অর্থাৎ যাহাদের উপর অহী নাযিল হয়নি তাহারা নবী নহে বিধায় প্রত্যেক রসুল অহীপ্রাপ্ত নহে এটা নিশ্চিত। আবার নবী ও রসূলের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে। কারণ নবী ও রসূল একই ব্যক্তি নাও হতে পারে। এটাই বড় পার্থক্য। মর্যাদাগত বা গুণগত পার্থক্যের বিষয়টি এই পুস্তকের ‘নবী ও রসূল এর মধ্যে পার্থক্য’ অধ্যায়ে বিস্তারিত দেখুন। এখানে আমি একটা বিষয়ে বলতে চাই, নবী ও রসূল যখন আলাদা ব্যক্তি তখন নবী ও রসূল এর ভিতরে পার্থক্য আছে প্রমাণিত হয়। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, হে নবী তোমার কাছে যখন একজন রসূল আসবে (ইমরান-৮১) এই আয়াতে অবশ্যই প্রমাণিত হয় যে, নবীর কাছে যে রসূল আসবেন তিনি নিশ্চয়ই নবী নহে, তিনি শুধু রসূল। আবার আল্লাহ বলেন, তোমরা রসূলের আনুগত্য করলে নবীর সঙ্গী হবে (নেসা-৬৯)। এই আয়াতের উল্লেখিত রসূল নিশ্চয়ই নবী নহে, ভিন্ন ব্যক্তি। আবার সুরা হজ্বের ৫২ নং আয়াতে বলা হয়েছে অনেক রসূল আছে যারা নবী নহে। অতএব, নবী এবং রসূলের মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য আছে, আর সেই পার্থক্যটাই হচ্ছে প্রত্যেক নবীর উপরেই কিতাব বা ওহী নাযিল হয়েছে (ইমরান-৮১), (নেসা-১৬৩) এবং প্রত্যেক নবীকেই নবুয়ত দেওয়া হয়েছে। (ইমরান-৭৯)। প্রত্যেক নবীর উপর নবুয়ত, ওহী, কিতাব নাযিল হওয়ার পরে তাকে রেসালত দেওয়া হয়েছে। (জ্বীন-২৩) এজন্য প্রত্যেক নবীই রসূল। কিন্তু প্রত্যেক রসূলই নবী নহে। (হজ্ব-৫২)। নবী এক সময় শেষ হবে (আহযাব-৪০)। কিন্তু ইবলিশকে প্রতিহত করার জন্য রসূল (সূরা নাহল-৩৬) কাজেই ইবলিশ যত দিন জীবিত থাকবে ততোদিন রসূল থাকবে এটা নিশ্চিত। এইজন্য রসূল বিরতিহীন একের পর এক আসবে (মমিন-৪৪)। কাজেই সম্যক গুরুগণই রসূল। তারা কোন বিনিময় গ্রহণ করে না। এই মর্মে আল্লাহ বলেন, যারা কোন বিনিময় গ্রহণ করে না, এবং সঠিক পথে আছে, তুমি তাদের অনুসরণ কর (ইয়াসিন-২১)। বিধায় সম্যক গুরু তথা রসুলগণকেই অনুসরণ ও আনুগত্য করতে হবে। মনে রাখবেন এটাই হচ্ছে পবিত্র কোরআনের বুঝ। আল্লাহ বলেন কোরানের বুঝ যারা অপছন্দ করেন তাদের কর্মফল বিনষ্ট হবে (সূরা মোহাম্মদ-৯)

ঈসা-নবী(সা) আর ইমাম-মাহদি আর আসবে আসবেনা !

ঈসা-নবী(সা) আর আসবেনা ! কখনই না !
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সুরা: মায়িদা-৫/১১৬-১১৯
একটু মনোযোগ দিয়ে বুঝুন ; আপনিও তাহাই বলবেন ???
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ ঠিক্ তাই, শেষ-বিচারের দিনেই
আল্লাহ্ (১১৬ বলবেন হবে)
ঈসা-নবীকে প্রশ্ন করবেন ও
ইসা-নবী উত্তর দিবেন !?
১১৭ তে যা আছে তাতেতো বুঝাযায় যে তিনি আর আসবেন না / আসেন নাই ;?
~~~~~~~~~~~~~~~~
আবার যে আসবেন এইটা মিথ্যা কথা /
‘ খৃষ্টানদের স্টার সান্ডে ‘
হতে প্রচারণা ???
গায়বের খবর রাসুল(সা)
জানতেন না,
হাদীস আলারা পেলেন কই ?
~~~~
ইমাম-মাহদি আসবে যে তাহা
কুরআনের কোথায় আছে ?
এটা ও মিথ্যা প্রচার নয় কি ???
~~~~~~~~~
তাহারা আসবে যে,
কুরআন দিয়া দেখান তো !???
~~~~~~~
কেনো
আল্লাহর নিয়মের বিরুদ্ধে বানানো
কথা বলেন ?
গায়বের খবর আপনি প্রচার করেন কিভাবে ???
রাসুলতো(সা) গায়েব জানতেন না,
7:/188

.

