আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহর পুরুষ্কার লাভের আশায় আমরা কত জিকির, নফল নামাজ,কত বই বা বক্তার থেকে আমল করে থাকি কিন্তু আল্লাহর বই খুলে দেখি না আল্লাহ কোন কাজের জন্য কাকে পুরুষ্কার দিবেন।

খোটা না দিয়ে আল্লাহর বলা পথে ব্যয়কারীকে আল্লাহ পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা,আয়ত ২৬২)আল্লাহ কোন পথে ব্যয় করতে বলছেন?

আল্লাহ ব্যক্তিকে দান করতে বলছেন,কোন মাধ্যমকে নয়।এই লিস্টের প্রথমে হল পিতা-মাতা,দ্বিতীয় হল আত্মীয়- স্বজন,তৃতীয় এতিম,এরপর অভাবগ্রস্ত ও শেষ মুসাফির দের জন্য।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৫)ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তি ও দাসমুক্তির জন্য।(সুরা ৯ আয়াত ৬০)এর বাইরের অন্য কোন কোন পথে ব্যয় করাকে কেউ যদি আল্লাহর পথে ব্যয় বলে তা কি আল্লাহর পথে হবে?

আপনার পিতা মাতা ও আত্নীয় স্বজনই অভাবগ্রস্থ ও এতিম হতে পারে মানে প্রথম ও দ্বীতিয় লিষ্টের ব্যক্তিরাই ৩য় ও ৪র্থ লিষ্ট কাভার করে।জিবনে কখোন কোন ঋণগ্রস্থ ব্যাক্তির ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন?কোথাও লোন না পেয়ে সুদে ঋণনেয়া মানুষগুলো যে দাসত্বের জীবনে যাপন করছে,কখোন তাদের তাদের এ দাসমুক্তির চেষ্টা করেছেন?নাকি শুধু মসজিদ -মাদ্রাসায় দান করে নিজের গুনাহ মাফের চিন্তা করে চোখ ভিজিয়েছেন?কখনো কি ভেবে দেখেছেন এ পথ ব্যায়ে আল্লাহ গুনাহ মাফের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিনা?

পিতা-মাতা,আত্নীয়-স্বজন,এতিম,অভাবী,ঋণগ্রস্থ,
দাসমুক্তি,মুসাফির উনাদের জন্য ব্যয় করতে হবে খোটা দেয়া ছাড়া।জ্বি এটাই আল্লাহর পথে ব্যয়।মসজিদ, মাদ্রাসায় দানের কথা কুরআনে কোথাও বলা নেই।এর বাইরে আল্লাহর নামে কেউ টাকা উত্তলন করলে আল্লাহ নিজেই বলেছেন তিনি অভাবমুক্ত।(সুরা বাকারা আয়াত ২৬৩)

এই পথে যারা ব্যয় করে আল্লাহ তাদের প্রাচুর্য বাড়িয়ে দেন।কিন্তু আমরা এগুলো না শুনে শুনেছি মসজিদ মাদ্রাসায় দান করলে ৭০ গুন সোওয়াব।ধর্ম ব্যবসায়ীরাও মাদ্রাসার ছোট ছোট বাচ্চাদেরকে নিয়ে মসজিদ মাদ্রাসার নামে হ্যান্ড মাইক দিয়ে ওয়াজের সুরে দলে দলে এসে টাকা তুলে এবং এমনভাবে দানের ফজিলত সম্পর্কে বর্ণনা করে,মানুষ দিতে বাধ্য হয়,যেহেতু জীবনের গুনাহ মাপ, কবরের আজাব মাফ,চৌদ্দগুষ্টির জান্নাতের গ্যারান্টি ইত্যাদি।সমস্ত জীবন এসব রাস্তায় ব্যয় করে দারিদ্র্যতা, বেকারত্ব দূর করতে পেরেছেন?হয়নি কেননা এটা আল্লাহর বলা পথ নয়।

তো কেমন বা কি পরিমান ব্যয় করতে হবে?কখন ব্যয় করতে হবে?

আপনার প্রয়োজনের অতিরিক্ত আল্লাহ ব্যয় করতে বলে ছেন,বছরের কোন নিদিষ্ট সময়ে ব্যয় করতে বলেননি, সবসময় ই বলছেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২১৯)কিন্তু আমরা বছরের একটা নিদিষ্ট সময়,নিদিষ্ট পরিমান ব্যয় করি বাকিটা সঞ্চয় করি।

আর আল্লাহ বলেন,জাহান্নাম তাদের ডাকছে যারা সম্পদ পুঞ্জিভূত করে রাখে।আর আমরা চিন্তা করি বৃদ্ধ অবস্থায় বা ভবিষৎতে কি হবে।আর আল্লাহ বলেন তাদের কোন ভয় নেই,চিন্তা ও নেই যারা দিনে রাতে প্রকাশ্যে ও গোপনে তাদের সম্পদ ব্যয় করে।আল্লাহ তাদের পুরুষ্কার দিবেন।(সুরা বাকারা আয়াত ২৭৪)আল্লাহর এ পুরুষ্কার মোল্লারা নিজেদের স্বার্থে ঢেকে দিয়ে শয়তানি পথে ব্যয় করিয়ে আমাদের জাহান্নামী করছে,আমাদের অজ্ঞতার কারণে।

আল্লাহ বারবার আত্নীয় স্বজনে,অভাবী ও মুসাফিরকে তার হক দান করতে বলেছেন আর অপব্যায় করতে নিষেধ করছেন।(সুরা বনী ইসরাঈল আয়াত ২৬)এতিমদেরকে তাদের সম্পদ দাও।(সুরা ৪,আয়াত ২)কঠোরভাবে হুশিয়ারি দেয়া তোমরা এতিমের সম্পদের নিকট যেয়ো না।আমরা আমাদের কৃত কর্মের বা অন্যের প্রাপ্য না দেওয়ার জন্য অনুশোচনা করে মসজিদ,মাদ্রাসায় দান করে কাঁদি অথবা হজ্ব,নামাজ পড়ে মুক্তির পথ খুজি।এতে যেই ব্যক্তিকে ঠকানো হয়েছে সে নিরবে কাঁদে।

যে জাতি কোরান নিজ মাতৃভাষায় অর্থ বুঝে পাঠ করে না এবং তা নিয়ে চিন্তাভাবনা ও গবেষণা করে না,তারা এভাবেই মানব রচিত ধর্মের অনুসারী হয়ে আল্লাহর রাস্তা বাদ দিয়ে শয়তানের রাস্তায় অর্থ ব্যয় করবে।কেননা মোল্লারা কোরআন থেকে কোন বিচার ফায়সালা করে না, তারা শুধু মুখুস্থ পড়ে টাকা ইনকাম করে।আল্লাহ বলেন কোরআন অনুযায়ী যারা বিচার ফায়সালা করে না,তারাই কাফির।

আল্লাহ বলছেন আমি রাসূলকে এই কোরআন দ্বারা কবিতা রচনা বা কারিয়ানা শিখাইনি,বরং এ কুরআন তো মানুষের জন্যে পথ-নির্দেশ বা দিকনির্দেশনা।(সূরা ইয়াসীন – আয়াত ৬৯)

Fb-sourse:

Meaning of Salat fb bn

সালাত শব্দের 100% সঠিক বিশ্লেষণ (তথ্যসূত্র , Lughat- ul- Quran, Dictionary of Quran. Volume 1,2,3,4): “সালাত” শব্দটির আদি মূল (Prime Root) হচ্ছে “সল” (সোয়াদ-লাম), আর ত্রিআক্ষরিক মূল (Triliteral Root) হচ্ছে “সল্লি” (সোয়াদ-লাম-লাম)/(صَلِّ) যার অর্থ “অনুসরণ করা/Follow, সংলগ্ন থাকা/Adhere, সংযুক্ত করা/Link/
Connect/Attach, সম্পর্কিত কারা/Relate, নিজের মতে মত করানো/Persuade, দেখভাল করা/আলোচনা করা/Deal, সাক্ষাৎ করা/Meet, নিকটে এগিয়ে যাওয়া/Approach, সহায়তা করা/Support. যত বড় Word Engineering করেন না কেন, যত নতুন নতুন শব্দের প্রয়োজন হোক না কেন, মূলের (Root) এই অর্থের সাথেই আপনাকে সংলগ্ন থাকতে হবে।

উদাহরণসহ একটু বুঝিয়ে বলি। যেমন, “রিবা” শব্দের আদিমূল (Proto Root) (র-বা) এর অর্থ “শ্বাসরোধ/শ্বাসকষ্ট/Strangulation/Asthma”, “অতিমূল্যায়ন/Overcharging”. এখন, Medical Science এর অগ্রগতির ফলে Bronchial Asthma কে একটু আলাদাভাবে চিহ্নিত করার দরকার হলো। তো সেটিকে বলা হলো, “আর-রাবু”। মূল (Root) “রিবা” অর্থ “শ্বাসরোধ বা শ্বাসকষ্ট” থাকার কারণে এই নতুন শব্দ উৎপন্ন করা হয়েছে “মূল (Root)” এর সাথে সংশ্লিষ্ট থেকে। আরবি ভাষায়, মূল অর্থ থেকে সরে গিয়ে ইচ্ছামত “নতুন শব্দ” গঠন করা যায় না। কারণ আরবী Semitic Language, আর এই Language এর Natural Feature হচ্ছে, এর সমস্ত শব্দ, তার মূল (Root) থেকেই উৎসারিত।

এবার আসল কথায় আসি। “মুসল্লী” হচ্ছে সালাত সম্পাদনকারী/Salaat Performer. এখানে, Create থেকে যেমন Creator শব্দটি উৎপন্ন হয়,, ঠিক তেমনি সলা থেকে মুসল্লী (Follow-Follower). “মুসল্লী” হচ্ছে রেসের সেই ঘোড়া, যে ঘোড়া, সাবিক/মুযাল্লী/Champion ঘোড়ার পদচিহ্ন (Footsteps/signs) কে অনুসরণ করে (Follow). তো মানুষ রূপ মুসল্লীর Lead এ আছেন আল্লাহ। অতএব, আল্লাহর Footsteps/Signs/আয়াত, যা প্রকৃতিতে (ফি’লী হাদীস হিসেবে), আর কোরআনে (ক্বওলী ও তাক্বরীরি হাদীস হিসেবে) বিদ্যমান, তাকে অনুসরণ করতে হবে।

74/42-43 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন রিযিকদাতা, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) অভাবীকে আহার দান করেন।

70/34-35 নম্বর আয়াতে, মুসল্লী তারা, যারা আল্লাহ যেমন সমস্ত সম্পদের মালিক, ঠিক তেমনি আল্লাহর পদচিহ্ন অনুসরণ করে (within his ability) মালিক হওয়া সত্ত্বেও সে সম্পদে অন্যের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে, অর্থাৎ অন্যের অধিকার আছে বলে মনে করে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করে।

প্রত্যেকটি আয়াতের আগে-পিছে পড়লে বিষয়টি Clear হবে। “মুসল্লী” শব্দটাকে ভালোভাবে না বোঝা পর্যন্ত “সালাত” জিনিসটাকে বুঝা যাবে না, কারণ মুসল্লী হচ্ছে আসল “সালাত সম্পাদনকারী” (Actual Salaat Performer)।
আরব বিশ্বে ব্যবহারিক জীবনে এখনো পর্যন্ত “সালাত” শব্দের আদিমূল (Prime Root) “সল” (পেশ/যের/যবর বিহীন সোয়াদ-লাম) দ্বারা তৈরি প্রথম শব্দ “সল” (সোয়াদ-যবর-লাম), যার অর্থ দরোজার কব্জা (Door Hinge), যেটা দরোজার Movement কে “অনুসরণ করে”, দরোজার সাথে দরোজার ফ্রেম এর “সংযোগ/সংযুক্তি/সাক্ষাৎ (Link/Attachment/Meet) ঘটায়”, “সম্পর্ক তৈরি করে” (make Relationship), দরোজা ও দরোজার ফ্রেমকে সহায়তা করে (Support), দরোজা ও দরোজার ফ্রেম এর সাথে সংলগ্ন থাকে (Adhere).

সুতরাং কোরআনের কোন আয়াত, তার পূর্বের ও পরের আয়াতগুলো দ্বারা সৃষ্ট যে “প্রেক্ষাপটে রচিত” (অর্থাৎ মুতাশাবিহাত 3:7), সেই প্রেক্ষাপটে বলে দেওয়া আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অনুসরণের “কর্তব্য” (Duty) এর সাথে “সংলগ্নতা/সংযুক্তি/সম্পর্ক/যোগাযোগ” তৈরি করাই সালাত। বলে রাখা ভালো, সলাতের পরোক্ষ অর্থ “কর্তব্য” (পেক্ষাপট অনুযায়ী), যা কোরআনের প্রত্যেকটা আয়াত এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সালাত মানে কুরআনের নিরবিচ্ছিন্ন অনুসরণ Close Following Quran .

মহাগ্রন্থ আল কুরআনে উল্লেখিত আল্লাহর হুকুম আহকাম বা নির্দেশনাবলীকে (Orders) এক শব্দে ‘সালাত’ বলা হয়। অন্যান্য সকল নবী রাসুলদের সময়ও সালাত প্রচলিত ছিল।

সুরা হুদে দেখুন সালাতের সংজ্ঞা:(১১:৮৪-৯৫) আর আমি মাদইয়ান বাসীদের কাছে তাদের ভাই শুআইবকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়,তোামরা আল্লাহর ইবাদাত কর, তিনি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন সত্য ইলাহ নেই, আর মাপে ও ওজনে কম দিও না, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে কল্যাণের মধ্যে দেখছি, কিন্তু আমি তোমাদের উপর আশংকা করছি এক সর্বগ্রাসী দিনের শাস্তি। হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ন্যায়সঙ্গত ভাবে মাপো ও ওজন করে দিও, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তবে আল্লাহ অনুমোদিত যা বাকী থাকবে তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর আমি তোমাদের তত্ত্বাবধায়ক নই। তারা বলল, হে শু’আইব! তোমার সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) কি তোমাকে নির্দেশ দেয়, আমাদের পিতৃ-পুরুষেরা যার ইবাদাত করত আমাদেরকে তা বর্জন করতে হবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যা করি তাও? তুমি তো বেশ সহিষ্ণু ও ভালো। তিনি বললেন, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা ভেবে দেখেছ কি, আমি যদি আমার রব প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি তাঁর কাছ থেকে আমাকে উৎকৃষ্ট রিযিক দান করে থাকেন (তবে কি করে আমি আমার কর্তব্য হতে বিরত থাকব?) আর আমি তোমাদেরকে যা নিষেধ করি আমি নিজে তার বিপরীত করতে ইচ্ছে করি না। আমি তো আমার সাধ্যমত সংস্কারই করতে চাই আমার কার্যসাধন তো আল্লাহরই সাহায্যে, আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং তারই অভিমুখী। আর হে আমার সম্প্রদায়,আমার সাথে বিরোধ যেন কিছুতেই তোমাদেরকে এমন অপরাধ না করায় যার ফলে তোমাদের উপর তার অনুরূপ বিপদ আপতিত হবে যা আপতিত হয়েছিল নূহের সম্প্রদায়ের উপর অথবা হুদের সম্প্রদায়ের উপর কিংবা সালেহের সম্প্রদায়ের উপর, আর লূতের সম্প্রদায় তো তোমাদের থেকে দূরে নয়। তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর ও তার দিকে ফিরে আস, আমার রব তো পরম দয়ালু, অতি স্নেহময়। তারা বলল, হে শুআইব তুমি যা বল তার অনেক কথা আমরা বুঝি না এবং আমরা তো আমাদের মধ্যে তোমাকে দুর্বলই দেখছি। তোমার স্বজনবর্গ না থাকলে আমরা তোমাকে পাথর নিক্ষেপ করে মেরে ফেলতাম, আর আমাদের উপর তুমি শক্তিশালী নও। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায় তোমাদের কাছে কি আমার স্বজনবর্গ আল্লাহর চেয়ে বেশী শক্তিশালী? আর তোমরা তাকে সম্পূর্ণ পিছনে ফেলে রেখেছ। তোমরা যা কর আমার রব নিশ্চয় তা পরিবেষ্টন করে আছেন। আর হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা নিজ নিজ অবস্থানে কাজ করতে থাক, আমিও আমার কাজ করছি। তোমরা শীঘ্রই জানতে পারবে কার উপর আসবে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং কে মিথ্যাবাদী। আর তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি। আর যখন আমাদের নির্দেশ আসল তখন আমি শুআইব ও তার সঙ্গে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমাদের অনুগ্রহে রক্ষা করেছিলাম। আর যারা সীমালংঘন করেছিল বিকট চীৎকার তাদেরকে আঘাত করল, ফলে তারা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় পড়ে রইল, যেন তারা সেখানে কখনো বসবাস করেনি। জেনে রাখ! ধ্বংসই ছিল মাদইয়ানবাসীর পরিণাম, যেভাবে ধ্বংস হয়েছিল সামূদ সম্প্রদায়।(১১:৮৪-৯৫) তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে, তা থেকে পাঠ করে শুনাও এবং সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব-কর্তব্য সমূহ) বাস্তবায়ন কর। নিশ্চয় সালাত (বিধি-বিধান সমূহ/দায়িত্ব¡-কর্তব্য সমূহ) অশ্লীল, অনৈতিক ও মন্দকাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর যিকির (নির্দেশনাই) তো সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন যা তোমরা কর। (২৯:৪৫) আর তোমার রবের কিতাব থেকে তোমার নিকট যে ওহী করা হয়, তুমি তা পাঠ করে শুনাও। তার বাণীসমূহের কোন পরিবর্তনকারী নেই এবং তিনি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল তুমি পাবে না।(১৮:২৭) এভাবে আমি তোমাকে পাঠিয়েছি এক জাতির প্রতি, যার পূর্বে বহু জাতি গত হয়েছে, তাদের নিকট পাঠ করার জন্য, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি।(১৩:৩০) আমি আরও আদিষ্ট হয়েছি কুরআন পাঠ করে শোনাইতে। অতঃপর যে ব্যক্তি সৎ পথ অনুসরণ করে, সে তা অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং কেহ ভ্রান্ত পথ অবলম্বন করলে তুমি বলও, আমিতো শুধু সর্তককারীদের মধ্যে একজন।(২৭:৯২)আল কুরআনে বর্নিত প্রতিটা আদেশ নির্দেশনাই হচ্ছে সালাত ৷বিশ্বাসীগণ সর্বদাই সালাতে (আল্লাহর আদেশ নির্দেশ পালনে) দন্ডাায়মান থাকে (৭০:২৪)

সুরা হুদে দেখা যায়: এখানে আল্লাহর নবী শুয়াইব মাদায়েনের অধিবাসীদেরকে আল্লাহর সামাজিক হুকুম-নিয়ম-বিধান জানিয়ে দিচ্ছিলেন। জবাবে, তারা বলেছিল-হে শুয়াইব! তোমার ‘সালাত’ কি তোমাকে এই নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পূর্বপুরুষ যার ইবাদত করতো- আমরা তা ছেড়ে দেই? অথবা, আমাদের ধন-সম্পদ দিয়ে যা ইচ্ছা তাই না-করি? নিশ্চয়ই তুমি ধৈর্যশীল সৎ মানুষ। (১১:৮৭)

এই কয়েকটি আয়াতে দেখা যাচ্ছে- নবী ও রসুল শোয়াইব তাঁর জাতির লোকদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে হুকুম-নিয়ম-রীতি জানাচ্ছেন। আর সেসব নিয়ম-কানুন-হুকুম-গুলোকে তাঁর জাতির লোকজন একশব্দে ‘সালাত’ বলে স্বীকৃতি দিচ্ছে। আর সেই ‘সালাত’ শব্দটি আল্লাহপাক কুর’আনে উল্লেখ করে জানিয়ে দিলেন। অর্থাৎ, আল্লাহ তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতে জানিয়ে দিলেন ‘সালাত’ কি?

সালাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ-নিষেধ। আকিমুস সালাহ” অর্থ আল্লাহর সেই বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধকে ব্যক্তি থেকে বৈশ্বিক সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করা।”যাকাহ” অর্থ পরিশুদ্ধতা অর্জন। আকিমুস সালাহ ওয়া আতুজ যাকাহ” অর্থ আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পরিশুদ্ধতা অর্জন করা। মুসল্লী” অর্থ যিনি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ প্রতিষ্ঠাকারী। জান্নাতীগণ অপরাধীগণকে জিজ্ঞাসা করবেন- কিসে তোমাদের ‘সাকার’ এ নিক্ষেপ করলো? তারা বলবে- আমরা মুসল্লী বা আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধের অনুগামী ছিলাম না! আমরা অভাবীদের দান করতাম না! যারা অহেতুক আলোচনা করতো তাদের আলোচনায় যোগ দিতাম! আমরা কর্মফল দিবসে অস্বীকার করেছি, আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত, ফলে সুপারিশকারীদের কোন সুপারিশ কাজে আসবে না।(৭৪:৪০-৪৮) কাজেই,সবাই সাবধান হই! বেঁচে থাকতেই মৃত্যু অবধি আল্লাহর বিধি-বিধান, আদেশ, নিষেধ পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে পরিশুদ্ধতা অর্জন-ই জাহান্নাম থেকে মুক্তির একমাত্র পথ।

বিশেষ দ্রষ্টব্য: আল কুরআন অনুসারে মুসল্লীনদের পরিচয় অর্থাৎ মুসল্লীনদের বৈশিষ্ট্যগুলো জানার জন্য দেখে নিতে পারেন। (৭৪:৪২-৪৬)(১০৭:১-৭)(৭০:১৭-৩৫)(২৩:১-১১)(২৫:৬৩-৭৩)

Sourse fb https://bit.ly/3Ht99fW

সিয়াম ও সাওম শব্দের সঠিক বিশ্লেষণ ও বাস্তবায়ন: (পর্ব-১)

🔥🔒😇 সিয়াম ও সাওম শব্দের সঠিক বিশ্লেষণ ও বাস্তবায়ন: (পর্ব-১)

🌹🌹বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম🌹🌹

🤔 বর্তমানে ইসলামের নামে প্রচলিত একটি বিধান সিয়াম বা সাওম (প্রচলিত পার্শিয়ান ও প্যাগান অর্চনা রোজা) এর স্বরূপ অনুধাবনের ক্ষেত্রে লেজেগোবরে অবস্থা বিরাজমান। কেউ দিনে, কেউ রাতে, কেউ একদিন আগে, কেউ একদিন পরে, কেউ 1 দিন, কেউ 10 দিন, কেউ 30 দিন, কেউ সারাবছর প্রত্যকদিন, কেউ 3 ঘন্টা, কেউ 21 ঘন্টা, কেউ বসন্তে, কেউ গ্রীষ্মে, কেউ রমাদানে, কেউ এপ্রিলে, কেউ আগস্টে, কেউ ২১ মার্চ বা ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে (কারণ পৃথিবীতে সবস্থানে দিবারাত্রি সমান) সিয়াম পালন করে বা করতে চায়। সত্যিই, কোরআন নিয়ে দিন-রাত পড়ে থাকা বাঘা বাঘা শিক্ষিত লোকদেরও “সিয়াম” নিয়ে এমন নানামুখী সাংঘর্ষিক ও বিপরীতমুখী উপলব্ধি সমাজে মারাত্মক বিভ্রান্তির উন্মেষ ঘটিয়েছে বলেই এই সামান্য লেখার প্রয়াস।

🔓”সাওম” (صوم) ও “সিয়াম” (صِّيَام) উভয় শব্দই একবচন। “সিয়াম” শব্দটি “সাওম” এর বহুবচন বলা হলেও, তা যে ইচ্ছাকৃত ভুল প্রচারণা, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ পৃথিবীর সমস্ত অনুবাদে “সিয়াম” (2:183) এর অর্থ Fasting or Fast লেখা হয়েছে, FASTS লেখা হয় নাই, যদিও fast, fasting এই অর্থ সম্পূর্ণ ভুল।

♦️ প্রকৃতপক্ষে, “সাওম” (صوم) ও “সিয়াম” (صِّيَام) উভয় শব্দের আদি মূল (Prime Root) হচ্ছে (صم), আর ত্রিআক্ষরিক মূল (Triliteral Root) হচ্ছে (صمم) যার অর্থ “বধির করা/deafen, কারো কথা না শুনা/not listen to someone, অবিচল থাকা/remain steadfast/unwavering/persistent/firm/dedicated, সংকল্পবদ্ধ/অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া/be determined, be committed, কোন কিছুর পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়ানো/সমর্থন করা/বিরোধিতা করা stand up for or towards (support) or against (oppose) someone or something, নিয়ত করা/intend, সিদ্ধান্ত নেয়া/decide, কোন কিছু শেখানো/make something learn, মনস্থির করা/make up one’s mind ইত্যাদি

🎙️প্রসঙ্গতঃ “সাওম” (صوم) একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন শব্দ, অথচ “সাওম” শব্দের মূল (Root) হিসেবে একই “সাওম” (صوم) কে ইচ্ছাকৃত ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। কারণ আরবিতে মূলের ভিতরে বা শেষে কোথাও Vowel (আলিফ, ওয়াও বা ইয়া) থাকতে পারবে না। যেহেতু আরবি SEMITIC বা CONSONANTAL বা ব্যঞ্জনবর্ণবিশিষ্ট ভাষা। অথচ, “সাওম” স্বরবর্ণ “ওয়াও” সহ একটি পূর্ণাঙ্গ শব্দ।

অনুরূপভাবে, সলাতের বানোয়াট (Fabricated) মূল “সলু” প্রচার করা হয়েছে অথচ হবে “সল”, “ক্বওম” হবে “ক্বম” এভাবে… বহু বানোয়াট মূলের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে।

🔶 মূলতঃ “সাওম” (صوم) হচ্ছে আদিমূল “সম” (صم) এর Product অর্থাৎ সাওম (صوم) হচ্ছে সম (صم) এর “State of Action” of verb/ কর্মে পরিণতকরণকে/বাস্তবায়নকে বোঝায়। তাহলে, এর অর্থ দাঁড়ায় “কারো কোন কথা না শুনে সংকল্পবদ্ধ থাকা/অবিচল থাকা”/Observing/Complying DETERMINATION/Being DETERMINED without listening to anyone ইত্যাদি।

🔷আর, “সিয়াম” (صِّيَام) শব্দটির মধ্যে থাকা স্বরবর্ণ “ইয়া” এটিকে আদিমূল “সম” (صم) এর gerund/an state of continuous action of verb কে বোঝায়; এক্ষেত্রে, Determining, Deafening etc. আর, “ইয়া” এর সাথে থাকা “আলিফ” সিয়ামকে active participle/an agent/a performer/a noun of continuous application of verb কে বুঝায়, এক্ষেত্রে Sb or sth Determined, Unwavering, Steadfast, Fixed etc.

🔑 যাই হোক, আরবিতে শব্দের ভিন্ন ভিন্ন রূপ (Adjective, verb, noun ইত্যাদি) পেতে এবং নতুন নতুন শব্দের প্রয়োজনে আপনাকে অবশ্যই উপরে প্রদত্ত মূলের (Root) অর্থগুলো থেকেই নিতে হবে, ঐ অর্থগুলোর সাথেই সংশ্লিষ্ট থাকতে হবে।

😲 সিয়াম বা সাওম – রোজা (fast/fasting) অর্থে কোন বিধান নয় – খাওয়া, পান করা বা সেক্স থেকে বিরত থাকার। এটি তো সাবিয়ান, আরব পৌত্তলিক, এবং সাবিয়ানদের মধ্যে হাররারিয়ান নামের একটি আরবে বসবাস করা গ্রুপ এর চর্চা (যাদেরকে হানিফ বা আহনাফ বলে ডাকা হতো, উম্মুল খাদিজা নাকি(?) সেই গোত্রেরই মেয়ে), যারা মাসব্যাপী রোজা রাখত আর বাঁকা চাঁদ দেখে সেই রোজা শেষ করত এবং মাসব্যাপী রোজা শেষে উৎসব পালন করত।

🔓 মূলতঃ “সিয়াম” হচ্ছে দৃঢ়তা বা অবিচলতা (FIRMNESS/STEADFASTNESS)- হতে পারে কোন কিছু থেকে বিরত থাকা, গ্রহণ করা বা তা বাস্তবায়ন করা। “সিয়াম” মানেই “বিরত থাকা, সংযমী হওয়া” (Abstain/Restrain) এই অর্থ ধরার কারণেই এত বিপত্তি। আমি এটা করতে দৃঢ়সংকল্প/দৃঢ়প্রতিজ্ঞ/অঙ্গীকারবদ্ধ। অথবা, আমি এটা করবো না, বা এটা থেকে বিরত থাকবো – এ ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্প। এখন, কোন ব্যাপারে কাউকে অবিচল/অটল থাকতে হবে – কোন কিছু গ্রহণের ব্যাপারে নাকি বিরত থাকার ব্যাপারে – তা সংশ্লিষ্ট আলোচনা/প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বুঝতে হবে।

🕋 কুরআন প্রকৃতপক্ষে ধর্মের নামে সমস্ত অর্চনার (Rituals) বিরুদ্ধে। আর, সে বিবরণ “কুরআন” শব্দটার মধ্যেই ব্যাখ্যাকৃত, যা অন্যদিন লিখব। প্রকৃতপক্ষে, কোরআন যে নিজেই নিজের ব্যাখ্যা, তা মূলতঃ কুরআনের “শব্দ, বাক্যের গঠন ও বিন্যাস (Syntax of Grammar) এবং প্রেক্ষাপটের (Context) মধ্যেই বিদ্যমান” (73:4)। বিস্তারিত জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন।

আল কোরআন অধ্যায়ন রীতিঃ
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=147883064438047&id=100076490634616

🔑 এককথায়, সিয়াম হচ্ছে “কারো কোনো কথা না শুনে কোন কিছু করার জন্য অটল থাকা।” (To be DETERMINED or STEADFAST). 2:183 নম্বর আয়াতে আসা “সিয়াম” কথাটি আসলে 2:180 নম্বর আয়াতের ধারাবাহিকতা মাত্র। মনোযোগ নিবদ্ধ করলে দেখা যায় –

♥️ 2:180 নম্বর আয়াত মূলত “মৃত্যুকালীন ওসীয়াত/ইচ্ছাপত্র” (Death Bequest/Will) সংক্রান্ত নির্দেশ।

💜 2:181 নম্বর আয়াতে এই ওসীয়তনামায় কোন পরিবর্তনের (Alteration) ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ (ইছমুন/Punishable Offense).

💙 2:182 নম্বর আয়াতে উপরিউক্ত ওসীয়তকৃত সম্পত্তির অংশ (মুসী) পরিবর্তনকে সম্পূর্ণরূপে ঠিক করে (আসলহা) নিতে বলা হয়েছে।

💚 অতঃপর 2:183 নম্বর আয়াতে সম্পত্তির ব্যাপারে যে ওসিয়াত রয়েছে, তা পরিপালনে “দৃঢ়সংকল্প/অবিচল/অটল” (DETERMINED/STEADFAST) থাকার ব্যাপারটি আলোচিত হয়েছে।

💎 2:183 নম্বর আয়াতের অনুবাদ:
“ওহে, তোমরা যারা স্বীকার করেছো/আনুগত্যের শপথ নিয়েছো/বিশ্বাস করেছো, (ওসীয়াতের ব্যাপারে) তোমাদের উপরে “অবিচল/দৃঢ়প্রতিজ্ঞ/দৃঢ়সংকল্প/অটল থাকার” বিষয়টি কিতাবস্হ করা হলো, যেমনটি তোমাদের পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রেও কিতাবস্হ করা হয়েছিল তোমাদের মধ্যে যারা সাধনাকারী (যারা খাঁটি/যারা ঈমানদারদের মধ্যে পাক্কা/অন্বেষী/অনুসারী/অনুবর্তী/অধ্যবসায়ী) তাদের সঠিকতা যাচাই করতে।
(O you who have admitted/have taken oath of allegiance/have adhered/have acknowledged/have faith, (Regarding Will) Booked on you remaining Determined/Steadfast/Firm just like it was booked on those who were before you to justify the pursuants from you.

অতএব, দেখা যাচ্ছে যে, রোজা (পানাহার ও যৌনকর্ম থেকে বিরত থাকা) কুরআন বহির্ভূত Concept যা ওসীয়াতের আয়াতকে বিবেচনায় না নিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবেে রূপদান করা হয়েছে। কুরআনের প্রেক্ষাপটে যারা (ওসীয়াত সহ) আল্লাহর যেকোন বিধিবিধান পরিপালনে বদ্ধপরিকর/অবিচল/অটল/দৃঢ়চেতা/দৃঢ়সংকল্প/নাছোড়বান্দা, মূলতঃ তারাই সায়িম; তথাকথিত রোজাদার নয়। সুতরাং এ যাবৎকাল এর পক্ষে-বিপক্ষে করা সমস্ত গবেষণা-ই ZERO. আর, ইফতার সন্ধ্যায় না রাতে, এ প্রশ্ন আরো অবান্তর!!!

Sourse

Siam is not fasting bn

সিয়াম

সাধারণসিয়াম (২ঃ১৮০-১৮৪)

স্পেশালসিয়াম (২ঃ১৮৫-১৮৭)

২ঃ১৮০-২ঃ১৯১ পর্যন্ত সঠিক অনুবাদঃ পুরো কনটেক্সট পড়লে সিয়ামের বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

২ঃ১৮০ “তোমাদের জন্য আদেশপত্র জারি হয়েছে যে (কুতিবা) যখন তোমাদের মধ্যে কেউ মৃত্যুর কাছাকাছি পর্যায়ে আসে, তখন সে যেন ভালোভাবে (খাইরান) সম্পদবন্টনের দলিল (ওয়াসিয়াত) তৈরি করে রেখে যায় তার পিতামাতা ও নিকট আত্মীয়ের জন্য ন্যায্য উপায়ে (বিল মারুফি)- ইহা আল্লাহ সচেতন/সংযোগস্থাপনকারী (মু্ত্তাকি) দের জন্য একটি অবশ্য কর্তব্য।”

২ঃ১৮১ “অতঃপর যে এই সম্পদবন্টনের দলিল (ওয়াসিয়াত) পরিবর্তন করবে, তা শোনার পর- সেই পাপের ভাগীদার হবে যে তা পরিবর্তন করবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শোনেন এবং জানেন।”

২ঃ১৮২ “কিন্তু কেউ যদি আশংকা করে যে দলিললেখক (মুছছি) কোনো ভুল করতে পারে এবং সে যদি দলিললেখকের ভুল সংশোধন করে ভারসাম্য করে (আসলাহা) দেয় নিজেদের মধ্যে, তাহলে তার কোনো পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল এবং করুণাময়।”

২ঃ১৮৩- “হে যারা ঈমান এনেছো! তোমাদের জন্য সিয়ামের আদেশপত্র জারি (কুতিবা) হয়েছে যেমনটা জারি হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীগণের প্রতি যাতে তোমরা সুরক্ষিত/সংযোগ স্থাপিত/খাঁটি মানুষ (মুত্তাকি) হতে পারো।”

২ঃ১৮৪ “সময়কালের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো। তাই তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ভ্রমণে থাকে অথবা অসুস্হ থাকে তাহলে অন্য সময়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করো। এবং কেউ যদি ফিদয়া/ক্ষতিপূরণ প্রদানের সামর্থ্য রাখে, তাহলে সে একজনকে খাদ্য প্রদান করবে। কেউ যদি স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত কিছু করে, তা তার জন্য ভালো। কিন্তু সিয়াম পালন সর্বোত্তম যদি তোমরা জানতে।

—————————
ব্যক্তিগত অভিমতঃ এ ধরনের সিয়াম অতীত পূর্বপুরুষদের জন্যও আদেশ হয়েছিল যখন কেউ কোনো পাপ/অপরাধ করে ফেলে। সিয়াম হলো নিজেদের ভুল সংশোধনের একটি উপায় যাতে আমরা মুত্তাকি/খাঁটি মানুষ হতে পারি যা আল্লাহর খলিফা/প্রতিনিধি হবার পূর্বশর্ত।

যেমন ২ঃ১৮৪ এর আগের আয়াতগুলোর প্রসংগে উইল পরিবর্তন এক ধরনের পাপ/অপরাধ। সেকারণে এ পাপ করলে কেউ যেন স্বেচ্ছায় কিছু সময়কালের জন্য সিয়াম পালন করে। যদি কেউ ভ্রমণে থাকে বা অসুস্হ হয়, তাহলেও সে যেন অন্য সময়ে এই সিয়াম পালন করে নেয়।

এই সিয়ামের বদলে বিকল্প হিসাবে আর্থিক ক্ষতিপূরন (ফিদয়া) এর ব্যবস্হাও আল্লাহ রেখেছেন আর তা হলো কোনো গরীবকে খাওয়ানো (২ঃ১৮০-১৮৪)

সিয়ামের পরিবর্তে এধরণের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে ৫ঃ৯৫, ৪ঃ৯২ ইত্যাদি আয়াতে বিভিন্ন পাপের জন্য (অন্য মুমিনের সাথে লড়াই করা বা শপথ ভঙ্গ করা ইত্যাদি)।

এখন প্রশ্ন হলো সিয়ামটা আসলে কি এবং কিভাবে সেটা পালন করা যায়?

এর উত্তর আছে ১৯ঃ২৬ এ যেখানে মরিয়মকে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন

“অতঃপর ভক্ষণ করো/গ্রাস করো (কুল) এবং পান করো/আত্মস্হ করো (ওয়া আশরাবু) এবং দৃষ্টি শীতল করো। এবং মানুষের সাথে যদি দেখা হয়, তাহলে বলো আমি আজ আল্লাহর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি সিয়াম পালনের, অতঃপর আজকে আমি কারো সাথে কথা বলবো না।”

অর্থাৎ সিয়ামের সংজ্ঞা হলো “কথা বলা থেকে বিরত থাকা এবং নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আত্মউপলব্ধি/গবেষণা বা সংশোধন করা।”

প্রশ্ন হলো নিজেকে গুটিয়ে ফেললে বা কারো সাথে কথা না বললে তা আমাদের মুত্তাকি বা খাঁটি মানুষ কিভাবে বানায়? উত্তর হলো এটি আমাদের সময় ও সুযোগ দেয় যে পাপ করেছি সেটা নিয়ে আত্মসমালোচনা করে পরিশুদ্ধ হবার। সিয়ামটা মুমিনদের জন্য জারি হয়েছে (২ঃ১৮৩)। একজন মুমিনের দায়িত্ব হলো তা সৎভাবে এবং যথাযথভাবে পূর্ণ করা। এ ধরনের সিয়াম পালনের সময় কারো সাথে দিনে রাতে কখনোই কথা বলা যাবে না।

এবার আমরা পরের আয়াতগুলো দেখবো যেখানে একটু “ভিন্ন রকম সিয়ামের” দেখা পাই।

——————————

২ঃ১৮৫ “ সুপরিচিত তীব্র উত্তপ্ত/অস্থির/খারাপ সময়ে (শাহরু রামাদান) কুরান প্রচারের আদেশ হয়েছিল (উনজিলা) যা সমগ্র মানবজাতির জন্য পথপ্রদর্শক (হুদা) এবং সুস্পষ্ট প্রমান (বাইতুনাতিন) পথ প্রদর্শনের (মিন আল হুদা) এবং সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী (আল ফুরকান)। কাজেই তোমাদের মধ্যে যারাই প্রত্যক্ষদর্শী (ফামান শাহিদা মিনকুম) এ সুপরিচিত অস্থির সময়ের (আল-শাহর) সে যেন তা (অস্থিরতাকে) বিরত/প্রতিহত করে (ফালিয়াসমুহু) এবং কেউ যদি অসুস্থ অথবা ভ্রমণে থাকে সে যেন অন্য সময়কাল হতে (মিন আয়ামিন উখারা) প্রস্তুতি গ্রহণ করে (ফা ইদ্দাতুন)। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান এবং কঠিন করতে চান না, যাতে তোমরা প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারো (আল ইদ্দাতা) এবং যাতে তোমরা আল্লাহ মহত্ত্ব বিস্তৃত করতে পারো (তুকাব্বিরু) যে কারণে তিনি তোমাদের পথ দেখিয়েছেন এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ থাকো।

২ঃ১৮৬ “ এবং আমার বান্দারা যখন তোমাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, আমি তো নিকটেই আছি। আমি তাদের আহ্বানে (দুআ) সাড়া দেই যখন তারা আমাকে ডাকে। কাজেই তারা যেন আমার প্রতি সাড়া দেয় এবং বিশ্বাস স্থাপন করে যেন আমি তাদেরকে সঠিক পথের দিশা দেখাতে পারি (ইয়ারশুদুনা)।

এর পরের আয়াতে এই “ভিন্ন সিয়ামের” বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে।

২ঃ১৮৭ “অনুমতি দেয়া/নির্ধারণ করা হলো (উহিল্লা), তোমাদের জন্য (লাকুম), এই অন্ধকার সময়ে (লায়লাতা) বেঁধে রাখার/বন্ধ করার/রহিত/বিরত করার (আসিয়ামা, আদেশমূলক verb) অনৈতিক আচরণ/অসদাচরণ (আররাফাসু) তোমাদের নির্ভরশীলদের (নিসাদের) প্রতি। তারা তোমাদের উপরে নির্ভরশীল/আবরণ এবং তোমরাও তাদের উপরে নির্ভরশীল/আবরণ। আল্লাহ জানেন যে তোমরা অতীতে তোমাদের নফসের সাথে অন্যায়/প্রতারণা করেছিলে (তাখাতুনা নাফস) (অর্থাৎ নিসাদের সাথে অন্যায়/অসদাচরণ/misconduct করেছিলে), তবুও তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং ক্ষমা করেছেন। অতঃপর নিশ্চয়ই তাদের সাথে অন্যায়/খারাপ কাজ করোনা (ফা লাআন বাশিরুহুন্না) এবং আল্লাহ যা আদেশপত্র (কাতাবা) জারি করেছেন তা অনুসন্ধান করো (ইবতাগু) এবং তা ভক্ষণ করো/গ্রাস করো (কুলু) এবং আত্মস্হ করো (আশরাবু) যতক্ষণ পর্যন্ত আলোর রেখা সুস্পষ্ট না হয় মন্দতা/পাপাচারের অন্ধকার রেখা থেকে (মিন আল খাইতি আল আসওয়াদি মিন আল ফাজরি)। অতএব সিয়াম সম্পূর্ণ করো অন্ধকারের প্রতি (অন্ধকার দূর করো) (ইলা আল লাইলি)। এবং তাদের সাথে (নিসাদের সাথে) অন্যায় কাজ করো না যখন তুমি সংলগ্ন/চিন্তামগ্ন/একাগ্রচিত্তে থাকো (আকিফুনা) মান্যরত অবস্থায় (ফি আল মাসজিদি)। এটাই আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা, তাই সে সীমারেখার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তার নির্দেশসমূহ সুষ্পষ্ট করেন যাতে মানুষেরা খাঁটি মানুষ (মুত্তাকি) হতে পারে।

—————-

এই আয়াতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শব্দঃ

রাফাছা শব্দের অর্থ misconduct, অসদাচরণ/অনৈতিক আচরণ। অন্ধকার যুগে (শাহরু রামাদানে) নিসাদের অধিকারবন্চিত করা হয়েছিল, তাদের সাথে অসদাচরণ/অনৈতিক আচরণ করা হয়েছিল। তাই আয়াতের শুরুতেই সেই প্র্যাক্টিস/সংস্কৃতিটা রহিত করার/বিরত করার (আসিয়ামা বা আদেশমূলক ক্রিয়া) নির্দেশ দিচ্ছেন আল্লাহ।

আল্লাহ জানেন যে অতীতে মুমিনেরা নিসাদের সাথে অসদাচরণ করার মাধ্যমে নিজেদের নফসের সাথে অন্যায়/প্রতারণা করেছিল। কুরান প্রচারের সময়কালে তিনি তাদের সে অপরাধ ক্ষমা করেছেন এবং তাদের তওবা কবুল করেছেন।

সেকারণে নিসাদের লিবাসুন বা আবরণ বলা হয়েছে। আমাদের আবরণ যেমন আমাদের সার্বক্ষনিক সংগী এবং আমরা যেভাবে আমাদের আবরণের যত্ন নিই, নিসাদেরও যত্ন নেয়া মুমিনদের দায়িত্ব। ৪ঃ১২৭ এ নিসার অন্তর্ভুক্ত কারা তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। সমাজের এই নির্ভরশীল অংশটাই হলো নিসা। নিসা মানে নারী নয়। নিসা শব্দটি এতিম, বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী সবার জন্যই প্রযোজ্য তার লিঙ্গ যাই হোক না কেন।

বা’শিরু শব্দটার অর্থ কুরানে বেশিরভাগ স্থানে “সুসংবাদ দেয়া” করেছে। তবে সেটি ভিন্ন শব্দ। সেটি হলো বাশার। কিন্তু এখানে রুট হলো “শিন রা রা” যার অর্থ হলো খারাপ কিছু করা। “বা” এর পরে আলিফ যুক্ত করার কারণে শব্দটা বাশার নয়, বা’শিরু। অন্য আয়াতগুলোতে এই সুক্ষ্ম পার্থক্যটি তুলনা করেন।

আবার “ফা” এর পরে “লাম আলিফ হামজা” আছে যার অর্থ “না” বোধক। কিন্তু আরবিতে এমনভাবে লেখা হয়েছে যে তা ধরা সহজ নয়।

অর্থাৎ “ফা লাম (আলিফ) আন বা’শিরুহুন্না” শব্দযুগলের অর্থ দাঁড়ায়, “অতঃপর খারাপ/অন্যায় কিছু করোনা তাদের সাথে”

এই স্পেশাল সিয়ামের উদ্দেশ্য ছিল মুমিনেরা যেন সিয়াম পালনের মাধ্যমে নিজেদের কথা বলা থেকে বিরত থেকে একাগ্রচিত্তে (আকিফুনা) মান্যরত অবস্থায় (ফি আল মাসজিদি) কুরান অধ্যয়ন ও আত্মস্থ করে যাতে মন্দতার/পাপাচারের অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে পারে।

আল-ফজর মানে সবসময় ভোর নয়। ভোরের আরবি হলো সুবাহ। ৩৮ঃ২৮ পড়লেই বুঝতে পারবেন যে মুত্তাকী শব্দের বিপরীত শব্দ হলো আল-ফুজারি। অর্থাৎ খাঁটি মানুষের বিপরীত শব্দ হলে পাপী/মন্দ মানুষ।

৩৮ঃ২৮ “আমরা কি যারা বিশ্বাসী এবং ভারসাম্যরক্ষাকারী (আমিলু আল সালিহাতি) তাদেরকে একইরকম প্রতিদান দিব তাদের মত যারা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে (মুফসিদিনা)? নাকি আমরা মুত্তাকিদের একই প্রতিদান দিব তাদের মত যারা পাপীষ্ঠ/মন্দ (আল ফুজারি)?”

