বিষয়ঃ- যাকাত by ss Jaman
যাকাত শব্দটি মূল য্বা, ক্বা, ফ থেকে উৎপত্তি, যাক্কা এবং যাক্কি শব্দ থেকে আগত।
যাকাত শব্দের অর্থ পরিশুদ্ধ বা Purification হওয়া, অর্থাৎ আমার সম্পদের উপর গরীব দের যে হক রয়েছে, তা আল্লাহর নির্দেশিত খাতে বন্টনের মাধ্যমে সম্পদ কে হালাল করে নেওয়াই হচ্ছে যাকাত।
কোরআন এ শুধু যাকাত শব্দটি ৫৯ বার এসেছে, সালাত এসেছে ৯৯ বার, এরমধ্যে সালাত ও যাকাত এর গুরুত্ব বুঝাতে এটি একসাথে এসেছে ২৪ বার, যেখানে বলা হয়েছে,
“তোমরা সালাত কায়েম কর, এবং যাকাত পরিশোধ কর”
(২ঃ৪৩/৮৩/১১০/১১৭/২৭৭) (৪ঃ৭৭/১৬২) (৫ঃ১২/৫৫) (৯ঃ৫/১১/১৮/৭১) (২১ঃ৭৩) (২২ঃ৪১/৭৮) (২৪ঃ৩৭/৫৬) (২৭ঃ৩) (৩১ঃ৪) (৩৩ঃ৩৩) (৫৮ঃ১৩) (৭৩ঃ২০) (৯৮ঃ৫)।
যাকাতের প্রতিশব্দ হিসেবে ২ টি শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে,
১. সদাকা ২. দান বা ব্যয় ‘ইয়ুনফিকু’।
কেন যাকাত দিবো?
(৯২ঃ১৮) যে আত্মশুদ্ধির জন্য তার ধন-সম্পদ দান করে।
(৩৩ঃ৩৩) আল্লাহ তো কেবল তোমাদের মধ্য থেকে অপবিত্রতা দূর করতে চান এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে চান।
(৯ঃ১০৩) আপনি তাদের সম্পদ থেকে ‘সদকা’ গ্রহন করুন, এর দ্বারা আপনি তাদেরকে পবিত্র করবেন এবং পরিশোধিত করবেন।
(৫৯ঃ৭) যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান শুধু তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে।
আরো দেখুনঃ (৯ঃ১০৪) (৭৬ঃ৮-৯)(৯৮ঃ৫)(২৪ঃ৫৬)(১৬ঃ৯০)(২৮ঃ৭৮).
দান করলে সম্পদ বাড়েঃ-
(৩০ঃ৩৯) আল্লাহ্র সন্তষ্টি লাভের জন্য যে যাকাত তোমরা দাও (তা-ই বৃদ্ধি পায়) সুতরাং তারাই সমৃদ্ধশালী।
(২ঃ২৬১) যারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি শস্য-বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মে।
(৬৪ঃ১৭) যদি তোমরা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান কর, তাহলে তিনি তোমাদের জন্য তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবেন এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন।
আরো দেখুনঃ (২৮ঃ৫৪)(২ঃ১১০)(৫৭ঃ৭)(৫৭ঃ১৮).
দানের প্রতিফলন বা রেজাল্টঃ
(৩৪ঃ৩৯) তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার বিনিময় দেবেন।
(৮ঃ৬০) আল্লাহর পথে যা কিছু ব্যয় করবে, তার পূর্ণ প্রতিদান তোমাদেরকে দেওয়া হবে।
(৯ঃ১২১) তারা ছোট বা বড় যা কিছুই ব্যয় করে তা তাদের অনুকূলে (আমলনামায়) লিপিবদ্ধ হয়।
আরো দেখুনঃ (১৩ঃ২২)(২ঃ২৭২)(২৪ঃ৫৬)(৭৩ঃ২০).
দানের ব্যাপারে যাদের অনুসরণ করবোঃ
(৭ঃ১৫৬) যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় ও আমাদের অয়াতসমূহে ঈমান আনে।
(২২ঃ৪১) তারা এমন লোক যাদেরকে আমরা যমীনের বুকে প্রতিষ্ঠিত করলে সালাত কায়েম করবে, যাকাত দেবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে;
(৯৮ঃ৫) তারা যেন আল্লাহর ইবাদত করে তাঁরই জন্য দ্বীনকে একনিষ্ঠ করে এবং সালাত কায়েম করে ও যাকাত প্ৰদান করে। আর এটাই সঠিক দ্বীন।
আরো দেখুনঃ (২ঃ৪৩)(৫ঃ৫৫)(৪ঃ১৬২)(৯ঃ১১)(৯ঃ১৮)(৯ঃ৭১)(২৪ঃ৩৭)(২৩ঃ৪)(৪২ঃ৩৮)(৩২ঃ১৬)(২৮ঃ৫৪)(২২ঃ৩৫)(১৯ঃ৩১)(৬৪ঃ১৬)
দান করার সামর্থ্য আল্লাহর থেকেই পাইঃ
(৪ঃ৩৯) আল্লাহ তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করলে তাদের কি ক্ষতি হত?