See comments fb link:-

https://m.facebook.com/groups/1805246912824708?view=permalink&id=2126797790669617

নবীর সাথে আয়েশার বিবাহকালিন বয়স

By aryan khan fbfd

নবীর সাথে আয়েশার বিবাহকালিন বয়স
————————————————

নবী মুহাম্মদের (সাঃ) এর সাথে মা আয়েশার (রাঃ) এর বাল্য বিবাহের বিষয়টি ইসলামের কটাক্ষকারীদের কাছে যেমন এক প্রিয় হাতিয়ার তেমনি যুক্তিপ্রবন আধুনিক মনা মুসলিমদের জন্য অস্বস্তির কারন । পক্ষান্তরে নীচু মনা মুসলিমদের জন্য নবীর নামে চালান দেওয়া এই অনৈতিক কাজ তাদের কুকর্মের লাইসেন্স স্বরূপ । সহিহ হাদিসের দোহাই দিয়ে বর্নিত হয়েছে যে হযরত আয়েশার বছর যখন ৬/৭ তখন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে বিবাহ করেন এবং ৯ বছরে আয়েশাকে গৃহে নিয়ে যান । তখন নবীর বয়স ছিল ৫৪ বৎসর ।

৫০ ঊর্ধ কোন পুরুষের সাথে আপনার ৬/৭ বৎসরের মেয়ে বা বোনকে কি বিবাহ দিবেন ? আমার বিশ্বাস ১০০% সুশীল মনের কাছ থেকে উত্তর আসবে ‘কক্ষন না ! ’ । ৬/৭/৯ বৎসরের মেয়ে না শারিরীক না মানসিক ভাবে কোন পুরুষের সাথে সংসার করতে সক্ষম । এই বয়স তাদের খেলার বয়স , স্বপ্ন দেখার বয়স , পৃথিবীকে প্রত্যহ নতুন করে চেনা ও জানার বয়স ।

যে কোরআন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌছে দিয়েছিলেন ও আজীবন নিজে মেনে পৃথিবীর সামনে নজির স্থাপন করেছিলেন সেই কোরআন বাল্য বিবাহের স্মপূর্ন বিপক্ষে মতামত দিয়েছে । মহান আল্লাহ্ কোরানে এমন মেয়েদের বিবাহ যোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন যারা পূর্ন বয়স্ক , বুদ্ধি সম্মত ও তাদের পারিপার্শিক অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল । Human Physiology অনুসারে এই সমস্ত বিচক্ষনতা একজন ৬-৯ বছরের মেয়ের ভেতরে থাকার কোন প্রশ্নই উঠেনা ।

বাল্য বিবাহের বিপক্ষে কোরআন থেকে প্রমাণ ঃ

১- কোরান নির্দেশ দেয় যে, যে নারী দ্বীনের মূলনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখে তাকে বিবাহের প্রস্তাব দেওয়া যাবে । ( কুরআন , ৫.৫, ৪.২৫, ৩৩.৪৯, ২৪.৩২ )

দ্বীনের মূল নীতি জানা ও মানার জন্য একজন নারীকে দ্বীন সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখতে হবে । শুধু কোরআনের ২.১৭৭ আয়াত দ্বীনের ১০ টি আর্টিকেলের উল্লেখ রয়েছে , কোরআনের আরোও গভীরে গেলে দ্বীনের আরোও জটিল বিষয় গুলো সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া যায় । ৬/৯ বছরের একজন মেয়ের অপেক্ষা এই পর্যায়ের জ্ঞান রাখা ও বোঝা অসম্ভব । একমাত্র পূর্নমনা ও বুদ্ধিমতী মেয়েরাই এই দ্বীনি জ্ঞান বোঝা ও মানার যোগ্যতা রাখে ।

২- কোরআনের ৪:৬ এ বলা হয়েছে যে যাদের কাছে এতিম মেয়েরা পালিত হয় তারা যেন সেই সমস্ত মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থা তখনই করে যখন তারা তাদের কাছে গচ্ছিত সম্পদের হিসাব নিজেই বুঝে নিতে পারার মতো বুদ্ধিমতী হয় । সম্পত্তির হিসাব ও টাকা পয়সার লেনদেন করা বাচ্চাদের কাজ হয় , তার জন্য এক জনকে যথেষ্ট বয়ঃপ্রাপ্ত হতে হয় ।

৩- কুরআনের ৪:৪ এবং ২:২৩৭ এ বলা হয়েছে যে বিবাহের শর্ত মোহরানার লেনদেন সম্পর্কিত জটিলতা সৃষ্টী হলে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে বসে এই বিষয়ে সমঝোতা মূলক সিদ্ধান্তে পৌছাবে । ৬/৯ বছরএর একটা মেয়ের পক্ষে মোহরানার হিসাব নিকাষ তো দুরের কথা , মোহরানা যে কি তার বিন্দুমাত্র জ্ঞান রাখাও অসম্ভব ।

৪- বিবাহোত্তর তালাক সম্পর্কিত জটিলতার ক্ষেত্রে একজন স্ত্রীকে সাহসিকতার সাথে তা মোকাবেলা করার কথা কুরআনের ৪:৩৫, ১২৮ ও ১২৯ আয়াতে বলা হয়েছে । প্রয়োজনে স্ত্রীরা তাদের অভিবাবক বা উকিল কে নিয়োগ করে তার স্বামীর সাথে চলমান সংকটের সুরাহা করতে পারে বলে উক্ত আয়াতগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে । এর জন্য একটি নারীর Maturity ও Adultness থাকা বাঞ্ছনীয় ।

