Salam

সালামুন আলাইকুম কিভাবে “আসসালামু আলাইকুম হলো?!!
আসুন দেখি অভিবাদন (সালাম প্রদান) সর্ম্পকে আল্লাহ্ কুরআনে কি বলেছেন। সূরা ফুরকান ২৫:৬৩- “রাহমানের বান্দা তাহারাই,যাহারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং তাহাদেরকে যখন অজ্ঞ (কুরআনের জ্ঞান যাদের নাই) ব্যক্তিরা সম্বোধন করে,তখন তাহারা বলে ‘সালাম’;” আরও দেখুন সূরা কাসাস ২৮:৫৫- “উহারা (মু’মিনগণ) যখন অসার বাক্য (লাওয়াল হাদিস) শ্রবণ করে তখন উহারা তাহা উপেক্ষা করিয়া চলে এবং বলে, আমাদের কাজের ফল আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজের ফল তোমাদের জন্য; তোমাদের প্রতি ‘সালাম’ (সালামুন আলাইকুম)। আমরা অজ্ঞদের সঙ্গ চাহি না।‌ আরও দেখুন সূরা যারিয়াত ৫১:২৪,২৫- “তোমার নিকট ইবরাহীমের সন্মানিত মেহমানদের বৃত্তান্ত আসিয়াছে কি? যখন উহারা (ফিরিশতারা) তাহার নিকট উপস্থিত হইয়া বলিল, ‘সালাম’। উত্তরে সে (ইবরাহীম) বলিল, ‘সালাম’।ইহারা তো অপরিচিত লোক।‌”আল্লাহ্ তার অভিমুখী বান্দাদের সম্ভাষণ করেছেন শুধু মাত্র ‘সালাম’ বলে এবং আদেশ করেছেন উহার অনুরূপ অথবা উহা অপেক্ষা উত্তম প্রত্যাভিবাদন করতে তা যদি কুরআন থেকে পাওয়া যায়। উপরোক্ত আয়াত মালা থেকে জানলাম যাদের কুরআনের জ্ঞান নাই ও যারা অপরিচিত অর্থাৎ ভিন্ন ধর্ম বা ইসলাম ধর্মের ভিন্ন মতবাদে (?) বিশ্বাসীদেরকে এবং যাদেরকে আমরা চিনিনা তাদেরকে অভিবাদন করতে হবে ‘সালাম’ বলে। বহুবচনের ক্ষেত্রে হবে ‘সালামুন আলাইকুম’। আমাদের ধর্মকে বিভিন্ন মতবাদে বিভক্ত করে যারা কুরআনের আয়াতকে ব্যর্থ করতে চায় তাদের থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। আল্লাহ্ বলেছেন সূরা সাবা ৩৪:০৫- “যাহারা আমার আয়াতকে ব্যর্থ করিবার চেষ্টা করে তাহাদের জন্য রহিয়াছে ভংয়কর মর্মন্তুদ শাস্তি।‌”কুরআন দ্বারা আল্লাহ্ সত্য শিক্ষা দেন আর এই অভিবাদন করা উত্তম দোয়া (সাল্লি/দুরূদ)।দেখুন ইবরাহীম তার পিতাকে মূর্তি পূজা বর্জন করতে বলে যখন ব্যর্থ হলো তখন বিদায় কালে কি বলে দোয়া (অভিবাদন) করেছিল,সূরা মারইয়াম ১৯:৪৭- “ইবরাহীম বলিল, ‘তোমার প্রতি সালাম’ (সালামুন আলাইকা)।‌আমি আমার প্রতিপালকের নিকট তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিব,নিশ্চয় তিনি আমার প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।‌”ইসলামী ফাউন্ডেশন কতৃর্ক ১০০৫ নং টিকায় কাশশাফ,জালালায়ন,কুরতবী নামের ব্যক্তিদের করা হাদিস উল্লেখ্য করে বলা হয়েছে ‘সালামুন আলাইকা’ এর অর্থ অভিবাদন না ‘বিদায় গ্রহণ’।কিন্তু সালাম শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে শান্তি।দেখুন সূরা নাহল ১৬:৩২- “ফিরিশতাগণ যাহাদের মৃত্যু ঘটায় পবিত্র থাকা অবস্থায়।