সংক্ষিপ্ত পোস্ট
ইদানিং কালে এমন কথা শুনা যায় কুরআন মানি হাদিস মানি না, কিছু কিছু নামধারী মুসলিম দাবীদারদের মুখে, যারা আবার নিজেদের আহলে কুরআন বলে দাবী করে।
তারা দাবী করে রাসুল সাঃ এর নামে কোন হাদিস নেই সব মানুষের বানানো হাদিস, মুসলিমদের পথভ্রষ্ট করার জন্য রাসুল সাঃ নামে হাদিস চালিয়ে দেওয়া হইছে।।
শুধু কুরআন মানি হাদিস মানি না তাদের এই বিশ্বাস মতে তারা নিজেরকেি জাহান্নামী ফেরকা বানিয়ে নিয়েছে নিজেদের অজ্ঞতা বা পার্থিব লোভে। আর এটা প্রমান করবো কোন হাদিস দিয়ে নয় বরং আল কুরআনে বহুল আলোচিত সালাত নামক ইবাদত দ্বারাই।
যখন কুরআন মানি হাদিস মানিদের বলা হয় শুধু কুরআন অনুসরন করে কেমনে আপনারা সালাত আদায় করেন বা কায়েম করেন। তখন তারা সরাসরি উত্তর না দিয়ে নয় ছয় করে বা বলে সালাত আদায় কি সালাত কায়েম করা কি জিনিস আবার। অর্থাৎ তাদের কথায় বুঝা যায় সালাত কোন আমল (কায়িক ও পঠিত) বিষয় নয় শুধু বিশ্বাসের বিষয়। তাই আল কুরআনের আয়াত দিয়ে প্রমান করবো সালাত একটি দৈনিক গুরুত্বপুর্ন ও তারা কেমনে জাহান্নামি ফেরকা হয়ে গেছে।
১) সালাত দৈনিক আমল করা একটি ইবাদতঃ
আল কুরআন হতে যে সকল আয়াত দিবো সেগুলো পড়লেই বুঝতে পারবেব যে সালাত শুধু বিশ্বাসের ব্যপার নয় দৈনিক আমল করা ইবাদত
ক) নিদৃষ্ট সময় সালাত আদায় ফরজ
আল্লাহ বলেন
অতঃপর যখন তোমরা সালাত সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন সালাত ঠিক করে পড়। নিশ্চয় সালাত মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।
সুরা আন নিসা, আয়াত ১০৩
খ) দৈনিক কখন সালাত আদায় করতে হবে
আল্লাহ বলেন
আর সালাত কায়েম কর দিনের দু’ প্রান্তভাগে (অর্থাৎ ফজর ও মাগরেবের সময়) ও রাতের প্রথমাংশে (অর্থাৎ এশার সময়)।
সুরা হুদ, আয়াত ১১৪
আল্লাহ বলেন
সূর্য ঢলে যাওয়ার পর হতে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত (অর্থাৎ যোহ্র, আসর, মাগরেব ও এশার) সালাত কায়েম কর, আর কায়েম কর ফজরের নামায।
সুরা বানী ইসরায়ীল, আয়াত ৭৮
আল্লাহ বলেন
আর সূর্যোদয়ের পূর্বে (ফজরে) ও সূর্যাস্তের পূর্বে (আসরে) তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর রাত্রির কিছু সময়ে (এশায়) এবং দিনের প্রান্তভাগগুলিতে (ফজর, যোহ্র ও মাগরেবে), যাতে তুমি সন্তুষ্ট হতে পার।
সুরা ত্বাহা, আয়াত ১৩০
আল্লাহ বলেন
(৯) মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন সালাত (আযান) দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।
(১০) অতঃপর সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
সুরা আল জুমুআহ, আয়াত ৯-১০
গ) সালাত আদায় বিষয়ক অন্যান্য আয়াত
আল্লাহ বলেন
যখন তোমরা কোন দেশ সফর কর, তখন নামাযে কিছুটা হ্রাস করলে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, কাফেররা তোমাদেরকে উত্ত্যক্ত করবে। নিশ্চয় কাফেররা তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সুরা আন নিসা, আয়াত ১৫৩
আল্লাহ বলেন
আপনি আপনার পরিবারের লোকদেরকে নামাযের আদেশ দিন এবং নিজেও এর ওপর অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোন রিযিক চাই না। আমি আপনাকে রিযিক দেই এবং আল্লাহ ভীরুতার পরিণাম শুভ।
সুরা ত্বােয়া হা, আয়াত ১৩২
আল্লাহ বলেন
তবে তারা স্বতন্ত্র, যারা সালাত আদায় কারী।
সূরা আল-মাআরিজ, আয়াত:২২
উল্লেখিত আয়াতগুলো হতে বুঝতে পারলাম সালাত শুধু বিশ্বাসের ব্যপার নয় এটা দৈনিক আমলের ব্যপার। আল কুআরনে দৈনিক সালাত আদায়ের কথা বললেও কিন্তু সালাতের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত কোন পদ্ধতিতে আদায় হবে তার বর্ননা করা হয় নাই।