৫- নবীর স্ত্রী সংক্রান্ত বেশ কিছু আয়াত কোরআনে পাওয়া যায় যার একটিতেও কোন ইংগিত মিলেনা যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর কোন বালিকা স্ত্রী ছিল । নিচে এরূপ কয়েকটি আয়াত তুলে ধরা হলঃ

ক) “হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই।” (৩৩.২৮)

নোটঃ শিশু আয়েশার কোন পার্থিব বাসনা মহান আল্লাহকে রাগান্বিত করতে পারে ? উপরের আয়াত প্রমাণ করে যে নবীর পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন এবং তারা পার্থিব জীবনে কোনটি ঠিক ও কোনটি বেঠিক তা বোঝার মতো সামর্থ তাদের ছিল ।

খ) “হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ।” (৩৩.৩০)

নোটঃ এই আয়াত নাযিলের সময় নবী পত্নী আয়েশার বয়স খুব বেশী হলে ১২ বছর হতে পারে । ১২ বছরের কিশোরীর জন্য দ্বীগুন শাস্তি ?? মহান আল্লাহর নীতি হচ্ছে তিনি শুধু তাদেরই শাস্তি দেন যারা জেনে শুনে বুঝে ভুল করে । ১৮ বছরের পূর্বে একজন মানুষের এ চেতনা আসেনা ।

গ) “হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা খাওয়ার জন্য আহার্য রন্ধনের অপেক্ষা না করে নবীর গৃহে প্রবেশ করো না। তবে তোমরা আহুত হলে প্রবেশ করো, তবে অতঃপর খাওয়া শেষে আপনা আপনি চলে যেয়ো, কথাবার্তায় মশগুল হয়ে যেয়ো না। নিশ্চয় এটা নবীর জন্য কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের কাছে সংকোচ বোধ করেন; কিন্তু আল্লাহ সত্যকথা বলতে সংকোচ করেন না। তোমরা তাঁর পত্নীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্যে এবং তাঁদের অন্তরের জন্যে অধিকতর পবিত্রতার কারণ। আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর ওফাতের পর তাঁর পত্নীগণকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়। আল্লাহর কাছে এটা গুরুতর অপরাধ।” (৩৩.৫৩)

নোটঃ কুরআন মতে নবী পত্নীরা বয়ঃপ্রাপ্ত তাই তাদের সাথে পর পুরুষের সাথে যোগাযোগে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে ।

ঘ) “হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।” (৩৩.৫৯)

নোটঃ এই আয়াত আবারো প্রমাণ করে যে নবী পত্নীরা সবাই বয়ঃপ্রাপ্ত ছিলেন ।

আমার বিশ্বাস কোরআনে এই সম্পর্কে উপরের আয়াতগুলো ছাড়াও আরো বহু আয়াত আছে যার দ্বারা আরো দৃঢ়তার সাথে প্রমাণ করা যাবে যে বিবাহ শুধু মাত্র বয়ঃপ্রাপ্ত নারীদের সাথেই সম্পাদিত হতে পারে , নতুবা নয় । মহান আল্লাহ্‌ কুরআনে নিশ্চিত করেছেন যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কুরআনে নাযিল্কৃত সব হুকুম নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছেন (কুরআন, ৬.৫০,৭.২০৩, ১০.১৫, ৪৬.৯) , তাই নবীর ২৫০ বছর পর লিখিত হাদিসে নবীর সাথে মা আয়েশার বাল্য বিবাহ যে এক নিরেট মিথ্যাচার তা সহজেই অনুমেয় । নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কোরআনের বিরুদ্ধে কোন কাজ করবেন এবং মহান আল্লাহ্‌ তাতে সাঁই দিবেন তা অবান্তর ।

যদিও কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ যা বলেছেন ও দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তাই মুমিনদের জন্য যথেষ্ট , তার পরেও বিশেষত নবীর সাথে মা আয়েশার বিবাহের বিষয়ে বহু উৎস থেকে দেখা যায় যে মা আয়েশার বয়স ৬/৯ এর চেয়ে অনেক বেশী ছিল। নিচে সংক্ষেপে এই উৎস গুলো থেকে তিনটি তুলে ধরা হলঃ

১- “আবু বকরের সব সন্তানেরা নবীর নবুওয়তের পূর্বে জন্ম নিয়েছে ” (Tarikhu’l-umam wa’l-mamlu’k, Al-Tabari (died 922), Vol. 4, p. 50, Arabic, Dara’l-fikr, Beirut, 1979)

নবী নবুয়ত পান ৬১০ সালে আর নবীর সাথে আয়েশা থাকা শুরু করেন ৬২৪ সালে । উপরের তথ্য অনুসারে আয়েশা ৬১০ সালের পূর্বে জন্ম নেন । তার মানে আয়েশার (রাঃ) বয়স কম সে কম ১৪ ছিল যখন নবী উনাকে তার ঘরে নিয়ে যান ।

২- “ উহুদের যুদ্ধে ১৫ বছরের নিচে কাউকে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি ” ( সহিহ বুখারি)

“ নবী পত্নী আয়েশা উহুদের যুদ্ধে অংশ নেন ” ( সহিহ বুখারি)