১৯ঃ২৬ অনুসারে মরিয়ম আল্লাহর কাছে সিয়াম পালনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে অতঃপর সে কারো সাথে কথা বলবে না।

অর্থাৎ কথা না বলা হলো অন্যতম একটি শর্ত। কারো সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে মানুষ কি করে একা একা?

উত্তর হলো পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তা করা বা পরিস্থিতিটা গ্রাস করা (কুল) এবং আত্মস্হ করা (আশরাবু) যেটা মরিয়ম করেছে।

২ঃ১৮৭ তেও কুরান প্রচারের ঘটনা/পরিস্থিতিতে কুরানের অধ্যয়ণ ও অনুসন্ধান করতে বলা হচ্ছে, আদেশগুলো (কাতাবা) কুল ও আশরাবু করতে বলা হচ্ছে।

কাজেই সিয়ামের মূল ও প্রথম শর্ত হলো “কথা না বলা”/যোগোযোগ বিচ্ছিন্ন করে একা থাকা।

এরপর একা একা পরিস্থিতি/ঘটনা/পাপকাজ নিয়ে গভীরে চিন্তামগ্ন থেকে অনুসন্ধান/আত্মসমালচোনা বা পাপের সংশোধন করতে বলা হচ্ছে। এগুলো সবই সিয়াম পালনের অংশ।

অর্থাৎ “শুধুই কথা বলা থেকে বিরত থেকে ঘোড়ার ঘাস কাটা সিয়াম নয়।”

——-——

২ঃ১৮৮ “এবং তোমরা একে অপরের সম্পদ (আমওয়ালাকুম) অন্যায়ভাবে ভক্ষণ/গ্রাস করো না (তাকুলু) অথবা প্রশাসকের নিকট পাঠিও না যাতে সম্পদের কিয়দংশ গ্রাস করতে পারো অন্যায়ভাবে এবং সচেতনভাবে।”

২ঃ১৮৯ “তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে কখন আওয়াজ তোলা/প্রতিবাদ করা উচিৎ (আহিল্লা, সংযুক্ত ছবিটি দেখুন)। বলুন “প্রয়োজনের সময় (মাওয়াকিতু) মানুষের জন্য (লিন্নাসি) এবং যুক্তিতর্কের/বিরোধের (আল-হাজ্জ) সময়। এবং এটি উদারতা নয় (আল-বিরা) যে কেউ ষড়যন্ত্রের জাল বুনে (বুয়ুতু, ৪ঃ৮১,৪ঃ১০৮) পিছনে থেকে, বরং উদারতা হলো যে আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করে (ইত্তাকু) এবং ষড়যন্ত্রকে (বুয়ুতু) সামনে এনে তা উন্মোচন করে দেয় (ওয়া আতু)। এবং আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করো (ইত্তাকু) যাতে তোমরা সফলকাম হও।”

২ঃ১৯০ “লড়াই করো (কুতিলা) আল্লাহর পথে যারা তোমাদের সাথে লড়াই করে কিন্তু আগ্রাসন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ আগ্রাসীদের পছন্দ করেন না।”

২ঃ১৯১ “এবং লড়াই করো (কাতিলু) তাদের সাথে যেখানেই তাদের অতিক্রম করা যায় এবং তাদেরকে উচ্ছেদ করো সেখান থেকে যেখান থেকে তারা উচ্ছেদ করেছিল তোমাদের। এবং অত্যাচার/নির্যাতন (ফিতনা) হলো লড়াই (কাতিল) এর চেয়েও জঘন্য পাপ। এবং নিষিদ্ধ মসজিদের ব্যাপারে তাদের সাথে লড়াই করো না যদি না তারা সে ব্যাপারে লড়াই করে তোমাদের সাথে। কিন্তু তারা যদি লড়াই করে, তাহলে তোমরাও তা প্রতিহত করো। এটাই সত্য অস্বীকারকারীদের (কাফির) প্রাপ্য কর্মফল।”

২ঃ১৮০-১৯১ এর বিষয়বস্তু হলো

১) উইল করা মুমিনের কর্তব্য যা কুতিবা বা আদেশ করা হয়েছিল।

২) যে উইল পরিবর্তন করে সে পাপ করে।

৩) সেই পাপের সংশোধন হিসাবে সাধারণ সিয়াম পালন করতে হবে (২ঃ১৮৩-১৮৪)। আর তা হলো নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত কথা বলা থেকে বিরত থেকে আত্মসংশোধন করা।

৪) এই সাধারণ সিয়াম অতীত পূর্বপুরুষ থেকে ভবিষ্যত সকলের জন্য প্রযোজ্য। এটি হলো কথা বলা থেকে বিরত থেকে/ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে আত্মসংশোধনমূলক সিয়াম।

৫) এই সাধারণ সিয়ামের বিকল্প হিসাবে গরীব খাওয়ানো, দাস মুক্ত করা ইত্যাদি ব্যবস্থা আছে পাপের মাত্রার উপরে নির্ভর করে (৫ঃ৯৫, ৪ঃ৯২ ইত্যাদি)

৬) ২ঃ১৮৫-১৮৭ হলো স্পেশাল সিয়াম যা ছিল কুরান প্রচারের সময় মুমিমদের কুরান অধ্যয়ন ও আত্মস্হ করার উদ্দেশ্যে জারিকৃত সিয়ামের আদেশ।

৭) এই সিয়াম পালন এবং কুরান প্রচারের সময়ে ২ঃ১৮৮ অনুসারে মুমিনদের উপরে আঘাত এসেছিল, তাদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল।

৮) সেকারণে ২ঃ১৮৯ তে প্রতিবাদের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে মুমিনরা। মানুষের প্রয়োজনে এবং বিরোধের সময়েই প্রতিবাদ করতে হবে এবং তাদের সাথে লড়াই করতে হবে যারা এই অন্যায় নির্যাতন করেছিল। তবে আগ্রাসী হওয়া যাবে না। নির্যাতনকারীদেরও তাদের দখল করা মুমিনদের সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। সেজন্য লড়াই করতে হবে।

৯) ২ঃ১৯১ অনুসারে কাফিরদের সাথে তাদের নিষিদ্ধ মাসজিদ (মাসজিদ আল হারাম) /তাদের শিরকী বিশ্বাস নিয়ে লড়াই করার আপাতত প্রয়োজন নেই যদি না তারা এ ব্যাপারে লড়াই করে। কারণ মুমিনদের লড়াই করার মূল উপপাদ্য ছিল তাদের হারানো সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা।

এসব বিরোধের সম্ভাবনার কারণেই শুরুতেই ২ঃ১৮০ তে দলিললেখক দ্বারা সম্পত্তি উইল করার আদেশ জারি করা হয়েছিল।

কারেকশন/সংযুক্তিঃ স্পেশাল সিয়ামটা বর্তমানেও প্রযোজ্য। যখনই সমাজে অস্থিরতা/তীব্র উত্তপ্ত /শাহরু রামাদন এর সময়কাল উপস্থিত হবে তখনই মুমিনদের কুরানের মাধ্যমে তা রহিত/বিরত করতে হবে (আসিয়ামা) যাতে সবাই অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে পারে। (২ঃ১৮৭), সেজন্য মানুষের প্রয়োজনের সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে (২ঃ১৮৮)।

fb.sourse same.as.sourse

চুল, গোফ এবং দাড়ী কর্তন করার কথা কোরআনে উল্লেখ নাই

❤চুল, গোফ এবং দাড়ী কর্তন করার কথা
কোরআনে উল্লেখ নাই কিংবা এইগুলি রাখা হারাম বা
রাখা নিষেধ এমন আয়াত কুরআনে নাই❤
নারীদের মুখমন্ডলে গোফ এবং দাড়ী নাই। অথচ পুরুষদের মুখমন্ডলে গোফ এবং দাড়ী আছে। এটা আল্লাহর বিধান বা নিয়ম। আর মানুষের শরিরের চুল ও দাড়ী এবং গোফ যত টুকু বড় হওয়া বা লম্বা হওয়ার প্রয়োজন ততটুকুই বড় বা লম্বা হবে তার বেশি হবে না। যেমন চোখের ভ্ররু যতটুকু বড় হওয়ার প্রয়োজন তার বেশি বড় হয় না। যেমন ভাবে আদম (আঃ) এর সময় চুল দাড়ী গোফ কর্তন করার জন্য কোন কাঁচি বা খুর ছিল না। কারন খুর তৈরির জন্য লোহা ও আগুন কোনটা তখন আবিস্কার হয়নি। ফলে তখন আদম (আঃ) এর মুখমন্ডলে দাড়ী গোফ এবং মাথায় চুল বড় হয়েছিল যততুকু বড় হওয়া প্রয়োজন ততটুক। সেই থেকে চুল দাড়ী গোফ রাখার নিয়ম চলে আসছে। কারন এগুলি সবই আল্লাহর দেওয়া বিধান/নিয়ম। এখন যদি কেহ চুল, দাড়ী ও গোফ কর্তন করে তাহলে আল্লার নিয়মের পরিবর্তন করল, কিন্তু আল্লাহর নিয়মের কোন পরির্বতন নেই (১৭ঃ৭৭)। আর পুরুষের মুখমন্ডলে গোফ এবং দাড়ী দেওয়ার আল্লাহর একটি উদ্দেশ্য আছে। কারন আল্লাহ কোন কিছু নিরর্থক সৃষ্টি করে নাই (৩৮ঃ২৭) (২১ঃ১৬)। তাই চুল, দাড়ী ও গোফ কর্তন করে তারা আল্লাহর উদ্দ্যেশকে ব্যর্থ করে। কিন্তু যারা আল্লাহর নির্দশনকে ব্যর্থ করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি জাহান্নাম (হজ্ব-৫১)। কাজেই চুল দাড়ী ও গোফ কর্তন করা বিধি সম্মত নহে। তা ছাড়া চুল দাড়ী ও গোফ রাখা হারাম বা নিষেধ এমন আয়াত পবিত্র কোরআনে নেই। তারপর অনেকেই বলে গোফ এবং চুল রাখা হারাম, তাদের দৃষ্টি আর্কষণ করি। আদম (আঃ) যখন বেহেস্তে ছিলেন তখন তিনি শারিরিক ভাবে পূর্নাঙ্গ পুরুষ মানুষ ছিলেন, তখন তার সাথে তার স্ত্রীও ছিল (০২ঃ৩৫) তখন তার মুখে নিশ্চয় গোফ ছিল আর গোফ যদি হারাম হতো তবে হারাম বস্তু বেহেশ্তে কিভাবে ছিল। যেহেতু বেহেশ্তে কোন হারাম বা অপবিত্র বস্তুর উপস্থিত থাকতে পারেনা। কারন অপবিত্রতার কারনে ইবলিস সেখান থেকে বহিষকৃত হয়েছিল (১৫ঃ৩৪)। সেই হিসাবে আদম (আঃ) কে যখন আল্লাহ ওই মুহুর্তে তুমি ও তোমার স্ত্রী একসাথে জান্নাতে বসবাস কর (০২ঃ৩৫) আবার হাশরের দিনেও চুলের ঝুটি ধরিয়া অপরাধীদেরকে পাকড়াও করা হবে (৫৫ঃ৪১) (৯৬ঃ১৫) এই আয়াতে নাওয়াছি শব্দ এসেছে, যার অর্থ চুলের উপরের অংশ (আরবি অভিধান পৃঃ নং- ২৪৮৩)। এই আয়াতে প্রমাণ হয় হাশরের দিন মানুষের মাথায় চুল বড় থাকবে কাজেই বর্তমানেও চুল দাড়ী ও গোফ যতটুকু বড় হওয়া প্রয়োজন ততটুকু বড় হবে এতে কোন বাধা নেই সেহেতু চুল দাড়ী ও গোফ রাখা হালাল। এতে প্রমান হয় আদম (আঃ) এর মুখমন্ডলের গোফ এবং মাথার চুল নিশ্চয় হারাম ছিলনা। যেহেতু পবিত্র কোরআনে কোথাও গোফ এবং চুল রাখা হারাম বা নিষেধ এই মর্মে কোন আয়াত পবিত্র কোরআনে আসে নাই। এতে প্রমাণিত হয় যে, চুল, দাড়ী গোফ রাখা আল্লাহ হারাম করে নাই এটা নিশ্চিত। মূলতঃ ঐগুলিই হারাম যাহা আল্লাহ পবিত্র কোরআনে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন। মূলত পবিত্র কোরআনের সকল আয়াতে নবী (সঃ) এর মুখ নিঃসৃত বাণী (৬৯ঃ৪০)। তাঁর প্রতি যাহা অহি অবর্তীণ হয় শুধু তিনি তাহাই বলেন (৫৩ঃ৪)। তিনি নিজের তরফ থেকে কোন কিছুই বলেন নাই (৫৩ঃ৩)। তিনি আল্লাহর নামে কোন কিছুই বানাইয়া বলে নাই (৬৯ঃ৪৪)। আর আল্লাহ বলেন নাই এমন কথা যদি তিনি আল্লাহর নামে বানাইয়া বলিতেন তাহলে আল্লাহ তার দক্ষিণ হস্ত ধরিয়া ফেলিতেন (৬৯ঃ৪৫) এবং তার জীবন ধমনী কাটিয়া দিতেন (৬৯ঃ৪৬)। আর এই কোরআন নিশ্চয়ই আল্লাহ ব্যতিত অপর কাহারো রচনা নহে (১০ঃ৩৭)। ইহা প্রভুর পক্ষথেকে নাজিলকৃত গ্রন্থ (৬৯ঃ৪৩)। কাজেই এই কোরআনে যাহা হারাম বলে উল্লেখ নেই তাহা নবী (সঃ) হারাম করেন নাই এটাও নিশ্চিত। কারণ তিনি ওহি ব্যতিত কাউকে সতর্ক করে নাই (২১ঃ৪৫)। আর নবী (সা.)-এর জন্য বিধান স্বরূপ এই কোরানই (২৮ঃ৮৫)। যেহেতু চুল, দাড়ী গোফ রাখা হারাম কোন ওহি আসে নাই বিধায় তিনি এইগুলি হারাম মর্মে কাউকে সতর্ক করে নাই। তাছাড়াও নবী (স) ওহি ব্যতিত কোনকিছু অনুসরণ করে নাই (৬ঃ৫০)। আর হারাম সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, আমি যাহা হারাম করেছি ইতিপূর্বে কোরআনে শুধু তাহাই হারাম (১৬ঃ১১৮)। আল্লাহ আরো বলেন, আর যাহা কিছু হারাম করেছি যাহা ব্যতিত বাকী সমস্ত কিছুই হালাল (৩ঃ৯৩)। যেহেতু চুল, দাড়ী গোফ রাখা হারাম এই কোরআনে উল্লেখ নেই তাহলে এটা অবশ্যই হালাল। আর কোন হালাল বস্তুকে তোমরা হারাম বলিওনা (৫ঃ৮৭)। এখানে উল্লেখ্য যে, অনেকেই বলে- এই কোরআনের বাইরেও আল্লাহর কিছু ওহি আছে, যাহা কোরআন লিপিবদ্ধ করার সময় বাদ পড়েছে। তাদের কথা ঠিক নহে। কারণ এই কোরআন আল্লাহ নিজেই হেফাজত করেন (১৫ঃ৯) এবং সর্বাবস্থায় অভিসপ্ত শয়তান হইতে এই কোরআনকে হেফাজত করেন (১৫ঃ১৭)। অর্থাৎ নবী (স) এর উপর নাজিলকৃত সকল ওহি এই কোরআনের ভিতর লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আর এই জন্য ওহি ব্যতিত কোন কথা এই কোরআনে নেই এটাও নিশ্চিত। কারণ নবী (স) রূপের মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর কথাগুলোকে ব্যক্ত করেছেন। ফলে ইবলিশের অনুপ্রবেশ এই কোরআনের ভিতরে ঘটে নাই। এইজন্য পবিত্র কোরআনের কথাগুলো নবী (স) সুরতের মাধ্যমে আল্লাহর কথা। যদি নবী (স) রূপের বাইরে এসে আল্লাহ মানুষের সাথে কথা বলতো সেক্ষেত্রে প্রতারিত শয়তান মানুষকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চনা দিতে পারত। কারণ ইবলিশ মানুষকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রবঞ্চনা দিতে সক্ষম (৩১ঃ৩৩) (৩৫ঃ৫)। যখন ওহি নাজিল হয়েছে তখন নবী (সঃ) এর নিজ আকৃতিতেই আল্লাহ স্থির হয়েছে (৫৩ঃ৬)। কারণ নবী (সঃ) এর রূপ ইবলিশ ধারণ করতে পারে না, কারণ নবী (সঃ) স্বরূপে সেজদাকারী (৭ঃ২৯)। আর যেহেতু ইবলিশ আদম কাবায় সেজদা না দিয়েই কাফের (২ঃ৩৪) সেহেতু ইবলিশ আদম কাবায় সেজদার শামিল হবে না (১৫ঃ৩৩) এইজন্য নবী (স) এর সুরত ইবলিশ ধারণ করে না। এই জন্য পবিত্র কোরআনের মধ্যে ইবলিশের কথার অনুপ্রবেশ ঘটানো রোধ করার জন্য নবীর রূপের মাধ্যমে আল্লাহ কোরআন নাযিল করেছেন। আর এইভাবেই তিনি কোরআনকে ইবলিশ থেকে হেফাজত করেছেন (১৫ঃ১৭)। যেহেতু চুল, দাড়ি গোফ ও বাদ্যযন্ত্র হারামের কথা কোরআনে উল্লেখ নাই, বিধায় এইগুলি হারাম নহে। কারণ দ্বীনের সকল বিষয় ফয়সালাকারী এই কোরআন (৮৫ঃ১৩)। আর এই কোরআন মোতাবেক যারা দ্বীনের বিষয়ে বিধান দেয় না উহারাই যালেম, ফাসেক ও কাফের (৫ঃ৪৪) (৫ঃ৪৫) (৫ঃ৪৭)। যেহেতু উপরোক্ত আলোচনায় প্রমাণ হয় আল্লাহ যাহা হারাম করেছেন তাহা ব্যতিত সকল বস্তু হালাল (৩ঃ৯৩)। যেহেতু চুল, দাড়ি গোফ রাখা হারাম কোরআনে উল্লেখ নেই তাহলে এইগুলি রাখা হালাল। আর এইগুলি মানব শরীরে আল্লাহর দেওয়া নিদর্শন। অতএব যারা বর্তমানে চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করেন তাহারা আল্লাহর নির্দশনের পরিবর্তন ঘটায়। আল্লাহর নির্দশনের বা নিয়মের কোন পরিবর্তন করা যাবে না (১৭ঃ৭৭)। আর চুল, দাড়ি গোফ যেহেতু আল্লাহর নিদর্শন তাহলে আল্লাহর নির্দশনকে যারা কর্তন করে তাহারা আল্লাহর নিদর্শনকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে। ফলে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি জাহান্নাম (২২ঃ৫১)। তাই আল্লাহর নির্দেশকে বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্যে রসূলকে রেসালাতের ভার দেওয়া হইয়াছে (৬ঃ১২৪)। আর আল্লাহ বলেন, আমার নির্দেশ মোতাবেক তোমরা রসূলের আনুগত্য কর, এইজন্য আমি তোমাদের মধ্যথেকে তোমাদের কাছে রসূল পাঠাইয়াছি (৪ঃ৬৪)। তাই মানুষ কোরআনের সমস্ত নির্দেশ পালন করবে বলে রসূলের কাছে তথা গুরুর কাছে আনুগত্যের বায়াত গ্রহণ করে, অথচ কিছু লোক গুরুর কাছে বায়াত গ্রহণ করার পর গুরুর তথা রসূলের নিষেধ থাকার পরও তারা চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করে কোরআনের পরিপন্থি তথা মুসলমানদের পরিপন্থি কাজ করে। তাদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেন, যারা এই রকম ভাবে আল্লাহ ও রসূলের নিষেধকে নিষেধ মনে করে না তাদের সাথে যুদ্ধ কর যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নত না হয় (৯ঃ২৯)। অর্থাৎ চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করা যাবে না, তারপরও রসূল তথা গুরুর নিষেধ অমান্য করে চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করে তারা রসূল তথা গুরুর অবাধ্য বলে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ যে সমস্ত ভক্তগণকে রসূল তথা গুরু চুল, দাড়ি গোফ কর্তন না করা নির্দেশ দেন তারপরও সেই নির্দেশ অমান্য করে চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করে তাদের বিষয়ে আল্লাহ বলেন, আল্লাহ ও রসূল (কুরআন মোতাবেক) কোন নির্দেশ দিলে কোন মমিন সে বিষয়ে ভিন্ন সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে না (৩৩ঃ৩৬)। যদি সে আল্লাহ রসূলকে অমান্য করে তাহলে সে পথভ্রষ্ট (৩৩ঃ৩৬)। তারা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হয়নি। তাদের জন্য আল্লাহ বলেন, হে মোমিন তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হও (২ঃ২০৮)। কাজেই চুল, দাড়ি গোফ কর্তন করা থেকে বিরত থেকে আল্লাহ রসূলের আনুগত্য করে তারা গুরুর কাছে পরিপূর্ণভাবে বায়াত গ্রহণ করে। আর যারা গুরুর তথা রসুলের পরিপূর্ণভাবে আনুগত্য করে তারা সেদিন নবীর সঙ্গী হবে (৪ঃ৬৯)। এখানে উল্লেখ্য যে, এমন অনেক লোক আছে, যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে আল্লাহর নামে চালিয়ে দেয় এবং স্বল্প মূল্যে তা বাজারে বিক্রয় করে (২ঃ৭৯) ঠিক তদ্রƒপ এমন কিছু লোকও আছে, যাহারা নবী (স) বলেন নাই এমন কথা নবীর হাদীস বলে চালিয়ে দেয় যেগুলি নবী (স) বলেন নাই। সেই সমস্ত বিষয়গুলি মানব রচিত গ্রন্থের উল্লেখ করে বলেÑ ইহা হারাম, ইহা হালাল ইত্যাদি। তাদেরকে সতর্ক করে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করিবার জন্য বলিওনা ইহা হালাল এবং ইহা হারাম’ (১৬ঃ১১৬)। কারণ আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপকারী সবচেয়ে বড় যালিম (১১ঃ১৮)। আর যারা এমনটি করে তারাই অজ্ঞ বা মূর্খ। আল্লাহ বলেন ‘তোমরা অজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে পরিহার কর’ (৭ঃ১৯৯)। কারণ কোরআনই দ্বীনের বিষয়ে পরিপূর্ণ দলিল (৫ঃ৩)। কাজেই দ্বীনের বিষয়ে এজমা,কেয়াস বা মানব রচিত গ্রন্থ কিংবা হাদীসের কোন প্রয়োজন নাই। অর্থাৎ প্রকৃতপক্ষে তাহাই আল্লাহ হারাম করেছেন যাহা কোরআনে উল্লেখ আছে, আর যেগুলি হারামের কথা কোরআনে উল্লেখ নেই সেগুলি নবী (স) হারাম করেন নাই, কারণ উপরের আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, হারামের বিষয়টি কোরআনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর এই কোরআনের যাহা হারাম করে নাই এমন বিষয়টি যাহারা হারাম করিবে উহারাই সীমালংঘনকারী। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সীমালংঘন করিওনা’ (৫ঃ৮৭)। আর নবী (স) সীমালংঘনকারী ছিলেন না বিধায় কোরআনে যাহা হারাম করে নাই তাহা তিনি হারাম করে নাই এটা নিশ্চিত। কারণ আল্লাহ সীমালংঘনকারীকে পছন্দ করে না (৫ঃ৮৭)। অতবএ, চুল, দাড়ি গোফ ও বাদ্যযন্ত্র হারাম নহে।

From সত্যৰ সন্ধান fb

Sizdah-bn

সিজদা

আল্লাহর সত্য বাণী বোঝার জন্য কুরআনের আরবী শব্দগুলির সঠিক অর্থ গ্রহণ করে সমস্ত আয়াতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করলে কুরআন বোঝার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই । কিন্তু , আপনি যদি কুরআনে ব্যবহৃত শব্দের বানোয়াট অর্থ অনুসরণ করেন, যা প্রায় ১২০০ বছর আগে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রাথমিক সময়ে উদ্ভাবিত হয়েছিল, তাহলে আপনি বিভ্রান্তিতে হারিয়ে যাবেন।

যখন আরব পৌত্তলিক এবং জরথুষ্ট্রিয়ান পার্সিয়ানরা ক্ষমতায় এসেছিল তারা কুরআনের অর্থ পরিবর্তন করে পরিবর্তিত অর্থ অনুযায়ী কুরআনে ব্যবহৃত আরবি শব্দগুলিকে একই রকম ফার্সি শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করেছিল। এরপর থেকে কুরআনিক শব্দের ভুল অর্থ প্রকাশ ও মুখস্থ করা হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে , আমাদের আলেমগণ এবং সমগ্র মুসলিম জাতি কুরআনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে আল্লাহর বাণীর অর্থ পরিবর্তনকারী ইসলামের শত্রুদের যোগসাজশে তৈরি কুরআনের বিভ্রান্তিকর অনুবাদে আটকে আছে।

গত পর্বের লেখাগুলোতে ‘বাইত’ শব্দের সঠিক অর্থ ও কোরানে এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে দেখিয়েছি কিভাবে পৌত্তলিক পন্ডিতরা কোরানের এই আরবী শব্দের অর্থ বিকৃত করে পৌত্তলিক প্রথাকে ইসলামে অভিযোজিত করেছে । আজকে আমাদের বহুল পরিচিত ‘সিজদা’ শব্দের সঠিক অর্থ নিয়ে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।

আল কোরআনের বাংলা অনুবাদে সিজদা শব্দের অনুবাদ করা হয়নি, বরং এর একটি পারিভাষিক সংজ্ঞা দিয়ে আমাদেরকে বুঝানো হয়েছে যে সিজদা মানে হাটু গেড়ে উপুর হয়ে কপাল ও নাক মাটিতে স্পর্শ করা। ইংরেজী অনুবাদে সিজদা অর্থ করা হয়েছে prostration, কেমব্রিজ ডিকশনারি অনুযায়ী যার অর্থ the act or position of lying with the face down and arms stretched out, especially as a sign of respect or worship.। আরবী সিজদা শব্দের এই সংজ্ঞা কি ঠিক আছে? আসুন দেখি আরবী সিজদা শব্দের সঠিক অর্থ কি?

সঠিক ব্যুৎপত্তি অনুসারে আরবি শব্দ “سجد” (SJD) এসেছে ক্লাসিক্যাল সিরিয়াক শব্দ ܣܓܶܕ‎ (SGED) থেকে, যার অর্থ: “বিন্যস্ত করা” এবং আরবীতে মূল অক্ষর س ج د হিসেবে আরও বিকশিত হয়েছে । কুরআনে ব্যবহৃত আরবি “سجد” শব্দটির সঠিক অর্থ নিম্নরূপ:

নিচে যেতে (To go down), বিশ্রামে থাকতে (to rest) , সমর্থন করা (to support), সম্মান করা (to houour), সমর্পন করা (to submit), রাজি করা (to persuade), গ্রহণ করা (to accept), কোন কিছুর দিকে ফিরে যেতে (to turn towards), ঝুঁকতে (to incline), নম্র হতে (to become humble), আজ্ঞাবহ হওয়া (to become obedient) বা কারো আনুগত্য করা (obeying someone).

আবু আল-কাসিম মাহমুদ ইবনে উমর আল-জামাখশারী তার সুপরিচিত আরবি অভিধান “আসাস”, ইবনে-বারী ও আল-জাওহারী প্রাচীন আরবি অভিধান “সিহাহ”, সাইয়্যেদ মুর্তদা আজ-জেবসেদী তার কিংবদন্তি আরবি অভিধান “তাজ উল আরুস”, আবু তাহির মাজিদ আদ-দীন মুহাম্মদ ইবনে ইয়াকুব ইবনে মুহাম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আল-ফাইরুজাবাদী তার জনপ্রিয় আরবি অভিধান “কামুস” এবং আল ফায়ুমি তার বিখ্যাত আরবি অভিধান “মিসবাহ”-এ উল্লেখ করেছেন যে “سَجَدَ” ” অর্থ: নম্র/বিনয়ী হওয়া (became lowly), বিনয়ী (humble) বা অনুগত (submissive), যেটি আরবি শব্দ “خَضَعَ”-এর প্রতিশব্দ যার অর্থ: সহ্য করা/ অধীন হওয়া (undergo), বশীভূত হওয়া (succumb) আত্মসমর্পণ করা (surrender) (استسلم), বশীভূত করা (subdue), অধীনস্থ হওয়া (subordinate), নিজের হাতে নিক্ষেপ করা (throw in one’s hand), সহ্য করা (endure)(تحمل), দাঁড়ানো (stand), প্রয়োগ করা (enforce), সমর্থন করা (support) (put up with), আনুগত্য করা (obey) (أطاع), মেনে চলা (comply), নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া (conform)।

ইবনে-মুকাররম কিংবদন্তি আরবি অভিধান “লিসানুল আরব”-এ লিখেছেন যে “سجد” হল অভিবাদন (salute) জানানোর একটি ক্রিয়াকলাপ। সাইয়্যিদ মুর্তদা আজ-জেবসেদীও তার কিংবদন্তি আরবি অভিধান “তাজ উল আরুস”-এ একই কথা উল্লেখ করেছেন। “লিসান উল আরব” এবং “তাজ উল আরুস” উভয়ই আরবি বাক্যাংশ “سَجَدَ لَهُ” উদ্ধৃত করেছেন, যার অর্থ: তিনি তাকে অভিবাদন (salute) করেছেন। এছাড়া এর অর্থ হিসেবে আরও উল্লেখ করেছেন : তিনি তাকে সম্মান (respect/ honour) দিয়েছেন; বা তাকে বড় (magnified) করেছেন। আত-তিবরিজি “Exposition of the Hamdseh,” বইয়ের ২৯৪ নং পৃষ্ঠায় আরবি শব্দ “سجد” সম্পর্কে একই কথা বলেছেন ” যেটি আত-তিবরিজির “হামাসে কারমিনা” নামেও পরিচিত।

সুপরিচিত আরবি লেখক আবু-হানিফা আদ-দীনাওয়ারী ” “Book of Plants” (উদ্ভিদের বই”), আল-মুতাররিজি “মুগরিব”-এ উদ্ধৃত করেছেন এবং সাইয়্যিদ মুর্তদা আজ-জেবসেদী “তাজ উল আরুস” এ একটি আরবি বাক্যাংশ “سَجَدَتِ النَّخْلَةُ” উদ্ধৃত করেছেন যার অর্থ: খেজুর গাছ বেঁকে, বা ঝুঁকে আছে। আবু আল-কাসিম মাহমুদ ইবনে উমর আল-জামাখশারী জার আল্লাহ এবং সাইয়্যেদ মুর্তদা আজ-জেবসেদী “আসাস” এবং “তাজ উল আরুস” -এ এই আরবী উক্তিটি উদ্ধৃত করেছেন: “السَّفِينَةُ تَسْجُدُ لِلرِّيحِ” এর অর্থ: বাতাসের প্রভাবে জাহাজ বেঁকে বা ঝুঁকে পড়ে। উভয় সুপরিচিত পণ্ডিতই আরবি “سجد” শব্দটি “ঘোরানো বা আবর্তিত করা (turn)” বা “ঝুঁকে পড়া (incline)” অর্থে অনুবাদ করেছেন।

আরবি ব্যাকরণের বিখ্যাত পণ্ডিত এবং “আরবি অভিধান আল ফাররা” এবং “মাআনিল-কুরআন” এর লেখক, ইয়াহিয়া ইবনে জিয়াদ আল-ফাররা ৫৫ঃ৬ “وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ” আয়াতের অনুবাদ করেছেন : “আর তৃণলতা ও গাছগুলো সূর্যের দিকে ঘুরে যায়” “And the herbs and the trees turn towards the sun”।

কামুস এবং সিহাহ আরবি শব্দ “سَاجِدٌ” কে “سَجَدَ” এর একটি সক্রিয় বিশেষ্য হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন। যার অর্থ নম্র হওয়া (being lowly), বিনয়ী (humble) বা অনুগত (submissive)।

সাইয়্যিদ মুর্তদা আজ-জেবসেদী “তাজ উল আরুস”-এ ১৬:৪৮ নং আয়াতাংশ “سُجَّدًا لِّلّهِ” এর ব্যাখ্যা করেছেন যার অর্থ হল: অনুবর্তিতার সাথে আল্লাহর কাছে নিজেদেরকে বিনীত করা।

আবু আল-কাসিম মাহমুদ ইবনে উমর আল-জামখশারী জার আল্লাহ “আসাস” এ আরবি বাক্যাংশ: “شَجَرَةٌ سَاجِدَةٌ” এবং “ شَجَرٌ سَاجِدٌ” উদ্ধৃত করেছেন এর অর্থ: একটি বাঁকানো গাছ, এবং ঝুঁকে থাকা গাছগুলো। আবু-হানিফা আদ-দীনাওয়ারী তাঁর আরবি বই “Book of Plants (গাছের বই)” এর উদ্ধৃতি দিয়ে একটি আরবি বাক্যাংশ “نَجْلَةٌ سَاجِدَةٌ” উল্লেখ করেছেন যার অর্থ: এর ফলের দ্বারা বাঁকানো একটি খেজুর গাছ। কামুস একটি অনুরূপ আরবি বাক্যাংশ “نَخْلٌ سَوَاجِدُ” উদ্ধৃত করে এর অর্থ করেছেন: পাম-গাছগুলি বেঁকে বা ঝোঁকে আছে।

উপরের লাইনগুলিতে আমরা কিংবদন্তি আরবি পণ্ডিতদের বই এবং সেইসব আরবি অভিধান থেকে আরবি “سجد” শব্দের অর্থ দেখেছি যেগুলি কুরআনের শব্দের অর্থের উপর কর্তৃত্ব বলে বিবেচিত হয় এবং দেখতে পেয়েছি যে আরবী ভাষায় এই আরবি শব্দ “سجد” বলতে সাধারণত বোঝানো হয়: কেউ বা কোনকিছুর দিকে মুখ করা, কারো/কিছুর সামনে নম্র/বিনয়ী হওয়া, কারো প্রতি আনুগত্য হওয়া, কাউকে সম্মতি দেওয়া এবং কাউকে মেনে চলা ইত্যাদি।

তাছাড়া, আমরা যদি কুরআনের নিম্নলিখিত আয়াতগুলির বক্তব্যের সাথে মিলাই তবে উপরের অর্থগুলি এই আয়াতগুলিতে যৌক্তিকভাবে খাপ খায়। যেখানে এই আরবি শব্দ “سجد” এর ভুয়া অর্থ “মাথা নিচু করা বা মাটিতে মাথা স্পর্শ করা” কুরআনের এই আয়াতগুলিতে খাপ খায় না কারণ পৃথিবী, আকাশ, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র ও বৃক্ষরাজি এই “سجدہ” সম্পাদন করতে পারে না। মাটিতে লুটিয়ে পড়া এবং মাটিতে মাথা স্পর্শ করা হল পার্সিয়ান জরথুষ্ট্রীয় “سجدہ” যা বহুঈশ্বরবাদী জরথুষ্ট্রীয় ধর্মে প্রাধান্য ছিল এবং আরব পৌত্তলিকদের দ্বারাও চর্চা করা হত। যেখানে তারা তাদের দেবতাদের পায়ে পড়ত এবং মুশরিকদের দেবতা ‘পৃথিবী গ্রহকে’ তাদের কপাল স্পর্শ করে প্রণাম করত। হিন্দু মুশরিকরা এখনও ভূপৃষ্ঠ বা পৃথিবীকে “دھرتی ماں” (ধরিত্রি মা) অর্থাৎ ‘পৃথিবী মা’ বলে ভূপৃষ্ঠ বা মাটিকে দেবতা হিসেবে প্রণাম করে যেভাবে আরব পৌত্তলিক, জরথুষ্ট্রিয়ান এবং অন্যান্য মুশরিকরা পশুর মত মাটিতে লুটিয়ে উপাস্যদেরকে প্রণাম করে এবং তাদের কপাল দ্বারা মাটিকে স্পর্শ করে। আমরা আমাদের প্রতিদিনের প্রার্থনায় একই কাজ করি কারণ পৌত্তলিক এবং মুশরিকরা চেয়েছিল যে আমরা তাদের অনুসরণ করি এবং তাদের পৌত্তলিক আচার-অনুষ্ঠানগুলি মেনে চলি। এ কারণেই তারা চাতুরী করে তাদের পৌত্তলিক প্রার্থনা ইসলামে অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং ইসলামে তাদের পৌত্তলিক সিজদা প্রতিষ্ঠিত করতে কুরআনিক শব্দের অর্থ পরিবর্তন করেছে। তারা তাদের প্রাক-ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহর অদৃশ্য মূর্তি তৈরি করে পাথরের প্রাচীরগুলিতে আমাদের সিজদা করাচ্ছে যেভাবে তারা কুখ্যাত পাথর পূজাঁ করত।

যাইহোক, কুরআন আরবি শব্দ “سجد” এবং এর থেকে উৎপন্ন বিশেষ্য “سجدہ” দ্বারা মাটিতে লুটিয়ে পড়া এবং কপাল দিয়ে মাটিকে স্পর্শ করা বোঝায় না কারন আল্লাহ এমন কোন বস্তুর মূর্তি নন যে তাঁর উপাসনা করার জন্য তাঁর পায়ে লুটিয়ে পরতে হবে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ সদা জীবিত এবং অগণিত মহাবিশ্ব এবং তাদের চারপাশে যা আছে তা পরিচালনায় সক্রিয় আছেন। সুতরাং, আল্লাহকে সিজদা (“سجده”) করা হয় শুধুমাত্র তাঁর আদেশ পালনের মাধ্যমে, আমাদের ভ্রান্ত বিশ্বাসকে আত্মসমর্পণ করার মাধ্যমে, একমাত্র আল্লাহর দিকে ঝুঁকে পড়ার মাধ্যমে, একমাত্র আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করার মাধ্যমে, আল্লাহর সামনে বিনয়ী হয়ে, আল্লাহর আনুগত্য করার মাধ্যমে, আল্লাহর আদেশ পালনের মাধ্যমে , একমাত্র আল্লাহকে অনুসরণ করে এবং তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে।

وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ (13:15

উপরোক্ত আয়াতের উর্দু ও ফার্সি অনুবাদে এবং কিছু ইংরেজি অনুবাদে বর্তমান ক্রিয়াপদ “يَسْجُدُ”-এর অর্থ করা হয়েছে “সিজদা”, অর্থাৎ এই শব্দটি অনুবাদ করা হয়নি এবং তারা আশা করেছেন যে পাঠকগন স্বয়ংক্রিয়ভাবে “সেজদা” কী তা বুঝতে পারবে। যাইহোক, ইংরেজিতে এই আয়াতটির অনুবাদ করা হয়েছে: Whatever is in the skies and the earth prostrate to Allah. যার অর্থ আকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু আছে, আল্লাহর কাছে সিজদা করে। মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুঝতে পারে যে “সেজদা” মানে মুখ নিচু করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কপাল দ্বারা মাটি স্পর্শ করা। কেউ বুঝেতে চায়না যে আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছু কীভাবে মাটিতে পড়ে এবং তাদের কপাল দ্বারা মাটি স্পর্শ করে! অতএব এ আয়াতের মূল অর্থকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করে পৌত্তলিকতার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

যাইহোক, “وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْض” (১৩:১৫) নং আয়াতের প্রকৃত অনুবাদ নিম্নরূপ যা বেশ বোধগম্য:

And obey Allah /follow Allah/incline towards Allah whosever is in the skies and the earth.

