আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহর পুরুষ্কার লাভের আশায় আমরা কত জিকির, নফল নামাজ,কত বই বা বক্তার থেকে আমল করে থাকি কিন্তু আল্লাহর বই খুলে দেখি না আল্লাহ কোন কাজের জন্য কাকে পুরুষ্কার দিবেন।

খোটা না দিয়ে আল্লাহর বলা পথে ব্যয়কারীকে আল্লাহ পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা,আয়ত ২৬২)আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহ ব্যক্তিকে দান করতে বলছেন,কোন মাধ্যমকে নয়।এই লিস্টের প্রথমে হল পিতা-মাতা,দ্বিতীয় হল আত্মীয়- স্বজন,তৃতীয় এতিম,এরপর অভাবগ্রস্ত ও শেষ মুসাফির দের জন্য।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৫)ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তি ও দাসমুক্তির জন্য।(সুরা ৯ আয়াত ৬০)এর বাইরের অন্য কোন কোন পথে ব্যয় করাকে কেউ যদি আল্লাহর পথে ব্যয় বলে তা কি আল্লাহর পথে হবে?

আপনার পিতা মাতা ও আত্নীয় স্বজনই অভাবগ্রস্থ ও এতিম হতে পারে মানে প্রথম ও দ্বীতিয় লিষ্টের ব্যক্তিরাই ৩য় ও ৪র্থ লিষ্ট কাভার করে।জিবনে কখোন কোন ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তির ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন?কোথাও লোন না পেয়ে সুদে ঋণনেয়া মানুষগুলো যে দাসত্বের জীবনে যাপন করছে,কখোন তাদের তাদের এ দাসমুক্তির চেষ্টা করেছেন?নাকি শুধু মসজিদ -মাদ্রাসায় দান করে নিজের গুনাহ মাফের চিন্তা করে চোখ ভিজিয়েছেন?কখনো কি ভেবে দেখেছেন এ পথ ব্যায়ে আল্লাহ গুনাহ মাফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিনা?

পিতা-মাতা,আত্নীয়-স্বজন,এতিম,অভাবী,ঋণগ্রস্থ,
দাসমুক্তি,মুসাফির উনাদের জন্য ব্যয় করতে হবে খোটা দেয়া ছাড়া।জ্বি এটাই আল্লাহর পথে ব্যয়।মসজিদ, মাদ্রাসায় দানের কথা কুরআনে কোথাও বলা নেই।এর বাইরে আল্লাহর নামে কেউ টাকা উত্তলন করলে আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি অভাবমুক্ত।(সুরা বাকারা আয়াত ২৬৩)

এই পথে যারা ব্যয় করে আল্লাহ তাদের প্রাচুর্য বাড়িয়ে দেন।কিন্তু আমরা এগুলো না শুনে শুনেছি মসজিদ মাদ্রাসায় দান করলে ৭০ গুন সোওয়াব।ধর্ম ব্যবসায়ীরাও মাদ্রাসার ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে মসজিদ মাদ্রাসার নামে হ্যান্ড মাইক দিয়ে ওয়াজের সুরে দলে দলে এসে টাকা তুলে এবং এমনভাবে দানের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করে,মানুষ দিতে বাধ্য হয়,যেহেতু জীবনের গুনাহ মাপ, কবরের আজাব মাফ,চৌদ্দগুষ্টির জান্নাতের গ্যারান্টি ইত্যাদি।সমস্ত জীবন এসব রাস্তায় ব্যয় করে দারিদ্র্যতা, বেকারত্ব দূর করতে পেরেছেন?হয়নি কেননা এটা আল্লাহর বলা পথ নয়।

তো কেমন বা কি পরিমান ব্যয় করতে হবে?কখন ব্যয় করতে হবে?

আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আল্লাহ ব্যয় করতে বলে ছেন,বছরের কোন নিদিষ্ট সময়ে ব্যয় করতে বলেননি, সবসময় ই বলছেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৯)কিন্তু আমরা বছরের একটা নিদিষ্ট সময়,নিদিষ্ট পরিমান ব্যয় করি বাকিটা সঞ্চয় করি।

আর আল্লাহ বলেন,জাহান্নাম তাদের ডাকছে যারা সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখে।আর আমরা চিন্তা করি বৃদ্ধ অবস্থায় বা ভবিষৎতে কি হবে।আর আল্লাহ বলেন তাদের কোন ভয় নেই,চিন্তা ও নেই যারা দিনে রাতে প্রকাশ্যে ও গোপনে তাদের সম্পদ ব্যয় করে।আল্লাহ তাদের পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২৭৪)আল্লাহর এ পুরুষ্কার মোল্লারা নিজেদের স্বার্থে ঢেকে দিয়ে শয়তানি পথে ব্যয় করিয়ে আমাদের জাহান্নামী করছে,আমাদের অজ্ঞতার কারণে।

আল্লাহ বারবার আত্নীয় স্বজনে,অভাবী ও মুসাফিরকে তার হক দান করতে বলেছেন আর অপব্যায় করতে নিষেধ করছেন।(সুরা বনী ইসরাঈল আয়াত ২৬)এতিমদেরকে তাদের সম্পদ দাও।(সুরা ৪,আয়াত ২)কঠোরভাবে হুশিয়ারি দেয়া তোমরা এতিমের সম্পদের নিকট যেয়ো না।আমরা আমাদের কৃত কর্মের বা অন্যের প্রাপ্য না দেওয়ার জন্য অনুশোচনা করে মসজিদ,মাদ্রাসায় দান করে কাঁদি অথবা হজ্ব,নামাজ পড়ে মুক্তির পথ খুজি।এতে যেই ব্যক্তিকে ঠকানো হয়েছে সে নিরবে কাঁদে।

যে জাতি কোরান নিজ মাতৃভাষায় অর্থ বুঝে পাঠ করে না এবং তা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করে না,তারা এভাবেই মানব রচিত ধর্মের অনুসারী হয়ে আল্লাহর রাস্তা বাদ দিয়ে শয়তানের রাস্তায় অর্থ ব্যয় করবে।কেননা মোল্লারা কোরআন থেকে কোন বিচার ফায়সালা করে না, তারা শুধু মুখুস্থ পড়ে টাকা ইনকাম করে।আল্লাহ বলেন কোরআন অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না,তারাই কাফির।

আল্লাহ বলছেন আমি রাসূলকে এই কোরআন দ্বারা কবিতা রচনা বা কারিয়ানা শিখাইনি,বরং এ কুরআন তো মানুষের জন্যে পথ-নির্দেশ বা দিকনির্দেশনা।(সূরা ইয়াসীন – আয়াত ৬৯)

Fb-sourse:

Leave a comment