Category Archives: Uncategorized

Intercession Qubra.bn

কুরআনের আলোকে কথিত “শাফায়াতে কুবরা” (কিঞ্চিত পরিমার্জিত)
-আবু সাঈদ খান
*****************************

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2757859010913203&id=100000673936418

*****************************

মুসলিম সমাজে ব্যাপকভাবে একটি বিশ্বাস চালু করে দেয়া হয়েছে যে, ‘হাদীস’ বলতে যা বোঝানো হয়, তা হল কুরআনের ব্যাখ্যা। শাফায়াত বা সুপারিশ সম্পর্কে কুরআনিক শাশ্বত বিবৃতি বহু। একইভাবে শাফায়াত সংক্রান্ত অনেকগুলো বর্ণনা আমরা প্রচলিত ‘হাদীস’ গ্রন্থগুলোতে পাই – এর মধ্যে অন্যতম যেটি, তা ‘শাফায়াতে কুবরা’ বা বড় শাফায়াত নামে পরিচিত। কুরআনে শাফায়াত নিয়ে কোনো আয়াতের বিপরীতে হয়ত এটিকে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে।

শাফায়াত সম্পর্কিত ‘হাদীসের’ বর্ণনায় এমন ‘সহীহ’ দাবীকৃত বিবৃতিও রয়েছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহর পক্ষ থেকে জাহান্নাম নির্ধারিত হয়ে গেছে এমন ব্যক্তিকেও আল্লাহর শেষনবী তাঁর কথিত ‘কর্তৃত্ব’ বলে ছাড়িয়ে এনে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিবেন। যদিও কুরআনে আল্লাহর দাবী সম্পূর্ণ উল্টো।

“আল্লাহ বলবেনঃ আমার সামনে বাকবিতন্ডা করো না আমি তো পূর্বেই তোমাদেরকে আযাব দ্বারা ভয় প্রদর্শন করেছিলাম। আমার কাছে কথা রদবদল হয় না এবং আমি বান্দাদের প্রতি জুলুমকারী নই।” -৫০:২৮-২৯

‘শাফায়াতুন’ পদটি কুরআনে ৩০ বার আবির্ভূত হয়েছে। এর অর্থ একটি কাজের সাথে আর একটি কাজকে যুক্ত করা; একজনের পক্ষ হয়ে কথা বলা, মধ্যস্থতা করা, ইত্যাদি। যেমন.

مَنْ يَشْفَعْ شَفَاعَةً حَسَنَةً يَكُنْ لَهُ نَصِيبٌ مِنْهَا وَمَنْ يَشْفَعْ شَفَاعَةً سَيِّئَةً يَكُنْ لَهُ كِفْلٌ مِنْهَا

যে লোক সৎকাজের জন্য কোন সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্যে সে তার বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। -৪:৮৫

শাফায়াতের পূর্ণ কর্তৃত্ব আল্লাহর

কুরআনে শাফায়াত সম্পর্কিত বিস্তৃত আলোচনা এসেছে। শাফায়াতের পূর্ণ কর্তৃত্ব আল্লাহর (৩৯:৪৪) জানিয়ে বলা হয়েছে যে, কেবলমাত্র সেই সুপারিশ করতে পারবে যাকে অনুমতি দেয়া হবে।

কার জন্য শাফায়াতের অনুমতি দেয়া হবে তার শর্তও বলে দেয়া হয়েছে।

مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ

কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? -২:২৫৫

وَلَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ عِنْدَهُ إِلَّا لِمَنْ أَذِنَ لَهُ

যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। -৩৪:২৩

يَوْمَئِذٍ لَا تَنْفَعُ الشَّفَاعَةُ إِلَّا مَنْ أَذِنَ لَهُ الرَّحْمَنُ وَرَضِيَ لَهُ قَوْلًا

দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না। -২০:১০৯

مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ

কেউ সুপারিশ করতে পারবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া; ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না ? -১০:৩

এখানে ‘মান (مَنْ)’ বা যে কেউ বলতে সুনির্দিষ্ট করে কাউকে বোঝায় না। আল্লাহ পছন্দ করেন এমন যে কেউই তিনি হতে পারেন।

বস্তুতঃ পুরো কুরআন থেকে একটি আয়াত দ্বারাও কোনভাবে এটা প্রমাণ করা যাবে না যে, শাফায়াতের বিষয়ে শেষনবীকে অন্যান্যদের চেয়ে আলাদা কোন মর্যাদা, অধিকার বা এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে যা ‘শাফায়াতে কুবরা’ নামক কথিত ‘হাদীসের’ বর্ণনা দ্বারা আমাদের বিশ্বাস ও মননে অনুপ্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়েছে।

কুরআনের যে কোনো আয়াতের ব্যাখ্যা হিসেবেই ‘শাফায়াতে কুবরাকে’ দাড় করানো হোক না কেন, কুরআনের কষ্টিপাথরে যাচাই করলে শেষ পর্যন্ত তা টিকে কিনা তাই আমরা আলোচ্য নিবন্ধে প্রমাণ করতে চেষ্টা করব, ইনশা-আল্লাহ।

কেননা কুরআন আহসানা তাফসীর বা সর্বোত্তম ব্যাখ্যাকারী

কুরআনুল কারীম নিজেই নিজের উত্তম বিশ্লেষণকারী এবং যে কোন বিষয়ের সন্তোষজনক উত্তর প্রদানকারী। কুরআন বিশ্বের যে কোন মানুষের যে কোন ধরণের জিজ্ঞাসার বিপরীতে সর্বোত্তম ব্যাখ্যাকারী বা আহসানা তাফসীরা (أَحْسَنَ تَفْسِيرًا) বা “Best Explanation”।

وَلَا يَأْتُونَكَ بِمَثَلٍ إِلَّا جِئْنَاكَ بِالْحَقِّ وَأَحْسَنَ تَفْسِيرًا

উহারা তোমার নিকট এমন কোন সমস্যা উপস্থিত করে না, যাহার সঠিক সমাধান ও সুন্দর ব্যাখ্যা আমি তোমাকে প্রদান করি না। -২৫:৩৩

الر كِتَابٌ أُحْكِمَتْ آَيَاتُهُ ثُمَّ فُصِّلَتْ مِنْ لَدُنْ حَكِيمٍ خَبِيرٍ

আলিফ, লা-ম, রা; এটি এমন এক কিতাব, যার আয়াত সমূহ সুপ্রতিষ্ঠিত অতঃপর সবিস্তারে বর্ণিত এক মহাজ্ঞানী, সর্বজ্ঞ সত্তার পক্ষ হতে। -১১:১

কুরআনে এটাও উচ্চারিত হয়েছে যে, কুরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য চক্ষু-উন্মোচনকারী মহাগ্রন্থ। মানবজাতির জন্য তা আলোকবর্তিকাস্বরূপ (enlightenment and illumination)।

هَذَا بَصَائِرُ لِلنَّاسِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِقَوْمٍ يُوقِنُونَ

এই কুরআন মানবজাতির জন্য চক্ষু-উন্মোচনকারী এবং নিশ্চিত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রহমত। -৪৫:২০; আরও ৭:২০৩

قَدْ جَاءَكُمْ بَصَائِرُ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنْ أَبْصَرَ فَلِنَفْسِهِ وَمَنْ عَمِيَ فَعَلَيْهَا وَمَا أَنَا عَلَيْكُمْ بِحَفِيظٍ

তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে নিদর্শনাবলী এসে গেছে। অতএব, যে প্রত্যক্ষ করবে, সে নিজেরই উপকার করবে এবং যে অন্ধ হবে, সে নিজেরই ক্ষতি করবে। আমি তোমাদের পর্যবেক্ষক নই। -৬:১০৪

অনুবাদকগণ বাছায়ির (بَصَائِرُ) পদের অনুবাদে বাংলা ও ইংরেজীতে যে শব্দসমূহ নির্বাচন করেছেন তা হল- সুস্পষ্ট দলীল, নিদর্শনাবলী, সূক্ষ্ন ও দৃষ্টিসম্পন্ন নিদর্শন বা ‘clear proofs’, ‘clear insights’, ‘eye-openers’, ‘enlightening proofs’, ‘means of insight’, ‘enlightenment’, ‘clear perception’, ‘illumination’, ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে।

শাফায়াত সংক্রান্ত অতি জনপ্রিয় ‘হাদীস’

শাফায়াতে কুবরার ‘হাদীসটি’ অতি জনপ্রিয় এবং বলতে গেলে তা প্রায় সকল মুসলিমেরই জানা – কেননা প্রতিনিয়ত তা তাদেরকে শোনানো হয়ে থাকে। বিবৃতিটি এখানে সংক্ষেপে উদ্ধৃত করব এবং পরবর্তীতে তা কুরআনের চোখ দিয়ে দেখবার ও উপলব্ধি করবার চেষ্টা করব।

হাদীসটি একাধিক সূত্র থেকে বর্ণিত হয়েছে যেখান থেকে আমরা জানতে পারি যে, নবীজি বলেছেন, কিয়ামতের দিন আদম সন্তানগণ এত দীর্ঘসময় অপেক্ষারত থাকবে যে, তারা অস্থির, উদ্বিগ্ন এবং ভীষণ বিচলিত হয়ে পড়বে। তারা তখন পরস্পর বলাবলি করবে যে, চল আমরা কাউকে আমাদের জন্য আমাদের প্রভুর কাছে সুপারিশ করতে অনুরোধ করি যাতে করে তিনি আমাদেরকে এই অবস্থা থেকে মুক্তি দেন।

অতঃপর তারা একে একে হযরত আদম, নূহ, ইবরাহীম, মূসা এবং ঈসা (সালামুন ‘আলাল মুরসালীন) কাছে সাফায়াতের আর্জি নিয়ে হাজির হবে। কিন্তু নবীগণের সকলেই সেই কাজে তাঁদের অপরাগতা প্রকাশ করবেন এক সাধারণ যুক্তিতে যে, আজ আমার প্রভু এতো বেশি ক্রোধান্বিত আছেন যা পূর্বে কখনো হননি, আর পরেও কখনো হবেন না। আল্লাহর কাছে সুপারিশ করতে অসমর্থতার জন্য তাঁরা এর সাথে তাদের যে ‘অপরাধের’ উল্লেখ করবেন তা সংক্ষেপে নীচে দেয়া হল-

আদিপিতা আদমঃ
আল্লাহ আমাকে একটি বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন, আর আমি সেই নিষেধ লঙ্ঘন করে ফেলেছি, নাফসি! নাফসি! আজ আমি চিন্তায় পেরেশান। তোমরা অন্য কারো কাছে গিয়ে চেষ্টা করে। তোমরা বরং নূহের কাছে যাও।

প্রথম শরিয়তের অধিকারী এবং চির কৃতজ্ঞ বান্দা নূহঃ
আল্লাহ আমাকে একটি দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আর তা আমি আমার জাতির বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে ফেলেছি। অতঃপর ‘নাফসি, নাফসি’ বলতে বলতে তিনিও কিয়ামতবাসীকে হযরত ইবরাহীমের কাছে পাঠিয়ে দিবেন। অন্য বর্ণনায় আছে- নিজ সন্তানের ব্যাপারে না জেনেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার কারণে আল্লাহ যে তাঁর প্রতি নারাজ হয়েছিলেন- তিনি তার উল্লেখ করবেন।

[দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি যদি আল্লাহ তাঁকে দিয়ে থাকেন; আর নবী নূহ যদি তা প্রয়োগ করে থাকেন তবে তা কেন তাঁর অপরাধ হতে যাবে?]

আল্লাহর খলীল, ইমাম, জাতির পিতা ও উত্তমাদর্শ ইবরাহীমঃ
মূর্তি ভাঙ্গার বিষয়ে ইবরাহীম তার ‘অসত্য কথনের’ উল্লেখ করে নিজের নফসের পেরেশানিতে অস্থির হয়ে হযরত মূসার কাছে পাঠিয়ে দিবেন। অর্থাৎ কথিত ‘অসত্য বচন বা মিথ্যা কথা’ কিয়ামতে শাফায়াত করার বিষয়ে তাঁর বড় অযোগ্যতা। [আলেম-উলামা সমাজ আমজনতাকে শেখায় হযরত ইবরাহীম ‘মিথ্যা’ বলেছিলেন।]

আল্লাহর সাথে কথোপকথনকারী মহান নবী মূসাঃ
নবী মূসা তাঁর দ্বারা এক ব্যক্তিকে মেরে ফেলার উল্লেখ করে ‘নাফসি-নাফসি’ বলে তার অপারগতা প্রকাশ করবেন এবং মানবজাতিকে হযরত ঈসার কাছে পাঠিয়ে দিবেন।

বহু বহু বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, রুহুল কুদুস দ্বারা সাহায্যপ্রাপ্ত ঈসা ইবনে মারইয়ামঃ
যেমনটি পূর্বের নবীগণ বলেছেন তেমনি তিনিও আল্লাহর ক্রোধের কথা, নিজের পেরেশানীর কথা বলবেন। কিন্তু তিনি তাঁর কোন অপরাধের কথা সুপারিশ করতে না পারার কারণ হিসেবে দেখাবেন না- ‘হাদীসের’ বর্ণনায় তা অনুপস্থিত। বরং কোন কারণ ছাড়াই তাদেরকে তিনি শেষনবী হযরত মুহাম্মদের (তাঁর উপর শান্তি) কাছে পাঠিয়ে দিবেন।

অতঃপর সকলে নবী মুহাম্মদের কাছে গিয়ে হাজির হবে, নবীজি রাজি হয়ে আল্লাহর সমীপে মস্তকাবনত করবেন আর আল্লাহ তাঁকে সুপারিশ করার অনুমতি দিবেন। এভাবেই ‘শাফায়াতে কুবরা’ নামের কিয়ামতের এই পর্ব সমাপ্ত হবে। [সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম]

এখন প্রতিটি মুসলমান মসজিদের মিম্বর এবং ‘ওয়াজের জলসা’ থেকে অহরহ এই বর্ণনা শোনে, আবার অন্যদেরকেও তা শোনায়; কিন্তু কেউ এটা নিয়ে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করতে সাহসী হয় না, যেহেতু তা রাসূলের ভাষ্য হিসেবে তাদেরকে শোনানো হয়।

তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল, কুরআন বিচ্ছিন্নতার কারণে মানুষ এর মধ্যে কোন গলদও খুঁজে পায় না। যদিও তাদের অবচেতন মনে এ জাতীয় বর্ণনা নিয়ে অবোধগম্য অনেক কিছুরই দ্যোতনা হতে থাকে।

অতি সাধারণ কিছু প্রশ্নঃ

উপরিউক্ত কথিত শাফায়াত সংক্রান্ত ‘হাদীসের’ বর্ণনার সবচেয়ে প্রহসনমূলক দিকটি হল, হযরত ঈসা ব্যতীত কোন নবীই ‘সঠিক উত্তর (?)’ দিতে সফল হয় না। সঠিক উত্তর মানে এখানে, যার কাছে গেলে প্রকৃত সমাধান মিলবে বলে ধরে নেয়া হচ্ছে তার নাম বলতে পারা। অথচ এটা ধরে নেয়া হয় যে, পূর্ববর্তী সকল নবীই শেষনবীর কথিত ‘সর্বশ্রেষ্ঠত্বের’ বিষয়টি অবগত ছিলেন।

এটাও বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, পূর্ববর্তী সকল নবীগণই তাদের নবীত্ব বিসর্জন দিয়ে শেষনবীর কথিত ‘সর্বশ্রেষ্ঠত্বের’ কারণে তাঁর একজন সাধারণ ‘উম্মত’ হওয়ার গৌরব অর্জন করতে চেয়েছিলেন – সেই বিচারে তাদের নিজ নিজে উম্মতগণ এই সত্য সম্পর্কে পূর্ণ অবগত। যদি তাই হয়, তবে কিয়ামতের দিন প্রথম মানব আদম থেকে শুরু করে সকলেরই এটা জানা থাকবার কথা- তাহলে হযরত আদম বা হযরত নূহ সরাসরি শেষনবীর কথা না বলে শুধু তাঁর পরবর্তী নবীর কথা কেন বলবেন? যদি তাঁরা তাদের পরবর্তী নবীর নাম মনে রাখতে পারেন, তবে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ’ নবী মুহাম্মাদের নাম কীভাবে ভুলে যাবেন? এটা কি ভুলে ভরা একটা মানব-রচিত প্রহসনের নাটক নয়?

আদিপিতা আদমের ক্ষেত্রে এটাও কথিত আছে যে, তিনি আল্লাহর ক্ষমা পেয়েছিলেন আল্লাহর আরশে দেখতে পাওয়া আল্লাহর নামের সাথে শেষনবীর নামের দোহাই দিয়ে (এটাও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা এবং শুধু মিথ্যাচার নয়, বরং কঠিন শিরকপূর্ণ কথা)। যার নামের দোহাই দিয়ে নিজে মুক্তি পেয়েছেন বলে বর্ণনা আছে সেই আদম কীভাবে কিয়ামতের কঠিন ময়দানে মানুষকে বিভ্রান্ত করে শেষনবীর কথা না বলে তাঁর পরবর্তী নূহ নবীর কথা বলতে পারেন?

আরও পরিহাস হল, শেষনবীর উম্মত দাবীদার যারা, তারা তো তাদের নবীর সর্বশ্রেষ্ঠত্বের ব্যাপারে সম্যক অবগত। তারা কিয়ামতের কঠিন দিনে সময় ক্ষেপণ করে সরাসরি শেষনবীর কাছে না গিয়ে কেন পাঁচ-পাঁচজন নবীর কাছে গিয়ে বৃথা সময় নষ্ট করবে? তাদের তো কর্তব্য পূর্ববর্তী সকল নবীর উম্মতগণকে নেতৃত্ব দিয়ে সরাসরি শেষনবীর কাছে পৌঁছানো। তারা আদিপিতা আদমকে স্মরণ করতে বা মনে রাখতে পারবে, আর তাঁদের দাবীকৃত ‘সর্বশ্রেষ্ঠ’ নবী মুহাম্মদকে মনে রাখতে পারবে না? বাংলায় যাকে আমরা আঁষাঢ়ে গল্প বলি- এটা যেন ঠিক তাই।

আরও বলা হয়ে থাকে যে, মৃত্যুর পর কবরে কতিপয় প্রশ্ন করা হবে, যার একটি – মান নাবিয়্যুকা (তোমার নবী কে?)। ঈমানদারগণ এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরে শেষনবীর নাম বলে দেবে। অথচ কী আশ্চর্য যে, এরাই সেই মহান নবীর নাম ভুলে গিয়ে কিয়ামতের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত চষে বেড়াবে ‘মুক্তিদাতার’ অন্বেষায়!

এখন আমরা একটু পেছনে ফিরে তাকাতে চেষ্টা করব, কিয়ামতের ময়দানের কথিত প্রেক্ষাপটে নবীগণ যে সকল কারণ দেখিয়ে তাদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করবেন তার ভিত্তি কী? সুপারিশ করতে অসমর্থতার জন্য যে সব কারণ তাদের মুখ দ্বারা আলোচ্য ‘হাদীসে’ বলানো হয়েছে, যদি তা যথার্থ হয় তবে এটা নিশ্চিত যে, শেষনবী নিজেও নিদেনপক্ষে নিম্নোক্ত ৭ টি কারণে আমাদের জন্য সেদিন সুপারিশের লক্ষ্যে উদ্যোগী হতে সাহসী হবেন না।

১. শেষনবী কর্তৃক ‘অভিশাপ’ দেবার ঘটনা

অহুদের যুদ্ধে নবী মুহাম্মদ (তাঁর উপর শান্তি) অত্যন্ত সঙ্গীন এবং প্রতিকুল পরিস্থিতিতে কতিপয় অবিশ্বাসী কাফিরের নাম উল্লেখপূর্বক অভিশাপ বা লা’নত প্রদান করেন। বিষয়টি আল্লাহ একেবারেই সমর্থন করেন নি এবং নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করে সতর্ক করে দেন যে, এ কাজের কোন কর্তৃত্ব তাঁর নেই।

لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ أَوْ يَتُوبَ عَلَيْهِمْ أَوْ يُعَذِّبَهُمْ فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ

হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে তোমার কোন এখতিয়ার নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর। -৩:১২৮

২. দরিদ্র এবং দাসশ্রেণীর মু’মিনদের মসজিদ থেকে বিতাড়ন

একদা কিছু কুরাইশ আরব সর্দার নবীজির সাক্ষাতপ্রার্থী হয় যখন তিনি মসজিদে মু’মিনদের সাথে আলাপরত ছিলেন যাদের অধিকাংশই ছিলেন হতঃদরিদ্র এবং দাসশ্রেণীর – যারা ‘আছহাবে ছুফ্ফা’ নামে পরিচিত। কুরাইশ সর্দারগণ রাসূলের সাথে তাদের দৃষ্টিতে নিম্নজাতের এই মানুষগুলোকে দেখে তাদের পাশে বসে রাসূলের সাথে কথা বলতে আপত্তি জানায় এবং তাদেরকে প্রথমে বের করে দেবার শর্ত প্রয়োগ করে; কেননা কেউ কেউ পূর্বে তাদের দাস ছিলেন। রাসূল এতে সম্মতি না দিলে ছাহাবী ওমরের পরামর্শে শেষপর্যন্ত রাসূল তাদেরকে ঐ সময়ের জন্য বাইরে যেতে বলেন। আর সেই সব মু’মিন ছাহাবীগণ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের এতই অনুগত ছিলেন যে, রাসূলের সকল নির্দেশ মেনে নেবার জন্য তাঁরা সদা প্রস্তুত ছিলেন।

কিন্তু এই আচরণটি আল্লাহর একেবারেই পছন্দ হয় নি; শুধু তাই নয় তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছেন- তার সুস্পষ্ট প্রকাশ আমরা নাযিলকৃত আয়াতেই দেখতে পাব।

وَلَا تَطْرُدِ الَّذِينَ يَدْعُونَ رَبَّهُمْ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ يُرِيدُونَ وَجْهَهُ مَا عَلَيْكَ مِنْ حِسَابِهِمْ مِنْ شَيْءٍ وَمَا مِنْ حِسَابِكَ عَلَيْهِمْ مِنْ شَيْءٍ فَتَطْرُدَهُمْ فَتَكُونَ مِنَ الظَّالِمِينَ

আর তাদেরকে বিতাড়িত করবে না, যারা সকাল-বিকাল স্বীয় পালকর্তার এবাদত করে, তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে। তাদের হিসাব বিন্দুমাত্রও তোমার দায়িত্বে নয় এবং তোমার হিসাব বিন্দুমাত্রও তাদের দায়িত্বে নয় যে, তুমি তাদেরকে বিতাড়িত করবে। নতুবা তুমি জালিমদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে। -৬:৫২

এ হেন ঘটনা পূর্ববর্তী নবীদের আমলেও ঘটেছে, তার দৃষ্টান্ত কুরআনে পাওয়া যায়। প্রায় সমজাতীয় ঘটনার প্রেক্ষাপটে সালামুন ‘আলা নূহ দরিদ্র শ্রেণীর মু’মিনদিগকে বের না করে দিয়ে বলেন-

إِنْ حِسَابُهُمْ إِلَّا عَلَى رَبِّي لَوْ تَشْعُرُونَ * وَمَا أَنَا بِطَارِدِ الْمُؤْمِنِينَ

আমি মুমিনগণকে তাড়িয়ে দেয়ার লোক নই। -২৬:১১৪

وَمَا أَنَا بِطَارِدِ الَّذِينَ آَمَنُوا إِنَّهُمْ مُلَاقُو رَبِّهِمْ وَلَكِنِّي أَرَاكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُونَ * وَيَا قَوْمِ مَنْ يَنْصُرُنِي مِنَ اللَّهِ إِنْ طَرَدْتُهُمْ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ

আমি কিন্তু ঈমানদারদের তাড়িয়ে দিতে পারি না। তারা অবশ্যই তাদের পালনকর্তার সাক্ষাত লাভ করবে। বরঞ্চ তোমাদেরই আমি অজ্ঞ সম্প্রদায় দেখছি। আর হে আমার জাতি! আমি যদি তাদের তাড়িয়ে দেই তাহলে আমাকে আল্লাহ হতে রেহাই দেবে কে? তোমরা কি চিন্তা করে দেখ না? -১১:২৯-৩০