(২৩ঃ৩৫) আমরা তাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা সহযোগিতা করেছি,
(৩ঃ২৭) আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অপরিমিত রিয্ক দান করেন। ’
আরো দেখুনঃ (৮ঃ৩)(৯ঃ৫৯)(৩ঃ১৭০)(১৬ঃ৫৫)(১৬ঃ৫৬)(১০ঃ৮৮)(১০ঃ১০৭)(৯ঃ৭৫)।
কি ব্যয় করবো?
(২ঃ২১৯) তারা আপনাকে জিজ্জেস করে কি তারা ব্যায় করবে ? বলুন, যা উদ্বৃত্ত (Surplus).
কিভাবে দান করবো?
(৬৫ঃ৭) বিত্তবান নিজ সমৰ্থ্য অনুযায়ী ব্যয় করবে এবং যার জীবনোপকরণ সীমিত সে আল্লাহ যা দান করেছেন তা থেকে ব্যয় করবে। আল্লাহ যাকে যে সামথ্য দিয়েছেন তার চেয়ে গুরুতর বোঝা তিনি তার উপর চাপান না।
(১৭ঃ২৯) তুমি তোমার হাত গলায় বেঁধে রেখো না এবং তা সম্পূর্ণরূপে মেলেও দিও না, তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও আফসোসকৃত হয়ে বসে পড়বে।
(২ঃ২৭৪) যারা নিজেদের ধন-সম্পদ রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে তাদের প্রতিদান তাদের রব-এর নিকট রয়েছে।
(২৫ঃ৬৭) যখন তারা ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না, কৃপনতাও করে না, আর তাদের পন্থা হয় এতদুভয়ের মধ্যবর্তী।
(৩ঃ১৩৪) যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল অবস্থায় ব্যয় করে।
আরো দেখুনঃ (১৩ঃ২২)(৩৫ঃ২৯)(৪ঃ১১৪)(২ঃ২৭১)(৩ঃ১৩৪)(১৬ঃ৭৫)(৫৭ঃ১০).
কোন বস্তুটি দান করবো?
(৩ঃ৯২) তোমরা যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো সওয়াব অর্জন করবে না। আর তোমরা যা কিছু ব্যয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবগত।
(৮ঃ৩) আমি তাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, তা থেকে দান করে।
দান কেমন হওয়া উচিৎঃ
(২ঃ২৬৭) হে বিশ্বাসিগণ! তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি জমি হতে তোমাদের জন্য যা উৎপাদন করে থাকি, তা থেকে যা উৎকৃষ্ট, তা দান কর। এমন মন্দ জিনিস দান করার সংকল্প করো না, যা তোমরা মুদিত চক্ষু ব্যতীত গ্রহণ কর না।
দানের ক্ষেত্রে ৩ টি উদাহরণঃ
(২ঃ২৬৪) দান হচ্ছে পাথরের মত একটি বড় ধন ভান্ডার, যা মাটি দিয়ে ঢাকা থাকে, কেউ যদি খোটা দেয় তবে বৃষ্টির মাধ্যমে মাটি সরে গিয়ে ধনভাণ্ডারটি উন্মুক্ত হয়ে যায়।
(২ঃ২৬৫) কোন উঁচু ভূমিতে অবস্থিত একটি বাগান, যাতে মুষলধারে বৃষ্টি হয়, ফলে তার ফল-মূল দ্বিগুণ জন্মে। যদি মুষলধারে বৃষ্টি নাও হয়, তবে হাল্কা বৃষ্টিই বা এর শিশির বিন্দুই যথেষ্ট।
অর্থাৎ দানের প্রতিদান দ্বিগুণ যা কোন ভাবেই আল্লাহ নষ্ট করবেন না।
(২ঃ২৬৬) এমন দান যেখানে ইনভেস্টমেন্ট করা হয়ে গেছে কিন্তু ফল পাওয়ার আগেই তা স্বমূলে বিনাশ হয়ে গেছে, এমনো কোন উপায় নেই যে পূনঃরায় মেশিন চালু করা যায়।
অর্থাৎ আমি দান করেছি কিন্তু প্রতিদান পেলাম না।
কার্পণ্য করা যাবে নাঃ
(৪৭ঃ৩৮) তোমরাই তো তারা যাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছে; যারা কার্পণ্য করে, তারা তো কার্পণ্য করে নিজেদের প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত।
(৩ঃ১৮০) আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তাতে যারা কৃপণতা করে তাদের জন্য তা মঙ্গল, যেটাতে তারা কৃপণতা করবে কেয়ামতের দিন সেটাই তাদের গলায় বেড়ী হবে।
(৪ঃ৩৭) যারা কৃপণতা করে এবং মানুষকে কৃপণতার নির্দেশ দেয় এবং আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তা গোপন করে। আর আমরা কাফেরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
আরো দেখুনঃ (৯ঃ৭৬)
যে দান বাতিল হয়ঃ
(৪ঃ৩৮) আর যারা মানুষকে দেখাবার জন্য তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনে না। আর শয়তান কারো সঙ্গী হলে সে সঙ্গী কত মন্দ!