ফিরিশতাগণ বলিবে, ‘তোমাদের প্রতি শান্তি’ (সালামুন আলাইকুম)।তোমরা যাহা করিতে তাহার ফলে জান্নাতে প্রবেশ কর।‌” এরপরও কি বলা যায় কতিপয় ব্যক্তিগণের করা ব্যাখ্যা সঠিক ?আল্লাহ্ বলেছেন সূরা কিয়ামা: ৭৫:১৭,১৮,১৯- “ইহা (কুরআন) সংরক্ষণ ও পাঠ করাইবার দায়িত্ব আমারই। সুতারাং যখন আমি উহা পাঠ করি তুমি সেই পাঠের অনুসরণ কর,অত:পর ইহার (কুরআনের) বিশদ ব্যাখ্যার (তাফসিরের) দায়িত্ব আমারই (আল্লাহরই)।
উপরক্ত আয়াতগুলো থেকে জানলাম কুরআন সংরক্ষণ করার দায়িত্ব যেমন আল্লাহর তেমনি কুরআনের ব্যাখ্যা করার দায়িত্বও আল্লাহর।এক কথাই বলা যায় কুরআন নিজেই নিজের ব্যাখ্যা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ এক কিতাব।কুরআনের এক আয়াতের ব্যাখ্যা অনুরূপ আনেক আয়াত যা একই জায়গায় নেই।এজন্য কুরআন সঠীকভাবে বুঝতে হলে গভীর মনোনিবেশের সাথে সন্ধানী হৃদয় দ্বারা ইহা পাঠ করতে হবে।কুরআন বুঝতে অন্য বইয়ের সাহায্য নেওয়া অর্থাৎ কুরআনকে ঐ বইয়ের কাছে ছোট করা। অতএব আল্লাহর বিধানে পাওয়া সালাম ব্যবস্থাই সঠিক। দেখুন সূরা মুজাদালা ৫৮:০৮- “তুমি কি তাহাদেরকে লক্ষ্য কর না,যাহাদেরকে গোপন পরামর্শ করিতে নিষেধ করা হইয়াছিল ? অত:পর উহারা যাহা নিষিদ্ধ তাহারই পুনরাবৃত্তি করে এবং পাপাচরণ,সীমালংঘণ ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণের জন্য কানাকানি করে। উহারা যখন তোমার (মুহাম্মদের) নিকট আসে তখন উহারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন করে যদ্বারা আল্লাহ্ তোমাকে অভিবাদন করেন নাই।উহারা মনে মনে বলে,আমরা যাহা বলি তাহার জন্য আল্লাহ্ আমাদেরকে শাস্তি দেন না কেন ? জাহান্নামই উহাদের জন্য যথেষ্ঠ,যেখানে উহারা প্রবেশ করিবে,কত নিকৃষ্ট সেই আবাস !”উক্ত আয়াতে বুঝা যায় যারা মুহাম্মদ (সা:) এর বিরুদ্ধাচরণে কানাকানি করতো তারাই আমাদের অজ্ঞতাবসত সঠিক সালাম ব্যবস্থাকে বিকৃত করে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু ওয়া মাগফিরাতুহু ওয়া জান্নাতুহু’ বানিয়েছে।অথচ আল্লাহ্ বলেছেন সূরা হুদ ১১:১১২,১১৩- “সুতরাং তুমি (মুহাম্মদ) যেভাবে আদিষ্ঠ হইয়াছ তাহাতে স্থির থাক এবং তোমার সহিত যাহারা ঈমান আনিয়াছে তাহারাও স্থির থাকুক; এবং সীমালংঘন করিও না।তোমরা যাহা কর নিশ্চয়ই তিনি তাঁহার সম্যক দ্রষ্টা।যাহারা সীমালংঘন করিয়াছে তোমরা তাহাদের প্রতি ঝুঁকিয়া পড়িও না; পড়িলে অগ্নি তোমাদিগকে স্পর্শ করিবে।এই অবস্থায় আল্লাহ্ ব্যতীত তোমাদের কোন অভিভাবক (আউলিয়া) থাকিবে না এবং তোমাদের সাহায্য করা হইবে না।‌”আমরা উল্লেখ্য ২৫:২৩ > ৫১:২৫ > ১৯:৪৭ > ৬:৫৪ >১৬:৩২ আয়াতগুলো থেকে জানলাম অপরিচিত ও অজ্ঞদের ক্ষেত্রে শুধু ‘সালাম’।যারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাসী ও পরিচিত মু’মিনদের ক্ষেত্রে একজন হলে ‘সালামুন আলাইকা’ এবং অনেককে একত্রে ‘সালামুন আলাইকুম’ বলতে হবে।