৩. একজন অন্ধ মু’মিন ছাহাবী থেকে ভ্রুকুঞ্চন করে মুখ ফিরিয়ে নেয়া

কোন এক কুরআনী জলসায় রাসূল অনেকের উদ্দেশ্যে বক্তব্য পেশ করছিলেন- যেখানে মু’মিন-মুসলিমদের সাথে কাফের নেতৃবৃন্দও ছিল। এমন অবস্থায় সেখানে এক অন্ধ মু’মিন ছাহাবী এসে হাজির হন এবং রাসূলের কাছে দীনের কোন বিষয় জানতে প্রশ্ন করেন। সেই ছাহাবীর প্রশ্নের চেয়ে কাফের সর্দারদের সাথে আলাপচারিতা রাসূলের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর মানদন্ডে মু’মিনের দাবী অগ্রাধিকার পাবার যোগ্য। এ জন্য আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীকে অনেক কথা শুনিয়ে নীচের আয়াতগুলো নাযিল করেন।

عَبَسَ وَتَوَلَّى * أَنْ جَاءَهُ الْأَعْمَى * وَمَا يُدْرِيكَ لَعَلَّهُ يَزَّكَّى * أَوْ يَذَّكَّرُ فَتَنْفَعَهُ الذِّكْرَى * أَمَّا مَنِ اسْتَغْنَى * فَأَنْتَ لَهُ تَصَدَّى * وَمَا عَلَيْكَ أَلَّا يَزَّكَّى * وَأَمَّا مَنْ جَاءَكَ يَسْعَى * وَهُوَ يَخْشَى * فَأَنْتَ عَنْهُ تَلَهَّى * كَلَّا إِنَّهَا تَذْكِرَةٌ * فَمَنْ شَاءَ ذَكَرَهُ

সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। কারণ, তাঁর কাছে এক অন্ধ আগমন করল। তুমি কি জান, সে হয়তো পরিশুদ্ধ হত, অথবা উপদেশ গ্রহণ করতো এবং উপদেশ তার উপকার হত। পরন্তু যে বেপরোয়া, তুমি তার চিন্তায় মশগুল। সে শুদ্ধ না হলে তোমার কোন দোষ নেই। যে তোমার কাছে দৌড়ে আসলো এমতাবস্থায় যে, সে ভয় করে, তুমি তাকে অবজ্ঞা করল। কখনও এরূপ করবে না, এটা উপদেশবানী। অতএব, যে ইচ্ছা করবে, সে একে গ্রহণ করবে। -৮০:১-১২

৪. মধু পান না করার প্রতিজ্ঞা

কোন এক ঘটনার প্রেক্ষাপটে নবীজি হালাল মধুকে নিজের জন্য হারাম ঘোষণা করেছিলেন; যদিও তা আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ বা হারাম ঘোষিত হয় নি। কাজেই আল্লাহ তাঁর রাসূলের এই নিষিদ্ধকরণের কাজকে অনুমোদন দেন নি। বরঞ্চ তাঁকে হুশিয়ার করেছেন।

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ تَبْتَغِي مَرْضَاةَ أَزْوَاجِكَ

হে নবী, আল্লাহ তোমার জন্যে যা হালাল করছেন, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করছো কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়। -৬৬:১

বহু বর্ণিল মধু আল্লাহ প্রদত্ত একটি খুবই উপকারী প্রাকৃতিক পানীয় যার মধ্যে মানবজাতির বহু রোগমুক্তি রয়েছে বলে কুরআনে ঘোষণা আছে।

ثُمَّ كُلِي مِنْ كُلِّ الثَّمَرَاتِ فَاسْلُكِي سُبُلَ رَبِّكِ ذُلُلًا يَخْرُجُ مِنْ بُطُونِهَا شَرَابٌ مُخْتَلِفٌ أَلْوَانُهُ فِيهِ شِفَاءٌ لِلنَّاسِ إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآَيَةً لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

(মৌমাছির উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন) এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙের পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। -১৬:৬৯

মধুর বহুমাত্রিক বাস্তব ব্যবহার রয়েছে। মধু আহরণকারী মৌমাছি নিয়ে মহিমান্বিত কুরআনে একটি সূরাই আছে- সূরা আন-নাহল (১৬)।

যদি নবী কর্তৃক মধু নিষিদ্ধ হবার পর আল্লাহ তা সংশোধন করে না দিতেন, তাহলে মুসলিম উম্মাহর জন্যও মধু নিষিদ্ধই থাকত। যে খাদ্য কোন কারণে রাসূল নিজে ভক্ষণ করেন নাই, তা গ্রহণ করা আল্লাহ-রাসূলের অবাধ্যতা বা বিরুদ্ধাচরণরূপেই গণ্য হত। উম্মাহর কোটি কোটি সদস্য প্রাকৃতিক এই সূধা- মধুর বহুমুখী উপকারিতা লাভ থেকে বঞ্চিত হত। আবার বহু মুসলিম এই উপকারিত বা এর স্বাদ গ্রহণের জন্য ‘মধু নিষিদ্ধ’-এর নিয়মও গোপনে বা প্রকাশ্যে লংঘন করত।

৫. নবী কর্তৃক একজন নিরপরাধ ইহুদীকে দোষী সাব্যস্ত করা ও রায় প্রদান করা।

নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ ভুলক্রমে একজন মুসলমানের অপরাধের দায় একজন ইহুদীকে দিয়ে তাকে শাস্তির রায় প্রদান করেছিলেন বা প্রদানে উদ্যত হয়েছিলেন। আর সেই কাজে তাঁকে মিথ্যা সাক্ষ্য-প্রমান দিয়ে প্ররোচিত করেছিল মূল অপরাধির কতিপয় সহযোগী মুসলিম। এটা এত বড় একটি গর্হিত এবং অন্যায় রায় ছিল যে, আল্লাহ তা মোটেই সহ্য করতে পারেন নি এবং আরশ থেকে রায় প্রদান করে নিরপরাধ ইহুদীকে মুক্ত করেন এবং নবীকে সংশোধন করেন। একজন নিষ্পাপ মানুষকে আর একজনের অপরাধের কারণে স্বয়ং নবী কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত করা কাউকে হত্যা করে ফেলার চেয়ে কম কিছু নয় যা আল্লাহ দীর্ঘস্থায়ী হতে দেন নি।

إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلَا تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا * وَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا * وَلَا تُجَادِلْ عَنِ الَّذِينَ يَخْتَانُونَ أَنْفُسَهُمْ إِنَّ اللَّهَ لَا يُحِبُّ مَنْ كَانَ خَوَّانًا أَثِيمًا * يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلَا يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمْ إِذْ يُبَيِّتُونَ مَا لَا يَرْضَى مِنَ الْقَوْلِ وَكَانَ اللَّهُ بِمَا يَعْمَلُونَ مُحِيطًا * هَا أَنْتُمْ هَؤُلَاءِ جَادَلْتُمْ عَنْهُمْ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَمَنْ يُجَادِلُ اللَّهَ عَنْهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَمْ مَنْ يَكُونُ عَلَيْهِمْ وَكِيلًا * وَمَنْ يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللَّهَ يَجِدِ اللَّهَ غَفُورًا رَحِيمًا * وَمَنْ يَكْسِبْ إِثْمًا فَإِنَّمَا يَكْسِبُهُ عَلَى نَفْسِهِ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا * وَمَنْ يَكْسِبْ خَطِيئَةً أَوْ إِثْمًا ثُمَّ يَرْمِ بِهِ بَرِيئًا فَقَدِ احْتَمَلَ بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُبِينًا * وَلَوْلَا فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهُ لَهَمَّتْ طَائِفَةٌ مِنْهُمْ أَنْ يُضِلُّوكَ وَمَا يُضِلُّونَ إِلَّا أَنْفُسَهُمْ وَمَا يَضُرُّونَكَ مِنْ شَيْءٍ وَأَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْكَ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَعَلَّمَكَ مَا لَمْ تَكُنْ تَعْلَمُ وَكَانَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكَ عَظِيمًا

নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি সত্য কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে ফয়সালা কর, যা আল্লাহ তোমাকে হৃদয়ঙ্গম করান। তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হয়ো না। এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। যারা মনে বিশ্বাসঘাতকতা পোষণ করে তাদের পক্ষ থেকে বিতর্ক করবে না। আল্লাহ পছন্দ করেন না তাকে, যে বিশ্বাসঘাতক পাপী হয়। তারা মানুষের কাছে লজ্জিত হয় এবং আল্লাহর কাছে লজ্জিত হয় না। তিনি তাদের সাথে রয়েছেন, যখন তারা রাত্রে এমন বিষয়ে পরামর্শ করে, যাতে আল্লাহ সম্মত নন। তারা যা কিছু করে, সবই আল্লাহর আয়ত্তাধীণ। শুনছ? তোমরা তাদের পক্ষ থেকে পার্থিব জীবনে বিবাদ করছ, অতঃপর কেয়ামতের দিনে তাদের পক্ষ হয়ে আল্লাহর সাথে কে বিবাদ করবে অথবা কে তাদের কার্যনির্বাহী হবে। যে গোনাহ, করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। যে কেউ পাপ করে, সে নিজের পক্ষেই করে। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। যে ব্যক্তি ভূল কিংবা গোনাহ করে, অতঃপর কোন নিরপরাধের উপর অপবাদ আরোপ করে সে নিজের মাথায় বহন করে জঘন্য মিথ্যা ও প্রকাশ্য গোনাহ। যদি তোমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত, তবে তাদের একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল। তারা পথভ্রান্ত করতে পারে না কিন্তু নিজেদেরকেই এবং তোমার কোন অনিষ্ট করতে পারে না। আল্লাহ তোমার প্রতি ঐশীগ্রন্থ ও প্রজ্ঞা অবতীর্ণ করেছেন এবং তোমাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা তুমি জানতে না। তোমার প্রতি আল্লাহর করুণা অসীম। -৪:১০৫-১১৩

৬. দ্বিগুন শাস্তির হুমকি

কুরআনে দু’টি প্রেক্ষাপটে নবী মুহাম্মদকে (তাঁর উপর শান্তি) সতর্ক করা হয়েছে যে, যদি আল্লাহ তাঁকে মজবুত ও দৃঢ়পদ না রাখতেন, তবে কিছু মানুষ তাকে বিপথগামী করেই ছাড়ত।

وَإِنْ كَادُوا لَيَفْتِنُونَكَ عَنِ الَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ لِتَفْتَرِيَ عَلَيْنَا غَيْرَهُ وَإِذًا لَاتَّخَذُوكَ خَلِيلًا * وَلَوْلَا أَنْ ثَبَّتْنَاكَ لَقَدْ كِدْتَ تَرْكَنُ إِلَيْهِمْ شَيْئًا قَلِيلًا * إِذًا لَأَذَقْنَاكَ ضِعْفَ الْحَيَاةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ ثُمَّ لَا تَجِدُ لَكَ عَلَيْنَا نَصِيرًا

তারা তো তোমাকে হটিয়ে দিতে চাচ্ছিল যে বিষয় আমি তোমার প্রতি ওহীর মাধ্যমে যা প্রেরণ করেছি তা থেকে তোমার পদঙ্খলন ঘটানোর জন্যে তারা চুড়ান্ত চেষ্টা করেছে, যাতে তুমি আমার প্রতি কিছু মিথ্যা সম্বন্ধযুক্ত করো। এতে সফল হলে তারা তোমাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে নিত। আমি তোমাকে দৃঢ়পদ না রাখলে তুমি তাদের প্রতি কিছুটা ঝুঁকেই পড়তে। তখন আমি অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তির আস্বাদন করাতাম। এ সময় তুমি আমার মোকাবিলায় কোন সাহায্যকারী পেতে না। -১৭:৭৩-৭৫

এখানে দ্ব্যর্থহীনভাবে আল্লাহ তাঁর শেষনবীকে দ্বিগুণ শাস্তির হুমকি শুনিয়ে দিচ্ছেন যদি রাসূল ষড়যন্ত্রকারীদের ছলনায় ঝুঁকে পড়তেন- আল্লাহই তাঁকে বিশেষ অনুগ্রহে রক্ষা করেছেন সেই কঠিন শাস্তি থেকে।

দ্বিগুণ শাস্তির সম্ভাবনা এবং সে সংক্রান্ত হুমকি থেকে আল্লাহ শেষনবীর স্ত্রীগণকেও রেহাই দেননি।

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ مَنْ يَأْتِ مِنْكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا

হে নবী পত্নীগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকাশ্য অশ্লীল কাজ করলে তাকে দ্বিগুণ শাস্তি দেয়া হবে। এটা আল্লাহর জন্য সহজ। -৩৩:৩০

إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ فَقَدْ صَغَتْ قُلُوبُكُمَا وَإِنْ تَظَاهَرَا عَلَيْهِ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ مَوْلَاهُ وَجِبْرِيلُ وَصَالِحُ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمَلَائِكَةُ بَعْدَ ذَلِكَ ظَهِيرٌ

তোমাদের অন্তর অন্যায়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছে বলে যদি তোমরা উভয়ে তওবা কর, তবে ভালকথা। আর যদি নবীর বিরুদ্ধে একে অপরকে সাহায্য কর, তবে জেনে রেখ আল্লাহ জিবরাঈল এবং সৎকর্মপরায়ণ মুমিনগণ তাঁর সহায়। উপরন্তু ফেরেশতাগণও তাঁর সাহায্যকারী। -৬৬:৪

৭. তুমি তোমার পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো

কোন মু’মিন-মুসলিমই একথা বলতে পারে না যে, এ জাতীয় আয়াতের আলোচনার মাধ্যমে শেষনবীকে হেয় বা ছোট করার অপপ্রয়াস চালানো হচ্ছে। যদি তাই হত, তবে আল্লাহ নিজেই সেই আলোচনা কুরআনে করতেন না। এগুলো কোন গোপন আয়াতসমষ্টি নয়; বরং তা পুরো মানবজাতির জন্য বিস্তৃত পাঠ, পরীক্ষা-নিরিক্ষা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।

বেশ কিছু আয়াতে আল্লাহ শেষনবীকে তাঁর পাপের কারণে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিয়েছেন।

فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ

অতএব, তুমি সবর করো নিশ্চয় আল্লাহর ওয়াদা সত্য। তুমি তোমার গোনাহের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করো। -৪০:৫৫

فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنْبِكَ

জেনে রাখ, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। ক্ষমা প্রার্থনা করো, তোমার পাপের জন্যে। -৪৭:১৯

لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِكَ وَمَا تَأَخَّرَ

যাতে আল্লাহ তোমার অতীত ও ভবিষ্যত পাপসমূহ মার্জনা করে দেন। -৪৮:১-২

তুমি বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ থেকে বিতর্ককারী হয়ো না। এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। -৪:১০৫-১০৬

কুরআনে তিনবার ‘জামবিকা’ ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ ‘তোমার পাপ বা গুনাহ’। এর বাইরে বহু বহু বার নবীকে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদুপরি, সূরা হাক্কায় আল্লাহ তা’য়ালা ‘যদি’-যোগে (وَلَوْ) বলেন, যদি নবী কর্তৃক এই কুরআনে কোন কিছু তিনি আল্লাহর নামে মনগড়া আরোপ করতেন তবে তাঁর জন্য নেমে আসত ভয়াবহ পরিণতি।

إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ * وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ قَلِيلًا مَا تُؤْمِنُونَ * وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ * تَنْزِيلٌ مِنْ رَبِّ الْعَالَمِينَ * وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ * لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ * ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ * فَمَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِينَ

নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রাসূলের আনীত। এবং এটা কোন কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর। এবং এটা কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর। এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ। সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত, তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম, অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা। তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।– ৬৯:৪০-৪৭

যদিও সূরা আত-তুরে আল্লাহ সত্যায়ন করেন যে, নবীজি নিজে থেকে এই কুরআন রচনা করেন নাই।

أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُ بَلْ لَا يُؤْمِنُونَ

না তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী। -৫২:৩৩

এখন যেসব কারণ উল্লেখ করে হযরত আদম, নূহ, ইবরাহীম, মূসা কিয়ামতের দিবসে সুপারিশ করতে তাদের অপারগতা প্রকাশ করবেন আল্লাহর ভয়ে, শেষনবীর ক্ষেত্রে আলোচিত সাতটি কারণ তারচেয়ে কি অনেক গুরুতর নয়? পূর্ববর্তী নবীগণ যদি কথিত সেই একটি ‘অপরাধের’ কারণে সাফায়াত করার সাহস না দেখান, তাহলে শেষনবী কীভাবে এত এত ‘অপরাধসমূহ (?)’ নিয়ে সেই সাহস প্রদর্শন করবেন?

মহান নবীগনের বিরুদ্ধে কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ খন্ডন

এবার যাচাই করা যাক, উপরিউক্ত হাদীসে মহান নবীগণের বিরুদ্ধে যে কল্পিত অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কুরআন কী বলে।

হযরত আদম

যখন হযরত আদম (তাঁর উপর শান্তি) পৃথিবীতে পদার্পন করেন, তখন তিনি তাঁর কৃত ভুলের জন্য অনুতাপ-অনুশোচনা করেন; এবং আল্লাহ তাঁর ওয়াদা মাফিক তাঁর প্রতি তাঁর অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। আল্লাহ তাঁকে নির্বাচিত করেন এবং সঠিক হেদায়েতের পথ প্রদর্শন করেন।

ثُمَّ اجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَتَابَ عَلَيْهِ وَهَدَى

এরপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন, তার প্রতি মনোযোগী হলেন এবং তাকে সুপথে আনয়ন করলেন। -২০:১২২

فَتَلَقَّى آَدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীলও অসীম দয়ালু। -২:৩৭

এটা সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে, হযরত আদম আল্লাহ কর্তৃক পৃথিবীতেই ক্ষমাকৃত এবং হেদায়েতপ্রাপ্ত ছিলেন- কুরআন তা একাধিক বিবৃতির মধ্য দিয়ে সত্যায়ন করে। সুতরাং, শেষনবীর নামে বাড়াবাড়ি আরোপ করতে গিয়ে আমরা প্রকারান্তরে মানবজাতির আদিপিতা হযরত আদমকে হেয় ও ছোট করে উপস্থাপন করবার ধৃষ্টতা দেখাচ্ছি – যা মোটেই সত্য নয়।

তারচেয়েও বড় কথা, মানব সৃষ্টির একেবারে প্রারম্ভে জান্নাতে ঘটিত আদমের ভুলের সাথে, পৃথিবীতে সংঘটিত নবীগণের কৃত ভুলকে এক পাল্লায় মাপা যায় না। পৃথিবীতে আগমনের পর আমাদের সবার আদিপিতার আর কোন ভুল বা পাপের উল্লেখ আমরা পুরো কুরআনে পাই না।

হযরত নূহ

একজন পিতা এবং নবী হিসেবে হযরত নূহ আল্লাহর কাছে নিজ সন্তানের জন্য ক্ষমা চান। সেজন্যে আল্লাহ তাঁকে সতর্ক করেন এই বলে যে, তাঁর সন্তান তাঁর পরিবারভুক্ত নয়, বরং একজন অসৎ মানুষ; এবং তাঁর উচিত নয় তার জন্য প্রার্থনা করা। হযরত নূহ তাৎক্ষণিকভাবে আল্লাহর কাছে নিজ অজ্ঞতার জন্য ক্ষমা ভিক্ষা চান এবং সেই বিষয় থেকে পানাহ চান যে বিষয়ে তাঁর জ্ঞান নেই। আল্লাহ নিজ নবীর প্রতি সদয় হন এবং তাঁর প্রতি তাঁর ‘শান্তি এবং কল্যান’ (বিসালামিম মিন্না ওয়া বারাকাত) বর্ষনের ঘোষণা জানিয়ে দেন।

وَنَادَى نُوحٌ رَبَّهُ فَقَالَ رَبِّ إِنَّ ابْنِي مِنْ أَهْلِي وَإِنَّ وَعْدَكَ الْحَقُّ وَأَنْتَ أَحْكَمُ الْحَاكِمِينَ * قَالَ يَا نُوحُ إِنَّهُ لَيْسَ مِنْ أَهْلِكَ إِنَّهُ عَمَلٌ غَيْرُ صَالِحٍ فَلَا تَسْأَلْنِ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ إِنِّي أَعِظُكَ أَنْ تَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ * قَالَ رَبِّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَسْأَلَكَ مَا لَيْسَ لِي بِهِ عِلْمٌ وَإِلَّا تَغْفِرْ لِي وَتَرْحَمْنِي أَكُنْ مِنَ الْخَاسِرِينَ * قِيلَ يَا نُوحُ اهْبِطْ بِسَلَامٍ مِنَّا وَبَرَكَاتٍ عَلَيْكَ وَعَلَى أُمَمٍ مِمَّنْ مَعَكَ

আর নূহ (আঃ) তাঁর পালনকর্তাকে ডেকে বললেন- হে পরওয়ারদেগার, আমার পুত্র তো আমার পরিজনদের অন্তর্ভুক্ত; আর আপনার ওয়াদাও নিঃসন্দেহে সত্য আর আপনিই সর্বাপেক্ষা বিজ্ঞ ফয়সালাকারী। আল্লাহ বলেন, হে নূহ! নিশ্চয় সে তোমার পরিবারভুক্ত নয়। নিশ্চই সে দুরাচার! সুতরাং আমার কাছে এমন দরখাস্ত করবে না, যার খবর তুমি জানো না। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি যে, তুমি অজ্ঞদের দলভুক্ত হয়ো না। নূহ (আঃ) বলেন- হে আমার পালনকর্তা আমার যা জানা নেই এমন কোন দরখাস্ত করা হতে আমি আপনার কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আপনি যদি আমাকে ক্ষমা না করেন, দয়া না করেন, তাহলে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব। বলা হল- হে নূহ! অবতরণ কর আমাদের থেকে শান্তির সাথে, আর তোমার উপরে ও তোমার সাথে যারা রয়েছে তাদের সম্প্রদায়ের উপরে আশীর্বাদ নিয়ে। -১১:৪৫-৪৮

হযরত নূহ সম্পর্কে আল্লাহ আরও যা কিছু অতিরিক্ত বলেছেন, তা হল তিনি ছিলেন মুখলিছিন (الْمُخْلَصِينَ)

وَلَقَدْ نَادَانَا نُوحٌ فَلَنِعْمَ الْمُجِيبُونَ * وَنَجَّيْنَاهُ وَأَهْلَهُ مِنَ الْكَرْبِ الْعَظِيمِ * وَجَعَلْنَا ذُرِّيَّتَهُ هُمُ الْبَاقِينَ * وَتَرَكْنَا عَلَيْهِ فِي الْآَخِرِينَ * سَلَامٌ عَلَى نُوحٍ فِي الْعَالَمِينَ * إِنَّا كَذَلِكَ نَجْزِي الْمُحْسِنِينَ * إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُؤْمِنِينَ

আর নূহ আমাকে ডেকেছিল। আর কি চমৎকারভাবে আমি তার ডাকে সাড়া দিয়েছিলাম। আমি তাকে ও তার পরিবারবর্গকে এক মহাসংকট থেকে রক্ষা করেছিলাম। এবং তার বংশধরদেরকেই আমি অবশিষ্ট রেখেছিলাম। আমি তার জন্যে পরবর্তীদের মধ্যে এ বিষয় রেখে দিয়েছি যে, বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমি এভাবেই সৎকর্ম পরায়নদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। সে ছিল আমার ঈমানদার বান্দাদের অন্যতম। -৩৭:৭৫-৮১

وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا نُوحًا وَإِبْرَاهِيمَ وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِمَا النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ

আমি নূহ ও ইব্রাহীমকে রসূলরূপে প্রেরণ করেছি এবং তাদের বংশধরের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব অব্যাহত রেখেছি। অতঃপর তাদের কতক সৎপথপ্রাপ্ত হয়েছে এবং অধিকাংশই হয়েছে পাপাচারী। -৫৭:২৬

سَلَامٌ عَلَى نُوحٍ فِي الْعَالَمِينَ

বিশ্ববাসীর মধ্যে নূহের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। -৩৭:৭৯

হযরত ইবরাহীম

হযরত ইবরাহীম কুরআনুল কারীমে চিত্রিত নবীগণের মধ্যে সবচেয়ে অধিক সম্মানিত, অনুসরণীয় এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয় নবী। যাকে আল্লাহ ‘সিদ্দীকান নাবিয়্যা’ বা অতি সত্যবাদী নবী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّهُ كَانَ صِدِّيقًا نَبِيًّا

(হে মুহাম্মদ) তুমি এই কিতাবে ইব্রাহীমের কথা বর্ণনা করো। নিশ্চয় তিনি ছিলেন সত্যবাদী, নবী। -১৯:৪১

আমাদের মত হতভাগা আর কে হতে পারে, আল্লাহ নিজে যার নবীকে সত্যবাদী নবী হিসেবে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করলেন, আমরা আমাদের হঠকারিতা আর দূর্বৃত্তপনা দ্বারা তাঁকেই হাজির করলাম ‘মিথ্যাবাদী’ হিসেবে।

أُولَئِكَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ مِنَ النَّبِيِّينَ مِنْ ذُرِّيَّةِ آَدَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِنْ ذُرِّيَّةِ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْرَائِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَاجْتَبَيْنَا إِذَا تُتْلَى عَلَيْهِمْ آَيَاتُ الرَّحْمَنِ خَرُّوا سُجَّدًا وَبُكِيًّا

এরাই তারা- নবীগণের মধ্য থেকে যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা নেয়ামত দান করেছেন। এরা আদমের বংশধর এবং যাদেরকে আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহন করিয়েছিলাম, তাদের বংশধর, এবং ইব্রাহীম ও ইসরাঈলের বংশধর এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছি ও মনোনীত করেছি, তাদের বংশোদ্ভূত। তাদের কাছে যখন দয়াময় আল্লাহর আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তখন তারা সেজদায় লুটিয়ে পড়ত এবং ক্রন্দন করত। -১৯:৫৮

إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَحَلِيمٌ أَوَّاهٌ مُنِيبٌ

নিঃসন্দেহ ইবরাহীম তো ছিলেন সহনশীল, কোমল হৃদয়, সতত প্রত্যাবর্তনকারী। -১১:৭৫

وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ إِلَّا عَنْ مَوْعِدَةٍ وَعَدَهَا إِيَّاهُ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ أَنَّهُ عَدُوٌّ لِلَّهِ تَبَرَّأَ مِنْهُ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ

আর ইব্রাহীম কর্তৃক স্বীয় পিতার মাগফেরাত কামনা ছিল কেবল সেই প্রতিশ্রুতির কারণে, যা তিনি তার সাথে করেছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর কাছে একথা প্রকাশ পেল যে, সে আল্লাহর শত্রু তখন তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে নিলেন। নিঃসন্দেহে ইব্রাহীম ছিলেন বড় কোমল হৃদয়, সহনশীল। -৯:১১৪

وَلَقَدْ آَتَيْنَا إِبْرَاهِيمَ رُشْدَهُ مِنْ قَبْلُ وَكُنَّا بِهِ عَالِمِينَ

আর, আমি ইতিপূর্বে ইবরাহীমকে তার সৎপন্থা দান করেছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত ও ছিলাম। -২১:৫১

ইবরাহীমের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যাচারিতার’ অভিযোগ

قَالُوا أَأَنْتَ فَعَلْتَ هَذَا بِآَلِهَتِنَا يَا إِبْرَاهِيمُ * قَالَ بَلْ فَعَلَهُ كَبِيرُهُمْ هَذَا فَاسْأَلُوهُمْ إِنْ كَانُوا يَنْطِقُونَ

তারা বললঃ হে ইবরাহীম তুমিই কি আমাদের উপাস্যদের সাথে এরূপ ব্যবহার করেছ? তিনি বললেনঃ বরং এদের এই প্রধানই তো একাজ করেছে। অতএব তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তারা কথা বলতে পারে। -২১:৬২-৬৩

কথিত ‘আলেম-উলামা’ সম্প্রদায় সমাজে একটা অত্যন্ত গর্হিত এবং সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা চালু করেছে যে, হযরত ইবরাহীম নবী জীবন লাভের পরও ‘মিথ্যা’ বলেছিলেন – যা এই মহান নবীর প্রতি একেবারেই ডাহা মিথ্যাচার। যেখানে মুসলিম সমাজ হযরত ইবরাহীমকে ‘মিথ্যাবাদী’ প্রতিপন্ন করতে উঠেপড়ে লাগে; তখন আল্লাহ তাঁর প্রিয়তম নবীকে ‘সিদ্দীকান নাবিয়্যা’, অর্থাৎ সবচেয়ে সত্যবাদী নবী হিসেবে সত্যায়ন করেন।

মিথ্যা এমন কিছু যা দ্বারা কেউ কোন বিষয়ে তার সম্পৃক্ততা লুকাতে চায়। এখানে, নবী ইবরাহীমের অভিপ্রায় মোটেই তা ছিল না; বরং তিনি বাক্য বিন্যাসে এমন একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিলেন যা দ্বারা তিনি তাদের বিবেককে নাড়া দিতে চেয়েছিলেন যাতে তারা উপলব্ধি করতে পারে। সেই মূর্তিপূজকেরাও এটা বিশ্বাস করত না যে, তাদের সবচেয়ে বড় দেবতা এই কর্ম করেছে যেহেতু সেটা করবার কোন ক্ষমতা তার নেই; তারা এটা ভাল করেই বোঝে যে এ জাতীয় কিছু তারা করতে পারে না।

হযরত ইবরাহীমের আল্লাহ প্রদত্ত এই বুদ্ধিমত্তায় যথেষ্ট কাজ হয়; তাঁর এই প্রশ্নে তাদের মাথা হেট হয়ে গেল।

ثُمَّ نُكِسُوا عَلَى رُءُوسِهِمْ لَقَدْ عَلِمْتَ مَا هَؤُلَاءِ يَنْطِقُونَ

অতঃপর উহাদের মস্তক অবনত হইয়া গেল এবং উহারা বলিল, ‘তুমি তো জানই যে, ইহারা কথা বলে না’। -২১:৬৫

নিজ হাতে দেবতাদেরকে ভেঙ্গে ফেলা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করবার কোন ইচ্ছাই নবী ইবরাহীমের ছিল না যা একটু পরেই স্পষ্ট হয়ে যাবে; আর এর দ্বারা তারা লজ্জিত হবে।

প্রথমত, মূর্তিপূজকদের প্রশ্নের জবাবে ইবরাহীম একথা বলেন নাই যে, তিনি তা ভাঙ্গেন নি। বরং অতি অল্প সময়ের জন্য একটি যুক্তি-কৌশল (হুজ্জাত)-এর অবলম্বন করেছেন তাদের অবচেতন মনে আঘাত করে ভুল ভেঙ্গে দেবার জন্য।

যখন ইবরাহীমের বুদ্ধিমত্তার কাছে তারা হেরে গেল, তখন তিনি তাদের চূড়ান্ত আঘাত হানেন আর প্রকারান্তরে সেই আঘাতের মধ্য দিয়েই স্বীকার করে নেন যে, তিনিই ভাঙ্গার কাজটি করেছেন।

قَالَ أَفَتَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَنْفَعُكُمْ شَيْئًا وَلَا يَضُرُّكُمْ

ইবরাহীম বলিল, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত কর যাহা তোমাদের কোন উপকার করিতে পারে না, ক্ষতিও করিতে পারে না”। -২১:৬৬

একটি দৃষ্টান্ত কল্পনা করা যাক।

কোন এক অফিসের বস তার অধিনস্ত পাঁচ কর্মীকে একটি কাজ সম্পন্ন করবার জন্য খুব তাগিদ দিলেন। একদিন, দু’দিন, তিনদিন পার হয়ে গেল; কেউ তা করল না। চতুর্থ দিন সবার অফিসে আগমনের পূর্বে বস নিজেই কাজটি সম্পন্ন করে অফিসে রেখে দিলেন।

নির্দিষ্ট পাঁচ কর্মী অফিসে এসে কাজটি দেখে একে অপরকে জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হল, তাদের কেউ তা করে নি এবং তারা এটাও বুঝে গেল, কাজটি জরুরী ছিল বিধায় বস নিজেই তা নিষ্পন্ন করেছেন।

অতঃপর যখন বসের সঙ্গে তাদের দেখা হল, তাদের একজন বসকে বিনয়ের সাথে এবং অপরাধি মনে জানতে চাইল, তিনিই কাজটি করেছেন কিনা?

বস তখন সরাসরি অস্বীকার না করে কৌশলে উত্তর দিলেন, কাজটি তো তোমাদেরই করবার কথা, তোমাদের কেউই হয়ত করেছে।

যেহেতু, তারা ইতিমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে, তাদের কেউ তা করেনি, তাই বসের এই উত্তরে তারা প্রত্যেকেই যথেষ্ট লজ্জিত বোধ করবে।

আমাদের পারিবারিক, প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক জীবনে এ জাতীয় ঘটনা অনেক সময় ঘটে থাকে – যা আমরা অন্যকে কিছু উপলব্ধি করাতে, শিখাতে প্রয়োগ করে থাকি।

এই ঘটনা থেকে আমরা কেউ একথা বলব না যে, ঘটনার বস তার কর্মীদের কাছে ‘মিথ্যা’ কথা বলেছেন।

কোন বিষয়ে প্রাসঙ্গিক সকল আয়াত যাচাই-বাছাই ব্যতিরেকেই, মুসলিম সম্প্রদায় আমভাবে হযরত ইবরাহীমের উপর একটি ভয়াবহ কলঙ্ক আরোপ করে চলেছে যে, তিনি ‘মিথ্যা’ বলেছিলেন যা একেবারেই সত্য নয়। বরঞ্চ, এই প্রজ্ঞা আল্লাহ তাঁকে দান করেছিলেন যেমনটি কুরআনে বলা হয়েছে।

وَتِلْكَ حُجَّتُنَا آَتَيْنَاهَا إِبْرَاهِيمَ عَلَى قَوْمِهِ نَرْفَعُ دَرَجَاتٍ مَنْ نَشَاءُ إِنَّ رَبَّكَ حَكِيمٌ عَلِيمٌ

আর ইহা আমাদের যুক্তি-প্রমাণ যাহা ইবরাহীমকে দিয়াছিলাম তাহার সম্প্রদায়কে মুকাবিলায়; যাহাকে ইচ্ছা মর্যাদায় আমরা উন্নীত করি। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ। -৬:৮৩

আরও বলা হয়েছে।

وَلَقَدْ آَتَيْنَا إِبْرَاهِيمَ رُشْدَهُ مِنْ قَبْلُ

আমরা তো ইহার পূর্বে ইবরাহীমকে সৎপথের জ্ঞান দিয়াছিলাম। -২১:৫১

আল্লাহ তা’য়ালা ইবরাহীমের ব্যাপারে তাঁর পক্ষ থেকে ‘সালাম’ বর্ষণের ঘোষণাও দিয়েছেন।

سَلَامٌ عَلَى إِبْرَاهِيمَ

ইবরাহীমের উপর সালাম। -৩৭:১০৯

হযরত মূসা

হযরত মূসা একজন ঝগড়াটে মিশরীয়কে অনিচ্ছাকৃতভাবে মেরে ফেলেছিলেন, আর সেজন্যে তিনি তাঁর জীবিতাবস্থায় যথেষ্ট অনুতপ্ত ছিলেন। আল্লাহ নবীর এই আক্ষেপ-অনুশোচনার বিষয়টিকে উদ্দেশ্য করে মহান নবীকে শান্তনা দিয়েছেন।

وَقَتَلْتَ نَفْسًا فَنَجَّيْنَاكَ مِنَ الْغَمِّ وَفَتَنَّاكَ فُتُونًا فَلَبِثْتَ سِنِينَ فِي أَهْلِ مَدْيَنَ ثُمَّ جِئْتَ عَلَى قَدَرٍ يَا مُوسَى

তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে, অতঃপর আমি তোমাকে এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেই; আমি তোমাকে অনেক পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ান বাসীদের মধ্যে অবস্থান করেছিলে; হে মূসা, অতঃপর তুমি নির্ধারিত সময়ে এসেছ। -২০:৪০

وَدَخَلَ الْمَدِينَةَ عَلَى حِينِ غَفْلَةٍ مِنْ أَهْلِهَا فَوَجَدَ فِيهَا رَجُلَيْنِ يَقْتَتِلَانِ هَذَا مِنْ شِيعَتِهِ وَهَذَا مِنْ عَدُوِّهِ فَاسْتَغَاثَهُ الَّذِي مِنْ شِيعَتِهِ عَلَى الَّذِي مِنْ عَدُوِّهِ فَوَكَزَهُ مُوسَى فَقَضَى عَلَيْهِ قَالَ هَذَا مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ عَدُوٌّ مُضِلٌّ مُبِينٌ * قَالَ رَبِّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي فَاغْفِرْ لِي فَغَفَرَ لَهُ إِنَّهُ هُوَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

সে (মূসা) শহরে প্রবেশ করল, যখন তার অধিবাসীরা ছিল বেখবর। তথায় তিনি দুই ব্যক্তিকে লড়াইরত দেখল। এদের একজন ছিল তাঁর নিজ দলের এবং অন্য জন তাঁর শত্রু দলের। অতঃপর যে তাঁর নিজ দলের সে তাঁর শত্রু দলের লোকটির বিরুদ্ধে তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করল। তখন মূসা তাকে ঘুষি মারল এবং এতেই তার মৃত্যু হয়ে গেল। মূসা বলল, এটা শয়তানের কাজ। নিশ্চয় সে প্রকাশ্য শত্রু, বিভ্রান্তকারী। সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, আমি তো নিজের উপর জুলুম করে ফেলেছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু। -২৮:১৫-১৬

কুরআনে আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা, সুনির্দিষ্ট সেই ঘটনার প্রেক্ষাপটে মূসা নবীর অনুতাপ-আক্ষেপের বদৌলতে আল্লাহ তাঁকে ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন। হযরত নূহ এবং ইবরাহীমের মত, আল্লাহ তাঁর বিষয়েও ঘোষণা করেন।

سَلَامٌ عَلَى مُوسَى وَهَارُونَ

মূসা এবং হারুনের প্রতি সালাম। – ৩৭:১২০

হযরত ঈসা

শাফায়াতের দায়িত্ব গ্রহণ না করার ব্যাপারে হাদীসের বর্ণনায় হযরত ঈসা কোন কারণের কথা বলবেন না; শুধু ‘ইয়া নাফসি’, ‘ইয়া নাফসি’ করতে থাকবেন। কোন কারণ ছাড়াই তিনি কিয়ামতবাসীকে ফিরিয়ে দিবেন।

“নিঃসন্দেহ ঈসার দৃষ্টান্ত হচ্ছে আল্লাহ্‌র কাছে আদমের দৃষ্টান্তের মতো। তিনি তাঁকে সৃষ্টি করেছিলেন মাটি থেকে; তারপর তাঁকে বলেছিলেন- ‘হও’ আর তিনি হয়ে গেলেন”। -৩:৫৯

বহু নবী-রাসূলগণের উপর হযরত মূসা-ঈসার মর্যাদার প্রাধান্য বলতে গিয়ে আল্লাহ বলেন-

تِلْكَ الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ مِنْهُمْ مَنْ كَلَّمَ اللَّهُ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجَاتٍ وَآَتَيْنَا عِيسَى ابْنَ مَرْيَمَ الْبَيِّنَاتِ وَأَيَّدْنَاهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ

এইসব রাসূল- তাঁদের কাউকে আমরা অপর কারোর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে কারোর সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাঁদের কাউকে তিনি বহুস্তর উন্নত করেছেন। আর আমরা মরিয়মের পুত্র ঈসাকে দিয়েছিলাম স্পষ্ট প্রমাণাবলী, আর আমরা তাঁকে বলীয়ান করি রূহুল কুদুস দিয়ে। -২:২৫২

এভাবে এক এক করে মহান নবীগণের গৌরব ও মহিমা লিখতে গেলে নিবন্ধের কলেবর অনেক বৃদ্ধি পাবে।

শেষকথা

শাফায়াতে কুবরা নামক ‘হাদীসের’ বর্ণনায় যে বিষয়গুলোকে বিশাল ‘অপরাধ’ হিসেবে উপস্থাপন করে মহান নবীগণকে শেষনবীর মোকাবেলায় ‘ছোট’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, তা কুরআনে বর্ণিত তাঁদের প্রতি আল্লাহর অকুণ্ঠ অনুগ্রহ ও দয়ার বিপরীতে কোনভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সুতরাং আমরা দেখতে পাচ্ছি, একগুচ্ছ অত্যন্ত খোঁড়া অজুহাত আরোপ করা হয়েছে আল্লাহর মহান নবীগণের উপর ধর্মের দূর্বৃত্তদের দ্বারা। যখন কুরআন তার চিরসত্য দ্বারা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, তখন এইসব ‘হাদীসের’ সনদের বিশুদ্ধতা অন্বেষণ করে তা সহীহ নাকি গলদ সে সিদ্ধান্ত নেয়া একেবারেই নির্বুদ্ধিতা। যখন কুরআন একাই এই বক্তব্যের অসারতা ধরিয়ে দেয়, তখন দ্বিতীয় আর সূত্রের দরকার পড়ে না তার সত্যাসত্য নির্ণয়ে।

তাই দেখা যাচ্ছে, ইসলামী লেবাসের মুনাফিকের দল একটি মিথ্যা আবিস্কার করেছে, অতঃপর সেই মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করতে আরও হাজারটি মিথ্যাকে তার চারপাশে খুঁটি হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।

শাফায়াত কে কার জন্য কতটুকু করতে পারবেন, তা কিয়ামতের দিবসই বলে দিবে। বরং শেষনবী আমাদের বিরুদ্ধে কিয়ামতের দিন কুরআন বর্জনের অভিযোগ দায়ের করবেন- যে কুরআন আল্লাহ মানবজাতির প্রতি তাঁর করুণা এবং অনুগ্রহ এবং নেয়ামত হিসেবে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ মেহেরবানি করে তা আগেভাগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।

وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَذَا الْقُرْآَنَ مَهْجُورًا

রাসূল বললেনঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় এই কুরআনকে পরিত্যক্ত সাব্যস্ত করেছে। -২৫:৩০

শাফায়াত সংক্রান্ত সম্পূর্ণ মিথ্যা “সহীহ হাদীস”

সুতরাং, আল্লাহর রাসূলের নামে চালানো এই ভাষ্য কখনও রাসূলের সত্য ভাষণ হতে পারে না; বরং তা একটি ‘লাহওয়াল হাদীস’ বা অসার ও মনগড়া কথামালা। যদি কেউ এই বর্ণনাকে ‘সহীহ’ বলে দাবী করে তবে তাদের কাছে কুরআনে বাতিল বলেই গণ্য হবে। ‘শাফায়াতে কুবরাকে’ প্রচলিত মানদন্ডে ‘সহীহ হাদীস’ হিসেবে চালানো হলেও কুরআনী মানদন্ডে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমানিত।

শেষনবীর নামে ‘সর্বশ্রেষ্ঠত্বের’ মিথ্যাকে লালন-পালন এবং রক্ষা করতে মুসলিম উম্মাহর এক বড় অংশ প্রতিনিয়ত আল্লাহর সকল মহান নবী-রাসূলগণকে হেয় ও ছোট করে চলেছে যাদেরকে নবী মুহাম্মদও আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী এক্তেদা ও এত্তেবা করে গেছেন।

সর্বশেষ নবীর সর্বশ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে ডা. জাকির নায়েক আমাকে এই ‘হাদীসের’ উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন। আমি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, নবীর শ্রেষ্ঠত্বের কথা জেনেও কিয়ামতের দিন তিনি এবং তার মত আদম সন্তানেরা কেন শেষনবীর কাছে শাফায়তের জন্য প্রথমেই না গিয়ে আদিপিতা আদম এবং অন্যান্যদের কাছে যাবেন? কীভাবে আদম সন্তানেরা সর্বশেষ নবীর নাম ভুলে গিয়ে আদমের কথা মনে করবে? কোনো আহাম্মক, বেওকুফ ব্যতীত এ জাতীয় চিন্তার প্রশ্রয় কেউ কি দিতে পারে? গল্পটির অন্তঃসারশূন্যতা কি আমাদের দিব্য চোখে ধরা পড়ে না? আমাদের কী কোনই আকল নেই?

শেষনবী ও রাসূলকে আমাদের কারও উপর উকিল নিযুক্ত করা হয় নাই।

قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنَا عَلَيْكُمْ بِوَكِيلٍ () وَاتَّبِعْ مَا يُوحَى إِلَيْكَ وَاصْبِرْ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ وَهُوَ خَيْرُ الْحَاكِمِينَ

বলে দাও, হে মানবকুল, সত্য তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে। এমন যে কেউ পথে আসে সে পথ প্রাপ্ত হয় স্বীয় মঙ্গলের জন্য। আর যে বিভ্রান্ত ঘুরতে থাকে, সে স্বীয় অমঙ্গলের জন্য বিভ্রান্ত অবস্থায় ঘুরতে থাকবে। অনন্তর আমি তোমাদের উপর অধিকারী নই। আর তুমি চল সে অনুযায়ী যেমন নির্দেশ আসে তোমার প্রতি এবং সবর কর, যতক্ষণ না ফয়সালা করেন আল্লাহ। বস্তুতঃ তিনি হচ্ছেন সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। -১০:১০৮-১০৯

সাফায়াত সংক্রান্ত কতিপয় কুরআনী আয়াত
———————————————

শাফায়াত সম্পর্কিত আমাদের সমাজে বিদ্যমান প্রচলিত বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণাকে রদ করে কুরআন আমাদেরকে ভিন্ন ও সুস্পষ্ট জ্ঞান প্রদান করে। অত্যন্ত দ্ব্যর্থহীন ভাবে জানিয়ে দেয়া হয় যে, শাফায়াত সম্পর্কিত পূর্ণ এখতিয়ার একমাত্র আল্লাহরই নিকট সমর্পিত।

আল্লাহ ব্যতীত কোন সুপারিশকারী নেই

مَا لَكُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَلِيٍّ وَلَا شَفِيعٍ أَفَلَا تَتَذَكَّرُونَ

আল্লাহ যিনি নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনি আরশে বিরাজমান হয়েছেন। তিনি ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক ও সুপারিশকারী নেই। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না? -৩২:৪

أَمِ اتَّخَذُوا مِنْ دُونِ اللَّهِ شُفَعَاءَ قُلْ أَوَلَوْ كَانُوا لَا يَمْلِكُونَ شَيْئًا وَلَا يَعْقِلُونَ

তারা কি আল্লাহ ব্যতীত সুপারিশকারী গ্রহণ করেছে? বলো, তাদের কোন এখতিয়ার না থাকলেও এবং তারা না বুঝলেও? -৩৯:৪৩

وَلَا يَمْلِكُ الَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِهِ الشَّفَاعَةَ إِلَّا مَنْ شَهِدَ بِالْحَقِّ وَهُمْ يَعْلَمُونَ

তিনি ব্যতীত তারা যাদের পুজা করে, তারা সুপারিশের অধিকারী হবে না, তবে যারা সত্য স্বীকার করত ও বিশ্বাস করত। -৪৩:৮৬

وَأَنْذِرْ بِهِ الَّذِينَ يَخَافُونَ أَنْ يُحْشَرُوا إِلَى رَبِّهِمْ لَيْسَ لَهُمْ مِنْ دُونِهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ

তুমি এ কুরআন দ্বারা তাদেরকে ভয়-প্রদর্শন করো, যারা আশঙ্কা করে স্বীয় পালনকর্তার কাছে এমতাবস্থায় একত্রিত হওয়ার যে, তাদের কোন সাহায্যকারী ও সুপারিশকারী হবে না- যাতে তারা গোনাহ থেকে বেঁচে থাকে। -৬:৫১

وَذَكِّرْ بِهِ أَنْ تُبْسَلَ نَفْسٌ بِمَا كَسَبَتْ لَيْسَ لَهَا مِنْ دُونِ اللَّهِ وَلِيٌّ وَلَا شَفِيعٌ

আর এ দ্বারা স্মরণ করিয়ে দাও পাছে কোনো প্রাণ বিধবস্ত হয়ে যায় যা সে অর্জন করে তার দ্বারা, তার জন্য আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো অভিভাবক থাকবে না, আর না কোনো সুপারিশকারী। -৬:৭০

وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ قُلْ أَتُنَبِّئُونَ اللَّهَ بِمَا لَا يَعْلَمُ فِي السَّمَاوَاتِ وَلَا فِي الْأَرْضِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ

আর ওরা আল্লাহকে ছেড়ে দিয়ে তার উপাসনা করে যা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে না বা তাদের উপকারও করতে পারে না, আর তারা বলে- এরা আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে সুপারিশকারী। বলো- তোমরা কি আল্লাহকে জানাতে চাও যা তিনি জানেন না মহাকাশে আর পৃথিবীতেও না? তারঁই সব মহিমা! আর তারা যাকে অংশী করে তা হতে তিনি বহু ঊর্ধ্বে। -১০:১৮

কিয়ামতের দিনকে মোকাবেলায় কুরআন সবাইকে ব্যক্তিগত প্রস্তুতির জন্য তাগিদ দেয়

يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يَشْفَعُونَ إِلَّا لِمَنِ ارْتَضَى وَهُمْ مِنْ خَشْيَتِهِ مُشْفِقُونَ

তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে যা আছে, তা তিনি জানেন। তারা শুধু তাদের জন্যে সুপারিশ করে, যাদের প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট এবং তারা তাঁর ভয়ে ভীত। -২১:২৮

وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ

আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না। -২:৪৮

وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا تَنْفَعُهَا شَفَاعَةٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ

তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না, কার ও সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না। -২:১২৩

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا أَنْفِقُوا مِمَّا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ يَوْمٌ لَا بَيْعٌ فِيهِ وَلَا خُلَّةٌ وَلَا شَفَاعَةٌ وَالْكَافِرُونَ هُمُ الظَّالِمُونَ

হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, সেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম। -২:২৫৪

কোন সুপারিশকারীর সুপারিশে উপকার আসবে না

أَأَتَّخِذُ مِنْ دُونِهِ آَلِهَةً إِنْ يُرِدْنِ الرَّحْمَنُ بِضُرٍّ لَا تُغْنِ عَنِّي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا وَلَا يُنْقِذُونِ

আমি কি তাঁর পরিবর্তে অন্যান্যদেরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করব? করুণাময় যদি আমাকে কষ্টে নিপতিত করতে চান, তবে তাদের সুপারিশ আমার কোনই কাজে আসবে না এবং তারা আমাকে রক্ষাও করতে পারবে না। -৩৬:২৩

وَكَمْ مِنْ مَلَكٍ فِي السَّمَاوَاتِ لَا تُغْنِي شَفَاعَتُهُمْ شَيْئًا إِلَّا مِنْ بَعْدِ أَنْ يَأْذَنَ اللَّهُ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَرْضَى

আকাশে অনেক ফেরেশতা রয়েছে। তাদের কোন সুপারিশ ফলপ্রসূ হয় না যতক্ষণ আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা ও যাকে পছন্দ করেন, অনুমতি না দেন। -৫৩:২৬

فَمَا تَنْفَعُهُمْ شَفَاعَةُ الشَّافِعِينَ

অতএব, সুপারিশকারীদের সুপারিশ তাদের কোন উপকারে আসবে না। -৭৪:৪৮

وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ مِنْ شُرَكَائِهِمْ شُفَعَاءُ وَكَانُوا بِشُرَكَائِهِمْ كَافِرِينَ

তাদের দেবতা গুলোর মধ্যে কেউ তাদের সুপারিশ করবে না। এবং তারা তাদের দেবতাকে অস্বীকার করবে। -৩০:১৩

وَأَنْذِرْهُمْ يَوْمَ الْآَزِفَةِ إِذِ الْقُلُوبُ لَدَى الْحَنَاجِرِ كَاظِمِينَ مَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ حَمِيمٍ وَلَا شَفِيعٍ يُطَاعُ

আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে। -৪০:১৮

অতএব, আর বেশি বাক্যব্যয় নয়। বাজারে প্রচলিত ‘শাফায়াতের’ গল্পে ভুলে আমরা যেন আমাদের বিচার দিবসের প্রস্তুতির বিষয়ে উদাসীন-গাফেল হয়ে না যাই। আল্লাহই সম্যক অবগত।

[আমার লেখার বিপরীতে ডা. জাকির নায়েক কর্তৃক এই হাদীস দিয়ে শেষনবীর সর্বশ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদনের উত্তরে লিখিত। ইমাম-আলেম-উলামা, স্কলার দাবীদার সকলের কর্তব্য কুরআন দিয়ে এই লেখায় যদি কোন ভুল থাকে তা ধরিয়ে সংশোধন করে দেয়া; আর যদি তা শুদ্ধ বলে প্রতিয়মান হয়, তবে এই সত্যকে স্বীকার করে নিয়ে জনসমক্ষে ঘোষণা দিয়ে তা জানিয়ে দেয়া।]

*******************************

For/against on Hadith

আনোয়ার আলী

যত অপ্রিয়ই হোক, সত্য বলতে আমি দ্বিধা করি না। আমি সদাই সত্যে অবিচল। অন্যের কাছে থেকে কিছু জানা আমার শখ।

আনোয়ার আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাদিসের পক্ষে-বিপক্ষের অন্ধ অনুসারীরা এবং মুসলিম আকিদা-

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১০:০৩

হাদিসের পক্ষে বিপক্ষে শুধু আধুনিক সময়ে নয়, সেই মহানবির আমল থেকেই বিতর্কের সৃষ্টি। মহানবি হাদিস লিপিবদ্ধ করতে নিষেধ করেছিলেন, যাতে মানুষ কোরআনের পাশাপাশি আরেকটি গ্রন্থকে স্থান না দেয়। চার খলিফার আমলে কেউই হাদিস গ্রন্থনা করতে সাহস করেননি। মহানবির আদেশকে উপেক্ষা করে তার মৃত্যুর ২৫০-৩০০ বছর পরে মূলতঃ চূড়ান্তভাবে হাদিস গ্রন্থনা শুরু হয়। সর্বপ্রথম ইমাম বাগাবী ও ইমাম মালেক (রা) হাদিস গ্রন্থনা করেন। কারো কারো মতে ইমাম মালেকই প্রথমে গ্রন্থনা করেন। ইসলামী স্কলারদের মতে, ইমাম বুখারী ও মুসলিমমরাই ‘সহি’ হাদিস গ্রন্থনা করেন।

হাদিস গ্রন্থনার পক্ষে যুক্তি:
মহানবি হাদিস লিখে রাখতে নিষেধ করেছিলেন, এ কথাটাও মানুষ জেনেছে সরাসরি হাদিস গ্রন্থ থেকেই। লিখে রাখতে নিষেধ করার কারন হলো, কোরআনের সাথে যাতে মহানবির কথা মিশ্রিত হয়ে না যায়। তবে মহানবি বিদায় হজ্বের সময় বলেছিলেন, তার বক্তব্য যাতে অন্যান্যের নিকট পৌঁছে দেয়া হয়। মহানবির মৃত্যুর পর হাদিস প্রচার প্রসারে কোন নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
উপরন্তু পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,

“যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রাসূলিল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা (উসুওয়াতুল হাসানা) রয়েছে। (৩৩:২১)

“বলুন, তোমরা যদি আল্লাহকে ভালবেসে থাক, তবে আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের সমুদয় পাপ মার্জনা করবেন। আর আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল করুণাময়।” (সূরা আলে ইমরানঃ ৩১)

আল্লাহ ও রাসুলের অনুগত হও। যদি তারা মূখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রাখ আল্লাহ কাফিরদের পছন্দ করেন না। [৩: ৩২]

তোমরা আল্লাহ-রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা জ্ঞানী তাদের আদেশ পালন করো। [৪: ৫৯]

হে মুমিনগণ! রাসুল যখন তোমাদের এমন কিছুর দিকে ডাকে যা তোমাদের প্রাণবন্ত করে, তখন আল্লাহ ও রাসুলের ডাকে সাড়া দিবে। [৮: ২৪]

আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর। [৮: ১]

কেহ রাসুলের আনুগত্য করলে সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং বিমূখ হলে তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করিনি। [৪: ৮০]

“তিনি নিজের পক্ষ থেকে প্রবৃত্তি তাড়িত হয়ে কোন কথা বলেন না, তিনি যা বলেন তা ওহী, যা তাঁর নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।” (সূরা নাজমঃ ৩-৪)

“আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূল কোন বিষয় ফায়সালা করলে কোন ইমানদার পুরুষ ও ইমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করার কোন অধিকার নেই। যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের আদেশ অমান্য করবে, সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হবে।” (সূরা আহযাবঃ ৩৬)

কোরআনের উল্লেখিত বানী মতে, হাদিস প্রচার প্রসার অবশ্যই পালনীয়। আবার এই আয়াত সমুহের ভিন্ন ব্যাখ্যাও অনেকে দিয়েছেন। তাদের মতে কোরআন মানা মানেই নবিকে মানা। নবিই কোরআন, কোরআনই নবি। এখানে হাদিসের কোন প্রসঙ্গ নেই।

নানা বিধি নিষেধের পরও মুসলমানেরা নানা দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছে, শিয়া, সুন্নি, সালাফী, হানাফি, হাম্বলী, শাফেয়ী, আহলে হাদিস, আহলে কোরআন, বেরেলভী, দেহলভী, ইত্যাদি ইত্যাদি আরো কত কি। এদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ আঙ্গিকে হাদিস মানেন। একেকজনের মানদন্ড একেক রকম। প্রধান দুটি দলের মধ্যে সুন্নিরা মানেন সিহাহ সিত্তা মানে ৬টি হাদিসগ্রন্থ আর শিয়ারা মানেন সিহা খামছা বা ৫টি হাদিসগ্রন্থ। হাদিস লিখিত হওয়ার বিষয়ে এই দুই দলেই তেমন কোন পার্থক্য নেই। তবে সুন্নিরা বুখারীর মানদন্ডে হাদিসকে গ্রহন বর্জন করেন। তা হলো, সনদ (কে কার কাছ থেকে শুনেছেন তার ধারাবাহিকতা), রাব্বি (যিনি বর্ণনা করেছেন), মতন (হাদিসের মুল কথা)। হাদিস সহি জইফের এই মানদন্ড ইমাম বুখারীর প্রবর্তিত। তিনি নিজেই লক্ষ লক্ষ হাদিস সংগ্রহ করেছেন এবং নিজের মানদন্ডে লক্ষ লক্ষ হাদিস বাদও দিয়েছেন। ইমাম মুসলিম ও অন্যান্যের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। শিয়াদের হাদিসের মানদন্ড হলো কোরআন। অর্থাৎ তারা সনদ, রাব্বির ধার ধারেননি, হাদিসের বক্তব্য কোরআনের সাথে না মিললে তারা সেটা গ্রহন করেননি। উপরন্তু তারা আলী ও আহলে বাইতকে অধিক গুরুত্ব দিতে গিয়ে অনেক সাহাবীকেও অবজ্ঞা করেছেন। এরপরও শিয়ারা নিজেরাই নানা দলে উপদলে বিভক্ত। কতেক দলকে তো মুসলিমই বলা যায় না। অন্যদিকে সুন্নিদের সিহা সিত্তা আবু হুরাইরা দিয়ে পরিপূর্ণ হলেও, আলী, ফাতেমা, হাসান, হুসাইনের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। নিরপেক্ষতার খাতিরে কিছু রেওয়াত নেয়া হয়েছে মাত্র। কাজেই হাদিস গ্রন্থনার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিফলন পরিলক্ষিত হয়।

শিয়া সুন্নি উভয় দলেই কট্টর হাদিস অনুসারী আছেন। কট্টর হাদীস অনুসারীরা হাদিস অস্বীকার আর কোরআন অস্বীকারকে একই রকম মনে করেন। যারা হাদিস অস্বীকার করেন, তাদেরকে কাফির ফতোয়া দেন তারা।

হাদিস অনুসারীরা কোরআনকে পরিপূর্ন গ্রন্থ স্বীকার করলেও এটাও স্বীকার করেন যে, হাদিস ছাড়া কোরআন বোঝা সম্ভব নয়। কোরআনে অনেককিছুই নেই, যা কেবল হাদিস থেকে বোঝা সম্ভব। উদাহরন দিয়ে তারা বলেন, হাদিস ছাড়া কোরআন বুঝার প্রচেষ্টা করতে গেলে অন্ধের হাতী দেখার মত অবস্থা হবে। লক্ষ্য করলে দেখা যায় কোরআনের অনেক আয়াতে বাহ্যত কন্ট্রাডিকশন মনে হয়, যেমন কখনও কোরআনে দেখা যায় মুসলিমদেরকে বলা হচ্ছে কাফিরদেরকে হত্যা করতে (সুরা: ৯-৩) কখনও মুসলিমদেরকে হুকুম দেয়া হচ্ছে অবিশ্বাসী তথা কাফিরদেরকে তাদের পৌত্তলিক ধর্ম পালনে তথা মূর্তি পূজায় বাঁধা না দিতে (সুরা ১০৯: ১-৬)। হাদিসের ব্যাখ্যা ছাড়া এসব কন্ট্রাডিকশান দুর করা সম্ভব নয়। কোরআনে বলা হয়েছে মৃত প্রাণী খাওয়া হারাম। তাহলে তো মৃত মাছ খাওয়া যায় না। হাদীস বলছে পানির মাছ মৃত হলেও তা খাওয়া হালাল। কুরআনে পশুকুলের মধ্যে শুধু শুকরকেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কুকুর-শিয়াল, বিড়াল, বাঁদর, বাঘ-ভল্লুক, সাপ-বিচ্ছু, পোকা-মাকড়, কিট-পতঙ্গ, ঈগল, চিল, বাজ, শুকন খেতে নিষেধ করা হয়নি। এগুলোর মুলনীতি হাদিসেই পাওয়া যায়। যেমন “দাঁত দ্বারা শিকার করে এরকম সকল হিংস্র পশু হারাম। আর থাবা দিয়ে শিকার করে এমন প্রত্যেক পাখি হারাম।” (বুখারী ও মুসলিম)। কোরআনের ব্যাখ্যা এবং মাসালা মাসায়েল জানতে হলে হাদিসের অনুসরন ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। হাদিস ছাড়া সুন্নাহর তথ্য পাওয়ার কোন বিকল্প রাস্তা নাই। যেসব হাদিসবেত্তা হাদিস গ্রন্থিত করেছেন, তাদের ধারাবাহিকতা নিম্নে দেয়া হলো-
০১. ইমাম বাগাবী মৃত্যু: ১৫৬ হিজরী
০২. ইমাম মালেক মৃত্যু: ১৭৯ হিজরী
০৩. ইমাম শাফেয়ী মৃত্যু: ২০৪ হিজরী
০৪. ইমাম আহমেদ মৃত্যু: ২৪১ হিজরী
০৫. ইমাম দারেমী মৃত্যু: ২৫৫ হিজরী
০৬. ইমাম বুখারী মৃত্যু: ২৫৬ হিজরী
০৭. ইমাম মুসলিম মৃত্যু: ২৬১ হিজরী
০৮. ইমাম ইবনে মাজাহ মৃত্যু: ২৭৩ হিজরী
০৯. ইমাম আবু দাউদ মৃত্যু: ২৭৫ হিজরী
১০. ইমাম তিরমিযী মৃত্যু: ২৭৯ হিজরী
১১. ইমাম নাসায়ী মৃত্যু: ৩০৩ হিজরী
১২. ইমাম দারা কুতনী মৃত্যু: ৩৮৫ হিজরী
১৩. ইমাম বায়হাকী মৃত্যু: ৪৫৮ হিজরী
১৪. ইমাম রাযীন মৃত্যু: ৫২৫ হিজরী
১৫. ইমাম ইবনে জাওযী মৃত্যু: ৫৯৭ হিজরী
১৬. ইমাম নববী মৃত্যু: ৬৭৬ হিজরী

সুন্নি, সালাফি আর আহলে হাদিসের মতানুসারীরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, উপরোক্ত সকল গ্রন্থের মধ্যে কেবল বুখারী এবং মুসলিম পরিপূর্ণ সহি গ্রন্থ। কোরআনের পরেই বুখারীর স্থান। এ হাদিস যারা অস্বীকার করবে তারা মুসলমান নয়। আল্ আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রখ্যাত আলেমদের মতে যারা শিয়া ফিকাহকেও ইসলামের ৫ম মাজহাব (school of Islamic thought) হিসাবে গ্রহণ করেন তাদের মতে “কোরআন অনলিরা” অমুসলিম। ড: ইউসুফ আলবাদরি ( Member, Higher Assembly of Islamic Affairs,Egypt ) বলেন,
কোরআন অনলিরা যদিও বলে কোরআনকে মানে কিন্তু তারা কোরআনের আয়াতে যে বলা হয়েছে “He who obeys the messenger obeys God?” তা মানতে চায় না! যারা নবীকে মানেনা নবীর সুন্নাহকে অস্বীকার করে শুধু কোরআন নিয়ে থাকতে চায় এরা বিপথগামী, মুরতাদ বা apostates. তাদের মতে হাদিস অস্বীকার করা মানে কোরআন অস্বীকার করা।

হাদিস বিরোধীদের বক্তব্য-
হাদিস বিরোধীরা বলেন, কোরআন মানা আর রাসুলকে মানা একই কথা। আর রাসুল তো হাদিস গ্রন্থনা নিষিদ্ধ করেছেন। চার খলিফা এবং সাহাবীদের কেউই একাজ করেননি। মহানবির মৃত্যুর পরও এই নিষেধাজ্ঞা বজায় ছিল, কেননা খলিফা আবু বকর ও খলিফা ওমর তাদের নিজেদের সংরক্ষিত লিখিত হাদিসগুলো বিনষ্ট করে ফেলেছিলেন। কেবল আলীই তার তলোয়ারের খোপে কিছু হাদিস লিখে রেখেছিলেন মর্মে জানা যায়। মহানবি বলেছেন, আমার কাছ থেকে তোমরা কোরান ছাড়া আর কিছুই লিখবে না।যদি কেউ লিখে থাক তবে অবশ্যই তা নষ্ট করে ফেল।” [মুসলিম, ভলিউম১, পৃষ্ঠা ২১১, হাদীস নং ৫৯৪, প্রিন্টার-মতকবে আদনান, বৈরুত,১৯৬৭; বংগানুবাদ: আ. ফা ভূইয়া, ১ম খ. ১ম সংস্করণ, পৃ: ৫১]।

মহানবির মৃত্যুর ২৫০-৩০০ বৎসর পর মহানবির নামে অমুক তমুকের থেকে, তমুক আরেক তমুকের থেকে শুনা কথার গ্রন্থনা মুসলমানদের জন্য পালনীয় নয়। কথিত সহি হাদিসগ্রন্থ আদৌ সহি নয়। এইসব হাদিসগ্রন্থগুলো আবু হুরাইরা দিয়ে পরির্পূণ, যাকে মা আয়শা মিথ্যাবাদী বলে উল্লেখ করেছিলেন এবং খলিফা ওমর অর্থ আত্মসাতের দায়ে পদচ্যুত করেছিলেন। আবু হুরাইরা চাতুর্য্যের মাধ্যমে আলী বিরোধী হাদিস বর্ণনা করে হযরত মুয়াবিয়ার দরবারে ঠাই করে নিয়েছিলেন। আর উমাইয়া বংশ সুদীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকায় আবু হুরাইরা বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছিলেন। যদিও মুহাদ্দেসরা বলেছেন খলিফা ওমর আবু হুরাইরাকে পদচ্যুত করলেও পরে তদন্ত করে নিজের ভুল বুঝতে পারেন এবং তাকে পদ নিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু আবু হুরাইরার আত্মসন্মানে আঘাত লাগায় তিনি আর পদ গ্রহন করেননি। হাদিস বিরোধীদের মতে এ ধরনের বক্তব্য একেবারেই মিথ্যা। কেননা যে ওমর নিজ পুত্রকে শাস্তি দিতে কুন্ঠিত হন না, তিনি তদন্ত না করেই সাহাবী আবু হুরাইরাকে পদচ্যূত করেছিলেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য হতেই পারে না। এতে ওমরের সামর্থ্যকে হাদিস-বিশারদরা অপমান ও খাটো করেন। আবু হুরাইরা নিজেই স্বীকার করেছেন, ওমরের বেতের ভয়ে তিনি হাদিস বর্ণনা করতেন না। হাদিস বিরোধী কট্টরপন্থীরা বলেন, যারা মহানবির হাদিস গ্রন্থনার নিষেধাজ্ঞার বানীকে অস্বীকার করে হাদিস গ্রন্থিত করেছেন, তারা কোনভাবেই মুসলমান থাকেননি। হাদিসপন্থীরা বিশ্বাস করেছে, হাদিস লিখে না রাখলে ইসলাম ধ্বংস হয়ে যেতো। হাদিস-বিরোধীরা কথিত হাদিসপন্থীদের এ ধরনের আকিদাকে কুফরি ও ইসলাম বিধ্বংসী বলে মন্তব্য করেন। হাদিসের সহি জইফ নির্ধারনে হাদিসবেত্তরা নিজেরাই কতেক মানদন্ড তৈরী করে নিয়েছেন, যা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। কেননা তাদের বর্ণিত হাদিসে কোরআনের বিপরীত অনেক হাদিস আছে এবং মহানবির পবিত্র চরিত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এমন হাদিসকেও সহি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। যা কোনভাবেই সত্য হতে পারে না। আবার এক হাদিসের সাথে অন্য হাদিসের কন্ট্রাডিকশান তো আছেই।

কোরআনের বানীকেও আল্লাহপাক হাদিস বলেই বর্ণনা করেছেন। কোরান মোতাবেক যারা নির্দেশ দেয় না, বিচার মীমাংসা করে না, তারাই কাফের, ফাছেক ও জালেম। (৫: ৪৪-৪৯)। রাসুল স্বয়ং কোরান মেনে চলেছেন, কোরান মানার নির্দেশ দিয়েছেন। কোরানের বাহিরে তিল পরিমাণ কথা কাজ করেননি; করলে স্বয়ং আল্লাহ তাঁর জীবন ধমনী কেটে ফেলতেন। [৬৯: ৪৪-৪৭] তিন শতাব্দী পরে দলীয় নেতাদের স্ব-লিখিত এবং কথিত হাদিসগুলিকেই যে রাসুলের কথা-কাজ বলে বিশ্বাস করতে হবে অথবা সিহা সিত্তা বা সিহা খামছা কিম্বা ইমাম বুখারী-মুসলিমদের উপর নিঃশর্ত ঈমান আনতে হবে, এমন কোন ইঙ্গিত-ইসারা আল্লাহর কালামে ও মহানবির বানীতে নেই। তাদের মতে মুসলমানদের মানতে হবে কোরআন ও মহানবির ইসলাম, কোনভাবেই বুখারীর ইসলাম নয়।

হাদিস বিরোধীদের মতে মহানবি, তার সাহাবা, তাবেইন এবং তাবেতাবেইনদের জীবন ছিল খুবই সহজ সরল এবং আল্লাহর প্রতি ঈমানদীপ্ত স্বর্গীয় জীবন। আর মহানবির নিষেধাজ্ঞার বানীকে উপেক্ষা করে যে সময় থেকে হাদিস গ্রন্থনা শুরু হয় তখন থেকেই মুসলমানের জীবনে নেমে আসে সত্য-মিথ্যার নানা বাধা নিষেধের খড়গ আর মানুষের জীবন ক্রমে পরিণত হয় জাহান্নামে। কথিত সহি হাদিসের যাতাকলে আজো মুসলমানেরা পিষ্ঠ তো হচ্ছেই, তাদের জীবনও পরিণত হয়েছে জড় পদার্থে। কথিত হাদিসী মতে ইসলাম মানতে গেলে মানুষ এক কদমও এগুতে পাবে না। আখেরাতের আগেই দুনিয়া জাহান্নামে পরিণত হয়ে যায়।

অথচ ইসলাম পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ ধর্ম। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, আমি তোমার উপর কুরআন এ জন্য নাযিল করিনি যে তুমি দু:খ-কষ্ট ভোগ করবে। (সূরা ত্বা-হা, আয়াত: ১-২)

আল্লাহ তোমাদের পক্ষে যা সহজ আল্লাহ্ তাই চান ও তোমাদের পক্ষে যা কষ্টকর তা তিনি চান না…”[সূরা বাকারাহ্; ০২:১৮৫]

আল্লাহ তোমাদের উপর কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চান না। (সূরা আল মায়েদা, আয়াত ৬)

“তিনি (আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন) দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন কঠোরতা আরোপ করেননি’ ”[সূরা হজ্ব; ২২:৭৮]

‘আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাজিল করেছি; সেটি এমন যে, প্রত্যেক বস্তুর সত্য ও সুস্পষ্ট বর্ণনা; হেদায়াত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্য সুসংবাদ (সূরা নাহল, আয়াত ৮৯)।

আল্লাহতালা সহজ করে দিলেও, গোমরাহীতে লিপ্ত লোকেরা কঠোরতার পথ বেছে নিয়েছে। আল্লাহপাক বলেন, ‘একদল লোককে তিনি সঠিক পথ দেখিয়েছেন, আর দ্বিতীয় দলটির উপর গোমরাহী ও বিদ্রোহ ভালোভাবেই চেপে বসেছে; এরাই (পরবর্তী পর্যায়ে) আল্লাহ তালাকে বাদ দিয়ে শয়তানদের নিজেদের অভিভাবক বানিয়ে নিয়েছে, (এ সত্বেও) তারা নিজেদের হেদায়াতপ্রাপ্ত মনে করে। (সুরা আল আ’রাফ ৭: ৩০)

জীবনকে শরীয়ত সম্মতভাবে উপভোগ করার জন্যে আল্লাহপাক বরং তাগিদ দিয়েছেন, একই সুরার পরবর্তী আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, হে আদম সন্তানেরা, তোমরা প্রতিটি এবাদতের সময়ই তোমাদের সৌন্দর্য গ্রহন করো, তোমরা খাও এবং পান করো, তবে কোন অবস্থাতেই অপচয় করো না। আল্লাহ অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না। (সুরা আল আ’রাফ ৭: ৩১)