(১৭ঃ২৭) অপব্যয় কারী শয়তানের ভাই।
(৯ঃ৫৩) ‘তোমার ইচ্ছাকৃত ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছাকৃত, তোমাদের কাছে থেকে তা কিছুতেই গ্রহণ করা হবে না; নিশ্চয় তোমরা হচ্ছ ফাসিক সম্প্রদায়।’
আরো দেখুনঃ (৭৪ঃ৬)(৩ঃ১১৭)(৯ঃ৫৪)
অসামর্থ্য ব্যাক্তি দান না করলেও হবেঃ
(৯ঃ৯১) যারা দুর্বল, যারা পীড়িত এবং যারা অর্থ সাহায্যে অসমর্থ, তাদের কোন অপরাধ নেই, যদি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের হিতাকাঙ্খী হয়। মুহসিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন পথ নেই; আর আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
(২ঃ২৮০) আর যদি সে অভাবগ্রস্থ হয় তবে সচ্ছলতা পর্যন্ত তা অবকাশ। আর যদি তোমরা সাদকা কর তবে তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানতে।
আরো দেখুনঃ (৯ঃ৭৯)
দান না করেও দানের সওয়াব পাওয়াঃ
(৯ঃ৯২) আর ঐ লোকদেরও (বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন পথ)… তারা এমন অবস্থায় ফিরে গেল যে, তাদের চক্ষু হতে অশ্রু বইতে লাগল এ দুঃখে যে, তাদের কাছে ব্যয় করার মত কোন কিছুই নেই।
কাকে দান করবো?
(২ঃ২৭৩) অভাবগ্রস্ত লোকদের প্রাপ্য; যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে, জীবিকার সন্ধানে ভূপৃষ্ঠে ঘোরা-ফেরা করতে পারে না। তারা কিছু চায় না বলে, অবিবেচক লোকেরা তাদেরকে অভাবমুক্ত মনে করে। তুমি তাদেরকে তাদের লক্ষণ দেখে চিনতে পারবে; তারা লোকেদের কাছে নাছোড়বান্দা হয়ে যাচ্ঞা করে না।
কি কি খাতে ব্যয় হবে?
(৯ঃ৬০) সদকা তো শুধু ফকীর, মিসকীন ও সদকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য, যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তিতে, ঋণ ভারাক্রান্তদের জন্য, আল্লাহ্র পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহ্র পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
(২ঃ১৭৭) সম্পদ দান করবে তার ভালবাসায় আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, যাকাত দিবে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করবে, অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করবে। তারাই সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকী।
(২ঃ২১৫) ‘যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করবে তা পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিসকীন এবং মুসাফিরদের জন্য। উত্তম কাজের যা কিছুই তোমরা কর আল্লাহ্ সে সম্পর্কে সম্যক অবগত।
(৮ঃ৪১) যুদ্ধে যা তোমরা গনীমত হিসেবে লাভ করেছ ,তার এক-পঞ্চামাংশ আল্লাহ্র, রাসূলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীনদের এবং সফরকারীদের।
(৫৭ঃ৭) আল্লাহ্ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রাসূলকে ‘ফায়’ হিসেবে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহ্র, রাসূলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীন ও পথচারীদের।
(৪ঃ৮) সম্পত্তি বন্টনকালে আত্মীয়, ইয়াতীম এবং অভাবগ্রস্ত লোকদের উপস্থিত থাকলে তাদেরকে তা থেকে কিছু দিবে এবং তাদের সাথে সদালাপ করবে।
বন্টন পদ্ধতি বা পরিমানঃ
‘গানিমতুম’ থেকে ‘গানিমা’ অর্থ যেকোনো ইনকাম, উপার্যন বা সম্পদ বুঝায়।
‘গনীমত’ (৮ঃ৪১) ‘যুদ্ধে যা তোমরা গনীমত হিসেবে লাভ করেছ ,তার এক-পঞ্চামাংশ’ অর্থাৎ ১০০ টাকায় ২০ টাকা বা ২০%.