আরবী ব্যাকারণ লক্ষ্য করলে দেখা যায় ‘কা’ শব্দটি একবচন এবং ‘কুম’ শব্দটি বহুবচনের ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়েছে।কিন্তু আমরা একজন হোক অথবা অনেকজন হোক ‘কুম’ শব্দটা ব্যবহার করে থাকি।এবং আল্লাহর শিক্ষা দেওয়া ‘সালাম’ শব্দের পূর্বে ‘আস’ যোগ করে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলি।উপরে উল্লে্যখীত ১১:১১২ নং আয়াতে আল্লাহ্ যেভাবে আদেশ করেছেন তাতে স্থির থাকতে বলা হয়েছে।অথচ আমরা বিকৃত শব্দটা বিশ্বাসের সাথে ব্যবহার করে থাকি।কারণ বিকৃত শব্দটা ছোট্ট ক্ষত থেকে ক্যন্সারের মতো আজকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে পড়েছে।মিথ্যা বারবার প্রচার হওয়ার কারণে তা আজ সত্যে পরিণত হয়েছে।আমাদের ধর্মের যারা শত্রু তারা পয়যনের মতো বিকৃত শব্দটাকে তিল তিল করে আমাদের ধর্মে ঢুকিয়ে দিয়েছে।যা আজকে মহামারি রূপ নিয়েছে।এখন সত্যই যেন মিথ্যা !!সত্য হারায়নি,সে তো কুরআনে আছে।কিন্তু আমরা কুরআন সমন্ধে অজ্ঞ। আসুন নিজ মাতৃভাষায় কুরআন পড়ি সত্য জানি। সালাম সর্ম্পকিত আয়াতগুলো মিলিয়ে নিন। (৭:৪৬) (১০:১০) (১১:৬৯) (১৩:২৪) (১৪:২৩) (১৫:৫১,৫২) (১৯:৬২) (২৪:৬১) (২৭:৫৯) (৩৩:৪৪) (৩৭:৭৯,১০৯,১২০,১৩০,১৮১) (৩৯:৭৩) (৪৩:৮৮,৮৯) (৫৬:২৫,২৬,৯০,৯১)। আমরা মিলাদ পাঠের সময় বলি ‘ইয়া নবী সালামু আলাইকা’ অথচ একে অপরের সাক্ষাতে বলি ‘আসসালামু আলাইকুম’ যদিও একজনকে দিয়ে থাকি।(মিলাদ পাঠ আরও একটি বিদ’আত)সূরা বাকারা ২:৪২- “তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া-শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।‌”আমরা প্রচলিত কথায় শুনতে পায় প্রথম যে সালাম দিবে সে নাকি ৯০ (নব্বইটি) নেকি পাবে এবং সালামের উত্তর দিলে ১০ (দশটি) নেকি পাবে।কিন্তু বিকৃত করা শব্দ ব্যবহার করে সালাম দিলে নেকি পাওয়া যাবে কি ?যদিও নেকির পরিমান করা মানুষের মনগড়া কাল্পনিক ধারণা মাত্র।সম্ভাসন বা সালাম দেওয়া সামাজিকতা ,দোয়া ও একটি সৎকাজ।কুরআনে পাওয়া যায় কেউ একটি সৎকাজ করলে তাকে দশগুন নেকি দেওয়া হবে। বিশেষভাবে সালামের জন্য আল্লাহ্ কতটুকু নেকি দিবেন তা কুরআনের কোন যায়গায় উল্লেখ্য নাই।যা কুরআনে নাই তার কোন ভিত্তি নাই।সুতরাং কুরআন পড়ে অসত্য ও বিকৃত করা বিষয়দি বর্জন করি।সূরা নিছা ৪:৫৬- “যাহারা আমার আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে তাহাদেরকে অগ্নিতে দগ্ধ করিবই; যখনই তাহাদের চর্ম দগ্ধ হইবে তখনই উহার স্থলে নতুন চর্ম সৃষ্টি করিব,যাহাতে তাহারা শান্তি ভোগ করে।নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী,প্রজ্ঞাময়।‌”

Courtesy:fb

Leave a comment