কিন্তু এইসব আয়াতের বিপরীতে হাদিসপন্থীরা মানুষের জীবনকে কঠিন থেকেও কঠিনতর করে নানা ফেতনার জন্ম দিয়েছেন, জন্ম দিয়েছেন কট্টরতার। কেউ যদি কোরআনের একটা আয়াত বলেন, হাদিসপন্থীরা তার বিপরীতে হাজারটা হাদিস এনে হাজির করে ফেলেন। সংক্ষেপে এই হলো হাদিস বিরোধীদের যুক্তি।

হাদিস বিরোধীতার সবচেয়ে পুরানো যে দলিল পাওয়া যায় , সেটা হলো ৭৬হিঃ/৬৯৫খৃঃ খলিফা আব্দুল মালেককে লেখা আব্দুল্লাহ ইবনে ইবাদের লেখা একটা চিঠি। উক্ত চিঠিতে কুফাবাসীদেরকে ভর্ৎসনা করা হয়েছে কোরানকে পরিত্যাগ করে হাদিসকে ধর্মের ভিত্তি হিসাবে গ্রহন করার জন্য।”তারা এমন একটি বইতে বিস্বাস করে যা আল্লাহর থেকে নয় , মানুষের হাত দ্বারা রচিত এবং এটাকে রসূলের বাণী বলে দাবী করে।”(Michael Cook, Muslim Dogma, Cambridge University Press, Cambridge, 1981)

আব্বাসীয় আমলে ও পরবর্তিতে সেলজুক খলিফাদের শাসনামলে হাদিস বিরোধীদের সকল বই ও গ্রন্থাগার পুড়িয়ে দেয়ার কারনে হাদিস বিরোধী লেখা পাওয়া যায় না। তবে এদের উপস্থিতি ও যুক্তি সম্পর্কে জানা যায় শরিয়া আইনের জনক ও প্রবর্তক ইমাম শাফেয়ীর বই ‘জিমা আল ইলম’ ও ইবনে কুতাইবার লেখা থেকে। তাদের লেখা থেকে জানা যায় তাদের সময়ে হাদীস বিরোধীতা ছিল সর্বব্যাপি এবং তাদের লেখায় তারা হাদিস বিরোধীদের যুক্তিকে খন্ডন করার চেষ্টা করেছেন।

চতুর্দশ শতাব্দির দুই স্কলার আব্দুর রহমান বিন আবু বকর সুয়ুতি (লেখক ‘তাদরিব আর রাওয়ি’ ১৩৭৯সাল) ও ইবনে হাজার ( লেখক ‘হায়দাল-সারি’ ১৩৮৩সাল) এবং বিংশ শতাব্দির পাক ভারত উপমহাদেশের সাইয়িদ আহমদ খান (১৮১৭-১৮৯৮) ও মিশরের মুহাম্মদ তৌফিক সিদকির (“al-Islam huwa ul-Qur’an Wahdahu” “Islam is the Qur’an Alone”১৯২০) লেখা পাওয়া যায়। এরা সকলেই হাদিস বিরোধী ও সমালোচক ছিলেন।

মুসলিম আকিদা
কোরআনের নির্দেশ অনুযায়ী মুসলিমরা মধ্যপন্থা অনুসরন করে থাকেন। আর মুসলমানেরা শিয়া, সুন্নিদের মত কোন দল-উপদলে বিভক্ত নন। তাদের পরিচয় কেবলই ‘মুসলিম’। এর সাথে তারা অন্য কোন কিছুই যুক্ত করেন না। কেননা আল্লাহপাক বলেন,
আর কে বেশী উত্তম হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর পথে আহবান করে এবং আল্রাহর নির্দেশ মেনে চলে এবং বলে, আমি ‘মুসলিম’ [আল কোরআন, ৪১: ৩৩]
সুরা আল ইমরানে বলা হয়েছে, তাহলে বলে দিন (ওদেরকে) তোমরা সাক্ষী থাকো একথার যে আমরা সর্বান্তকরনে আল্লাহতে আত্মসমর্পনকারী ‘মুসলিম’ [৩: ৬৪] এখানে হাদিসপন্থীরা নিজেদের নানা নামে অভিহিত করার পক্ষে যে যুক্তি দেন তা হলো, মহানবিকে আল্লাহপাক কয়েকটি নামে উপনামে ডেকেছেন, কাজেই মুসলিমরাও নিজেদের মানহাজ অনুযায়ী ভিন্ন নামে পরিচিত হতে কোন অসুবিধা নেই। একটু লক্ষ্য করলেই বুঝবেন, এই যুক্তি আসলে কোরআনের বিরুদ্ধেই একটা খোঁড়া যুক্তিমাত্র। আর কাঠমোল্লাদের যুক্তির কোন অভাব নেই, যেখানে সাথে রয়েছে কথিত ‘সহি’ হাদিস। পর্যালোচনা দেখা যায়, হাদিস লিখে রাখার বিষয়ে মহানবির নিষেধাজ্ঞা রহিত হয়ে যায়নি। সে রকমটা হলে চার খলিফা হাদিস গ্রন্থনা করতে বারন করতেন না। তথাপি ইমাম মালেক, বুখারী, মুসলিম গং যে সব হাদিস গ্রন্থনা করেছেন, সেগুলোকে বাতিল বলারও কোন উপায় নেই। তারা ইস্তেখারা করে হাদিস গ্রন্থিত করেছেন মর্মে শোনা যায়। এইসব হাদিস দ্বারা কোরআনের ব্যাখ্যা করা যায়। তবে সহি হাদিসের মানদন্ড কেবল সনদ, রাবী আর মতন-এর উপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে সেটা কোরআনের বিপরীত কিছু বলছে কিনা তার উপর। কোরআনের বিপরীত হলে সনদ-রাবী-মতন যতই শুদ্ধ হোক না কেন, মুসলমানেরা তা কোনভাবেই গ্রহন করেন না। মুসলমানেরা সব সময় কোরআনকেই একমাত্র ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করেন। কোরআনের পাশাপাশি মানব-রচিত আর কোন গ্রন্থই তাদের কাছে ধর্মীয় গ্রন্থ হিসাবে বিবেচিত হয় না। হাদিস বিরোধীদের সাথে তাদের পার্থক্য হলো, হাদিস বিরোধীরা সকল হাদিস বর্জন করেন এবং কট্টরতার আশ্রয় নেন। কিন্তু মুসলমানেরা কেবলমাত্র কোরআন পরিপন্থী হাদিসগুলোকে বর্জন করেন এবং কোন ব্যক্তি বিশেষকে ‘বিশেষ’ গুরুত্ব দিয়ে কোরআনের সমপর্যায়ের করে ফেলেন না। কোরআনের পরিপন্থী নয়, এমন লিখিত বা অলিখিত সকল হাদিসই তারা মেনে চলেন। কেননা মধ্যপন্থা গ্রহন করতেই আল্লাহপাক মুসলিমদের তাগিদ দিয়েছেন।
আল্লাহপাক আমাদেরকে সত্যটা বোঝার তৌফিক দিন।

[তথ্যসুত্র: ইফা প্রকাশিত বুখারী, মুসলিম হাদিসগ্রন্থ, বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও অনলাইনে প্রকাশিক বিভিন্ন প্রবন্ধ নিবন্ধ অনুসরনে]
আরো জানতে ভিজিট করুন: http://www.anwarali.net

.

Path of Rosul

By tuhin farique fbfd

আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।

##যালিম ব্যক্তি সেদিন নিজ হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে, হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম! [25:27]

^^^^^^^ রাসুলের পথ কোনটা????
মানবরচিত হাদীস/ আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী কুরআন??

#তুমি বল,এটাই আমার পথ; প্রতিটি মানুষকে আমি আহবান করি সজ্ঞানে, আমি এবং আমার অনুসারীগণও; আল্লাহ মহিমান্বিত এবং যারা আল্লাহর সাথে শরীক স্থাপন করে আমি তাদের অন্তভুর্ক্ত নই।[12:108]

^^^^^^^আল্লাহর আয়াত অনুযায়ী রাসুলের পথ ছিল কুরআন,রাসুল কে অনুসরণ করতে চাইলে এই পথই অনুসরণ করতে হবে।

যারা আল্লাহর আয়াত মানে না-কাফির,যালিম,ফাসিক

যারা আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যান করে / যারা আল্লাহর আয়াত মানে না-

১. তারা নবীর শত্রু, শয়তান (৬:১১২)!
২. তারা তাগূত- জাহান্নামী (২:২৫৭)!
৩. তাদের অবস্থা হাঁপানো কুকুরের মত (৭:১৭৬)!
৪. তারা পুস্তকবহনকারী গাধার মত (৬২:৫)।
৫. তারা পশুর মত, বা তার থেকেও বিভ্রান্ত (৭:১৭৯)!
৬. তারা নিকৃষ্ট জীব (৮:২২)!
৭.তারা বধির ও মুক, অন্ধকারে রয়েছে (৬:৩৯)!
৮. তারা কাফির (৫:৪৪)!
৯. তারা যালিম (৫:৪৫)!
১০. তারা ফাসিক (৫:৪৭)!
১১. আল্লাহর আয়াত আসার পর যারা আল্লাহর আয়াত ভুলে থাকবে
তাদেরকে হাসরের মাঠে অন্ধ অবস্থায় উঠানো হবে (২০:১২৪-১২৭)!

### আমি আপনাকে কুরআনের আয়াত দারা গালি দিলাম ।

Source fbgp

Siam upto night not magrib

By zahir our wapp

[5/1, 10:46 AM] ‪+91 97077 58106‬: ———->আল্লাহর দেওয়া নিতিমালা করণীয়!
———->বাব দাদার নিতিমালা বর্জণীয়!
–সিয়াম (রোজা) পূর্ণ করুন লাইল (রাত) পর্যন্ত–
→কোরআন দেখুন……
সূরা: বাক্বারা
আয়াত: ১৮৭
…………………………………………………………………………..আর পানাহার কর, যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কার দেখা যায়! অতঃপর সিয়াম (রোজা) পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত……………………………………।
এখন প্রশ্ন হল রাত কখন হয়, এবং সন্ধা কখন হয় ???
রাত এবং সন্ধা এক নয়!
কোরআন দেখুন……
সূরা: আল ইনশিক্বাক
আয়াত: ১৬ এবং ১৭
১৬) আমি শপথ করি সন্ধাকালীন লাল আভারের
১৭) এবং রাত্রির, এবং তাতে যার সমাবেশ ঘটে।

এই দুইটা আয়াতে আমরা পেলাম
→ ১) শাফাক, অর্থ সন্ধা
→ ২) লাইল, অর্থ রাত।
এখন দয়াময় আল্লাহ কি সিয়াম পালন করতে হুকুম করেছেন, শাফাক (সন্ধা) পর্যন্ত ? নাকি
লাইল (রাত) পর্যন্ত ??
এখন আপনারাই বিবেচনা করুন, এবং দেখুন
সূরা: বাক্বারার ১৮৭ নং আয়াতে কি আছে ?

অনেক মুফতি আছে মনগরা ফতুয়া দেয় যে সূর্য ডুবে গেলেই রাত শুরু হয়,
এটা মিথ্যা ফতুয়া, সূর্য ডুবে গেলে শাফাক (সন্ধা) শুরু হয়, তার পর লাইল (রাত) শুরু হয়।

আর রাত হলো অন্ধকার,
কোরআন দেখুন….
সূরা: আন নাযিআ’ত
আয়াত: ২৯
তিনি এর রাত্রিকে করেছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন………………./

এবার দেখুন দয়াময় আল্লাহ শপথ করে চিনিয়ে দিচ্ছে রাতে কি আগমন করে!
সূরা: আত্ব-তারিক্ব
আয়াত: ১,২,৩
১) শপথ আকাশের এবং রাত্রিতে আগমনকারীর।
২) আপনি জানেন, রাত্রিতে আগমন হয় তা কি ?
৩) তা হল উজ্জল নক্ষত্র।

এবার দেখুন রাত শেষ হয় কখন!

সূরা: আল মুদ্দাসসির
আয়াত: ৩৩, ৩৪
৩৩) শপথ রাত্রির, যখন তার অবসান হয়।
৩৪) শপথ প্রভাতকালের, যখন তা
আলোকম্ভাসিত হয়।

দিন আলোকিতঃ
সূরা: লায়ল
আয়াত: ২
শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয়।

এক কথায় বলা যায় যে আলো ছারা দিন হয় না
এবং অন্ধকার ছারা রাত হয় না।

এখন প্রশ্ন হলো আমরা কি সিয়াম (রোজা) দিন পর্যন্ত করব নাকি রাত পর্যন্ত ?

আবারো দেখে নিন সূরা বাক্বারার ১৮৭ নং আয়াত।
………………………………………………………………………আর পানাহার কর, যতক্ষণ না কালো রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিস্কার দেখা যায়, এবং সিয়াম (রোজা) পূর্ণ কর লাইল (রাত) পর্যন্ত!……………………………………….।

ধন্যবাদ সবাইকে।
From FB☝

.
[5/1, 12:16 PM] Aliahmed(Alia): 👆🏾বঢ়িয়া!
.
🔺চিয়াম ৰাতিলৈকে সেইটো বঢ়িয়াকৈ বুজিলো.
নুবুজা সকলৰ বাবে দুখঃ সংবাদ হয়তো আহিব পাৰেযে আল্লাহে হয়তো কব(নকবওঁ পাৰে)-
” তোমালোকো কোৰআনক পৰিত্যাগ কৰি(যিটো ৰছুলে কমপ্লেইন কৰিবই) কিয় চিয়াম দিনতেই ভংগ কৰিছিলা”!
.
আৰু এটা কথা ,
🔺চিয়াম কেইদিন পালন কৰিব লাগে পৰিষ্কাৰকৈ বুজাই দিলে ভাল হয়!

From Wapp👍

[7/15/2017, 1:35 AM] Aliahmed(Alia): নাস্তিক MUFASSIL ISLAMbd(live outside bd) :-Against Islam:-

[7/15/2017, 1:36 AM] Aliahmed(Alia): নাস্তিক MUFASSIL ISLAMbd(live outside bd) :-Against Islam:-

[7/15/2017, 1:38 AM] Aliahmed(Alia): নাস্তিক MUFASSIL ISLAMbd(live outside bd) :-Against Islam:-

[7/15/2017, 1:43 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/CtAoKnxbUOY
[7/15/2017, 1:52 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/SQrr2YPA7bY
.
Nastik..
[7/15/2017, 2:13 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/0eCDY3aAlCg
.
1
[7/15/2017, 2:18 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/1ruhatJ06Jo
.
1
[7/15/2017, 2:47 AM] Aliahmed(Alia): https://muflihun.com/muslim/8/3424
[7/15/2017, 2:55 AM] Aliahmed(Alia): https://vimeo.com/66109897
[7/15/2017, 2:56 AM] Aliahmed(Alia): নাস্তিক MUFASSIL ISLAMbd(live outside bd) :-Against Islam:-

[7/15/2017, 2:57 AM] Aliahmed(Alia): The above 3 r of on same Muslim h. No. 3424👆
[7/15/2017, 4:48 PM] Aliahmed(Alia): http://ihadis.com:8080/
[7/15/2017, 5:21 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/HRdOUQ3h_Zc
[7/15/2017, 5:21 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/2rrXbXoiA-A
[7/15/2017, 5:24 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/JWKoJktk6_w
[7/15/2017, 5:49 PM] Aliahmed(Alia): Sahih Muslim Book 8 Hadith 3424

ENGLISHARABIC
‘ A’isha (Allah be pleased with her) reported that Sahla bint Suhail came to Allah’s Apostle (may peace be eupon him) and said: Messengerof Allah, I see on the face of Abu Hudhaifa (signs of disgust) on entering of Salim (who is an ally) into (our house), whereupon Allah’s Apostle (Peace be upon him) said: Suckle him. She said: How can I suckle him as he is a grown-up man? Allah’s Messenger (Peace be upon him) smiled and said: I already know that he is a young man ‘Amr has made this addition in his narration that he participated in the Battle of Badr and in the narration of Ibn ‘Umar (the words are): Allah’s Messenger (Peace be upon him) laughed.

Classification
Sahih

References
Muslim Book of Marriage #3424
Muslim 1453 a
Sahih Muslim Vol. 4, Book 8, Hadith 3424
Sahih Muslim Vol. 4, Book of Marriage, Hadith 3424

Link
Page: https://muflihun.com/muslim/8/3424
[7/15/2017, 5:57 PM] Aliahmed(Alia): https://vimeo.com/66109897
[7/15/2017, 10:21 PM] Aliahmed(Alia): http://www.letmeturnthetables.com/2008/08/does-islam-consider-women-like-donkeys.html?m=1
[7/16/2017, 1:32 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/6oBiLnOAnB8
[7/16/2017, 1:42 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/wU-t1JIeNv4
[7/16/2017, 4:31 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/KX-jxZaI7qY
[7/16/2017, 4:35 AM] Aliahmed(Alia): http://icraa.org/ghamidi-muwatta-return-eisa/#note-593-6
[7/16/2017, 6:01 AM] Aliahmed(Alia): Quran search
http://corpus.quran.com/qurandictionary.
[7/16/2017, 6:43 AM] Aliahmed(Alia): নাস্তিক MUFASSIL ISLAMbd(live outside bd) :-Against Islam:-

[7/16/2017, 6:43 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/6oBiLnOAnB8
[7/16/2017, 6:44 AM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/13NqAehjpqk
[7/16/2017, 1:14 PM] Aliahmed(Alia): OK may be fb
.
https://www.facebook.com/paigham.mustafa1
[7/16/2017, 2:48 PM] Aliahmed(Alia): Quran search
.
http://islamawakened.com/quran/5/3/default.htm
[7/16/2017, 4:25 PM] Aliahmed(Alia): May b ok

https://m.youtube.com/channel/UCiFYUGlBRPWjSHJkGku4fpg
[7/16/2017, 10:10 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/JsdKo4ODQ_U
[7/16/2017, 11:32 PM] Aliahmed(Alia): 📑How they(sects) reject Quran?📑
.
Part 2:- https://youtu.be/uBXbB_kwYPk
[7/17/2017, 12:06 AM] Aliahmed(Alia): 🤔15 days Nostalgia🤔
.
⛽চাকৰি জীৱনৰ শেষৰটো দিন⛽
.

❇চাকৰি জীৱনৰ শেষৰটো দিনত ডিফুৰ জামা মছজিদৰ ফজৰ ছালাত শেষ কৰি ওলাই আহোতে কাষতে থকা (intentionally) ইমাম চাহাবক সুধিলোঃ
.
-হিমাৰি( الْحِمَارِ) মানে কি?
♻ইমাম চাহাব কিছু নাৰ্ভাচ হৈ কলেঃ
-জানু, কৰবাত পাইছিলো, চিনাকি চিনাকি লাগিছে।
.
✈আমাৰ উদ্দেশ্য কাকো পাকত পেলাবলৈ নহয়। গতিকে ক’লোঃ
.
✈কেলেই, আপুনি এইমাত্ৰ ছালাতৰ প্ৰথম ৰাকাতত পঢ়ি আহিল দেখোন।
.
♻অ’ বুলিকৈ ইমাম চাহাবে mild smile এটা মাৰিলে।
.
✈ঠিক আছে। কিন্তু হিমাৰি মানে কি?
.
উত্তৰলৈ বাট নেচাই ক’লোঃ
✈হিমাৰি মানে গাধ। ইয়াৰ back ground ত story এটা আছে………..।
.
কিন্তু মোৰ story শুনিবলৈ ইমাম চাহাব ৰৈ নেথাকিল। কোবাকুবিকৈ আতৰি গ’ল।😁
.
⏰আতৰি যোৱাৰ কাৰণো নথকা নহয়।
.
✋কাৰণ দুহাৰিবলৈ মই আজি অতি লজ্জিত।
কেইমাহমান আগতে ময়েই তেওঁক অকলশৰীয়াকৈ পাই charge কৰিছিলোঃ কিয় আপুনি ৰুকুৰ পৰা চিজদাহলৈ যাওঁতে আগতে আঠু মাটিত দিব লাগে বুলি জুম্মাত ৱাজ কৰিছিল।
.

✌যোৱা 1st.week of May’2017 ৰ পৰা মই নিজেই আগতে আঠু মাটিত দিয়া আৰম্ভ কৰিছো।
.

♿সেই কাল সন্ধিয়াৰ(কমেও দুবছৰ ) কথাবোৰ মনত পৰিলে চৰম লজ্জিত ও চয়তানি গৌৰৱেৰে গৌৰাম্বিত(দাড়ি তামাম দীঘল কৰা, পেণ্ট ছুটি কৰা, পাগলৰ দৰে আমিনকৈ চিঞৰা) হোৱাৰ কাৰণে মনটো দুখেৰে ভৰি পৰে।
.

❤❤আলহামদুলিলল্লাহ। আজি চাকৰি জীৱনৰ শেষৰটো দিনত উপলব্ধি কৰিছো সঠিক দিশৰ সঠিক পথত আগুৱাইছো। ছালাত কেৱল দোৱাৰ বাবে। জ্ঞানৰ বাবে তাকেই বিচাৰিছো মহান আল্লাহ ৰাব্বুল আ’লামিনৰ ওচৰত।আমিন।।
.
☞আলিআ-৩০.০৬.২০১৭☜ডিফু☜

.
.