উহুদের যুদ্ধ ৬২৪/৬২৫ সালে সংঘটিত হয় । উপরের বর্ননা অনুসারে আয়েশার বয়স সেই সময়ে কম সে কম ১৫ ছিল । এই সাল থেকে নবীর সাথে বিবি আয়েশা এক সাথে থাকা শুরু করেন ।

৩- “ আবু বকরের জৈষ্ঠ কন্যা আসমা আয়েশার চেয়ে ১০ বছরের বড় ছিল ” (Al-Bidayah wa’l-nihayah, Ibn Kathir, Vol. 8, p. 371, Dar al-fikr al-`arabi, Al-jizah, 1933)

“ আসমা ১০০ বছরে ৭৪/৭৫ হিজরিতে মৃত্যুবরন করেন ” (Taqribu’l-tehzib, Ibn Hajar Al-Asqalani, Pg 654, Arabic, Bab fi’l-nisa’, al-harfu’l-alif, Lucknow)

উপরের তথ্য অনুসারে ৭৪ হিজরিতে আয়েশার বড় বোন আসমার বয়স ছিল ১০০ বছর ; আয়েশা তার চেয়ে ১০ বছরের ছোট হওয়ার তার বয়স ছিল ৯০ বছর । তাহলে ১ম হিজরিতে আয়েশার বয়স ছিল ৯০-৭৪= ১৬ বছর ।
অতএব নবী যখন আয়েশা নিজের গৃহে নিয়ে যান তখন আয়েশার বয়স ছিল ১৭ ।

উপরের ৩ টি রেফারেন্স থেকে আমরা এই তথ্য পাই যে যখন নবী মা আয়েশার (রাঃ) এর সাথে এক সাথে থাকা শুরু করেন তখন মা আয়েশার বয়স সীমা ১৪ থেকে ১৭ এর ভেতরে ছিল ।

হাদীস মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) সকল নবীর নবী কিন্তু কোরআন মতে নয়।

Fbfd= হাদীস মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) সকল নবীর নবী কিন্তু কোরআন মতে নয়।
তর্কটি অতি পুরনো! তবে অবশ্যই মৌলিক। কোরআন ও শরিয়ার সাথে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অনেকটাই মতনৈক্য রয়েছে তবুও প্রকৃত আসল তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা কেউ করেননী তাও নয়, তবে এই তথ্য সন্ধানে কেউ বেশী অগ্রসর হয়নি নানান কারনে। এই প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে গোড়াহ মৌলবাদী জ্ঞানহীন সুনামক্ষ্যত আলেম ওলামাদের ভয় করেছে বেশীর ভাগ মানুষ, গবেষক, লেখক, কলামিষ্ট। এই ধরনের প্রশ্ন করার জন্য কিংবা লেখার জন্য যখন’ই কেউ এগিয়ে এসেছে একটু সাহস করে! ঠিক তখনি অনেকেই লাঞ্চিত হয়েছেন, আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। কারো কারো বাড়ী ঘর লাইব্রেরী পুড়ানো হয়েছে। অনেকের জীবনের অভিশাপ হয়েছে এই ধরনের প্রশ্ন করার জন্য। যে যেই ধর্মের হোকনা কেন ধর্ম বিষয় নিয়ে জানতে ইচ্ছা হতেই পারে সেইটাকে খর্ব না করে বিষয়টি কে খারাপ অর্থে না দেখে গণতন্ত্রের চর্চায় মৌলিক অর্থে দাড় করিয়ে প্রকৃত সদুত্তর দেয়াই হচ্ছে স্ব স্ব ধর্মের আলেম ওলামাদের কাজ।
অনেক আলেম ওলামাদের বলতে শুনেছি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সকল নবীর নবী, জানিনা কোরআন বাদ দিয়ে তারা এটা কিসের ভিত্তিতে এত জোর দিয়ে বলেন। তবে যারা ধর্মের মূল হোতা, ধারক বাহক তারা দু’ একটি কথা বলে থাকেন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে হাদীস থেকে। অবশ্য কোরআনের পরেই সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলিমদের কাছে স্থান করে নিয়েছে মানুষের লেখা শরীয়া সুন্নাহ নামে খ্যাত হাদীস গ্রন্থ গুলি। হাদীস রাইটাররা যে কোন দরবেশ, অলি, কুতুব, গাউসুল আযম কিংবা পীর ছিলেন না, তাদের উপর {আল্লাহ} প্রদত্ত কোন অহিও হতনা তা সকলেরী জানা; সেই কারনে হাদীস সংগ্রহে ভুল হতেই পারে; আর মানুষ কোনক্রমেই ভুলের উর্দ্ধে নয়। কোরআন কেবলী অন্য আর রাসুলের মত রাসুল হিসাবে এবং সতর্ককারী হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। একটু জানার চেষ্টা করি কোরআনের আলোতে।
সূরা ইমরান-৩:১৪৪

وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن
يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ

আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন।
সূলা কাহফ-১৮:৫৬

وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَيُجَادِلُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ وَاتَّخَذُوا آيَاتِي وَمَا أُنذِرُوا هُزُوًا

আমি রাসূলগনকে সুসংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শন কারীরূপেই প্রেরণ করি এবং কাফেররাই মিথ্যা অবলম্বনে বিতর্ক করে, তা দ্বারা সত্যকে ব্যর্থ করে দেয়ার উদ্দেশে এবং তারা আমার নিদর্শনাবলীও যদ্বারা তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করা হয়, সেগুলোকে ঠাট্টারূপে গ্রহণ করেছে।
সূরা কাহফ-১৮:১১০

قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا

বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।
সূরা বনী ইসরাঈল-১৭:১০৫

وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ نَزَلَ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا

আমি সত্যসহ এ কোরআন নাযিল করেছি এবং সত্য সহ এটা নাযিল হয়েছে। আমি তো আপনাকে শুধু সুসংবাদাতা ও ভয়প্রদর্শক করেই প্রেরণ করেছি।
সূরা হাজ্জ্ব-২২:৪৯

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।
সূরা আনকাবুত-২৯:৫০

الْآيَاتُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
সূরা আহযাব-৩৩:৪০-৪৫

مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمً

মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল, নবীদের শীল। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرً

হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।
সূরা ফাতির-৩৫:২৩-২৪

إِنْ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ

আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী।
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ

আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।
সূরা ইয়াসীন-৩৬:৩৬

لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّا أُنذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ

যাতে আপনি এমন এক জাতিকে সতর্ক করেন, যাদের পূর্ব পুরুষগণকেও সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা গাফেল।
সূরা ছোয়াদ-৩৮:৪

وَعَجِبُوا أَن جَاءهُم مُّنذِرٌ مِّنْهُمْ وَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا سَاحِرٌ كَذَّابٌ

তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী যাদুকর।
সূরা ক্বাফ-৫০:২

بَلْ عَجِبُوا أَن جَاءهُمْ مُنذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا شَيْءٌ عَجِيبٌ

বরং তারা তাদের মধ্য থেকেই একজন ভয় প্রদর্শনকারী আগমন করেছে দেখে বিস্ময় বোধ করে। অতঃপর কাফেররা বলেঃ এটা আশ্চর্যের ব্যাপার।
সূরা আয-যারিয়াত-৫১:৫১

وَلَا تَجْعَلُوا مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

তোমরা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্য সাব্যস্ত করো না। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
সূরা আল মুলক-৬৭:২৬

قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।
সূরা হা-মীম সেজদাহ-৪১:৪৩

مَا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ

আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে ক্ষমা এবং রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
সূরা আহক্বাফ-৪৬:৯

قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, আমি তো কোন নতুন রসূল নই। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই।
সূরা নাহল-১৬:৩৫

وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ لَوْ شَاء اللّهُ مَا عَبَدْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ نَّحْنُ وَلا آبَاؤُنَا وَلاَ حَرَّمْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاغُ الْمُبِينُ

মুশরিকরা বললঃ যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমরা তাঁকে ছাড়া কারও এবাদত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরাও করত না এবং তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোন বস্তুই আমরা হারাম করতাম না। তাদের পূর্ববর্তীরা এমনই করেছে। রাসূলের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুস্পষ্ট বাণী পৌছিয়ে দেয়া।
সূরা আনকাবুত-২৯:১৮

وَإِن تُكَذِّبُوا فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌ مِّن قَبْلِكُمْ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ

তোমরা যদি মিথ্যাবাদী বল, তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যাবাদী বলেছে। স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌছে দেয়াই তো রসূলের দায়িত্ব।
সূরা আশ-শুরা-৪২:৭

وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ

এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

====================================

৫:৯২

৬৪:১২

রাসূলের আদর্শ উত্তম আদর্শ।

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।(৩৩:২১)
রাসূলের আদর্শ হচ্ছে কোরআন অনুসরণ করা। মাঝে মধ্যে তার ভুলও হয়েছে (৩৩:৩৭; ৬৬:১; ৮০:৮-১১) তে কিন্তু সে কোরআন অনুযায়ী নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছে। আমাদের আদর্শও হবে কোরআন অনুসরণ করা। আমাদের ভুলগুলোকে কোরআনের আলোকে সংশোধন করা।

অন্যান্য রাসূলের মত মুহাম্মাদ (সাঃ) রাসূলের জীবনাদর্শের অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত কোরআনের বর্নিত আছে। এটা মনে করার কারন নেই রাসূলের জীবনাদর্শের জন্য আলাদা গ্রন্থের দরকার। কোরআন বলেছে নবী ইব্রাহিম ও তার সাথীদের মধ্যেও আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে। (৬০:৪,৬)
রাসূলের মান্যতা কি কোরআনের বাইরে?

৭:২-৩ থেকে দেখলাম। কোরআনের বাইরে অন্য কোনো অবিভাবকের অনুসরণ করা যাবে না। রাসূলের শিক্ষা যদি কোরআনের বাইরে হয় তাহলে রাসূলকেও মান্য করা যাবে না ৭:২-৩ অনুযায়ী। আবার অন্য আয়াতে আছে {আল্লাহকে} অনুসরণ কর, রাসুলকে অনুসরণ কর। এই নির্দেশ যদি পালন করি (রাসূলের শিক্ষা কোরআনের বাইরে ধরে) তাহলে ৭:২-৩ আয়াত মান্য করা হবে না? কিন্তু কোরআনে কোনো পরস্পর বিরুধী বক্তব্য নেই। (৪:৮২)

যদি শুধুমাত্র কোরআন মানাই রাসূলের শিক্ষা হয় তাহলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। অর্থাৎ কোরআনই হচ্ছে রাসূলকে মান্য করা।
অনেকে না বুঝেই এরকম কটা আয়াত দিয়ে বলে আল্লাহ কে মান্য করো ও রাসূল কে মান্যতা করো। আল্লাহ কে মান্য করো ও রাসুল কে অনুগত্য করো।
অবশ্যই রাসুল কে মান্যতা করতেই হবে কারণ তাহাকে আল্লাহ আল্লাহ’র প্রতিনিধি আমাদের জন্য করেছন। রাসাল(সাঃ)কি ওহী (কোরআন) ব্যতীত অন্য কোন প্রত্যাদেশ প্রচারের দ্বায়িত্ব পেয়েছিলেন?