আর আল্লাহর আনুগত্য করে/আল্লাহর অনুসরণ করে/আল্লাহর দিকে ঝুঁকে/আল্লাহর কাছে অবনত হয় যারা আকাশ এবং পৃথিবীতে আছে ।

Obeying is only for Allah from whoever is in the skies and in the earth.

নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যারা আছে তাদের আনুগত্য একমাত্র আল্লাহর জন্য।

وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِن دَآبَّةٍ وَالْمَلَآئِكَةُ وَهُمْ لاَ يَسْتَكْبِرُونَ (16:49

What is in the skies and what is in the earth from living things (animal/insect/organism) and His Properties obey Allah/follow Allah/turn towards Allah and they are not arrogant. (Correct Translation)

আকাশে এবং পৃথিবীতে জীবন্ত বস্তু (প্রাণী/পতঙ্গ/জীব) হতে যা কিছু আছে এবং তার মালিকানাধীন সবকিছু আল্লাহর আনুগত্য করে/আল্লাহর অনুসরণ করে/আল্লাহর দিকে ফিরে আসে এবং তারা অহংকার করে না। (সঠিক অনুবাদ)

তবে বিভ্রান্তিকর অনুবাদে আল্লাহর প্রকৃত বাণী ধ্বংস করে “সেজদা” শব্দ দ্বারা prostration (অধোমুখী হয়ে মাটিতে কপাল ঠেকানো) ব্যবহার করা হয়েছে। এখন বাকিটা পাঠকদের বোঝার জন্য ছেড়ে দিলাম যে, কোন মসজিদে পশুরা সেজদা করতে যায় এবং তারা কীভাবে এটি করে? কীভাবে এবং কোথায় ফেরেশতারা (আল্লাহর মালিকানাধীন সবকিছু) কপাল নীচু করে তাদের সেজদা আদায় করে এবং কীভাবে অন্যান্য জীবিত ও নির্জীব জিনিসগুলি সেজদা করার জন্য তাদের কপালকে নত করে মাটিতে ঘষে? প্রকৃতপক্ষে তারা তাদের মাটির দেবতা ‘ধরিত্রী মা”-কে অভিবাদন ও প্রণাম করার জন্য সেজদার বিকৃত অর্থ করেছে।

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ (22:18

Haven’t you seen that Allah is obeyed by whoever is in the skies and whoever is in the earth and by the sun and by the moon and by the stars/planets and by the mountains and by the trees and by the living things/animals? (Correct Translation)

তোমরা কি দেখনি যে, যারা আকাশে আছে ও যারা পৃথিবীতে আছে, এবং সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র/গ্রহ, পর্বত, গাছপালা এবং জীবজন্তু আল্লাহর আনুগত্য করে?

আমাদের আলেমদের দেওয়া “سجدہ”-এর সংজ্ঞা মানে হাঁটু গেড়ে বসে মাটিতে কপাল স্পর্শ করা যদি সঠিক হয় তাহলে আপনানি নিজেকেএকটি প্রশ্ন করুন যে সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র বা গ্রহ, পাহাড়, গাছ এবং প্রাণীরা কীভাবে “سجدہ” (সেজদা) করে?

সূর্য, চন্দ্র এবং অন্যান্য নক্ষত্র/গ্রহরা নত হয়ে মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে সিজদা “سجدہ” (সিজদা) করার ধারনা হল অজ্ঞ মোল্লাদের কল্পকাহিনী, যারা এমনকি জানে না যে সূর্য পৃথিবীর এক স্থান থেকে অস্ত গেলেও তা প্রকৃতপক্ষে একই পৃথিবীর অন্য জায়গায় তার উদয় হচ্ছে। চাঁদ এবং বাকি নক্ষত্র/গ্রহের অস্ত ও উদয়ের বেলায় একই কথা।

وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنُ لَا يَسْجُدُونَ (84:21

আমাদের আলেমরা এই আয়াতের একটি অনর্থক অনুবাদ করেছেন : যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করা হয় তখন তারা সেজদা করে না???

কেউ এটা ভাবেনা যে ইসলামে ফিরে না এলে কেন তারা আল্লাহকে সেজদা করবে ? অথচ আল্লাহ এই আয়াতে বলছেন

“When the Quran is read on them they don’t accept it/they don’t obey it/ they don’t follow it and they don’t incline towards it”. (84:21)

যখন তাদের কাছে কুরআন পাঠ করা হয় তখন তারা তা গ্রহণ করে না/তারা তা মানে না/তারা তা অনুসরণ করে না কিংবা তারা এর দিকে ঝুঁকে পড়ে না। (৮৪:২১)

কুরআনের কত সুন্দর একটি শব্দগুচ্ছ “وَاسْجُدْ وَاقْتَرِبْ
(96:19 ” যার প্রকৃত অর্থকে কুরআনের অনুবাদে ধ্বংস করা হয়েছে: “তোমরা সিজদা করে (আল্লাহর) নৈকট্য লাভ কর” যাতে মানুষ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুঝতে পারে মাটিতে উপড় হয়ে পৌত্তলিক দেবতা ‘ধরিত্রীকে’ তাদের কপাল দ্বারা স্পর্শ করে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। আসলে আল্লাহ এই কুরআনের বাণীতে বলেছেন

And obey and get close/ and become obedient and get nearer/ and follow and become near.(96:19)

আর আনুগত্য কর এবং নিকটবর্তী হও/ আর বাধ্যগত হও এবং কাছাকাছি আস/ আর অনুসরণ কর এবং নিকটবর্তী হও। (৯৬:১৯)

প্রকৃতপক্ষে এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের বুঝিয়েছেন যে তাঁর কাছে পৌঁছানোর উপায় হল তাঁর আনুগত্য। আল্লাহর “مقرب” (সবচেয়ে নিকটতম) হওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায়টি বলা হয়েছে وَاسْجُدْ وَاقْتَرِبْ বাক্যে অর্থাৎ আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার শ্রেষ্ঠ উপায় তাঁর আনুগত্য করা বা তাঁকে অনুসরণ করা। কিন্তু আল্লাহর দুশমন, আল্লাহর নবীর (সাঃ) এর দুশমন এবং ইসলামের শত্রুরা আল্লাহর কথিত আনুগত্যকে শয়তানী সিজদায় রুপান্তরিত করেছে যা তারা তাদের “পৃথিবী দেবতার” জন্য কপালে ভর দিয়ে পালন করত, যা কুরআনের ৬:৯২ এবং ৪২:৭ নং আয়াত অনুযায়ী “أُمَّ الْقُرَى” নামেও পরিচিত। “أُمَّ الْقُرَى” এর প্রকৃত অর্থ হল “ধরিত্রী মা (the globe mother)”। أُمَّ ” মানে ‘মা’ এবং “الْقُرَى” অর্থ “পৃথিবী” বা ধরিত্রী।

পৃথিবীর ছোট এলাকাকে আরবি ভাষায় “قَرْيَةٍ” (ক্বারিয়াহ) বলা হয় যা কোরআনের বিভিন্ন আয়াত যেমন ২:৫৮, ২:২৫৯, ৪:৭৫, ৬:১২৩ ইত্যাদিতে শহর বা টাউন হিসেবে এসেছে। তাই সামগ্রিকভাবে সমগ্র পৃথিবীকে বলা হয় “قُرَى” যা কুরআনের অনেক আয়াতেও উল্লেখ আছে। নির্দিষ্ট আর্টিকেল “ال” (আল) এর উপস্থিতিতে “الْقُرَى” শব্দের শেষে “ى” অক্ষরটি উত্তম পুরুষের কর্মবাচক সর্বনামকে বোঝায় যার অর্থ “আমার”। অতএব, সামগ্রিকভাবে সম্মিলিত শব্দ “أُمَّ الْقُرَى” এর অর্থ হল “ আমার বিশ্ব মাতা (my globe mother)” বা “my earth mother”, যা আরব পৌত্তলিক সহ অন্যান্য অনেক মুশরিক ধর্ম, ও হিন্দু ধর্মে দেবতা “ধরিত্রী মা” নামে পরিচিত, এবং এই পৃথিবী নামক মাতৃ দেবতাকে সারা বিশ্বে মুশরিক পৌত্তলিকরা পূজা করে। এই পৃথিবী/ধরিত্রী দেবতা “أُمَّ الْقُرَى” আরবি সাহিত্যে “সমস্ত নিষ্পত্তির জননী (mother of all settlements)” নামেও পরিচিত।

কুরআনের ৬:৯২ এবং ৪২:৭ নং আয়াতে আল্লাহ “أُمَّ الْقُرَى” এর উপর সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন এবং সতর্কতা শব্দটি অনুবাদেও ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু এমনভাবে যাতে কেউ বুঝতে না পারে যে কেন এই সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল।

অতএব, যারা পৃথিবীতে “سجده” করে যেমনিভাবে আমরা নামাজে করে থাকি তারা আসলে মুশরিক পৌত্তলিকদের মাটির দেবতাকে সিজদা করার “শিরক” করছে।

যাইহোক, আল্লাহর জন্য “سجده” যা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে তা কেবলমাত্র আল্লাহর নির্দেশ পালনের মাধ্যমেই করা হবে যেমন সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র, পাহাড়, গাছ, পশুপাখি এবং মহাবিশ্বের চারপাশের সবকিছু আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করে এবং তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে “سجده” পালন করে আসছে ।

সুতরাং এই আয়াতগুলো “وَالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدَانِ” (55:6), وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْضِ (13:15), ” وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَالأَرْض” (13:15), “وَلِلّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِن دَآبَّةٍ وَالْمَلَآئِكَةُ وَهُمْ لاَ يَسْتَكْبِرُونَ” (16:49), “أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ يَسْجُدُ لَهُ مَن فِي السَّمَاوَاتِ وَمَن فِي الْأَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُومُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَابُّ ” (22:18), “وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ الْقُرْآنُ لَا يَسْجُدُونَ” (84:21), “وَادْخُلُواْ الْبَابَ سُجَّدًا” (7:16
, “وَاسْجُدْ وَاقْتَرِبْ (96:19)”
এবং কুরআনের আরও অনেক আয়াতের আলোকে ও ধ্রুপদী আরবি সাহিত্য এবং প্রাচীন আরবি অভিধানের গবেষণার সাথে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে আরবি/কুরআনের শব্দ “سجد” এবং এর ডেরিভেটিভ যেমন “سجدہ” দ্বারা হাঁটু গেড়ে কপালে মাটিতে ঠেকিয়ে প্রচলিত প্রণামকে বুঝায় না বরং প্রকৃতপক্ষে আরবি/কুরআনিক শব্দ “سجدہ” এর সঠিক অর্থ হল “আনুগত্য করা, অনুসরণ করা, এবং ঝুঁকে পড়া”।
এই প্রবণতা এবং আনুগত্য যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো নির্দেশে বা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো প্রতি যায় তবে তা “سجد الحرام” নামে পরিচিত, যা “المسجد الحرام”-এ উল্কাপিন্ডের কালো পাথরের দিকে মুখ করে, পায়ের ছাপের মূর্তি এবং মূর্তির গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত ঘরের পাথরের দেয়ালের দিকে, অথবা পৌত্তলিক উপাসনালয় কাবার দিকে মুখ করে বিভিন্ন মসজিদে এবং অন্যান্য ধর্মের মন্দিরে, এবং পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় সম্পাদিত হয়। একটি মজার বিষয় যে অনেক হিন্দু মন্দিরও আমাদের মসজিদের মতো পৌত্তলিক উপাসনালয় কাবার দিকে মুখ করে দেখা যায়। মুশরিকদের “চন্দ্র দেবতার” প্রতীক হিসেবে চাঁদের চিহ্ন মিনারের চূড়ায় এবং আমাদের মসজিদের গম্বুজের শীর্ষে দেখা যায় এবং সমস্ত হিন্দু মন্দিরে চন্দ্র দেবতার একই চিহ্ন পাওয়া যায়।

আরবি ব্যাকরণ অনুসারে “مسجد” (মসজিদ) শব্দটি “سَجَدَ” (সা’জাদা) ক্রিয়া হতে একটি ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য (مصدر) যা একই মূল শব্দ “سجد” (সিন জিম দাল) থেকে উদ্ভূত । মসজিদ (“مسجد”) আসলে আরবি শব্দ “منصب” (মানসাব) এর প্রতিশব্দ যেমন উর্দুতে “گدّی” (আসন, পদ বা অবস্থান)। আপনি হয়তো শুনেছেন “گدی نشین” (গদ্দি নশীন), অর্থাৎ যিনি কোনো অংশীদারিত্ব ছাড়াই স্বাধীনভাবে একটি নির্দিষ্ট পদ, আসন বা পদে অধিষ্ঠিত। আরবিতে একে বলা হয় “سجادہ” (সাজাদা), যা বসার জন্য পাটি, কার্পেট বা প্যাড নামেও পরিচিত। অতএব, কোরানিক শব্দ “مسجد” (মসজিদ) এর প্রকৃত অর্থ হল “منصب” (মানসাব), “مسند” (মসনাদ), পদ, অবস্থান এবং কারো স্থান। এটি একটি বিল্ডিং বা জমির মতো জায়গা নয়, এটি কাউকে মনোনীত একটি অবস্থান, যেমন একজন শিক্ষক বা পিতামাতার স্থান যা একই হতে পারে না কিন্তু তাদের নিজস্ব জায়গা ধরে রাখতে পারে, যা একটি “মান্যতার ক্ষেত্র”। নির্দিষ্ট আর্টিকেল “ال” (আল) “المسجد” কে সুনির্দিষ্ট মান্যতার ক্ষেত্রে পরিনত করেছে। এবং “المساجد” হল মসজিদের বহুবচন। যদি আল্লাহর নামের সাথে “المساجد” ব্যবহার করা হয় তবে তাঁর বিস্তৃত দায়িত্ব বা মান্যতার ক্ষেত্রকে কোন ভবনে বন্দী করা যাবে না, বরং সমগ্র বিশ্ব, সমগ্র মহাবিশ্ব এবং প্রকৃতপক্ষে অগণিত মহাবিশ্ব সবই একত্রে আল্লাহর দায়িত্বের ও মান্যতার ক্ষেত্র, যিনি মহাবিশ্বের পালনকর্তা (رب العالمین)।

মসজিদ (مسجد) হল “سجد” বা “سجده” এর একটি মান্যতার ক্ষেত্র, যা আসলে একটি প্রান্তিক অবস্থান বা পদ অথবা এমন একজনের পদ যিনি অধিষ্ঠিত, মালিক বা “سجدہ” পাওয়ার যোগ্য। যদি দায়িত্ব বা মান্যতার এই ক্ষেত্রটি একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারিত হয়, তা আল্লাহর মসজিদ যা অদৃশ্য কারণ আল্লাহ অদৃশ্য। অন্যদিকে যদি মান্যতার ক্ষেত্রটির, অধিকার বা পদ বা “سجدہ” গ্রহনের ক্ষেত্রটি মূর্তির জন্য মনোনীত করা হয় কুরআনে তাকেও “مسجد” (মসজিদ) বলা হয়েছে, এবং তাদের এই মসজিদকে হারম বা অবৈধ বলা হয়েছে। মসজিদ আসলে একটি “منصب” অবস্থান, “مسند” পদ বা মান্যতার ক্ষেত্রের অধিকার ধারণকারী ব্যক্তির আসন। যারা মনে করে যে মূর্তি, পাথর এবং দেখা বা অদেখা মূর্তি তাদের “শাফায়াত” বা পরিত্রাণের জন্য দায়ী এবং তাদের জীবন বিধান প্রদান করে তারা তাদের জন্য “سجده” পালন করে যা তাদের “مسجد”। যারা স্বীকার করে সবকিছুর ব্যাপারে একমাত্র আল্লাহই দ্বায়িত্বশীল তারা এই “منصب” বা “مسند” এর উপর আল্লাহকে নিযুক্ত করে, অর্থাৎ যে অবস্থান, পদ বা আসনকে বলা হয় আল্লাহর মসজিদ, যা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর অধিকার, আল্লাহর অবস্থান, আল্লাহর পদ এবং আল্লাহর আসন। “مسجد” হল আল্লাহর কল্পিত পদবী যার অর্থ আল্লাহর পদ (منصب/مسند)।

৭২:১৮ নং আয়াতের সঠিক উপলব্ধি নিম্নরূপ যেটিতে “الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ” বাক্যাংশটি আনুগত্য, সুপারিশ এবং আরাধনার জন্য আল্লাহর আসন, অবস্থান (منصب) বা পদকে নির্দেশ করে।

وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا (72:18)

And that the positions (“منصب”mansab/”مسند” masnad), seats/posts are designated for Allah alone for submission, so do not render/requisite/call anyone along with Allah. (72:18)

এবং সেই আনুগত্যের পদ (“منصب”মানসাব/”مسند” মসনদ), আসন/ অবস্থানসমুহ একমাত্র আল্লাহর জন্য মনোনীত, তাই আল্লাহর সাথে কাউকে প্রত্যর্পণ / অপরিহার্য করো না/ডেকো না। (৭২:১৮)

সুতরাং সিজদা মানে হাটু গেড়ে মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে প্রণাম করা নয়, বরং সিজদা মানে “আনুগত্য করা, বা অনুসরণ করা। আর মসজিদ শব্দটির অর্থ সিজদার স্থান, যেখানে সিজদা করা হয়। সিজদা অর্থ মান্য করা বা অনুগত হওয়া। এই অনুগত বা মান্য করা যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো হয় তাকে বলা হয় নিষিদ্ধ/ অবৈধ সিজদা। যেখানে এই সিজদার আয়োজন করা হয় তাকে বলা হয় মসজিদুল হারাম বা নিষিদ্ধ/অবৈধ মসজিদ। আর সিজদা অর্থাৎ মান্য করা বা অনুগত হওয়া যদি একমাত্র আল্লাহর জন্য হয় তাহলে এই মসজিদ তথা অনুগত হওয়ার স্থল হবে কাল্পনিক (virtual), এবং অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত যা চার দেয়ালে বন্দী কোন ঘর নয়, কারন আল্লাহকে দেখা যায় না এবং তার সাম্রাজ্য অসীম।

সতর্কীকরণ ঃ এই পেইজটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়।এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা নিজেদের পুরনো বিশ্বাসে বা বাপ দাদার বিশ্বাসে থাকতে চায় তাদের জন্য এই পেইজ উপযুক্ত নয়।
শুভেচ্ছান্তে
আবদুল্লাহিল কাউছার

Source: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0mWJdTJFp2AmrX85upUuz5WNRcTpppnEsco4meN5teJYF4iBhQoee39WALZyZXvRrl&id=100076490634616

কথিত তাশাহুদ।

♦তাশাহুদের বৈঠকে আমরা কি পাঠ করছি আবেগ নয় আল্লাহর দেয়া বিবেক দিয়ে একটু চিন্তা করার অনুরোধ রইলো।

★ কথিত তাশাহুদ।

اَلتَّحِيَّاتُ للهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، اَلسَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ، اَلسَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ।

উচ্চারণ:- আত-তাহিয়্যা-তু লিল্লা-হি অস্বস্বালা-ওয়া-তু অত্বত্বাইয়্যিবা-তু, আসসালা-মু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু অরাহ্‌মাতুল্লা-হি অবারাকা-তুহ্‌, আসসালা-মু আলাইনা অ আলা ইবা-দিল্লা-হিস্ব স্বা-লিহীন, আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু অরাসূলুহ্‌।

অর্থ: “আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত (দোয়া ও অভিবাদন), সালাওয়াত (সালাতসমূহ/অনুগ্রহ প্রার্থনা), তাইয়িবাত (পবিত্রতা)। হে নবী, আপনার উপর সালাম (শান্তি) এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত (দয়া) ও বরকত (সমৃদ্ধি) হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর সালাম (শান্তি) হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া ইলাহ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর বান্দা ও রসূল”।

★তাহিয়্যাত শব্দের মূল শব্দ হচ্ছে حي যার অর্থ জীবিত। অর্থাৎ জীবিত মানুষের জন্য দোয়া ও অভিবাদন কে তাহিয়্যাত বলে । আমরা যে জীবিত মানুষকে সালাম জানাই তা মূলত সালামের মাধ্যমে একে অপরকে অভিবাদন জানাই দোয়া হিসাবে। পবিত্র কুরআনে তাহিয়্যাত শব্দটি মোট ছয়টি আয়াতে এসেছে এবং এই ছয়টি আয়াতেই জীবিত মানুষকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে আল্লাহ্ কে নয়। দেখুন নিচের আয়াত গুলিতে কি বলা হয়েছে —

وَاِذَا حُيِّيْتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوْا بِاَحْسَنَ مِنْهَاۤ اَوْ رُدُّوْهَا ؕ اِنَّ اللّٰهَ كَانَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ حَسِيْبًا
আর যখন তোমাদেরকে কোন অভিবাদন জানানো হয় তখন (তার জবাবে) তোমরা তার চেয়ে আরো ভাল অভিবাদন জানাবে কিংবা (অন্ততপক্ষে) একই অভিবাদন ফিরিয়ে দেবে। আল্লাহ তো সবকিছুরই হিসাব গ্রহণকারী। (আন নিসা ৪:৮৬)
فَاِذَا دَخَلْتُمْ بُيُوْتًا فَسَلِّمُوْا عَلٰۤي اَنْفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِنْدِ اللّٰهِ مُبٰرَكَةً طَيِّبَةً ؕ كَذٰلِكَ يُبَيِّنُ اللّٰهُ لَكُمُ الْاٰيٰتِ لَعَلَّكُمْ تَعْقِلُوْنَ
তবে যখন কোন ঘরে প্রবেশ করবে তখন (ঘরে অবস্থানকারী) তোমাদের লোকদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে বরকতময় পবিত্র অভিবাদনস্বরূপ সালাম দেবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর বিধানসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা বুঝতে পার। (আন-নূর ২৪:৬১)
اُولٰٓئِكَ يُجْزَوْنَ الْغُرْفَةَ بِمَا صَبَرُوْا وَيُلَقَّوْنَ فِيْهَا تَحِيَّةً وَّسَلٰمًا ۙ
এমন লোকদেরকে তাদের ধৈর্যের প্রতিদানে (জান্নাতে) কক্ষ দেওয়া হবে এবং সেখানে তাদেরকে অভিবাদন ও সালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হবে। (আল-ফুরকান ২৫:৭৫)
دَعْوٰىهُمْ فِيْهَا سُبْحٰنَكَ اللّٰهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيْهَا سَلٰمٌ ۚ وَاٰخِرُ دَعْوٰىهُمْ اَنِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
সেখানে তাদের দোয়া হবে, “হে আল্লাহ! তুমি মহিয়ান”; সেখানে তাদের (পারস্পরিক) অভিবাদন হবে, “সালাম (শান্তি)” এবং তাদের দোয়া শেষ হবে এই বলে যে, সকল প্রশংসা আল্লার, যিনি নিখিল জগতের প্রভু।(ইউনুস ১০:১০)
وَاُدْخِلَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا بِاِذْنِ رَبِّهِمْ ؕ تَحِيَّتُهُمْ فِيْهَا سَلٰمٌ
আর যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে তাদের জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে, তারা তাতে তাদের রবের অনুমতিক্রমে স্থায়ী হবে। তথায় তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম’।(ইবরাহীম ১৪:২৩)
تَحِيَّتُهُمْ يَوْمَ يَلْقَوْنَهٗ سَلٰمٌ ۖۚ وَاَعَدَّ لَهُمْ اَجْرًا كَرِيْمًا
যেদিন তারা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে সেদিন তাদের অভিবাদন হবে: ‘সালাম’। আর তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন সম্মানজনক প্রতিদান।(আল-আহযাব ৩৩:৪৪)

♦ উপরের আয়াত গুলির আলোকে এটা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে তাহিয়্যাত (৪:৮৬) বলতে আল্লাহ্ জীবিত মানুষকে সালাম জানানোকে বুঝিয়েছেন অর্থাৎ পরস্পরকে দোয়ার মাধ্যমে অভিবাদন জানানো কে বুঝিয়েছেন। تَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَٰمٌۚ “তাহিয়্যাতুহুম ফীহা ছালামুন” (১০:১০, ১৪:২৩)। মানুষের জন্যই তাহিয়্যাত,আল্লাহর জন্য হামদ। تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ ٱللَّهِ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাহিয়্যাত (সালাম ও অভিবাদন) (২৪:৬১), কিন্তু আল্লাহকে তাহিয়্যাত নয়। লক্ষ্য করুন সূরা আস- সাফফাতের ১৮১ নাম্বার আয়াতে রাসূলদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ মানুষের ক্ষেত্রে সালাম শব্দ ব্যহার করা হয়েছে। এর পরের আয়াতে আল্লাহ্ জন্য হামদ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلْمُرْسَلِينَ
আর রাসূলদের প্রতি সালাম।
وَٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ
আর সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর জন্য।(আস- সাফফাত ৩৭:১৮১-৮২)

★ কেউ কেউ আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত বলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেন যে, আল কুরআনে আল্লাহকে কর্জে হাসানাহ বা উত্তম ঋণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ আল্লাহকে ঋণ দেয়া যায় না। তেমনি আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত বলতে দোষ কোথায়? কুরআনের আয়াতসমূহ থেকে স্পষ্ট যে, কর্জে হাসানাহর ক্ষেত্রে আসলে আল্লাহ ঋণ গ্রহণ করেন একটি রূপক অর্থে এবং তা হলো রসূলের মাধ্যমেই তা সংগৃহীত ও বণ্টিত হয়, মানুষের মধ্যে আল্লাহ প্রদত্ত অর্থনৈতিক বণ্টন ব্যবস্থার বাস্তবায়নের জন্য। কুরআনের কোথাও রূপক অর্থেও আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত শব্দটি ব্যবহার হয়নি। সুতরাং তাহিয়্যাতের প্রসঙ্গে কুরআন থেকে যে সূত্র পাওয়া যায় সেটাই এক্ষেত্রে চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হবে, আর তা হলো তাহিয়্যাত হচ্ছে সালামের মাধ্যমে অভিবাদন, যা মানুষের জন্য প্রযোজ্য আল্লাহর জন্য নয়, আল্লাহর জন্য হচ্ছে হামদ যা আল্লাহ্ কুরআনের শুরুতেই বলে দিয়েছেন।
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰہِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۙ
‘আলহামদুলিল্লা-হি রাব্বিল ‘আ-লামীন।

সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব।(হামদ ১:২)

♦ এবার আসুন প্রচলিত হাদিসের মাধ্যমে আমরা তাশাহুদ নামে কি পাঠ করছি সেটা দেখি।
اَلتَّحِيَّاتُ ِللهِ

আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি

অর্থ: আল্লাহর জন্য তাহিয়্যাত (অর্থাৎ আল্লাহর জন্য সালাম (দোয়া) ও অভিবাদন)

♦ চিন্তা করুন যে আল্লাহ্ তাহিয়্যাত শব্দ দিয়ে মানুষের জন্য দোয়া ও অভিবাদন নির্ধারন করেছেন (৪:৮৬) সেই তাহিয়্যাত কি আল্লাহ্ তাঁর জন্য নির্ধারন করতে পারেন? আল্লাহ্ কি মানুষের দোয়ার মুখাপেক্ষী? মা’আ-যাল্লাহ্। এর মাধ্যমে মানুষের জন্য তাহিয়্যাতে আল্লাহ্কে শরিক করা হয়েছে যা সুস্পষ্ট শিরক।

♦ প্রচলিত এই তাশাহুদের আরেকটি আপত্তির দিক হলো, এতে রসূলকে সম্বোধন করে বলা হয়, “ইয়া আইয়ুহান্নাবিয়্যু” (হে নবী)। অথচ আমরা এখন তা বলতে পারি না, কারণ রসূল আমাদের মধ্যে উপস্থিত নেই, জীবিত নেই। মৃত ব্যক্তিকে সম্বোধন করে কোনো কথা বলা যেতে পারে না।আল্লাহর রাসূল কি এমন তাশাহুদ শিক্ষা দিতে পারে যে তাশাহুদের শব্দ সাহাবিরা নিজেই পরিবর্তন করতে পারে? অথবা জীবিত থাকা অবস্হায় পড়লে শুদ্ধ হবে আর মৃত অবস্হায় পড়লে অসুদ্ধ হবে? এই পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য রাসূল কেন বলে গেলেন না যে আমি জীবিত অবস্হায় তোমরা এই শব্দ এই ভাবে পড়বে আর আমার মৃত্যুর পর এই শব্দ এই ভাবে পড়বে অথবা মৃত্যুর পরও এই ভাবে পড়লে সমস্যা নাই ? এই না বলে যাওয়াটা কি ত্রুটি নয়? এই না বলে যাওয়ার করনেইতো রাসূলের মৃত্যুর পর তাশাহুদ নিয়ে সাহাবীদের মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে, তা নয় কি? আল্লাহ্ কি রাসূলের কথিত হাদিসের মাধ্যমে এমন বিধান দিতে পারে, পরে রাসূলের মৃত্যুর পর সাহাবীরা দুই দলে বিভক্ত হবে? একদল শব্দ পরিবর্তন করে পড়বে এটা কি বিশ্বাস যোগ্য? দেখুন তথাকথিত মুহাদ্দিসরা তাদের বইতে কি লিখে রেখেছেন?

তাশাহহুদ সম্পর্কিত সকল ছহীহ মরফূ হাদীছে রাসূল (ছাঃ)-কে সম্বোধন সূচক ‘আইয়ুহান্নাবী’ শব্দ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পরে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাঃ) প্রমুখ কতিপয় ছাহাবী ‘আইয়ুহান্নাবী’-এর পরিবর্তে ‘আলান্নাবী’ বলতে থাকেন। ইবনু মাসউদ বলেনঃ আমরা উক্ত শব্দে অর্থাৎ أَيُّهَا النَّبِيُّ হে নাবী! সম্বোধন সূচক শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে তাশাহহুদ পাঠ করতাম যখন তিনি আমাদের মাঝে বিদ্যমান ছিলেন, কিন্তু যখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন তখন আমরা أَيُّهَا النَّبِيُّ এর পরিবর্তে على النبى এর অর্থাৎ নাবীর উপর বলতাম। অথচ সকল ছাহাবী, তাবেঈন, মুহাদ্দেছীন, ফুক্বাহা পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ পড়েছেন। এই মতভেদের কারণ হ’ল এই যে, রাসূলের জীবদ্দশায় তাঁকে সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলা গেলেও তাঁর মৃত্যুর পরে তো আর তাঁকে ঐভাবে সম্বোধন করা যায় না। কেননা সরাসরি এরূপ গায়েবী সম্বোধন কেবল আল্লাহকেই করা যায়। মৃত্যুর পরে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে এভাবে সম্বোধন করলে তাঁকে আল্লাহ সাব্যস্ত করা হয়ে যায়। সেকারণ কিছু সংখ্যক ছাহাবী ‘আলান্নাবী’ অর্থাৎ ‘নবীর উপরে’ বলতে থাকেন।

পক্ষান্তরে অন্য সকল ছাহাবী পূর্বের ন্যায় ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতে থাকেন। ত্বীবী (মৃ: ৭৪৩ হিঃ) বলেন, এটা এজন্য যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁদেরকে উক্ত শব্দেই ‘তাশাহহুদ’ শিক্ষা দিয়েছিলেন। তার কোন অংশ তাঁর মৃত্যুর পরে পরিবর্তন করতে বলে যাননি। অতএব ছাহাবায়ে কেরাম উক্ত শব্দ পরিবর্তনে রাজী হননি। ছাহেবে মির‘আত বলেন, জীবিত-মৃত কিংবা উপস্থিতি-অনুপস্থিতির বিষয়টি ধর্তব্য নয়। কেননা স্বীয় জীবদ্দশায়ও তিনি বহু সময় ছাহাবীদের থেকে দূরে সফরে বা জিহাদের ময়দানে থাকতেন। তবুও তারা তাশাহহুদে নবীকে উক্ত সম্বোধন করে ‘আইয়ুহান্নাবী’ বলতেন। তারা তাঁর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে উক্ত সম্বোধনে কোন হেরফের করতেন না। তাছাড়া বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্য ‘খাছ’ বিষয়াবলীর (من خصائصه) অন্তর্ভুক্ত। এটা স্রেফ তাশাহহুদের মধ্যেই পড়া যাবে, অন্য সময় নয়।

উল্লেখ্য যে, এই সম্বোধনের মধ্যে কবর পূজারীদের জন্য কোন সুযোগ নেই। তারা এই হাদীছের দ্বারা রাসূল (ছাঃ)-কে সর্বত্র হাযির-নাযির প্রমাণ করতে চায় ও মনোবাসনা পূর্ণ করার জন্য তাঁকে ‘অসীলা’ হিসাবে গ্রহণ করতে চায়। এটা পরিষ্কারভাবে ‘শিরকে আকবর’ বা বড় শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (তথ্য সূত্র ছালাতুর রাসূল সাঃ, আসাদুল্লাহ্ গালিব, রাসূল সাঃ এর সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি, নাছির উদ্দিন আলবানী)

♦কথিত দুরূদে ইবরাহীম।

اَللّهُمَّ صَلِّ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدُ، اَللّهُمَّ بَارِكْ عَلى مُحَمَّدٍ وَّعَلى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ।

উচ্চারণ:- আল্লা-হুম্মা স্বাল্লি আলা মুহাম্মাদিঁউঅআলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা স্বাল্লাইতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকাহামীদুম মাজীদ। আল্লা-হুম্মা বা-রিক আলা মুহাম্মাদিঁউঅ আলা আ-লি মুহাম্মাদ, কামা বা-রাকতা আলা ইবরা-হীমা অ আলা আ-লি ইবরা-হীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজীদ।

অর্থ:- হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।

হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ কর, যেমন তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর বর্কত বর্ষণ করেছ। নিশ্চয় তুমি প্রশংসিত গৌরবান্বিত।

♦ প্রথম কথা হচ্ছে কথিত তাশাহুদ ও দুরূদ কুরআনে নেই আছে হাদিসে। প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কুরআন পাঠ করে সালাত আদায় করতে বলেছেন ফলে রাসূল কি করে কুরআনের বিরুদ্ধে গিয়ে সালাতে এই তাশাহুদ ও দুরূদ পড়তে বলবে? দেখুন নিচের আয়াত গুলিতে কি বলা হচ্ছে —-

إِنَّ ٱلصَّلَوٰةَ كَانَتْ عَلَى ٱلْمُؤْمِنِينَ كِتَٰبًا مَّوْقُوتًا
নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে কিতাব (পাঠ)*।(আন-নিসা ৪:১০৩)

  • রাসূলের সময় কুরআন ছাড়া আর কোন বই ছিলনা। ফলে এই আয়াত প্রমান করে যে রাসূল সালাতে সব কিছু কুরআন থেকে পাঠ করতেন।

أَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ لِدُلُوكِ ٱلشَّمْسِ إِلَىٰ غَسَقِ ٱلَّيْلِ وَقُرْءَانَ ٱلْفَجْرِۖ إِنَّ قُرْءَانَ ٱلْفَجْرِ كَانَ مَشْهُودًا
সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করবে এবং ফজরে (অধিক) কুরআন পাঠ করবে। ফজরের কুরআন পাঠ অনুধাবনে সহায়ক।
وَمِنَ ٱلَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِۦ
আর রাত্রির কিছু অংশে তা (কুরআন) দিয়ে তাহাজ্জুদ (সালাত) পড়।(ইসরা ১৭:৭৮-৭৯)

اُتۡلُ مَاۤ اُوۡحِیَ اِلَیۡكَ مِنَ الۡكِتٰبِ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ ؕ اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنۡهٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَالۡمُنۡكَرِ ؕ وَلَذِكۡرُ اللّٰهِ اَكۡبَرُ ؕ وَاللّٰهُ یَعۡلَمُ مَا تَصۡنَعُوۡنَ
তোমার কাছে যে কিতাব (কোরআন) নাযিল করা হয়েছে তা থেকে পাঠ করে সালাত কায়েম কর। নিশ্চয়ই নামায অশ্লীলতা ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণই সবচেয়ে বড়। আর তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।(আল-আনকাবূত ২৯:৪৫)
اِنَّ الَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ كِتٰبَ اللّٰهِ وَاَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاَنْفَقُوْا مِمَّا رَزَقْنٰهُمْ سِرًّا وَّعَلَانِيَةً يَّرْجُوْنَ تِجَارَةً لَّنْ تَبُوْرَ ۙ
যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না।(ফাতির ৩৫:২৯)

★ সালাতে কথিত দুরূদে ইবরাহীমে নবী নাকি এই ভাবে দোয়া করতেন “হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর রহ্‌মত বর্ষণ কর” এই ভাবে নিজের নাম নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করা কি বিনয়ের মধ্যে পরে? অথচ আল্লাহ্ বিনয়ের সাথে সালাতে দাঁড়াতে বলেছেন (২:২৩৮) ফলে আল্লাহ্ কি বিনয় বহির্ভূত এই ভাবে নবীকে নিজের নাম নিয়ে দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? কুরআনে কি এর কোন দৃষ্টান্ত আছে? নবী বাদ দিন কোন সাধারন মানুষ কি নিজের নাম নিয়ে আল্লাহর কাছে এই ভাবে দোয়া করে? কুরআনের অসংখ্য আয়াতে নবীরা নিজের জন্য দোয়া করতেন ‘আমাকে’ শব্দ দিয়ে যা আকুতি ও বিনয়ের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এমন কি স্বয়ং আল্লাহ্ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে এই ভাবে দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন।

وَقُل رَّبِّ أَدْخِلْنِى مُدْخَلَ صِدْقٍ وَأَخْرِجْنِى مُخْرَجَ صِدْقٍ وَٱجْعَل لِّى مِن لَّدُنكَ سُلْطَٰنًا نَّصِيرًا
বল(মুহাম্মদ), হে আমার রব! আমাকে দাখিল কর সত্যরূপে এবং আমাকে বের কর সত্যরূপে এবং দান কর আমাকে নিজের কাছ থেকে রাষ্ট্রীয় সাহায্য।(আল-ইসরা ১৭:৮০)
فَتَقَبَّلَہَا رَبُّہَا بِقَبُوۡلٍ حَسَنٍ وَّ اَنۡۢبَتَہَا نَبَاتًا حَسَنًا ۙ وَّ کَفَّلَہَا زَکَرِیَّا ۚؕ کُلَّمَا دَخَلَ عَلَیۡہَا زَکَرِیَّا الۡمِحۡرَابَ ۙ وَجَدَ عِنۡدَہَا رِزۡقًا ۚ قَالَ یٰمَرۡیَمُ اَنّٰی لَکِ ہٰذَا ؕ قَالَتۡ ہُوَ مِنۡ عِنۡدِ اللّٰہِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ یَرۡزُقُ مَنۡ یَّشَآءُ بِغَیۡرِ حِسَابٍ ﴿۳۷﴾
অতঃপর তার রব তাকে(মারিয়াম কে) উত্তমভাবে কবুল করলেন এবং তাকে উত্তমভাবে গড়ে তুললেন। আর তাকে যাকারিয়্যার দায়িত্বে দিলেন। যখনই যাকারিয়্যা তার কাছে তার কক্ষে প্রবেশ করত, তখনই তার নিকট খাদ্যসামগ্রী পেত। সে বলত, ‘হে মারইয়াম, কোথা থেকে তোমার জন্য এটি’? সে বলত, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে। নিশ্চয় আল্লাহ যাকে চান বিনা হিসাবে রিয্ক দান করেন’।
ہُنَالِکَ دَعَا زَکَرِیَّا رَبَّہٗ ۚ قَالَ رَبِّ ہَبۡ لِیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ ذُرِّیَّۃً طَیِّبَۃً ۚ اِنَّکَ سَمِیۡعُ الدُّعَآءِ ﴿۳۸﴾
সেখানে যাকারিয়্যা তার রবের কাছে প্রার্থনা করেছিল, সে বলল, ‘হে আমর রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’।(আলে-ইমরান ৩:৩৭-৩৮)
وَزَكَرِيَّآ إِذْ نَادَىٰ رَبَّهُۥ رَبِّ لَا تَذَرْنِى فَرْدًا وَأَنتَ خَيْرُ ٱلْوَٰرِثِينَ
আর স্মরণ কর যাকারিয়্যার কথা, যখন সে তার রবকে আহবান করে বলেছিল, ‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, তুমি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী’।
فَٱسْتَجَبْنَا لَهُۥ وَوَهَبْنَا لَهُۥ يَحْيَىٰ وَأَصْلَحْنَا لَهُۥ زَوْجَهُۥٓۚ إِنَّهُمْ كَانُوا۟ يُسَٰرِعُونَ فِى ٱلْخَيْرَٰتِ وَيَدْعُونَنَا رَغَبًا وَرَهَبًاۖ وَكَانُوا۟ لَنَا خَٰشِعِينَ
অতঃপর আমি তার আহবানে সাড়া দিয়েছিলাম এবং তাকে দান করেছিলাম ইয়াহইয়া। আর তার জন্য তার স্ত্রীকে উপযোগী করেছিলাম। তারা সৎকাজে প্রতিযোগিতা করত। আর আমাকে আশা ও ভীতি সহকারে ডাকত। আর তারা ছিল আমার নিকট বিনয়ী।(আল-আম্বিয়া ২১:৮৯-৯০)

***আল্লাহ্ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে সালামুন আলা ইবরাহীমের আদর্শ অনুসরণ করতে বলেছেন। দেখুন সালামুন আলা ইবরাহীম কি ভাবে আল্লাহর নিকট দোয়া করেছিলেন —

رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।(আল-বাকারাহ ২:১২৮)

★ এবার দেখুন কথিত মানব রচিত হাদিসে কি বলা হচ্ছে? এই দুরূদ যে মানুষের তৈরি রাসূলের নয় তা সুস্পষ্ট।

তাশাহহুদের পর নবী মুবাশ্‌শির (সাঃ) নিজের উপর দরুদ পাঠ করতেন। (আহমাদ, মুসনাদ ৫/৩৭৪, হাকেম, মুস্তাদরাক)(তথ্য সূত্র স্বলাতে মুবাশশির, আব্দুল হামিদ ফাইযী)

★ এরপর কথিত দুরূদে বলা হচ্ছে “তুমি ইবরাহীম ও তাঁর বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ করেছ”। সালামুন আলা ইবরাহীম এর পিতা ছিল মুশরিক। প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কি তার উপরও বরকত নাজিল করেছিলেন? আবার বলা হচ্ছে “হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ ও তাঁর বংশধরের উপর বরকত বর্ষণ কর”। ইতিহাস বলে আবু লাহাব ও আবু তালিব ছিল রাসূলের আপন চাচা এবং তারা উভয় মুশরিক অবস্থায় মারা যায়। তার মানে তথিত দুরূদের মাধ্যমে আমরা আবু লাহাব ও আবু তালিব উভয় এর উপরও আল্লাহর বরকত বর্ষণের দোয়া করছি, তা নয়কি? অথচ কুরআনের ১১১ নাম্বার সূরার নাম করনই করা হয়েছে ‘লাহাব’। এই সূরা একনম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলেন, تَبَّتْ يَدَآ أَبِى لَهَبٍ وَتَبَّ( আবূ লাহাবের হাত দু‘টো ধ্বংস হোক, ধ্বংস হোক সে নিজে)। ফলে এটি যে সুস্পষ্ট কুরআন বিরোধী কুফরী দুরূদ তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।

★ সালামুন আলা ইবরাহীম তাঁর বংশধরের মধ্য থেকে মক্কাতে একজন রাসূল পাঠানোর জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিল।আল্লাহ্ তার প্রার্থনা কবুল করেছিল। ফলে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সালামুন আলাল মুরছালিন) ছিল সালামুন আলা ইবরাহীম এর বংশধর। ফলে আল্লাহর পক্ষে কথিত দুরূদের মাধ্যমে কি ভাবে বলা সম্ভব যে মুহাম্মদের বংশের উপর বরকত বর্ষনের দোয়া কর? অথচ তিনি মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে পাঠিয়েছেন সালামুন আলা ইবরাহীম এর বংশধরের মধ্য থেকে। ফলে রাসূলের বংশধরের প্রসঙ্গ আসা কি অবান্তর নয়?এটা কি কুরআন বিরোধী নয়? সুতরাং এই দুরূদ যে অবান্তর লাহওয়াল হাদিস দিয়ে বানানো হয়েছে তা দিবালোকের মতো পরিস্কার।

وَإِذْ يَرْفَعُ إِبْرَٰهِۦمُ ٱلْقَوَاعِدَ مِنَ ٱلْبَيْتِ وَإِسْمَٰعِيلُ رَبَّنَا تَقَبَّلْ مِنَّآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ
আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীম ও ইসমাঈল কাবার ভিত্গুলো উঠাচ্ছিল (এবং বলছিল,) ‘হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’।
رَبَّنَا وَٱجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِن ذُرِّيَّتِنَآ أُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَآۖ إِنَّكَ أَنتَ ٱلتَّوَّابُ ٱلرَّحِيمُ
‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।
رَبَّنَا وَٱبْعَثْ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتِكَ وَيُعَلِّمُهُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُزَكِّيهِمْۚ إِنَّكَ أَنتَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْحَكِيمُ
‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’।
كَمَآ أَرْسَلْنَا فِيكُمْ رَسُولًا مِّنكُمْ يَتْلُوا۟ عَلَيْكُمْ ءَايَٰتِنَا وَيُزَكِّيكُمْ وَيُعَلِّمُكُمُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحِكْمَةَ وَيُعَلِّمُكُم مَّا لَمْ تَكُونُوا۟ تَعْلَمُونَ
যেভাবে আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।(আল-বাকারাহ ২:১২৭-১২৯,১৫১)

★ ইবাদত অর্থাৎ আদেশ নিষেধ পালন করতে হবে একমাত্র আল্লাহর। সালাত হচ্ছে একটি ইবাদত যা আল্লাহ্ শুধু তাঁর স্মরণার্থে কায়েম করতে বলেছেন। ফলে কুরআন বহির্ভুত কোন নির্দেশের আলোকে সালাতে কোন মানুষের নাম নিয়ে তাকে স্মরন করার অর্থ হচ্ছে আল্লাহকে স্মরণ করার পাশাপাশি ঐ মানুষকে স্মরন করা যা সুস্পষ্ট শিরক। অপর দিকে কথিত দুরূদে আল্লাহ্ কি তথাকথিত হাদিসের মাধ্যমে শুধুমাত্র মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) এর জন্য মুমিনদের প্রতি দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? এতে কি রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য সূচিত হয় না? অথচ আল্লাহ্ মুমিনদেরকে রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য করতে নিষেধ করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে যে আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনে মুমিনদেরকে রাসূলদের মধ্যে প্রার্থক্য সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছেন, সে আল্লাহ্ কি শুধু মাত্র একজন রাসূলের জন্য মুমিনদেরকে প্রার্থক্য সৃষ্টিকারী দোয়ার নির্দেশ দিতে পারে? তথাকথিত মুহাদ্দিস সাহেবরা প্রচলিত হাদিসকে বলছেন ওহী, প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ কি পরস্পর বিরোধী ওহী নাযিল করতে পারেন (৪:৮২)?

مَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنۡ یُّؤۡتِیَهُ اللّٰهُ الۡكِتٰبَ وَالۡحُكۡمَ وَالنُّبُوَّةَ ثُمَّ یَقُوۡلَ لِلنَّاسِ كُوۡنُوۡا عِبَادًا لِّیۡ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ وَلٰكِنۡ كُوۡنُوۡا رَبّٰنِیّٖنَ بِمَا كُنۡتُمۡ تُعَلِّمُوۡنَ الۡكِتٰبَ وَبِمَا كُنۡتُمۡ تَدۡرُسُوۡنَ ۙ
কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার উপাসক হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’।(আলি ‘ইমরান ৩:৭৯)*

*যদি তাই হয় তবে কিতাব বহির্ভুত নির্দেশ হিসাবে নবী কি করে বলতে পারে যে সালাতে আমার জন্য দুরূদ পাঠ করো? এটা কি নবীর নির্দেশ নয়? এই নির্দেশতো নবীর নেতা বা রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে প্রয়োজনের তাগিতে সাময়িক কোন নির্দেশ নয়, এই নির্দেশতো মুসলিমরা ইবাদত হিসাবে স্হায়ী নির্দেশ হিসাবে পালন করে। ইবাদত হিসাবে স্হায়ী ভাবে কোন মানুষের নির্দেশ পালন করাকি তার ইবাদত করা নয়? অথচ আল্লাহ্ বলেছেন ‘তোমরা রববানী হও’ অর্থাৎ আল্লাহর নির্দেশ পালনকারী হও। কারন নির্দেশ দাতা একমাত্র আল্লাহ্ (১২:৪০) আল্লাহর বিধিবদ্ধ নির্দেশ (৪২:১৩) আছে কুরআনে আর কোথাও নেই। ফলে কুরআন বহির্ভুত এই সমস্ত বিধান কে বিধিবদ্ধ বিধান হিসাবে পালন করা সম্পূর্ণ কুফরী।কারন বিধিবদ্ধ কিতাব হচ্ছে কুরআন। এর সাথে অন্য কিতাবের বিধানকে বিধিবদ্ধ কিতাবের বিধান হিসাবে মানার অর্থ হচ্ছে কুরআনের সাথে শরিক করা।

إذا صلى أحدكم فليبدأ بتحميد ربه جل وعز والثناء عليه ثم يصلي وفي رواية: ليصل) على النبي صلى الله عليه وسلم ثم يدعو بما شاء
তোমাদের কেউ ছালাত আদায় করলে প্ৰথমে যেন আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান বর্ণনা করে। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি ছালাত পাঠ করে। অতঃপর যা ইচ্ছা দু’আ করবে।(আহমাদ, আবু দাউদ, ইবনু খুযাইমাহ। তথ্য সূত্র ‘সালাত সম্পাদনের পদ্ধতি’ নাছির উদ্দিন আলবানী)

اِنَّنِیۡۤ اَنَا اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعۡبُدۡنِیۡ ۙ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكۡرِیۡ
আমি আল্লাহ! আমি ছাড়া কোন ইলাহ্ নেই; অতএব আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।(ত্ব-হা ২০:১৪)
قُلۡ اِنَّ صَلَاتِیۡ وَنُسُكِیۡ وَمَحۡیَایَ وَمَمَاتِیۡ لِلّٰهِ رَبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ۙ
বল, ‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’।(আল-আন‘আম ৬:১৬২)

***আল্লাহ্ রাসূলগণের মধ্যে কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহ্ মানুষকে নবীনদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতে নিষেধ করেছেন,যার কারনে মুমিনরা নবীনদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করতোনা।

تِلْكَ ٱلرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍۘ مِّنْهُم مَّن كَلَّمَ ٱللَّهُۖ وَرَفَعَ بَعْضَهُمْ دَرَجَٰتٍۚ وَءَاتَيْنَا عِيسَى ٱبْنَ مَرْيَمَ ٱلْبَيِّنَٰتِ وَأَيَّدْنَٰهُ بِرُوحِ ٱلْقُدُسِۗ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلَ ٱلَّذِينَ مِنۢ بَعْدِهِم مِّنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَٰتُ وَلَٰكِنِ ٱخْتَلَفُوا۟ فَمِنْهُم مَّنْ ءَامَنَ وَمِنْهُم مَّن كَفَرَۚ وَلَوْ شَآءَ ٱللَّهُ مَا ٱقْتَتَلُوا۟ وَلَٰكِنَّ ٱللَّهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيدُ
ঐ রাসূলগণ, আমি তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি, তাদের মধ্যে কারো সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং কারো কারো মর্যাদা উঁচু করেছেন। আর আমি ঈসা ইবনে মারয়ামকে দিয়েছি সুস্পষ্ট প্রমাণাদি এবং আমি তাকে শক্তিশালী করেছি রূহুল কুদুস এর মাধ্যমে। আর যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তাদের পরবর্তীরা লড়াই করত না, তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণসমূহ আসার পর। কিন্তু তারা মতবিরোধ করেছে। ফলে তাদের মধ্যে কেউ ঈমান এনেছে, আর তাদের কেউ কুফরী করেছে। আর আল্লাহ যদি চাইতেন, তাহলে তারা লড়াই করত না। কিন্তু আল্লাহ যা চান, তা করেন।(আল-বাকারাহ ২:২৫৩)
وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَلَمْ يُفَرِّقُوْا بَيْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ اُولٰٓئِكَ سَوْفَ يُؤْتِيْهِمْ اُجُوْرَهُمْ ؕ وَكَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِيْمًا
আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমান এনেছে এবং তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করেনি, তাদেরকে অচিরেই তিনি তাদের প্রতিদান দিবেন এবং আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আন নিসা ৪:১৫২)
قُلْ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلَيْنَا وَمَاۤ اُنْزِلَ عَلٰۤي اِبْرٰهِيْمَ وَاِسْمٰعِيْلَ وَاِسْحٰقَ وَيَعْقُوْبَ وَالْاَسْبَاطِ وَمَاۤ اُوْتِيَ مُوْسٰي وَعِيْسٰي وَالنَّبِيُّوْنَ مِنْ رَّبِّهِمْ ۪ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ اَحَدٍ مِّنْهُمْ ۫ وَنَحْنُ لَهٗ مُسْلِمُوْنَ

বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর, আর যা নাযিল হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর। আর যা দেয়া হয়েছে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে তাদের রবের পক্ষ থেকে, আমরা তাদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না এবং আমরা তারই প্রতি আত্মসমর্পণকারী’। (আলে-ইমরান ৩:৮৪)
اِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيُرِيْدُوْنَ اَنْ يُّفَرِّقُوْا بَيْنَ اللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّنَكْفُرُ بِبَعْضٍ ۙ وَّيُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّتَّخِذُوْا بَيْنَ ذٰلِكَ سَبِيْلًا ۙ
নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায় ।
اُولٰٓئِكَ هُمُ الْكٰفِرُوْنَ حَقًّا ۚ وَاَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِيْنَ عَذَابًا مُّهِيْنًا
তারাই প্রকৃত কাফির এবং আমি কাফিরদের জন্য প্রস্তুত করেছি অপমানকর আযাব।(আন নিসা ৪:১৫০-১৫১)

♦ আল্লাহর পক্ষে পরস্পর বিরোধী ওহী নাযিল করা সম্ভব নয়, তার প্রমান নিচের আয়াতটি। কারন কুরআনে পরস্পর বিরোধী কোন ওহী নেই। ফলে আল্লাহর পক্ষে কুরআন বিরোধী ওহী হাদিসের মাধ্যমে নাযিল করার প্রশ্নই আসেনা। ফলে কথিত দুরূদে ইবরাহীম যে মানব সৃষ্ট তা সুস্পষ্ট।

أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلْقُرْءَانَۚ وَلَوْ كَانَ مِنْ عِندِ غَيْرِ ٱللَّهِ لَوَجَدُوا۟ فِيهِ ٱخْتِلَٰفًا كَثِيرًا
তারা কি কুরআন নিয়ে গবেষণা করে না? আর যদি তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো পক্ষ থেকে হত, তবে অবশ্যই তারা এতে অনেক বৈপরীত্য দেখতে পেত।(আন-নিসা ৪:৮২)

Source fb: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid02wTFMix55pNu3E1wz9NY4jgB33v7UrNwzZAauJBr7b1a8XX6hUfWuadirjaSDXAnvl&id=100003737428249

Article -1mh.n

……………سلم عليكم.. Moktar Hussain ……………
আজকের আলোচনার বিষয় প্রচলিত আল-কোর আনের অনুবাদ সম্পর্কে।
বাজারের প্রতিটি আল-কোরআননের অনুবাদই প্রতিষ্ঠিত মুনাফিক্ব, কপট, ভণ্ড তথা কথিত সন্ত্রাসীদের লিডার মোল্লাগণ দ্বারা প্রভাবিত। এর মূলে আছে আরববাসীরা যা আল্লাহ নিজেই কুরআনে ঘোষনা দিয়েছে। এব্যাপারে মহাগ্রন্হ আল-কোরআনের,
9(31)
ٱتَّخَذُوٓا۟ أَحْبَارَهُمْ وَرُهْبَٰنَهُمْ أَرْبَابًا مِّن دُونِ ٱللَّهِ وَٱلْمَسِيحَ ٱبْنَ مَرْيَمَ وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوٓا۟ إِلَٰهًا وَٰحِدًاۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۚ سُبْحَٰنَهُۥ عَمَّا يُشْرِكُونَ
আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা তাদের ‘আলিম-পন্ডিত আর দরবেশদেরকে প্রতিপালক বানিয়ে নিয়েছে; আর মারইয়াম-পুত্র মাসীহকেও। অথচ তাদেরকে এক আইনদাতা ব্যতীত (অন্যের) ‘দাসত্ব করার আদেশ দেয়া হয়নি। তিনি ব্যতীত সত্যিকারের কোন আইনদাতা নেই, পবিত্রতা আর মহিমা তাঁরই, (বহু ঊর্ধ্বে তিনি) তারা যাদেরকে (তাঁর) অংশীদার গণ্য করে তাত্থেকে।
9(97)
ٱلْأَعْرَابُ أَشَدُّ كُفْرًا وَنِفَاقًا وَأَجْدَرُ أَلَّا يَعْلَمُوا۟ حُدُودَ مَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِۦۗ وَٱللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
আরববাসীরা কুফুরী আর মুনাফিকীতে সবচেয়ে কঠোর, আর আল্লাহ তাঁর রসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন তার সীমারেখার ব্যাপারে অজ্ঞ থাকার তারা অধিক উপযুক্ত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, মহা বৈজ্ঞানিক ।
9(98)
وَمِنَ ٱلْأَعْرَابِ مَن يَتَّخِذُ مَا يُنفِقُ مَغْرَمًا وَيَتَرَبَّصُ بِكُمُ ٱلدَّوَآئِرَۚ عَلَيْهِمْ دَآئِرَةُ ٱلسَّوْءِۗ وَٱللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
কতক আরববাসী যা তারা আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাকে জরিমানা বলে গণ্য করে আর তোমাদের দুঃখ মুসিবতের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে, মন্দের চক্র তাদেরকেই ঘিরে ধরুক। আর আল্লাহ তো সব কিছুই শুনেন, সব কিছু জানেন।
9(101)
وَمِمَّنْ حَوْلَكُم مِّنَ ٱلْأَعْرَابِ مُنَٰفِقُونَۖ وَمِنْ أَهْلِ ٱلْمَدِينَةِۖ مَرَدُوا۟ عَلَى ٱلنِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْۖ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْۚ سَنُعَذِّبُهُم مَّرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَىٰ عَذَابٍ عَظِيمٍ
তোমাদের চতুষ্পার্শ্বে কতক আরববাসী হল মুনাফিক, আর মাদীনাবাসীদের কেউ কেউ মুনাফিকীতে অনঢ়, তুমি তাদেরকে চেন না, আমি তাদেরকে চিনি, আমি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দেব, অতঃপর তাদেরকে মহা শাস্তির পানে ফিরিয়ে আনা হবে।

এখানে আল আরাবু শব্দের অর্থ লিখেছে বেদুইন যাতে মানুষকে বোকা বানানো যায়।

অথচ আল আরাবু শব্দের আল শব্দটি লাগিয়ে দিয়ে নির্দিষ্ট করে কেবল আরবদেরকেই বুঝিয়েছেন, যার অর্থ হবে আরববাসী। কিভাবে অর্থের বিকৃতি ঘটিয়েছে।
এব্যাপারে মহাগ্রন্হ আল-কোরআনের সুরা ও আয়াতের রেফারেন্স নম্বর দিলাম,

2(59,75),3(78),4(46),5(41),7(162,180)…ইত্যাদি ইত্যাদি।

সব নাটের গুরু এই আরববাসী মূলে আছে আরববাসী মুনাফিক্ব, কপট, বন্ড এই শয়তানরা হাদিস বের করছে যে তাদের সমালোচনা করা যাবে না। অথচ আল্লাহ নিজেই তাদের সমালোচনা করেছে আল কুরআনে।

এব্যাপারে আরোও
49(14)
قَالَتِ الْاَعْرَابُ اٰمَنَّا ؕ قُلْ لَّمْ تُؤْمِنُوْا وَلٰكِنْ قُوْلُوْۤا اَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْاِيْمَانُ فِيْ قُلُوْبِكُمْ ؕ وَاِنْ تُطِيْعُوا اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ لَا يَلِتْكُمْ مِّنْ اَعْمَالِكُمْ شَيْئًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
আরববাসীরা বলে, ‘আমরা ঈমান আনলাম’। তুমি বলে দাও, ‘তোমরা ঈমান আননি’। বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করলাম’। আর এখন পর্যন্ত তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তাহলে তিনি তোমাদের কর্মসমূহের কোন কিছুই বিনষ্ট করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

Meaning of sazdah

সিজদা অর্থ #নির্দেশনা মান্য করে কর্ম পালন ;

(ফেরেস্তারা নাম সমূহ বলতে না-পারায়)

ফেরেস্তাদের

(আদম নাম সমূহ বলে দেওয়ার জন্য)

আদমকেজ্ঞানিকে সিজদা/#সম্মানমান্য করতে বলেছেন #আল্লাহ্ ২ঃ৩১++++++

~~ মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে কুর্নিশ করার কথা কোন্ আয়াতে আছে ~
ওরা কোন্ দিকে কাহাকে মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে কুর্নিশ করে ?৫০ঃ১৬, ৫১ঃ৫৬


>
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্‌কে সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে ? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হইয়াছে শাস্তি। আল্লাহ্ যাহাকে হেয় করেন তাহার সম্মানদাতা কেহই নাই; আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহা করেন।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ يَسْجُدُ لَهٗ مَنْ فِى السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِى الْاَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُوْمُ وَ الْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَآبُّ وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ‌ ؕ وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ‌ؕ وَمَنْ يُّهِنِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ مُّكْرِمٍ‌ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَفْعَلُ مَا يَشَآءُ ۩ ؕসূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ১৮

2-Meaning of Sizdah-bn short video:
https://fb.watch/iIH6LgqRWt/

Fb comments সত্যৰ সন্ধান

 কোনোবাই মাদ্ৰাছাত পঢ়িলেই ধাৰ্মিক হৈ যায় নেকি ❓

 মাদ্ৰাছাৰ মোল্লাৰ বিৰোধীতা কৰিলেই আপুনি নাস্তিক টেগ পাব:

 জান্নাতৰ বাগিচাত (মাদ্ৰাছা) পঢ়া-শুনা কৰা কোৰআনৰ পাখিবিলাক ইমান উগ্ৰতা ক’ৰপৰা শিকে?:

 99% মাদ্ৰাছাৰ মোল্লাৰ ওচৰত ইছলাম শুদ্ধ ৰূপত নাই!:

 আলিম হবলৈ হলে মাদ্ৰাছাৰ ডিগ্ৰী লাগিব নেকি ❓:

 ইমামতিৰ বিনিময়ত পইচা/দৰমহা লব পাৰিনে? ইছলামে কি কয় ❓

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1236715033809410&id=100024127759217
………

   যাই করো – নামাজ পড়ো::::::::::::::

মিথ্যেকথা, কুকর্ম, ইচ্ছামতো যতোই করো ;
               নামাজ পড়ো – নামাজ পড়ো।
  সুদ-ঘুষ যাই খাও,
সময় করে হজে যাও।
      দাড়ি রাখো লম্বা করে,
পাকিস্তানী কুর্তা পরে।
সকাল-বিকাল লোক দেখিয়ে,
শুক্রবারের জুম্মা ধরো।
         — আর ‘ লোক দেখিয়ে
একশো রাকাত নামাজ পড়ো।।

বউ – কন্যাদের হিজাব পরাও,
বারে গিয়ে বিয়ার খাও।
তবলীগের ওই চিল্লা ধরো,
#ইজতেমা  _তে জয়েন করো।
         ও – ভাই নামাজ পড়ো – নামাজ পড়ো।

সৎ কর্মের খ্যাতা পোড়াও –
দাড়ি টুপী এসব দেখাও।
খালি কার্পেটে কপাল ঘসে,
সিজদা মারার চিহ্ন নাও।

          ✰
বড় গরু কুরবানী দাও।
সুদের টাকায়, হালাল খাও
প্যাখম ধরে পাগড়ি পরো
  অন্যকিছু না-পারলেও;
নামাজ পড়ার গপ্পো করো।
      আর ‘ হুজুর হওয়ার লেবাস ধরো;
ও ভাই….
              আবোল তাবোল যতোই করো।
     ★
নারী -পুরূষ সবাই তোমরা
‘ নামাজ পড়ো – নামাজ পড়ো।
******************************************
শ্রদ্ধেয় পান্না চৌধুরী স‍্যার

যাদেরকে আমরা আলেম বা ধর্মীয় জ্ঞানী হিসাবে ভেবে থাকি।
ওরা শুধু হাদিস, বিকাশ, ইজমা, কিয়াস এই জাতীয় পুরনো মুসলিম শাসকের আইনগুলো পড়ে।
এবং এদের ভিতরে কোন ডিভাইন নলেজ, কোরআনীক নলেজ, সাইন্টিফিক কিংবা আপগ্রেডেড কোন তথ্য বা পড়াশোনা থাকে না।
যার ফলে এরা, ওই মুসলমান রাজা বাদশাদের
সাম্রাজ্যের আইন-কানুনের হাদিস ঘেটে
‘তাদেরকে কিভাবে অজু করতে হবে, কিভাবে দাঁড়িয়ে পেশাব না করে
বসে করতে হবে, এবং পানি নেবার আগে কুলুপ কিভাবে নিতে হবে,
এই সমস্ত উদ্ভট কাণ্ডকারখানা আর যেগুলো মিনিংলেস, সেইগুলো শেখায়।

যেরকম, আমাদের দেশে ইজতেমাতে যাওয়া
যে সমস্ত লোকেরা তাবলীগ জামাত করে
– তাদেরকে শিক্ষা দেয়।
এদের ওখানে অনেক শিক্ষিত লোকেরাও ইসলামী জীবন যাপন করার জন্য –
মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে সেখানে যায়,
এবং গিয়ে শেখে দুনিয়ার অবান্তর উদ্ভট জিনিসগুলো।

*
অথচ – জীবনের এই চূড়ান্ত মহামূল্যবান আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো কখনো ‘
একটা মাদ্রাসায় পড়ুয়া লোক জানতে পারে না।
আসলে সে নিজেই জানেনা!
কেননা এর জন্য দরকার অনগোইং লাইব্রেরীর মধ্যে থাকা, পড়াশোনা করা,
এবং সুশিক্ষিত অনগোইং লেখাপড়া করা একজন উপদেষ্টা।

*
কিন্তু – সেইসবের ধারেকাছেও আমাদের দেশের এই সামাজিকভাবে সু-প্রতিষ্ঠিত লোকেরা যায় না।
যেহেতু শিক্ষিত লোকদের কোন লেবাস হয় না
আর মাদ্রাসায় ডিগ্ৰী থাকা আলেম ব্যতীত,
ধর্মীয় জ্ঞান ব্যতীত আলেম হতে পারেনা বলে, এরা ধারণা করে থাকে!

°
এটা সত্যিই অত্যধিক দুঃখজনক,
যেটা আমি Panna Choudhury সমাজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপলব্ধি করলাম।

যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলো
ধর্ম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:১৮ পিএম, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮
যেভাবে বাংলাদেশে বিশ্ব ইজতেমা শুরু হলো
আজ থেকে প্রায় শতবর্ষ আগে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রাহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মিলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় তা বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দিন দিনি বাড়তে থাকে তাবলিগের প্রচার-প্রসার ও ব্যাপকতা। তাবলিগের সাথী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীতে ইজতেমা আয়োজন শুরু হয়।

বাংলাদেশে তাবলিগ
১৯৫০-এর দশকে বাংলাদেশে তাবলিগের দাওয়াতি কাজ শুরু হয়। আর তা ১৯৪৬ সালে ঢাকার রমনা পার্ক সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদ থেকে যাত্রা শুরু করে। তৎকালীন সময়ে মাওলানা আব্দুল আজিজ (রাহ.) বাংলাদেশে ইজতিমার হাল ধরেন। তখন থেকেই বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে এই সমাবেশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা আরম্ভ হয়।

ফিরে দেখা
১৯৪৬ সালে ঢাকার রমনা পার্ক সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে প্রথমবারের মতো তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।

২ বছর অতিক্রম হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে চট্টগামে তৎকালীন হাজি ক্যাম্পে দ্বিতীয়বারের মতো তাবলিগের সম্মেলন বা ইজতেমার আয়োজন করা হয়।

তার ১০ বছর পর ১৯৫৮ সালে বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতিমা অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সময়ে তাবলিগের এ সম্মেলন শুধুমাত্র ইজতেমা নামেই প্রচার ও পরিচিত ছিল।

বিশ্ব ইজতেমা
তাবলিগের প্রচার-প্রচারণা দিন দিন প্রসারিত হতে থাকে। বাড়তে থাকে তাবলিগের সাথী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সংখ্যা।

এ কারণে ৮ বছর পর ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর পাগার গ্রামের খোলা মাঠে ইজতিমা আয়োজন করা হয়। সে বছর স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তাবলিগের এ ইজতেমায় ধর্মপাণ মুসলমান ও তাবলিগের সাথীরা অংশ গ্রহণ করে। আর সে বছর থেকেই এ ইজতেমাকে বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। আর বিশ্বব্যাপী ‘বিশ্ব ইজতেমা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে থাকে এ ইজতেমা।

১৯৬৬ সালের পর থেকে প্রতি বছরই ‘কহর দরিয়া’খ্যাত তুরাগ নদীর উত্তর পূর্ব তীর সংলগ্ন ডোবা-নালা, উঁচু-নিচু জমি মিলিয়ে রাজউকের হুকুমদখলকৃত ১৬০ একর জায়গার বিশাল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এ ইজতেমা। যা বিশ্ব ইজতেমা নামে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পরিচিত।

সে হিসাবে ২০১৮ সালে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিদেশি মেহমান ও রাষ্ট্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বছর ১০১ দেশ থেকে ইজতেমা অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার। সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে এ ইজতিমায়।

উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালের আগে এক সঙ্গে তিন দিন ব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হত। স্থান সংকট এবং জনদুর্ভোগ বিবেচনা ও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি, আইন-শৃ্ঙ্খলা উন্নতি ও নিরাপত্তা প্রদানের নিমিত্তে তাবলিগের শুরা সদস্যদের পরামর্শের ভিত্তিতে তিন দিন করে ২ ধাপে ইজতেমা আয়োজনের কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

২ ধাপে ইজতেমা আয়োজনের পরও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি হওয়ায় ২০১৬ সাল থেকে প্রতি বছর ৩২ জেলার অংশগ্রহণে ২ ধাপে বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়। এর ফলে প্রতিটি জেলা এক বছর পর পর টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় উপস্থিত হতে পারবে।

যে সব জেলা টঙ্গীর বিশ্বে ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তাদের জন্য জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক ইজতেমার আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। সে আলোকে গত ২বছর ধরে জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক ইজতেমাও অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে

#আলেম_কে_কারা ???? ৮ঃ২৯

মাদ্রাসা কারা কেনো বানাইছে??? ১৯ঃ৫৯

অনেক অহঙ্কারি শিক্ষিতরায়ো কুশিক্ষার তাঁবেদারি করে !!!
~~~~~~~~~~~~~~~~
মুফতি-মুহাদ্দেস ও নিজেরা
#আল্লাহ্_সাজা_মাওলানা-২ঃ২৮৬ +++ ঐসবেের সিলেবাস কাহাদের কৌশলে বানানো???
~~~~~
আলেম কে/কারা???
#ঐশীবাণী_কুরআন হলো আলেম-৮ঃ২৯
~~~~~~~
তারা কোন্ #ধর্মের #আলেমওলেমা?

কুরআন বুঝার চেষ্টাকরা হতে মানুষকে দূরে রেখে বুখারীগংদের বানানো হাদিসের ধর্ম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্যই
১৭৮১ সালে ইংরেজদের চাতুরীতে প্রথম তৈরি করা হয় #আলিয়া_মাদ্রাসা, কোলকাতা,
তারও পরে আবার

১৮৬৬ সালে খৃষ্টানইংরেজদের বানানো সিলেবাসে তৈরিহলো #দা_উ_কওয়ামি_মাদ্রাসা, দেওবন্দ,সাহারানপুর, উত্তরপ্রদেশ, বৃটিশইন্ডিয়া(ভারত)।
সেই তারা, যারা আল্লাহর ঐশীবাণী/কুরআনের বিরুদ্ধে বানানো ধর্মের প্রচারক !! আবার

সৌদির বানানো মদিনা’তেয়ো
১৯৬১ সালে
ঐ একি সিলেবাসে তৈরি করা হয়েছে
#মদিনা_ইউনিভার্সিটি
মানুষকে কুরআন বুঝার চেষ্টাকরা হতে দূরে রেখে-৭/২-৩
বলেবলে বানানো হাদিসের-৩১/৬ ধর্ম পালনকারী মুশরিকদের সাথে নিতে-৪/১১৬, ৬/১১৬
~~
(কুরআনের সুরা ও আয়াত নং মিলিয়ে বুঝুন)
~~~

এজন হাফিজে কোৰআন দহজনতো দূৰৰে কথা  সকলো হাফেজে কোৰআন মিলিও এজনকে জান্নাতত নিয়াৰ ক্ষমতা নাই:

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1271530970327816&id=100024127759217

জান্নাতে ভি, আই, পি, দেরও দাড়ি থাকবেনা, জান্নাতের যুবকদের সরদার ইমাম হাসান, ইমাম হোসাইন, বৃদ্ধলোকদের তো কোন সরদারও নাই, এখনতো একটাই ভয়, বৃদ্ধ লোকগুলো জান্নাতে প্রবেশ করবে কিনা? পৃথিবীতে এসে জাহান্নামীরা সংসারের মায়ায় ভুলে যায় মৃত্যুর ভয়, তাই তারা তরিকত ধরা পছন্দ করেনা, পায় শরেকের ভয়! জাহান্নামের ভয় কি করে হয়? ধর্ম ব্যবসার সুন্নী লেবাসের ধান্দা ছেড়ে ধর্ম নিরপেক্ষ হও, ধর্ম পালন করে কোন ধার্মিক কখনও জান্নাতে যেতে পারবেনা! আল্লাহ শুধু মানুষের শূন্যঅন্তর দেখেন, কার এবাদত কত সেটাও দেখেননা, তাহলে কার চুল বাল দাড়ি কত বড়? আর কারটা কত ছোট? আল্লাহর সেটা দেখারও সময় নাই!

দ্বীনৰ ক্ষেত্ৰত কোৰআনৰ বাহিৰে মানব ৰচিত কোনো বিধান গ্ৰহণীয় নহয় কোৰআনেই দ্বীনৰ একমাত্ৰ দলিল  13:20 , 45:37  দ্বীনৰ সকলো কিছুৰ ফায়ছালা হব কোৰআন মাফিক 86:13 কাৰণ কোৰআন সত্য-মিথ্যাৰ পাৰ্থক্যকাৰী গ্ৰন্থ 2:185  নবী কোৰআনৰ বাহিৰে কোনো বিধান দিয়া নাই  21:45  নবী নিজৰ পৰা একো কোৱা নাই 69:44-49
⚡#ওহী ব্যতিত নবী কোনো বিধান দিয়া নাই 53:3, 43:43 একশ্ৰেণীৰ মানুহ 2:79/174-176 অনুসৰি নিজৰ #স্বহস্তে কিতাব ৰচনা কৰি বিনিময় লৈ জাহান্নামৰ আগুনৰ দ্বাৰা পেট পুৰণ কৰে এই সমস্ত কিতাবীসকলক #হাক্কানি_কাফিৰ বুলি কোৱা হৈছে যিসকলে 4:150-152 , 10:15 অনুসৰি কোৰআনৰ পৰা কিছু বিধান আৰু নিজে হাতে লিখিত কিতাব যেনে- #বুখাৰি, #তিৰমিজি, #ফাজায়েল_আমল, #ইজমা-#কিয়াছ ইত্যাদি ৰচিত কিতাবৰ পৰা কিছু বিধান লৈ মধ্য পন্থা তৈয়াৰ কৰে সিহঁত হাক্কানি কাফিৰ 4:150-152 , 10:15
সিহঁত মহানবীৰ নামত মানব ৰচিত এই সমস্ত হাদিছ নামক বিধানৰ উদ্ধৃতি দি – আন্দাজ-অনুমানত বিভ্রান্তি সৃষ্টি কৰে। আৰু এই ফিতনা বা বিভ্রান্তি হত্যাকাণ্ডতকৈও নিকৃষ্টতম কাম 2:191/127 এই ফিতনা যিসকলে তৈয়াৰ কৰে সিহঁত মূৰ্খ আৰু এই মূৰ্খসকলক #এৰাই_চলা_উত্তম 7:199

    #হালাল/#হাৰাম_ঘোষণাৰ_ক্ষমতা_মোল্লাৰ_নাই:

        কোনো নীতি, আদর্শ, বিধি-বিধান, প্রতিষ্ঠান, খাদ্য, বিষয়-বস্তু ইত্যাদি হাৰাম/হালাল কোৱাৰ ক্ষমতা একমাত্ৰ আল্লাহৰ 7:32 আকৌ কোনো #ফতোয়া দিয়াৰ মালিকও আল্লাহ 4:127/176 সমাৰ্থক আৰু আয়াত চাওক: 10:59, 16:116, 6:119, 66:1 , 4:105

প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস, এজমা কিয়াস, মানব রচিত গ্রন্থ তথা হাদিস ভিত্তিক। কিন্তু এইগুলি দ্বীনের কোন দলিল নহে। দ্বীনের দলিল একমাত্র কোরআন (জাছিয়া-২০) (রাদ-৩৭) পবিত্র কোরআনই সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী (২ঃ১৮৫)। দ্বীনের সকল বিষয় মিমাংশাকারী এই কোরআন (তারিক-১৩)। আর দ্বীনের বিষয়ে এই কোরআন পরিপূর্ণ (৫ঃ৩)। এই কোরআনের বুঝ যারা অপছন্দ করে তাদের কর্মফল বিনষ্ট হবে (৪৭ঃ৯)। কোরআন প্রত্যাখ্যানকারী ফাসিক (২ঃ৯৯)। সত্য ও ন্যায়ের দিক থেকে এই কোরআনের কথা পরিপূর্ণ (৬ঃ১১৫)। আর যারা কোরআন মোতাবেক না চলে অধিকাংশ লোকের কথা মত চলে তারা আল্লাহর পথ হইতে বিচ্যুত হবে (৬ঃ১১৬)। আর তাই নবী (সঃ) কোরআনের বাইরে কোন কিছু অনুসরণ করে নাই (৬ঃ৫০)। অর্থাৎ তিনি ও এই কোরআনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন।  তিনি এই কোরআন ব্যতিত কাউকে দ্বীনের বিষয়ে সতর্ক করে নাই (আম্বিয়া-৪৫)। আর দ্বীনের বিষয়ে তিনি ওহী ব্যতিত কোন কথা বলেন নাই (৫৩ঃ৩) তিনি আল্লাহর নামে কোন কিছু বানাইয়া বলে নাই (৬৯ঃ৪৪)। যদি তিনি আল্লাহর নামে কোন কিছু বানাইয়া বলিত তাহলে আল্লাহ তার দক্ষিণ হস্ত ধরিয়া ফেলিত (৬৯ঃ৪৫) এবং তার জীবন ধমনী কাটিয়া দিতেন (৬৯ঃ৪৬)। আর নবী (সঃ) কে আল্লাহ বলেন ‘তুমি ওহীকে অবলম্বন কর’ (৪৩ঃ৪৩)। আর তিনি তো প্রভুর স্পষ্ট প্রমানের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল (৬ঃ৫৭)। আর নবী (সঃ) এর জন্য আল্লাহ বিধান স্বরূপ এই কোরআনই দিয়েছেন (২৮ঃ৮৫)। তাই তিনি কোরআন বাদে দ্বীনের বিষয়ে কোন বিধান দেয় নাই এটা নিশ্চিত। আর যারা কোরআন মোতাবেক দ্বীনের বিষয়ে বিধান দেয় না, এরা যালিম, ফাসিক, কাফির (৫ঃ৪৪) (৫ঃ৪৫) (৫ঃ৪৭)। আর কোরআন প্রত্যাখানকারীর জন্য কঠিন শাস্তি (সাফফাত-১৭০)। আবার যারা এই কোরআনের কোন আয়াত গোপন রাখে তাদের প্রতি আল্লাহ লানত করেন (২ঃ১৫৯)। আর যারা কোরআনের আয়াতকে বিভিন্ন ভাবে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি জাহান্নাম (২২ঃ৫১)। আর যারা কোরআন বাদেও অন্য কিছুকে দ্বীনের দলিল হিসাবে মনে করে, তারা আল্লাহর সাক্ষাতের আশা পোষণকারী নহে (১০ঃ১৫)। আবার যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে আল্লাহর নামে চালিয়ে দেয় এবং অল্প মূল্যে বাজারে বিক্রয় করে তাদের জন্য কঠিন দূর্ভোগ (২ঃ৭৯)। আবার আল্লাহর আয়াত বিকৃতকারীর জন্য জাহান্নাম (৪১ঃ৪০) (২ঃ৭৫)। একটি বিষয়ে বিভিন্নভাবে এই কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। যাতে করে মানুষ এই কোরআন সহজেই বুঝতে পারে (৬ঃ৬৫)।