আল জুমু’ৱাহঃ 62:5
٥:٦٢
مَثَلُ الَّذِينَ حُمِّلُوا التَّوْرَاةَ ثُمَّ لَمْ يَحْمِلُوهَا كَمَثَلِ الْحِمَارِ يَحْمِلُ أَسْفَارًا ۚ بِئْسَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِ اللَّهِ ۚ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ
৬২:৫
যিসকলক তাওৰাতৰ দায়িত্বভাৰ দিয়া হৈছিল, কিন্তু সিহঁতে ইয়াক বহন কৰা নাছিল। সিহঁতৰ উদাহৰণ হৈছে- গাধৰ দৰে! যিয়ে বহু কিতাপৰ বোজা বহন কৰে। কিমান যে নিকৃষ্ট সেই সম্প্ৰদায়ৰ দৃষ্টান্ত যিহঁতে আল্লাহৰ আয়াতসমূহক মিছা বুলি অমান্য কৰে; আৰু আল্লাহে যালিম সম্প্ৰদায়ক হিদায়ত নকৰে।
[7/17/2017, 4:19 AM] Aliahmed(Alia): https://m.youtube.com/watch?v=QWzJ_nwWjps
[7/17/2017, 4:26 AM] Aliahmed(Alia): https://m.youtube.com/watch?v=J3bEDF0ekow
[7/17/2017, 4:43 AM] Aliahmed(Alia): https://m.youtube.com/watch?v=ZPu4NL43jXI
[7/18/2017, 5:18 AM] Aliahmed(Alia): https://m.facebook.com/notes/nouman-ali-khan-collection-in-bangla/%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%A4-%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC-%E0%A7%A7-%E0%A7%A8-%E0%A7%A9/1504538346467453/
[7/19/2017, 10:56 PM] Aliahmed(Alia): http://www.quranresearchbd.org/Hadith-says-prophet-Ibrahim-was-a-liar.htm
[7/20/2017, 5:09 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/xuzoU6FpcZ8
[7/20/2017, 5:21 PM] Aliahmed(Alia): https://youtu.be/o_wFjyHfWyI

যারা আল্লাহর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে

By see below link

‘আল্লাহর জন্য রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম। অতএব তোমরা তাঁকে সেই সকল নামেই ডাকবে; যারা তাঁর নাম বিকৃত করে তাদেরকে বর্জন করবে; তাদের কৃতকর্মের ফল দেওয়া হবে (৭:১৮০); সূরা-৭, আ‘রাফ, আয়াত-১৮০।

আল্লাহ বলেন-
১. বল, ‘তোমরা ‘আল্লাহ’ (নামে) ডাক বা ‘রাহমান’ (নামে) ডাক, তোমরা যে নামেই ডাক সকল সুন্দর নামই তো তাঁর (১৭:১১০); সূরা-১৭, বনী ইসলাঈল, আয়াত-১১০।
[আল্লাহ নিজে যে সকল নাম বলেছেন দুনিয়ার সকল মানুষ আল্লাহর একটি নাম দিলে সে নাম কখনই আল্লাহর রাখা নাম থেকে সুন্দর হতে পারে না।]
আল্লাহ বলেন-
২. বল, ‘হাসবিইয়াল্লাহু (৯:১২৯; ৩৯:৩৮); সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-১২৯। সূরা-৩৯, যুমার, আয়াত-৩৮।
৩. বল, ‘… ‘আল্লাহুছ সামাদ (১১২:২); সূরা-১১২, ইখলাস, আয়াত-২।
৪. তারা বলত, ‘হাসবুনাল্লাহু (৯:৫৯); সূরা-৯, তাওবা, আয়াত-১২৯।

আল-কুরআনুল করীম- ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এ ‘আকবার’ শব্দের অর্থ দেখুন- ইবরাহীম বলল, ‘হাযা আকবার [ইহা (সূর্য) সর্ববৃহৎ) [(৬:৭৮); সূরা-৬, আন‘আম, আয়াত-৭৮], ফাযাউল আকবার (মহাভীতি) [(২১:১০৩); সূরা-২১, আম্বিয়া, আয়াত-১০৩]

আকবার শব্দের অর্থ দেখুন-
১. সর্ববৃহৎ (৬:৭৮);
২. মহা (২১:১০৩);
৩. অধিক (২:২১৭, ২১৯; ৪০:১০);
৪. শ্রেষ্ঠ (১৬:৪১; ৪৮);
৫. সর্বশ্রেষ্ঠ (৬:১৯; ৯:৭২; ২৯:৪৫);
৬. গুরুতর (২:২১৭; ৩:১১৮);
৭. শ্রেষ্ঠতর (১৭:২১);
৮. মহত্তর (১৭:২১);
৯. কঠিনতর (৩৯:২৬; ৪০:৫৭; ৬৮:৩৩)। উক্ত অর্থানুসারে ‘আল্লাহু আকবার’ এর ৯টি ভিন্ন অর্থ হতে পারে।

‘আল্লাহু আকবার’ যে আল্লাহর বিকৃত নাম তা কুরআন খুলে সূরা ও আয়াত নং মিলিয়ে দেখুন- ‘রিদ ওয়ানুম মিনাল্লাহি আকবার ( ৯:৭২), ‘ওয়ালি যিকরিল্লাহি আকবার (২৯:৪৫) ও ‘লামাকতুল্লাহি আকরব (৪০:১০)। এসব ক্ষেত্রে আল্লাহ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে ডাকতেও বলেন নি।

আল্লাহ বলেন, ‘যারা আমার আয়াতসমূহকে বিকৃত করে তারা আমার অগোচর নয়। শ্রেষ্ঠ কে— যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে, না যে কিয়ামতের দিন নিরাপদে থাকবে সে? তোমাদের যা ইচ্ছা কর (৪১:৪০): সূরা-৪১, হা-মীম আস-সাজদা, আয়াত-৪০।

.

https://m.facebook.com/groups/1805246912824708?view=permalink&id=2152397891442940

খতনা, পোশাক

Fm zahir wapp

[4/22, 12:39 AM] ‪+91 97077 58106‬: ৩৮. কুরআনে ‘খৎনার উল্লেখ নেই, ইঞ্জিল ও তৌরাতে ‘পুরুষের খৎনা

কুরআনে দেখুন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, যারা ইহুদী হয়েছে এবং নাসারা ও সাবিঈন যারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাদের জন্য পুরুস্কার আছে তাদের রবের নিকট। তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না;-২:৬২; ৫:৬৯। ‘আর যারা ঈমান আনে ও সৎকার্য করে তারাই জান্নাতবাসী, তারা সেখানে স্থায়ী হবে;-২:৮২।

ইঞ্জিলে দেখুন, ‘অ-ইহুদিদের খৎনা করান দরকার এবং তারা যে মূসার শরীয়ত পালন করে, সেজন্য তাদের হুকুম দেওয়া দরকার;-৫ম খন্ড : প্রেরিত, ১৫:৫, পৃ: ৩৪৬। ‘তুমি যদি মূসার শরীয়ত মেনে চল, তবে খৎনা করাবার মূল্য আছে; … কেবল বাইরের দিক হতে যে ইহুদি সে আসল ইহুদি নয়। দেহের বাইরের খৎনা করান হলেই যে সে আসল খৎনা করান হলো, তাও নয়। কিন্তু অন্তরে যে ইহুদি, সে-ই আসল ইহুদি। আসল খৎনা করাবার কাজ অন্তরের মধ্যেই হয়; ৬ষ্ঠ খ- ঃ রোমীয়, ২:২৫-২৯, পৃ: ৪০১। ‘খৎনা করালেই বা কি আর না করালেই বা কি, খোদার হুকুম পালন করাই হলো আসল কথা;-৭ম খ- : ১ করিস্থীয়, ৭:১৯, পৃ: ৪৫০। ‘যার খৎনা করান হয় সে মূসার গোটা শরীয়ত পালন করতে বাধ্য;-৯ম খ- : গালাতীয়, ৫:৩, পৃ: ৫০৯। ‘এটা ছাড়া, তোমরা মসীহের সংগে যুক্ত হয়েছ বলে তোমাদের খৎনা করা হয়েছে। এ খৎনা কোন মানুষের হাতে করান হয়নি, মসীহ নিজেই তা করেছেন;-১২শ খ- : কলসীয়, ২:১১, পৃ: ৫৪১। ‘এ অবস্থায় অ-ইহুদি বা ইহুদির মধ্যে, খৎনা-করান বা না খৎনা-না-করান লোকের মধ্যে, অশিক্ষিত, নীচজাতি, গোলাম বা স্বাধীন লোকের মধ্যে কোন তফাৎ নেই;-১২শ খন্ড : কলসীয়, ৩:১১, পৃ: ৫৪৩। উপরোক্ত আয়াতগুলো ছাড়াও ইঞ্জিল শরীফের ১৪৩, ১৪৬, ২৫১, ৩১৭, ৩৪৫, ৩৪৯, ৩৬৯, ৪০৪, ৪০৫, ৫০১, ৫০২, ৫০৯, ৫৩৩ ও ৫৮২ পৃষ্ঠায় খৎনার কথা উল্লেখ আছে।

তৌরাতে দেখুন, [আল্লাহ্ ইবরাহীমকে বললেন,] আমার এ যে ব্যবস্থা, যার নিশানা হিসেবে তোমাদের প্রত্যেকটি পুরুষের খৎনা করাতে হবে, তা তোমার ও তোমার বংশের লোকদের মেনে চলতে হবে। … পুরুষ-সন্তানের আট দিনের দিন এ খৎনা করাতে হবে, …. যে লোকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটা নয়, তাকে তার জাতির মধ্য হতে মুছে ফেলা হবে, কারণ সে আমার ব্যবস্থা অমান্য করেছে;-পদাষেশ ১৭:১০-১৪, পৃ: ৪৬। ‘ইবরাহীমের নিজের যখন খৎনা করান হল তখন তাঁর বয়স ছিল ৯৯ বৎসর, আর তাঁর ছেলে ইসমাইলের বয়স ছিল ১৩। একই দিনে ইবরাহীম ও তাঁর ছেলে ইসমাইলের খৎনা করান হয়েছিল;-পদাষেশ ১৭:১০-১৪, পৃ: ৪৭। আল্লহর হুকুম অনুসারে ইবরাহীম আট দিনের দিন তাঁর ছেলে ইসহাকের খৎনা করালেন। ইবরাহীমের বয়স যখন ১০০ বছর তখন তাঁর ছেলে ইসহাকের জন্ম হয়েছিল;-পদায়েশ-২১:৪-৫, পৃ: ৫৭। উপরোক্ত আয়াতগুলো ছাড়াও তৌরাতের-১০৩, ১০৪, ১৬৭, ১৮৯, ২৯৭, ৪৯৭ ও ৫৪৯ পৃষ্ঠায় খৎনার কথা উল্লেখ আছে।

[অপরিচিত কোন মুসলিম, ইহুদী ও শিখ বা বৌদ্ধ পুরুষের মৃতদেহ এবং হিন্দু-মুসলিম, ইহুদী-নাসরা এবং নাস্তিক, বৌদ্ধ বা শিখ ধর্মের মেয়েদের মৃতদেহ থেকে কোন প্রকারেই মুসলিম নারী-পুরুষের লাশ শনাক্ত করা সম্ভব নয়। আল্লাহর কিতাব কুরআনে পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটলে ‘মুসলিম হয় এমন আয়াত পাওয়া যায় না।]
[4/22, 12:44 AM] ‪+91 97077 58106‬: ৩৫. কুরআনে ‘পোষাক স্থান-কাল-পাত্র ভেদে, ইঞ্জিল ও তৌরাতে দাড়ি, টুপি, পাগড়ী ও কোর্তা-জুব্বা
কুরআনে দেখুন, ‘হে বনী আদম! তোমাদের লজ্জাস্থান ঢাকার ও বেশ-ভূষার জন্য আমি তোমাদের লেবাস (পোষাক) দিয়েছি এবং তাকওয়ার লেবাস, এ-ই সর্বোৎকৃষ্ট। এ আল্লাহর আয়াতসমূহের অন্যতম, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে;-৭:২৬।

ইঞ্জিল শরীফে দেখুন, ‘তিনি তাঁদের (ঈসা তাঁর বার জন সাহাবীকে) জুতা পরতে বললেন বটে, কিন্তু একটার বেশি দুইটা কোর্তা পরতে নিষেধ করলেন;-২য় খ- ঃ মার্ক, ৬ : ১০, পৃ: ৯৯। ইঞ্জিলের ২৮৯ পৃষ্ঠায় কোর্তা এবং ৭৯, ১৯৬, ৬৮৮ ও ৬৯০ পৃষ্ঠায় জুব্বার উল্লেখ আছে।

তৌরাত শরীফে দেখুন, ‘তৌরাতে দেখুন-২৩০, ২৩২, ২৩৩, ২৩৪, ২৬৪, ২৬৬, ২৮১ ও ২৮৬ পৃষ্ঠায় কোর্তা, ২৮৬, ২৯১ ও ৩১০ পৃষ্ঠায় আলখাল্লা এবং ২৩৩, ২৩৪, ২৬৪, ২৮৬ পৃষ্ঠায় মাথায় টুপি পরা ও ২৩০, ২৩৪ ও ২৬৪ পৃষ্ঠায় পাগড়ি পরিধান করার উল্লেখ আছে। ‘ইউসুফ দাঁড়ি কামিয়ে কাপড়-চোপড় বদলিয়ে ফেরাউনের নিকটে গিয়ে উপস্থিত হলেন;-পদায়েশ ৪১:১৪। ‘ইমামদের মাথা কামানো, দাড়ির আগা ছাঁটা কিংবা শরীরের কোন জায়গা ক্ষত করা চলবে না;- লেবীয় ২১:৫। [তৌরাত অনুসারে মুসল্লিরা দাড়ি কামান। কুরআনে সাহায্যকারী নবী হারুণের দাড়ির (২০:৯৪) উল্লেখ আছে। সুতরাং দাড়ি, টুপি, পাগড়ি ও লম্বা জামা নিয়ে বাড়াবাড়ি নয় বরং পোষাক হবে স্থান-কাল-পাত্র ভেদে।

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী

Courtesy – A. A. Mamun fbfd

ইমাম মেহেদী- একটি ষড়যন্ত্র এবং পৌরাণিক কাহিনী
:
ইমাম মেহেদী নামক এক ব্যক্তি নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক ধরনের গল্প চালু আছে। এই ব্যক্তি নিয়ে গল্পের মূল বিষয় হচ্ছে উনি একদিন পৃথিবীতে আসবেন এবং মুসলিম উম্মাহকে নেতৃত্ব দিবেন, মুসলিম উম্মাহ সাফল্যের শিখরে উঠবে, এরপর কিয়ামত হবে ইত্যাদি ইত্যাদি। কমবেশি সবাই এই গল্প জানেন। আমার প্রশ্ন হল আপনি এই গল্প কিভাবে জানেন? আরেকজনের কাছে শুনেছেন, কোন বইয়ে পড়েছেন অথবা কোন হুজুরের বয়ান শুনেছেন, অথবা সবগুলি। বিভিন্ন বইয়ে আপনি এর স্বপক্ষে হাদিসের থেকে রেফারেন্স পেয়েছেন, হুজুরেরা বলেছে, খুব বেশি হলে আপনি ঐ হাদিসের রেফারেন্স মিলিয়ে দেখেছেন। যার ফলে আপনার বিশ্বাস জন্মেছে যে এই ঘটনা সত্য, এবং এর ফলে আপনি এর উপর নির্ভর করে বসে আছেন যে উনি একদিন এসে মুসলমানদের কে সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিবেন। কিন্তু সময় চলে যায় আর উনিও আসেন না এর ফলে মুসলমানদের দুর্দশাও শেষ হয়না। কিন্তু আপনি স্বপ্ন দেখে যেতেই থাকেন। আপনি স্বপ্ন দেখতে থাকুন, এর মধ্যে আমি উনার সম্পর্কে যে তথ্য গুলি পাওয়া যায় তা নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করে দেখি যে আসলে এই রকম কোন ব্যক্তির অস্তিত্ব আছে কি না বা উনার সম্পর্কে যে কথা গুলি বলা হয় তা কতটুকু সত্য। আমি এই সম্পর্কে যাদের সাথে কথা বলেছি , একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি যে কেউ এই সংক্রান্ত সবগুলি হাদিস জানেনা, এবং বিভিন্ন বিপরীতমুখী হাদিসের পার্থক্যটা ধরতে পারেন না। আমি এইখানে উনার সম্পর্কে সবগুলি গল্প/হাদিস (আমি যতগুলি জানি আর কি) একসাথে করে দেখব, মূল বিষয়টা কি দাড়ায়ঃ

ইমাম মেহেদী এবং কোরআনঃ
এর আগে আমি ঈসা (আঃ) যে আবার পৃথিবীতে আসবেন না তা আমি কোরআন থেকে প্রমান করে দেখিয়েছি। এটা খুব সহজ একটা বিষয় ছিল যেহেতু ঐ ক্ষেত্রে আমি কোরআনের রেফারেন্স দিতে পেরেছি- যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ Click This Link ) কিন্তু এই ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন এই কারনে যে, কোরআনে মেহেদী সংক্রান্ত কোন কথা বলা নাই। যেহেতু মেহেদী নামক কোন কনসেপ্ট কোরআনে নাই, সেহেতু এইখানে কোরআন থেকে এই সম্পর্কে বলার কিছু নাই, কিন্তু আমরা কোরআনের নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখব যে কোরআনের নিয়ম অনুযায়ী এই মেহেদী কনসেপ্ট ইসলামে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। কোরআন অনুযায়ীঃ
১। দ্বীন সম্পূর্ণ (৫:৩)
২। কোরআন সত্য মিথ্যা পার্থক্য নির্ণয় কারী (ফুরকান) (২:১৮৫, ২৫:১)
এই আয়াতগুলির সম্মিলিত অর্থ হচ্ছে ঃ

“কোরআনে যা কিছু বলা হয়নি তা আমাদের ধর্ম/দ্বীন এর ব্যপারে গুরুত্তপুর্ন নয় এবং যা কিছু কোরআনের সাথে সাঙ্গর্সিক তা অবশ্যয় বর্জনীয়”।

সুতরাং, যারা কোরআন সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তাদের জন্য “মেহেদী বলে কিছু নাই অথবা মেহেদী কোনভাবেই ইসলামে গুরত্বপুর্ন নয়” কোরআন অনুযায়ী এটাই সঠিক বিশ্বাস।

অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে বেশিরভাগ মুসলমানই শুধুমাত্র কোরআনের কথা মানতে চান না। যদি বলেন, আল্লাহ কোরআনে এইটা বলেছে, তাহলে সাথে সাথে তারা আরও দশটা হাদিস নিয়ে আসবেন যেখানে ঠিক এইটার বিপরীত কথা বলে হয়েছে। এই সমস্যাটা ব্যপক। কোন ভাবেই বোঝানো যায়না কোরআন কোনভাবেই হাদিসের সাব-অর্ডিনেট না, বরং এর উলটাটাই সত্য। কোন কারনে হাদিস কোরআনের সাথে কনফ্লিক্ট করলে কোরআনের কথাই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই এর উলটা টা প্রমান করার চেস্টায় ব্যস্ত। যারা কোরআন বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এখানেই শেষ। যারা হাদিস থেকে মেহেদীর আগমন সংক্রান্ত বিষয় প্রমান করার চেষ্টায় ব্যস্ত এবং মনে করেন এই বিষয়টা খুবই গুরত্বপুর্ন তাদের জন্য আমার এই চেষ্টা।

ঐতিহাসিক পটভূমিঃ (ইতিহাস এবং ষড়যন্ত্র)ঃ
ধারনা করা হয় “আব্দুল্লাহ বিন-সাবাহ”- এই মুনাফিক (আগে ইহুদী ছিল, পরে মুসলমান হয়) প্রথমে এই ঈসা (আঃ) এবং মেহেদী আসার গল্প/গুজব ছড়ায়। এমনকি সে মুহাম্মদ (সাঃ) আবার পৃথিবীতে আসবেন এই গুজবও ছড়ায়। তার এই ছড়ানো এই গুজব সেই সময়ে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। কিন্তু প্রথম বীজটা সেই রোপণ করেছে এইটা অনেকের বিশ্বাস। যখন উমাইয়া খিলাফত এবং আব্বাসীয়দের মধ্যে দ্বন্ধ চরমে, তখন আমরা একজন বিশেষ সন্দেহভাজন মানুষের আবির্ভাব দেখি। উনি হচ্ছেন আবু মুসলেম খোরসানি। তিনি ইস্ফানে জন্ম গ্রহণ করেন এবং কুফায় বেড়ে উঠেন। মুহাম্মদ আব্বাসির ছেলে ইব্রাহিম তার মেধায় আকৃস্ট হয়ে তাকে তার পক্ষে প্রচারনা চালানোর দায়িত্ব দেয়। সে প্রচার করে যে খুব শিগ্রই ইমাম মেহেদী খুরসান প্রদেশ থেকে আসবেন এবং তার সেনাবাহিনীর পতাকা এবং পোশাকের রং হবে কাল। এই প্রচার যখন চরমে পৌছাল, সে খুরসান থেকে নিজে কাল পাতাকাবাহী এবং কাল রঙের পোশাক সম্বলিত সেনাবাহিনী নিয়ে বের হল এবং বানু উমাইয়া খিলাফত আক্রমণ করে তাদেরকে পরাজিত করল। (ইমাম মেহেদীর আর্মির সাথে যুদ্ধ করার মানসিক জোর তখন উমাইয়া খিলাফতের ছিলনা বলেই মনে হয়)। এইভাবেই উমাইয়া খিলাফতের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং আব্বাসীয় খিলাফতের শুরু হয়। আব্বাসীয় খলিফা তার মেধায় মুগ্ধ হয়ে এবং তার ক্ষমতার পরিচয় পেয়ে , যাতে ভবিষ্যতে নিজেরা এই ধরনের বিপদে পড়তে না পারে সেই জন্য তাকে হত্যা করেন। আর এইভাবেই ইমাম মেহেদী নাটকের মধ্য দিয়ে এক ক্ষমতার পালা বদল, এবং এই ধরানার উৎপত্তি।

ধর্মীয় পটভূমিঃ
ইমাম মেহেদীর বিশ্বাসের উত্থান ইরানে (তৎকালীন পার্সিয়ান স্ম্রাজ্য)। ধর্মীয় দিক থেকে দেখলে এইটা মুলত শিয়াদের আবিষ্কার, পরে সুন্নীরা এই ধারণা গ্রহণ করে, যদিও ইমাম মেহেদী নামে কেউ একজন আসবে এই ধরনের কোন অথেনটিক হাদিস সুন্নী গ্রন্থে পাওয়া যায় না। আমরা এখন এই মুসলমানদের এই দুই দল শিয়া এবং সুন্নীদের মধ্যে কিভাবে ইমাম মেহেদী নামক ধারনার জন্ম হয়েছে তা দেখব।

শেহের বানুর ইতিহাসঃ
শিয়া কাহিনী অনুযায়ী, খলিফা হযরত উমরের সময় যখন পারস্য স্ম্রাট ইয়াজদগার্ড (Yazd Gard) মুসলমানদের হাতে পরাজিত হল, তখন তার মেয়েদেরকে উমরের সামনে যুদ্ধবন্দী হিসাবে উপস্থিত করা হল। উমর তাদেরকে ওপেন সেলের অর্ডার দিল, কিন্তু হযরত আলী তাদের বংশগত পরিচয়ের জন্য তাদেরকে আরও ভাল ভাবে ব্যবহারের পরামর্শ দিল।হযরত আলীর পরামর্শ অনুযায়ী তাদের মুল্য নির্ধারণ করা হল এবং তাদের একজনকে ইমাম হুসেন, আরেকজনকে মুহাম্মদ বিন আবু বকর এবং তৃতীয় জন কে আব্দুল্লাহ বিন উমরের কাছে হস্তান্তর করা হল। যে মেয়েটা ইমাম হুসেনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল তার নাম শেহের বানু ( তার আসল নাম জাহান শাহ- শিয়া দলীল হিসাবে, উমর তার নাম দিয়েছিল শেহের বানু)। এই সম্পর্কে যে বর্ণনা এসেছে তা হলঃ “Abu Abullah! You will have a son from her womb who will be the best in the world.” Hence Ali Ibne Hussain was born, who was the best Arab because he was Hashmi and the best Ajami because he was Iranian.” (Kitab us Shaafi – Vol. I)
এই ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু হচ্ছে তথাকথিত ইমাম মেহেদীর পূর্ব পুরুষ। কিন্তু শিয়াদের বানানো এই গল্প পড়ে এটা বানানো একটা গল্প কারনঃ

১। কোরআন অনুযায়ী যুদ্ধবন্দীদের কে হয় দয়া করে অথবা বিনিময়ের মাধ্যমে ছেড়ে দিতে হবে। দ্বিতীয় কোন অপশন নাই (৪৭:৪)। হযরত উমর এবং হযরত আলী অবশ্যয় এটা জানতেন। যার ফলে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেওয়া বা কারো কাছে বিক্রি করে দেবার প্রশ্নই আসে না।

২। যখন হযরত সাদ মাদিয়ান দখল করেন, ততক্ষণে মাদিয়ান খালি হয়ে গেছে এবং সম্রাট ইয়াজদগার্ড তার পরিবার সহ পালিয়েছেন। এই জন্য ঐসময়ে তার মেয়েদেরকে বন্দী করার কোন প্রশ্ন আসেনা। তার মেয়েদেরকে একমাত্র তখনই বন্দী করার প্রশ্ন আসে যখন তাকে গুপ্তহত্যা করা হয়, কিন্তু সেই সময়টা হচ্ছে ৩০ হিজরি, যা হযরত উসমানের শাসনকাল, হযরত উমরের নয়।

৩। হযরত ইমাম হুসেইনের জন্ম ৫ হিজরি এবং মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরি, এর অর্থ হযরত ইমাম হুসেইনের ১১ বছরের সময়। এই ১১ বছরে উনি বিয়ে করেছেন এই কথাটা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। (হলেও হতে পারে, তবে আমিই ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করিনা)

৪। সম্রাট ইয়াজদগার্ড সিংহাসন আরোহণ করেন ১৩ হিজরিতে (প্রায় একই সময়ে হযরত উমর দ্বিতীয় খলিফা হিসাবে নিযুক্ত হন) যখন তার বয়স ছিল ১৮। মাদিয়ান দখল হয় ১৬ হিজরিতে, যখন তার বয়স ২১। এখন এই ২১ বছর বয়সে কিভাবে তার তিনটা বিবাহযোগ্য মেয়ে থাকে তা কোনভাবেই বোধগম্য না।

উপরোক্ত কারনে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারন আছে যে এই শেহের বানুর (যার অস্থিত্ব সন্দেহজনক) সাথে হযরত ইমাম হুসেইনের বিবাহের গল্প বানানো (এই গল্প বানানোর পিছনে একটা বিশাল ষড়যন্ত্র মুলক উদ্দেশ্য আছে, যা এখানে আমার লিখার বিষয় না )।
সুতরাং যদি এই গল্প বানানো হয় তবে ইমাম মেহেদীর অস্তিত্বও বানানো কারন এই দুইজনই (ইমাম হুসেইন এবং শেহেরবানু) হচ্ছে ইমাম মেহেদীর বংশ তালিকার প্রথমদিকেই (হযরত আলীর পরে) তাদের স্থান, যাকে বলে গোঁড়ায় গলদ।

ইমাম মেহেদী এবং শিয়া গ্রন্থঃ
এইখানে আমরা যে কথাগুলি বর্ণনা করব তার সবকিছুই আহসানুল মাকাল (যা শিয়াদের খুবই উচ্চ সম্মানিত গ্রন্থ ) থেকে নেওয়া। এই গ্রন্থের কথাগুলি পড়ার সময় দয়া করে নিজের মাথাটাকে একটু ব্যবহার করবেন। একটা বিষয় আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই যে আমি এখানে কাউকে, বা কোন দল কে ছোট করার উদ্দেশ্যে এই কথা গুলি বর্ণনা করছিনা। আমি শুধু এই বর্ণনার সাথে ইমাম মেহেদীর যোগসূত্র গুলি দেখাবার চেষ্টা করব। তার পরেও যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে আঘাত পান, তবে আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