২) কুরআন মানি হাদিস মানি না তাদের কথা বা বিশ্বাস তারা নিজেরাই কেন জাহান্নামি হয়ে যায়ঃ
আল্লাহ বলেন
(সালাতে) কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু আবৃত্তি কর।
সুরা আল মুযযাম্মিল, আয়াত ২০
আল্লাহ বলেন
যিনি আপনাকে দেখেন যখন আপনি সালাতে দন্ডায়মান হন,
সুরা আশ শোআরা, আয়াত ২১৮
আল্লাহ বলেন
হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।
সুরা আল হজ্জ, আয়াত ৭৭
আল কুরআনে সালাত আদায় পদ্ধতির এমন বর্ননাই পাওয়া যায়, মানে সালাতের জন্য দাড়াতে হবে রুকু করতে হবে সেজদা করতে হবে, আয়াত পাঠ করতে হবে। কিন্তু কুরআনে সালাত আদায় পদ্ধতি সম্পুর্ন বিবরন পাওয়া যায় না অর্থাৎ
ক) সালাতে কোনটার আগে কোনটা করতে তার বর্ননা পাওয়া যায় না
খ) কোন অবস্থায় (দাড়ানো, রুকু, সেজদা) কি বলতে বা হবে না এর কোন বর্ননা পাওয়া যায় না
গ) সালাতে কুরআনের কিছু অংশ পাঠ করতে বলা হইছে কিন্তু সালাতের কোন অবস্থায় পাঠ করতে হবে তার বর্ননা পাওয়া যায় না
ঘ) আয়াত গুলো উচ্চ স্বরে না মনে মনে পড়তে হবে তার বর্ননা পাওয়া যায় না
গ) কোন অবস্থা দিয়ে সালাত শুরু ও শেষ করতে হবে তার বর্ননা পাওয়া যায় না
ঘ) জামআতে সালাত কে কি করবে অর্থাৎ একজন ইমাম সালাত পড়াবে না সবাই একযোগে ইমাম ছাড়া পড়বে এর বর্ননা পাওয়া যায় না
ঙ) জামআতে সালাত আদায় করলে কেও সালাত শুরুর বেশ খানিক পর যোগ দিলে সে কি ভাবে বা কি অবস্থায় সালাত শুরু করবে তার বর্ননা পাওয়া যায় না।
মোটা দাগে বিষয়গুলো বললাম, প্রচলিত সালাতে এমন অনেক বিষয় আছে যা সম্পাদনের পদ্ধতি আল কুরআন হতে বর্ননা পাওয়া যায় না।
যেহেতু কুরআন মানি, হাদিস মানি না দাবীদাররা শুধু কুরআন মানে সেহেতু তাদের ইবাদতের দলিলের একমাত্র উৎস আল কুরআন এবং যেহেতু সেই আল কুরআনে দৈনিক সালাত আদায়ের কথা বলা হইছে কিন্তু সেই সালাত আদায়ের সম্পুর্ন পদ্ধতি আল কুরআনে পাওয়া যায় না। সেহেতু তাদের কথা বা বিশ্বাস মতে তাদের পক্ষে আজিবন সালাত আদায় করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। যদি কেও সালাত আদায় করে দাবী করলেও নিজেদের মনগড়া নিয়মে সালাত আদায় করে, যা আল্লাহর নিকট মন গড়া নিয়মে আমল করা ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয় সুরা কাসাস আয়াত ৫০ মতে।
যেহেতু তাদের কথা বা বিশ্বাস মতে কুরআনের দলিল দিয়ে সালাত আদায় করা আজিবন কোন ক্রমে সম্ভব নয় সেহেতু সুরা সুরা মুদাসসির আয়াত নং ৪১, ৪২,৪৩,৪৭ মতে তারা জাহান্নামী হয়ে যায়। এবার সুরা মুদাসসির এর আয়াত গুলো আবার একটু দেখে নেই
আল্লাহ বলেন
(৪১) অপরাধীদের সম্পর্কে
(৪২) বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে?
(৪৩) তারা বলবেঃ আমরা সালাত পড়তাম না,
(৪৪) অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না,
(৪৫) আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম।
(৪৬) এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।
(৪৭) আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত।
সুরা মুদাসসির, আয়াত ৪১-৪৭
এই বিষয়ে বিস্তারিত পোস্ট লিং নিচে দেওয়া হলো, যেখানে এই সংক্রান্ত মনে যত ধরনের প্রশ্ন জাগবে তার উত্তর পাবেন আশা করি।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1015075008834891&id=100009972030385
……..
Source:-(see many comments)
https://m.facebook.com/groups/1637342032970504?view=permalink&id=2635409619830402
.
Commented by syedraf:- https://refquranistajm.wordpress.com/2020/04/26/in-quran-only-two-fard-salat-syedraf/