আর আল্লাহ কি তাঁর বার্তা নিজে আপনার আমার সকল মানুষের কানে কানে এসে বলে যাবেন নাকি একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করবেন?

অনেকের কথাবার্তায় বুঝা যায় তাদের কাছেও আল্লাহ অহীহ দিলোনা কেন?

==================================

আল্লাহ কোরআনে কেবলী সতর্ককারী হিসাবেই মুহাম্মাদ (সাঃ) কে সম্বর্ধন করেছেন তা’ উল্লেখিত সূরা ও আয়াত থেকে জানলাম। এমন অনেক আরও আয়াত আছে এই ধরনের । অনেকই বলবে কোরআনে নাই তবে হাদীসে আছে। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে হাদীস ছাড়া কোরআন অপূর্ণ কিতাব? নিশ্চয় নয়। আল্লাহ কোরআনের সূরা নমল ২৭:৭৫ আয়অতে বলেছেনঃ

وَمَا مِنْ غَائِبَةٍ فِي السَّمَاء وَالْأَرْضِ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ

আকাশে ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন ভেদ নেই, যা সু’স্পষ্ট কিতাবে না আছে।
আল্লাহ’র এই উল্লেখিত আয়াত গুলো যদি আমরা বিশ্বাস করি তাহলে আয়াত মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) কেবলী অন্য রাসুলের মত-ই একজন সতর্ককারী মাত্র। কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করলে মানবেন, আর যদি আয়াত গুলো ঠিক নয় মনে করেন তাহলে সঠিক যুক্তি দিয়ে বলবেন এই আশা কির। যুক্তি হতে হবে কেবল কোরআন থেকে।

Source link comments:-

fbfd.. https://m.facebook.com/groups/1805246912824708?view=permalink&id=1917522634930468

হাদীস মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) সকল নবীর নবী কিন্তু কোরআন মতে নয়

Nahian Ahmed 

(fb limit touch no fd rqt) 

হাদীস মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) সকল নবীর নবী কিন্তু কোরআন মতে নয়।
তর্কটি অতি পুরনো! তবে অবশ্যই মৌলিক। কোরআন ও শরিয়ার সাথে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অনেকটাই মতনৈক্য রয়েছে তবুও প্রকৃত আসল তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা কেউ করেননী তাও নয়, তবে এই তথ্য সন্ধানে কেউ বেশী অগ্রসর হয়নি নানান কারনে। এই প্রকৃত তথ্য উদঘাটনে গোড়াহ মৌলবাদী জ্ঞানহীন সুনামক্ষ্যত আলেম ওলামাদের ভয় করেছে বেশীর ভাগ মানুষ, গবেষক, লেখক, কলামিষ্ট। এই ধরনের প্রশ্ন করার জন্য কিংবা লেখার জন্য যখন’ই কেউ এগিয়ে এসেছে একটু সাহস করে! ঠিক তখনি অনেকেই লাঞ্চিত হয়েছেন, আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। কারো কারো বাড়ী ঘর লাইব্রেরী পুড়ানো হয়েছে। অনেকের জীবনের অভিশাপ হয়েছে এই ধরনের প্রশ্ন করার জন্য। যে যেই ধর্মের হোকনা কেন ধর্ম বিষয় নিয়ে জানতে ইচ্ছা হতেই পারে সেইটাকে খর্ব না করে বিষয়টি কে খারাপ অর্থে না দেখে গণতন্ত্রের চর্চায় মৌলিক অর্থে দাড় করিয়ে প্রকৃত সদুত্তর দেয়াই হচ্ছে স্ব স্ব ধর্মের আলেম ওলামাদের কাজ।
অনেক আলেম ওলামাদের বলতে শুনেছি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সকল নবীর নবী, জানিনা কোরআন বাদ দিয়ে তারা এটা কিসের ভিত্তিতে এত জোর দিয়ে বলেন। তবে যারা ধর্মের মূল হোতা, ধারক বাহক তারা দু’ একটি কথা বলে থাকেন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে হাদীস থেকে। অবশ্য কোরআনের পরেই সারা পৃথিবী জুড়ে মুসলিমদের কাছে স্থান করে নিয়েছে মানুষের লেখা শরীয়া সুন্নাহ নামে খ্যাত হাদীস গ্রন্থ গুলি। হাদীস রাইটাররা যে কোন দরবেশ, অলি, কুতুব, গাউসুল আযম কিংবা পীর ছিলেন না, তাদের উপর {আল্লাহ} প্রদত্ত কোন অহিও হতনা তা সকলেরী জানা; সেই কারনে হাদীস সংগ্রহে ভুল হতেই পারে; আর মানুষ কোনক্রমেই ভুলের উর্দ্ধে নয়। কোরআন কেবলী অন্য আর রাসুলের মত রাসুল হিসাবে এবং সতর্ককারী হিসাবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। একটু জানার চেষ্টা করি কোরআনের আলোতে।
সূরা ইমরান-৩:১৪৪

وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن
يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ

আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয়! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন। তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন, তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে, তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না। আর যারা কৃতজ্ঞ, আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন।
সূলা কাহফ-১৮:৫৬

وَمَا نُرْسِلُ الْمُرْسَلِينَ إِلَّا مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَيُجَادِلُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالْبَاطِلِ لِيُدْحِضُوا بِهِ الْحَقَّ وَاتَّخَذُوا آيَاتِي وَمَا أُنذِرُوا هُزُوًا

আমি রাসূলগনকে সুসংবাদ দাতা ও ভয় প্রদর্শন কারীরূপেই প্রেরণ করি এবং কাফেররাই মিথ্যা অবলম্বনে বিতর্ক করে, তা দ্বারা সত্যকে ব্যর্থ করে দেয়ার উদ্দেশে এবং তারা আমার নিদর্শনাবলীও যদ্বারা তাদেরকে ভয় প্রদর্শন করা হয়, সেগুলোকে ঠাট্টারূপে গ্রহণ করেছে।
সূরা কাহফ-১৮:১১০

قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا

বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।
সূরা বনী ইসরাঈল-১৭:১০৫

وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ نَزَلَ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا

আমি সত্যসহ এ কোরআন নাযিল করেছি এবং সত্য সহ এটা নাযিল হয়েছে। আমি তো আপনাকে শুধু সুসংবাদাতা ও ভয়প্রদর্শক করেই প্রেরণ করেছি।
সূরা হাজ্জ্ব-২২:৪৯

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।
সূরা আনকাবুত-২৯:৫০

الْآيَاتُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।
সূরা আহযাব-৩৩:৪০-৪৫

مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمً

মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল, নবীদের শীল। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।
يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرً

হে নবী! আমি আপনাকে সাক্ষী, সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করেছি।
সূরা ফাতির-৩৫:২৩-২৪

إِنْ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ

আপনি তো কেবল একজন সতর্ককারী।
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ

আমি আপনাকে সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছি সংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। এমন কোন সম্প্রদায় নেই যাতে সতর্ককারী আসেনি।
সূরা ইয়াসীন-৩৬:৩৬

لِتُنذِرَ قَوْمًا مَّا أُنذِرَ آبَاؤُهُمْ فَهُمْ غَافِلُونَ

যাতে আপনি এমন এক জাতিকে সতর্ক করেন, যাদের পূর্ব পুরুষগণকেও সতর্ক করা হয়নি। ফলে তারা গাফেল।
সূরা ছোয়াদ-৩৮:৪

وَعَجِبُوا أَن جَاءهُم مُّنذِرٌ مِّنْهُمْ وَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا سَاحِرٌ كَذَّابٌ

তারা বিস্ময়বোধ করে যে, তাদেরই কাছে তাদের মধ্যে থেকে একজন সতর্ককারী আগমন করেছেন। আর কাফেররা বলে এ-তো এক মিথ্যাচারী যাদুকর।
সূরা ক্বাফ-৫০:২

بَلْ عَجِبُوا أَن جَاءهُمْ مُنذِرٌ مِّنْهُمْ فَقَالَ الْكَافِرُونَ هَذَا شَيْءٌ عَجِيبٌ

বরং তারা তাদের মধ্য থেকেই একজন ভয় প্রদর্শনকারী আগমন করেছে দেখে বিস্ময় বোধ করে। অতঃপর কাফেররা বলেঃ এটা আশ্চর্যের ব্যাপার।
সূরা আয-যারিয়াত-৫১:৫১

وَلَا تَجْعَلُوا مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ

তোমরা আল্লাহর সাথে কোন উপাস্য সাব্যস্ত করো না। আমি তাঁর পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
সূরা আল মুলক-৬৭:২৬

قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।
সূরা হা-মীম সেজদাহ-৪১:৪৩

مَا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ

আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে ক্ষমা এবং রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
সূরা আহক্বাফ-৪৬:৯

قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ

বলুন, আমি তো কোন নতুন রসূল নই। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে। আমি কেবল তারই অনুসরণ করি, যা আমার প্রতি ওহী করা হয়। আমি স্পষ্ট সতর্ক কারী বৈ নই।
সূরা নাহল-১৬:৩৫

وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ لَوْ شَاء اللّهُ مَا عَبَدْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ نَّحْنُ وَلا آبَاؤُنَا وَلاَ حَرَّمْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاغُ الْمُبِينُ

মুশরিকরা বললঃ যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে আমরা তাঁকে ছাড়া কারও এবাদত করতাম না এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরাও করত না এবং তাঁর নির্দেশ ছাড়া কোন বস্তুই আমরা হারাম করতাম না। তাদের পূর্ববর্তীরা এমনই করেছে। রাসূলের দায়িত্ব তো শুধুমাত্র সুস্পষ্ট বাণী পৌছিয়ে দেয়া।
সূরা আনকাবুত-২৯:১৮

وَإِن تُكَذِّبُوا فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌ مِّن قَبْلِكُمْ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ

তোমরা যদি মিথ্যাবাদী বল, তবে তোমাদের পূর্ববর্তীরাও তো মিথ্যাবাদী বলেছে। স্পষ্টভাবে পয়গাম পৌছে দেয়াই তো রসূলের দায়িত্ব।
সূরা আশ-শুরা-৪২:৭

وَكَذَلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ قُرْآنًا عَرَبِيًّا لِّتُنذِرَ أُمَّ الْقُرَى وَمَنْ حَوْلَهَا وَتُنذِرَ يَوْمَ الْجَمْعِ لَا رَيْبَ فِيهِ فَرِيقٌ فِي الْجَنَّةِ وَفَرِيقٌ فِي السَّعِيرِ

এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।

====================================

৫:৯২

৬৪:১২

রাসূলের আদর্শ উত্তম আদর্শ।

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।(৩৩:২১)
রাসূলের আদর্শ হচ্ছে কোরআন অনুসরণ করা। মাঝে মধ্যে তার ভুলও হয়েছে (৩৩:৩৭; ৬৬:১; ৮০:৮-১১) তে কিন্তু সে কোরআন অনুযায়ী নিজেকে সংশোধন করে নিয়েছে। আমাদের আদর্শও হবে কোরআন অনুসরণ করা। আমাদের ভুলগুলোকে কোরআনের আলোকে সংশোধন করা।

অন্যান্য রাসূলের মত মুহাম্মাদ (সাঃ) রাসূলের জীবনাদর্শের অনুসরনীয় দৃষ্টান্ত কোরআনের বর্নিত আছে। এটা মনে করার কারন নেই রাসূলের জীবনাদর্শের জন্য আলাদা গ্রন্থের দরকার। কোরআন বলেছে নবী ইব্রাহিম ও তার সাথীদের মধ্যেও আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে। (৬০:৪,৬)
রাসূলের মান্যতা কি কোরআনের বাইরে?

৭:২-৩ থেকে দেখলাম। কোরআনের বাইরে অন্য কোনো অবিভাবকের অনুসরণ করা যাবে না। রাসূলের শিক্ষা যদি কোরআনের বাইরে হয় তাহলে রাসূলকেও মান্য করা যাবে না ৭:২-৩ অনুযায়ী। আবার অন্য আয়াতে আছে {আল্লাহকে} অনুসরণ কর, রাসুলকে অনুসরণ কর। এই নির্দেশ যদি পালন করি (রাসূলের শিক্ষা কোরআনের বাইরে ধরে) তাহলে ৭:২-৩ আয়াত মান্য করা হবে না? কিন্তু কোরআনে কোনো পরস্পর বিরুধী বক্তব্য নেই। (৪:৮২)

যদি শুধুমাত্র কোরআন মানাই রাসূলের শিক্ষা হয় তাহলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। অর্থাৎ কোরআনই হচ্ছে রাসূলকে মান্য করা।
অনেকে না বুঝেই এরকম কটা আয়াত দিয়ে বলে আল্লাহ কে মান্য করো ও রাসূল কে মান্যতা করো। আল্লাহ কে মান্য করো ও রাসুল কে অনুগত্য করো।
অবশ্যই রাসুল কে মান্যতা করতেই হবে কারণ তাহাকে আল্লাহ আল্লাহ’র প্রতিনিধি আমাদের জন্য করেছন। রাসাল(সাঃ)কি ওহী (কোরআন) ব্যতীত অন্য কোন প্রত্যাদেশ প্রচারের দ্বায়িত্ব পেয়েছিলেন?

আর আল্লাহ কি তাঁর বার্তা নিজে আপনার আমার সকল মানুষের কানে কানে এসে বলে যাবেন নাকি একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করবেন?

অনেকের কথাবার্তায় বুঝা যায় তাদের কাছেও আল্লাহ অহীহ দিলোনা কেন?

==================================

আল্লাহ কোরআনে কেবলী সতর্ককারী হিসাবেই মুহাম্মাদ (সাঃ) কে সম্বর্ধন করেছেন তা’ উল্লেখিত সূরা ও আয়াত থেকে জানলাম। এমন অনেক আরও আয়াত আছে এই ধরনের । অনেকই বলবে কোরআনে নাই তবে হাদীসে আছে। এখন প্রশ্ন আসতেই পারে হাদীস ছাড়া কোরআন অপূর্ণ কিতাব? নিশ্চয় নয়। আল্লাহ কোরআনের সূরা নমল ২৭:৭৫ আয়অতে বলেছেনঃ

وَمَا مِنْ غَائِبَةٍ فِي السَّمَاء وَالْأَرْضِ إِلَّا فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ

আকাশে ও পৃথিবীতে এমন কোন গোপন ভেদ নেই, যা সু’স্পষ্ট কিতাবে না আছে।
আল্লাহ’র এই উল্লেখিত আয়াত গুলো যদি আমরা বিশ্বাস করি তাহলে আয়াত মতে মুহাম্মাদ (সাঃ) কেবলী অন্য রাসুলের মত-ই একজন সতর্ককারী মাত্র। কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করলে মানবেন, আর যদি আয়াত গুলো ঠিক নয় মনে করেন তাহলে সঠিক যুক্তি দিয়ে বলবেন এই আশা কির। যুক্তি হতে হবে কেবল কোরআন থেকে।
sourse 

https://m.facebook.com/groups/1805246912824708?view=permalink&id=1917522634930468