এই নাটকীয় ঘটনা ঘটে ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ বছর পরে।

১। আমি লেডি মালেকা- রোম সম্রাট কাইজারের পুত্রের কন্যা। আমার মায়ের নাম শামুন (Shamoun)- যে ঈসার বংশধর। কিছু সময় আগে নবী মুহাম্মদ আমার প্রপিতামহ ঈসার সাথে দেখা করেছিল এবং আমাকে (মালেকা) তার ছেলে হাসান আকসারির ( মৃত ৮৭৪ সাল) সাথে বিবাহ দিতে অনুরুধ করেন। (এই হাসান আকসারি হচ্ছে শিয়াদের “আসনা আসিরিয়া” বা ১২ ইমাম দলের ১১তম ইমাম )। ঈসা রাজী হন। নবী মুহাম্মদ বিবাহের অনুষ্ঠানের খুতবা পড়েন (নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে)। নবীর কন্যা ফাতেমা (মৃত ৬৩২ সালে) একদিন এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল এবং আমাকে তার পুত্রবধূ হিসাবে গ্রহণ করলেন। এর পর এমন কোন রাত পার হয়নি যে রাতে আমরা আমাদের ভালবাসার মধু পান করিনি।

২। আমি লেডি মালেকা,আমাকে নার্গিস ও বলা হয়। আমি রোম সম্রাটের কন্যা। কিছুদিন আগে আলী (মুহাম্মদের জামাতা) আমার কাছে এসেছিল (হযরত আলীর মৃত্যুর ২১২ বছর পর) । সে আমাকে বলেছিল “নার্গিস তোমার জন্য পুত্র সন্তানের সুখবর যে পূর্ব এবং পশ্চিমের রাজা হবে। এইখবর আগুনের মত সবদিকে ছড়িয়ে পড়ল যে হাসান হাসান আকসারির স্ত্রী এই সময়ের নেতার (ইমাম মেহেদী) মা হতে যাচ্ছেন।

৩।একদিন হাসান আকসারি বলল যে আজকে মেহদীর জন্ম হবে। ঐ পরিবারের একজন স্ত্রীলোক বলল নার্গিসের গর্ভ ধারনের কোন নিদর্শন/ চিহ্ন নাই। তখন আলী এসে বলল “আমরা সাধুরা এবং নবীরা মায়েদের উরুতে (thigh) জন্ম গ্রহণ করি, সেইজন্য আমরা নিষ্কলুষ” ইমাম হাসান ও (মৃত ৬৭০ সাল) আসলেন । যারা ঐসময় উপস্থিত ছিলেন তারা নার্গিসের মধ্যে একটি জমকাল দীপ্তি দেখতে পেলেন। হাসান যুগের নেতার (Master of Times) জন্ম হওয়া দেখল, জন্মের পর থেকেই ইমাম মেহেদী কাবার দিকে সেজদাবনত অবস্থায় ছিল। নতুন জন্ম নেওয়া এই শিশু আকাশের দিকে তর্জনী উঠিয়ে রেখেছিল এবং কালেমা পাঠ করছিল। কুমারী মরিয়ম (হযরত ঈসার মাতা) হাজার হুর নিয়ে উপস্থিত হলেন। উপস্থিত সবাই দেখল ইমাম মেহেদীর ইতিমধ্যে খৎনা করা আছে। সবাই সকল ইমামদের জন্য আল্লাহর কাছে আশীর্বাদ চাইল। চারদিকে আলোকজ্জল হয়ে উঠল। সাদা পাখিরা চারদিকে ভিড় করল। হযরত আলী একটি পাখিকে এই শিশুটিকে(ইমাম মেহেদী) নিয়ে যেতে বলল এবং ৪০ দিন পরে আবার নিয়ে আসতে বলল।

দয়া করে মনে রাখুন এই নাটকীয় ঘটনার সময়কাল ৮৭৩ সালে (নবম শতাব্দী), নবীর মৃত্যুর ২৪১ বছর পরে, এবং হযরত আলীর ২১২ মৃত্যুর বছর পরে।

পৌরাণিক কাহিনী এমনই মজার। কাহিনী এখানেই শেষ না, আরও আছে।
৪। চল্লিশ দিন পরে পাখিটি যখন শিশুটিকে ফিরিয়ে আনল তখন শিশুটির বয়স দুই বছর। তারপর পাখিটি শিশুটিকে আবার নিয়ে গেল এবং আবার ৪০ দিন পরে ফিরিয়ে নিয়ে আসল। এইসময়ে শিশুটি (ইমাম মেহেদী) পূর্ণ বয়স্ক হয়ে গেল। (আমরা জানিনা চল্লিশ দিনে কিভাবে একটি শিশুর বয়স দুই বছর হয়, আর ৮০ দিনের মাথায় কিভাবে একটি শিশু প্রাপ্ত বয়স্ক/ পূর্ণ বয়স্ক হয়। পাখিটা তাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল আমরা সেটাও জানি না)।

৫। ইমাম মেহেদী পাচ বছর বয়সে, তার বাবা হাসান আকসারির মৃত্যুর দশদিন আগে সামারা বা সামারন রাই নামক একটি গুহায় অদৃশ্য হয়ে যায়। সেই সময় সে সাথে করে নিয়ে যায় সম্পূর্ণ কোরআন যা ৪০ পারা (৩০ পারা নয়) যার আয়াত সংখ্যা ১৭০০০ (৬২০০+ না)। সে আরও সাথে করে নিয়ে গেছে সমস্ত নবীদের (আদম থেকে শুরু করে মুহাম্মদ পর্যন্ত) গ্রন্থ, আলী এবং ফাতেমার বই, জাফরের বিজ্ঞান, সমস্ত নবীদের মুযেযা, মুসার লাঠি, আদমের শার্ট, সুলাইমানের আংটি ইত্যাদি।

৬। সে কেয়ামতের আগে ঐ গুহা থেক বের হবে। বের হওয়ার পর সে আবুবকর, উমর, এবং উসমান কে কবর থেকে জীবিত করে বের করবে এবং তাদের কে হাজার বার শাস্তি দিয়ে মারবে এবং আবার জীবিত করবে। সে নবীর স্ত্রী আয়েশাকে ( নবীর স্ত্রীদেরকে কোরআনে “বিশ্বাসীদের মা” বলা হয়েছে) জিবীত করবে এবং ব্যভিচারের জন্য শাস্তি প্রদান করবে (হাব্লুল্লাহ, নং ৬)

৭। প্রথমে তার হাতে বায়াত গ্রহণ করবে নবী মুহাম্মদ। (বাশির দারাজাত)

৮। মেহেদী মানুষকে কবর থেকে জীবিত করবে এবং ইচ্ছা অনুযায়ী স্বর্গে বা নরকে প্রেরন করবে। (মিরাতুল আনোয়ার)

৯। ইমাম মেহেদী তার সাথে আসল কোরআন নিয়ে আসবে ইয়াজুজ মাজুজ দের সাথে লড়াই করবে

১০। সে সাথে করে নতুন বই এবং নতুন বিশ্বাস নিয়ে আসবে

এই হচ্ছে শিয়াদের ইমাম মেহেদীর কাহিনী। কোন সাধারণ মানুষ যার নুন্যতম বিচার, বুদ্ধি, বিবেচনা আছে,সে এই শতাব্দীতে এই সব গল্প বিশ্বাস করবে না। আমি এখানে ইমাম মেহেদী নামক তথাকথিত ব্যক্তির গল্পের উৎপত্তির ইতিহাস, শিয়াদের গ্রন্থে এই সম্পর্কে কি লেখা আছে তা বলেছি। ঐতিহাসিক গল্পের সমস্যা কোথায় তাও বলেছি। আর শিয়াদের বই থেকে যা বলেছি তার অসংগতি কি তা পাঠকই নিজে বিবেচনা করুক। এইখানে একটা কথা চাই, এই ১১তম শিয়া ইমাম হাসান আকসারি সম্পর্কে কাজী মুহাম্মদ আলী তার “শামা-ই- হাকিকত” নামক বইয়ে বলেছেনঃ

“এই বিষয়ে খুব শক্ত এবং প্রমানযোগ্য ঐতিহাসিক দলীল আছে যে ,হাসান আকসারি ( ইমাম মেহেদীর বাবা) তার ছোটবেলাতেই মৃত্যু বরন করেন। তিনি কোন সন্তান রেখে যাননি। তার মৃত্যুর পরে তার ভাই জাফর-বিন-নাকী আইন অনুসারে তার সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন”।

উপরের যেসব প্রমান দেওয়া হয়েছে তার পরও যারা বিশ্বাস করেন ইমাম মেহেদী নামক একজন আসবেন, তাদের প্রতি আমার কিছুই বলার নাই।

ইমাম মেহেদী এবং সূন্নী গ্রন্থঃ
এই ইমাম মেহেদী ধরনা প্রথমে তৈরী হয় শিয়াদের মাধ্যমে। এই ধারণা তৈরী করার পিছনে ঐতিহাসিক কারণও রয়েছে। আমার বিষয় সেইটা না। সুতরাং আমি সেদিকে যাবনা। সুন্নীরা শিয়াদের এই ধরনা পরে গ্রহণ করে এবং নিজেদের মত করে হাদিস তৈরী করে। সুন্নীদের এই সংক্রান্ত হাদিস গুলি দেখতে Click This Link –এই লিঙ্কে দেখতে পারেন।( লিঙ্ক দিলাম এই কারনে যে সবগুলি হাদিস এইখানে লেখা সম্ভব না।) সুন্নীদের এই হাদিস গুলিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে ঃ

১। বিভিন্ন জায়গায় ইমাম মেহেদী অথবা ঐ ধরনের কোন ব্যক্তি অথবা কোন ন্যায়পরায়ণ খলিফার ভবিষ্যৎবাণী করা আছে। স্বভাবিক ভাবে যদি আমরা কোরআনের আলোকে এইসব হাদিস বিশ্লেষণ করি তবে আমরা কোরআনের আলোকে ঐ সকল হাদিসের কিন ভিত্তি নেই। আল্লাহ কোরআনে বলেছেন যে অদৃশ্য, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে। নবীর ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই।
কোরআনের ৩:৪৪,৩:১৭৯, ৫:১০৯, ৬:৫০, ৭:১৮৮, ১০:২০, ১১:৩১, ১১:৪৯,১২:১০২, ১৮:১১০, ৩০:২, ৭২:২৬-২৮ আয়াতগুলিতে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে যে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ্রই আছে এবং নবীর নিজের থেকে ভবিষ্যৎ বলার কোন ক্ষমতা নাই। কোরআনের এই সঙ্ক্রান্ত সবগুলি আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে দিলাম যাতে পাঠক নিজেই দেখে নিতে পারে। (সবগুলি আয়াত এখানে বর্ণনা করা সম্ভব না) যেমন উদাহরণ সরূপ কোরআনে বলা আছেঃ

“আপনি বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমন বলি না যে, আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ ওহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে। আপনি বলে দিনঃ অন্ধ ও চক্ষুমান কি সমান হতে পারে? তোমরা কি চিন্তা কর না” ? (৬:৫০)

সুতরাং কোরআন অনুযায়ী এই ধরেনর হাদিসের কোন সত্যতা নেই। এইধরনের হাদিসকে বিশ্বাস করলে কোরআনের আয়াতকে আস্বীকার করা হয়। যারা কোরআনের আয়াত বিশ্বাস করেন তাদের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আর যারা কোরআনের বিপরীতে শুধু হাদিস বিশ্বাস করেন তাদের জন্যঃ

“আয়েশা (রাঃ) বলেছেনঃ যারা বলেছেন মুহাম্মদ তার প্রভুকে দেখেছে তারা মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন “দৃষ্টিসমূহ তাঁকে পেতে পারে না, অবশ্য তিনি দৃষ্টিসমূহকে পেতে পারেন…।“ (৬:১০৩) এবং যদি কেউ বলে মুহাম্মদ অদৃশ্য/ভবিস্যত দেখেছে তাহলেও সে মিথ্যাবাদী কারন আল্লাহ বলেছেন আল্লাহ ছাড়া অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে নেই” (বুখারি, ভলিউম ৯, বই ৯৩, হাদিস ৪৭৭)

২।সুন্নীদের মধ্যে এই সংক্রান্ত যত হাদিস আছে তার বেশিরভাগই “জীরাহ” (criticism) রয়েছে। মুতাওয়াত্তির হাদিসে (যে হাদিস একসাথে অনেকেই বর্ণনা করেছেন) মেহেদী নামক কারো নাম পাওয়া যায়না। শুধু বলা আছে একজন ন্যায়পরায়ণ খলিফার আগমন ঘটবে, কিন্তু ঐ ন্যায়পরায়ণ খলিফা মেহেদী কি না সেই বিষয়ে কিছু বলা নেই।

৩। এইসব হাদিস যেমন কোরআনের বিপরীত তেমনি পরস্পর বিরোধী। যেহেতু সব গুলি হাদিস নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়, আমরা “সুনানে আবু দাউদের কিতাবুল মেহেদী অধ্যায়ের কিছু হাদিস দেখব এবং এই ক্ষেত্রে কোরআনের একটি আয়াত (৪:৮২) কে আমরা মাপকাঠি (“ফোরকান”- সত্য মিথ্যা নির্ণয়কারী) হিসাবে ব্যবহার করব। আল্লাহ বলেছেনঃ

“এরা কি লক্ষ্য করে না কোরআনের প্রতি? পক্ষান্তরে এটা যদি আল্লাহ ব্যতীত অপর কারও পক্ষ থেকে হত, তবে এতো অবশ্যই বহু বৈপরিত্য দেখতে পেত”।(৪:৮২)

১। নবী বলেছেন আমার বংশ থেকে একজনের আবির্ভাব হবে যার নাম হবে মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ
২। তার নাম হবে মেহেদী ( মুহাম্মদ না)
৩। তার নাম হবে হারিস (মুহাম্মদ ও না মেহেদী ও না)

মুসলিমে বলা হয়েছে একজন “ মুসলিম কমান্ডার” বুখারীতে বলা হয়েছে একজন ইমাম। দুটা অর্থ এক ধরে নিলেও সে কি মুহাম্মদ, মেহেদী নাকি হারিস এটা বলা মুশকিল। সুতরাং আমরা ৪:৮২ অনুযায়ী এই ব্যপারে অনেক বৈপরিত্য দেখতে পাই। সুতরাং এইসব হাদিস একসাথে পড়লে বুঝা যাবে কোরআন অনুযায়ী এইগুলির কোন সত্যতা নেই,এবং আমাদের নবী কখনওই এই ধরেনর কথা বলেননি। এইসব কথা গুলি আমাদের নবীর নামে বানানো হয়েছে এবং নবীর নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়া প্রভাব এখানে লক্ষ্যনীয়। এটা শিয়াদের ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছু না।

Reference:
1. Al Quran
2. The Eclipse of Islam-by G.A Parvez
3. Karbala- Fact or Fiction-by Shabbir Ahmed, MD
4. Tahfimul Quran-by Moududi
5. Different hadith books (Abu Daud, Muslim, Bukhari)
6. Ahsanul Makal
7. Different website on Shia and Sunni sects

Author -Hanif Dhaka

মিরাজ ও ইসরা কে করেছিলেন- নবী মুহাম্মদ (সাঃ) না মুসা (আঃ) ?

By arian khan fbfd

মিরাজ ও ইসরা কে করেছিলেন- নবী মুহাম্মদ (সাঃ) না মুসা (আঃ) ?
————————————————-

প্রচলিত ইসলামী শরিয়াতে ‘ইসরা’ (الإسراء ) ও ‘মিরাজ’ (المعراج) বিশেষ গুরুত্ত্ব বহন করে । ইসরা মানে ভূ -পথে যাত্রা আর মিরাজ মানে আকাশ পথে উর্ধ্ব যাত্রা । সুন্নি ও শিয়া মতে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইসরার মাধ্যমে মক্কা থেকে জেরুজালেম গিয়েছিলেন আর মিরাজের মাধ্যমে জেরুজালেম থেকে ঘোড়া সাদৃশ্য জন্তুতে চড়ে স্বর্গে আরোহণ করেছিলেন।

মজার বিষয় এই যে এই ইসরা ও মিরাজ যাকে নবী মুহাম্মদের বিরাট মুজিজা মনে করা হয় তাঁর কোন উল্লেখ কোরআনে নেই । ইসরা আরবি শব্দটা কোরআনে পাওয়া যায় কিন্তু মিরাজ নয় । মজার বিষয় এই যে কোরআন অনুসারে ইসরা নবী মুসার জীবনে ঘটেছিল নবী মুহাম্মদের জীবনে নয় ।

সুরা বনি ইসরাইলের ১ম আয়াত দিয়ে শুরু করা যাক।

“পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তাঁর বান্দাহকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন (أَسْرَىٰ) মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” (১৭:১)

উপরের আয়াতে কোন নাম না নিয়ে এনে বলা হয়েছে ‘ আমার বান্দা’ । এর ঠিক পরের আয়াতেই সেই বান্দার নাম দেওয়া হয়েছে ।

“এবং আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি এবং তা বনী ইসরাঈলের জন্য পথনির্দেশ বানিয়েছি। যেন তোমরা আমাকে ছাড়া কোন কর্মবিধায়ক না বানাও। ” (১৭:২)

আয়াত ১৭:২ এ মুসা নবীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে । লক্ষ্যনিয় যে সুরার নাম করন করা হয়েছে সুরা বনি ইসরাইল – যা কিনা নবী মুসার কওম । তাই ১৭:১ এ ইসরা সম্পাদনকারী বান্দা বনি ইসরাইলের নবী হওয়াই যুক্তিযুক্ত ।

এবার দেখা যাক রাত্রিকালে ভ্রমণ বা আরবি শব্দ ইসরা কোরআনে কার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে ।

ক্রিয়া পদ (IV) ইসরা أَسْرَىٰ কোরআনে ৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে । ১৭:১ তে ১ বার যা আমরা উপরে দেখেছি , ২ বার তা নবী লুতের ক্ষেত্রে (১১:১৮ , ১৫:৬৫ ) এবং ৩ বার নবী মুসার ক্ষেত্রে (২০:৭৭, ২৬:৫২ , ৪৪:২৩ ) নবী মুহাম্মদের ক্ষেত্রে ইসরার কোন রেফারেন্স কোরআনের কোথাও নেই ।

নবীর মুসার ভ্রমণের কথা কোরআনের বহু জায়গাতে বিষদ ভাবে বর্ননা করা হয়েছে (২৮:২৯-৩২, ২০:৯-২৩ , ২৭:৭-১২)

তাই নবী মুসার রাত্রি কালে ভ্রমনের স্পষ্ট বর্ননা এর সাথে ১৭:১ ও ১৭:২ এর সরল সম্পর্ক খুজে পেতে কোন সমস্যা হয়না ।

উপরন্তু নীচের দুইটি আয়াতে মহান আল্লাহ্‌ বলেছেন যে যদি নবী মুহাম্মদ চান যে তিনি আসমানে আরোহণ করবেন তবে তা চাওয়া তাঁর জন্য অনুচিত । Technically এই দুইটি আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে নবী মুহাম্মদ (সাঃ) মিরাজে গমন করেননি ।

১-“ আর যদি তাদের উপেক্ষা তোমার উপর কঠিন মনে হয়, তাহলে যদি তুমি পার যমীনে কোন সুড়ঙ্গ অথবা আসমানে কোন সিঁড়ি অনুসন্ধান করতে, অতঃপর তাদের কাছে কোন নিদর্শন নিয়ে আসতে (তবে কর)। যদি আল্লাহ চাইতেন তিনি অবশ্যই তাদেরকে হিদায়াতের উপর একত্র করতেন। সুতরাং তুমি কখনো মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না। ” ( ৬:৩৫)

২- “অথবা তোমার একটি স্বর্ণ নির্মিত গৃহ হবে, অথবা তুমি আকাশে আরোহণ করবে, কিন্তু তোমার আকাশে আরোহণ আমরা তখনও বিশ্বাস করবনা যতক্ষণ না তুমি আমাদের প্রতি এক কিতাব অবতীর্ণ করবে যা আমরা পাঠ করব। বলঃ পবিত্র আমার মহান রাব্ব! আমিতো শুধু একজন মানুষ, একজন রাসূল।” (১৭:৯৩)

দ্বিতীয়তঃ মিরাজের কল্প কাহিনী অনুসারে নবী মুহাম্মদ জান্নাত আর জাহান্নাম সব দেখে এসেছেন । কিন্তু কোরআনে মহান আল্লাহ্‌ জান্নাতকে গায়েব (غَيْبِ) বা অদেখা বস্তু বলেছেন (১৯:৬১) আর নবী মুহাম্মদের গায়েবের জ্ঞান নেই বলে নিশ্চিত করেছেন (৬:৫০) । তাই যুক্তিগত ভাবে কোরআন মতে নবী কোন ভাবেই জান্নাত দেখেননি ।

বাকী থাকল ১৭:১ এ বর্নিত ‘আল মাসজিদ আল হারাম ‘ ও ‘আল মাসজিদ আল আকসা’ এর ব্যপারটা । নবী মুসার সাথে এই দুই মাসজিদের সম্পর্ক কি ?

কোরআনে নবী মুসার ইসরা কোথায় থেকে শুরু হয়েছে ও কোথায় শেষ হয়েছে তা খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে ।

নবী মুসা মিশর থেকে পলায়ন করার পরে মিদিওয়ানে আসেন । (২৮:২২)

আমরা জানি যে মিদিয়ান আরব হেজাযের তাবুকে অবস্থিত । তাই নবী মুসা তাঁর জীবদ্দশাতে যে আরব ভূমিতে এসেছিলেন তাঁর স্বাক্ষ কোরআন বহন করে ।

আরো মজার বিষয় এই যে , নবী মুসা আরব ভূমিতে ৮/১০ হজ্জের সমকাল সময় অবস্থান করেছিলেন বলে কোরআন সাক্ষ দেয় (২৮:২৭ ) । আয়াতে বছর বা সাল নয় বরং ثماني حجج ( থামানিয়া হিজাজিন) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে । তাই নবী মুসা আরব ভূমিতে এসে ৮ থেকে ১০ বার হজ্জ করেছেন বলে প্রমাণিত হয় । সংগত কারনেই উনাকে হজ্জ করতে আল মাসজিদুল হারামেই যেতে হবে ।

২৮:২৯ এ জানা যায় যে নবী মুসা ৮/১০ হজ্জের মেওয়াদ শেষ করে তাঁর পরিবার সহ ইসরা শুরু করে , তাই তাঁর ভ্রমণ যে আল মাসজিদুল আল হারাম থেকে শুরু হতে পারে তা যুক্তিযুক্ত ও কোরআনে পাওয়া উপাত্তের সাথে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ন ।

ইসরা শুরু করার পর নবী মুসা যে যে জায়গাতে গিয়েছিলেন তাঁর নাম কোরআনে পাওয়া যায় । সেগুলো হল তুর পর্বত ( ২৮:২৯ ) , তোয়া উপত্যকা (২০:১২ , ৭৯:১৬ ) , মিশর (১০:৮৭) ।

মিশরে অবস্থিত তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাকে পবিত্র (المقدس) ও বরকত ময় (المباركة) বলা হয়েছে ( ২৮:৩০ , ২০:১২ , ৭৯:১৬) ।

তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকাতে নবী মুসাকে আল্লাহর তরফ থেকে নিদর্শন দেখানো হয়েছে (২৮:৩১ , ২৮:৩২ ) ।

১৭:১ এ উল্লেখিত আল মাসজিদ আল আকসা এর আশেপাশের স্থানকে কে বরকতময় করা হয়েছে তা তুর পর্বতের তোয়া উপত্যকার সাথে মিলে যায় ।

১৭:১ ইসরাকারিকে নিদর্শন দেখানো হবে তা নবী মুসার সাথে মিলে যায় ।

ধাঁধার শেষ যে অংশটা বাকী থাকল তা হল , ১৭:১ এর মাসজিদুল আকসা কোথা থেকে আসল ?