প্রচলিত ধর্ম বিশ্বাস, এজমা কিয়াস, মানব রচিত গ্রন্থ তথা হাদিস ভিত্তিক। কিন্তু এইগুলি দ্বীনের কোন দলিল নহে। দ্বীনের দলিল একমাত্র কোরআন (জাছিয়া-২০) (রাদ-৩৭) পবিত্র কোরআনই সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী (২ঃ১৮৫)। দ্বীনের সকল বিষয় মিমাংশাকারী এই কোরআন (তারিক-১৩)। আর দ্বীনের বিষয়ে এই কোরআন পরিপূর্ণ (৫ঃ৩)। এই কোরআনের বুঝ যারা অপছন্দ করে তাদের কর্মফল বিনষ্ট হবে (৪৭ঃ৯)। কোরআন প্রত্যাখ্যানকারী ফাসিক (২ঃ৯৯)। সত্য ও ন্যায়ের দিক থেকে এই কোরআনের কথা পরিপূর্ণ (৬ঃ১১৫)। আর যারা কোরআন মোতাবেক না চলে অধিকাংশ লোকের কথা মত চলে তারা আল্লাহর পথ হইতে বিচ্যুত হবে (৬ঃ১১৬)। আর তাই নবী (সঃ) কোরআনের বাইরে কোন কিছু অনুসরণ করে নাই (৬ঃ৫০)। অর্থাৎ তিনি ও এই কোরআনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলেন।  তিনি এই কোরআন ব্যতিত কাউকে দ্বীনের বিষয়ে সতর্ক করে নাই (আম্বিয়া-৪৫)। আর দ্বীনের বিষয়ে তিনি ওহী ব্যতিত কোন কথা বলেন নাই (৫৩ঃ৩) তিনি আল্লাহর নামে কোন কিছু বানাইয়া বলে নাই (৬৯ঃ৪৪)। যদি তিনি আল্লাহর নামে কোন কিছু বানাইয়া বলিত তাহলে আল্লাহ তার দক্ষিণ হস্ত ধরিয়া ফেলিত (৬৯ঃ৪৫) এবং তার জীবন ধমনী কাটিয়া দিতেন (৬৯ঃ৪৬)। আর নবী (সঃ) কে আল্লাহ বলেন ‘তুমি ওহীকে অবলম্বন কর’ (৪৩ঃ৪৩)। আর তিনি তো প্রভুর স্পষ্ট প্রমানের উপর প্রতিষ্ঠিত ছিল (৬ঃ৫৭)। আর নবী (সঃ) এর জন্য আল্লাহ বিধান স্বরূপ এই কোরআনই দিয়েছেন (২৮ঃ৮৫)। তাই তিনি কোরআন বাদে দ্বীনের বিষয়ে কোন বিধান দেয় নাই এটা নিশ্চিত। আর যারা কোরআন মোতাবেক দ্বীনের বিষয়ে বিধান দেয় না, এরা যালিম, ফাসিক, কাফির (৫ঃ৪৪) (৫ঃ৪৫) (৫ঃ৪৭)। আর কোরআন প্রত্যাখানকারীর জন্য কঠিন শাস্তি (সাফফাত-১৭০)। আবার যারা এই কোরআনের কোন আয়াত গোপন রাখে তাদের প্রতি আল্লাহ লানত করেন (২ঃ১৫৯)। আর যারা কোরআনের আয়াতকে বিভিন্ন ভাবে ব্যর্থ করার চেষ্টা করে তাদের জন্য কঠিন শাস্তি জাহান্নাম (২২ঃ৫১)। আর যারা কোরআন বাদেও অন্য কিছুকে দ্বীনের দলিল হিসাবে মনে করে, তারা আল্লাহর সাক্ষাতের আশা পোষণকারী নহে (১০ঃ১৫)। আবার যারা নিজ হাতে কিতাব রচনা করে আল্লাহর নামে চালিয়ে দেয় এবং অল্প মূল্যে বাজারে বিক্রয় করে তাদের জন্য কঠিন দূর্ভোগ (২ঃ৭৯)। আবার আল্লাহর আয়াত বিকৃতকারীর জন্য জাহান্নাম (৪১ঃ৪০) (২ঃ৭৫)। একটি বিষয়ে বিভিন্নভাবে এই কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। যাতে করে মানুষ এই কোরআন সহজেই বুঝতে পারে (৬ঃ৬৫)।

তথাকথিত আলেমরা কোনো একটা বিষয়েই একমত না 樂樂樂
                      এই বসরের সেরা ভিডিও
   樂樂কারণ❓❓❓ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=165389515854123&id=100071492266900
                           Share it 

ইবলিশ আল্লাহ বিশ্বাস করে ও আখেরাত বিশ্বাস করে (২ঃ৮)।

ইবলিশ আল্লাহ রসূল বিশ্বাস করে (২৪ঃ৪৭)

ইবলিশ আল্লাহ রসূল আনুগত্য স্বীকার করে (২৪ঃ৪৭)।

ইবলিশ সালাত আদায় করে (মাউন-৬)।

ইবলিশ আল্লাহ পাকের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করে (৫৭ঃ১)।

ইবলিশ পুনরুত্থান দিবস বিশ্বাস করে (ছাদ-৭৯)।

ইবলিশ দোযখ বেহেস্ত ও ফেরেস্তা বিশ্বাস করে। কারণ তাকেতো বেহেস্ত থেকেই বহিষ্কার করা হয়েছিল। (১৫ঃ৩৪)।

ইবলিশ আল্লাহকে প্রভু বলে (১৫ঃ৩৬) (ছাদ-৭৯)।

ইবলিশ আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন করে (৩ঃ৮৩)।

ইবলিশ আল্লাহকে সেজদা করে (১৩ঃ১৫)।

এটা কি ধরণের সালাত: https://youtu.be/36eYWAKngbo
……

সত্যৰ সন্ধান (https://www.facebook.com/errornull00)
।।।
copied from comment box :
https://fb.watch/iCaTiPKuIW/