যুদ্ধলব্ধ সম্পদ অর্জন ৩ ভাবে কোরআন এ বর্নিত হয়েছে।
১. ‘গনীমত’ (৮ঃ৬৯) তোমরা যে গনীমত লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম বলে ভোগ কর।
২. ‘ফাই’ বা যা বিনা যুদ্ধে বা চুক্তির মাধ্যমে অর্জিত,
(৫৭ঃ৭) আল্লাহ্ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রাসূলকে ‘ফায়’ হিসেবে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহ্র।
৩. ‘আনফাল’ (৮ঃ১) লোকেরা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে আনফাল (যুদ্ধ লব্ধ সম্পদ) সম্বদ্ধে; বলুন, ‘ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ্ এবং রাসূলের।
কখন যাকাত দিবো?
(৬ঃ১৪১) যখন ফলবান হবে তখন সেগুলোর ফল খাবে এবং ফসল তোলার দিন সে সবের হক প্রদান করবে।
অর্থাৎ যেদিন ইনকাম হবে সে দিন এর হক প্রদান করতে হবে, এটা প্রত্যহিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক হতে পারে অথবা বাৎষরীকও হতে পারে।
স্বর্ন ও রৌপ্য প্রসঙ্গঃ
(৯ঃ৩৪) যারা স্বর্ণ ও রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তুমি তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ শুনিয়ে দাও।
অর্থাৎ ব্যাবহায্য ব্যতীত কোন স্বর্ন-রৌপ্য জমা রাখা যাবে না।
সম্পদ জমা করা যাবে নাঃ
(১০৪ঃ২) যে সম্পদ জমায় ও তা বার বার গণনা করে।
(১০৪ঃ৪) সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে হুতামায় (প্রজ্বলিত আগুন)
(২ঃ১৯৫) তোমরা আল্লাহ্র পথে ব্যয় কর এবং স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিও না। আর তোমরা ইহ্সান কর, নিশ্চয় আল্লাহ্ মুহসীনদের ভালবাসেন।
যারা যাকাত অস্বীকার করে তারা আখেরাতও অস্বীকারকারীঃ
(৪১ঃ৭) যারা যাকাত প্ৰদান করে না এবং তারাই আখিরাতের সাথে কুফরিকারী।
(৪ঃ৩৯) আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনলে এবং আল্লাহ তাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় করলে তাদের কি ক্ষতি হত?
(৩৬ঃ৪৭) যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ তোমাদেরকে যে রিযিক দিয়েছেন তা থেকে ব্যয় কর’ তখন কাফিররা মুমিনদেরকে বলে, ‘যাকে আল্লাহ্ ইচ্ছা করলে খাওয়াতে পারতেন আমরা কি তাকে খাওয়াব? তোমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছ।’
(৯ঃ৯৮) তারা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে তা জরিমানা গণ্য করে এবং তোমাদের বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করে।
যারা যাকাত পারিশোধ করে তারাই পরকাল বিস্বাসীঃ
(২৭ঃ৩) যারা সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয় আর তারাই আখেরাতে নিশ্চিত বিশ্বাস রাখে।
(৪ঃ১৬২) সালাত প্রতিষ্ঠাকারী, যাকাত প্রদানকারী এবং আল্লাহ ও শেষ দিবসে ঈমান আনয়নকারী, তাদেরকে অচিরেই আমরা মহা পুরস্কার দেব।
(৫ঃ১২) তোমরা যদি সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও, আমার রাসূলগণের প্রতি ঈমান আন, তাঁদেরকে সম্মান-সহযোগিতা কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর, তবে আমি তোমাদের পাপ অবশ্যই মোচন করব এবং অবশ্যই তোমাদেরকে প্রবেশ করাব জান্নাতসমূহে, যার পাদদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত’।
পরিশেষে আমাদের চাওয়া হচ্ছেঃ
(৬৩ঃ১০) আমরা তোমাদেরকে যে রিফিক দিয়েছি তোমরা তা থেকে ব্যয় করবে। তোমাদের কারও মৃত্যু আসার আগে। (অন্যথায় মৃত্যু আসলে সে বলবে)
‘হে আমার রব ! আমাকে আরো কিছু কালের জন্য অবকাশ দিলে আমি সাদাকাহ দিতাম ও সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হতাম !
লিমিটেশনঃ ‘যাকাত’, ‘সাদাকাহ’ এবং ‘দান’ এর মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য আছে কি না আমার জানা নাই।
আমি কোন মুফতি, শায়েখ বা কোন আলেম নই যে, যাকাতের মত এত বিশাল বিষয়ে আমার জ্ঞান রয়েছে,
তবুও নিজে কোরআন পড়ে যা উপলব্ধি করলাম, তা উপস্থাপন করেছি মাত্র।
ভুল ত্রুটি শুধরে দিলে ‘সীরাতুল মুস্তাকীম’ (সঠিক পথ) পেতে সহজ হবে।
Collected