মাসজিদ হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সালাত ( নামাজ) আদায় করা হয় । কোরআনের ১০:৮৭ তে মহান আল্লাহ্‌ নবী মুসা , হারুন ও তাঁর অনুসারীদেরকে মিশরে তাদের ঘর সমূহকে ক্বেবলা তে রূপান্তরিত করে সালাত আদায়ের জন্য হুকুম দেন । ৭:১৪৪ থেকে আমরা দেখতে পাই যে নবী মুসা ও তাঁর অনুসারীরা তুর পর্বতেরই অবস্থান করছিল এবং সেখানেই সালাতের জন্য মাসজিদ বানিয়েছিল যা ১০:৮৭ তে বলা হয়েছে । এই মসজিদের নাম আল আকসা ।

তাই কোরআন কে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষন করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে , নবী মুহাম্মদের নামে যে ইসরা বা মিরাজের কাহিনী মুসলিম সমাজে প্রচলিত আছে তার কোন ভিত্তি নাই । বরঞ্চ ১৭:১ এর ইসরা কোরআন মতে নবী মুসার ইসরাকেই শক্তভাবে সমর্থন করে ।

Use of Amen 1,2

By zahir

1)- মুসলিমরা কুরআন বর্জন করে ইঞ্জিল, তৌরাত ও যবুরের অনুসরণ করে!

আমিন শব্দের ব্যবহার-
কুরআনে দেখুনঃ আমিন অর্থ বিশ্বস্ত (৭:৬৮; ২৬:১০৭, ১২৫, ১৪৩, ১৬২, ১৭৮; ২৭:৩৯; ২৮:২৬; ৪৪:১৮ আয়াত)। আমাদেরকে ইবরাহীমের অনুসরণ করার নির্দেশ (২:১৩০; ৩:৬৮; ৪:১২৫; ৬:১৬১; ১৬:১২৩)। [‘ইবরাহীম প্রার্থনা শেষে বললেন,] ‘আমার রব! আমাকে সালাতী করুন এবং আমার বংশধরদের মধ্য হতেও। আমাদের রব! আমার প্রার্থনা কবুল করুন (১৪:৪০); সূরা-১৪, ইবরাহীম, আয়াত-৪০। মুসলিমরা ইবরাহীমের মত প্রার্থনা শেষে ‘রাব্বানা! ওয়াতাকাব্বাল দু-য়ায়ি’ বলেন কি?

ইঞ্জিলে দেখুনঃ ‘ভাইয়েরা, আমাদের খোদাবন্দ ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে এবং পাক-রূহের দেয়া মহব্বতের মধ্য দিয়ে আমি তোমাদের বিশেষ ভাবে অনুরোধ করচ্ছি, তোমরা আমার জন্য মুনাজাত দ্বারা আমার সংগে যুদ্ধ চালাতে থাক। তোমরা মুনাজাত কর, এহুদিয়াতে যারা খোদাকে অমান্য করে তাদের হাত হতে যেন রক্ষা পাই, …. আমিন;-৬ষ্ঠ খন্ড ঃ রোমীয়-১৫:৩০-৩৩, পৃ: ৪৩৩। ইঞ্জিলের-৪২৫, ৪৩৬, ৪৬৪, ৫১৯, ৬৪২, ৬৫১, ৬৭২, ৬৭৭ ও ৭১৮ পৃষ্ঠায় মুনাজাত শেষে আমিন বলা হয়েছে।

তৌরাতে দেখুনঃ ‘মাবুদ তোমাকে রহমত দান করুন ও রক্ষা করুন; মাবুদের দয়া নূরের মত তোমার উপর পড়ুক, তাঁর মেহেরবানী তোমার উপর থাকুক। মাবুদ তাঁর মুখ তোমার দিকে ফিরান এবং তোমাকে শান্তি দিন, এভাবে তারা বনি-ইসরাইলদের উপর আমার নাম উচ্চারণ করবে, তাতে আমিই তাদের রহমত দান করব;-শূমারী ৭, আয়াত ২৪-২৭, পৃ: ৩৬৮। ‘সে লোকের উপর বদদোয়া দেয়া হয়েছে, যে ছাঁচে ফেলে কিংবা কাঠ বা পাথর খোদাই করে কোন মূর্তি তৈরি করে …. এ সমস্ত মূর্তি মাবুদের ঘৃনার জিনিস, কারিগরের হাতের কাজ মাত্র।’ তখন সকলে বলবে, ‘আমিন’;-দ্বিতীয় বিবরণ ২৭, আয়াত ১৫, পৃ:৫৩৭। তৌরাতের-৫৩৭-৫৩৯ পৃষ্ঠায় (দ্বিতীয় বিবরণ ২৭) এর ১৫, ১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬ আয়াতে মুনাজাত শেষে আমিন বলা হয়েছে।

জবুরে দেখুনঃ ‘প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত আল্লাহর যিনি ইসরাইলীয়দের মাবুদ, তাঁর প্রশংসা হোক। আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৪১:১৩, পৃঃ ৭৫। ‘চিরকাল তাঁর মহিমাপূর্ণ নামের প্রশংসা হোক; সারা দুনিয়া তাঁর মহিমায় পূর্ণ হোক। আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৭২:২০, পৃ: ১২৮। ‘চিরকাল আলহামদুলিল্লাহ্! আমিন, আমিন;-জবুর শরীফ ৮৯:৫২, পৃ: ১৬৪।

[শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ভাস্কর্য নির্মাণ করেছে মুসলিমগণ। উক্ত সৌধগুলি ‘কারিগরের হাতের তৈরি’ এবং তাতে ফুল/ ফুলের মালা বা ফুলের তোড়া দ্বারা সম্মান করে ‘দীন ইসলামের’ নামধারী আলেমগণের নিকট থেকে দু‘আ শেষে ‘আমিন, বা আমিন, আমিন’ বলতে শুনা যায়। উক্ত আমিন বা আমিন! আমিন! বলতে বলতে মনে হয় মুসলিমগণ কুরআন শিক্ষা ভুলেই গেছে।] বর্তমান বিশ্বের মুসলিমদের যারা প্রচলিত দীনের অনুসরণ করে তারা সবাই বিভ্রান্ত নয় কি?]

.

2)- http://www.masjidtucson.org/submission/practices/salat/saying_ameen_amen_in_contact_prayers.html

ধর্ম দুই প্রকার যথা, ১/ চলন্ত ধর্ম ২/ চুড়ান্ত ধর্ম

By badsah munsi fbfd

আপনি কি জানে ধর্ম কয় প্রকার, জানা না থাকলে জেনে নিন। শুনুন ধর্ম দুই প্রকার যথা, ১/ চলন্ত ধর্ম
২/ চুড়ান্ত ধর্ম, চুড়ান্ত ধর্ম সেটা যেটা আল্লাহর বেধে দেওয়া নির্ধারিত ধর্ম, যার সনদ বা দলিল হিসেবে আল্লাহ নবি মুহাম্মদের উপরে কুরআন বিস্তারিত ব্যক্ষা করে পাঠিয়েছেন,
আর চলন্ত ধর্ম হলো, যা পুর্ব হতে বাপ দাদারা করে এসেছে, আর তাদের বিধানের অভাব নেই, যেমন বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ তিরমীজি, মেশকাত দার কুতুনি মুয়াত্তা ফাজায়েলে আমাল বেহেস্তি জেওর মোকসেদ। সহ আরো অগনিত, আছে,, যে গুলোর সনদ আল্লাহ দেয়নি। আফসোস হলো, যখন তাদের বলা হয় তোমরা আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, সেই চুড়ান্ত ধর্মের দিকে ফিরে এস, তখন, তারা বলে না, বরং আমরা আমাদের বাপ দাদাদের যে চলন্ত বা প্রচলিত ধর্মের উপর পেয়েছি সেটা উপরই থাকবো,যদিও তাদের বাপ দাদারা কিছু জানতো না জানতো না সরল পথ, (কুরআন) ২:১৭০) আর তারাই কাফের যারা সরল পথ (আল্লাহর আয়াত)মানেনা ২৯:৪৭)

…….

Comments

বাদশা ভাই অসাধারন। আপনার কথা মুসলিম, মুমিন,মুত্তাকী ছাড়া, পীর/বুজর্গ /বাপদাদার ধর্মের অনুসারী তথা ৬/১১২ নং আয়াতের নবীর শত্রুদের তৈরী ৩১/৬ লাহওয়াল হাদিসের অনুসারীরা বুঝবে না।
কারন তাদের সাথে আল্লাহ এবং নবীর কোন সম্পর্কই নেই, ৩/২৮, ৬/১৫৯।

…..

হাদিস ওয়ালাদের মাথাই এ গুলো ঢুকবে না। পারে অযথা তর্ক করতে। সূরা, ১০/১৫

…..

নবী মোহাম্মদ রাসুলের কুরআনের বাহিরে কোন বানী প্রচার করার ক্ষমতা ছিল না ।
১০/১৫;৬/১৫;১৭/৭৩-৭৫;৪২/২৪;৫৩/২-৪;৬৯/৪৩-৪৮;৭২/২৭-২৮।

কেন ইসরায়েলের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছে না মুসলিমরা?

কেন ইসরায়েলের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছে না মুসলিমরা?
by এগিয়ে চলো ডেস্ক | Dec 11, 2017 | অদ্ভুত,বিস্ময়,অবিশ্বাস্য, এরাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড | 0 comments

অনেকের মনে প্রশ্ন, দেড়শ কোটি মুসলিম দুনিয়ায় থাকতে মাত্র ৫০/৬০ লক্ষ ইহুদী কিভাবে মাথার উপর ছুড়ি ঘুরাচ্ছে? ইয়েস, মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন! উত্তরটা আপনারও জানা, তারপরও দিচ্ছি- জ্ঞানবিজ্ঞান আর প্রযুক্তি দিয়ে। অনেকে বলেন সালাউদ্দিন আইয়ুবির মতো বীর আর নাই, তাই আমাদের পরাজয় হচ্ছে! এদের কে বুঝাবে যে যুগের পরিবর্তন হয়েছে? মানুষ এখন ঢাল-তলোয়ার, বর্শা দিয়ে ঘোড়ায় চড়ে যুদ্ধ করে না! করে স্বয়ংক্রিয় ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে, ওয়ার প্লেন রাডার দিয়ে, একে ৪৭ দিয়ে!
তাহলে মুসলিমরা কেন পারছে না? কারণ মুসলিমরা জ্ঞান বিজ্ঞানকে ভয় পায়- তাদের ধারণা, জ্ঞান-বিজ্ঞানে উন্নত হলে ধর্ম বলতে কিছু থাকবে না, তাই একে ইহুদী নাসারার ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে এর থেকে দূরে থাকাটাই মঙ্গল! তা না হলে বেহেশত হাতছাড়া হয়ে যাবে। আফসোস মুসলমানরা এখনো বহু বিবাহ, তালাক, হিল্লা আর মেয়েদের ঘরে আবদ্ধ রাখার আইন নিয়েই পড়ে আছে! মানুষ যেসময় জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে চন্দ্র সূর্য গ্রহ নক্ষত্রে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত- আমরা তখনো বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত!

আমরা যখন কলেরাকে উলাওটা নামন দানবের কাজ, কুষ্ঠ রোগী আর গুটি বসন্তকে সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ আখ্যা দিতে ব্যস্ত– তখন ইহুদি নাসারারা বের করলো টিকা প্রতিষেধক! জীবাণু দিয়েই জীবাণু মারার কৌশল! যক্ষ্মা টাইফয়েড পোলিও হলেও চলতো পানিপড়া চিকিৎসা। শুধু সঠিক জ্ঞানচর্চার অভাবে আমরা ইহুদি নাসারার সাথে পারি না!
ইসরায়েলের আয়তন কত? জনসংখ্যা? অথচ সেই পুঁচকে একটা দেশের ভয়ে মরক্কো থেকে ধরে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত কোন মুসলিম দেশ টু শব্দটিও উচ্চারণ করতে পারেনা! ২০১৪ তে গাজা অবরুদ্ধ করে ১৪০০ প্যালেস্টাইনি মেরেছে শুধু ব্যারেল বোমা, নিয়ন্ত্রণ ক্রুড মিসাইল আর হোয়াইট ফসফরাস দিয়ে! তাদের আছে অত্যাধুনিক আন্তঃ মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র– যা দিয়ে জায়গায় বসে কম্পিউটার টিপে আরেকটা দেশের একটা শহরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত আক্রমণ করতে পারবে! মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম- আরেক দেশ থেকে ছোঁড়া মিসাইল ভূমিতে পরার আগেই ধ্বংস হয়ে যাবে আকাশপথে! আছে নিউক্লিয়ার বা এটম বোম্ব! আছে সুদক্ষ পাইলটসহ ওয়ার প্লেইন, আছে শব্দবিহীন রাডার ফাঁকি দেয়ার মতো পাইলটবিহীন বোমারু বিমান! এখন বলেন কোন আরব বা মুসলিম দেশটার এত কিছু আছে? আর তাই ইসরায়েলের সাথে কেউ ভিড়ে না! ১৯৬৭ এ একবার ভিড়েছিলো– ১৭ টি আরব দেশ মাত্র ৫ দিনে আত্মসমর্পণ করে! তথাপি মিশর হারিয়েছিলো সিনাই উপত্যকা, জর্ডান হারিয়েছিল ডেড সি, সিরিয়া গোলান মালভূমি!
আজকে আমরা কিছু হলেই বলি ইহুদি নাসারার ষড়যন্ত্র! অথচ তাদের এই বিস্ময়কর উন্নয়ন দেখেও শিখি না আমাদের গ্যাপটা কোথায়! তিতা হলেও সত্য, এই ইহুদী নাসারার আবিষ্কারের দরুন আজকে দুটো ভাত রুটি খেতে পারছি- কি অবাক হচ্ছেন? জিন গবেষণা করে চাউলের গমের শস্যদানার হাইব্রডাইজেশন না করলে বছরে বছরে দূর্ভিক্ষ হতো! বছরে একবার ফসলে কি ৭০০ কোটি মানুষের আহার হতো? এইসব ফার্মি, পোল্ট্রি, ব্রয়লার লেয়ার খাদ্য বিপ্লব ঘটিয়েছে! যাকে আমরা বলি জি এম ও ফুড! প্রচণ্ড গরমে এসি, ফ্যান, বিদ্যুৎ তো আছেই! আজকে বিজ্ঞানের অবদানেই মরুভূমি তে ফসল ফলে। লবণাক্ত পানিকে রিফাইন করে পানের উপযোগী করা হয়েছে। এখন আর পানির অভাবে তায়াম্মুম করা লাগে না! তারপরও কি ইহুদি নাসারার অবদান নাই? গরু, ঘোড়া, উটের বদলে চড়ছি ফেরারি অডি গাড়িতে! উড়োজাহাজ, বুলেট ট্রেন তো আছেই! আছে কিডনি-লিভার পর্যন্ত চেঞ্জ করার অবদান! এই যে রক্তের গ্রুপ আর তা দিয়ে মানুষ বাঁচানো- এটাও তাদের আবিষ্কার! এরপরও ইহুদি নাসারার অবদান নাই? এই যে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ফেইসবুক- এইগুলাই বা কম কি? তারপরও এরা ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে, তাই না?
হ্যাঁ, একমাত্র ছাগুরাই বিশ্বাস করে ইহুদী নাসারা দিনরাত ষড়যন্ত্র করছে, আর আমাদের এই অভাব এই দৈনদশার জন্য তারাই একমাত্র দায়ী! অথচ তাদের আবিষ্কৃত জিনিস ছাড়া একদিনও কেউ চলতে পারবে না। এইতো সৌদি আরব কিছুদিন আগেই আমেরিকা থেকে ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে! এই ইহুদি নাসারার কাছ থেকেই কিনেছে! এই যে সৌদির তেল স্বর্ণ মাটির নিচে পড়েছিলো- তা এই ইহুদি নাসারার আবিষ্কার করা প্রযুক্তির কারণেই বিক্রি করে দু’ পয়সা কামাচ্ছে! তালেবান বলেন আইএস বলেন, ইহুদির আবিষ্কার Ak 47, m15 বন্দুক, আর ডি এক্স দিয়ে সুইসাইড বেল্ট বানায়! অর্থাৎ মরতে গেলেও ইহুদি নাসারাই লাগে!
মোদ্দাকথা, মুসলিম জাতি যতদিন শিক্ষাদীক্ষা জ্ঞানবিজ্ঞানে প্রভুত উন্নতি না করবে, ততদিন মার খেয়েই যাবে! নিজেরাই নিজেদের মারবে! কখনো শিয়া সুন্নি নিয়ে, কখনো খিলাফত জিহাদ নিয়ে! আজকের সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেন, সোমালিয়া তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ! অথচ, পাশাপাশি বৌদ্ধরা, হিন্দুরা, খ্রিস্টান ইহুদী জরাথ্রুস্ট্ররা- কোথায় পৌঁছে গেছে! আর সৌদি আরব প্রতিবেশি ইরানকে আইসোলেট করে রেখেছে; কারণ তারা সহি মুসলিম না! শিয়া!
অথচ পুঁচকে একটা ইসরায়েল আর প্রায় ১ কোটি ইহুদি, ১.৮ বিলিয়ন মুসলমানকে তুর্কিনাচন নাচাচ্ছে! কি অর্থনীতি, কি রাজনীতি, কি সামরিক শক্তি- সব দিক থেকেই! আজ পর্যন্ত শুনছেন একটা ইহুদি যুবক সুইসাইড বোম এটাক করছে? ওদের যুবারা পড়াশোনা করে দেশের বিজ্ঞানি, পাইলট, মিলিটারি, প্রফেসর ডাক্তার হয়! আর মুসলিম যুবারা হয় জিহাদি! নিউজ শুনেন, দিনাজপুরের কাহারুলে মসজিদে সাড়ে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেন ৪২ বছরের মাদ্রাসা শিক্ষক! কাবুলে মসজিদে বোমা বিস্ফারণ! নিহত কয়েক ডজন! মিশরের সিনাইয়ে মসজিদে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ২৫৩ জন! এইখানেও কি ইহুদি নাসারার হাত ছিলো?
মুসলিম জাতির এই দৈন দশার কবে মুক্তি মিলবে? নিজেদের ভেতরের এই হানাহানি, ফতোয়াবাজি আর জিহাদ নামক ক্যান্সার থেকে আদৌ মুক্তি মিলবে কি? নাকি আজীবন ইহুদি নাসারার ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে দিবে? আর উলটা নিজেরা নিজেরা কামড়াকামড়ি করে আধমরা হয়ে পড়ে থাকবে; সেই সুযোগে জেরুজালেম না– আরো অনেক কিছুই হাতছাড়া হবে!

.

By saidur rahman fbfd

​যারা আল্লাহর আয়াত (কুরআন) মানেন না তাদেরকে আল্লাহ কি বলেছেন জানেন কি?

যারা আল্লাহর আয়াত (কুরআন) মানেন না তাদেরকে আল্লাহ কি বলেছেন জানেন কি?
যারা আল্লাহর আয়াত প্রত্যাখ্যান করে / যারা আল্লাহর আয়াত মানে না-
১. তারা নবীর শত্রু, শয়তান (৬:১১২)!

২. তারা তাগূত- জাহান্নামী (২:২৫৭)!

৩. তাদের অবস্থা হাঁপানো কুকুরের মত (৭:১৭৬)!

৪. তারা পুস্তকবহনকারী গাধার মত (৬২:৫)।

৫. তারা পশুর মত, বা তার থেকেও বিভ্রান্ত (৭:১৭৯)!

৬. তারা নিকৃষ্ট জীব (৮:২২)!

৭.তারা বধির ও মুক, অন্ধকারে রয়েছে (৬:৩৯)!

৮. তারা কাফির (৫:৪৪)!

৯. তারা যালিম (৫:৪৫)!

১০. তারা ফাসিক (৫:৪৭)!

১১. আল্লাহর আয়াত আসার পর যারা আল্লাহর আয়াত ভুলে থাকবে 

তাদেরকে হাসরের মাঠে অন্ধ অবস্থায় উঠানো হবে (২০:১২৪-১২৭)!

.

By zahir alam 

পীর, মুফতি, শায়েখ হয়েও কাফের হওয়া যায়

By MD. Lipu fbfd 

দাড়ী, টুপি, যুব্বা পড়ে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, পীর, মুফতি, শায়েখ হয়েও কাফের হওয়া যায়। 

আমি বাস্তব অভিজ্ঞতা ছাড়া কোন মন্তব্য বা স্ট্যেটাস দেই না?

মুফতি মাসুদের মতো লক্ষ লক্ষ মুফতি গনেরা কাফের, ফাসেক, যালেম হয়ে বসে আছে, ৫/৪৪,৪৫,৪৭।

কেবল কাফেররাই আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করে, ২৯/৪৭।

নিচের তিনটি আয়াত খুব ভালোকরে খেয়াল করুন??

যারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাসী  আল্লাহ তাদেরকে মুসলিম বলেছেন, ২৭/৮১। 

আল্লাহ, সুরা নাহল ৮৯ নং আয়াতে বলেন, কোরআন মুসলিমদের জন্য সুস্পস্ট, ব্যাখ্যাকৃত কিতাব, ১৬/৮৯।

মুত্তাকী ছাড়া কোরআন থেকে কেউ পথ পাবে না, ২/২। মুত্তাকী কারা? দেখুন, ২/১৭৭, ৩৯/৩৩।

salat analysis-aliahmed

Salat as per Quran:-[A]-20:130, [B]- 30

O- سَبِّحْ بِحَمْدِ-O-wsbH bHmdO-Glorify  with praise-O

The root Hmd (ح م د) occurs 63 times in Quran, in 5 derived forms:

  • 1 times as active noun Hmdwn
  • 1 times as passive noun mHmwd
  • 1 times as passive verb yHmd
  • 17 times as Hmyd
    • 16 times as adjective
    • 1 times as noun
  • 43 times as noun Hmd

[ http://quranix.org/c/Hmd ]

[A]-20:130-“সুতরাং এরা যা বলে সে বিষয়ে ধৈর্য্য ধারণ করুন এবং আপনার পালনকর্তার প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে, সূর্যাস্তের পূর্বে এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষনা করুন রাত্রির কিছু অংশ ও দিবাভাগে, সম্ভবতঃ তাতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন।“

Muhammad Asad (The Message Of Quran)

.
20:130 Hence, bear with patience whatever they [who deny the truth] may say, and extol thy Sustainer’s limitless glory and praise Him before the rising of the sun and before its setting; and extol His glory, too, during some of the hours of the night as well as during the hours of the day,114# so that thou might attain to happiness.
#114-Lit., “at the sides [or “extremities”] of the day”. See in this connection also 11:114 and the corresponding note 145.

………………………………

Edip-Layth (Quran: A Reformist Translation)
Times of the Contact Prayers

11:114 You shall hold the contact prayer at both ends of the day, that is, section of the night. The good deeds take away the bad. This is a reminder for those who remember.12#

#12-In the Quranic Arabic, the word layl denotes the period from sunset to sunrise (2:187). The times of the evening and dawn prayers extend from the proximate edges of night to both ends of the day. The Quran provides detailed information about sala prayer. This verse, according to the popular reading, refers to three sala prayers. Some students of the Quran understand five times rather than three times for contact prayers. There are some who have inferred two prayers a day. However, as the detected and undetected influence of sectarian teachings and practices wanes with time, the disagreement on this issue may lead to a better understanding. We should respect the differences in our understanding, as long as they are based on the Quran under the light of reason. See the Appendix Sala Prayer According to the Quran.

(2:187)- Edip-Layth (Quran: A Reformist Translation)
2:187 It has been made lawful for you during the night of fasting to approach your women sexually. They are a garment for you and you are a garment for them. God knows that you used to betray yourselves so He has accepted your repentance, and forgiven you; now you may approach them and seek what God has written for you. You may eat and drink until the white thread is distinct from the black thread of dawn; then you shall complete the fast until night; and do not approach them while you are devoted in the temples. These are God’s boundaries, so do not transgress them. It is thus that God makes His signs clear to the people that they may be righteous.51#

#51- In the language of the Quran, the word layl (translated as night) is used to mark the period from sunset to sunrise.

…..x……

[B]- 30:17-18– Muhammad Asad

فَسُبْحَانَ اللَّهِ حِينَ تُمْسُونَ وَحِينَ تُصْبِحُونَ-17

وَلَهُ الْحَمْدُ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَعَشِيًّا وَحِينَ تُظْهِرُونَ-18

17-17 Therefore, glorify God when you retire at night, and when you rise in the morning.5
Note 5
Seek eminence in the twilight and dawn of your lives. 21:10, 23:71, 29:45, 29:51

.

18-and [seeing that] unto Him is due all praise in the heavens and on earth, [glorify Him] in the afternoon as well, and when you enter upon the hour of noon.13
Note 13
I.e., “remember God at all times”. Apart from this general exhortation, the hours mentioned above circumscribe the times of the five daily prayers incumbent upon a Muslim. The “evening hours” indicate the prayer after sunset (maghrib) as well as that after nightfall (isha).

.

17-অতএব, তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা স্মরণ কর সন্ধ্যায় ও সকালে,

18-এবং অপরাহ্ণে ও মধ্যাহ্ণে। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে, তাঁরই প্রশংসা।