আলেম কে,কারা,fb

#আলেমকেকারা ???? ৮ঃ২৯

মাদ্রাসা কারা কেনো বানাইছে??? ১৯ঃ৫৯

অনেক অহঙ্কারি শিক্ষিতরায়ো কুশিক্ষার তাঁবেদারি করে !!!
~~~~
মুফতি-মুহাদ্দেস ও নিজেরা

আল্লাহ্সাজামাওলানা-২ঃ২৮৬ +++ ঐসবেের সিলেবাস কাহাদের কৌশলে বানানো???

আলেম কে/কারা??? #ঐশীবাণী_কুরআন হলো আলেম-৮ঃ২৯

~~
তারা কোন্ #ধর্মের #আলেমওলেমা?

কুরআন বুঝার চেষ্টাকরা হতে মানুষকে দূরে রেখে বুখারীগংদের বানানো হাদিসের ধর্ম প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করার জন্যই
১৭৮১ সালে ইংরেজদের চাতুরীতে প্রথম তৈরি করা হয় #আলিয়া_মাদ্রাসা, কোলকাতা,
তারও পরে আবার

১৮৬৬ সালে খৃষ্টানইংরেজদের বানানো সিলেবাসে তৈরিহলো #দাকওয়ামি_মাদ্রাসা, দেওবন্দ,সাহারানপুর, উত্তরপ্রদেশ, বৃটিশইন্ডিয়া(ভারত)।
সেই তারা, যারা আল্লাহর ঐশীবাণী/কুরআনের বিরুদ্ধে বানানো ধর্মের প্রচারক !! আবার

সৌদির বানানো মদিনা’তেয়ো
১৯৬১ সালে
ঐ একি সিলেবাসে তৈরি করা হয়েছে

মদিনা_ইউনিভার্সিটি

মানুষকে কুরআন বুঝার চেষ্টাকরা হতে দূরে রেখে-৭/২-৩
বলেবলে বানানো হাদিসের-৩১/৬ ধর্ম পালনকারী মুশরিকদের সাথে নিতে-৪/১১৬, ৬/১১৬
~~
(কুরআনের সুরা ও আয়াত নং মিলিয়ে বুঝুন)আল্লাহু আকবার : বলার আয়াত দিয়ে বলেন ? আপনি সত্যবাদি ??? ৪৬ঃ১৩+

~~
যাহারা 🏵️আল্লাহ্‌র আয়াতে🏵️ বিশ্বাস করে না তাহারা তো কেবল মিথ্যা উদ্ভাবন করে এবং তাহারাই মিথ্যাবাদী।

اِنَّمَا يَفْتَرِى الْـكَذِبَ الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ‌ۚ وَاُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الْكٰذِبُوْنَ

সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াত নম্বরঃ ১০৫

নবী কাকে বলে? রাসূল কাকে বলে? নবীর কাজ কি? রাসূলের কাজ কি?

নবী কাকে বলে? রাসূল কাকে বলে? নবীর কাজ কি? রাসূলের কাজ কি? — সব পর্ব একসাথে
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦

[[যে কোন মুমিন নারী-পুরুষ যদি শুধু আল্লাহর কিতাব দ্বারা মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত দেয় তবে সে আল্লাহর রাসূল (৪৩:৪৫,৩৩:৩৯)।]]

♦ নবী শব্দটি আরবী نبا শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ সংবাদ (৭৮:২)।আল্লাহর সংবাদ জানানোর জন্য নির্বাচিত যে ব্যক্তির উপর কিতাব অবতীর্ণ করা হয় তাকে নবী বলে। নবীর কাজ হচ্ছে আল্লাহর সংবাদ মানুষকে জানানো। আল্লাহ্ প্রত্যেক নবীর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন (২:২১৩)। কিতাব অর্থ যাতে লিখিত বিষয় আছে।(৫২:২-৩,২:৭৯,৬:৫৯,১৭:১৩-১৪)।

وَعَلَّمَ ءَادَمَ ٱلْأَسْمَآءَ كُلَّهَا ثُمَّ عَرَضَهُمْ عَلَى ٱلْمَلَٰٓئِكَةِ فَقَالَ أَنۢبِـُٔونِى بِأَسْمَآءِ هَٰٓؤُلَآءِ إِن كُنتُمْ صَٰدِقِينَ
আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। সুতরাং বললেন, ‘তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।
قَالُوۡا سُبۡحٰنَکَ لَا عِلۡمَ لَنَاۤ اِلَّا مَا عَلَّمۡتَنَا ؕ اِنَّکَ اَنۡتَ الۡعَلِیۡمُ الۡحَکِیۡمُ ﴿۳۲﴾
তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান। আপনি আমাদেরকে যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয় আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়’।
قَالَ يَٰٓـَٔادَمُ أَنۢبِئْهُم بِأَسْمَآئِهِمْۖ فَلَمَّآ أَنۢبَأَهُم بِأَسْمَآئِهِمْ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّىٓ أَعْلَمُ غَيْبَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ وَأَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا كُنتُمْ تَكْتُمُونَ
তিনি বললেন, ‘হে আদম, এগুলোর নাম তাদেরকে জানাও’। অতঃপর যখন সে এগুলোর নাম তাদেরকে জানাল, তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, নিশ্চয় আমি আসমানসমূহ ও যমীনের গায়েব জানি এবং জানি যা তোমরা প্রকাশ কর এবং যা তোমরা গোপন করতে’?(আল-বাকারাহ্ ২:৩১-৩৩)
قُلْنَا ٱهْبِطُوا۟ مِنْهَا جَمِيعًاۖ فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُم مِّنِّى هُدًى فَمَن تَبِعَ هُدَاىَ فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
আমি বললাম, “তোমরা সবাই জান্নাত থেকে (পৃথিবীতে) নেমে যাও। অতঃপর যখনই আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে কোন পথ নির্দেশনা যাবে তখন যারাই আমার নির্দেশনা মেনে চলবে তাদের কোন ভয় কিংবা দুঃখ থাকবে না।”
وَٱلَّذِينَ كَفَرُوا۟ وَكَذَّبُوا۟ بِـَٔايَٰتِنَآ أُو۟لَٰٓئِكَ أَصْحَٰبُ ٱلنَّارِۖ هُمْ فِيهَا خَٰلِدُونَ
আর যারা কুফরী করেছে এবং আমার আয়াতসমূহকে অস্বীকার করেছে, তারাই আগুনের অধিবাসী। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।(বাকারাহ ২:৩৮-৩৯)
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱبْنَىْ ءَادَمَ بِٱلْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ ٱلْءَاخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَۖ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلْمُتَّقِينَ
আর তুমি (মুহাম্মদ) তাদের নিকট আদমের দুই পুত্রের সংবাদ যথাযথভাবে বর্ণনা কর, যখন তারা উভয়ে কুরবানী পেশ করল। অতঃপর তাদের একজন থেকে গ্রহণ করা হল, আর অপরজন থেকে গ্রহণ করা হল না। সে বলল, ‘অবশ্যই আমি তোমাকে হত্যা করব’। অন্যজন বলল, ‘আল্লাহ কেবল মুত্তাকীদের থেকে গ্রহণ করেন’।(আল-মা’য়েদা ৫:২৭)
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ٱلَّذِىٓ ءَاتَيْنَٰهُ ءَايَٰتِنَا فَٱنسَلَخَ مِنْهَا فَأَتْبَعَهُ ٱلشَّيْطَٰنُ فَكَانَ مِنَ ٱلْغَاوِينَ
আর তুমি তাদের উপর সে ব্যক্তির সংবাদ পাঠ কর, যাকে আমি আমার আয়াতসমূহ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে তা হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল এবং শয়তান তার পেছনে লেগেছিল। ফলে সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিল।(আল-আরাফ ৭:১৭৫)
وَٱتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ نُوحٍ
আর তাদেরকে নূহের সংবাদ পড়ে শুনাও।( ইউনুস ১০:৭১)
نَبِّئْ عِبَادِىٓ أَنِّىٓ أَنَا ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ
আমার বান্দাদের জানিয়ে দাও যে, আমি নিশ্চয় ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(আল-হিজর ১৫:৪৯)
قَالَ إِنِّى عَبْدُ ٱللَّهِ ءَاتَىٰنِىَ ٱلْكِتَٰبَ وَجَعَلَنِى نَبِيًّا
শিশুটি বলল, ‘আমি তো আল্লাহর বান্দা; তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন’।(মারিয়াম ১৯:৩০)

كَانَ ٱلنَّاسُ أُمَّةً وَٰحِدَةً فَبَعَثَ ٱللَّهُ ٱلنَّبِيِّۦنَ مُبَشِّرِينَ وَمُنذِرِينَ وَأَنزَلَ مَعَهُمُ ٱلْكِتَٰبَ بِٱلْحَقِّ لِيَحْكُمَ بَيْنَ ٱلنَّاسِ فِيمَا ٱخْتَلَفُوا۟ فِيهِۚ وَمَا ٱخْتَلَفَ فِيهِ إِلَّا ٱلَّذِينَ أُوتُوهُ مِنۢ بَعْدِ مَا جَآءَتْهُمُ ٱلْبَيِّنَٰتُ بَغْيًۢا بَيْنَهُمْۖ فَهَدَى ٱللَّهُ ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ لِمَا ٱخْتَلَفُوا۟ فِيهِ مِنَ ٱلْحَقِّ بِإِذْنِهِۦۗ وَٱللَّهُ يَهْدِى مَن يَشَآءُ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
মানুষ ছিল এক উম্মত। অতঃপর আল্লাহ সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে নবীদেরকে প্রেরণ করলেন এবং সত্যসহ তাদের সাথে কিতাব নাযিল করলেন, যাতে মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন, যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করত। আর তারাই তাতে মতবিরোধ করেছিল, যাদেরকে তা দেয়া হয়েছিল, তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসার পরও পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষবশত। অতঃপর আল্লাহ নিজ অনুমতিতে মুমিনদেরকে হিদায়াত দিলেন যে বিষয়ে তারা মতবিরোধ করছিল। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন সরল পথের দিকে হিদায়াত দেন।(আল-বাকারাহ ২:২১৩)

আল্লাহ্ আমাদেরকে বলেনি নবীদেরকে রব(উপাস্য ও বিধান দাতা) রূপে গ্রহণ কর।

مَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُؤْتِيَهُ ٱللَّهُ ٱلْكِتَٰبَ وَٱلْحُكْمَ وَٱلنُّبُوَّةَ ثُمَّ يَقُولَ لِلنَّاسِ كُونُوا۟ عِبَادًا لِّى مِن دُونِ ٱللَّهِ وَلَٰكِن كُونُوا۟ رَبَّٰنِيِّۦنَ بِمَا كُنتُمْ تُعَلِّمُونَ ٱلْكِتَٰبَ وَبِمَا كُنتُمْ تَدْرُسُونَ
কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’।
وَلَا يَأْمُرَكُمْ أَن تَتَّخِذُوا۟ ٱلْمَلَٰٓئِكَةَ وَٱلنَّبِيِّۦنَ أَرْبَابًاۗ أَيَأْمُرُكُم بِٱلْكُفْرِ بَعْدَ إِذْ أَنتُم مُّسْلِمُونَ
আর তিনি তোমাদেরকে নির্দেশ করেন না যে, তোমরা ফেরেশতা ও নবীদেরকে রব ( উপাস্য ও বিধান দাতা) রূপে গ্রহণ কর। তোমরা মুসলিম হওয়ার পর তিনি কি তোমাদেরকে কুফরীর নির্দেশ দিবেন?
وَمَا كَانَ لِنَبِىٍّ أَن يَغُلَّۚ وَمَن يَغْلُلْ يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ ٱلْقِيَٰمَةِۚ ثُمَّ تُوَفَّىٰ كُلُّ نَفْسٍ مَّا كَسَبَتْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُونَ
আর কোন নবীর জন্য উচিত নয় যে, সে খিয়ানত করবে। আর যে খিয়ানত করবে, কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে তা নিয়ে যা সে খিয়ানত করেছে। অতঃপর প্রত্যেক ব্যক্তিকে পুরোপুরি দেয়া হবে যা সে উপার্জন করেছে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না।
(আলে-ইমরান ৩:৭৯-৮০,১৬১)

রাসুল মানে হচ্ছে যে অন্যের বার্তা বহন করে আরেক জনের কাছে পৌঁছায়। রাসূল মানে নিজের বার্তা অন্যের কাছে পৌঁছানো নয়। যেমন পোস্টম্যান যখন প্রেরকের চিঠি প্রাপকের কাছে পৌঁছান তখন সেই চিঠিতে পোষ্টম্যানের কোন কথা থাকেনা। আবার এই পোস্টম্যান যখন সকল মানুষের জন্য কল্যাণকর প্রেসিডেন্টের কোন উন্মুক্ত ঘোষণা পত্র কোন মন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর জন্য আদিষ্ট হন; তখন সে এই ঘোষণা পত্র পড়তে পারবে, বুঝতে পারবে, আমল করতে পারবে, অন্যকে বুঝাতে পারবে কিন্তু এই ঘোষণা পত্র যখন মন্ত্রীর কাছে পৌঁছাবে তখন সে তাতে নিজে কোন কথা সংযোজন করতে পারবে না। রাসূল মানেই হচ্ছে অন্যের নির্দেশ হুবহু পৌঁছে দেয়া, তাতে সংযোজন বিয়োজন করে পৌঁছে দেয়া নয়। রাসূল মানে যে অন্যের কথা বহন করে আরেক জনের কাছে পৌঁছানো তার প্রমানে নিচের আয়াতটি দেখুন।

وَ قَالَ الۡمَلِکُ ائۡتُوۡنِیۡ بِہٖ ۚ فَلَمَّا جَآءَہُ الرَّسُوۡلُ قَالَ ارۡجِعۡ اِلٰی رَبِّکَ فَسۡـَٔلۡہُ مَا بَالُ النِّسۡوَۃِ الّٰتِیۡ قَطَّعۡنَ اَیۡدِیَہُنَّ ؕ اِنَّ رَبِّیۡ بِکَیۡدِہِنَّ عَلِیۡمٌ ﴿۵۰﴾
আর বাদশাহ বলল, ‘তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আস’। অতঃপর যখন রাসূল (বার্তাবাহক/দূত) তার কাছে আসল তখন, সে বলল, তুমি তোমার মনিবের নিকট ফিরে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা কর, যে সব মহিলা নিজ নিজ হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কী? নিশ্চয় আমার রব তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত’।(ইউসুফ ১২:৫০)

রাসূল মানে অন্যের বার্তা বহনকারী ব্যক্তি। ফিরিস্তারা মানুষের কাছে আল্লাহর বার্তা বহন করে পৌঁছাতো এই জন্য ফিরিস্তাদেরকে রাসূল বলা হয়েছে। আবার নবীরা আল্লাহর বার্তা বহন করে মানুষের কাছে পৌঁছাতো এই জন্য নবীদের কে রাসূল বলা হয়েছে। আল্লাহ্ প্রত্যেক নবীর সাথে কিতাব পাঠিয়েছেন (২:২১৩) নবীনদের কাজই ছিল আল্লাহর কিতাবের বার্তা বহন করে মানুষের কাছে পৌঁছানো। ফলে প্রত্যেক নবী রাসূল ছিলেন।

اَللّٰہُ یَصۡطَفِیۡ مِنَ الۡمَلٰٓئِکَۃِ رُسُلًا وَّ مِنَ النَّاسِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ سَمِیۡعٌۢ بَصِیۡرٌ ﴿ۚ۷۵﴾
আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। অবশ্যই আল্লাহ সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।(আল-হাজ্ব ২২:৭৫)
اِنَّہٗ لَقَوۡلُ رَسُوۡلٍ کَرِیۡمٍ ﴿ۙ۱۹﴾
নিশ্চয় এ কুরআন সম্মানিত রাসূলের* আনিত বাণী।

  • এখানে রাসূল বলতে জিবরাইল ফিরিস্তাকে বুঝানো হয়েছে এর প্রমানে পরের আয়াত গুলি দেখুন।

ذِیۡ قُوَّۃٍ عِنۡدَ ذِی الۡعَرۡشِ مَکِیۡنٍ ﴿ۙ۲۰﴾
যে শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাসম্পন্ন।
مُّطَاعٍ ثَمَّ اَمِیۡنٍ ﴿ؕ۲۱﴾
মান্যবর, সেখানে সে বিশ্বস্ত।
وَ مَا صَاحِبُکُمۡ بِمَجۡنُوۡنٍ ﴿ۚ۲۲﴾
আর তোমাদের সাথী(মুহাম্মাদ) পাগল নয়।
وَ لَقَدۡ رَاٰہُ بِالۡاُفُقِ الۡمُبِیۡنِ ﴿ۚ۲۳﴾
আর সে (মুহাম্মদ) তাকে(জিবরাইল কে) সুস্পষ্ট দিগন্তে দেখেছে। (আত-তাকভীর ৮১:১৯-২৩)
قُلْ مَن كَانَ عَدُوًّا لِّجِبْرِيلَ فَإِنَّهُۥ نَزَّلَهُۥ عَلَىٰ قَلْبِكَ بِإِذْنِ ٱللَّهِ مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُدًى وَبُشْرَىٰ لِلْمُؤْمِنِينَ
বল, ‘যে জিবরীলের শত্রু হবে (সে অনুশোচনায় মরুক) কেননা নিশ্চয় জিবরীল তা আল্লাহর অনুমতিতে তোমার অন্তরে নাযিল করেছে, তার সামনে থাকা কিতাবের সমর্থক, হিদায়াত ও মুমিনদের জন্য সুসংবাদরূপে’।(আল-বাকারাহ ২:৯৭)
اِنَّہٗ لَقَوۡلُ رَسُوۡلٍ کَرِیۡمٍ ﴿ۙ۱۹﴾
নিশ্চয় এ কুরআন সম্মানিত রাসূলের* আনিত বাণী।

  • এখানে রাসূল বলতে মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সালামুন আলাল মুরছালিন) কে বুঝানো হয়েছে এর প্রমানে পরের আয়াত গুলি দেখুন।

وَّ مَا ہُوَ بِقَوۡلِ شَاعِرٍ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تُؤۡمِنُوۡنَ ﴿ۙ۴۱﴾
আর এটি কোন কবির কথা নয়। তোমরা কমই বিশ্বাস কর।
وَ لَا بِقَوۡلِ کَاہِنٍ ؕ قَلِیۡلًا مَّا تَذَکَّرُوۡنَ ﴿ؕ۴۲﴾
আর কোন গণকের কথাও নয়। তোমরা কমই উপদেশ গ্রহণ কর।
تَنۡزِیۡلٌ مِّنۡ رَّبِّ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۴۳﴾
এটি সৃষ্টিকুলের রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত।
وَ لَوۡ تَقَوَّلَ عَلَیۡنَا بَعۡضَ الۡاَقَاوِیۡلِ ﴿ۙ۴۴﴾
যদি সে আমার নামে কোন মিথ্যা রচনা করত,
لَاَخَذۡنَا مِنۡہُ بِالۡیَمِیۡنِ ﴿ۙ۴۵﴾
তবে আমি তার ডান হাত পাকড়াও করতাম।
ثُمَّ لَقَطَعۡنَا مِنۡہُ الۡوَتِیۡنَ ﴿۫ۖ۴۶﴾
তারপর অবশ্যই আমি তার হৃদপিন্ডের শিরা কেটে ফেলতাম।
فَمَا مِنۡکُمۡ مِّنۡ اَحَدٍ عَنۡہُ حٰجِزِیۡنَ ﴿۴۷﴾
অতঃপর তোমাদের মধ্যে কেউই তাকে রক্ষা করার থাকত না।
وَ اِنَّہٗ لَتَذۡکِرَۃٌ لِّلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۴۸﴾
আর এটিতো (কুরআন) মুত্তাকীদের জন্য এক নিশ্চিত উপদেশ।(আল-হাক্কাহ ৬৯:৪০-৪৮)

فَلَمَّا ٱعْتَزَلَهُمْ وَمَا يَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ وَهَبْنَا لَهُۥٓ إِسْحَٰقَ وَيَعْقُوبَۖ وَكُلًّا جَعَلْنَا نَبِيًّا
অতঃপর সে (ইবরাহীম) যখন তাদের থেকে এবং তারা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদাত করত সেই সব হতে পৃথক হয়ে গেল তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকূবকে এবং প্রত্যেককে নাবী করলাম
وَوَهَبْنَا لَهُم مِّن رَّحْمَتِنَا وَجَعَلْنَا لَهُمْ لِسَانَ صِدْقٍ عَلِيًّا
আর আমি তাদেরকে আমার অনুগ্রহ দান করলাম আর তাদের সুনাম সুখ্যাতিকে সমুচ্চ করলাম।
وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَٰبِ مُوسَىٰٓۚ إِنَّهُۥ كَانَ مُخْلَصًا وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا
আর স্মরণ কর এই কিতাবে মূসাকে। অবশ্যই সে ছিল মনোনীত এবং সে ছিল রাসূল, নবী।
وَنَٰدَيْنَٰهُ مِن جَانِبِ ٱلطُّورِ ٱلْأَيْمَنِ وَقَرَّبْنَٰهُ نَجِيًّا
আমি তাকে তূর পর্বতের ডান দিক থেকে ডেকেছিলাম এবং অন্তরঙ্গ আলাপের উদ্দেশ্যে তাকে আমার নিকটবর্তী করেছিলাম।
وَوَهَبْنَا لَهُۥ مِن رَّحْمَتِنَآ أَخَاهُ هَٰرُونَ نَبِيًّا
আর আমি স্বীয় অনুগ্রহে তার জন্য তার ভাই হারূনকে নবীরূপে দান করলাম।
وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَٰبِ إِسْمَٰعِيلَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صَادِقَ ٱلْوَعْدِ وَكَانَ رَسُولًا نَّبِيًّا
আর স্মরণ কর এই কিতাবে ইসমাঈলকে। সে ছিল সত্যিকারের ওয়াদা পালনকারী এবং সে ছিল রাসূল, নবী।
وَكَانَ يَأْمُرُ أَهْلَهُۥ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱلزَّكَوٰةِ وَكَانَ عِندَ رَبِّهِۦ مَرْضِيًّا
আর সে তার পরিবার-পরিজনকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তার রবের সন্তোষপ্রাপ্ত।
وَٱذْكُرْ فِى ٱلْكِتَٰبِ إِدْرِيسَۚ إِنَّهُۥ كَانَ صِدِّيقًا نَّبِيًّا
আর স্মরণ কর এই কিতাবে ইদরীসকে। সে ছিল পরম সত্যনিষ্ঠ নবী।
وَرَفَعْنَٰهُ مَكَانًا عَلِيًّا
আর আমি তাকে উচ্চ মর্যাদায় সমুন্নত করেছিলাম।
أُو۟لَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّۦنَ مِن ذُرِّيَّةِ ءَادَمَ وَمِمَّنْ حَمَلْنَا مَعَ نُوحٍ وَمِن ذُرِّيَّةِ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْرَٰٓءِيلَ وَمِمَّنْ هَدَيْنَا وَٱجْتَبَيْنَآۚ إِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَٰتُ ٱلرَّحْمَٰنِ خَرُّوا۟ سُجَّدًا وَبُكِيًّا۩
এরাই সে সব নবী, আদম সন্তানের মধ্য থেকে যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন এবং যাদের আমি নূহের সাথে নৌকায় আরোহণ করিয়েছিলাম। আর ইবরাহীম ও ইসরাঈলের বংশোদ্ভূত এবং যাদেরকে আমি পথ প্রদর্শন করেছিলাম ও মনোনীত করেছিলাম। যখন তাদের কাছে পরম করুণাময়ের আয়াতসমূহ পাঠ করা হত, তারা কাঁদতে কাঁদতে সিজদায় লুটিয়ে পড়ত।।(মারিয়াম ১৯:৪৯-৫৮)

আল্লাহ্ তাঁর প্রেরিত প্রান হরনকারী ফিরিস্তাদেরকেও রাসূল বলেছেন। কারন তারা আল্লাহর নির্দেশে মানুষের মৃত্যু ঘটায়। তাদের উপর আল্লাহ্ যে দায়িত্ব দেন তারা সে দায়িত্ব পালন করেন, তারা নিজ থেকে এই দায়িত্ব সৃষ্টি করেনি। ফলে আমরা বুঝতে পারছি রাসূলের কাজ হলো আল্লাহর নির্দেশ পালন।

وَهُوَ ٱلْقَاهِرُ فَوْقَ عِبَادِهِۦۖ وَيُرْسِلُ عَلَيْكُمْ حَفَظَةً حَتَّىٰٓ إِذَا جَآءَ أَحَدَكُمُ ٱلْمَوْتُ تَوَفَّتْهُ رُسُلُنَا وَهُمْ لَا يُفَرِّطُونَ
আর তিনিই নিজ বান্দাদের উপর ক্ষমতাবান এবং তোমাদের উপর প্রেরণ করেন হিফাযতকারীদেরকে। অবশেষে যখন তোমাদের কারো কাছে মৃত্যু আসে, আমার প্রেরিত রাসূলগন তার মৃত্যু ঘটায়। আর তারা কোন ত্রুটি করে না।(আল-আন’আম ৬:৬১)

সুস্পষ্টভাবে আল্লাহর বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছানো ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই। অর্থাৎ ব্যক্তিগতভাবে বার্তা পৌঁছানোর দায় থেকে মুক্ত। এর পর সকল মুমিনের কর্তব্য হচ্ছে জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর দ্বীন (বিধান) প্রতিষ্ঠা করা। আরবী رِسَٰلَٰت শব্দের অর্থ আল্লাহর বার্তা। এই رِسَٰلَٰت শব্দের মূল শব্দ হচ্ছে رسل অর্থাৎ আল্লাহর বার্তা বহন করে যিনি মানুষের কাছে পৌঁছান সে হচ্ছে রাসূল। রাসূলের অবাধ্য হওয়া মানে আল্লাহর বার্তার /নির্দেশের অবাধ্য হওয়া। এই কাজ যদি রাসূলও করতেন তবে তাকেও শান্তি পেতে হতো। ফলে রাসূলের আনুগত্য করার অর্থই হচ্ছে আল্লাহর বার্তার আনুগত্য করা যা রাসূল করতেন। অর্থাৎ কুরআনের অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্য করতেন।

وَمَا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلْبَلَٰغُ ٱلْمُبِينُ
সুস্পষ্টভাবে বার্তা পৌঁছানো ছাড়া রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নেই। (আল-আনকাবুত ২৯:১৮)
هُوَ ٱلَّذِىٓ أَرْسَلَ رَسُولَهُۥ بِٱلْهُدَىٰ وَدِينِ ٱلْحَقِّ لِيُظْهِرَهُۥ عَلَى ٱلدِّينِ كُلِّهِۦۚ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ شَهِيدًا
তিনি তাঁর রাসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করেছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর একে জয়যুক্ত করার জন্য। সাক্ষী হিসাবে আল্লাহই যথেষ্ট।(আল-ফাতহ ৪৮:২৮)
أَنْ أَقِيمُوا۟ ٱلدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا۟ فِيهِۚ
“তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে বিভেদ সৃষ্টি করো না।”(আশ-শুরা ৪২:১৩)
عَٰلِمُ ٱلْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِۦٓ أَحَدًا
তিনি গায়েব (অদৃশ্যের খবর) জানেন এবং স্বীয় গায়েবের খবর কারো কাছে প্রকাশ করেন না,
إِلَّا مَنِ ٱرْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُۥ يَسْلُكُ مِنۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِۦ رَصَدًا
তাঁর মনোনীত কোন রসূল ব্যতীত। সে ক্ষেত্রে তিনি তার সামনে ও পেছনে প্রহরার ব্যবস্থা করেন,
لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا۟ رِسَٰلَٰتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَىْءٍ عَدَدًۢا
যাতে তিনি এটা জানতে পারেন যে, তারা তাদের রবের রিসালাত পৌঁছিয়েছে কিনা। আর তাদের কাছে যা রয়েছে, তা তিনি পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি প্রতিটি বস্তু গুণে গুণে হিসাব করে রেখেছেন।(আল-জ্বীন ৭২:২৬-২৮)
لَقَدْ أَنزَلْنَآ إِلَيْكُمْ كِتَٰبًا فِيهِ ذِكْرُكُمْۖ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
আমি তো তোমাদের কাছে একটি কিতাব নাযিল করেছি, যাতে তোমাদের (জন্য) উপদেশ রয়েছে। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?(আল-আম্বিয়া ২১:১০)
ٱتَّبِعُوا۟ مَآ أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا۟ مِن دُونِهِۦٓ أَوْلِيَآءَۗ قَلِيلًا مَّا تَذَكَّرُونَ
তোমরা অনুসরণ কর, যা তোমাদের প্রতি পালকের পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য সাথীদের অনুসরণ করো না।(আল-আরাফ ৭:৩)
یٰۤاَیُّہَا الرَّسُوۡلُ بَلِّغۡ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ مِنۡ رَّبِّکَ ؕ وَ اِنۡ لَّمۡ تَفۡعَلۡ فَمَا بَلَّغۡتَ رِسَالَتَہٗ ؕ وَ اللّٰہُ یَعۡصِمُکَ مِنَ النَّاسِ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَا یَہۡدِی الۡقَوۡمَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۶۷﴾
হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা পৌঁছে দাও আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালে না। আর আল্লাহ তোমাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত করেন না।(আল-মা’য়েদা ৫: ৬৭)
إِلَّا بَلَٰغًا مِّنَ ٱللَّهِ وَرِسَٰلَٰتِهِۦۚ وَمَن يَعْصِ ٱللَّهَ وَرَسُولَهُۥ فَإِنَّ لَهُۥ نَارَ جَهَنَّمَ خَٰلِدِينَ فِيهَآ أَبَدًا
আমি কেবল আল্লাহর কাছ থেকে [আমি যা পাই] পৌঁছে দিই- শুধুমাত্র তাঁর রিসালাত।’ যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের অবাধ্য হবে তার স্থায়ী বাসস্থান হবে জাহান্নামের আগুন।(আল-জ্বীন ৭২:২৩)
وَإِذَا تُتْلَىٰ عَلَيْهِمْ ءَايَاتُنَا بَيِّنَٰتٍۙ قَالَ ٱلَّذِينَ لَا يَرْجُونَ لِقَآءَنَا ٱئْتِ بِقُرْءَانٍ غَيْرِ هَٰذَآ أَوْ بَدِّلْهُۚ قُلْ مَا يَكُونُ لِىٓ أَنْ أُبَدِّلَهُۥ مِن تِلْقَآئِ نَفْسِىٓۖ إِنْ أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَىٰٓ إِلَىَّۖ إِنِّىٓ أَخَافُ إِنْ عَصَيْتُ رَبِّى عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيمٍ
আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, ‘এটি ছাড়া অন্য কুরআন নিয়ে এসো। অথবা একে বদলাও’। বল, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোন পরিবর্তনের অধিকার নেই। আমিতো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আযাবের’।(ইউনুস ১০:১৫)
مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدْ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَآ أَرْسَلْنَٰكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا
যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি।(আন-নিসা ৪:৮০)

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সালামুন আলাল মুরছালিন) ছিলেন আল্লাহর রাসূল অর্থাৎ আল্লাহর বার্তাবাহক। আল্লাহর বার্তা আছে কুরআনে। রাসূল আল্লাহর বার্তা পৌঁছানোর জন্য আদিষ্ট ছিলেন,এমনকি যার কাছে এই বানী পৌঁছাবে তার দায়িত্ব হচ্ছে কুরআনের বানী মানুষের কাছে পৌঁছানো। বর্তমানে যেসমস্ত মুমিন নারী-পুরুষ শুধু কুরআনের বানী মানুষের কাছে পৌঁছাবেন তারা প্রত্যেকেই আল্লাহর রাসূল। এই রূপ কাজ পূর্ববর্তী নবীদের সত্যিকারের অনুসারীদের মধ্যে যারা করতো তাদেরকেও আল্লাহ্ রাসূল বলেছেন। (৪৩ :৪৫) ফলে নতুন করে ওহী পৌঁছানোর জন্য নির্বাচিত ব্যক্তি নবী আর আসবেন না কিন্তু রাসূলের ধারা চলমান। এই জন্যই আল্লাহ্ শেষ নবী বলেছেন,শেষ রাসূল বলেননি। আর আল্লাহ্ শুধু পুরুষদের মধ্য থেকে নবী নির্বাচন করেছিলেন।

وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِىٓ إِلَيْهِم مِّنْ أَهْلِ ٱلْقُرَىٰٓۗ أَفَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۗ وَلَدَارُ ٱلْءَاخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তোমার পূর্বে আমি জনপদবাসীদের মধ্য থেকে পুরুষদেরকেই (নবী) হিসেবে পাঠিয়েছি। আমি তাদের কাছে ওহী পাঠাতাম। তবে কি তারা (অবিশ্বাসীরা) পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি এবং দেখেনি যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণতি কেমন ছিল? পরকালের নিবাসই তো মোত্তাকীদের জন্য উত্তম। তবে কি তোমরা বোঝ না? (ইউসুফ ১২:১০৯)
وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِىٓ إِلَيْهِمْۚ فَسْـَٔلُوٓا۟ أَهْلَ ٱلذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
আর আমি তোমার পূর্বে পুরুষ ব্যতীত (নবী) প্রেরণ করিনি যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি, সুতরাং তোমরা যদি না জানো তবে স্মরনিকার(পূর্ববর্তী কিতাবের) অনুসারীদেরকে জিজ্ঞেস কর।(আন-নাহল ১৬:৪৩)
مَا کَانَ مُحَمَّدٌ اَبَاۤ اَحَدٍ مِّنۡ رِّجَالِکُمۡ وَ لٰکِنۡ رَّسُوۡلَ اللّٰہِ وَ خَاتَمَ النَّبِیّٖنَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمًا ﴿٪۴۰﴾
মুহাম্মাদ তোমাদের কোন পুরুষের পিতা নয়; তবে আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী। আর আল্লাহ সকল বিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা আহযাব ৩৪:৪০)
مُحَمَّدٌ رَّسُوۡلُ اللّٰہِ ؕ
মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল।(আল-ফাতহ ৪৮:২৯)
قُلْ أَىُّ شَىْءٍ أَكْبَرُ شَهَٰدَةًۖ قُلِ ٱللَّهُۖ شَهِيدٌۢ بَيْنِى وَبَيْنَكُمْۚ وَأُوحِىَ إِلَىَّ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانُ لِأُنذِرَكُم بِهِۦ
বল, ‘সাক্ষ্য হিসেবে সবচেয়ে বড় বস্তু কী?’ বল, ‘আল্লাহ সাক্ষী আমার ও তোমাদের মধ্যে। আর এ কুরআন আমার কাছে ওহী করে পাঠানো হয়েছে যেন তোমাদেরকে ও যার কাছে এটা পৌঁছবে তাদেরকে এর মাধ্যমে আমি সতর্ক করি।(আল-আন’আম ৬:১৯)
وَسْـَٔلْ مَنْ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ مِن رُّسُلِنَآ أَجَعَلْنَا مِن دُونِ ٱلرَّحْمَٰنِ ءَالِهَةً يُعْبَدُونَ
আমি তোমার পূর্বে যে সব রসূল পাঠিয়েছিলাম তাদেরকে জিজ্ঞেস কর (অর্থাৎ তাদের সত্যিকার অনুসারীদের নিকট যাচাই কর) আমি কি দয়াময় আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ স্থির করেছিলাম যাদের ‘ইবাদাত করতে হবে?(আয-যুখরুফ ৪৩:৪৫)
ٱلَّذِينَ يُبَلِّغُونَ رِسَٰلَٰتِ ٱللَّهِ وَيَخْشَوْنَهُۥ وَلَا يَخْشَوْنَ أَحَدًا إِلَّا ٱللَّهَۗ وَكَفَىٰ بِٱللَّهِ حَسِيبًا
তারা (মুমিগন) আল্লাহর রিসালাত পৌঁছিয়ে দেয় ও তাঁকে ভয় করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না, আর হিসাব গ্রহণকারীরূপে আল্লাহই যথেষ্ট।(আল-আহযাব ৩৩:৩৯)

(সমাপ্ত)

Source link: https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0PymqTVrr6hVcF8La9N7iBws15cLfvLpwMqvPoMBcz9koBcAZsE2xp6CTtiCLjArUl&id=100003737428249

Introduction of Quran

📗 কুরআন থেকে কুরআনের পরিচয়
নিশ্চয়ই এটা সম্মানিত কুরআন (৫৬:৭৭)

লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত (৫৬:৭৮) (৪৩:৪)

নাজিল হয়েছে আল্লাহর পক্ষ হতে (৬৯:৪৩) (৫৬:৮০)

নাজিল হয়েছে জিব্রীলের মাধ্যমে (26-193)

নাজিল হয়েছে রাসুল সাঃ এর অন্তরে (2-97) (26-194)

নাজিল হয়েছে আরবি ভাষায় (26-195)

নাজিল হয়েছে ধীরে ধীরে (25-32) (17-106)

কুরআন রাসূলের মুখের বানি (69-40) (81-19)

কুরআন নাজিল হয়েছে রমজান মাসে (2-185)

কুরআন নাজিল হয়েছে সম্মানিত রাত্রে (44-3)

কুরআন নাজিল হয়েছে বরকতময় রাত্রে (97-1)

কুরআন আল্লাহ্ জমা করেছেন (75-17)

আল্লাহ্ নিজেই ব‍্যাখ‍্যা করেছেন (75-19)

আল্লাহ্ নিজেই তফসীর করেছেন (25-33)

আল্লাহ্ কিতাব নাজিল করেছেন (6-155)(4-105+236)

আল্লাহ্ কুরআন নাজিল করেছেন (6-19) (12-3)

এটাই কুরআন ও কিতাব (27-1)(41-2+3)(43-2+3)

এই কিতাব আল্লাহ্ নাজিল করেছেন এতে কোন সন্দেহ নেই (32-2)(2-2)

এই কুরআন মানা আল্লাহ্ ফরজ করেছেন (28-85)

মুনকারীনে কুরআন হওয়া হারাম (21-50)

এই কুরআন একমাত্র হেদায়েতের কিতাব (2-2) (17-9)

দীনের জন্য কুরআন ছাড়া অন‍্য কিতাব মানা শির্ক (2-79) (3-78)

এভাবেই আল্লাহ্ আমাদের জন্য একমাত্র হেদায়েতের বানি কুরআনুল কারীম হেফাজত করেছেন (15-9)

আল্লাহ্ বলেন, তিনি যা করেন, তৎসম্পর্কে তিনি জিজ্ঞাসিত হবেন না এবং তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে।
(সূরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ২৩)

আমরা আল্লাহর দাস। আমাদের একটাই কাজ শুধু শুনলাম ও মানলাম । আল্লাহ্ বলেন, মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের দিকে তাদেরকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলেঃ আমরা শুনলাম ও আদেশ মান্য করলাম। তারাই সফলকাম। (আন-নূর, আয়াতঃ ৫১)

কুরআন ব্যাখ্যার দায়িত্ব একমাত্র আল্লাহর (৭৫:১৯)

আর আল্লাহ কুরআনেই কুরআনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন! (৩:১৩৮)

বার্তাবাহক এর দায়িত্ব বার্তা (কুরআন) পৌছে দেন। (৫:৬৭)

আমার প্রতি যা নাযিল করা হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আর আমি একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র’।(৪৬:৯)

বিধান একমাত্র আল্লাহরই। (১২:৪০)

তাঁর সিদ্ধান্তে তিনি কাউকে শরীক করেন না।(১৮:২৬)

আল্লাহ বলেন, আমি কিতাবে কোন ত্রুটি করিনি। (৬:৩৮)

পড় তোমার রবের নামে। (৯৬:১)

এই সেই কিতাব, যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য হিদায়াত। ২:২

বিধান দাতা আল্লাহ, ১২;৪০/১৬;৫১

দ্বীনের বিধান হল এক মাত্র কুরআন ২১:১০/২৯:৫১/১২:১১১/৬৮:৪৪/২৯:৫১/৬:১১৪,১৫৫/২০:৯৯,১০১/ ৩৯:২৩/৬:১৫৫/৫:৪৬/৭:৩/৭;৩৬/৫৪:১৭,২২,৩২,৪০/৮১:২৭/১৭৯/৭২:১৭/

এই কুরআনকেও আল্লাহ হাদীস বলেছেন। ৩৯:২৩/১২:১১১/৬৮:৪৪/৪৫:৬/৭:৩৬/৫৬;৮১/৫৬;৮২/

কুরআনের বাইরে যা কিছু দ্বীনের বিধান হিসেবে আছে তা হল লাহুয়াল হাদীস (অবান্তর হাদীস)। ৩১:৬/২:৭৯/৩:৭৮

নাজিলকৃত বিধান দ্বারা যারা দ্বীনের বিষয়ে ফয়সালা করে না তারা জালেম,ফাসেক, কাফের, ৫:৪৪,৪৫,৪৭

নাজিলকৃত বিধান দিয়ে ফয়সালা দিতে হবে, ৫;৪৮

কুরআন হল সর্ব শ্রেষ্ঠ সত্য হাদীস,৩৯:২৩

আল্লাহর নেয়ামতের হাদীস প্রকাশ করুন ৯৩;১১

আল্লাহর চাইতে সত্য হাদীস কার? ৪;৮৭

কুরআন যথেষ্ঠ ২৯:৫১

নবী নিজেই কুরআন লিপিবদ্ধ করেন ৷

নবী নিজেই কুরআন লিপিবদ্ধ করেন ৷

নবীর জন্মের বহু আগ থেকে লিখন পদ্ধতি চালু হয়,
কুরআনের আগে বা পরে তিনি অন্য কোন কিতাব নিজ হাতে লেখেনি, শুধু কুরআনই লিখেছেন ৷ এর আগে বা পরে কোন গ্রন্থ্য নয়!
প্রমানগুলো ভালকরে লক্ষ করুন…….

① প্রথম প্রমান__

সূরা আল আনকাবূত (العنكبوت), আয়াত: ৪৮
ইতিপূর্বে (কুরআনের আগে) আপনি কোন কিতাব পড়তেন না এবং স্বহস্তে লিখতেনও না, যদি এমনটি হতো, তাহলে মিথ্যাচারীরা সন্দেহ পোষণ করতে পারতো।

② দ্বিতীয় প্রমান_

সূরা আল আনকাবূত (العنكبوت),আয়াত:৪৫
আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং সালাত প্রতিষ্টা করুন। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর ৷

★ কাগজে লিপিবদ্ধ করার আগে নবীজিকে কোন কিতাব থেকে তেলাওয়াত করতে বলেছেন???

☞ লেখা বা লিখিত ব্যাপারটা নবীর পুর্ব থেকে প্রচলন ছিল! এবং আল্লাহ লেখার ব্যাপারে বলেছেন ৷

③ তৃতীয় প্রমান দেখুন…..
২:২৮২ আয়াতে ঋনগ্রহিতা, দাতার ঋন লিখে রাখার নির্দেশ!!
সুরা আরাফ,৭ নাম্বার আয়াতে তাওরাত ও ইঞ্জিল গ্রন্থের লিখিত রুপের কথা বলা হয়ে ৷ লিখিত না হলে সেগুলো ছিল কিভাবে?

আরও প্রমানের জন্য আয়াতগুলো মন দিয়ে পড়ুন ৷ আয়াতে লিখন পদ্ধতির ব্যাবহার পরিস্কার_

ⓐ সূরা আল কাহফ (الكهف), আয়াত: ১০৯
বলুনঃ আমার পালনকর্তার কথা, লেখার জন্যে যদি সমুদ্রের পানি কালি হয়, তবে আমার পালনকর্তার কথা, শেষ হওয়ার আগেই সে সমুদ্র নিঃশেষিত হয়ে যাবে। সাহায্যার্থে অনুরূপ আরেকটি সমুদ্র এনে দিলেও।

ⓑ সূরা আল আম্বিয়া (الأنبياء), আয়াত: ১০৪
সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নেব, যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করব। আমার ওয়াদা নিশ্চিত, আমাকে তা পূর্ণ করতেই হবে।

ⓒ সূরা আল হাজ্জ্ব (الحجّ), আয়াত: ৭০
তুমি কি জান না যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু আকাশে ও ভুমন্ডলে আছে এসব কিতাবে লিখিত আছে। এটা আল্লাহর কাছে সহজ।

Fb

Quran vs Hadith

🟩🟩দেশের ৬ জন বিজ্ঞ আলেমদের কাছে আমার প্রশ্ন, “বর্তমানে যেসব সহীহ হাদীসের কিতাব পাওয়া যাচ্ছে সব কি আল্লাহর কাছ থেকে নাজিল হয়েছে? আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল কি তা অনুমোদন করেছেন?”

✅✅আমার উত্তর: না (রেফারেন্স:- সমগ্র কুরআনে এমন একটি আয়াতও নেই যেখানে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অনুমোদন করেছেন, বরং নিষেধ করেছেন, ইসলামের উৎস হিসেবে কুরআনের বাইরে সহীহ হাদীসের কোনো অজানা বই অনুসরন করতে , রেফারেন্স: = (2:79 ,3:78,5:3,7:3)

🟩কুরআন আল্লাহর দেওয়া সর্বশেষ গ্রন্থ এবং কুরআন বাদে কিছুই অনুসরন করা যাবে না আল্লাহ বা রসুল সঃ এর অনুগত্য করতে।দলিল 5:3 & 7:3

সূরা ৫. আল-মায়েদা আয়াত নং ৩
অনুবাদঃআজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে।

সূরা ৭. আল-আ’রাফআয়াত নং ৩
অনুবাদঃ তোমাদের প্রতি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তা অনুসরণ কর এবং তাকে ছাড়া অন্য অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা সামান্যই উপদেশ গ্রহণ কর। -(আল-বায়ান)

🟩প্রত্যেক নবিকে সঠিক বিচারের জ্ঞান দেওয়া হয়েছে যাকে বলা হয় হিকমাহ!দলিল 4:54

সূরা ৪. আন-নিসা আয়াত নং ৫৪
অনুবাদঃ বরং তারা কি লোকদেরকে হিংসা করে, আল্লাহ স্বীয় অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তার কারণে? তাহলে তো আমি ইবরাহীমের বংশধরকে কিতাব ও হিকমত দান করেছি এবং তাদেরকে দিয়েছি বিশাল রাজত্ব। -(আল-বায়ান)

🟩কুরআনের খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করার জন্য আল্লাহ কোন বই দেননি!দলিল 10:37

সূরা ১০. ইউনুস আয়াত নং ৩৭
অনুবাদঃ এ কুরআন তো এমন নয় যে, আল্লাহ ছাড়া কেউ তা রচনা করতে পারবে; বরং এটি যা তার সামনে রয়েছে, তার সত্যায়ন এবং কিতাবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা, যাতে কোন সন্দেহ নেই, যা সৃষ্টিকুলের রবের পক্ষ থেকে। -(আল-বায়ান)

🟩কেউ যদি কুরআনের বাইরে আল্লাহর নামে কিছু চালিয়ে যায় তবে তা মিথ্য।দলিল 3:78-79 এবং 2:79,

সূরা ৩. আলে-ইমরান আয়াত নং ৭৮-৭৯
অনুবাদঃ তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা নিজদের জিহবা দ্বারা বিকৃত করে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা সেটা কিতাবের অংশ মনে কর, অথচ সেটি কিতাবের অংশ নয়। তারা বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, অথচ তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়। আর তারা আল্লাহর উপর মিথ্যা বলে, অথচ তারা জানে। –
কোন মানুষের জন্য সংগত নয় যে, আল্লাহ তাকে কিতাব, হিকমাত ও নবুওয়াত দান করার পর সে মানুষকে বলবে, ‘তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে আমার বান্দা হয়ে যাও’। বরং সে বলবে, ‘তোমরা রববানী হও। যেহেতু তোমরা কিতাব শিক্ষা দিতে এবং তা অধ্যয়ন করতে’। -(আল-বায়ান)

সূরা ২. আল-বাকারা আয়াত নং ৭৯
অনুবাদঃ সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস। -(আল-বায়ান)

🟩কুরআনকে অন্য কোন গ্রন্থের সাথে মিশিয়ে একত্রে গ্রহণ করা যাবে না এবং কোন দলকে অনুসরণ করা যাবে না।দলিল 3:71, 3:100

সূরা ৩. আলে-ইমরান আয়াত নং ৭১
অনুবাদঃ হে কিতাবীরা, কেন তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করছ এবং সত্যকে গোপন করছ, অথচ তোমরা তা জান? -(আল-বায়ান)

সূরা ৩. আলে-ইমরান আয়াত নং ১০০
অনুবাদঃ হে মুমিনগণ, যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে, তোমরা যদি তাদের একটি দলের আনুগত্য কর, তারা তোমাদের ঈমানের পর তোমাদেরকে কাফির অবস্থায় ফিরিয়ে নেবে। -(আল-বায়ান)

🟩আলেম সমাজ তাদের অঙ্গীকার ভুলে গেছে সম্ভবত। দলিল 3:187

সূরা ৩. আলে-ইমরান আয়াত নং ১৮৭
অনুবাদঃ আর স্মরণ কর, যখন আল্লাহ কিতাবপ্রাপ্তদের অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে, ‘অবশ্যই তোমরা তা মানুষের নিকট স্পষ্টভাবে বর্ণনা করবে এবং তা গোপন করবে না’। কিন্তু তারা তা তাদের পেছনে ফেলে দেয় এবং তা বিক্রি করে তুচ্ছ মূল্যে। অতএব তারা যা ক্রয় করে, তা কতইনা মন্দ! -(আল-বায়ান)

🟩কুরআন বুঝার পর কুরআন দিয়ে বিচার করে তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা যায়।দলিল 4:47

সূরা ৪. আন-নিসা আয়াত নং ৪৭
অনুবাদঃ হে কিতাবপ্রাপ্তগণ, তোমরা ঈমান আন, তার প্রতি যা আমি নাযিল করেছি তোমাদের সাথে যা আছে তার সত্যায়নকারীরূপে। আমি চেহারাসমূহকে বিকৃত করে তা তাদের পিঠের দিকে ফিরিয়ে দেয়া অথবা তাদেরকে লা‘নত করার পূর্বে যেমনিভাবে লা‘নত করেছি আসহাবুস্ সাবতকে* । আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়েই থাকে। -(আল-বায়ান)

সূরা ৪. আন-নিসা আয়াত নং ১৩৬
অনুবাদঃ হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে। -(আল-বায়ান)

🟩যদি কেউ কুরআন অনুসরণ না করে শুধু কালেমা পাঠ করে এবং সাক্ষ্য দেয় যে তিনি রাসুল (সাঃ) এর উম্মত, তাহলে তিনি জান্নাত পাবেন এমন গ্যারান্টি নিশ্চিতভাবে মিথ্যা, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হয়ে আমাদেরকে জান্নাত দেওয়া হবে না।দলিল 4:123

সূরা ৪. আন-নিসা আয়াত নং ১২৩
অনুবাদঃ না তোমাদের আশায় এবং না কিতাবীদের আশায় (কাজ হবে)। যে মন্দকাজ করবে তাকে তার প্রতিফল দেয়া হবে। আর সে তার জন্য আল্লাহ ছাড়া কোন অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। -(আল-বায়ান)

Saim Shahariar Saim Shahariar

Fb

About Namaz and Salat

প্রচলিত নামাজের ষ্ট্রাকচার নিয়ে কিছু প্রশ্ন সত্যিই চিন্তা জাগানিয়া:

(I) প্রচলিত ওজু কি আল্লাহর বিধান না মানুষ্য তৈরী? আল্লাহ বলেছেন মোমিন/বিশ্বাসীরাই পবিত্র, ৫:৬, ৪:৪৩ তো সার্বক্ষনিক পরিচ্ছন্নতার আয়াত।
(II) কিবলা কি আল্লাহর দেয়া? পূর্ব পশ্চীমমূখি হওয়াতে তো কোন পূন্য নেই ২:১৭৭ পূর্ব পশ্চিম ও সব দিকইতো আল্লাহর ২:১১৫। আল্লাহর অবস্থান তো সকল পৃথিবী ও আকাশ মন্ডলী পরিবেষ্টন করে আছে ২:২৫৫।
(III) ইমামের পিছনে এক্তাদা কি আল্লাহ নির্দেশিত? আল্লাহ আমাদের হৃদয়ের কথা শুনেন ও জানেন, ইমাম আমার হয়ে আল্লাহর সাথে ভায়া মিডিয়া হয়ে আমার মনের কথা বলবেন? আল্লাহর কাছে চাওয়া পাওয়া সবই তো সঙ্গোপনে ৭:৫৫।
(IV) তাকবিরে তাহরিমা তো কোরআনের কোন শব্দ না। আল্লাহুআকবার superlative degree অথচ আল্লাহর তুলনা শুধূই তিনি নিজে। আল্লাহুআকবার কথাটা কি কোরআনে কোথাও আছে? এর অর্থ আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ বা আল্লাহ সবচেয়ে বড়। সর্বশ্রেষ্ঠ মানে কাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ? অন্য গডদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ? সবচেয়ে বড় মানে অন্য সকল গডদের চেয়ে বড়? শব্দে তুলনা রয়েছে অথচ আল্লাহর কোন তুলনা চলে না। আল্লাহর তুলনা তিনি নিজেই। সূরা ইখলাস আয়াত
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ ﴿٤﴾
৪. তাঁর তুলনা শুধু তিনিই)।
(V) আল্লাহর দেয়া দিক নিদের্শনা আল্লাহকে শোনানো কি ঠিক? নামাজে আল্লাহকে বলি ‘তোমাকে দিয়েছি কাউসার….’ আল্লাহকে শব্দ করে বা ফিস ফিস করে শুনাই ‘তুমি কি দেখ নাই আমি হস্তিবাহিনীকে কি করেছি?…’।
(VI) তাশাহুদ – হে নবী সম্মোধন করে প্রতি বৈঠকে সালাম দেই, নবীকি জীবিত? আর সাক্ষ্যও দেই, আল্লাহ কি আমার সাক্ষ্য চেয়েছেন? আমি সাক্ষ্য দেয়ার কে? সাক্ষী তো দিতে হয় অবলোকনের পরে। আমি কি অবলোকন করেছি?
(VII) সালাম ফেরানোতে আমরা ফেরেশতাদের সালাম দিয়ে নামাজ শেষ করি অথচ তারা আজ্ঞাবহ মাত্র তারা জান্নাতিদের সালাম দিবে সালামুন আলাইকুম বলে।(সুরা রাদ ১৩-২৪)
(VIII) একজন চিন্তকের মনোভাব উল্লেখ করছি: মাত্র ৭ টা পয়েন্ট? রুকু – সিজদা? রুকুর পরে সিজদা? না সিজদার পর রুকু? রুকু ১টা, সিজদা ২ টা কেন? এরকম তো হাজার হাজার প্রশ্ন আমার মনে? নামাজই যদি বেহেশ্তের চাবি হয় তাহলে তার ডিটেইল বর্ণনা নেই কেন? আমার নামাজ কেন হুজুরের পিছনে? হুজুর কী আমার জন্য জবাবদিহি করবেন? না করলে আমি তার পিছনে কেন?
…. উফ…. এরকম লিখতে গেলে রাত ভোর হয়ে যাবে… তবু জিজ্ঞাসা শেষ হবে না।
… আমি দিশেহারা …
… এজন্য আমি একমাত্র আল্লাহরই সাহায্য চাই ..

Allah Subhanahu Wa Ta’ala said:

وَلَا تَقۡفُ مَا لَيۡسَ لَكَ بِهِۦ عِلۡمٌ ۚ إِنَّ ٱلسَّمۡعَ وَٱلۡبَصَرَ وَٱلۡفُؤَادَ كُلُّ أُوْلَٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡئُولًا

“আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না, যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই। কান, চোখ আর অন্তর- এগুলোর সকল বিষয়ে অবশ্যই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
(QS. Al-Isra’ 17: Verse 36)

✔️Salat ok Murad

আল কুরআনে সালাত অর্থ কি?
সালাত বলতে কি বুঝায়?
মুরাদ বিন আমজাদ
০+০+০+০+০
অনেকদিন যাবত অনলাইনে অফলাইনে আমাকে সালাত সম্পর্কে কুরআন কি বলে সে সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন করা হচ্ছিল। আমি তাদের কোন জবাব দেইনি। আজকে যে আলোচনা করছি সেটা আমার কোরআন থেকে গবেষণা মাত্র। আমার গবেষণা চূড়ান্ত নয়। আমার ভুল হলে কোরআন থেকে দেখিয়ে দিলে সংশোধন করব ইনশাল্লাহ![উল্লেখ্য যে, এই লেখা দ্বারা আমি কোন আনুষ্ঠানিক সালাতকে অস্বীকার করছি না না বুঝে বাজে মন্তব্য করা থেকে দূরে থাকলে ভালো হয়।]

সর্বপ্রথম একথা বুঝে নিন যে সালাত অর্থ কি এটা ডিকশনারি থেকে জানা যাবে না। আল কুরআন থেকে জানতে হবে যেমন,build a house “একটি ঘর তৈরি কর” এখন এই ঘর তৈরি করার বিষয় আপনাকে ডিকশনারিতে পাবেন না বা থাকবে না الصلاة একটি ইসিম বা নাম। এটা প্রত্যেক ভাষায় সালাত নামেই বলতে হবে।
সালাত বুঝার জন্য কোন ডিকশনারির দরকার নাই। প্রত্যেক জবানে সালাত কে সলাতই বলতে হবে। সালাত দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন আল্লাহ তা কোরআন থেকে জানতে হবে। আসুন আমরা জেনে নিই আল্লাহ পাক সালাত দ্বারা কি বুঝিয়েছেন।
62:9

يٰٓأَيُّهَا الَّذِينَ ءَامَنُوٓا إِذَا نُودِىَ لِلصَّلٰوةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلٰى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

হে মুমিনগণ, যখন জুমু‘আর দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর জিকিরের/ স্মরণের দিকে ধাবিত হও। আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে।
উক্ত আয়াতে সালাতের জন্য আহ্বান করে বলা হয়েছে জিকিরের দিকে ধাবিত হও। বুঝা গেল সালাত মূলত জিকির। বিষয়টি আরো ক্লিয়ার হয়ে যায় দৃড় বিশ্বাস জন্মায় আয়াত নিম্নোক্ত আয়াতটি।
20:14
إِنَّنِىٓ أَنَا اللَّهُ لَآ إِلٰهَ إِلَّآ أَنَا۠ فَاعْبُدْنِى وَأَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكْرِىٓ
‘নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; সুতরাং আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর’।
বুঝা যাচ্ছে জিকিরুল্লাহই/ আল্লাহর স্মরণই সালাত। যদি উপর্যুক্ত আয়াত আপনার বিবেক না মানে তাহলে পরবর্তী আয়ত স্পষ্ট হয়ে গেল যে,জিকুরিল্লাহই সালাত।

এখন দেখার দরকার যে জিকিরুল্লাহ কি? আসুন দেখি জিকির দ্বারা কি বুঝায় বা তার উদ্দেশ্য কি?
জিকির দ্বারা উদ্দেশ্য আল কুরআন ।
65:10
قَدْ أَنزَلَ اللَّهُ إِلَيْكُمْ ذِكْرًا
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাছে পাঠিয়েছেন একটি উপদেশ তথা কুরআন।

আরো দেখুন,
41:41

إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بِالذِّكْرِ لَمَّا جَآءَهُمْ ۖ وَإِنَّهُۥ لَكِتٰبٌ عَزِيزٌ

নিশ্চয় যারা بِالذِّكْرِ উপদেশ [কুরআন] আসার পরও তা অস্বীকার করে [ তাদেরকে অবশ্যই এর পরিণাম ভোগ করতে হবে]। আর এটি নিশ্চয় এক সম্মানিত গ্রন্থ।
অনুরূপ আরো দেখুন:
21:50

وَهٰذَا ذِكْرٌ مُّبَارَكٌ أَنزَلْنٰهُ ۚ أَفَأَنتُمْ لَهُۥ مُنكِرُونَ

আর এটা বরকতময় ذِكْرٌ উপদেশ, কুরআন যা আমি নাযিল করেছি। তবুও কি তোমরা তা অস্বীকার করবে?

37:3
فَالتّٰلِيٰتِ ذِكْرًا

আর ذِكْرًا উপদেশ গ্রন্থ (আসমানী কিতাব) তিলাওয়াতকারীদের;

কুরআনকে জিকির বলা হয়েছে এটা যদি না মানেন তো কোরআনের মধ্যে জিকির আছে এটা অস্বীকার করবেন কি করে দেখুন:
38:1

صٓ ۚ وَالْقُرْءَانِ ذِى الذِّكْرِ

সোয়াদ; কসম উপদেশপূর্ণ কুরআনের।
একথা ঠিক যে জিকির শব্দের অর্থ শুধু কুরআন তা নয় জিকির শব্দের অর্থ উপদেশ আবার নসিহাত অথবা স্মরণ হতে পারে। তবে সালাত যে জিকিরের কথা বলে সেটা হল কোরআন। কারণ কোরআনের একটি গুণবাচক নাম জিকির।
এ বিষয়ে আরো আয়াত দেখে নিতে পারেন সেখানে জিকের মানে কোরআনে কি বলা হয়েছে দেখুন:
36:69

وَمَا عَلَّمْنٰهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنۢبَغِى لَهُۥٓ ۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْءَانٌ مُّبِينٌ

আমি রাসূলকে কাব্য শিখাইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো কেবল এক উপদেশ ও স্পষ্ট কুরআন মাত্র।
36:11
إِنَّمَا تُنذِرُ مَنِ اتَّبَعَ الذِّكْرَ وَخَشِىَ الرَّحْمٰنَ بِالْغَيْبِ ۖ فَبَشِّرْهُ بِمَغْفِرَةٍ وَأَجْرٍ كَرِيمٍ

তুমি তো কেবল তাকেই সতর্ক করবে যে الذِّكْرَ উপদেশ(কুরআন) মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।
3:58
ذٰلِكَ نَتْلُوهُ عَلَيْكَ مِنَ الْءَايٰتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيم
উপদেশ(কুরআন) মেনে চলে এবং না দেখেও পরম করুণাময় আল্লাহকে ভয় করে। অতএব তাকে তুমি ক্ষমা ও সম্মানজনক পুরস্কারের সুসংবাদ দাও।

ذٰلِكَ نَتْلُوهُ عَلَيْكَ مِنَ الْءَايٰتِ وَالذِّكْرِ الْحَكِيمِ

এটি আমি তোমার উপর তিলাওয়াত করছি, আয়াতসমূহ ও প্রজ্ঞাপূর্ণ উপদেশ(কুরআন) থেকে।
54:25
أَءُلْقِىَ الذِّكْرُ عَلَيْهِ مِنۢ بَيْنِنَا بَلْ هُوَ كَذَّابٌ أَشِرٌ
‘আমাদের মধ্য থেকে কি তার ওপরই উপদেশবাণী পাঠানো হয়েছে ? বরং সে চরম মিথ্যাবাদী অহঙ্কারী’।
68:51
وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصٰرِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُۥ لَمَجْنُونٌ

আর কাফিররা যখন উপদেশবাণী শুনে তখন তারা যেন তাদের দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়ে ফেলবে, আর তারা বলে, ‘এ তো এক পাগল’।
68:52
وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعٰلَمِينَ
আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী(কুরআন)।
43:5
أَفَنَضْرِبُ عَنكُمُ الذِّكْرَ صَفْحًا أَن كُنتُمْ قَوْمًا مُّسْرِفِينَ
তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি, এ কারণে কি আমি তোমাদের কাছ থেকে এ উপদেশবাণী সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নেব?

জিকিরের একটি অর্থ হলো স্মরণিকা অর্থাৎ কোরআন স্মরণ করে কোরআনের জিকিরের মাধ্যমে সালাত প্রতিষ্ঠা করা তার মানে কোরআন বুঝে বুঝে তদঅনুযায়ী আমল করাই সালাত।
চলবে ইনশাল্লাহ……….!

Quranic Duas(মুরাদ বিন আমজাদ)

কবুলকৃত দোয়া সমূহ (কোরআন থেকে)🤲
🤲 রবের নিকট আত্নসমর্পণ
🤲 রব এর নিকট ক্ষমা/চাওয়ার দোয়া
🤲 মাতা-পিতার জন্য দোয়া
🤲 সন্তানদের জন্য দোয়া
🤲 পরিবারের জন্য দোয়া
🤲 জ্ঞান অর্জনের জন্য দোয়া
🤲 সাহস সঞ্চার করার দোয়া
🤲 রিজিকের বৃদ্ধির জন্য দোয়া
🤲 যানবাহনে আরোহন ও অবতারনের দোয়া
🤲 নেককারদের সাথে অন্তর্ভুক্তির দোয়া
🤲 কেহ মিথ্যাবাদী দোষারোপ করলে দোয়া
🤲 অত্যাচারী কাফের/দুশমনের বিরুদ্ধে দোয়া
🤲 জাহান্নাম থেকে বাঁচার দোয়া
🤲 জাহান্নামি/কাফেরদের আর্তনাদ
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।।।
🤲 রবের নিকট আত্নসমর্পণঃ
◾‘আমি সকল সৃষ্টির রবের কাছে নিজকে সমর্পণ করলাম’। (২ঃ১৩১)
◾‘নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্য, যিনি সকল সৃষ্টির রব’। (৬ঃ১৬২)
◾নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। (২ঃ১৫৬)
◾‘হে আমার রব, আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার কাছে পানাহ চাই’। আর হে আমার রব, আমার কাছে তাদের উপস্থিতি হতে আপনার কাছে পানাহ চাই।’(২৩ঃ৯৭-৯৮)
◾হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে। (৬০ঃ৪, ইব্রাহীম আঃ)
◾‘হে আমার রব, নিশ্চয় আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই নাযিল করবেন, আমি তার মুখাপেক্ষী’। (২৮ঃ২৪, মূসা আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের পক্ষ থেকে কবূল করুন। নিশ্চয় আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী’। (২ঃ১২৭, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। (২ঃ১২৮, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত’। (২ঃ১৩৬)
◾‘আমাদের রব! আল্লাহর কসম! আমরা মুশরিক ছিলাম না’। (৬ঃ২৩)
◾‘নিশ্চয় আমি নিবিষ্ট করেছি আমার চেহারা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্য, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’। (৬ঃ৭৯)
◾‘আমি আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম এবং আমার অনুসারীরাও’। (৩ঃ২০)
◾হে আমাদের রব, আমাদেরকে পরিপূর্ণ ধৈর্য দান করুন এবং মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে মৃত্যু দান করুন।’ (৭ঃ১২৬)
◾‘আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার নিকট তাওবা করলাম এবং আমি মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’ (৭ঃ১৪৩)
◾হে আমার রব, আমি তাড়াতাড়ি করে আপনার নিকট এসেছি, যাতে আপনি আমার উপর সন্তুষ্ট হন’। (২০ঃ৮৪)
◾‘আমার রব, ক্ষমা করুন আমাকে ও আমার ভাইকে এবং আপনার রহমতে আমাদের প্রবেশ করান। আর আপনিই রহমকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। (৭ঃ১৫১)
◾‘হে আমার রব, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই তা চাওয়া থেকে আমি অবশ্যই আপনার আশ্রয় চাই। আর যদি আপনি আমাকে মাফ না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’। (১১ঃ৪৭)
◾‘অবশ্যই আমরা তো আমাদের রবের দিকেই ফিরে যাব।’(২৬ঃ৫০)
◾আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’ (২৬ঃ১২৭)
◾‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নিজের প্রতি যুলম করেছি। আমি সুলাইমানের সাথে সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করলাম’। (২৭ঃ৪৪, রানী বিলকিস)
◾‘হে আমার রব, আপনি চাইলে ইতঃপূর্বে এদের ধ্বংস করতে পারতেন এবং আমাকেও। আমাদের মধ্যে নির্বোধরা যা করেছে তার কারণে কি আমাদেরকে ধ্বংস করবেন? এটাতো আপনার পরীক্ষা ছাড়া কিছু না। এর মাধ্যমে যাকে চান আপনি পথভ্রষ্ট করেন এবং যাকে চান হিদায়াত দান করেন। আপনি আমাদের অভিভাবক। সুতরাং আমাদের ক্ষমা করে দিন এবং আপনি উত্তম ক্ষমাশীল। (৭ঃ১৫৫)
◾‘হে আমার রব, আপনার নিকট দো‘আ করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি’। (১৯ঃ৪)
◾‘যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনিই আমাকে হিদায়াত দিয়েছেন।’ ‘আর যিনি আমাকে খাওয়ান এবং পান করান’। ‘আর যখন আমি অসুস্থ হই, তখন যিনি আমাকে আরোগ্য করেন’। ‘আর যিনি আমার মৃত্যু ঘটাবেন তারপর আমাকে জীবিত করবেন’। ‘আর যিনি আশা করি, বিচার দিবসে আমার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেবেন’। (২৬ঃ৭৮-৮২, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত’। (২৬ঃ২১৬)
◾‘আমার কর্ম আমার, আর তোমাদের কর্ম তোমাদের। আমি যা আমল করি তোমরা তা থেকে মুক্ত এবং তোমরা যা আমল কর আমি তা থেকে মুক্ত’। (১০ঃ৪১)
◾হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি জানেন, যা আমরা গোপন করি এবং যা প্রকাশ করি, আর কোন কিছু আল্লাহর নিকট গোপন নেই, না যমীনে না আসমানে। (১৪ঃ৩৮)
◾তিনিই আল্লাহ, আমার রব। আর আমি আমার রবের সাথে কাউকে শরীক করি না’। (১৮ঃ৩৮)
◾‘নিশ্চয় আমি আল্লাহকে সাক্ষী রাখছি আর তোমরা সাক্ষী থাক যে, আমি অবশ্যই তা থেকে মুক্ত যাকে তোমরা শরীক কর, (১১ঃ৫৪)
◾‘আমি অবশ্যই তাওয়াক্কুল করেছি আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর উপর, প্রতিটি বিচরণশীল প্রাণীরই তিনি নিয়ন্ত্রণকারী। নিশ্চয় আমার রব সরল পথে আছেন’। (১১ঃ৫৬)
◾আমি আমার সাধ্যমত সংশোধন চাই। আল্লাহর সহায়তা ছাড়া আমার কোন তওফীক নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি এবং তাঁরই কাছে ফিরে যাই’। (১১ঃ৮৮)
◾আল্লাহ সে সব থেকে অতিপবিত্র ও মহান, যা তারা আরোপ করে, (৩৭ঃ১৫৯)
◾তারা যা আরোপ করে, আসমানসমূহ ও যমীনের রব এবং আরশের রব তা থেকে পবিত্র-মহান। (৪৩ঃ৮২)
◾অতএব আল্লাহরই জন্য সকল প্রশংসা, যিনি আসমানসমূহের রব, যমীনের রব ও সকল সৃষ্টির রব। (৪৫ঃ৩৬)
◾যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, সবই আল্লাহর জন্য পবিত্রতা ঘোষণা করে। বাদশাহী তাঁরই এবং প্রশংসা তাঁরই। তিনি সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। (৬৪ঃ১)
◾‘পবিত্র মহান আমার রব! (১৭ঃ৯৩)
◾‘পবিত্র মহান আমাদের রব! আমাদের রবের ওয়াদা অবশ্যই কার্যকর হয়ে থাকে’। (১৭ঃ১০৮)
◾আপনারই আমরা ইবাদাত করি এবং আপনারই নিকট আমরা সাহায্য চাই। (১ঃ৫)
◾অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’ (৪১ঃ৩৩)
◾সৃষ্টিকুলের রবের নিকট আত্মসমর্পণ করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি’। (৪০ঃ৬৬)
◾‘আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, (৯ঃ৫৯)
◾‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক’! (৩ঃ১৭৩)
◾‘আমার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই। আমি তাঁরই উপর তাওয়াক্কুল করেছি। আর তিনিই মহাআরশের রব’। (৯ঃ১২৯)
◾সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ মহাপবিত্র, মহিমান্বিত’। (২৭ঃ৮)
◾আল্লাহ মহান, যিনি সকল সৃষ্টির রব। (৭ঃ৫৪)
🤲 রব এর নিকট ক্ষমা/চাওয়ার দোয়াঃ
◾হে আমাদের রব! আমরা আপনারই কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। (২ঃ২৮৫)
◾হে আমাদের রব! আমরা যদি ভুলে যাই, অথবা ভুল করি তাহলে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। (২ঃ২৮৬)
◾হে আমাদের রব, আমাদের উপর বোঝা চাপিয়ে দেবেন না, যেমন আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। (২ঃ২৮৬)
◾হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বহন করাবেন না, যার সামর্থ্য আমাদের নেই। আর আপনি আমাদেরকে মার্জনা করুন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আর আমাদের উপর দয়া করুন। (২ঃ২৮৬)
◾হে আমাদের রব, আপনি হিদায়াত দেয়ার পর আমাদের অন্তরসমূহ বক্র করবেন না এবং আপনার পক্ষ থেকে আমাদেরকে রহমত দান করুন। নিশ্চয় আপনি মহাদাতা। (৩ঃ৮)
◾‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’। (৩ঃ১৬)
◾‘হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’। (৩ঃ২৬)
◾হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন। (২ঃ২০১)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে রয়েছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অনুসরণ করে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আপনি তাদেরকে রক্ষা করুন’। (৪০ঃ৭)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে আমাদের সীমালঙঘন ক্ষমা করুন এবং অবিচল রাখুন আমাদের পাসমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন’। (৩ঃ১৪৭)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা নিজদের উপর যুলম করেছি। আর যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদেরকে দয়া না করেন তবে অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হব’। (৭ঃ২৩)
◾হে আসমানসমূহ ও যমীনের সষ্টা! আপনিই দুনিয়া ও আখিরাতে আমার অভিভাবক। আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দিন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন (১২ঃ১০১, ইউসুফ আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন এক রাজত্ব দান করুন যা আমার পর আর কারও জন্যই প্রযোজ্য হবে না। নিশ্চয়ই আপনি বড়ই দানশীল। (৩৮ঃ১০, সুলাইমান আঃ)
◾‘আর এর উপর আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না; আমার প্রতিদান কেবল সৃষ্টিকুলের রবের নিকট’। (২৬ঃ১২৭)
◾‘আপনি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই’। আপনি পবিত্র মহান। নিশ্চয় আমি ছিলাম যালিম’ । (২১ঃ৮৭, ইউনুস আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা ঈমান এনেছি, অতএব আমাদেরকে ক্ষমা ও দয়া করুন, আর আপনি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (২৩ঃ১০৯)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন এবং আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ (২৩ঃ১১৮, মূসা আঃ)
◾‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আমাদের রব পরম ক্ষমাশীল, মহাগুণগ্রাহী’। (৩৫ঃ৩৪)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে রয়েছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অনুসরণ করে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আপনি তাদেরকে রক্ষা করুন’। (৪০ঃ৭)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের জন্য আমাদের আলো পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন; নিশ্চয় আপনি সর্ববিষয়ে সর্বক্ষমতাবান।’ (৬৬ঃ৮)
◾‘আমরা আশা করি যে, আমাদের রব আমাদের অপরাধসমূহ ক্ষমা করে দেবেন, কারণ আমরা মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’ (২৬ঃ৫১)
◾‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমি আমার নফসের প্রতি যুলম করেছি, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন’। অতঃপর তিনি তাকে ক্ষমা করলেন। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। ‘হে আমার রব, আপনি যেহেতু আমার প্রতি নিআমত দান করেন, তাই আমি কখনো আর অপরাধীদের সাহায্যকারী হব না। (২৮ঃ১৬-১৭, মূসা আঃ)
◾হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা আপনার ওপরই ভরসা করি, আপনারই অভিমুখী হই আর প্রত্যাবর্তন তো আপনারই কাছে। হে আমাদের রব, আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (৬০ঃ৪-৫, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’। (২ঃ১২৯, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘আমি দুঃখ-কষ্টে পতিত হয়েছি। আর আপনি তো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু’। (২১ঃ৮৩, আয়্যুব আঃ)
◾‘আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি ঊষার রবের কাছে, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে, আর রাতের অন্ধকারের অনিষ্ট থেকে যখন তা গভীর হয়, আর গিরায় ফুঁ-দানকারী নারীদের অনিষ্ট থেকে, আর হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে’। (১১৩ঃ১-৫)
◾‘আমি আশ্রয় চাই মানুষের রব, মানুষের অধিপতি, মানুষের ইলাহ-এর কাছে, কুমন্ত্রণাদাতার অনিষ্ট থেকে, যে দ্রুত আত্মগোপন করে। যে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়। জিন ও মানুষ থেকে। (১১৪ঃ১-৬)
◾‘আর যখন আমি অসুস্থ হই, তখন যিনি আমাকে আরোগ্য করেন’। (২৬ঃ৮০)
◾আল্লাহর আশ্রয় চাই (মা’আযাল্লা-হ) (১২ঃ২৩,৭৯)
◾আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। আর তিনি সবচেয়ে বেশি দয়ালু’। (১২ঃ৯২)
◾ নিশ্চয় আমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। (১২ঃ৫৩)
◾নিশ্চয় আমার রব পরম দয়ালু, অতীব ভালবাসা পোষণকারী’। (১১ঃ৯০)
◾আমাদেরকে সরল পথ দেখান/পথের হিদায়াত দিন। (১ঃ৬)
🤲 মাতা-পিতার জন্য দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব, তাদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তারা আমাকে লালন-পালন করেছেন’। (১৭ঃ২৪)
◾আমার পিতাকে ক্ষমা করুন; (২৬ঃ৮৬-ঈব্রহীম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দিবেন’। (১৪ঃ৪১)
◾‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (৭১ঃ২৮- নূহ আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আর আপনি তাদেরকে স্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করান, যার ওয়াদা আপনি তাদেরকে দিয়েছেন। আর তাদের পিতা-মাতা, পতি-পত্নি ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকর্ম সম্পাদন করেছে তাদেরকেও। নিশ্চয় আপনি মহাপরাক্রমশালী, মহাপ্রজ্ঞাময়।’ (৪০ঃ৮)
◾‘হে আমার রব, তুমি আমার প্রতি ও আমার পিতা-মাতার প্রতি যে অনুগ্রহ করেছ তার জন্য আমাকে তোমার শুকরিয়া আদায় করার তাওফীক দাও। আর আমি যাতে এমন সৎকাজ করতে পারি যা তুমি পছন্দ কর। আর তোমার অনুগ্রহে তুমি আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর’। (২৭ঃ১৯- সোলাইমান আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার উপর ও আমার মাতা-পিতার উপর যে নিআমত দান করেছ, তোমার সে নিআমতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’। (৪৬ঃ১৫)
🤲 সন্তানদের জন্য দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব, আমাকে সৎকর্মশীল সন্তান দান করুন’। (৩৭ঃ১০০- ইব্রাহীম আঃ)
◾‘হে আমর রব, আমাকে আপনার পক্ষ থেকে উত্তম সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি প্রার্থনা শ্রবণকারী’। (৩ঃ৩৮, জাকারিয়া আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’। (২৫ঃ৭৪)
◾‘হে আমার রব, আমাকে সালাত কায়েমকারী বানান এবং আমার বংশধরদের মধ্য থেকেও, হে আমাদের রব, আর আমার দো‘আ কবূল করুন’। (১৪ঃ৪০- ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমার রব, আপনি এ শহরকে নিরাপদ করে দিন এবং আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে মূর্তি পূজা থেকে দূরে রাখুন’। (১৪ঃ৩৫- ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমি আমার কিছু বংশধরদেরকে ফসলহীন উপত্যকায় তোমার পবিত্র ঘরের নিকট বসতি স্থাপন করালাম, হে আমাদের রব, যাতে তারা সালাত কায়েম করে। সুতরাং কিছু মানুষের হৃদয় আপনি তাদের দিকে ঝুঁকিয়ে দিন এবং তাদেরকে রিয্ক প্রদান করুন ফল-ফলাদি থেকে, আশা করা যায় তারা শুকরিয়া আদায় করবে’। (১৪ঃ৩৭- ইব্রাহিম আঃ)
◾‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি বৃদ্ধ বয়সে আমাকে ঈসমাঈল ও ইসহাককে দান করেছেন। নিশ্চয় আমার রব দো‘আ শ্রবণকারী’। (১৪ঃ৩৯- ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমার রব! আমার হাড়গুলো দুর্বল হয়ে গেছে এবং বার্ধক্যবশতঃ আমার মাথার চুলগুলো সাদা হয়ে গেছে। হে আমার রব, আপনার নিকট দো‘আ করে আমি কখনো ব্যর্থ হইনি’। (১৯ঃ৪)
◾‘হে আমার রব, আমার গর্ভে যা আছে, নিশ্চয় আমি তা খালেসভাবে আপনার জন্য মানত করলাম। অতএব, আপনি আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ’। (৩ঃ৩৫- ইমরান আঃ এর স্ত্রী)
◾‘হে আমার রব! আমাকে একা রেখো না, তুমি তো শ্রেষ্ঠ মালিকানার অধিকারী’। (২১ঃ৮৯, জাকারিয়া আঃ)
◾আপনি আমাকে আপনার পক্ষ থেকে একজন উত্তরাধিকারী দান করুন’। ‘যে আমার উত্তরাধিকারী হবে এবং ইয়াকূবের বংশের উত্তরাধিকারী হবে। হে আমার রব, আপনি তাকে পছন্দনীয় বানিয়ে দিন’। (১৯ঃ৫-৬, জাকারিয়া আঃ)
🤲 পরিবারের জন্য দোয়াঃ
◾‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে এমন স্ত্রী ও সন্তানাদি দান করুন যারা আমাদের চক্ষু শীতল করবে। আর আপনি আমাদেরকে মুত্তাকীদের নেতা বানিয়ে দিন’। (২৫ঃ৭৪)
◾‘হে আমার রব, তারা যা করছে, তা থেকে আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে তুমি রক্ষা কর’। (২৬ঃ১৬৯- লূত আঃ)
🤲 জ্ঞান অর্জনের জন্য দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব! আমাকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করুন। (২০ঃ১১৪)
◾‘হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিয়ে দিন। (২৬ঃ৮৩, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমার বুক প্রশস্ত করে দিন’‘এবং আমার কাজ সহজ করে দিন, ‘আর আমার জিহবার জড়তা দূর করে দিন-যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে’। ২০ঃ২৫-২৮)
◾‘আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি’। (২ঃ৬৭)
🤲 সাহস সঞ্চার করার দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব, আমাকে প্রবেশ করাও উত্তমভাবে এবং বের কর উত্তমভাবে। আর তোমার পক্ষ থেকে আমাকে সাহায্যকারী শক্তি দান কর’। ১৭ঃ৮০, মুহাম্মদ সঃ)
◾‘হে আমার রব! আমার বক্ষ সম্প্রসারিত করে দিন, এবং আমার কাজ সহজ করে দিন, ‘আর আমার জিহবার জড়তা দূর করে দিন, যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে, ‘আর আমার জন্য করে দিন একজন সাহায্যকারী আমার সজনদের মধ্য থেকে, ‘আমার ভাই হারুনকে; ‘তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন, ‘এবং তাকে আমার কাজে অংশীদার করুন। ‘যাতে আমরা আপনার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করতে পারি প্রচুর, ‘এবং আমরা আপনাকে স্মরণ করতে পারি বেশি পরিমাণ। ‘আপনি তো আমাদের সম্যক দ্রষ্টা।’ (২০ঃ২৫-৩৫, মূসা আঃ)।
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার পক্ষ থেকে রহমত দিন এবং আমাদের জন্য আমাদের কর্মকান্ড সঠিক করে দিন’। (১৮ঃ১০)
🤲 রিজিকের বৃদ্ধির জন্য দোয়াঃ
◾‘হে আল্লাহ্‌ আমাদের রব! আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা পাঠান; এটা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তি সবার জন্য হবে আনন্দোৎসব স্বরুপ এবং আপনার কাছ থেকে নিদর্শন।আর আমাদের জীবিকা দান করুন; আপনিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা।’ (৫ঃ১১৪, ঈসা আঃ)
◾’হে আমার রব ! এটাকে নিরাপদ শহর করুন এবং এর অধিবাসীদের মধ্যে যারা আল্লাহ্‌ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান আনে তাদেরকে ফলমূল হতে জীবিকা প্রদান করুন’। (২ঃ১২৬, ইব্রাহিম আঃ)
◾হে আমাদের রব! আমি আমার বংশধরদের কিছু সংখ্যককে বসবাস করালাম অনুর্বর উপত্যকায় আপনার পবিত্র ঘরের কাছে, হে আমাদের রব! এ জন্য যে, তারা যেন সালাত কায়েম করে। অতএব আপনি কিছু লোকের অন্তর তাদের প্রতি অনুরাগী করে দিন এবং ফল-ফলাদি দিয়ে তাদের রিযকের ব্যবস্থা করুন, যাতে তারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। (১৪ঃ৩৭, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘আর যাকে চান বিনা হিসাবে রিয্ক দান করেন’। (৩ঃ২৭)
🤲 যানবাহনে আরোহন ও অবতারনের দোয়াঃ
◾আল্লাহরই নামে এর গতি ও স্থিতি নিয়ে আরোহন করছি, নিশ্চয় আমার প্রতিপালক চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়াবান।’ (১১ঃ৪১, নূহ আঃ)
◾‘পবিত্র-মহান সেই সত্তা যিনি এগুলোকে আমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। আর আমরা এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম ছিলাম না’। (৪৩ঃ১৩)
◾‘তোমরা তাতে প্রবেশ কর শান্তিতে, নিরাপদ হয়ে’। (১৫ঃ৪৬)
◾আল্লাহ উত্তম হেফাযতকারী এবং তিনিই সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু’। (১২ঃ৬৪)
◾‘হে আমার রব! আমাকে নামিয়ে দিন কল্যাণকরভাবে; আর আপনিই শ্রেষ্ঠ অবতারণকারী।’ (২৩ঃ২৯, নূহ আঃ)
🤲 নেককারদের সাথে অন্তর্ভুক্তির দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব! আমাকে প্রজ্ঞা দান করুন এবং সৎকর্মশীলদের সাথে মিলিয়ে দিন। এবং পরবর্তীদের মধ্যে আমার সুনাম-সুখ্যাতি অব্যাহত রাখুন’, ‘আর আপনি আমাকে সুখময় জান্নাতের ওয়ারিসদের অন্তর্ভুক্ত করুন’। (২৬ঃ৮৩-৮৫, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে তাদেরকে ক্ষমা করুন; এবং যারা ঈমান এনেছিল তাদের জন্য আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রাখবেন না; হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি দয়াবান, পরম দয়ালু। (৫৯ঃ১০)
◾‘আমরাই আল্লাহর পথে সাহায্যকারী হব। আমরা আল্লাহতে বিশ্বাস করেছি। আর আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)। (৩ঃ৫২, ঈসা আঃ এর হাওয়ারীগন)
◾‘হে আমার রব! আপনি যা নাযিল করেছেন তার প্রতি আমরা ঈমান এনেছি এবং আমরা এ রাসূলের অনুসরণ করেছি। কাজেই আমাদেরকে সাক্ষ্যদানকারীদের তালিকাভুক্ত করে নিন। ’(৩ঃ৫৩, ঈসা আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা এক আহ্‌বায়ককে ঈমানের দিকে আহ্‌বান করতে শুনেছি, ‘তোমরা তোমাদের রবের উপর ঈমান আন।’ কাজেই আমরা ঈমান এনেছি।
হে আমাদের রব! আপনি আমাদের পাপরাশি ক্ষমা করুন, আমাদের মন্দ কাজগুলো দূরীভূত করুন এবং আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের সহগামী করে মৃত্যু দিন (৩ঃ১৯৩)
◾হে আসমানসমূহ ও যমীনের সষ্টা! আপনিই দুনিয়া ও আখিরাতে আমার অভিভাবক। আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দিন এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করুন (১২ঃ১০১, ইউসুফ আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, যেদিন হিসাব কায়েম হবে, সেদিন আপনি আমাকে, আমার পিতামাতাকে ও মুমিনদেরকে ক্ষমা করে দিবেন’। (১৪ঃ৪১)
◾‘হে আমার রব, আমি যাতে এমন সৎকাজ করতে পারি যা তুমি পছন্দ কর। আর তোমার অনুগ্রহে তুমি আমাকে তোমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর’। (২৭ঃ১৯- সোলাইমান আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে আপনার অনুগত করুন এবং আমাদের বংশধরের মধ্য থেকে আপনার অনুগত জাতি বানান। আর আমাদেরকে আমাদের ইবাদাতের বিধি-বিধান দেখিয়ে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।
◾‘হে আমাদের রব, তাদের মধ্যে তাদের থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করুন, যে তাদের প্রতি আপনার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবে আর তাদেরকে পবিত্র করবে। নিশ্চয় আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়’। ২ঃ১২৮-১২৯, ইব্রাহিম আঃ)
◾সকল প্রশংসাই আল্লাহর নিমিত্তে। আর শান্তি তাঁর বান্দাদের প্রতি যাদের তিনি মনোনীত করেছেন। (২৭ঃ৫৯)
🤲 কেহ মিথ্যাবাদী দোষারোপ করলে দোয়াঃ
◾‘হে আমার রব! আমি আশংকা করছি যে, তারা আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, (২৬ঃ১২, মূসা আঃ)
◾‘হে আমার রব! আমার সম্প্রদায় তো আমার উপর মিথ্যারোপ করেছে। (২৬ঃ১১৭, নূহ আঃ)
◾‘হে আমার রব! আমাকে সাহায্য করুন, কারণ তারা আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে ২৩ঃ২৬/৩৯, নূহ আঃ)
◾‘হে আমার রব, আপনি ন্যায়সঙ্গতভাবে ফয়সালা করে দিন’। আর আমাদের রব তো পরম করুণাময়। তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে তিনিই একমাত্র সহায়স্থল। (২১ঃ১১২)
🤲 অত্যাচারী কাফের/দুশমনের বিরুদ্ধে দোয়াঃ
◾আপনি আমাদের অভিভাবক। অতএব আপনি কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন। (২ঃ২৮৬)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের উপর ধৈর্য ঢেলে দিন, আমাদের পা স্থির রাখুন এবং আমাদেরকে কাফের জাতির বিরুদ্ধে সাহায্য করুন’। (২ঃ২৫০, তালূত আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের পাপ ও আমাদের কর্মে আমাদের সীমালঙঘন ক্ষমা করুন এবং অবিচল রাখুন আমাদের পাসমূহকে, আর কাফির কওমের উপর আমাদেরকে সাহায্য করুন’। (৩ঃ১৪৭)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করুন এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা যালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারণ করুন। আর নির্ধারণ করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী।’ (৪ঃ৭৫)
◾‘হে আমার রব, আমি আমার ও আমার ভাই ছাড়া কারো উপরে অধিকার রাখি না। সুতরাং আপনি আমাদের ও ফাসিক কওমের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিন। (৫ঃ২৫, মূসা আঃ)
◾হে আমাদের রব, আমাদের ও আমাদের কওমের মধ্যে যথার্থ ফয়সালা করে দিন। আর আপনি শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী। (৭ঃ৮৯)
◾হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে যালিম কওমের ফিতনার পাত্র বানাবেন না’। (১০ঃ৮৫, মূসা আঃ)
◾হে আমাদের রব, তাদের ধন-সম্পদ নিশ্চি‎হ্ন করে দিন, তাদের অন্তরসমূহকে কঠোর করে দিন। ফলে তারা ঈমান আনবে না, যতক্ষণ না যন্ত্রণাদায়ক আযাব দেখে’। (১০ঃ৮৮, মূসা আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা তো আশংকা করছি যে, সে আমাদের উপর বাড়াবাড়ি করবে অথবা সীমালঙ্ঘন করবে’। (২০ঃ৪৫, মূসা আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমাকে যালিম সম্প্রদায়ভুক্ত করবেন না।’ (২৩ঃ৯৪, মূসা আঃ)
◾‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে। (২৫ঃ৩০)
◾‘হে আমার রব, আপনি যালিম কওম থেকে আমাকে রক্ষা করুন’। (২৮ঃ২১, মূসা আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমাকে সাহায্য করুন ফাসাদ সৃষ্টিকারী কওমের বিরুদ্ধে’। (২৯ঃ৩০, লূত আঃ)
◾হে আমাদের রব, আপনি আমাদেরকে কাফিরদের উৎপীড়নের পাত্র বানাবেন না। (৬০ঃ৫, ইব্রাহিম আঃ)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে যালিম কওমের অন্তর্ভুক্ত করবেন না’। (৭ঃ৪৭)
◾‘হে আমার রব! যমীনের উপর কোন কাফিরকে অবশিষ্ট রাখবেন না’। (৭১ঃ২৬, নূহ আঃ)
◾‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবং ধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুই বাড়িয়ে দেবেন না।’ (৭১ঃ২৮, নূহ আঃ)
◾তোমাদের প্রস্তরাঘাত থেকে আমি আমার রব ও তোমাদের রবের কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। (৪৪ঃ২০)
◾‘আমার সাথে আমার রব রয়েছেন। নিশ্চয় অচিরেই তিনি আমাকে পথনির্দেশ দেবেন’। (২৬ঃ৬২, মূসা আঃ)
◾‘হে আমার রব, আমাকে সাহায্য করুন ফাসাদ সৃষ্টিকারী কওমের বিরুদ্ধে’। (২৯ঃ৩০)
◾‘নিশ্চয় আমি পরাজিত, অতএব তুমিই প্রতিশোধ গ্রহণ কর’। (৫৪ঃ১০, নূহ আঃ)
◾ আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য ও নিকটবর্তী বিজয়। (৬১ঃ১৩)
🤲 জাহান্নাম থেকে বাঁচার দোয়াঃ
◾হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন। (২ঃ২০১)
◾‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় আমরা ঈমান আনলাম। অতএব, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন’। (৩ঃ১৬)
◾‘হে আমাদের রব, তুমি এসব অনর্থক সৃষ্টি করনি। তুমি পবিত্র মহান। সুতরাং তুমি আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা কর’। (৩ঃ১৯১)
◾‘হে আমাদের রব, নিশ্চয় তুমি যাকে আগুনে প্রবেশ করাবে, অবশ্যই তাকে তুমি অপমান করবে। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’। (৩ঃ১৯২)
◾‘হে আমাদের রব, আর আপনি আমাদেরকে তা প্রদান করুন যার ওয়াদা আপনি আমাদেরকে দিয়েছেন আপনার রাসূলগণের মাধ্যমে। আর কিয়ামতের দিনে আপনি আমাদেরকে অপমান করবেন না। নিশ্চয় আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না’। (৩ঃ১৯৪)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি রহমত ও জ্ঞান দ্বারা সব কিছুকে পরিব্যপ্ত করে রয়েছেন। অতএব যারা তাওবা করে এবং আপনার পথ অনুসরণ করে আপনি তাদেরকে ক্ষমা করে দিন। আর জাহান্নামের আযাব থেকে আপনি তাদেরকে রক্ষা করুন’। (৪০ঃ৭)
◾আর আপনি তাদের অপরাধের আযাব হতে রক্ষা করুন এবং সেদিন আপনি যাকে অপরাধের আযাব থেকে রক্ষা করবেন, অবশ্যই তাকে অনুগ্রহ করবেন। আর এটিই মহাসাফল্য।’ (৪০ঃ৯)
◾‘হে আমার রব, আপনার কাছে আমার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি নির্মাণ করুন এবং আমাকে ফির‘আউন ও তার কর্ম হতে নাজাত দিন, আর আমাকে নাজাত দিন যালিম সম্প্রদায় হতে। (৬৬ঃ১১, ফেরাউনের স্ত্রী)
◾হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি মানুষকে সমবেত করবেন এমন একদিন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না। (৩ঃ৯)
🤲 জাহান্নামি/কাফেরদের আর্তনাদঃ
◾‘হে আমাদের রব, তুমি আমাদের থেকে জাহান্নামের আযাব ফিরিয়ে নাও। নিশ্চয় এর আযাব হল অবিচ্ছিন্ন’। (২৫ঃ৬৫)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা দেখেছি ও শুনেছি, কাজেই আমাদেরকে পুনরায় পাঠিয়ে দিন, আমরা সৎকর্ম করব। নিশ্চয় আমরা দৃঢ় বিশ্বাসী’। (৩২ঃ১২)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদেরকে বের করে দিন, আমরা পূর্বে যে আমল করতাম, তার পরিবর্তে আমরা নেক আমল করব’। (৩৫ঃ৩৭)
◾‘হে আমাদের রব, আমাদের থেকে আযাব দূর করুন; নিশ্চয় আমরা মুমিন হব।’ (৪৪ঃ১২)
◾‘হে আমাদের রব, আপনি আমাদের কাছে কোন রাসূল পাঠালেন না কেন? তাহলে আমরা আপনার আয়াতসমূহ অনুসরণ করতাম আর আমরা মুমিনদের অন্তর্ভুর্ক্ত হতাম’। (২৮ঃ৪৭)
◾‘হে আমাদের রব, দুর্ভাগ্য আমাদেরকে পেয়ে বসেছিল, আর আমরা ছিলাম পথভ্রষ্ট’। ‘হে আমাদের রব, এ থেকে আমাদেরকে বের করে দিন, তারপর যদি আমরা আবার তা করি তবে অবশ্যই আমরা হব যালিম।’ (২৩ঃ১০৬-১০৭)
◾‘হে আমাদের রব, ওরা তো তারা যাদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম। তাদেরকে আমরা বিভ্রান্ত করেছিলাম যেমন আমরা বিভ্রান্ত হয়েছিলাম। আমরা আপনার কাছে দায় মুক্তি চাচ্ছি। তারা তো আমাদের ইবাদাত করত না’। (২৮ঃ৬৩)
◾‘হে আমাদের রব, যে আমাদের জন্য এ বিপদ এনেছে, জাহান্নামে তুমি তার আযাবকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দাও।’ (৩৮ঃ৬১)
◾‘হে আমাদের রব, আমরা আমাদের নেতৃবর্গ ও বিশিষ্ট লোকদের আনুগত্য করেছিলাম, তখন তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল’। ‘হে আমাদের রব, আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ আযাব দিন এবং তাদেরকে বেশী করে লা‘নত করুন’। (৩৩ঃ৬৭-৬৮)
◾‘হে আমাদের রব, জিন ও মানুষের মধ্যে যারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছে তাদেরকে আমাদের দেখিয়ে দিন। আমরা তাদের উভয়কে আমাদের পায়ের নীচে রাখব, যাতে তারা নিকৃষ্টদের অন্তর্ভুক্ত হয়। (৪১ঃ২৯)
◾‘হে আমার রব, যেহেতু আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তাই যমীনে আমি তাদের জন্য (পাপকে) শোভিত করব এবং নিশ্চয় তাদের সকলকে পথভ্রষ্ট করব’। (১৫ঃ৩৯, ইবলিশ)
◾‘হে আমার রব, নিশ্চয় এসব মূর্তি অনেক মানুষকে পথভ্রষ্ট করেছে, সুতরাং যে আমার অনুসরণ করেছে, নিশ্চয় সে আমার দলভুক্ত, আর যে আমার অবাধ্য হয়েছে, তবে নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’। ১৪ঃ৩৬)
◾‘হে আমাদের ‘রব’, আমি তাকে বিদ্রোহী করে তুলিনি, বরং সে নিজেই ছিল সুদূর পথভ্রষ্টতার মধ্যে’। (৫০ঃ২৭)
◾‘হায়, আমাদের দুর্ভোগ! আমরা তো এ বিষয়ে উদাসীন ছিলাম বরং আমরা ছিলাম যালিম’ । (২১ঃ৯৭)

আহসানুত তাফসির (কুরআন বিল কুরআন)মুরাদ বিন আমজাদ

আহসানুত তাফসির (কুরআন বিল কুরআন)
মুরাদ বিন আমজাদ
০০০০০০০০০০০০
(এখানে আমরা সংক্ষিপ্ত পরিসরে বুঝার জন্য নমুনা হিসেবে তুলে ধরলাম বিজ্ঞ পাঠক কুরআনের পথের পথযাত্রীরা জানাবেন কোন ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে অবহিত করবেন “নিয়মা আজরুল আমিললীন।”
আল কুরআন পাঠের শুরুতে করণীয় বিষয়:
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:

فَإِذَا قَرَأْتَ ٱلْقُرْءَانَ فَٱسْتَعِذْ بِٱللَّهِ مِنَ ٱلشَّيْطَٰنِ ٱلرَّجِيمِ
তুমি যখন কুরআন পড়তে চাইবে, তখন বিতাড়িত শয়তানের কবল থেকে(রক্ষা পাবার জন্যِ)আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে।(১৬:৯৮)
উক্ত আয়াতের নির্দেশনা অনুসারে কিভাবে শয়তান থেকে পানা চাইতে হবে সেটা আল্লাহ শিখিয়েছেন এভাবে:

رَّبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَٰتِ ٱلشَّيَٰطِينِ
হে আমার প্রতিপালক , আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাই’।(২৩:৯৭)

وَأَعُوذُ بِكَ رَبِّ أَن يَحْضُرُونِ
আর হে আমার প্রতিপালক , আমার কাছে তাদের উপস্থিতি হতে আপনার কাছে আশ্রয় চাই।’(২৩:৯৮)

أَعُوذُ بِٱللَّهِ أَنْ أَكُونَ مِنَ ٱلْجَٰهِلِينَ
‘আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি’।(২:৬৭)
অতঃপর আল্লাহর নামে শুরু করার নির্দেশ:
ٱقْرَأْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلَّذِى خَلَقَ
পড় তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন।(৯৬:১)

ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمْۖ لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَۖ خَٰلِقُ كُلِّ شَىْءٍ فَٱعْبُدُوهُۚ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَىْءٍ وَكِيلٌ
তিনিই আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালক । তিনি ছাড়া কোন আইনদাতা নেই। তিনি প্রতিটি জিনিসের স্রষ্টা। সুতরাং তোমরা তাঁর দাসত্ব কর। আর তিনি প্রতিটি জিনিসের উপর উকিল/ তত্ত্বাবধায়ক।(৬:১০২)
×÷×÷×÷×÷×÷×
سورة الفاتحة
১ নং সুরা ফাতিহা : ৭ আয়াত (বাক্য)
(১)بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ
(শুরু করছি) বিশেষ করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামের সাথে।
(২) ٱلْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلْعَٰلَمِينَ

সকল প্রশংসা(১) বিশ্বজগতের(রব)(৩) প্রতিপালক আল্লাহর জন্য।(*২)

(*১।)তাহমীদ তথা (আল্লাহর প্রশংসা) এ বিষয়ে আল কুরআন থেকে তাফসীর দেখুন, ৬/১,৪৫,৭/৪৩,১০/১০,১৪/৩৯,১৬/৭৫,১৭/১১১,১৮/১,২৩/২৮,২৭/১৫,৫৯,৯৩,২৮/১,৩৫,৩৭/১৮২,৩৯/২৯,৭৪,৪০/৬৫,৪৫/৩৬

(*২) الله আল্লাহ তাআলার পরিচয় বিষয় তাফসীর দেখুন, ২/২৫৫,৪/৮৭,১৩/২,১৪/৩২-৩৪,২০/৮,২৪/৩৫,৩০/১১,৪০,৪৮,৫৪,৩৭/১২৬,৩৯/৬৩-৬৩,২৩/৬১-৭৯,৪২/১৭,৬৫/১২
,========================
*(৩) রব্বুল আলামিন (বিশ্ব জগতের রব) বিষয় তাফসীর, ২/১৩১,৫/২৮,৬/৪৫,৭১,৭/৫৪,৬১,৬৭,১০৪,১২১,১০/১০,৩৭,২৬/১৬,২৩-২৮,৪৭-৪৮,৭৭-৮২,১০৯,১২৭,১৪৫,১৬৪,১৮০,১৯২,২৭/৮,৪৪,২৮/৩০,৩২/২,৩৭/১৮০-১৮২,৩৯/৭৫,৪০/৬৪-৬৬,৪১/৯,৪৩/৪৬,৪৫/৩৬,৫৬/৭৭-৮০,৫৯/১৬,৮১/২৯,৮৩/৪-৬।
(৩)ٱ‌‌لرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ

বিশেষ করুণাময় অসীম দয়ালু।*(৪-৫)

*(৪) বিশেষ করুনাময় অসীম দয়ালু

এর তাফসীর দেখুন: ২:১৬৩,১৩/৩০,১৭:১৩০,১৯/১৮,২৬,৪৪-৪৫,৫৮,৬১,৬৯,৭৪,৭৭,৭৮,৮৫-৮৬,৯০-৯৬,২০/৫,১০৮-১০৯,২১/২৬,৩৬,১১২,২৫/২৬,২৭/২৯-৩০,৩৬/১১১৫,২৩,৫২,৪১/২,৪৩/১৭,১৯-২০,৩৩,৩৬,৪৫,৮১,৫০/৩৩-৩৪,৫৫/১,৫৯/২২,৬৭/৩,১৯,২৯,৩৭,৭৮/৩৮।

*(৫)শুধু الرحيم (আর রাহীম তথা অসীম দয়ালুর ) তাফসির জানতে দেখুন:আর-রহীম-পরম দয়ালু
°°°°°°°°°°°°°°°°°°

ফাতিহা ১:২ বাকারা ২:৩৭,৫৪,১২৮,১৪৩,১৬০,১৭৩,১৮২,১৯২,২১৮,২২৬ আল ইমরান ৩:৩১,৮৯,১২৯ নিসা ৪:২৫,২৯ মায়িদা ৫:৩,৩৮,৩৯,৭৪,৯৫ আনআম৬:৫৪,১৪৫,১৬৫ আরাফ ৭:১৫৩ আনফাল ৮:৬৯ তাওবা ৯:৫,২৭,৯১,৯৯,১০২,১০৪,১১৭,১১৮ইউনুস১০:১০৭,হুদ১১:৪১,৯০ ইউসুফ ১২:৫৩,৯৮ইবরহীম১৪:৩৬হিজর১৫:৪৯-৫০ নাহল ১৬:১৮,১১০,১১৯হজ্জ২২:৬৫নূর২৪:২০,২২,৩৩,৬২ফুরকান২৫:৬,৭৯শুয়ারা২৬:৯নামল২৭:১১,৩০কাসাস২৮:১৬রুম৩০:৫আহযাব ৩৩:৪৩,৭৩ সাবা ৩৪:২ ইয়াসিন ৩৬:৫,৫৮ জুমার ৩৯:৫৩ ফুসসিলাত ৪১:৩১-৩ শুরা ৪২:৫ দুখান ৪৪:৪১-৪২ আহকাফ ৪৬:৮ ফাতহ ৪৮:১৪ হুজরাত ৪৯:৫,১২,১৪ তুর ৫২:২৮ হাদিদ ৫৭:৯,২৮ মুজাদালা ৫৮:১২ হাশর ৫৯:১০,২২ তাগাবুন ৬৪:১৪ তাহরীম ৬৬:১ মুজ্জাম্মিল ৭৩:২০

(৪)مالك يَوْمِ ٱلدِّين
সকল ফায়সালার সময় তিনিই একমাত্র বিচারক।(৬) (ملك)মালিক এর তাফসির দেখুন:২:১০৭,৩/২৬,১৮৯,৭/১১১,৮২/১৭-১৯,১১৪/২,৩৫/১৩,৪০/২৯,১৯/৪। (৫) إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ আমরা আপনারই দাসত্ব করি এবং আপনার কাছেই সাহায্য চাই।(৭)
(*৭)কুরআনে আল্লাহ শেখানো সাহায্য প্রার্থনার দোয়াসমূহের আয়াতঃ
২৩/৯৭,৯৮, ৩/১৯১-১৯৪, ৭/২৩, ১৪৯, ৬৬/৮, ৬০/৫, ২৫/৬৫,৬৬, ৪৪/১২, ১১/৪৭, ২৮/১৬, ২৬/৫১, ২৮/৬৭, ২/৫৮,৭/১৬১, ৩৯/১৩,৬/১৫, ২/৫৪,৩৭, ২/২৮৬, ২৭/১০৯, ২৩/১১৮, ৭/১৫১, ২/২০১, ১৮/১০, ৭/১২৬, ২/২৫০, ৭/৮৯, ২১/১১২, ৭/৪৭, ১০/৮৫,৮৬, ২৮/১৭, ১৪/৩৮, ২৩/১০৬, ১০৭, ৪/৭৫, ৯/৫১, ৪২/১৯, ২;১২৭,১২৮, ৯/৫৯, ৩৫/৩৪, ১৪/৩৯, ৩/১৪৭,১৬,৮,৯, ৬০/৪, ২৫/৭৪, ৩৭/১০০, ৩/৩৮, ৭১/২৬, ২৭/১৯, ৪৬/১৫, ১৪/৪১, ১৭/২৪, ৭১/২৮, ৫৯/১০, ৪০/৭,৮,৯,১১, ১৭/৮০, ২৮/২৪, ১২/১০১, ২১/৮৭, ২৮/২১, ৭/৪৭, ১০/৮৫, ২৩/২৬,৩৯, ১৪/৪০,৪১, ৬/১৬২,১৬৩, ১৪/৩৯

দ্বিতীয় পর্ব সুরাতুল হামদ (কুরআন বিল কুরআন)
মুরাদ বিন আমজাদ
০০০০০০০০০০০

(৬) اهْدِنَا الصِّرٰطَ الْمُسْتَقِيم
আমাদেরকে সুদৃঢ় পথ দেখিয়ে দেন।(*৮)
সিরাতে মুস্তাকিম এর তাফসির:সিরাতে মুস্তাকীমصراط المستقيم
সমস্ত প্রসংশা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন । হাজারো মতবাদ , হাজারো পথ , ঝঞ্জা-বিক্ষুদ্ধ এই পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বেশী প্রয়োজনীয় যে জিনিসটি তা হচ্ছে সরল – সঠিক পথ । সেই সরল – সঠিক পথ দেখানোর দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন , এবং সরল -সঠিক পথের সন্ধান একমাত্র তার কাছেই চাইতে বলেছেন ।
اھدنا الصراط المستقيم
আপনি আমাদের দেখান সরল সঠিক পথ । (ফাতিহা ১/৬)এআয়াতটির তাফসির দেখাতে চাই একেবারে নির্ভুল ভাবে । কারণ দীনের নামে অসংখ্য বক্রপথের মাঝে সরল পথ পাওয়া আজ খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে । তাই আমি রায় রেওয়ায়েতের ব্যাখ্যা রেখে সরাসরি আল্লাহর কালাম থেকে তাফসির করছি । আল-কুরআনের ভূমিকাতে আমরা যখন মহান মালিকের ভাষায় তাঁর কাছে সরল সঠিক সুদৃঢ় পথ চাচ্ছি । উত্তরে তিঁনি আমাদের বলে দিচ্ছেন কিতাবের ভূমিকায় যখন সরল পথ চাচ্ছ তাহলে বাকারা থেকে নাস পর্যন্ত এর মধ্যে ঢুকে পড়ে জান আর মান আর এই অহীকৃত বিধিনিষেধ দৃঢ়ভাবে ধারণ করাই সরল পথ । যেমন তিঁনি বলেন :فا ستمسك بالذي أوحى إليك انك على صراط مستقیم সুতরাং তোমার প্রতি যাহা অহী করা হইয়াছে তাহা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। (তহলেই)তুমি সরল পথেই রহিয়াছ। ( যুখরুফ ৪৩/৪৩)মুলত ফাতিহার এক নম্বর আয়াতের নির্দেশনা অনুযায়ী আল্লাহ তাআলাকে একমাত্র রব মেনে দৃঢ়তার সাথে সাথে তাঁকে ধারণ করে তাঁর ইবাদত অর্থাৎ রুবুবিয়া উলুহীয়া তাওহীদ পরিপূর্ণ মান্য করাই صراط مستقیم বা সরল পথ । যেমন, মহান আল্লাহ বলেন :أن اللہ ربی وربکم فاعبدوہ ھذا صراط مستقیم নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার রব এবং তোমাদেরও রব, সুতরাং তোমরা তাহার ইবাদত করিবে। ইহাই সরল পথ । (আলা- ইমরান ৩/৫১ও১০১)আরো দেখুন; বনি ইসরাঈল ১৭/৯আনআমের ৬/১৫১-১৫৩,ও ৩৯, ১২৫,১২৬,১৬১থেকে১৬৩পর্যন্ত صراط مستقیم বা সরল পথের বিস্তারিত ব্যাখ্যা রয়েছে । অতঃপর আল ইমরানের ৫১ আয়াতের নির্দেশনা অনুযায়ী আল্লাহ পাককে তাঁর আয়াতকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করাকেই সরল পথ বলা হয়েছে । মহান আল্লাহ বলেন :يأيها الناس. ….صراطا مستقيما হে মানব ! আমি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ আসিয়াছে এবং আমি তোমাদের প্রতি স্পষ্ট জ্যোতি অর্থাৎ কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি।যাহারা আল্লাহতে ঈমান আনে ও তাঁহাকে দৃঢ়ভাবে অবলম্বন করে তাহাদিগকে তিনি অবশ্যই তাঁহার দয়া ও অনুগ্রহের মধ্যে দাখিল করিবেন এবং তাহাদিগকে সরল পথে তাঁহার দিকে পরিচালিত করিবেন । (নিসা ৪/১৭৪ -১৭৫) অরআল্লাহ তাআলার দাখানো পথ যেদিকে তিনি আহবান করেন তাহল জান্নাতের সরল পথ ।(১০/২৫) অনুরূপ আল-কুরআনের আলোকিত পথই সরল পথ, (ইবরাহীম ১৪/১)ফাতিহার ১নম্বর আয়াত অর্থাৎ আল্লাহ্‌র রুবুবিয়াহ বা সার্বভৌমত্ব সিকার করে অন্য সব সার্বভৌমত্ব অস্বীকার করাই সিরাতে মুস্তাকিম বা সরল পথ। (মারইয়াম ১৯/৩৬) আর এ সরল পথে পরিচালিত করেন সয়ং আল্লাহ পাক মুমিনদের । (হাজ্জ ২২/৫৪)এই সরল পথেই পতিষ্ঠিত ছিলেন রাসূলে কারীম, যার সাক্ষী দিয়েছেন সয়ং আল্লাহ পাক ।(ইয়াসিন ৩৬/৪) আর এই সরল পথে থেকে সেদিকেই আহবান করেন রসূল ।(মুমিনুন ২৩/৭৩-৭4)আর ঐ আহবানে সাড়া দিয়ে সরল পথে তারাই চলতে পারেন যারা পরকালে বিশ্বাসি ।অন্যথায় সরল পথ থেকে বিচ্যুতি হয় । আর আল্লাহর নাযিলকৃত সুস্পষ্ট পথে সেই চলতে পারে যাকে আল্লাহ পাক চান । (নুর ২৪/৪৬)আর আল্লাহ তাদেরই চাইবেন যারা আল-কুরআনের পথে চলতে সচেষ্ট হবে। কারণ আল-কুরআনের জ্ঞানীরা জানে আল্লাহর রসূলের উপর নাযিলকৃত পথ হল সরল পথ ।(৩৪/৬) আর এই সরল পথ অনুসরণ করাই আল্লাহ পাকের ইবাদত বা দ্বাশত্তের পথ । এপথ বর্জন শয়তানের বক্রপথ । (৩৬/৬০-৬১) আল্লাহ পাক তাওফিক দাতা।

হিদায়ত প্রাপ্ত লোকদের আলামত।
এক. নাম্বার বিপদে ধৈর্যধারণ করা।( বাকারাহ ২:১৫৬-১৫৭)
দুই. শিরিক মুক্ত জীবন যাপন করা। (আনআম ৬:১৪১)
তিন. আল্লাহর ঘর মাসজিদ আবাদ করা। (তাওবা ৯:১৮)
চার. তাকওয়ার গুণাবলি অর্জন করা। (বাকারাহ২:২-৫)
💠তথ্যশুত্র, আহসুন তাফসীর, মুরাদ বিন আমজাদ।
📎নোটঃআমি যে তাফসীর লিখছি তার থেকে সামান্য অংশ নমুনা স্বরুপ তুলে ধরলাম।সকল দীনি ভাই -বোনদের নিকট দু’আ প্রার্থী যেন মহান আল্লাহ কবুল করে নেন।এবং সকল ধরনের প্রতিকূলতা দূর করে দেন। ( رَبَّنَا وَ تَقَبَّلۡ دُعَآءِ )হে আমাদের রব!আমাদের দু’আ কবুল করুন।
(৭)
صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ
তাদের রাস্তা, যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন;৯ তাদের উপরে গজব হয়নি এবং তারা পথভ্রষ্টও নয়।(১০)
(*৯) অনুগ্রহপ্রাপ্ত তথা মহান আল্লাহর প্রিয়ভাজনদের পথ।

আমরা মহান আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাই না এমন কাউকে পাওয়া যায় না। তাহলে দেখা দরকার কেমন করে তা সম্ভব? একজন লোক তার বন্ধুর কাছে বলছিল রাজার মেয়েকে আমি ভালো বাসি। শুনে বন্ধু বললো সেকি তোমাকে ভালো বাসে? উত্তরে সে বললো সেটাতো জানা নেই। বন্ধু ভালো বাসাতো একতরফা হয় না! অনুরূপ আমরা প্রায় সকলেই আল্লাহ তাআলাকে ভালো বাসার দাবিদার। কাজেকর্মে না হলেও অন্তত মৌখিকভাবে এমনটাই প্রকাশ করি। কিন্তু ভালোবাসা তো একতরফা হয় না। আমরা যারা মহান রবের ভালো বাসার দাবিদার তাদের জানা দরকার আল্লাহ তা’আলা কি আমাদেরকে ভলোবসেন?জি,বাসেন!তবে কীভাবে? কাদেরকে? দেখি আল্লাহ কাদেরকে ভালো বাসেন তিঁনি কি বলেন। কুরআন মাজিদের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে কিছু গুনের অধিকারি লোকদের আল্লাহ তাআলা ভালো বাসেন তারা হলো : (১)তাওয়াবীন,(২)মুত্তাবীউন,(৩)মুত্তাকীন,(৪)মুহসিনীন,(৫)সাবেরীন,(৬)মুতাওকিলীন,(৭)মুকসিতিন,(৮)জাকেরীন,(৯)মুতাত্বহিরীন,(১০)আজিলাতুল মু’মিনীন।
উল্লিখিত বিষয়গুলো আমরা মহান রবের কালাম দ্বারা প্রমান করব ইনশাআল্লাহ। তবে এখানে একটা বিষয় বলে রাখা দরকার দীনি শিক্ষার নামে আজ আমরা যে সকল ডিগ্রি বা কোয়ালিটি যেমন,মওলানা, মৌলভী,মুফতি, মুহাদ্দিস, মক্কি,মাদানি,সুন্নি,ব্রেলভী,রেজভী,দেওবন্দী,কাসেমী, সালাফি, ইত্যাদি এর কোনটাই অর্জন করতে মহান আল্লাহ ও তাঁর রসূলের এর পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ দেন নি। অথচ এগুলো ডিগ্রি হাসিল করার জন্য আমরা অনেকেই মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা কেন জেন ভুলে গেছি আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি ও তাঁর ভালোবাসার কথা! অথচ তাঁর ভালো বাসা ছাড়া কাংক্ষিত সেই জান্নাত পাওয়া সম্ভব না।তাহলে আসুন সেই ডিগ্রি আর কোয়ালিটি গুলো দলিলসহ জেনে নেই। এবং সেগুলো অর্জন করে মহান রবের প্রিয়জন হই। তাওবাঃ اِنَّ اللّٰہَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন।(বাকহারা ২:২২২) তবে তওবা শুধু মুখে উচ্চারণের নাম নয় বরং তার জন্য কিছু শর্ত আছে।(২৫:৭০) ক.সম্পূর্ণভাবে গুনাহ থেকে বিমুক্ত হওয়া। খ.পূর্বকৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। গ.পুনরায় গুনাহ না করার দৃঢ় সংকল্প করা।ঘ.অন্যের হক আত্মসাতের গুনাহ হলে,সেটা ফেরত দেয়া।
(*১০)হ্যাঁ , আমরা আজ আলোচনা করব দ্বল্লিন অর্থাৎপথভ্রষ্ট কারা ? এ সম্পর্কে । আসুন আমরা এ সংক্রান্ত কুরআনের আয়াতগুলি একত্র করি এবং দেখি কারা পথভ্রষ্ট ?

(১) সত্যি বলতে কি আমাদের পিতা একেবারে বিভ্রান্ত (পথভ্রষ্ট) হয়ে গেছে ।১২সূরা ইউসূফ : আয়াত ৮

পর্যালোচনা : এখানে দেখা যাচ্ছে , একজন নবীর সন্তরাই তাদের পিতাকে (নাবীকে) বিভ্রান্ত পথভ্রষ্ট বলছে । অথচ নাবীরাই ছিলেম বিভ্রান্ত পথভ্রষ্ট জনগোষ্ঠীর পথপ্রদর্শক । তারা পথভ্রষ্ট হতেই পারেন না । তাহলে দেখতে হবে , পখভ্রষ্ট – কে বলছে , কাকে বলছে । এক সময়ের সিসাঢালা প্রাচীরের মত একতাবদ্ধ , অপরাজেয় জাতী মুসলিমরা আজ অসংখ্য দলে বিভক্ত । একদল অন্য সকল দলকে নির্দিধায় বিভ্রান্তির ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছে । এদের সবার কথা মেনে নিলে সুপথ প্রাপ্ত আর কেউ থাকবে না । তাই সুপথ প্রাপ্ত কে , আর কে পথভ্রষ্ট তা নির্ণয় করা যাবে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার কথা দিয়েই । আল্লাহ তা”আলা যাকে পথভ্রষ্ট বলবেন একমাত্র সেই পথভ্রষ্ট , আমরা যতই তাকে সুপথপ্রাপ্ত বলিনা কেন । আবার আল্লাহ তায়ালা যাকে সুপথ প্রাপ্ত বলবেন , সেই একমাত্র সুপথপ্রাপ্ত আমরা যতই তাকে পথভ্রষ্ট বলিনা কেন । আল্লাহ তুমি আমাদেরকে তোমার কাছে যারা সুপথ প্রাপ্ত তাদের মধ্যে শামিল কর ।
رَبَّنَا وَ تَقَبَّلۡ دُعَآء
(২)
قَالَ فَعَلْتُهَا إِذًا وَأَنَا مِنَ الضَّالِّينَ

মুসা (আঃ) জবাব দিলেন , আমি সে সময় এ কাজ করেছিলাম অজ্ঞতার মধ্যে (পথভ্রষ্ট) থাকা অবস্থায় । – সূরা শুআরা : আয়াত ২০

পর্যালোচনা : এখানেও দেখা যাচ্ছে , একজন নাবী , যারা আমাদের মত সাধারণ মানুষের পথপ্রদর্শক ছিলেন , তিনি নিজেকেই পথভ্রষ্ট বলছেন । তাই এর ব্যাখ্যাও আগের আয়াতের মত হবে । তা হল , আসল পথভ্রষ্ট সে যাকে আল্লাহ তায়ালা পথভ্রষ্ট বলবেন । আসলে এখানে একটি বিশেষ ঘটণার জন্য মুসা (আঃ) নিজেকে পথভ্রষ্ট বলছেন । তার তা হল তার দ্বারা একজন কিবতী হত্যা । তিনি শুধু একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য তাকে একটি চড়/ঘুঁষি মেরেছিলেন । হযরত মূসা সেই কিবতীকে একজন ইসরাঈলীর উপর জুলুম করতে দেখে শুধুমাত্র একটি ঘুঁষি মেরেছিলেন। সবাই জানে, ঘুঁষিতে সাধারণত মানুষ মরে না। আর তিনি হত্যা করার উদ্দেশ্যেও ঘুঁষি মারেননি। ঘটনাক্রমে এতেই সে মরে গিয়েছিল। তাই সঠিক এ ছিল যে, এটি ইচ্ছাকৃত হত্যা ছিল না বরং ছিল ভুলক্রমে হত্যা। হত্যা নিশ্চয়ই হয়েছে কিন্তু ইচ্ছা করে হত্যা করার সংকল্প করে হত্যা করা হয়নি। হত্যা করার জন্য যেসব অস্ত্র বা উপায় কায়দা ব্যবহার করা হয় অথবা যেগুলোর সাহায্যে হত্যাকার্য সংঘটিত হতে পারে তেমন কোন অস্ত্র, উপায় বা কায়দাও ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু এই অজ্ঞতা , কোন কাজের পরিণতি সম্পর্কে না জানাও পথভ্রষ্টতার একটি কারণ । যা আমরা পরবর্তি আয়াত গুলিতে পাব ইনশা-আল্লাহ । আপনারা ভাববেন না আমি মুসা (আঃ) কে পথভ্রষ্ট বলছি (মায়ায আল্লাহ) । তিনি তো ছিলেন পথপ্রর্শক । আমি আগেই বলেছি , আসল পথভ্রষ্ট সে যাকে আল্লাহ তাআলা পথভ্রষ্ট বলবেন ।
(৩)
وَلا تَتَّبِعِ الْهَوَى فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ إِنَّ الَّذِينَ يَضِلُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيدٌ بِمَا نَسُوا يَوْمَ الْحِسَابِ

প্রবৃত্তির কামনার আনুসরণ করো না । কারণ তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করবে । যারা আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী হয় আবশ্যই তাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি । যেহেতু তারা বিচার দিবসকে ভুলে গেছে । – সূরা ছোয়াদ : আয়াত ২৬
পর্যালোচনা : আয়াতের অর্থটি নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে পরিস্কার । আল্লাহ আনুগত্য করে না , ইসলামের বিধান মানে না । মন যা চায় , প্রবৃত্তি যা চায় তাই করে সে কখনও সুপথের উপরে থাকতে পারে না । তার প্রবৃত্তিই তাকে পথভ্রষ্ট করবে । হে আল্লাহ ! আমাদের নাফসকে তুমি তোমার দ্বীনের প্রতি অটল আবিচল রাখো ।

(৪) একই বিষয়ে আরো একটি আয়াত

وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّنَ اتَّبَعَ هَوَاهُ بِغَيْرِ هُدًى مِنَ اللَّهِ إِنَّ اللَّهَ لا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ

যে ব্যক্তি আল্লাহর হিদায়াত ছাড়া নিছক নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে তার চেয়ে বড় পথভ্রষ্ট আর কে হবে ? আল্লাহ এ ধরণের যালেমদেরকে কখনো হিদায়াত দান করেন না । – সূরা কাসাস : আয়াত ৫০
(৫)
الَّذِينَ يَسْتَحِبُّونَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا عَلَى الآخِرَةِ وَيَصُدُّونَ عَنْ سَبِيلِ اللَّهِ وَيَبْغُونَهَا عِوَجًا أُولَئِكَ فِي ضَلالٍ بَعِيدٍ

যারা দুনিয়ার জীবনকে আখিরাতের উপর প্রাধান্য দেয় , যারা লোকদেরকে আল্লাহর পথ থেকে রুখে দিচ্ছে এবং চাচ্ছে এ পথটি তাদের আকাংখা অনুযায়ী বাঁকা হয়ে যাক । পথভ্রষ্টতায় তারা অনেকদুর এগিয়ে গেছে । – সূরা ইবরাহীম : আয়াত ৩

পর্যালোচনা: আজকের মুসলিম সমাজকে এই আয়াত নিয়ে একটু ভাবা দরকার । আমরা আজ কোন পথে চলছি , আমাদের লক্ষ্য কি দুনিয়া না আখেরাত ? আজ আমরা সবাই দুনিয়ার জন্য পাগল , হালাল-হারামের কোন পরওয়াই করছি না । অন্য কথায় যারা শুধুমাত্র দুনিয়ার স্বার্থ ও লাভের কথাই চিন্তা করে, আখেরাতের কোন পরোয়া করে না। যারা বৈষয়িক লাভ, স্বাদ ও আরাম-আয়েশের বিনিময়ে আখেরাতের ক্ষতি কিনে নিতে পারে কিন্তু আখেরাতের সাফল্য ও সমৃদ্ধির বিনিময়ে দুনিয়ার কোন ক্ষতি, কষ্ট ও বিপদ এমনকি কোন স্বাদ থেকে বঞ্চিত হওয়াও বরদাশত করতে পারে না। যারা দুনিয়া ও আখেরাত উভয়ের পর্যালোচনা করে ধীরে ও সুস্থ মস্তিষ্কে দুনিয়াকে বেছে নিয়েছে এবং আখেরাতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, তার স্বার্থ যেসব ক্ষেত্রে দুনিয়ার স্বার্থের সাথে সংঘর্ষশীল হবে সেসব ক্ষেত্রে তাকে ত্যাগ করে যেতে থাকবে। এ সমস্ত লোকেরা নিজেকে ইসলামের কাছে সঁপে দিতে চায় না । বরং ইসলামকেই তাদের অনুগত বানাতে চায় । অর্থাৎ তারা আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত হয়ে থাকতে চায় না। বরং আল্লাহর দ্বীনকে নিজেদের ইচ্ছার অনুগত করে রাখতে চায়। নিজেদের প্রত্যেকটি ভাবনা-চিন্তা, মতবাদ ও ধারণা-অনুমানকে তারা নিজেদের বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত করে এবং এমন কোন বিশ্বাসকে নিজেদের চিন্তারাজ্যে অবস্থান করতে দেয় না যা তাদের ভাবনার সাথে খাপ খায় না। তারা চায় আল্লাহর দ্বীন তাদের অনুসৃত প্রত্যেকটি রীতি-নীতি, আচার-আচরণ ও অভ্যাসকে বৈধতার ছাড়পত্র দিক এবং তাদের কাছে এমন কোন পদ্ধতির অনুসরণের দাবী না জানাক যা তারা পছন্দ করে না। এরা নিজেদের প্রবৃত্তি ও শয়তানের অনুসরণে যেদিকে মুখ ফিরায়, আল্লাহর দ্বীনও যেন এদের গোলাম হয়ে ঠিক সেদিকেই মুখ ফিরায়। সে যেন কোথাও এদেরকে বাধা না দেয় বা সমালোচনা না করে এবং কোথাও এদেরকে নিজের পথের দিকে ফিরিয়ে নেবার চেষ্টা না করে। আল্লাহ‌ তাদের কাছে এ ধরনের দ্বীন পাঠালেই তারা তা মানতে প্রস্তুত। আয়াতের মর্মানুযায়ী এ ধরণের লোকেরা পথভ্রষ্টার অনেক গভীরে পৌঁছে গেছে । হে আল্লাহ ! আমরা এ ধরনের চিন্তাধারা থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই !
(৬)
مَثَلُ الَّذِينَ كَفَرُوا بِرَبِّهِمْ أَعْمَالُهُمْ كَرَمَادٍ اشْتَدَّتْ بِهِ الرِّيحُ فِي يَوْمٍ عَاصِفٍ لا يَقْدِرُونَ مِمَّا كَسَبُوا عَلَى شَيْءٍ ذَلِكَ هُوَ الضَّلالُ الْبَعِيدُ

যারা তাদের রবের সাথে কুফরী করলো তাদের কার্যক্রমের উপমা হচ্ছে এমন ছাইয়ের মত যাকে একটি ঝনঝাক্ষুদ্ধ দিনের প্রবল বাতাস উড়িয়ে দিয়েছে । তারা নিজেদের কৃতকর্মের কোনই ফল লাভ করতে পারবে না । এটিই চরম পথভ্রষ্টতা । ১৪ সূরা ইবরাহীম : আয়াত ১৮

পর্যালোচনা:যারা নিজেদের রবের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা, অবিশ্বস্ততা, অবাধ্যতা, স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ, নাফরমানী ও বিদ্রোহাত্মক কর্মপন্থা অবলম্বন করলো এবং নবীগণ যে আনুগত্য ও দাসত্বের পথ অবলম্বন করার দাওয়াত নিয়ে আসেন তা গ্রহণ করতে অস্বীকার করলো, তাদের সমগ্র জীবনের কর্মকাণ্ড এবং সারা জীবনের সমস্ত আমল শেষ পর্যন্ত এমনি অর্থহীন প্রমাণিত হবে যেমন একটি ছাই-এর স্তুপ, দীর্ঘদিন ধরে এক জায়গায় জমা হতে হতে তা এক সময় একটি বিরাট পাহাড়ে পরিণত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু মাত্র একদিনের ঘুর্ণিঝড়ে তা এমনভাবে উড়ে গেলো যে তার প্রত্যেকটি কণা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলো। তাদের চাকচিক্যময় সভ্যতা, বিপুল ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি, বিস্ময়কর শিল্প-কল-কারখানা, মহা প্রতাপশালী রাষ্ট্র, বিশালায়তন বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ এবং তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সাহিত্য, চারুকলা-ভাস্কর্য-স্থাপত্যের বিশাল ভাণ্ডার, এমনকি তাদের ইবাদাত-বন্দেগী, বাহ্যিক সৎকার্যাবলী এবং দান ও জনকল্যাণমূলক এমন সব কাজ-কর্ম যেগুলোর জন্য তারা দুনিয়ায় গর্ব করে বেড়ায়, সবকিছুই শেষ পর্যন্ত ছাই-এর স্তুপে পরিণত হবে। কিয়ামতের দিনের ঘুর্ণিঝড় এ ছাই-এর স্তুপকে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন করে দেবে এবং আখেরাতের জীবনে আল্লাহর মীযানে রেখে সামান্যতম ওজন পাওয়ার জন্য তার একটি কণাও তাদের কাছে থাকবে না।
(৭)
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَكُمُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكُمْ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَنْ ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنَا عَلَيْكُمْ بِوَكِيلٍ

বলে দাও , হে লোকেরা , তোমাদের কাছে তোমাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এসে গেছে । এখন যারা সোজা পথ অবলম্বন করবে তাদের সোজা পথ অবলম্বন তাদের জন্যই কল্যাণকর হবে । এবং যারা ভুল পথ অবলম্বন করবে তাদের ভুল পথ অবলম্বন তাদের জন্যই অকল্যাণকর হবে । আর আমি তোমাদের উপর পাহারাদার হয়ে আসিনি । – সূরা ইউনুস : আয়াত ১০৮

পর্যালোচনা : আয়াতের ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই আপনাদের কাছে পরিস্কার । মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রেরিত নাবী রাসূলদের মাধ্যমে সুপথ এবং ভ্রান্ত পথের বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছেন । তিনি নাবী রাসূলদের এজন্য পাঠাননি যে তিনি লোকদেরকে বাধ্য করবেন ইসলাম পালন করার জন্য । বরং তার দায়িত্ব ছিল সত্য পৌঁছিয়ে দেয়া । এখন যারা তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করবে তারাই হবে সুপথ প্রাপ্ত আর যারা তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করবে না তারাই হবে পথভ্রষ্ট । আল্লাহ পাক আমাদেরকে নাবী রাসূলদের দেখানো পথের উপর থাকার তাওফীক দান করুন ।
(৮)
لِيَحْمِلُوا أَوْزَارَهُمْ كَامِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمِنْ أَوْزَارِ الَّذِينَ يُضِلُّونَهُمْ بِغَيْرِ عِلْمٍ أَلا سَاءَ مَا يَزِرُونَ

কিয়ামতের দিন তারা নিজেদের বোঝা পুরোপুরি উঠাবে আবার সাথে সাথে তাদের বোঝাও কিছু কিছু উঠাবে যাদেরকে তারা অজ্ঞতার কারণে পথভ্রষ্ট করছে । দেখো কেমন কঠিন দ্বায়িত্ব যা তারা নিজেদের মাথায় নিয়ে নিচ্ছে । – সূরা নাহল : আয়াত ২৫

পর্যালোচনা : ‍নিচের আয়াতের সাথে ।
(৯)
حَتَّى إِذَا ادَّارَكُوا فِيهَا جَمِيعًا قَالَتْ أُخْرَاهُمْ لأولاهُمْ رَبَّنَا هَؤُلاءِ أَضَلُّونَا فَآتِهِمْ عَذَابًا ضِعْفًا مِنَ النَّارِ قَالَ لِكُلٍّ ضِعْفٌ وَلَكِنْ لا تَعْلَمُونَ
وَقَالَتْ أُولاهُمْ لأخْرَاهُمْ فَمَا كَانَ لَكُمْ عَلَيْنَا مِنْ فَضْلٍ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْسِبُونَ

অবশেষে যখন সবাই সেখানে একত্রিত হয়ে যাবে তখন পরবর্তি প্রত্যেকটি দল পূর্ববর্তী দলের ব্যাপারে বলবে “ হে আমাদের রব ! এরাই আমাদের গোমরাহ করেছে কাজেই এদেরকে আগুনের দ্বিগুন শাস্তি দাও । জওয়াবে বলা হবে প্রত্যেকের জন্যই দ্বিগুন শাস্তিই রয়েছে কিন্তু তোমরা জানো না । প্রথম দলটি দ্বিতীয় দলকে বলবে , যদি আমরা দোষী হয়ে থাকি তাহলে তোমরা কোন দিক দিয়ে আমাদের চাইতে শ্রেষ্ঠ ছিলে । এখন নিজেদের কৃতকর্মের ফলস্বরুপ আযাবের স্বাদ গ্রহন কর । – সূরা আল-আরাফ : আয়াত ৩৮-৩৯
পর্যালোচনা : আমরা যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অন্ধ অনুসরণ করে চলেছি আমাদের পূর্ব পুরুষদের , সালাফদের, মাযহাবের , পীরদের তাদের এই আয়াতটি নিয়ে চিন্তা করা উচিত । কেয়ামতের দিনে যখন বিচার করবেন আল্লাহ তাআলা তখন আমরা কারো রেফারেন্স দিয়ে রেহাই পাব না । কারণ তারাও হয়তো ইচ্ছাকৃত ভাবে তাদের উত্তর পুরুষদের বিপদে পরিচালিত করেনি । অর্থাৎ সর্বাবস্থায় তোমাদের প্রত্যেকটি দল কোন না কোন দলের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী দল ছিল। কোন দলের পূর্ববর্তী দল উত্তরাধিকার হিসেবে যদি তার জন্য ভুল ও বিপথগামী চিন্তা ও কর্ম রেখে গিয়ে থাকে, তাহলে সে নিজেও তো তার পরবর্তীদের জন্য একই ধরনের উত্তরাধীকার রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছে। যদি একটি দলের পথভ্রষ্ট হবার কিছুটা দায়-দায়িত্ব তার পূর্ববর্তীদের ওপর বর্তায়, তাহলে তার পরবর্তীদের পথভ্রষ্ট হবার বেশ কিছু দায়-দায়িত্ব তার নিজের ওপরও বর্তায়। তাই বলা হয়েছে প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ শাস্তিই রয়েছে। একটি শাস্তি হচ্ছে, নিজের ভুল পথ অবলম্বনের এবং অন্য শাস্তিটি অন্যদেরকে ভুল পথ দেখাবার। একটি শাস্তি নিজের অপরাধের এবং অন্য শাস্তিটি অন্যদের জন্য পূর্বাহ্নের অপরাধের উত্তরাধিকার রেখে আসার।
এ থেকে জানা যায়, যে ব্যক্তি বা দল কোন ভুল চিন্তা বা কর্মনীতির ভিত্ রচনা করে সে কেবল নিজের ভুলের ও গোনাহের জন্য দায়ী হয় না বরং দুনিয়ায় যতগুলো লোক তার দ্বারা প্রভাবিত হয় তাদের সবার গোনাহের দায়িত্বের একটি অংশও তার আমলনামায় লিখিত হতে থাকে। যতদিন তার এ গোনাহের প্রভাব বিস্তৃত হতে থাকে, ততদিন তার আমলনামায় গোনাহ লিখিত হতে থাকে। তাছাড়া এ থেকে একথাও জানা যায় যে, প্রত্যেক ব্যক্তির নেকী বা গোনাহের দায়-দায়িত্ব কেবল তার নিজের ওপরই বর্তায় না বরং অন্যান্য লোকদের জীবনে তার নেকী ও গোনাহের কি প্রভাব পড়ে সেজন্য ও তাকে জবাবদিহি করতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ একজন ব্যভিচারীর কথাই ধরা যাক। যাদের শিক্ষা ও অনুশীলনের দোষে, যাদের সাহচর্যের প্রভাবে, যাদের খারাপ দৃষ্টান্ত দেখে এবং যাদের উৎসাহ দানের ফলে ঐ ব্যক্তির মধ্যে যিনা করার প্রবণতা সৃষ্টি হয়, তারা সবাই তার যিনাকারী হয়ে গড়ে উঠার ব্যাপারে অংশীদার। আবার ঐ লোকগুলোও পূর্ববর্তী যেসব লোকদের কাছে থেকেই কুদৃষ্টি, কুচিন্তা, কুসংকল্প ও কুকর্মের প্ররোচনা উত্তরাধিকার হিসেবে লাভ করে তাদের কাঁধে পর্যন্তও তার দায়-দায়িত্ব গিয়ে পৌঁছায়। এমন কি এ ধারা অগ্রসর হতে হতে সেই প্রথম ব্যক্তিতে গিয়ে ঠেকে যে সর্বপ্রথম ভ্রান্ত পথে যৌন লালসা চরিতার্থ করে মানব জাতিকে ভুল পথে পরিচালিত করেছিল। এ যিনাকারীর আমলনামার এ অংশটি তার সমকালীনদের ও পূর্ববর্তী লোকদের সাথে সম্পর্কিত। এছাড়া সে নিজেও নিজের যিনা ও ব্যভিচারের জন্য দায়ী। তাকে ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করার যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছিল, তাকে যে বিবেকবোধ দান করা হয়েছিল, আত্মসংযমের যে শক্তি তার মধ্যে গচ্ছিত রাখা হয়েছিল, সৎলোকদের কাছ থেকে সে ভাল-মন্দ ও ন্যায়-অন্যায়ের যে জ্ঞান লাভ করেছিল, তার সামনে সৎলোকদের যেসব দৃষ্টান্ত সমুজ্জ্বল ছিল, যৌন অসদাচারের অশুভ পরিণামের ব্যাপারে তার যেসব তথ্য জানা ছিল-সে সবের কোনটিকেও সে কাজে লাগায়নি। উপরন্তু সে নিজেকে কামনা বাসনার এমন একটি অন্ধ আবেগের হাতে সোপর্দ করে দিয়েছিল যে কোন প্রকারে নিজের আকাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করাই ছিল যার অভিপ্রায়। তার আমলনামার এ অংশটি তার নিজের সাথে সম্পর্কিত। তারপর এ ব্যক্তি যে গোনাহ নিজে করেছে এবং যাকে স্বকীয় প্রচেষ্টায় লালন করে চলেছে, তাকে অন্য লোকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে শুরু করে। কোথাও থেকে কোন যৌন রোগের জীবাণু নিজের মধ্যে বহন করে আনে, তারপর তাকে নিজের বংশধরদের মধ্যে এবং না জানি আরো যে কত শত বংশধরদের মধ্যে ছড়িয়ে কত শত লোকদের জীবন ধ্বংস করে তা একমাত্র আল্লাহই ভাল জানেন। কোথাও নিজের শুক্রবীজ রেখে আসে। যে শিশুটির লালন-পালনের দায়িত্ব তারই বহন করা উচিত ছিল, তাকে অন্য একজনের উপার্জনের অবৈধ অংশীদার, তার সন্তানদের অধিকার থেকে জোরপূর্বক হিস্সা গ্রহণকারী এবং তার উত্তরাধিকারে অবৈধ শরীক বানিয়ে দেয়। এ অধিকার হরণের ধারা চলতে থাকে পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে বহুদূর পর্যন্ত। কোন কুমারী মেয়েকে ফুসলিয়ে ব্যভিচারের পথে টেনে আনে এবং তার মধ্যে এমন অসৎ গুণাবলী সৃষ্টি করে যা তার থেকে অন্যদের মধ্যে প্রতিফলিত হয়ে না জানি আরো কত দূর, কত পরিবার ও কত বংশধরদের মধ্যে পৌঁছে যায় এবং কত পরিবারে বিকৃতি আনে। নিজের সন্তান-সন্তুতি, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সমাজের অন্যান্য লোকদের সামনে সে নিজের চরিত্রের একটি কুদৃষ্টান্ত পেশ করে এবং অসংখ্য লোকের চরিত্র নষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে এর প্রভাব চলতে থাকে দীর্ঘকালব্যাপী। ইনসাফের দাবী হচ্ছে, এ ব্যক্তি সমাজ দেহে যেসব বিকৃতি সৃষ্টি করলো সেগুলো তারই আমলনামায় লিখিত হওয়া উচিত এবং ততদিন পর্যন্ত লিখিত হওয়া উচিত যতদিন তার সরবরাহ করা অসৎ বৃত্তি ও অসৎকাজের ধারা দুনিয়ায় চলতে থাকে।

সৎকাজ ও পূর্ণকর্মের ব্যাপারটিও অনুরূপ। আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আমরা নেকীর ও সৎকাজের যে উত্তরাধিকার লাভ করেছি তার প্রতিদান তাদের সবার পাওয়া উচিত, যারা সৃষ্টির শুরু থেকে নিয়ে আমাদের যুগ পর্যন্ত ওগুলো আমাদের কাছে হস্তান্তর করার ব্যাপারে অংশ নিয়েছেন। এ উত্তরাধিকার নিয়ে তাকে সযত্নে হেফাজত করার ও তার উন্নতি বিধানের জন্য আমরা যেসব প্রচেষ্টা চালাবো ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবো তার প্রতিদান আমাদেরও পাওয়া উচিত। তারপর নিজেদের সৎ প্রচেষ্টার যেসব চিহ্ন ও প্রভাব আমরা দুনিয়ায় রেখে যাবো সেগুলোও আমাদের সৎকাজের হিসেবের খাতায় ততদিন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে লিখিত হওয়া উচিত যতদিন এ চিহ্ন ও প্রভাবগুলো দুনিয়ার বুকে অক্ষত থাকবে, মানব জাতির বংশধরদের মধ্যে এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকবে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকূল এর দ্বারা লাভবান হতে থাকবে।

প্রতিটি বিবেকবান ব্যক্তিই একথা স্বীকার করবেন যে, কুরআন মজীদ প্রতিদানের এই যে পদ্ধতি উপস্থাপন করেছে, একমাত্র এ পদ্ধতিতেই সঠিক ও পূর্ণ ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। এ সত্যটি ভালভাবে অনুধাবন করতে সক্ষম হলে যারা প্রতিদানের জন্য এ দুনিয়ায় বর্তমান জীবনকেই যথেষ্ট মনে করেছে এবং যারা মনে করেছে যে, জন্মান্তরের মাধ্যমে মানুষকে তার কাজের পুরোপুরি প্রতিদান দেয়া যেতে পারে তাদের সবার বিভ্রান্তিও সহজে দূর হয়ে যেতে পারে। আসলে এ উভয় দলই মানুষের কার্যকলাপ, তার প্রভাব, ফলাফল ও পরিণতির ব্যাপ্তি এবং ন্যায়সঙ্গত প্রতিদান ও তার দাবীসমূহ অনুধাবন করতে সক্ষম হয়নি। একজন লোকের বয়স এখন ষাট বছর। সে তার এ ষাট বছরের জীবনে ভাল-মন্দ যা কিছু করেছে না জানি উপরের দিকে কত দূর পর্যন্ত তার পূর্ব-পুরুষরা এ কাজের সাথে জড়িত এবং তাদের ওপর এর দায়িত্ব বর্তায়। আর তাদেরকে এর পুরস্কার বা শাস্তি দান করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। তারপর এ ব্যক্তি আজ যে ভাল বা মন্দ কাজ করেছে তার মৃত্যু সাথে সাথেই তা বন্ধ হয়ে যাবে না বরং তার প্রভাব চলতে থাকবে আগামী শত শত বছর পর্যন্ত। হাজার হাজার, লাখো লাখো, বরং কোটি কোটি মানুষের মধ্যে তা ছড়িয়ে পড়বে। এর প্রভাব চলা ও বিস্তৃত হওয়া পর্যন্ত তার আমলনামার পাতা খোলা থাকবে। এ অবস্থায় আজই এ দুনিয়ার জীবনে এ ব্যক্তিকে তার উপার্জনের সম্পূর্ণ ফসল প্রদান করা কেমন করে সম্ভব? কারণ তার উপার্জনের এক লাখ ভাগের এক ভাগও এখনো অর্জিত হয়নি। তাছাড়া এ দুনিয়ার সীমিত জীবন ও এর সীমিত সম্ভাবনা আদতে এমন কোন অবকাশই রাখেনি যার ফলে এখানে কোন ব্যক্তি তার উপার্জনের পূর্ণ ফসল লাভ করতে পারে। মনে করুন, কোন ব্যক্তি দুনিয়ায় এক মহাযুদ্ধের আগুন জ্বালিয়ে দেয় এবং তার এ মারাত্মক অপকর্মের বিপুল বিষময় কুফল হাজার বছর পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ ব্যক্তির এ ধরনের অপরাধের কথা একবার কল্পনা করুন। এ দুনিয়ায় যত বড় ধরনের দৈহিক, নৈতিক, মানসিক অথবা বস্তুগত শাস্তি দেয়া সম্ভব, তার কোনটিও কি তার এ অপরাধের ন্যায়সঙ্গত পরিপূর্ণ শাস্তি হতে পারে? অনুরূপভাবে দুনিয়ার সবচাইতে বড় যে পুরস্কারের কথা কল্পনা করা যেতে পারে, তার কোনটিও কি এমন এক ব্যক্তির জন্য যথেষ্ট হতে পারে, যে সারা জীবন মানবজাতির কল্যাণার্থে কাজ করে গেছে এবং হাজার হাজার বছর পর্যন্ত অসংখ্য মানব সন্তান যার প্রচেষ্টার ফসল থেকে লাভবান হয়ে চলেছে? যে ব্যক্তি কর্ম ও প্রতিদানের বিষয়টিকে এ দৃষ্টিতে বিচার করবে সে নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করবে যে, কর্মফলের জন্য আসলে আর একটি জগতের প্রয়োজন, যেখানে পূর্বের ও পরের সমগ্র মানব গোষ্ঠি একত্র হবে, সকল মানুষের আমলনামা বন্ধ হয়ে যাবে, হিসেব গ্রহণ করার জন্য একজন সর্বজ্ঞ ও সর্বজ্ঞানময় আল্লাহ‌ বিচারের আসনে বসবেন এবং কর্মের পুরোপুরি প্রতিদান লাভ করার জন্য মানুষের কাছে সীমাহীন জীবন ও তার চারদিকে পুরস্কার ও শাস্তির অঢেল সম্ভাবনা বিরাজিত থাকবে।

আবার এই একই দিক সম্পর্কে চিন্তা করলে জন্মান্তরবাদীদের আর একটি মৌলিক ভ্রান্তির অপনোদনও হতে পারে। এ ভ্রান্তিটিই তাদের পুনর্জন্মের ধারণা সৃষ্টিতে সাহায্য করেছে। তারা এ সত্যটি উপলব্ধি করতে পারেনি যে, মাত্র একটি সংক্ষিপ্ত পঞ্চাশ বছরের জীবনের কর্মফল ভোগের জন্য তার চাইতে হাজার গুণ বেশী দীর্ঘ জীবনের প্রয়োজন হয়। অথচ পুনর্জন্মবাদের ধারণা মতে তার পরিবর্তে পঞ্চাশ বছরের জীবন শেষ হতেই দ্বিতীয় আর একটি দায়িত্বপূর্ণ জীবন, তারপর তৃতীয় জীবন এ দুনিয়াতেই শুরু হয়ে যায়। আবার এসব জীবনে পুনরায় শাস্তিযোগ্য বা পুরস্কারযোগ্য বহু কাজ করা হতে থাকে। এভাবে তো হিসেব চুকে যাওয়ার পরিবর্তে আরো বাড়তেই থাকবে এবং কোন দিন তা খতম হওয়া সম্ভব হবে না। জাহান্নামবাসীদের এ পারস্পরিক সংলাপ ও তর্ক-বিতর্ক কুরআন মজীদের আরো কয়েকটি স্থানে বর্ণিত হয়েছে। যেমন সূরা সাবা’র ৪ রুকূ’তে বলা হয়েছেঃ হায়! তোমরা যদি সেই সময়টি দেখতে পেতে যখন এ জালেমরা নিজেদের রবের সামনে দাঁড়াবে এবং পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে থাকবে। যাদেরকে দুনিয়ায় দুর্বল করে রাখা হয়েছিল তারা বড় ও শক্তিশালীর আসনে যারা বসেছিল তাদেরকে বলবেঃ তোমরা না থাকলে আমরা মু’মিন হতাম। বড় ও শক্তিশালীর আসনে যারা বসেছিল, তারা দুর্বল করে রাখা লোকদেরকে জবাব দেবেঃ তোমাদের কাছে যখন হেদায়াত এসেছিল তখন আমরা কি তা গ্রহণ করতে তোমাদেরকে বাধা দিয়েছিলাম? না, তা নয়, বরং তোমরা নিজেরাই অপরাধী ছিলে। এর অর্থ হচ্ছে, তোমরা আবার কবে হেদায়াতের প্রত্যাশী ছিলে? আমরা যদি তোমাদেরকে দুনিয়ার লোভ দেখিয়ে নিজেদের দাসে পরিণত করে থাকি, তাহলে তোমরা লোভী ছিলে বলেই তো আমাদের ফাঁদে পা দিয়েছিলে। যদি আমরা তোমাদেরকে কিনে নিয়ে থাকি, তাহলে তোমরা নিজেরাই তো বিকোবার জন্য তৈরী ছিলে, তবেই না আমরা কিনতে পেরেছিলাম। যদি আমরা তোমাদেরকে বস্তুবাদ, বৈষয়িক লালসা, জাতিপূজা এবং এ ধরনের আরো বিভিন্ন প্রকার গোমরাহী ও অসৎকাজে লিপ্ত করে থাকি, তাহলে তোমরা নিজেরাই তো আল্লাহর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে দুনিয়ার পূজারী সেজেছিলে, তবেই না তোমরা আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ইবাদতের দিকে আহ্বানকারীদেরকে ত্যাগ করে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলে। যদি আমরা তোমাদের ধর্মের আবরণে প্রতারিত করে থাকি, তাহলে যে জিনিসগুলো আমরা পেশ করছিলাম এবং তোমরা লুফে নিচ্ছিলে, সেগুলোর চাহিদা তো তোমাদের নিজেদের মধ্যেই ছিল। তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সব প্রয়োজন পূরণকারী খুঁজে বেড়াচ্ছিলে, যারা তোমাদের কাছে কোন নৈতিক বিধানের আনুগত্যের দাবী না করেই কেবলমাত্র তোমাদের ইস্পিত কাজই করে যেতে থাকতো। আমরা সেই সব প্রয়োজন পুরণকারী তৈরী করে তোমাদেরকে দিয়েছিলাম। তোমরা আল্লাহর আদেশ নিষেধ থেকে বেপরোয়া হয়ে দুনিয়ার কুকুর হয়ে গিয়েছিলে এবং তোমাদের পাপ মোচনের জন্য এমন এক ধরনের সুপারিশকারী খুঁজে বেড়াচ্ছিলে যারা তোমাদের গোনাহ মাফ করিয়ে দেয়ার সমস্ত দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়ে নেবে। আমরা সেই সব সুপারিশকারী তৈরী করে তোমাদের কাছে সরবরাহ করেছিলাম। তোমরা নিরস ও স্বাদ-গন্ধহীন দ্বীনদারী, পরহেজগারী, কুরবানী এবং প্রচেষ্টা ও সাধনার পরিবর্তে নাজাত লাভের জন্য অন্য কোন পথের সন্ধান চাচ্ছিলে। তোমরা চাচ্ছিলে এ পথে তোমাদের প্রবৃত্তি ও লালসা চরিতার্থ করতে, নানা প্রকার স্বাদ আহরণ করতে কোন বাধা না থাকে এবং প্রবৃত্তি ও লালসা যেন সব রকমের বিধি-নিষেধের আওতামুক্ত থাকে। আমরা এ ধরনের সুদৃশ্য ধর্ম উদ্ভাবন করে তোমাদের সামনে রেখেছিলাম। মোটকথা দায়-দায়িত্ব কেবল আমাদের একার নয়। তোমরাও এতে সমান অংশীদার। আমরা যদি গোমরাহী সরবরাহ করে থাকি, তাহলে তোমরা ছিলে তার খরিদ্দার।
(১০)
إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَنْ تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ وَأُولَئِكَ هُمُ الضَّالُّونَ

নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে তাদের ঈমান আনার পর , তারপর তারা কুফরীতে আরও এগিয়ে গিয়েছে , তাদের তওবা কখনো গৃহীত হবে না ; আর তারাই পথভ্রষ্ট । – সূরা আলে ইমরান : আয়াত ৯০

পর্যালোচনা: কেবল অস্বীকার করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং কার্যত তার বিরোধিতা ও তার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। লোকদের আল্লাহর পথে চলা থেকে বিরত রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি করেছে এবং বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বেড়িয়েছে। মনের মধ্যে দ্বিধার সৃষ্টি করেছে ও কুমন্ত্রণা দিয়েছে এবং নবীর মিশন যাতে কোনক্রমে সফলতার সীমান্তে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য সবরকমের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে।
(১১)

أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يَزْعُمُونَ أَنَّهُمْ آمَنُوا بِمَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ وَمَا أُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَ يُرِيدُونَ أَنْ يَتَحَاكَمُوا إِلَى الطَّاغُوتِ وَقَدْ أُمِرُوا أَنْ يَكْفُرُوا بِهِ وَيُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُضِلَّهُمْ ضَلالا بَعِيدًا

আপনি কি তাদের প্রতি লক্ষ্য করেননি , যারা ধারনা করে যে , তারা ঈমান এনেছে তার প্রতি যা আপনার প্রতি নাযিল হয়েছে এবং যা আপনার পূর্বে নাযিল হয়েছে , কিন্তু তারা ফায়সালা পেতে চায় তাগুতের কাছে অথচ তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তাকে অস্বীকার করতে ; আর শয়তান তো তাদেরকে পথভ্রষ্ট করে অনেক দুরে নিয়ে যেতে চায় । – সূরা আন-নিসা : আয়াত ৬০

পর্যালোচনা: এখানে ‌‘তাগুত’ বলতে সুস্পষ্টভাবে এমন শাসক (মৌলভী পুরোহিত দের বোঝানো হয়েছে যারা আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে নিজেরা আইন তৈরি করেছে এবং ধর্মের বিধি-বিধান দিচ্ছে)বুঝানো হয়েছে যে আল্লাহর আইন বাদ দিয়ে অন্য কোন আইন অনুযায়ী ফয়সালা করে এবং এমন বিচার ব্যবস্থাকে বুঝানো হয়েছে যা আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতার আনুগত্য করে না এবং আল্লাহর কিতাবকে চূড়ান্ত সনদ (Final Authority) হিসেবে স্বীকৃতিও দেয় না। কাজেই যে আদালত তাগুতের ভূমিকা পালন করছে, নিজের বিভিন্ন বিষয়ের ফায়সালার জন্য তার কাছে উপস্থিত হওয়া যে একটি ঈমান বিরোধী কাজ এ ব্যাপারে এ আয়াতটির বক্তব্য একেবারে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন। আর আল্লাহ‌ ও তাঁর কিতাবের ওপর ঈমান আনার অপরিহার্য দাবী অনুযায়ী এ ধরনের আদালতকে বৈধ আদালত হিসেবে স্বীকার করতে অস্বীকৃত জানানোই প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির কর্তব্য। কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা ও তাগুতকে অস্বীকার করা, এ দু’টি বিষয় পরস্পরের সাথে অংগাংগীভাবে সংযুক্ত এবং এদের একটি অন্যটির অনিবার্য পরিণতি। আল্লাহ‌ ও তাগুত উভয়ের সামনে একই সাথে মাথা নত করাই হচ্ছে সুস্পষ্ট মুনাফেকী। তথা পথভ্রষ্টতা মহান আল্লাহ আমাদেরকে সকল এ পথভ্রষ্টতা থেকে হেফাজত করুন

(সম্মানিত মুসলিম ভাই বোন! এভাবে তাফসির লেখার কাজ চলছে কামন হচ্ছে বা কামন হলে আরো সুন্দর হবে কমেন্ট করে জানালে উপকৃত হব ।)
=÷×=÷×=÷×=
সমাপ্ত

আবদুল ওহাব নজদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয়।

😡ওহাবীদের চিন্তাধারা কতটা নোংরা এবং রাসূল পাক সঃ এর বিদ্বেষী একবার পড়ে দেখুন।
আবদুল ওহাব নজদীর সংক্ষিপ্ত পরিচয়।😡

🚫আব্দুল ওয়াহাব নজদীর মতবাদে যারা বিশ্বাস করে,,তারাই হলো ওয়াহাবী।।
🚫কিন্তু কে এই ওয়াহাব নজদী??
🚫কিই বা তাহার মতবাদ?
☕আসুন সে বিষয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।।
🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্নিত আছে, আবু হোরায়রা (রা) থেকে বর্নিত,,রাসুলুল্লাহ (সা) বলেনঃ আমার
ওফাতের পর নজদ হতে শয়তানের তীক্ষ্ণধারার দুটি শিং বের হবে।।
উক্ত দুটি শিংয়ের মধ্যে ওয়াহাব নজদীকে
শয়তানের দ্বিতীয় শিং হিসেবে ইঙ্গিত করা হয়।এই ঘৃণিত ব্যক্তিটি আবু বকর সিদ্দিক(রাঃ)খেলাফতের এগারশত বছর পর আবির্ভূত হয়।বহু কালের প্রতিষ্ঠিত ইসলামের মুল কাঠামোতে এই ব্যক্তি প্রবল ঝাকুনি দেয়। সে সমগ্র
আরব ভূখণ্ডে
তোলপাড় ও ফেতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে।।
তার মতবাদগুলো ছিলঃ
১ / প্রিয় নবীজী (সঃ) এর রওজা শরীফ জিয়ারত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যে ব্যক্তি এই নিষেধ অমান্য করবে, তার শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড। তার হুকুম অমান্য করায় লোক মারফত জিয়ারতকারীর মাথা ও দাড়ি
মুড়ায়ে দেয়।।
২/ আযানের মধ্যে মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বাক্য উচ্চারণ করা যেনার অপেক্ষা বড় অপরাধ। তার বাসস্থান সংলগ্ন এক মসজিদ থেকে আযানের সময়
উক্ত বাক্য উচ্চারণের কারনে মুয়াজ্জীনকে ধরে এনে প্রকাশ্যে তার শিরোচ্ছেদ করা হয়।
৩/ কোরআন বুঝার জন্য কোন তাফসীর কিতাবের প্রয়োজন নাই,, যে যার মতো কুরআনের ব্যাখ্যা করতে পারবে। উক্ত ঘোষণার পর তার নেতৃত্বে
ফিকাহ্ তাফসীর ও হাদীস গ্রন্থসমূহ পুড়িয়ে দেয়া হয়।
৪/ রাসূলুল্লাহ (সঃ) মরে মাটির সাথে মিশে
গেছে, কাজেই তাকে কেউ দরূদ ও সালাম প্রেরণ করবে না, ইহা সকলের জন্য নিষিদ্ধ।
৫/ চার ইমাম কিছুই নয়। তাদের মাজহাব বাতিল। কেননা তাঁরা দিশেহারা ছিলেন।
৬/ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) ছিলেন ডাক পিয়নের মত।
৭/ হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর হাতে যত মুশরিক বিভিন্ন যুদ্ধে শহীদ হয়েছে, আল্লাহ বিশ্বাসী হওয়ার কারনে তারা সবাই জান্নাতে যাবে।
৮/ যারা ওয়াহাবী আকিদায় বিশ্বাসী হবে না, তাদের মাল সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া ও তাদের হত্যা করা জায়েজ হবে।
৯/ ওয়াহাবী আকিদায় অনুপ্রবেশের ধারা ছিল এইঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,
আমি এতদিন কাফের ছিলাম এবং আমার মাতা পিতা /দাদা দাদী সকলে কুফরি অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে।
১০/ আজ হতে আর কেউ আজান ও নামাজের শেষে দোয়া করবে না।
১১/ আওলিয়া কেরামের মাজার গুলো ভেঙে তদস্থলে পায়খানা নির্মাণ করা উত্তম। নজদীরা উক্ত আকিদার বাস্তবায়নের জন্য এহসা প্রদেশের পবিত্র মাজারগুলো ভেঙে গুড়িয়ে দেয় এবং এবং তারই মেয়ের জামাতা সৌদি প্রথম ওহাবী সরকার হযরত মা ফাতেমা রাঃ সহ সকল বিখ্যাত সাহাবীদের রওজা মোবারক বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। যা আজও বিদ্যমান রয়ে গেছে। ( নাউজুবিল্লাহ )।
ফতওয়ায়ে “শামী, ইশয়াতে হক্ব,ওহাবীদের ইতিহাস, ওহাবীদের উৎপত্তি, সাইফুল মাযহাব, মাযহাব কি ও কেন, সাইফুল জাব্বার” ইত্যাদি কিতাবে মুহম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর পরিচয় সম্পর্কে এইভাবে বর্ণিত আছে। সংগৃহীত

https://www.facebook.com/100024127759217/posts/pfbid076Dbk2ALUyeXs1g38Pi8CtSwZ7QdGZrM2Kg9GStLya6D1qAxfw9FgEF4MPZjDTGFl/SourceFbLink